একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ?পর্ব_৪৬

0
5859

একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ?পর্ব_৪৬
#লাবিবা_তানহা_লিজা

?
সকাল বেলা বাসার উদ্দ্যেশে রওনা দিয়ে দুপুরে পৌছে যায় । নিজের বাসার সামনে রাস্তায় দাড়িয়ে পড়ে । কতো রকমের ডেকোরাশন দিয়ে যে ডেকোরাটেড করা হচ্ছে..একটু পর তো বোঝায় যাবে না এটা লাবিবার বাসা । বিয়ে হলে নাকি বাবার বাড়িই পরের বাড়ি হয়ে যায় আর পরের বাড়ি নিজের বাড়ি হয়ে যায় । আমারো কি তাই হবে ? একদমি তা না । আমার বাবার বাড়ি তো আমারি । আমার তো আর কোন ভাই বোন নেই যে তাদের দিয়ে আমি চলে যাবো । এটাও আমার ওটাও আমার । আমার শ্বশুর আব্বুর নাকি আরো চারটা বাড়ি আছে ঐগুলো তো আমারি হবে । উফফ লাভলিই..। ইসমাইল মেয়েকে বাসার সামনে দাড়িয়ে একা একাই হাসতে দেখে এগিয়ে আসে । লাবিবা দৌড়ে ইসমাইলের কাছে যায় ।
–একা একা হাসছে কেনো আমার মা টা?
— আব্বু জানো আমার এখন ছয়টা বাড়ি । আগে তো এই বাড়িই ছিলো শুধু । এখন এই বাড়িটাও আমার দাদা শ্বশুরের বানানো খান বাড়িও আমার । শ্বশুর বাবার বানানো চারটা বাড়িও আমার । মোট ছয়টা বাড়ি । স্যার যদি ফ্ল্যাট কিনে ফিউচারে সেটাও তো আমারি হবে ।
আনন্দে চোখে জল চলে আসে ইসমাইলের । লাবিবাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে । কপালে চুমু দিয়ে বলে –চাদ কপাল নিয়ে আমার ঘরে জন্মেছিস রে মা । সামান্য চ্যেয়ারম্যানের মেয়েকে মন্ত্রীর ছেলে বিয়ে করছে চারটা খানি কথা এটা! অনেক সুখী হ মা । আমার কাছেই থাকবি সারাজীবন । দুরে তো বিয়ে হচ্ছে না । বাসায় গিয়ে রেস্ট নে ।
বাসায় আসতেই নুপুর আখি বিনা কোলে তোলে নেয়।
লাবিবা আআ করে চিৎকার শুরু করে । নুপুর আখি জেমি চিল্লাতে থাকে কনে এসেছে কনে এসেছে বলে । লাবিবা কোন মতে ছাড়া পেয়ে এক দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে পড়ে । ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে নাঈম বিছানায় বসে পা ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে লাবিবার চকলেট বক্স থেকে চকলেট খাচ্ছে । লাবিবা তেড়ে এসে বক্স নিয়ে নিতেই নাঈম কেড়ে নিয়ে বলে –দোস্ত কি চকলেট খাস রে তুই…এত্তো ইয়াম্মি..আগে জানলে তো তোর একটা বক্স ও থাকতো না । লাবিবা হেসে ফেলে । তানভীরের দেওয়া জমানো চকলেট গুলোও বের করে । নুপুর নাঈম জেমি লাবিবা মিলে খায় । নাঈম তানিয়াকে ভিডিও কল করে । তানিয়াকে দেখিয়ে দেখিয়ে খাচ্ছে আর বলছে –বুঝলে জানু..তুমিও একটু চকলেট খাও না গো। একদম লাবিবার মতো চকলেট হয়ে যাও । আই লাভ চকলেট । লাবিবা রাগ দেখিয়ে বলে
–ঐ কি বলিস রে ?
–এমন করিস কেনো ? আজকেই তো জালাবো তোকে । বিয়ে হয়ে তো চলেই যাবি শশ্বুর বাড়ি ।
–আর আমার শশ্বুর বাড়ি আমাকে জালাতে যাওয়ার লাইন যে আগেই সাফ করে রেখেছো তাতে ?
