একটাই তুমি ??,দ্বাদশ বা অন্তিম পর্ব

0
5268

একটাই তুমি ??,দ্বাদশ বা অন্তিম পর্ব
লেখনীতে: ইনায়াত আহসান (ছদ্মনাম)

কাল রাতে ইনায়াতের কাছে যাওয়ার পর মনটা আগের চেয়ে কিছুটা হালকা হয়েছে। তবে ইনায়াত এখনো স্পন্দনের কোনো কথার উত্তর দেয় নি, তার সাথে কথাও বলে নি। তাহলে কি তার প্রেয়সী তাকে কোনো দিন ক্ষমা করবে না?

এসব কথা ভাবতে ভাবতে স্পন্দন বাসায় প্রবেশ করে। নিজের ঘরটায় কেমন যেন শূন্যতা অনুভব হয় এখন! ইনায়াত নেই বলেই কি এমনটা হয়!

রুমের দরজাটা খুলতেই অবাক হয়ে যায় স্পন্দন। অন্ধকার রুমটায় ছোট ছোট ক্যান্ডেল দিয়ে আলোকিত করা। গোলাপ আর বেলী ফুলের সুবাস টাও এসে বারবার তার নাকে বাজছে!
কে করেছে এসব? তাহলে কি ইনায়াত ফিরে এসেছে!
কথাগুলো আওড়াতেই স্পন্দনের চোখ পড়ে ব্যালকনির দিকে। কালো শাড়ি পরিহিতা একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। খোলা লম্বা চুলগুলো বাতাসের সাথে যেন খেলা করছে। রাতের আবছা আলো আর জ্বলন্ত ক্যান্ডেল গুলোর আলোতে ইনায়াতকে যেন একদম স্নিগ্ধ আর আকর্ষণীয় লাগছে।
স্পন্দন আনমনে বলে ফেলে,
‘ শ্যামাঙ্গিণী’

ধীর পায়ে এগিয়ে যায় ইনায়াতের দিকে।
কাঁধের উপর কারো চেনা পরিচিত নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ায় শিউরে উঠে ইনায়াত। স্পন্দন তার হাত দুটো এগিয়ে ইনায়াতের কোমড়ে রাখে। এদিকে ইনায়াত আবেশে চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে থাকে।
স্পন্দন তার ঠোট যুগল এগিয়ে নিয়ে যায় ইনায়াতের কানের কাছে। ফিসফিসিয়ে বলে উঠে,

স্পন্দন: ‘ কি আছে এমন তোর মাঝে ইনায়াত, কি এমন মাদকতা যা আমায় বারবার তোর প্রেমে নতুন করে ফেলতে বাধ্য করে!
শাড়িতে আজ তোকে বড্ড বেশি মায়াবী লাগছে, শ্যামাঙ্গিণী!

শ্যামাঙ্গিণী নামটা শুনে ইনায়াতের সর্বাঙ্গে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যায়।

স্পন্দন: ‘ আজ যে খুব করে পেতে ইচ্ছে করছে , ইনায়াত! যেখানে থাকবে না কোনো বাধা , কোনো বারণ। দুজনের মাঝে থাকবে না কোনো দূরত্ব! হবো মিলেমিশে দুজন একাকার!
দিবে কি সেই অনুমতি, মায়াবতী?’

কথাগুলো শুনে লজ্জায় মাটিতে মিশে যাওয়ার অবস্থা ইনায়াতের। গালগুলো লাল আভা ধারণ করছে! কোনো কিছু না বলে পেছনে ঘুরে সেও স্পন্দনকে জড়িয়ে ধরে।
স্পন্দন ও তার উত্তর পেয়ে যায়। তাই সেও মুচকি হেসে ইনায়াতকে কোলে তুলে নেয় এবং রুমে প্রবেশ করে। অতঃপর রাত যত গভীর হতে থাকে; ভালোবাসার প্রজাপতি দুটোও একসাথে মিশে যেতে থাকে!

