একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ?পর্ব_৪১
#লাবিবা_তানহা_লিজা
?
রাস্তার মাঝে বাথরুম+স্ন্যাক খাওয়ার জন্য একটি হোটেলের সামনে গাড়ি দাড় করায় । লাবিবা শারমিনকে টানতে থাকে বাস থেকে নামার জন্য । কিন্তু শারমিন ভিভোরে ঘুমুচ্ছে । এতো ডাকার সত্বেও না উঠলে লাবিবা রাগ পেয়ে জোরে হাতে চিমটি দিতেই শারমিন ওমাগো বলে চিল্লিয়ে উঠে । এদিক ওদিক তাকিয়ে হন্তদন্ত হয়ে বলে
–দোস্ত দোস্ত আমারে পোকা কামড় দিছে । এই সিটে আমি আর বসবো না । চল আমরা অন্য সিটে চলে যাই । লাবিবা রেগে এক হাত কোমড়ে রেখে বলে –কিহহ!!!তুই আমাকে পোকা বললি এত্তো বড় সাহস তোর ?
–ওহ সরি পোকা বলেছি তোকে না? সরি আর বলবোনা। আমার পোকি বলার উচিৎ ছিলো তোকে । মিসটেক দোস্ত।
–তবেরে….
বাসে দৌড়া দৌড়ি করতে করতে নিচে নেমে দৌড়া দৌড়ি শুরু করে । তানভীর দুটোকে এভাবে দেখে এক ধমকে দাড় করিয়ে দেয় । শারমিন লাবিবা সুর সুর করে হোটেলে ঢুকে কর্ণারের একটা টেবিলে গিয়ে বসে পড়ে । শারমিন টেবিলের উপর মাথা রেখে বলে –একটু ঘুমাইতাম আমি তোর জন্য পারলাম না । সারা রাস্তা ঝাকিতে ঝাকিতে কোমড় ব্যথায় আর নড়তে পারছি না । ঝাকি কমাতে ভাবলাম একটু ঘুমোই তোর জন্য তাও পারলাম না ।
লাবিবার মুখ হা হয়ে গেছে কথা শুনে । সারা রাস্তা লাবিবার কাধে শুয়ে নাক ঢেকে ঘুমোলো আর বলছে ঘুমোই নি । অথচ ওর জন্য লাবিবাই জেগে ছিলো । ঝাকিতে ঝাকিতে শরীর বেশ খারাপ লাগছে এবার ।
ওয়েটার খাবার দিয়ে যায় । লাবিবা হাত দিতে নিলে তানভীর এসে হাতে একটা জুসের গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে চলে যায় । চুমুক দিতেই বুঝে যায় এটা তেতুলের জুস । এত্তো ইয়াম্মি বলেই পুরোটা শেষ করে দেয় । একজন ওয়েটার কে ডেকে বলে
–এক্সকিউজ মি এক গ্লাস তেতুলের শরবত প্লিজ ।
–সরি ম্যাম । আমাদের কাছে তেতুলের জুস অথবা শরবত নেই ।
ওয়েটার চলে যেতেই লাবিবা ভাবতে লাগলো এখানে তো অন্য কোন দোকান নেই যে তেতুলের জুস এনে দিবে আমাকে । তাহলে কোথায় পেল স্যার ?
একটু পর তানভীর হাতে কোকা কলা এনে লাবিবাকে দিয়ে বলে
–অন্যকিছু খেও না । বাসে উঠে বমি বমি ভাব আসলে এটা খাবে ভালো লাগবে ।
–স্যার আপনি তেতুলের জুস কোথায় পেলেন ?
–হাতে বানিয়ে দিয়েছি তোমাকে । এমনিতেই ফাস্ট লং টাইম বাসে । তার মধ্যে আবার একা । শারমিন তো ঘুমালোই দেখলাম । জেগে থাকলে বমি আসবেই।
খাওয়া শেষ হলে যাও গিয়ে বাসে উঠো ।
জাহাঙ্গীর স্যার এসে ইতস্তত বোধ করে দাড়িয়ে আছে । এভাবে দাড়ানো দেখে তানভীর বলে
–স্যার যা বলার নির্ধিধায় বলতে পারেন । জাহাঙ্গীর স্যার সোজা হয়ে বলে
–স্যার কাছেই আমার শশুর বাড়ি । আমার স্ত্রী ও মেয়ে এখানেই ছিলো । সীতাকুন্ডে যাওয়ার নাম শুনে আমাদের সাথে যাবার জন্য চলে এসেছে । এখন বাসে সীট নেই বললেই চলে । আপনার গাড়ি তো ফাকা যদি কাইন্ডলি …..
