এক_চিলতে_রোদ,Part_28,29

0
1300

#এক_চিলতে_রোদ,Part_28,29
#Writer_Nondini_Nila
#Part_28

নতুন জামাই বাড়ি এসেছে তার জন্য পিঠা বানানোর ধুম পরেছে। আসার পর থেকে রান্না ঘরে বসে পিঠা বানাচ্ছি। আমি একা না। সাথে ফুপিরা ও আছে। লতা পিঠা বানাতে পারে না তাই ও বসে আছে। এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছে। আমি সংসার পিঠা করছি। তখন আমার ছোট ফুপি বলল,,

” ইশ সংসার পিঠা ইহান টার কি পছন্দের ? ছেলেটা বাড়ি নাই কতো কিছু মিস করছে?”

আফসোস সুরে বললো। তখন খালা( ইহানের খালা) বললো,, ” কি নাকি কাজ এ গেছে আপা তো তাই বললো।”

সবাই ভাইকে নিয়ে কথা বলতে লাগলো আমি চুপচাপ কাজ করছি আর তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছি। চাচি সবাইকে মিথ্যা বলেছে। সবাই চিন্তা করবে বার বার জিজ্ঞেস করবে তাই বলেছে তার জবের জন্য যাওয়া হয়েছে। সবাই এতে বলেছিলো কলেজে জব নিলো তাতে আবার কোথায় গেল। চাচি তখন বলেছে আমাকে ওতো বলেছে নাকি।

আর কেউ কিছু বলে নাই। পিঠা বানানোর কাজ শেষ হলে আমি হাফ ছেড়ে বাঁচি। কোমর ব্যাথা হয়ে গেছে উঠে রুমে চলে আসি। হাত মুখ ধুয়ে চুলে চিরুনি দেয়। যেভাবে আপুদের বাসায় গেছিলাম সেভাবেই ছিলাম চুল ঝট হয়ে আছে। চুল আঁচড়ে খোঁপা করে নেয় তখন হুরমুর করে লতা রুমে আসে।

আমি বড় চোখ করে ওর দিকে তাকিয়ে বলি,,

“কি হয়েছে এভাবে ছুটে এলি কেন?”

“ও এসেই বলে রিহান ভাই এসেছে দেখলাম। আমাকে দেখেই তোর কথা জিজ্ঞেস করলো।”

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,, ” তো আমি কি করবো?”

“আয় দেখা করবি।”

“ছার তো হাত। লোকটার মতিগতি ভালো না আমি যাব না তার সামনে।”

“আরে আয় না।”

‘যাব না বললাম না জোরে করিস কেন? ভাইয়া কোথায় গেলো আমার চিন্তা হচ্ছে।”

আমার কড়া কথা শুনে চমকে উঠলো লতা।

“আচ্ছা সরি। তোর সাথে আমার কথা ছিলো।”

“কি বল?”

“ওই সকালের কথা। ইহান ভাইজান তার মাকে কি যেন বলে বকাবকি করছিলো। অনেক রেগে কথা বলছিল। কি কথা আমি ঠিক শুনি নি কিন্তু আমি তোর নাম বলতে শুনেছি। তোকে নিয়ে কথা হয়েছে। ম্যাডাম প্রথমে পাল্টা জবাব দিলেও পরের দিকে কেমন ভয় পেয়ে ছিলো।”

আমি হাঁ করে লতার কথা শুনলাম। আমার মাথায় হাত আমাকে নিয়ে কথা বলছে চাচির সাথে। হায় আল্লাহ বলে কি? তাহলে চাচি এর জন্য আমাকে তো বকবে এখন আমি কি করবো? কিন্তু চাচি আজ তো একটু ও বকলো না আচ্ছা বাসায় মানুষ তাই কি ভালো আচরণ? সবাই চলে গেলে আবার শুরু হবে নতুন বিপদ।আমি ঢোক গিলে ভয়ার্ত মুখ করে দাঁড়িয়ে আছি।

লতা আমার কাছে এসে বললো, “কাল বাগানে তোর আর ইহান ভাইজানের সব কথা আমি শুনছি।”

“মানে।”
বড় বড় চোখ করে।

“হুম আমি আড়ালে লুকিয়ে ছিলাম।”

“কেন?”