তানিয়া মুচকি মুচকি হাসছে আর নাইম বত্রিশ পাটি খুলে হাসছে । নুপুরের ফোন বেজে উঠে । ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে যায় । নাঈম বলে- কিরে! নুপুরিও আবার বারান্দায় যায় কথা বলার জন্য । ব্যপারটা কি ? পেছন পেছন এসে ফোন ছো মেরে নিয়ে বলে –ছেলেটা কে ? নুপুর রাগ দেখিয়ে বলে –নাঈম আমার ফোন দে । লাইনে আছে মনে হয় ।
–আগে বল ছেলেটা কে ? এ হে লাইন কেটে দিয়েছে ।
লাবিবা হাসতে হাসতে বলে –জানু বলে দেই ? নুপুর নিচের দিকে চোখ নামিয়ে লজ্জায় হাসতে থাকে ।
— শোন নাঈম । মুঈন ভাইয়ার কথা মনে আছে ?
–কোন মুঈন ?
–আরে নুপুরির পিছু পিছু যে ঘুরতো । পেটের নুপুর মাথার নুপুর নাকের নুপুর…
–ও মাই গড । ঐ যে চিঠি দিতো আর আর সারা গায়ে নুপুর পরে স্কুলে আসতো ? হা হা হা..
নুপুরকে আর কথা বলতে দেয় না । সারাক্ষন নুপুরের পিছু লেগে নুপুরকে চেতায় মুইন মুইন করে । রাতে শারমিন চলে আসে সাথে নাজমুল ও । কাল গায়ে হলুদ তাই সবাই কাজে ব্যস্ত। বন্ধু দের নিয়ে লাবিবার ভালোই সময় কাটছে । রাতে বারোটার দিকে সবাই ঘুমোতে যায় । চোখে ঘুম লেগে আসছে তখনি ফোন টুন করে বেজে উঠে । হাতে নিয়ে দেখে তানভীর এসএম এস দিয়েছে ।
“সারাদিনের ব্যস্ততায় ফোন দেওয়ার সময় পায় নি । রাগ করো না তার জন্য ।তোমার কথা সবসময় মাথায় ছিলো । গুড নাইট ।”
লাবিবা মাথায় হাত রেগে জিহবায় কামড় দেয় । সেতো ভুলেই গিয়েছিলো ডলফিনের কথা অথচ ডলফিনটাই মনে রেখেছিলো । লাফ দিয়ে বারান্দায় গিয়ে কল দিতেই ওপাশ থেকে রিসিভ করে । ঘুমু ঘুমু ভয়েজে তানভীরের মুখে আই লাভ ইউ শুনে কেপে উঠে শশরীরে । লাবিবার কোন আওয়াজ না পেয়ে তানভীর আবার বলে — দুষ্টু পুতুল.. একটু ভিডিও কলে আসবে এক্ষুনী । জাস্ট একবার দেখবো খুব ইচ্ছা করছে । লাবিবা হু বলতেই ফোন কেটে ভিডিও কল করে । লাবিবা অপ্রস্তুত হাতে রিসিভ করে । তানভীরকে দেখেই লাবিবা মাথা নিচু করে ফেলে । কি বজ্জাত ছেলে ..উদাম শরীরের ভিডিও কল করে নাকি কেউ ! আগে না হয় হা করে দেখতাম এখন তো লজ্জা করছে প্রচুর । এদিকে এলোমেলো চুলে এশ কালার গেঞ্জিতে এতো স্মিগ্ধ লাগছে যে তানভীর চোখ সরাতে পারছে না । নিশ্বব্দে দেখে যাচ্ছে । লাবিবাই বলে উঠে –দেখা শেষ এবার রাখি ।
–পুতুল বউ একটু আসি ?
— কোথায় ?