তানভীর কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে
–স্যার ম্যাডাম আমার কারে থাকবে আর আপনি বাসে থাকবেন সেটা তো ঠিক হচ্ছে না । আমি বরং দুজন ছাত্রীকে গাড়ি তে নিয়ে আপনাকে মেডামের সাথে ইনজয় করার সুযোগ করে দিয়ে একটু সওয়াব আদায়ের চেষ্টা করি । জাহাঙ্গীর স্যার কৃতঙ্ঘতার হাসি হাসে ।
মিলনকে দিয়ে শারমিন লাবিবাকে গাড়িতে আনা হয় । লাবিবা সামনের সিটে বসে আর শারমিন পেছন সিটে। লাবিবা বসেই গা এলিয়ে দেয় সিটে । এতোক্ষনে যেনো শান্তি পাচ্ছে। মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখে তানভীর তাকিয়ে আছে । অল্প আলোতে খোচা খোচা দাড়ি গুলো নেশাময় চোখে দেখছে । একটু ছুয়ে দিতে ইচ্ছা করছে । পেছন ঘুরে দেখে শারমিন কাচুমাচু করে শুয়ে বিভোর ঘুমে ছেয়ে আছে । মিস্টি একটা হাসি দিয়েই লাবিবা তানভীরের দিকে ঝুকে দু গালের চাপ দাড়িতে মন ভরে একটু ছোয়ে দিয়ে সোজা হয়ে যায় । মুখ এমন করে যেনো কিছুই হয়নি । তানভীর এমন ব্যবহারে কিছুই বললো না । গাড়ি স্টার্ট আকরে দিলো । লাবিবা চোখ বুঝে আছে । তানভীর না তাকিয়েই বলে
–ঠিক আছো ?
লাবিবা চোখ খুলে তানভীরের দিকে তাকিয়ে গাল দুটো ফুলিয়ে বলে
–কিছুক্ষন আগে বাসে থাকার থেকে ভালো । আপনি খুব খারাপ । আমাকে বাসে পাঠিয়ে একাই কিভাবে ছিলেন আপনি ? আমাকে ছাড়া থাকতে পারেন জানতাম না আগে কখনো । আমাকে ছাড়া এর পর থেকে আর কখনো থাকলে খুব কাদবো আমি ।
–না জানার কি আছে ? তোমাকে ছাড়াই তো থাকি । দিনে দেখা হয় কতোক্ষন আমাদের ? হাইস্ট এই পর্যন্ত পাচ ঘন্টা থেকেছো আমার সাথে বাকি উনিশ ঘন্টাতো দুরেই থাকো ।
–এবার থেকে সারাদিন থাকার ট্রাই করবো ।
–রাতে কি আমার আরেকটা বউ থাকবে ?
লাবিবা উত্তরে কিছুই বলে না । চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়।তানভীর একটানে নিজের বুকে সাথে মিশিয়ে নেয় লাবিবাকে । মাথাটা কাধে রেখে বলে
–ঘুমোতে অসুবিধা হচ্ছে বলতে হবে । আমি ড্রাইভ করছি । তোমার মতি গতি বুঝার ট্রাই করছিনা । স্টুপিড একটা । এবার ঘুমোও ।
কিছুক্ষন পর লাবিবার দিকে তাকাতেই চার চোখ এক হয়ে যায় । তানভীর নাকে নাক ঘসে বলে
–ঘুমোও আপাদতো । অনেক টাইম পাবে আমাকে দেখার ।
— বসে থাকতে থাকতে কোমড় ব্যথা হয়ে গেছে । ঝাকিতে ঝাকিতে ক্ষুধা পেয়ে গেছে । পচা গন্ধে বমি চলে এসছে । শারমিনকে কাধে রেখে কাধ ব্যথা হয়ে গেছে । মাথা ভোন ভোন করে ঘুরছে।
–ঐটা বাসে হয়েছিলো । এখন খবর কি ?
