এক_চিলতে_রোদ,Part_12,13

0
1203

#এক_চিলতে_রোদ,Part_12,13
#Writer_Nondini_Nila
#Part_12

ভাইয়া রাগে গজগজ করতে করতে ভেতরে ঢুকে গেল।আমিও ঢুকলাম ভাইয়ার গায়ের সাথে লেগে গেলাম ইশ লজ্জা লাগছে আমার। ভাইয়ার শরীর থেকে একটা মিষ্টি সুগন্ধি নাকে এলো। চোখ বন্ধ করে ঘ্রান নিলাম। আমি জানালার সাথে লেপ্টে গেলাম। আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে।
ভাইয়ার এতো কাছে বসেছি আমার লজ্জা লাগছে।
আমি আড়চোখে তাকিয়ে দেখি ভাইয়ার আমার দিকে ভ্রু উঁচু করে তাকিয়ে আছে। আমি হকচকিয়ে একদম ঘুরে জানালার বাইরে তাকালাম। বুকের ভেতর টিপটিপ করছে যেন চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছি। বুকে এক হাত চেপে ধরে বাইরে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়ার কথার আওয়াজ পাচ্ছি রিহান ভাইয়ের সাথে কথা বলছে।
পেছনে থেকে ইলা আপু বলে উঠলো,
“কেউ আমাকে পানি দে তো আমার কেমন জানি লাগছে।”
আপুর কথা শুনে আমি ঘাড় ঘুরিয়ে তার দিকে তাকাতে যাব তখনই ইহান ভাইয়ার বুকের উপর ঠাস করে বাড়ি খেলাম। ভাইয়ার তখন পেছনে ঘুরতে যাচ্ছিলো আমিও দুজনে একসাথে ঘুরে বাড়ি খেলাম। আমি বিস্মিত হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম মাথায় হাত দিয়ে।ভাইয়াও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি ছিটকে সরে বললাম,, সরি ভাইয়া আসলে আপুর কথা শুনে ওইদিকে ফিরতে গেছিলাম আপনিও যে এই সময় বুঝতে পারি নি।
কথাটা বলে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি তাকাতেই ইটস ওকে বলল।
ইমা আপু গলার স্বর উঁচু করে বলল,
“ইলা তোর। যেখানে ঊষা এখনো ঠিক আছে সেখানে তুই অসুস্থ ফিল করছিস আগেও না কতো টিপে গেছিস তুই!”
“গেছি তো। সেসব জায়গায় যাওয়ার সময় আমার এমন লাগে নি। আজ পেটে মোচড় দিয়ে সব বেরিয়ে আসছে। মাথা ব্যাথা করছে।আমি নিশ্চিত আমার ওইসব খাওয়া উচিত হয়নি। তৈলাক্ত খাবার খেয়ে এমন হচ্ছে।”
“বলেছিলাম ওইসব খাস না।এখন বুঝ ঠেলা।”
ইলা আপু কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে আছে। ইমা আপু আমার হাতে পানির বোতল দিলো আমি ইলা আপুর দিকে বাড়িয়ে দিলাম। আপু ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো।
আমি আপুর এমন অসুস্থ মুখ দেখে বলে উঠলাম,
“আপু আমি কি তোমায় পাশে বসে মাথা টিপে দেব।”
আপু রেগে আমায় দিকে তাকিয়ে বললো,
“তোকে আমি বলেছি টিপে দিতে। একদম জ্বালাবি না বাড়িতে জ্বালাস এখানে ও তো তাই এসেছিস। অসহ্য লাগে যতসব ফালতু ঝামেলা।”
আপুর কথা শুনে আমি চুপসে গেলাম। মুখটা ছোট করে সোজা হয়ে বসলাম।
“মন খারাপ করিস না। ”
ভাইয়ার কথা শুনে মাথা তুলে তাকালাম।
“এর জন্য বলে কারো ভালো চাইতে নেই।যেচে অপমানিত হতে যাস কেন?”
“আমি তো আপুর ভালোর জন্য বলেছিলাম।”
বলতে বলতে আমার চোখ ভড়ে এলো।
“এতো সবার ভালো কেন তোকে চাইতে হবে।”
বলেই ভাইয়ার আচমকা আমার গালে স্পর্শ করলো। আমি স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে।
“কথা কথা এতো চোখের জল ফেলিস না তাহলে এটা মূল্যহীন হয়ে যাবে।”