সকালের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ছুটে যায় ইনায়াতের। এতক্ষণ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে স্পন্দনের বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিল সে। গত রাতের কথা মনে পড়তেই লজ্জায় লাল হয়ে যায় সে। কিছুক্ষণ স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে থাকে সে। তারপর তার গালের কোণে থাকা তিলটার উপর আঁকিবুঁকি করতে থাকে সে।
চোখ দুটো বন্ধ রেখেই হঠাৎ খপ করে ইনায়াতের হাত ধরে ফেলল স্পন্দন। এতে কিছুটা হকচকিয়ে যায় ইনায়াত। তারপর মুখ ফুলিয়ে বলে উঠে,

ইনায়াত: ‘ আপনি জেগে ছিলেন? তাহলে এতক্ষণ অযথা ঘুমানোর ভান ধরে ছিলেন কেন!’

স্পন্দন ঘুরে ইনায়াতকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে আর দুষ্টুমির ভাব নিয়ে বলে,

স্পন্দন: ‘ যদি ঘুমানোর ভান না করতাম তাহলে জানতাম কি করে যে আমি ঘুমিয়ে থাকলে আমার বউটা লুকিয়ে লুকিয়ে আমায় আদর করে, হুম!’

ইনায়াত স্পন্দনের দুষ্টুমি বুঝতে পেরে স্পন্দনকে কিছুটা ধাক্কা দিয়ে উঠে চলে যায় আর স্পন্দন ইনায়াতের যাওয়ার পানে চেয়ে হাসতে থাকে।

সকালের নাস্তা সেরে একটু কাজে বের হয় স্পন্দন। বিকেলের দিকে বাড়ি ফিরলে এক কাপ চা নিয়ে স্পন্দনের সামনে দাঁড়ায় ইনায়াত। তারপর বসতে বসতে বলে,

ইনায়াত: ‘ আচ্ছা, স্পন্দন। আপনি তো আমায় এটা বললেন না যে ঐদিন আদ্রের ডেরায় আমাকে কিভাবে খুঁজে পেলেন!’

স্পন্দন একপলক ইনায়াতের দিকে তাকিয়ে বলল,

স্পন্দন: ‘ তোর আর গোয়েন্দাগিরি গেল না , তাইনা? আচ্ছা বলছি!’

ফ্ল্যাশব্যাক,

তুই যখন আদ্রের ডেরায় তখন আমি আমার লোকদের কাজে লাগিয়ে দেই এন্ড কিছুক্ষণ পর ই এমন একটা ইনফরমেশন পাই তাতে তোকে পাওয়াটা সোজা হয়ে যায়। রিধিতাকে তো চিনিস, কোনোভাবে জানতে পারি রিধিতা আর আদ্রের মাঝে ডিপ রিলেশন রয়েছে। তো রিধিতার কাছে গেলে নিশ্চয়ই কোনো ক্লু পাওয়া যাবে।
দেন রিধিতা আর আদ্র যে আদ্র যে বাড়িটায় থাকতো সেখানে যাই আর রিধিতাকেও পাই। দেন সেখানে গিয়ে ওর কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে সব ইনফরমেশন কালেক্ট করে ওর ও একটা বন্দোবস্ত করে ফেলি। দেন পরেরটা তুই জানিস ই!’

ইনায়াত ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে,

ইনায়াত: ‘ কেমন বন্দোবস্ত!’

