#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ২০,২১
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
পার্টঃ২০
১৩৭.
তাইফা’ও’ ওদের দুজনকে দেখে অবাক হয়ে যায়। কাকতালীয় ভাবে সকালে প্রান্তিকের সাথে দেখা আর এখন! অর্ষা অবাক হয়ে পুনরায় বললো,
‘আপু আপনি এইখানে? অর্ষার সাথে প্রিয়ন্তিও তালে তাল মিলিয়ে বললো,
‘হুম হুম তাইতো তার মানে!
‘হুম আমিই এই রুম নিয়েছি।
অর্ষা আর প্রিয়ন্তি কিছুটা খুশি হলো। যে তাদের মতো আরেকটা মেয়ে এই বাড়িতে থাকবে। অর্ষা তড়িঘড়ি করে বলে,
‘আপু বাইরেই দাঁড় করিয়ে রাখবে নাকি ভেতরেও আসতে বলবে?
‘দেখেছো আমি ভুলেই গিয়েছি। প্লিজ ভেতরে আসো।
অর্ষা আর প্রিয়ন্তি রুমে ঢুকতেই তাইফা অপ্রস্তুত হয়ে বলে,
‘তোমাদেরকে যে কোথায় বসতে দেয়’।
‘আরে আপু বসবোনা আমরা। এই নাও খালামনি তোমার জন্য খাবার পাঠিয়েছে।
‘ওমা এইসব কি দরকার ছিলো?
‘আপু নাওতো। এতো তাড়াতাড়ি কিইবা রান্না করবে বলোতো? তাই আম্মু পাঠালো। আপু আমরা যাই তুমি খেয়ে নিও৷ আমরা আবার আসবো [ একটা হাসি দিয়ে প্রিয়ন্তি বললো ]
‘অবশ্যই এসো। আমারো ভালো লাগবে।
অর্ষা প্রিয়ন্তি যেতেই তাইফা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবলো, ‘ভাগ্য চাইলে সবি সম্ভব। নয়তো কি কাকতালীয়ভাবে ওদের সাথে আমার দেখা সাক্ষাৎ হয়ে আবার ওদের বাড়িতেই থাকছি। তাইফা খাবারের প্লেটটার ঢাকনাটা খুলে দেখলো একপাশে গরুর মাংস বুনা করা নেশ কষা কষা করে। আরেক পাশে এক ধরনের বাজি ও সালাত। সাথেতো পোলাও আছেই। তাইফা বেশ তৃপ্তি নিয়ে খাবারগুলো নিয়ে খেতে বসলো।
১৩৮.
আব্বু আমি যা ডিসাইড করেছি তাই হবে। এনাফ ইজ এনাফ।
‘দেখো প্রান্তিক তোমার যা ইচ্ছে তুমি তা করতে পারোনা৷ অর্ষারও একটা মত অমত আছে। লাইফটা এইখানে শুধু তোমার নয়। অর্ষারও।
‘অর্ষার লাইফ ‘ওই আমার লাইফ। আর ভুলে যেওনা আব্বু অর্ষা আমার ওয়াইফ। আগেও ছিলো এখনো আছে আর ফিউচারেও থাকবে। আর তাছাড়া আব্বু এখন বিয়েটা করলেই যে অর্ষা আমার ওয়াইফ টাইটেল পাবে তা কিন্তু নয়। কারণ সে অলরেডি মিসসে চৌধুরীর টাইটেল নিয়ে বসে আছে।
‘তাহলে থাকুক না এইভাবে অর্ষাকে স্টাডি স্বাধীনভাবে শেষ করতে দাও প্রান্তিক’
‘এখন কি স্বাধীনতা ছাড়া পড়াশোনা করছে? আমি অর্ষাকে জানিয়ে এখন বিয়েটা করছি যেনো সেও জানে যে, আমি ওর হাসবেন্ড। এখনতো জানেইনা যে আমি ওর হাসবেন্ড। আর তোমরা কেনো এইটা ভাবছো যে অর্ষা আমার মতো ছোটবেলার বিয়েটা মেনে নিবে। আর হোকনা আরেকবার বিয়ে তাতে সমস্যা কোথায়? ধরে নাওনা যে এইটা আমার আর অর্ষার বিবাহ বার্ষিকী। এইটা বলেই প্রান্তিক গম্ভীরমুখে প্রস্থান করে তার বাবার রুম।
‘মনিশা শুনেছো? তোমার ছেলের কথা।
‘সবইতো শুনলাম আর দেখলাম। দেখো প্রান্তিক ঠিকিতো বলেছে অর্ষা আগের ঘটনা যেহেতু জানেনা তাহলে বিয়েটা আবার দিলে অর্ষা না চাইলেও বাধ্য হবে প্রান্তিক কে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে’।
‘ইশ মনিশা তোমরা একবারো মেয়েটার কথা ভাবছো? আচ্ছা ধরো যে ওদের আবার বিয়ে হলো তাহলে বিয়ের পরে কি অর্ষা ছোটবেলার সব ঘটনা কখনো জানবেনা বলে মনে হয় তোমার কাছে?