“না মানে তুমি কাদছিলি আমি তোর কাছে আসবো তখন ভাইজান কে আসতে দেখলাম তাই দাঁড়িয়ে লুকিয়ে দেখলাম কি হয়? সব দেখে আমি তো স্তব্ধ হয়ে গেছি। আচ্ছা তুই আর ভাইজান দুজন দুজনকে কি ভালোবাসিস?”

আমি ওর কথা শুনে চমকে উঠলাম। আমার মনে ভাইয়ার জন্য আলাদা একটা ফিলিংস আসে। সেটা ক্রাশ শুধুই। ভাইয়ার উপর আমি ক্র্যাশিত কিন্তু ভালোবাসা নাই‌।

আমি বললাম,, ” তোর এমন কেন মনে হলো।”

” আরে ভাইজানের বিহেভিয়ার দেখে। আমার মনে হয় ভাইজান তোকে ভালোবাসে। ”

তখনি চাচির ডাক এলো লতাকে ডাকছে লতা দৌড়ে চলে গেলো। আমি থমকে দাঁড়িয়ে র‌ইলাম। ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে। না না এটা সম্ভব না তাকে তো আমি তার গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলতে শুনেছি হুম ফারিয়া নাম। অনেক দিন আমি তার গানের আওয়াজ পেয়ে চুপিচুপি উপরে গিয়েছি। তখন দেখতাম একটা মেয়ের সাথে কথা বলতো।
ওতো রাগে গার্লফ্রেন্ড ছারা আর কার সাথে কথা বলবে?

কিন্তু ভাইয়া আমাকে চুমু খেলো কেন? ভুল করে হয়তো আমি আর ভাইয়া কাছে যাব না। ভাবতে লাগলাম।

বাইরে আসতেই আমাকে আর লতাকে দিয়ে পিঠা পাঠালো আপুর রুমে যেখানে রিফাত ভাইয়ারা আছে।সেখানে গিয়ে চোখ পরলো রিহানের দিকে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।আমি পিঠা করে তার তাকানো দেখে গটগট করে বেরিয়ে আসতে চাইলাম। এমন হা করে তাকিয়ে থাকলে কি সেখানে থাকা যায়।

কিন্তু আপুর জন্য সেটা হলো না আমাকে ডেকে সাথে বসালো আমি তার কথা ফেলতে পারলাম না সাথে লতা কে বসলাম। রিহানের দিকে তাকিয়ে দেখি হেসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি চোখ সরিয়ে বিরক্ত হয়ে বসে একটা পিঠা দিলো আপু সেটা খেলাম।

আধা ঘন্টার মতো থেকে বেরিয়ে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। অসভ্য ছেলে কেমন বেহায়ার মত তাকিয়ে থাকে।

আমি নিজের রুমে চলে এলাম। এখন ঘুম দেবো। বিছানায় শুয়ে ঘুম আসছে না বারবার ভাইয়ার কথা মনে পরছে। কেন করছে জানা নেই আমি ছটফট করে উঠে বসলাম। চোখ বন্ধ করলেই ভাইয়ার টোল পড়া গালের হাসি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। কিন্তু সুন্দর সেই হাসি অফ। কালকে কতোটা কাছে ছিলো আমার ভাইয়া ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে। আচ্ছা ভাইয়া বাসা থেকে গেলে কোথায় আর কেন গেলো? চাচির সাথে রাগারাগী আমার জন্য করে থাকলেও কোথাও যাওয়ার কি দরকার।

আবার শুয়ে ঘুমানোর ট্রাই করলাম। আর ঘুমিয়ে পরলাম। পরদিন ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে মুখোমুখি হলাম রিহানের সে আমার সামনে এসে হেসে বললো,

“আমার উওর টা দিলে না কিন্তু?”

আমি হকচকিয়ে গেলাম। এই লোকটার সামনেই পরতে হলো অফ বিরক্তিকর।

“কি হলো ঊষা আমার উওর দাও?”

“কিসের উওর দিবো?”

“কাল যেটা না বলে চলে এলে। তুমি লজ্জা পেয়ে চলে এসেছো আমি মাইন্ড করিনি।”

“আমি লজ্জায় পেয়ে আসিনি।”

“তাহলে?”