স্পন্দন: ‘ কিছু জিনিস সিক্রেট ই থাক, শ্যামাঙ্গিণী!’
ইনায়াত মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে।

দেখতে দেখতে প্রায় ছয় মাস কেটে গিয়েছে। স্পন্দন আর ইনায়াতের মাঝে সম্পর্কটাও আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়ে গিয়েছে। আজ নিধি আর আয়ানের বিয়ে। অবশেষে দুটো পরিবারের সম্মতিতে নিধি আর আয়ানের সম্পর্কটা বিয়েতে রূপ নিয়েছে। স্পন্দন আর ইনায়াতও এসেছে আজকে তাদের বিয়েতে।

সকাল থেকেই কেমন যেন মাথাটা ঝিমঝিম করছে আর শরীরটাও দুর্বল লাগছে ইনায়াতের। এসিডিটি হয়েছে ভেবে আর কিছু জানায় নি স্পন্দনকে।
বিদায়ের সময় নিধি পালাক্রমে এক এক জনকে ধরে কাঁদতে থাকে।‌ ইনায়াতকে ধরে কাঁদার সময় ইনায়াত বলে উঠে,

ইনায়াত: ‘ এভাবে ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদা বাদ দে। নাহলে একবার মেকআপ নষ্ট হয়ে গেলে আয়ান ভাইয়া তোকে দেখে গাড়িতে বসেই হার্ট অ্যাটাক করবে!’
উপস্থিত পরিস্থিতিতেও নিধি ফিক করে হেসে দিল। বেস্ট ফ্রেন্ড বুঝি এমনই হয়!

অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরতেই মাথাটা আবারও চক্কর দিয়ে উঠলো ইনায়াতের। এবার আর টাল সামলাতে না পেরে পরে যেতে নিলেই স্পন্দন এসে তা খেয়াল করে আর দ্রুতগতিতে এগিয়ে এসে ইনায়াতকে ধরে ফেলে। ততক্ষণে ইনায়াত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। কয়েকবার গালে চাপড় মারলেও কোনো লাভ হয় না। তাই দ্রুত স্পন্দন ইনায়াতকে কোলে নিয়ে বেডরুমে পা বাড়ায়।

ডক্টর এসে ইনায়াতকে চেকআপ করছে। কিছুক্ষণ পর পিটপিট করে তাকালো ইনায়াত। আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নেয় সে।

কিছুক্ষণ পর ডক্টর হাসিমুখে স্পন্দনকে উদ্দেশ্য করে বলেন,

ডক্টর: ‘ কংগ্রেচুলেশন, মিস্টার স্পন্দন! ইউ আর গোয়িং টু বি এ ফাদার! মিসেস ইনায়াত ইজ প্রেগন্যান্ট!’

কথাটা শুনে ইনায়াতের খুশিতে চোখের কোনে জল চিকচিক করে উঠল। সে মা হবে! তার ভেতর একটা ছোট্ট প্রাণ ধীরে ধীরে বেড়ে উঠবে! তার ভালোবাসা স্পন্দনের চিহ্ন সেই ছোট্ট প্রাণ!
ছোট ছোট তুলতুলে নরম হাত তাকে ছুঁবে। মা বলে ডাকবে ! ভাবতেই ভালো লাগছে ইনায়াতের।

এদিকে ডক্টর যাওয়ার পর পরই ইনায়াতের রুমে মিসেস সাবিনা, মিস্টার সাদাত, স্পন্দন সবাই চলে আসে। এত বড় খুশির খবর পেয়ে সকলেই খুশি। মিসেস সাবিনা কিছুক্ষণ ইনায়াতের পাশে বসে তাকে কিছু টিপস দিলেন। মিসেস সাবিনা আর মিস্টার সাদাত চলে যেতেই স্পন্দন এসে খাটের উপর বসে পড়ে। তারপর আলতো করে ইনায়াতের পেটের উপর নিজের মাথাটা রাখে স্পন্দন। তারপর কম্পনরত কন্ঠে বলে উঠে,

স্পন্দন: ‘ ইনায়াত, শুনেছিস! ডক্টর কি বললো? আমাদের ছোট একটা বেবি হবে। আধো আধো গলায় আমাকে বাবা বলে ডাকবে! তোকে মা বলে ডাকবে!’

ইনায়াত মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বোঝায়। অতঃপর স্পন্দন উঠে ইনায়াতের কপালে একটা ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে বলে,

স্পন্দন: ‘ ভালোবাসি ইনায়াত, ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি!’

