একগুচ্ছ_কালো_গোলাপ?পর্ব_৫০
#লাবিবা_তানহা_লিজা
?
তানভীর লাবিবাকে আরেকটু জোরে নিজের কাছে চেপে ধরতেই লাবিবা লাফিয়ে উঠে পাশে বসে পড়ে । চোখ গুলো বড় বড় করে বলতে থাকে
–ও আমার আল্লাহ আমাকে ঐভাবে ধরতে বলবেন না প্লীজ। আপনার ডলফিনের মতো শরীরটা আমার উপর পড়লে আমি সেখানেই চিপকাইয়া শহীদ খাইয়া ফেলমু । আপনি যদি আমাকে একটা গুতা দেন সেখানেই আমি শেষ । বেশি কিছুনা আমার পেটের উপর একটা পা উঠিয়ে দিলেই আমি পেট ফেটে ব্রাস্ট হয়ে যামু । আমাকে ধরলে মনে হয় আমি ছাগল ভর্তা মুরগী ভর্তা চানাচুর ভর্তা হইয়া যাই । যখন আমার একেবারে সামনে আসেন আমার শ্বাস কষ্ট শুরু হয় মনে হয় হার্ট এট্যাক করে তখনি শহীদ খামু । কিন্তু আমার এতো তাড়াতাড়ি শহীদ খাওয়ার কোন শখ নাই । আমার এখনো বিয়ে হয় নাই থুক্কু আমার এখনো টুইনস ,টুইনসের ঘরের নাতি, নাতির ঘরের পুতি ,পুতির ঘরের হুতি , হুতির ঘরের মুতি, মুতির ঘরের গুতির মুখ দেখা হয় নাই । তাই আমি আপনার কাছে আসি না । আবার যখন আসি তখন আর দুরে যেতে ইচ্ছা করে না । তাই আমি আর যাই না । আমি তো আমার ডেবিলের কাছেও যায়না । আপনি তো এখন আমার হাব্বি । ওমাগো হাব্বি তো আরেক ডেবিল । ডেবিল মানেই তো কতো কি । শারমিন যে বলেছিলো হাব্বি নিশ্বাস বন্ধ চু____
বলেই জিহবায় কামড় দেয় । আরো বড় বড় চোখ করে তানভীরের দিকে তাকিয়ে থাকে । মনে মনে ইয়া খোদা ইয়া খোদা বলতে থাকে । না জানি এখন লাবিবার উপরে কি বিষ্ফোরন ঘটাবে । কিন্তু তানভীর মুচকি মুচকি হাসছে । এক পর্যায়ে জোরে জোরে হাসতে থাকে । লাবিবা আরো অবাক হয়ে হাসি দেখতে থাকে । কোন মতে হাসি থামিয়ে বলে
–পুতুল বউ..কি বললে এসব ? কোন সেনটেসের সাথে কোন সেনটেসের মিল ই পেলাম না । সব আওলা -ঝাওলা কথা । কোথা থেকে শিখলে এসব ?
লাবিবা অসহায় মুখ করে বলে –জানিনা ।
–আমার গিফট টা কি তুমি নিজের থেকে দিবে নাকি আমি চেয়ে নিবো ?
–কি কি কি গিফট চাই আপনার ?
তানভীর মুখটা লাবিবার মুখের সামনে এনে নাক টিপে দিয়ে বলে —মোরবা করবে আমার জন্য ।
–এখন? কেনো? আপনিতো বলেছিলেন আমার ডান্স করা যাবে না আর ।
–আমিতো বলেছিলাম অন্য কারো সামনে না করতে । শুধু আমার সামনে করতে । এখন তোমার পার্টনার তো আমি । হুমম । বিলিভ মি ।
–আ আ আমি মোরবা করবো না । আমার শরম করে।
–আসলে তুমি পারো না তাই করবেনা । আগেই বললে হতো । আমি তো জানতাম তুমি সব পারো । আচ্ছা বাদ দাও পারোনা যখন কি আর বলবো ।
–আমি পারি ।
–একটুও পারো না । পারলে অনেক আগেই বলা মাত্র দেখাতে ।
–আমি পারি ।
–কচু পারো ।
–আমি সত্যিই পারি । গান প্লে করুন । মোরবার জন্য বিশেষ কয়েকটা গান আছে ওগুলো প্লে করুন ।
–কি কি গান ?