“আমি..

তখন চাচিকে দেখে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। আমাদের দেখেছে কিনা জানি না কিন্তু এদিকে আসছে আমি চমকে উঠলাম।

রিহানকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম। রিহান বোকা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে র‌ইলো।

চাচির কাছে যেতেই চাচি বললো,,
“কি করে ক‌ই যাস? আর ওই ছেলের সাথে কি কথা বলছিলি।

আমি ভয় পেয়ে গেলাম।

“ক‌ই কিছু না তো।

“মিথ্যা বলছিস?

“না তো। ওই আসলে বলছিলি চা দিতে।”

চাচি তাকিয়ে কিছু বলতে গিয়েও বললো না চলে গেলো। আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে র‌ইলাম।

চাচি যদি আবার এসে দেখে আমি চা করছি কিনা তাই চা করে নিলাম। ওই লোকটা এখনো সোফায় বসে আছে আমি গিয়ে বললাম,,

“ধরেন চা খান।”

চমকে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,, “চা আমার জন্য আমি তো তোমাকে চা করতে বলিনি।”

“বলেননি তো কি হয়েছে আমি নিয়ে এলাম। ধরেন খান।”

“কিন্তু আমি তো…

বলতে গিয়ে ও থেমে গেলো আমি কপাল কুঁচকে তাকিয়ে বললাম,,

” আপনি কি?”

রিহান চা খায় না কিন্তু বললো না। ভালোবাসার মানুষটির হাতের চা মিস করতে চাইনা।
তাই হেসে তারাতাড়ি চা দিয়ে চুমুক দিলো।

আমি হতবুদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছি।

তারপর চলে এলাম।ভাইয়াকে এই সময় কফি দেয় সব সময় আজ ও কফি করে বোকা হলাম ভাই তো বাসায় নাই‌। সবার জন্য চা করে দিয়ে এলাম। ইমা আপুর রুমে গেলাম না খালি।

আমি রান্না ঘরে এসে কফির দিকে তাকিয়ে আছি। এটা ভাইয়া খায় আমি কখনো খাইনি কিন্তু শুনেছি তিতা এটা একটু খেয়ে দেখবো আজ তো ভাই নাই। এটা ফালানো যাবে।
আমি কফির দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে থেকে ঠোঁটের কাছে নিলাম। এক চুমুক দিতেই মুখ তিতা বিচ্ছিরি হয়ে এলো। গল্পের আসল লেখিকা নন্দিনী নীলা সাথে সাথে থু থু করে ফেলে দিলাম সব। ছিঃ কি বাজে খেতে এটা ভাইয়া খায় কি করে? ওয়াক থু। কফির কাপ রেখে আমি করি করতে লাগলাম। তখন রিহান এলো আর বললো ওকে কফি করে দিতে আমি বললাম,,

“আপনি ও ওই বাজে জিনিস টা খান?”

রিহান ব্রু কুঁচকে বলল,,” কোন বাজে জিনিস?”

আমি কফি দেখিয়ে বললাম। “এই যে এটা?”

রিহান হেসে উঠলো,, “আরে কফি করছো দেখি আমি তো তোমাকে বলিনি করতে করলে যে। ভালোই হয়েছে।”

বলেই এগিয়ে কাপ হাত নিলো আমি চোখ বড় করে বলল, “এটা নিচ্ছেন কেন?”

“খাব তাই। তোমাকে তো করার কথা বলতেই এসেছিলাম। যাই হোক করা আছে এটাই খাই।”

“এটা আপনার না দিন এটা!”

‘কার এটা?”

‘ইহান ভাইয়ের!”