ইনায়াত: ‘ আমিও ভালোবাসি প্রিয়!’

দেখতে দেখতে আরো ছয়মাস পেরিয়ে যায়। ইনায়াতের পেটটা আগের তুলনায় অনেকটাই বড় হয়েছে। শরীরটাও হালকা ফুলেছে।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চুলে বিনুনি পাকাচ্ছে ইনায়াত। স্পন্দন রুমে আসতেই ইনায়াতের কাছে যায়। তারপর তার পেটের উপর হাত রেখে বলে,

স্পন্দন: ‘ আমার বেবিটা কেমন আছে? মা সারাদিন খেয়াল রেখেছে তো?’

ইনায়াত মুখ ফুলিয়ে বলে উঠে,

ইনায়াত: ‘ হুহ, সবাই পঁচা। সবাই বেবির খেয়াল রাখে! আমাকে তো কেউ পাত্তাই দেয় না। আদরও করে না! আমি মোটু হয়ে গেছি তাই?’

ইনায়াতের এমন বাচ্চামো দেখে হো হো করে হেসে উঠল স্পন্দন। তারপর আদুরে গলায় বলে উঠে,

স্পন্দন: ‘ কে বলেছে বেবির মাকে কেউ ভালোবাসে না! বেবির মাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি!
আর কে বলেছে বেবির মা মোটু হয়ে গেছে। সে তো আগের তুলনায় আরও সুন্দরী আর গুলুমুলু হয়েছে।’

স্পন্দনের এমন কথায় ইনায়াত না হেসে পারলো না। সত্যিই জীবনটা বড্ড সুখের। কিন্তু এ সুখে আবার কোনো গ্রহণ লেগে যাবে না তো!

গোধূলির লাল আভা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পশ্চিম আকাশ জুড়ে। সাথে মৃদু শো শো হাওয়া। বিকেল টা উপভোগ করেছে ইনায়াত ছাদে দাঁড়িয়ে। তার প্রেগন্যান্সির আট মাস চলছে। আজ কেন যেন ইনায়াতের মনটা আনচান করছে। কিছু কি হবে!
আজান দেয়ার আগেই সে নিচের দিকে পা বাড়ায়। মাঝের সিড়িটায় আসতেই আচমকা বাম পা পিছলে যায়। সাথে সাথে গড়িয়ে পড়ে সিঁড়ি জুড়ে সে। এই বুঝি জীবন শেষ?

হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্পন্দন। কি থেকে কি হয়ে গেল। কাঁদতে কাঁদতে চোখের অবস্থা যেন বেহাল!

তখন,

সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরে স্পন্দন। মায়ের কাছে জিজ্ঞেস করতেই সে জানায় ইনায়াত ছাদে। তখনি মনের ভেতর কেমন যেন খটকা লাগে স্পন্দনের। সে এক মুহুর্ত দেরি না করে পা বাড়ায় ছাদের দিকে। মাঝ সিঁড়িতে যেতেই আতকে উঠে সে। ইনায়াতের রক্তাক্ত শরীর টা সিঁড়ির এক প্রান্তে পড়ে আছে। এক মুহূর্তের জন্য যেন স্পন্দনের পুরো দুনিয়াটাই থমকে গিয়েছে।
সে দৌড়ে ইনায়াতের কাছে যায় আর তার গালে হাত বুলিয়ে বলতে থাকে,

স্পন্দন: ‘ এই, ইনায়াত! কি হয়েছে তোর! প্লিজ চোখ খুলে রাখ। আমি এখুনি তোকে হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি। প্লিজ ধৈর্য ধর।’

ইনায়াত শুধু আলতো কন্ঠে বলে,

ইনায়াত: ‘ আ,আমা, আমার বাচ্চা!’