— হিন্দি গান প্লে করুন । সাচ এস –দিলবার দিলবার, ঘুঙুরু, ঝামাক ঝাম পায়েল বাজে, মুহে রাঙ দে, নেশা এ দিল, জারা জারা বে হেকতিহে ,লাহুমে চারগায়া এর মধ্যে যে কোন একটা দিলেই হলো ।
–এর থেকেও বেটার গান প্লে করবো আমি । এবার তুমি উঠে দাড়াও ।
লাবিবা উঠে দাড়িয়ে আবার বসে পড়ে । অসহায় লুক নিয়ে বলে –না করলে হয় না ? মোরবা করলে আমি অন্যরকম হয়ে যাই ।
–পারো না যখন থাক । আমি না হয় বেবিকে বলবো দেখাতে । বেবি অনেক বার দেখিয়েছে ইংল্যান্ডে জানো । যা সুপার লাগে না …. তুমি বরং ওর দেখে শিখে নিও ।
–ঐ সাদা বিলাই টা তাইনা ?
–হুম । ও যখন মোরবা করে যা জোস লাগেনা ..উফফ কি বলবো তোমাকে ..শাড়ি পড়ে চিকন কোমড়টা
–কিহহ আপনি দেখেছেন এসব ?
–হুম । এত্তো হট মেয়ে আমি জিবনে একটাই দেখেছি জানো ..চোখ ফেরানো যায় না । কোথায় ও আর কোথায় তুমি ।
–আমাকে ইনসাল্ট করছেন ?
–ইনসাল্ট কেনো করবো ? তুমি তো আর তার মতো নও..হতেও পারবেনা । উফ যা হট ..স্লিম বেলি উম উম…
লাবিবা মুখ চেপে ধরে । রাগি লুকে তানভীরের চোখে চোখ রেখে বলে
–আমার হাজবেন্ড হয়ে অন্য মেয়ের মোরবা দেখা তাইনা ? আরো তার চিকন কোমড় ও দেখা .. স্লিম বেলি তাইনা ? তানভীরের একহাত নিজের বেলিতে রেখে আমি না তাদের মতো না আর হতেও চাই না । নিচের দিকে আর যেই নামুক মিসেস তানভীর খান কখনোই নামবে না ।
তোড়া থেকে একটা গোলাপ মুখে নিয়ে দু কদম পিছিয়ে শাড়ির আচলটা হাতের মুঠোয় চিকন করে নেয় । যা দেখে তানভীরের হার্ট স্ট্রোক করা অবস্থা । এরোকম মুটিভেশন দেখার ই ট্রাই করছিলো এতোক্ষন কিন্তু এতোটা যে আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে যাবে ধারনার ও অতীত । নেক্সট স্টেটমেন্ট কি হবে তা ভেবেই পা দিয়ে ফ্লোরে পা ঘামচে ধরে তানভীর । লাবিবা কারিনা কাপুর ভঙিতে কোমড়ে হাত রেখে বলে — নাউ ইউ কেন প্লে মিউজিক । লাইফের বেস্ট মোরবাটা আজি দেখবেন আপনি । পার্টনার হতে চাইলে আসতে পারেন ।
তানভীর কোর্ট টা খুলে বাকা হেসে গান প্লে করে । মিউজিক শুনে লাবিবা মুখে দুষ্টুমির হাসি হেসে স্টার্ট না করেই দাড়িয়ে থাকে । তানভীর শার্টের উপর বোতাম খুলতে খুলতে এগিয়ে যায় । লাবিবার একহাত তুলে শব্দ করে একটা চুমু দেয় । লাবিবাকে ঘুরিয়ে দিয়ে পার্টনারের স্থান টা দখল করে নেয় । লাউডলি গান বাজতে থাকে আর লাবিবার নাচে তানভীর মুগ্ধ হতে থাকে ।
?আঙ্গে লাগা দে রে.. মোহে রাঙ্গ লাগা দে রে !!