“আরে সে তো বাসায় নাই! আমাকেই দাও।”

“না দিন তো এটা বলেই হাত থেকে কেড়ে নিলাম আমার খাওয়াটা কিছুতেই দেওয়া যাবেনা।”

রিহান অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি কাচুমাচু মুখ করে বললাম,,

“আমি আপনাকে আরেকটা করে দেয় আমি যান সোফায় বসুন।”

রিহান সন্দেহ চোখে তাকিয়ে থেকে চলে গেলো। আমি বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নিলাম। ইশ আমার টা নিচ্ছিলো।

#চলবে

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_29

বাসা একদম ফাঁকা হয়ে গেছে। বিয়ের আমেজ শেষ হতেই সব আত্নীয় স্বজন রা চলে গেছে। যাওয়ার আগে শীলা আমাকে ওর সাথে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু আমি যাইনি। যাব কি করে কোচিং আছে যে দুইদিন মিস গেলো।

ইমা আপু একদিন ছিলো তাতে আমাকে রিহান পাগল করে ছেড়েছে। আমি কোন রকম লুকিয়ে চুরিয়ে বেঁচেছি এতো ডিস্টার্ব করতে পারে।

আমি ভেবেছিলাম আজকে চাচির থেকে আমাকে কঠিন কথা শুনতে হবে। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে আজকেও কিছু বলেনি। আমি বিষ্ময় হতভম্ব হয়ে রেডি হচ্ছি কোচিং এ যাওয়ার জন্য। চুল বিনুনি করে মাথা পিন করে বেরিয়ে এলাম। চাচি সোফায় বসে আছেন। আমাকে বের হতে দেখে জিজ্ঞেস করলো,

“কি রে তোর কাছে টাকা আছে? লাগবো নাকি কোচিং এ যেতে।”

আমি কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছি না। আমার মুখটা হা হয়ে গেছে। চাচি আমাকে টাকা লাগবে কিনা জিজ্ঞেস করছে। আমি কি স্বপ্ন দেখছি।

“কি রে এমন হা করে তাকিয়ে আছিস কেন?”

আমি জ্বিভা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে দিয়ে মিনমিন করে বললাম,,,

“তুমি আমাকে টাকা দেবে?”

“যাওয়ার জন্য লাগলে দেবো না কেন?”

আমি শক নিতে পারছি না মাথা ঘুরছে আমার। চাচির থেকে এতো ভালো ব্যবহার আমার সহ্য হচ্ছে না‌। চাচি বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে আছে। রাগ স্পষ্ট এখন হচ্ছে আমি তারাতাড়ি বললাম।

“না না আমার টাকা লাগবে না। আমি যাই দেরি হচ্ছে।”
বলেই বাইরে দিকে হাঁটতে লাগলাম।

চাচি পেছনে থেকে বলে উঠলো, “ভালো করে পরিস পাশ করতে হবে কিন্তু।”

আমি দরজার কাছে এসে অবাক হয়ে পেছনে তাকিয়ে চলে এলাম বাইরে।
চাচির হলোটা কি এমন করছে কেন?

আমি সারা রাস্তা চাচি কে নিয়ে ভাবতে ভাবতে কোচিং এ এলাম।
কোচিং শেষ করে আবার সেই রিহান। এই ছেলে আমার পিছু ছারবে না। আমি লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। যাতে দেখতে না পায়। রিহান চারপাশে তাকিয়ে আমাকে খুঁজছে।

আমি আড়ালে দাঁড়িয়ে আছি। অটো একটা আসতেই চেঁচিয়ে থামতে বললাম। তারপর দৌড়ে উঠে বসলাম। এতেই রিহান বেটা আমাকে দেখে নিয়েছে। অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে নিজেও ঝড়ের গতিতে আমার পাশে এসে বসলো।

গায়ের সাথে লাগবে আমি তারাতাড়ি সরে বসলাম। রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি রিহানের দিকে।
রিহান আমার দিকে তাকিয়ে হাসি দিলো দাঁত বের করে আমার রাগে ফাজিল টার মাথা ফাটাই দিতে ইচ্ছে করছে।

” আরে ঊষা আমি কখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম আর তুমি এভাবে চলে যাচ্ছিলে। ”

আমি চাপা রাগ নিয়ে বললাম,, ” আপনি গাড়ি এলেন কেন? আর এমন ভাবে আমার পেছনে কেন পরেছেন?”