ভাইয়া ফোন চাপছে আমি আড়চোখে একবার তাকিয়ে দেখলাম তারপর চোখ সরিয়ে নিলাম। হঠাৎ পাশে তাকিয়ে দেখি রিহান ভাই কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে চোখ সরিয়ে নিলাম। রিহান ভাই ওইভাবে তাকায় আছে কেন?
“কি হয়েছে তোর ও কি খারাপ লাগছে নাকি?”
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো আমি ঘাড় নাড়িয়ে না বললাম।
“শীতে কাঁপছিল তাও জানালা বন্ধ করতে দিস না‌।”
“এই শীত তো আমার ভালো লাগে। দেখুন কি মিষ্টি ঠান্ডা বাতাস আসছে। শীতলাগলে ও মনটা ভালো সিগ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু রাতে না হয়ে দিনে গেলে ভালো হতো বাইরে প্রকৃতি দেখতে পেতাম। অনুভব করতে পারতাম।”
ইহান ঊষার উজ্জ্বল মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কতোটা নিষ্পাপ লাগছে কতো খুশি দেখাচ্ছে ওকে। একটু আগে যে বকা খেলো তার জন্য বিন্দু মাত্র কষ্ট নেয়। সব ভুলে আনন্দিত হচ্ছে।
ঊষা চোখ বন্ধ করে বসে আছে। বাতাসে ওর চুল গুলো উরছে এলোমেলো হয়ে কপালে চোখ মুখে এসে পরছে। ঊষা হাত উঁচু করে তা সরিয়ে হাওয়া উপভোগ করছে। ইহান মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে ঊষার দিকে ও যেন নিজের চোখ সরাতেই পারছেনা। একটা ঘুরে চলে গেছে। হঠাৎ ঊষার চুল ওর চোখ মুখে বাড়ি খেলো সাথে সাথে ইহান চোখ বন্ধ করে ফেললাম। ঊষার চুল থেকে একটা সুগন্ধি নাকে এলো কি তীব্র ঘ্রান এটা কি সেম্পুর জানতে ইচ্ছে হলো ইহানের।
হঠাৎ ঊষা চোখ মেলে ছোট চোখ করে ওর দিকে তাকালো সাথে সাথে ইহানের চোখ সরিয়ে নিলো। ছিঃ ছিঃ এতো ক্ষন কি সব ভাবছিলো ওর দিকে আমি ওমন করে তাকিয়ে ছিলাম কেন? কি হচ্ছে এসব আমার সাথে?
মাথা চেপে চোখ বন্ধ করে বসে র‌ইলো।অনেক রাত হয়েছে তাই এখন সবাইকে ঘুমানোর কথা বলে লাইট অফ করে দেওয়া হলো।
অন্ধকারে একবার ঊষার দিকে তাকালাম। ও চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে।
আমিও চোখ সযি নিলাম আর তাকাবো না ওর দিকে।