–সেগুলোর প্রতিফলন হচ্ছে ।
–ওকে ঘুমোও । চোখ বন্ধ করো ।
সকালের দিকে সীতাকুন্ড পৌছে তারা । থাকার জন্য ভালো হোটেল মোটেল নেই বললেই চলে । খোজাখুজি করার পর হোটেল সাইমুনে থাকার ব্যবস্থা করা হয় ।স্টুডেন্টদের ফ্রেশ হয়ে নিতে বলা হয় তারপর হোটেল ভোজ এ খাওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । লাবিবার পাশ দিয়েই বাবু হাটছে । সময় সময় হাত ও লাগাচ্ছে । লাবিবা ছোয়া পেয়ে শারমিনকে নিজের পাশে দিয়ে অপর পাশে চলে আসে । বাবু কিছুটি না বলেই চলে যায় । লাবিবা অবাক হয় এভাবে চলে যাওয়াতে । অন্যদিন তো বাবু একটা কিছু খারাপ কথা বলতোই আজ কেনো বললোনা ? খেতে বসে যায় সবাই । সবার জন্য ভাত কিন্তু লাবিবার জন্য ডুডুলস । লাবিবা খেতে খেতে তানভীরকে দেখতে থাকে । তানভীর দাড়িয়ে দাড়িয়ে স্টুডেন্টদের খাওয়ার তদারকি করছে আর স্যার দের সাথে কথা বলছে । খাওয়া শেষে হোটেলে ফিরে তিনঘন্টা রেস্ট নেয় স্টুডেন্টরা । তারপর বেরিয়ে পড়ে চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। উচু সিডি গুলোতে উঠতে উঠতে প্রথমে যেমন স্টুডেন্টদের মাঝে হৈ হুল্লোড় ছিলো এখনি তেমনি বিরক্তির ছাপ ।লাবিবা জিবনে প্রথম এমন হাটা হাটছে । পা ব্যথা হয়ে গিয়েছে । রাস্তাটায় তারা ছাড়া অন্য জনমানব খুবি কম । এখানে খুব কম মানুষ ই উঠার ইচ্ছে করে । পা ব্যথা হলেও সরু রাস্তার পাশে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের মন কাড়া সৌন্দর্য মন কাড়ে সবার । লাবিবা শারমিনকে ধরে এগিয়ে যাচ্ছে । মাঝে মাঝে আবার দাড়িয়ে পড়ছে হাটুতে ভর করে । রোদের তাপ অনেক থাকায় বার বার ব্যাগ থেকে পানি বের করে খাচ্ছে । তানভীর পেছন থেকে ঠিকই খেয়াল করছে লাবিবার গতিপথ । টিচার হওয়াতে এই একটা সমস্যা স্টুডেন্ট এর কাছাকাছি থাকলেও অনেকের মধ্যে থাকতে হয় স্পেশাল একজনের সাথে আলাদা থাকা যায় না । অনান্য টিচার দের সাথে গল্প করতে করতে হাটছিলো তানভীর । হটাৎ ই সিডিতে উঠতে গিয়ে পা মচকে যায় লাবিবার । পা ধরে চিল্লিয়ে বসে পড়ে ওখানেই । স্টুডেন্টরা ছুটে আসে দেখার চেষ্টা করে ব্যথা পেয়েছে কোথায় । লাবিবা স্যার স্যার বলে কাদতে থাকে । শারমিন বার বার বলে চুপ কর পা মচকে গেছে আর কিচ্ছু হয়নি । তানভীর পেছনে পড়ে গিয়েছিলো একটু । লাবিবার চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখে পা ধরে বসে চিল্লাচ্ছে । তানভীর হাটু মুড়ে বসে পা নিজের দিকে টেনে নিয়ে দেখতে থাকে কোথাও ইনজুরি হয়েছে কিনা । লাবিবা কাদতে কাদতে বলে –চামড়া উঠে নি । মচকে গেছে । পা দুটো কোলে উঠতে চায় ।
লাবিবার মুখের এমন কথায় অবাক সবাই । তানভীর এদিক ওদিক উপরে একবার চোখ বুলিয়ে ঢুক গিলে । এই মুহুর্তে কোলে নিলে সবার চোখে অন্যরকম হয়ে যাবে সে । একজন প্রিন্সিপাল হয়ে স্টুডেন্টের প্রতি এতোটা কনসান কেউ স্বাভাবিক নেবে না । লাবিবার চোখের জলের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে
–আই এম সরি দুষ্টু পুতুল । বাস্তব জীবন অনেক কঠিন । একটু শক্ত তো তোমাকে হতেই হবে । চেয়ারম্যান স্যার বলে
–এই শারমিন এলিজাকে ধরে ধরে নিয়ে যেতে পারবে না? ..জবাও ধরো । হয় ফিরে যেতে হবে নয়তো আমাদের সাথে যেতে হবে। শারমিন জবা ধরে উপরে তুলে দাড় করায় । লাবিবাকে নিয়ে হাটতে থাকে । লাবিবা ব্যথায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটতে থাকে । এমনিতেই পা ব্যথা হয়ে গেছে তার উপর একটা মা মচকেও গেছে। চোখ থেকে অনবরতো জল পড়ছে । তানভীরের সহ্য না হলেও সহ্য করতে হচ্ছে । লাবিবা মনে মনে গভীর কষ্ট পাচ্ছে । ব্যথা পেয়ে কাদছে তাও স্যার একটুও ধরলো না তাকে । এটা মানতেই কষ্ট হচ্ছে ।পথে একটা ছোট্ট দোকান দেখতে পায় । দোকানের সামনে বাশ পাওয়া যাচ্ছে। পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে গেলে বাশ তো লাগবেই । সবাই একটাকরে বাশ কিনে নেয়। লাবিবা এবার বাশে ভর দিয়েই হাটতে থাকে কারো হেল্প ছাড়াই । যারা ট্র্যেকিং করতে পারে তাদের ই এই সাহস টা দেখানো উচিৎ । গরমে গুহার মতো সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে সবার ঘাম ছুটে যায় । বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটা ছাওনি পাওয়া গেলে সবাই গিয়ে ওখানে । পাশে দোকান থাকায় সবাই একটাকিছু কিনে খাচ্ছে। লাবিবা চুপ চাপ বসে আছে । কি আর কিনবে সে ? যা যা সবাই কিনে খাচ্ছে তা তো তার ব্যাগেই আছে । পেছন থেকে হাত দিয়ে সামনে ডাব ধরে । লাবিবা চমকে পিছু তাকাতেই দেখে তানভীর কোট খুলে হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে । শার্টের সামনে দুটো বোতাম খুলা । লাবিবার চোখ উপরে উঠে যায় । উঠে ঘুরে দাড়িয়েই পটাপট শার্টের বোতাম গুলো লাগিয়ে আবার বসে পড়ে । এটা কি হলো ? তানভীর অবাক । ঘুরে এসে লাবিবার পাশে বসে বলে
–হাতে ধরো ডাবটা । খাও ভালো লাগবে । এমনটা কেনো করলে হুটহাট ?
লাবিবা ডাকটা নিয়ে চুমুক দিয়ে বলে
–এমনিতেই মানষের বউ গুলো আপনাকে চোখ দিয়ে গিলে খায় । আজ আপনি ঘেমে শার্ট ভিজে লেপ্টে আছে । তার মধ্যে আবার বুক দেখিয়ে রেখেছেন । ভাবতে পারছেন কি সাংঘাতিক ব্যপার ?
–কেনো ? দেখলে দেখবে । তুমি কি জেলাস ফিল করছো? আমার গরম লাগছে আমি পুরো শার্ট ই খুলে দেবো এখন ।
তানভীর শার্টের বোতাম উপরের টা খুলে ফেলে । আঢ় চোখে মেকি হাসি দিয়ে লাবিবাকে দেখতে থাকে । তানভীর চাইছে লাবিবা আবারো শার্টের বোতাম গুলো লাগিয়ে দিক । একটু আগে কেমন যেন নিজেকে মেরিড মেরিড ভাব আসছিলো । দ্বিতীয়টা খুলতে যাবে সাথে সাথেই লাবিবা ওড়নার পিন খুলে ফেলে।তানভীরের চোখ বড় বড় হয়ে যায় । তাড়াতাড়ি করে লাবিবার হাত ধরে ফেলে । লাবিবা ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে
–ছাড়ুন । আমার গরম লাগছে । আমি খুলে ফেলবো ।
–দুষ্টু পুতুল আমি খুলবোনা বোতাম প্রমিজ । পাগলামো করোনা । সবাই দেখে ফেলবে। আমার জিনিস আমি কাউকে দেখতে দিবো না ।