“ভালোবাসি বলেছিলাম তো।”

” আমি তো বাসি না তাহলে কেন ডিস্টার্ব করছেন? প্লিজ আপনি নেমে যান আর আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না। এমন করলে আমি আর কোচিং এ আসবো না। ”

আমার কথা শুনে রিহান মুখটা একটু খানি করে ফেললো। আমি অটো ড্রাইবার কে গাড়ি থামাতে বললাম। মুখ কালো করে বললো,,

” কেন ভালোবাস না? ”

” বাসি না তাই।”

” আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি বিয়ে করতে চাই।”

“বিয়ে?”

‘হুম।”

আমি কিছু বলার আগেই গাড়ি থামলো আমি কিছু এই বিষয়ে না বলে বললাম,,,

” নামুন। আর আমাকে বিরক্ত করবেন না।যান।”

” কিন্তু….

হাত দিয়ে নামতে বললাম। রিহান গোমড়া মুখে নেমে গেলো। আর নেমেও আমার দিকে তাকিয়ে র‌ইলো।
আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।

বাসায় এসে বসতেই আযান দিলো। রাতে পরতে বসে ছিলাম তখন ইলা আপুর ডাক পরলো।

আমি তার রুমে যেতেই আমার হাতে রিমুভার দিয়ে হাত ছরিয়ে বসে পরলো। এখন আমাকে দিয়ে নেল পালিশ উঠাবে। পড়া ছিলো অনেক কিন্তু না ও করতে পারবো না। বাধ্য হয়ে বসলাম। আপু চান বললো,

কাল নাকি তার ফ্রেন্ডরা মিলে কক্সবাজার যাবে তাই ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে সব পরবে তাই এসব করাচ্ছে আমাকে দিয়ে।
আমি দীর্ঘ শ্বাস কাজ করতে লাগলাম। অর্ধেক হতেই আমাকে উঠিয়ে চা করতে চা করতে পাঠালো।

চা করছি আর বিরবির করছি। চা করে উপরে এসে ইহান ভাইয়ের রুমে তাকালাম। ইশ ভাইয়া কোথায় আছে তিন দিন হয়ে গেলো বাসায় নাই। না চাইতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। চা নিয়ে আপূকে দিয়ে কাজ করতে লাগলাম শেষ করে রুমে এসে একটু পরেই ঘুমিয়ে পরলাম।

সকাল সকাল ইলা আপু সেজে গুজে একটা ব্যাগ নিয়ে চলে গেল। না খেয়ে। রেস্টুরেন্টে নাকি খাবে তাই। আমি আপুর যাওয়ার দিকে তাকায় র‌ইলাম। কালো ড্রেস পরেছে আপু খুব সুন্দর লাগছে তাকে দেখতে।

চাচি খাবার পর আমাকে নিজের রুমে ডেকে নিলো। আমি ভয়ে ভয়ে গেলাম। চাচি বিছানায় পা ছরিয়ে বসে আছে। আমি যেতেই বলল,,

” পা একটু টিপে দে তো ব্যাথা লাগছে। ”

আমি নিঃশব্দে বসে পরলাম।

” ইহান কোথায় গেছে?”

আমি বসে পা টিপে দিচ্ছি তখন চাচি বলে উঠলো কথাটা আমি শুনেই চমকে উঠলাম। মাথা তুলে তাকালাম চাচির দিকে সে রেগে আমায় দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ঢোক গিলে হাত থামিয়ে ফেললাম।

“কি হলো বলো? কোথায় আমার ইহান?”

আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি।
আমাকে কেন জিজ্ঞেস করছে আমি তো জানি না।

“আমি কি করে জানবো চাচি ?”

“জানলে বল?”

“আমি জানি না কিছু। আমাকে কেন জিজ্ঞেস করছো আমি কিভাবে জানবো?”

চাচি রেগে কিছু বলতে যাবে তার ফোন টা বেজে উঠলো। সে আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে ফোন ধরলো। ফোনের দিকে তাকিয়ে চাচি হাসলো আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি। চাচি হ্যালো আপা বলে উঠলো,

“আপা কেমন আছো? ইমা বিয়েতে এলে না কেন?