স্পন্দন আর দেরি না করে ইনায়াতকে হসপিটালে নিয়ে আসে। সাথে ইনায়াত আর স্পন্দনের পুরো পরিবার ও চলে আসে। ইনায়াতকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়ার সময় ইনায়াতের হাত স্পন্দন শক্ত করে ধরে রেখেছিলো। ইনায়াত শুধু একটাই প্রলাপ বকে চলেছে,

ইনায়াত: ‘ স্পন্দন, প্লিজ আমার বাচ্চাটার কিছু যাতে না হয়। আমার কিছু হয়ে গেলে বাচ্চাটাকে দেখে রেখো, প্লিজ!’

স্পন্দন: ‘ কিছু হবে না, তোর আর আমাদের বাচ্চার কিছু হবে না। সব ঠিক হয়ে যাবে। একটু ধৈর্য ধর।’

বর্তমানে,
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর ডক্টর ওটি থেকে বেরিয়ে আসে। ডক্টরের মুখটা দেখে ভয় পেয়ে যায় স্পন্দন। কেননা সে গম্ভীর মুখে বেরিয়ে এসেছে।
স্পন্দন একপ্রকার দৌড়ে ডক্টরের কাছে গিয়ে বলে,

স্পন্দন: ‘ ডক্টর, ইনায়াত কেমন আছে! আর আমার বেবি? বেবি কেমন আছে!’

ডক্টর: ‘ আপনার বেবি ঠিক আছে! তবে আপনার স্ত্রী,,’

স্পন্দন: ‘ আমার স্ত্রী, কি হয়েছে ডক্টর!’

ডক্টর: ‘ সে ঠিক আছে, তবে তার অপারেশন টা অনেক ক্রিটিক্যাল ছিল। তাই এখন তাকে কোনো মতে স্ট্রেস দেয়া যাবেনা আর প্রোপার রেস্ট নিতে হবে।’

স্পন্দন: ‘ থ্যাঙ্ক ইউ ডক্টর, থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ!’

ইনায়াতকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর স্পন্দন প্রবেশ করে কেবিনে। ইনায়াতের জ্ঞান ফিরেছে ততক্ষণে। বেডের পাশেই দোলনায় ছোট বেবিটাকে রাখা হয়েছে ।
পিটপিট করে তাকাতেই ইনায়াত আশেপাশে তাকায়। খেয়াল করে হসপিটালের কেবিনে সে শুয়ে রয়েছে। বিকেলের ঘটনা মনে পড়তেই পেটে তড়িৎ গতিতে হাত রাখে। তার বাচ্চা! সে কোথায়?
পাশে তাকিয়ে দোলনাটার দিকে চোখ পড়তেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সে।
স্পন্দন পেছনে ফিরে দেখে ইনায়াত একদৃষ্টে দোলনাটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। সে পাশে ‌গিয়ে আলতো করে ইনায়াতের হাতের উপর হাত রাখে। তারপর বলে উঠে,

স্পন্দন: ‘ কেমন লাগছে এখন!’

ইনায়াত: ‘ হুম ভালো! আমাদের বেবি ? সে কেমন আছে!’

স্পন্দন: ‘ আমাদের বেবি অনেক ভালো আছে! জানিস আমাদের একটা ছোট ইনায়াত হয়েছে। দেখতে পুরো তোর যতো মায়াবী!’

ইনায়াত: ‘ আচ্ছা, আমার যদি কিছু হয়ে যেত,,’

স্পন্দন: ‘ হুস!! আর একটা কথাও নয়! এমন কথা আর কখনো উচ্চারণ করবি না! কি হতো তোর? কিছু হতো না!
তোর কিছু হয়ে গেলে আমি কি করে বাচতাম বল!

“আমার গল্প যে শুধু তুমি;
আমার এই ছোট্ট গল্পের সূচনা আর শেষটুকু শুধুই তুমি
এই একটাই তুমি কে কি করে হারাই বলো!”

ইনায়াত: ‘ ভালোবাসি প্রিয়!’

স্পন্দন: ‘ আমিও ভালোবাসি শ্যামাঙ্গিণী!’

এভাবেই অমর হয়ে থাকুক সকল ভালোবাসা।

সমাপ্ত!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here