মেতো তো তেরি জগানিয়া তু জগ লাগা দে রে
জগ লাগা দে রে ..প্রেমকা রগ লাগা দে রে
মেতো তো তেরি জগানিয়া তু জগ লাগা দে রে
রাম রাতান ধান,লাগাউ মাগান মান তাউ মোরে চান্দান রে…
উজলি করি প্রিত পায়াসাত রাঙ্গ লাগা দে রে
আঙ্গে লাগা দে রে.. মোহে রাঙ্গ লাগা দে রে
মেতো তো তেরি জগানিয়া তু জগ লাগা দে রে
রাত বানজার সি হে ..কালি খাঞ্জার সি হে..!!
তেরে সিনে কি লো ..মেরে আন্দার সি হে
তু হামা দে তেসে,তু মেরা তান জালে
জ্বলা দেরে সাং জ্বলা দে রে ,মোহে আঙ্গ লাগা দে রে
মেতো তো তেরি জগানিয়া তু জগ লাগা দে রে
রাস হি রাত মে..তেরি হার বাত মে !!
বল মে কেয়া কারু ..এসে হালাত মে
হু মে তেরি মালাং তুহি মেরি নেশা
চান্দা দে রে ভাং চান্দা দে রে প্রেম কি ভাং চান্দা দে রে
মেতো তো তেরি জগানিয়া তু জগ লাগা দে রে
জগ লাগা দে রে ..প্রেমকা রগ লাগা দে রে
মেতো তো তেরি জগানিয়া তু জগ লাগা দে রে
রাম রাতান ধান,লাগাউ মাগান মান তাউ মোরে চান্দান রে…!!!?
আকাশে পূর্ণ চাদ ধরা দিয়েছে । দখিনের খোলা জানালা দিয়ে হিমেল হাওয়া হিম নিয়ে আসছে । হিমেল হাওয়ায় বার বার শরীর কেপে উঠছে । সাথে গলার নিচে তানভীরের তপ্ত নিশ্বাস সারা শরীরে শিহরন বইয়ে দিচ্ছে । পেটের উপর তানভীরের দুষ্টু হাতের দুষ্টু ছোয়া পাগল করে দিচ্ছে । শরীরে এক বিন্নু যেনো শক্তি পাচ্ছে না । এ কেমন অনুভুতি ? কাপা স্বরে তানভীরের দিকে তাকিয়ে কোন মতে ডাক দেয় –তানভীর…..
চমকে তাকায় তানভীর । পুতুল বউয়ের মুখে নিজের নাম শোনা এটা কখনো আশাও করেনি । অথচ আজ সে শোনেই ফেললো । লাবিবা তানভীরের চোখ তাকিয়ে চমকে উঠে । অসম্ভব লাল হয়ে আছে চোখ দুটো । এ চাহনি একেবারে অন্যরকম যার সাথে কখনো দেখা হয়নি লাবিবার । তানভীর হুট করে লাবিবাকে কোলে তুলে নেয় । লাবিবা গলা জড়িয়ে ধরে । লাবিবা আস্তে করে বলে –তোমাকে অন্যরকম লাগছে তানভীর । এমন কেনো দেখাচ্ছে ? কিভাবে হচ্ছে ?
–যেভাবে তোমার মুটিভেশন এক্সপ্রেশন বডি ল্যাংগুয়েজ মাউথ ল্যাংগুয়েজ চেঞ্জ হচ্ছে । আমার তোমাকে চাই বউ । হবে তুমি আমার ?
লাবিবা বুঝতে পেরে কোলেই লাফালাফি শুরু করে । শরীরে শক্তি না থাকায় তানভীর সামলে নেয় । লাবিবা চিল্লাতে থাকে –ও মা গো ।।।আপনার এই চাওয়া .. আমি তো বুঝতেই পারি নি । আমি থাকবোনা আপনার সাথে । এক্ষুনি চলে যাবো । তাই তো বলি আপনি শুধু শুধু মোরবা দেখতে চাইবেন কেনো?