“বিজি ছিলাম রে।

“আমি তোমাকে মিস করেছি। এখন আসো ঘুরে যাও‌

“আমি না তুই আয়।

‘আমি কিন্তু…

“কিন্তু কি আয় আমার কাছে থেকে তা কয়দিন।

“আচ্ছা। ( ভেবে বললো কারণ এখন ইহান নাই ইলা ও নাই‌। যাওয়া যায়।)

“কাল‌ই আয় আমার অফ আছে কাল।

“আচ্ছা আসবো।

খুশিতে আটখানা হয়ে বললো। এই বোন সবার বড় আর ধনী। ইয়া বড় বিজনেস একা সামলাতে পারে তার বোন। এই জন্য এই বোন কে সব চেয়ে ভালোবাসে টাকার যে তার খুব লোভ।

আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি। চাচি কে কি খুশি দেখাচ্ছে এটা নতুন না তার বড় বোন ফোন করেছি এমন খুশি হয় সে আর লাফিয়ে চলে যায়। এবারো তাই হবে। চাচি আমাকে আমার কিছু জিজ্ঞেস করলো না আর না পা টেপালো। উঠে নিজের আলমারি খুলে কাপড় বের করছে।
নিয়ে যাবার জন্য না একটা পরে যাবে আর দশটা নিয়ে আসবে।‌

আমি তারাতাড়ি বেরিয়ে এলাম। আর বকা বাকি করতে পারবে না। কয়েকদিন চাচি বাসায় আসবে না। পরদিনের যাওয়া আজকে বিকেলেই চলে গেলো। চাচা অফিসে আছে তাকে বলেও গেলো না আমাকে ডেকে বলতে বললো।

আমি আচ্ছা বলে দিলাম। এখন পুরো ফাঁকা বাসায় আমি আর লতা। চাচা আসতে সন্ধ্যায় পরেই। তাই হলো সাথে সাতটায় চলে এলো। তারেক খেতে দিয়ে বললাম। চাচি চলে গেছে বোনের বাড়ি। শুনেই চাচা কয়েকটা বকা দিলো চাচি কে বাসা এমনিতেই খালি তার উপর তার ও যেতে হবে কেন? খাওয়া শেষ করে নিজের রুমে গিলো। চাচার রুমে আমি জগ ভর্তি পানি দিয়ে এলাম। চাচা আর উঠবে না জানি। আমি আর লতা সোফায় বসে টিভি দেখছি কেউ নাই তাই বকার ও কেউ নাই। হিন্দি ছবি দেখছি কথা বুঝি না তাও দেখছি ভালো লাগে তাই। দুজনে হেসে কুটিকুটি হচ্ছি খুব হাসির ছবি এটা কথা না বুঝলেও কান্ড কারখানা দেখেই হাসছি। আচার আমার খুব পছন্দ আজ ফ্রিজ খুলে একটু আচার এনে আমি আর লতা গেলাম।

“আমার খুব ঘুম পাচ্ছে রে।”

লতার কথায় আমিও হামি দিয়ে বললাম,,

” আমার ও আর শীত ও লাগছে। বাইরে বৃষ্টির ভাব করছে চল শুয়ে পরি।”

“হ্যা আমি গেলাম।”

লতা ঘুম ঘুম চোখে চলে গেলো। আমি টিভি অফ করে দিলাম।

দশটার দিকে টিভি অফ করে দুজনের রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম।
বিছানায় শুয়ে পরেছি বাইরে বাতাস হচ্ছে। আমি আবার উঠে জানালা খুললাম। বাতাসে আমার চুল এলো মেলো করে দিলো। খোপা খুলে গেল আমি চুলে হাত দিয়ে ধরার চেষ্টা করছি আর বাইরে তাকিয়ে আছি। গুরিগুরি বৃষ্টি পরতে লাগলো আমি তাকিয়ে আছি তখন কেউ গাড়ি নিয়ে ভেতরে এলো আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এটা তো ভাইয়ার গাড়ি। আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি তাহলে কি ভাইয়া এলো আমি উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছি। গাড়ি থেকে কেউ বেরুলো দেখার আগেই সব অন্ধকার হয়ে গেলো কারেন্ট চলে গেছে। অন্ধকার এ দেখলাম লোকটা দৌড়ে ভেতরে আসছে। আমি অন্ধকারে এ দাড়িয়ে তাকিয়ে আছি।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here