ফারিয়ার কল এলো তখন ধরতে ইচ্ছে করছে না তবুও ধরলাম।
কথা বলার মাঝেই ঠাস করে কেউ আমার বাহুর উপর পরলো চমকে অন্ধকারে তাকিয়ে দেখি ঊষা। ঘুমন্ত ঊষা নিজের মাথা হেলিয়ে দিয়েছে আমার বাহুতে। আমার থেকে শট হ‌ওয়ায় ওর মাথা আমার কাঁধ অব্দি যায় নি।
আমি চমকে উঠে ঊষার দিকে তাকালাম ও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। নিঃশ্বাস ঘনঘন ফেলছে কাঁপা হাতে ওর মাথা নিয়ে সিটে হেলান দিয়ে দিলাম।
বুকের ভেতর কেমন যেন লাগছে। আমি উষার দিকে তাকিয়ে আছি তখন একটা ঝাঁকুনি লাগে আর ঊষার মাথা সিটে থেকে জানালার কাঁচে বাড়ি খেতে যায় নজরে আসতেই তারাতাড়ি ঊষার মাথা নিজের বুকের মাঝে নিয়ে আসি।
ঘুমের মধ্যে ঊষা একমাত্র বাচ্চাদের মতো আমার বুকের সাথে লেপ্টে মিশে আছে।
কি করবো বুঝতে পারছি না সিটে রাখা ও সম্ভব না তাহলে মাথা আঘাত পাবে আবার ডাকতেও ইচ্ছে করছে না অনেক সময় যেতে লাগবে কেবল সাথে বারোটা বাজে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে আকাশ পাতাল ভাবছি সাথে বুকের ভেতর কেমন করছে সেটা আমি জানি কেমন অস্থির লাগছে ঊষা দুহাতে আমার কোমর জড়িয়ে ধরে বুকের সাথে মিশে আছে।
রাস্তা মাঝে মাঝে হালকা আলোতে ঊষার সিগ্ধ মায়াবী মুখ দেখা যাচ্ছে। কি মায়াবী লাগছে ঘুমন্ত অবস্থায় আমি তাকায়ে থাকতে পারছি না। আমার শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন ঊষার চুল ঘ্রান কাছ থেকে পাচ্ছি না চাইতেও আমি নাকটা ওর চুলে ডুবিয়ে দিলাম।কেমন মাতাল লাগছে নিজের কাজে নিজেই অবাক হচ্ছি। ঊষা আমার বোন আর ওর প্রতি আমার এসব ফিলিংস কেন হচ্ছে আমি আগে এতোটা নির্লজ্জ ছিলাম না। ঊষার ক্ষেত্রে এতোটা কন্ট্রোল লেস কি করে হচ্ছি।ওর প্রতি কেন এমন ফিল হয়।
মাথা উঁচু করে সিটে হেলান দিয়ে র‌ইলাম গম্ভীর হয়ে।

গাড়ির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল ঊষার।
পিটপিট করে চোখ মেলার চেষ্টা করছে তখন মনে হচ্ছে ওর কানের কাছে ধকধক শব্দ হচ্ছে এটা কিসের শব্দ ওর স্মরনে আসছে না। কেউ ওকে জরিয়ে ধরে আছে মনে হচ্ছে ভয়ে চোখ মেলতেই ওর চোখ চরকগাছ হয়ে গেল ও ইহান ভাইকে জরিয়ে আছে একা না ভাইয়া ও।ভাইয়ার বুকের সাথে লেপ্টে আছি।
ভাইয়া ঘুমে আমি মাথা উঁচু করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। আমি কি রাতে ভুলে ভাইয়ার এতো কাছে চলে এসেছি হয়তো। ছিঃ ছিঃ ভাইয়া এতো কাছে এসেছে আবার তাকে জরিয়ে ধরে আশেপাশে তাকিয়ে দেখি সবাই ঘুম এ শুধু রিফাত ভাইয়া বাদে ভাইয়া আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। লজ্জা আমি ছিটকে সরে এলাম সাথে সাথে ভাইয়া চোখ মেলে তাকালো সকাল হয়ে গেছে।