লাবিবা হাত ছাড়িয়ে চোখে চোখ রেখে বলে
–আমিও আমার জিনিস কাউকে দেখতে দিবো না । এলিজার চোখ জহুরির চোখ । আজে বাজে দিক চোখ পড়ে না । আপনি নিজেও জানেন না আপনার বুক কতোটা মাদকীয়। সেই মাদকে শুধু আমিই মাতাল হবো অন্যকেউ না ।
ওড়নার পিনটা আবার লাগিয়ে কোর্ট হাতে নিয়েই হাটতে থাকে । তানভীর থ খেয়ে বসে থাকে । মাঝে মাঝে তার দুষ্টু পুতুলকে চেনা বড় দায় হয়ে পড়ে তার ।
মন্দিরের সামনে বসে পাহাডের সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকে সবাই । লাবিবা একপাশে বসে পাহাড় কন্যের রুপ লুটতে থাকে । হাতে তার চকলেট । একটা করে কামড় দিচ্ছে আর উপরের দিকে তাকিয়ে মেঘ দেখছে। তানভীর দুর থেকে ঝটপট কয়েকটা ছবি তুলে নেয় । শারমিন এসে হাত ধরে টেনে তুলে লাবিবাকে । লাবিবা পায়ে ব্যথা পায় আবার ।রেগে মেগে শারমিনকে বলে –কুত্তি আমার পায়ে ব্যথা জেনেও তুই টানছিস আমাকে । বেশি ব্যথা পেলে কি তোর জামাই এসে কি কোলে নিয়ে নামাবে আমাকে ?
–দোস্ত ঐ দিকে সেই লেভেলের এক ক্রাস দাড়িয়ে আছে । চল চল আগে আমার সাথে কথা বলিয়ে দে । তারপর আমার জামাই হবো হবো ভাব দেখা গেলে তুই শালী হবি । তখন তোকে কোলে করে নামাবে।
–তুই আবার মাইনষের জামাইয়ের দিক নজর দিছস?
–দোস্ত এইটা আমারি জামাই হবো দেখিস । তুই একবার আয় আমার সাথে ।
লাবিবাকে টানতে টানতে নিয়ে যায় । ছেলেটা পিছু ঘুরতেই দেখে দুটো মেয়ে সটান হয়ে দাড়িয়ে । দু পা পিছিয়ে যায় । কাপা গলায় বলে –কিছু বলবেন ?
লাবিবা শক্ত করে শারমিনের হাত ধরে বলে –আসসালামুয়ালাইকুম । আপনার সাথে একটু কথা বলতে পারি ?
–ওয়ালাইকুম আসসালাম । জী অবশ্যই । হেই এক মিনিট.. আপনাকে চেনা চেনা লাগছে । আপনার মতো আমার একজন জুনিয়র ছিলো । আপনার মতোই হাতে চকলেট নিয়ে থাকতো ।
–নাম কি ?
–লাবিবা।
–ওমা আপনি আমাকে চিনেন? আর এদিকে আপনাকে না চেনা এই নিরিহ লাবিবা আমি ।
–ও রিয়েলি লাবিবা। ও মাই গড । তুমি !! আমি তুমার মুইন ভাই । চিনতে পেরেছো ??
–মুইন ভাই । আপনাকে চিনাই যায় না । এত্তোদিন পর ।
মুইনের ফ্রেন্ড এতোক্ষন শারমিনের দিকে তাকিয়ে ছিলো । এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে বলে
–হাই আই এম নাজমুল হাসান । ইউ ?
শারমিন নাজমুলের দিকে তাকিয়ে হা হয়ে যায় । আগের ক্রাসের সাথে এই ক্রাসের তুলনাই করা যায় না । কাপতে কাপতে হাত এগিয়ে দিয়ে বলে
–সাফিয়া শারমিন।
একটা পিচ্চি এসে লাবিবার উড়না টেনে বলে আপু তোমাকে ঐদিকে নিচে ভাইয়া ডাকছে । ভাইয়া শুনে লাবিবার আত্মা শুকিয়ে যায় । মুইনের সাথে ফোন নাম্বার বিনিময়ের সময় কড়া চোখে তাকিয়ে ছিলো । আল্লাগো মেরে ফেলবে নাকি এবার ? মরলেও যেতে বাধ্য । পাহাড় থেকে নেমে বাচ্চাটার দেখানো জায়গায় পৌছে ভয়ে বুক কেপে উঠে লাবিবার । কাপা গলায় বলে — বাববাববাবু ভাই….।
To be continue______
®লাবিবা______?