— তোমার কাছে । বারান্দায় থাকো । যেতে যতটুকু টাইম লাগে ।
–না আসবেন না । আপনি অনেক ক্লান্ত । এবার ঘুমোন । গুডু গুডু নাইট ।
বলেই ফোন কেটে দেয় । বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ।
_________
পরদিন দুপুরে পার্লার থেকে তিন জন মেয়ে আসে । এসেই লাবিবাকে সামনে বসিয়ে ঠাট্টা মসকরা করতে থাকে । একেকটা দুষ্টু দুষ্টু কথা বলে হাসাহাসি করছে আর লাবিবা লজ্জায় মরে যাই যাই অবস্থা । সাজানোর পালা আসলে কনের আগে কনের বান্ধুবীদের সাজানো হয় আগে ।তাদের দেখে সবাই বলবে তাদের ই গায়ে হলুদ আজ । সালমা নামের মেয়েটি লাবিবাকে সাজাতে আসে এবার । লাবিবা বিছানা থেকে বিনার রেখে যাওয়া প্যাকেট গুলো হাতে নেয় । বড় প্যাকেট থেকে টকটকে হলুদ রংয়ের লেহেংগাটা বের করে চোখ ধাধিয়ে যায় । টিস্যু নেট কাপড়ে সিকুয়েন্সের কাজের উপর স্টোন বসানো মাঝে মাঝে আবার জরির ও কাজ । হাতে তুলে দেখে গর্জিয়াসের তুলনায় অনেক হালকা । সালমা মিস্টি হেসে বলে –বাহহ অনেক সুন্দর চয়েজ তো আমাদের প্রিন্সিপাল সাহেবের । আয়েশা নাদিয়া নুপুরদের সাজিয়ে ভিতরে আসতে আসতে বলে –নয়তো কি এতো মিস্টি পরীকে চোখে লাগে ? লাবিবা গাল লাল করে বলে –দেখুন আপুরা ..আপনারা কিন্তু আমাকে শুধু শুধু এতো লজ্জা দিচ্ছেন । এটা একদমি ঠিক না ।
আয়েশা হেসে বলে –তাইতো ভারী অন্যায় করছি । সব লজ্জা যদি আমাদের সামনেই পেয়ে যায় তাহলে প্রিন্সিপালের সামনে কি পাবে । সরি গো । লাবিবা আর কথা বাড়ায় না । এরা লজ্জার উপর লজ্জা দিয়েই যাবে । বাই দ্যা রাস্তা আমি এতো লাজুক হলাম কোথা থেকে ?। লেহেংগার ফিতা বাধতে বাধতে সালমা বলে –সাজার আর দরকার কি ? এখনি চোখ ফেরানো যাচ্ছে না । লাবিবা খাটের উপর বসে বলে –আপুরা আপনারা কি মেরিড নাকি আনমেরিড ?
সালমা বলে আমি মেরিড আর ওরা আনমেরিড । জানো আমার হলুদের সময় কি হয়েছিল ? আমি তখন নতুন পার্লার দিয়েছি । অনেক মেয়ে আসতো । একটুও সময় পেতাম না । আমিও আসক্ত ছিলাম আমার কাজে। মা তাই বিয়ের জন্য আমাকে আটক করেছিলো । পার্লার বন্ধ করে দিয়েছিলাম । তোমার ভাইয়া একটা মেয়েকে দিয়ে ফোন দিয়ে আসতে বলে আমাকে । আমি তো না করে দিই । তারপর বলে একঘন্টায় কমপপ্লিট হয়ে যাবে ডাবল টাকা দিবে । আমিও ভাবলাম ডাবল টাকা পাবো এখনো অনুষ্টানের দেড়ি আছে মাত্র এক ঘন্টার ই কাজ । তাই লুকিয়ে পার্লারে চলে এলাম । এসে দেখি তোমার ভাই দাড়িয়ে । আমাকে পেছনের গলিতে নিয়ে গিয়ে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে বলে আমার বউয়ের প্রথম হলুদ টা আমিই দিলাম । আমার সেকি লজ্জা । কিছু না বলেই চলে এসেছি । এরেঞ্জ ম্যারেজ ছিলো আমাদের তাই হয়তো এমন হয়েছে ।
কথা বলতে বলতে লাবিবার সাজানোও শেষ ।ওরা চলে যেতেই লাবিবা ফোন হাতে নেয় । তানভীরকে কল দিতেই রিসিভ করে । লাবিবা মন খারাপ করে বলে –হ্যালো ।
–হা বলো।
— জানেন একটা পার্লারের আপু কি বললো ?
–কি বললো ?
— আপুর গায়ে হলুদের সময় তার হাজবেন্ড নিজে প্রথম হলুদ লাগিয়েছে । অনেক ভালুপাসে আপুটাকে । আজকাল এমন ভালুপাসা খোজে পাওয়া যায়না তাই না ?