তানভীর বিছানার উপরে উঠে বলে –লাফালে ফেলে দিবো কিন্তু ? লাবিবা মাথা নাড়িয়ে না করে । তানভীরের শার্ট জোরে ধরে বলে –ব্যথা পাবো তো । পরে বলবেন কোমড় ভাঙা ব্যথাওয়ালা বউ কিচ্ছু পারে না । তানভীর সুন্দর ভাবে হাত ফসকে দেয় । লাবিবা এক চিৎকারে বিছানায় পড়ে যায় । হুস ফিরতেই দেখে তানভীর পকেটে হাত হাত রেখে একটি একটি করে শার্টের বোতাম খুলছে । শার্টটা ছুড়ে ফেলে বলে
–কিহ ব্যথা পেলে তো ? হা হা আমি কি তোমাকে ব্যথা দিতে পারি পুতুল বউ? এই বিছানা সো সফট বাট নট মোর দেন ইউ । ইউ আর সুপার সফট ওমেন।
লাবিবার উপরে আসতেই লাবিবা বুকে হাত দিয়ে আটকে দেয় । এই মুহুর্তে কি হতে চলছে ভেবেই মাথা ঘুরাচ্ছে । হাত দিয়ে তানভীরকে ঠেলতে চাচ্ছে । না পেরে বলে –উফফ আপনি এতো হার্ড কেনো ?
–তুমি এতো সফট তাই । হাত সরাও পুতুল বউ । তোমার এই দুর্বল শরীরের নরম হাত দুটো দিয়ে আমাকে না ঠেলে গলা জড়িয়ে ধরো । লাবিবা হাত ছেড়ে উল্টো ঘুরে যায় । তানভীর কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে বলে –তুমি চাইলেও সরে যেতে পারবেনা । নাউ ইউ আর আউট অফ কন্ট্রোল । তোমার টুকি ধা খেলার সময় শেষ বউ পাখি । তুমি দুষ্টু পুতুল থেকে আমার পুতুল বউ হয়ে গেছো । একরাশ প্রেম দিয়ে বেধেছি তোমায় আমি । মাতাল পরী আমার একরাশ প্রেমে ডুব দিয়ে মাতাল করে দাও আমায় । আমি তোমার প্রেমে বেডলি নেশাগ্ৰস্থ। কানে কামড় বসাতেই ঘুরে তাকায় লাবিবা । লাবিবার কপালে ঠোটের ছোয়া দিতেই কেপে উঠে লাবিবা । গালে নাকে ঠোটে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে । দু হাতে পিঠ জড়িয়ে ধরে ।গলায় মুখ গুজে তানভীর । এলোপাথাড়ি চুমুতে পাগল করে দেয় । পেটের উপর দিয়ে হাত নিয়ে শাড়ির কুচি খুলে দিতেই তানভীরের হাতের উপর হাত রাখে । চোখে চোখ পড়ে দুজনের । লাবিবা বলে –আমার শাড়ির কুচি কেনো খুলছেন ? একটু আগেই তো পড়িয়ে দিলেন তাহলে এখন খুলে দিচ্ছেন কেনো?
— এমনি এমনি তো পড়াইনি । খুলার জন্যই পড়িয়েছি । আমি পড়িয়েছি আমিই খুলবো ।
–তাহলে আমি পরে পড়বো কিভাবে ?
–আমি কেনো আছি ?
আর একটাও কথা বলেনি লাবিবা । তানভীর নাকে নাক ঘষে দিয়ে বলে –আরেকবার যদি হাত এদিক সেদিক ঘুরে বেধে রাখবো তাহলে ।
{ স্টোরির ক্যাটাগরি যেহেতু রোমান্টিক সেহেতু রোমান্স থাকবেই । আজকের পার্টে ফুল স্টোরির হাইস্ট রোমান্স দেওয়া হয়েছে । আমার ভাবনার থেকে অনেকটা কন্ট্রোল করে লিখার ট্রাই করেছি। আমার পার্সোনালি মনে হচ্ছিলো এরকম না লিখলে গল্পটায় কিছুটা অপূর্নতা থাকবে। যদি কারো মনে হয় লেখিকা এরকম না দিলেও পারতো তাহলে প্লিজ ক্ষমার চোখে দেখবেন? ।
— ইতি লাবিবা? }
To be continue____