লজ্জা আমার গাল লাল হয়ে গেছে সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। নিচের দিকে তাকিয়ে ওরনার কোনা আগুলে পেছাচ্ছি। ভাইয়াও আমার দিকে তাকিয়ে আছে বুঝতে পারছি আমি নিচের দিকে দৃষ্টি রেখে সরি বললাম।
“সরি কেন?”
ভ্রু কুঁচকে ভাইয়া বলল।
আমতা আমতা করে বললাম,”আ-মি ভু-লে আপনার উপরে চলে গেছিলাম ঘুমের মধ্যে।”
লজ্জায় আমার কান গরম হয়ে আসছে।

#চলবে

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_13

সকালের মিষ্টি সোনালী রোদের আলো মুখে আছড়ে পড়ছে। মুগ্ধ নয়নে আঁকাবাঁকা পথে দিকে তাকিয়ে আছি। সবুজ পাহাড় উঁচু ঝাঁকি লাগছে তাতে ভাইয়ার বাহুর সাথে স্পর্শ লাগছে। সাথে সাথে শিউরে উঠছি। জানালার মুখ ঢেকিয়ে বসে আছি। একদম ভাইয়ার দিকে তাকাবো না রাতের কথা ভাবলেই লজ্জায় মরে যেতেছি।চোখে চোখ মিলাতে পারছিনা।
তখন গাড়ি থেমে গেল একটা পুরোনো দোতালা বাড়িতে এসে।
নামার পর জানতে পারলাম এটা রিহান ভাইয়ার দাদার বাসা। তারা আগে ঘন ঘন এখানে আসা হতো তাই একটা বাসা করে রেখেছে থাকার জন্য। আমরা ও এখানেই থাকবো।
একজন দেখাশোনার লোক আছে যে আমাদের দেখেই এগ এগিয়ে এসে চাবি দিয়ে রিহানের সাথে সাক্ষাৎ করলেন তারপর চলে গেলেন।
ইহান ভাই একা এক রুম নিয়েছে। ইলা আপুও একটা আলাদা রুম নিলো।আমি ইমা আপু আর আপু ফ্রেন্ড দিয়া তিন একটা।
রিহান ভাই তার তিন ফ্রেন্ড এক রুমে। কেউ থাকে না বাসায় দেখে কেউ বলতে পারবেনা। কারন এতো সুন্দর পরিষ্কার করা চকচক করছে সব।

বেতের চেয়ার, খাট কি সুন্দর নকশা করা আমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছি।
“ঊষা এখন ওইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা ফ্রেশ হয়ে আয়।”
আপুর কথা হেসে মাথা নেড়ে বাথরুমে ঢুকে গোসল করে ফেললাম। তোয়ালা দিয়ে মাথা মুছে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পরলাম।
আপু বলল,
“চল খেয়ে আসি খিদে পেট আমার চো চো করছে। দিয়া চল। এখন এতো সাজছিস কেন সবাই এখন বিশ্রাম নিবে বেরাতে বিকেলে যাব।”
দিয়া আপু সাজগোজ করতেছে। তাই ইমা আপু বিরক্ত হয়ে বলল।
“তাই কি একটু না সাজলে আমার ভালো লাগে না‌।”
“তোর এতো সাজ কি জন্য বলতো?আবার কাউরো উপর ক্রাশ খাইছোত।”
ভ্রু উঁচু করে বলল।
দিয়া থতমত খেয়ে বলল,, ” কক- ক‌ই না তো।”
ইমা আপু সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে।
আমি শোয়া থেকে উঠে বসে তাদের কথা শুনছি তখন নিচে থেকে রিফাত ভাইয়ার ডাক এলো।
আপু আর কথা না বাড়িয়ে আমাকে বলে বেরিয়ে গেল আমি ও পেছনে চলে এলাম।
খাবার টেবিলে এসে বসলাম সবাই আছে ভাইয়া নেই। আমি আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজে বসে র‌ইলাম ভাইয়া খাবে না প্রশ্ন টা মাথায় এলো কিন্তু কাউকে জিজ্ঞেস করলাম না।
“ইহান ক‌ই?”
“এইতো আমি। ”
বলতে ভাইয়া এগিয়ে এলো আমাদের দিকে ভাইয়ার গোসল করেছে বোধহয়।
চুল থেকে টপটপ করে পানি ঘাড় ভিজে‌ আছে হাত দিয়ে চুল নাড়াতে নাড়াতে এসে বসলো একদম আমার সামনা সামনি।বসে আমার দিকে তাকালো সাথে সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল।
খাবার মাঝে একবার দিয়া আপুর দিকে নজর পরলো তিনি ভাইয়ার দিকে কেমন নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। যেন চোখ দিয়েই গিলে খাবে। ভাইয়া একটা দুইটা কথা বলছে আর খাচ্ছে আর ওই দিয়া খাওয়ার থেকে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে নিজেই লজ্জা পাচ্ছে চুল ঠিক করছে আবার ভাইয়া দের কথার মাঝে নিজেও কথা বলছে এতে একবার ভাইয়া তার দিকে তাকালেই হয় কি ভাব ধরে আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি বোকা হয়ে।