–এর থেকেও বেশি ভালুটাসা খুজে পাওয়া যায় । বাসার পেছনের দরজা খুলো চুপিচুপি আমি দাড়িয়ে আছি ।
লাবিবা লাফ দিয়ে উঠে দাড়িয়ে বলে –কিহ? কোথায় ? কিভাবে ?
— দরজা খুলো তারপর বলছি ।
লাবিবা বেরিয়ে দেখে কেউ নেই এদিকে । দরজা খুলতেই তানভীর লাবিবাকে নিয়ে তারাহুরো করে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয় । কি থেকে কি হলো এখনো মাথা ঘুরছে লাবিবার । তানভীর দরজায় হেলান দিয়ে তার হলুদ পরীটাকে দেখছে । মারাত্মক সুন্দরের উপর যদি কিছু থাকতো তাহলে তাই বলা যেতো । আপাদতো কিছুই বলতে চাইছে না তানভীর শুধু হলুদ বউ ছাড়া । লাবিবা আগা গোড়া হলুদ তানভীর কে দেখে বলে উঠে –ওমা হলুদ ডলফিন? উফফ লাভলি? তানভীর একটানে নিজের কাছে এনে লাবিবার কোমড় জড়িয়ে ধরে । লাবিবার গালে নিজের হলুদ মাখানো গাল ঘসে হলুদ লাগিয়ে দেয় । লাবিবা লজ্জায় চোখ বন্ধ করে নেয় । হাতের হলুদ গুলো লাবিবার পিঠে লাগাতেই লাবিবা শক্ত করে হলুদ পাঞ্চাবী খামচে জড়িয়ে ধরে । আস্তে আস্তে হাতেও লাগিয়ে দেয় । হাত পা গাল পিঠ হলুদে মাখামাখি হয়ে গেলে তানভীর লাবিবার কানে চুমু দিয়ে বলে –ঐ ভালুপাসার থেকে আমার ভালুপাসা হাজার গুনে বেশি । মিলিয়ে নিও ।
–আপনি এতো ফাস্ট কেনো ?
— আমার বউকে আমার গায়ের হলুদ লাগাবো তাই। আমার গায়ের হলুদ নামে যেগুলো আসছে সেগুলো তো বাটা হলুদ আমার গায়ের তো নয় । এবার ছাড়ো যেতে হবে ।
–আরেকটু থাকুন না । ছাড়তে ইচ্ছা করছে না ।
–ধরা পড়ে যাবো তো ।
–গেলে যাবেন তো কি হয়েছে ?
বারান্দা থেকে ফিস ফিস শব্দ আসছে । লাবিবা তানভীর ভয় পেয়ে যায় । কেউ বারান্দায় আছে। ধরা পড়ে গেলে লজ্জায় পড়ে যেতে হবে । লাবিবা তানভীর কে দাড়াতে বলে গুটি পায়ে বারান্দায় আসে । এসেই শক খায় । হাতের ইশারায় তানভীরকে ডাকতেই তানভীর ও এসে শক । তানিয়া দেয়ালে লেগে দাড়িয়ে আর নাঈম এক হাত দেয়ালে রেখে তানিয়ার মুখোমুখি দাড়িয়ে । দুজনের মুখ হলুদে ভরপুর । এ দৃশ্য দেখে তানভীর আর লুকিয়ে না থেকে সামনে এসে গলা খাকারি দিতেই দুজন দুদিকে ছিটিয়ে যায় । তানভীর গম্ভীর গলায় বলে –আমার তো মনে হচ্ছে আমার আগে তদের ই তাড়া বেশি । বিয়েটা আমার না হয়ে তদের হলে বেশি ভালো হতো । লাবিবা চেচিয়ে বলে উঠে –কিহ এবার কি আপনি আমাদের রেখে ওদের বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন ? মানি না মানবোনা । হরতাল হরতাল । বাইরে থেকে চেচানো শুনে লোকজন চলে এসে দেখে বারান্দায় নতুন বর দাড়ানো । তানভীর রাগ চেপে বলে –আস্তে চেচানো কি যায় না ? গলার ভয়েজ সব সময় ফুল ভলিয়মে থাকে তোমার ।
এদিকে নতুন জামাই আসার খবর শুনে ইসমাইল বেলাল মুক্তা চলে আসে । তার পর সিদ্ধান্ত নেয় লাবিবা তানভীরের একসাথে গায়ে হলুদ করাবে । তানিয়া হেসে বলে –ভাইয়া তোর দুইবার হলুদ হবে ভাবীর একবার হি হি ।
দুজনকে বসিয়ে একে একে সবাই হলুদ লাগায় । হলুদ লাগানো শেষে দুজনকেই গোসল করানো হয় । খান বাড়ী থেকেও একসাথে হলুদের কথা শুনে সবাই চলে এসেছে । তানভীর মেজেন্টা কালার শার্ট আর ডেনিম প্যান্ট পড়ে । জামাইয়ের জন্য এনে রাখা ড্রেস বিয়ের পরে না দিয়ে আগেই পড়ানো হয় । লাবিবাকে মেজেন্টা রংয়ের হলুদ পাড়ের শাড়ি পড়ানো হয়েছে । সাথে ফুলের অরনামেন্টস। গোল হয়ে বসে সবাই মেহেন্দি লাগানোর জন্য । যারা মেহেন্দি লাগিয়ে নিয়েছে তারা সংগীতে নাচ করছে । সবাই বসে এই অনুষ্টান ইনজয় করছে । লাবিবাকে মেহেন্দি পড়ানোর সময় হুট হাট তানভীর গিয়ে পাশে বসে পড়ে । সালমা হেসে বলে –কি ব্যপার প্রিন্সিপাল সাহেব আপনিও হাতে মেহেদি লাগাবেন নাকি ? তানভীর হাত থেকে মেহেদিটা নিয়ে বলে –উহু ..লাগিয়ে দিবো, আমার পুতুল বউয়ের হাতে ‌ । সবার মুখ হা হয়ে যায় । তানভীর লাবিবার হাত নিজের উরুর উপর রেখে মনযোগ দিয়ে মেহেন্দি দিতে থাকে । লাবিবা অবাক হয়ে বলে –উফফ লাভলি? স্যার. আপনি এতো সুন্দর করে মেহেদি পরাতে পারেন?।
–শিখেছিলাম তোমাকে পড়াবো বলে । হেপি টারমারিক সিরিমনি পুতুল বউ।অনেক সুন্দর লাগছে তোমায় । তোমার এই সৌন্দর্য মিস করবোনা বলেই চলে আসছি । যে যা ভাবার ভাবুক । আই ডোন্ট কেয়ার । আমি শুধু তোমাকেই দেখতে চাই । তোমাকে হলুদে কেমন লাগে সেটাই দেখতে চাই। জানো এইটা শুধু মেহেদি পড়ানো নয় । এইটা আমার একটা ইচ্ছা একটু ভালুপাসার বহিপ্রকাশ । লোকে বলে এই মেহেদির রং যতো গাঢ় হবে ততো স্বামী ভালোবাসবে । আর তোমার কি ভাগ্য দেখো মেহেদি স্বামীর হাতেই পড়ছো । আমার জন্য এতোবছর অনেক কষ্ট পেয়েছো দুষ্টু পুতুল । অবুঝ মনে আমার জন্য বাসা বানিয়েছো। দিনের পর দিন চোখের জল ফেলেছো । আমাকে না দেখে না শুনে আরো বেশি ভালোবেসেছো । জানো কবুল বললে মন থেকে টান চলে আসে । আখি রাজিবের বিয়ের দিন খেলার ছলেই তোমার থেকে কবুল বলিয়ে নিয়ে ছিলাম আমি । খেলার ছলে তুমি বললেও আমি মন থেকেই বলেছিলাম । সেদিন রাতে তানিয়ার রুমে আমার বুকে সারারাত ঘুমিয়েছিলে তুমি । আর আমি তাকিয়ে ছিলাম তোমার নিষ্পাপ মুখটির দিকে । সেদিন ঘুমিয়ে ছিলাম তোমার গায়ের তিব্র সুমিষ্ঠ সুগন্ধে। এই সাতটা বছর আমি সেই দিনের কথা ভেবেই অপেক্ষা করে এসেছি । আমার সেই অপেক্ষার অবশান হতে যাচ্ছে দুষ্টু পুতুল । আমি আমার সবটুকু দিয়ে তোমায় ভালোবাসবো । এতোটাই ভালোবাসবো যে সেই চোখের পানি গুলোকে তুমি স্বার্থক ভাববে । ভালুপাসি অনেকমাচ পুতুল বউ।

To be continue_____

®লাবিবা____

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here