খাওয়া শেষে সবাই রুমে এসে বিশ্রাম নিতে চলে গেছে।আমরা ও শুয়ে আছি ইমা আপু মাঝখানে।
দিয়া আপু ডান সাইটে। আপু আবার চেপে ধরেছে দিয়াকে দিয়া কিছু না বলে মুচকি মুচকি হাসছে।
শেষে বলেই ফেলল,
আমার তোর ভাইকে খুন পছন্দ হয়েছে রে। আমি ক্রাশিত।
আমি বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি দিয়ার দিকে ইমা আমি গোল গোল করে তাকিয়ে আছে যেন চোখ খুলে পরবে।
সাথে সাথে সটান হয়ে বসে পরলো ,
“কি বললি তুই?”
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে বসে পরলাম। আমার খাবার সময় সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু পরে নিজেকেই বকেছি কারন দিয়া আপু ভাইয়ার সিনিয়র। তাই কথাটা আর ভাবি নি কিন্তু এখন তো দেখিছি সত্যি।
“তুই পাগল হয়ে গেলি নাকি ইহান তোর ছোট সেটা তুই জানিস না কোন সাহসে এসব স্বীকার করছিস ছিঃ লজ্জা করে না ছোট ছেলের উপর নজর দিতে।’
“আমি খুব বেশি বড় না বুঝলি। আর আমার ওতো বয়স ও না বয়স হ‌ওয়ার আগেই আম্মুর স্কুলে ভর্তি করেছিল তাই‌ আগে চলে গেছি। ”
“তোকে আমার খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে জানিস?”
“কেন আমি সত্যিই পছন্দ করি ইহানকে।”
“চরিয়ে তোর গাল লাল করবো আর একবার এই কথা বললে।”
দিয়া মুখ গোমড়া মুখে শুয়ে পড়লো আপু রাগে গজগজ করতে লাগলো। তারপর দিকে তাকিয়ে বলল,
“কি দুঃসাহস দেখছিস ওকে নাকি আমার ভাবি বানাবো? আহাম্মক একটা।”
বিরবির করতে লাগললো আপু। তারপর শুয়ে পড়লো‌।
দুপুরে খাবার খেয়ে বের হলাম ঘুরতে। কাছাকাছি ঘুরা হবে আজ আশেপাশে বেড়ানো হলো। পাশেই একটা গ্ৰাম ছিলো সবাই সেখানেই গেলাম।
নতুন পরিবেশের সাথে পরিচিত হলাম। তাদের পোশাক অন্য রকম একদম।
সন্ধ্যায় আগেই ফিরে আসা হলো।
রাতে একটা বিরাট ঘুম।

পরদিন আমরা পানসি রেস্টুরেন্টে গিয়ে সকালের নাস্তা করলাম।
তারপর এলাম চা বাগান এ। বিশাল বড় বাগান। সবুজ সমাহার তার মাঝে মেয়েরা কাঁধে ঝুড়ি নিয়ে চা পাতা তুলছে আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছি সবাই যে যার ফোন বের করে ছবি তুলছে ইহান ভাই ফোন কথা বলছে। আমি একা ঘুরে ঘুরে দেখছি সবুজ সমাহারের মাঝে রঙিন পোশাকের মহিলা গুলোকে একটা অপূর্ব লাগছে।
ছবি তুলার আওয়াজ হতেই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম অবাক হয়ে ‌ইহান ভাইয়া আমার ছবি তুলছে।
আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম।
ভাইয়া এগিয়ে এসে বলল,,
“সবাই ছবি তুলছে তুই বাদ কেন?”
আমি বললাম, “আমার তো ফোন নেই আর না ছবি তুলে দেওয়ার কেউ আছে।”
ভাইয়া বলল,” ভালোই হয়েছে ফোন থাকলে পাজি হয়ে যেতি। চল আমি তোকে ছবি তুলে দেয়। যখন ফোন হবে নিয়ে নিস।”
আমি খুশি হয়ে আচ্ছা বললাম।
ভাইয়া আমার ছবি তুলে দিচ্ছে আমি দাঁড়িয়ে আছি হাসি মুখ করে।
লাঞ্চ করা হলো রেস্টুরেন্টে।
তারপর আমরা গেলাম ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর দেখতে। নৌকায় বসে আছি। সচ্ছ পানির উপর দিয়ে নৌকা বেয়ে চলেছে যত এগিয়ে যাচ্ছে মুগ্ধতাও বেড়ে যাচ্ছে। নীল আকাশ তার গ ঘেঁষে আছে উঁচু পাহাড় দূর থেকে এমন লাগছে। মুগ্ধ হয়ে দেখছি। প্রথম সব কিছুর অনূভুতি অন্যরকম ঊষার ও সেই অবস্থা।
একজন সেই আনন্দিত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে হা করে সে আর কেউ না ইহান। ঊষাকে বাসায় সব সময় মন খারাপ করে থাকতে আর এখানে আসার পর থেকে ওর মুখে আনন্দ লেগে থাকে যা দেখে ওর ঠোঁটে ও ফাঁকা হয়ে যায়।
ঊষা সব কিছু মুগ্ধ নয়নে দেখছিলো তখন ওর মনে হয় কেউ ওর হাত স্পশ করেছে তাকিয়ে চমকে হাত সরিয়ে নেয়। রিহান ভাইয়া। থমকে জরোসরো হয়ে গুটিয়ে বসি।
উনার হাবভাব আমার প্রথম থেকেই পছন্দ হচ্ছে না। কেমন করে যেন তাকায় থাকে ভিশন অস্থির লাগে আমার। সাথে সাথে ভাইয়ার দিকে তাকালাম ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
নৌকায় থেকে নামতেই ভাইয়া আমাকে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে?
আমি কিছু না বললাম।
ভাইয়া তাও সন্দেহ চোখে তাকিয়ে র‌ইলো তখন এলো দিয়া আপু,
হাই ইহান!
ভাইয়া হেসে বলল, হ্যালো।
ভাইয়ার গায়ে পরা কথা বলছে হায়রে ভাব আমি তাকিয়ে আছি। ভাইয়ার চোখ মুখ ও বিরক্ত লাগছে তবু ও হেসে কথা বলছে।
হঠাৎ আপু বলে উঠলো , তুমি আমাকে আপনি করে বলো কেন? তুমি করে বলো কেমন জানি লাগে।
ভাইয়া হা করে তাকিয়ে বলল, আপনি আমার সিনিয়র আপু তাই আপনি টাই ঠিক আছে।
বলেই চলে গেল।
দিয়া আপু গোমড়া মুখে তাকিয়ে আছে।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here