‘আমি কিছুই ভাবতে পারছিনা ফরহাদ’। জানিনা কি হচ্ছে। তবে প্রান্তিক যা করছে হয়তো ভালোর জন্যই।
১৩৯.
তাইফা ফোনটা হাতে নিয়ে তার মামনিকে কল দেয়। ওপাশ থেকে তার মামনি কল ধরতেই হো হো করে কেঁদে উঠেছে।
‘মামনি তুমি কাঁদছো কেনো বলোতো? প্লিজ কেঁদোনা।
‘মা্ মারে তোকে ছাড়া আমার একা লাগে৷ ভালো লাগেনা কিছু। কলেজ থেকে এসে তোকে পায়না। তোর মুখটা দেখিনা। সাহেরা বেগমের গলা দিয়ে কথায় বের হচ্ছেনা। বার বার কথা গলায় আটকে যাচ্ছে।
‘আমি খুব তাড়াতাড়ি আসবো মামনি। এখন যদি তুমি কান্না করো আমি কিন্তু কান্না করে দিবো। জানো মামনি? তোমার মতো এইখানে একটা মামনি আছে। আমাকে অনেক আদর করেন। এইখানে দুইটা মেয়েও আছে আমাকে আপু আপু বলে পাগল করে ফেলে একদম।
সাহেরা বেগম তাইফার এইসব কথা শুনে মুহুর্তেই কান্না থামিয়ে দেয়। এইটা ভেবে সে খুশি হয় যে তার মেয়েকে দেখাশোনা আর স্নেহ করার জন্যও ওইখানে কেউ আছে। সাহেরা বেগম চোখের পানি মুছে বললো,
‘সত্যি বলছো?
‘হুম মামনি আমি সত্যি বলেছি। তোমাকে মিথ্যে কেনো বলবো বলোতো?
‘বুঝেছি’
‘এখনো মন খারাপ মামনি? আচ্ছা তুমি খেয়েছো? ঔষধ ঠিকমতো খাওতো?
‘হুম আমি খেয়েছি। তুমি খেয়েছো?
‘হুম মামনি…আরো কিছু কথা বলে তাইফা কল রেখে দেয়৷ সে জানালার সামনে যায় ফোনটা বিছানায় রেখে। তাইফার খোলা চুলগুলো দক্ষিণা হাওয়ায় উড়ছে। জানালার গ্রিলে ধরে আনমনে বাইরে তাকিয়ে মিনমিনিয়ে বলছে,
‘আল্লাহ আমাকে আমার লক্ষে তাড়াতাড়ি নিয়ে যান। যেনো আমি আমার মামনিকে একরাশ হাসি দিতে পারি’।
১৪০.
‘অর্ষা তোকে ভাইয়া ডেকে পাঠিয়েছে তাড়াতাড়ি যা।
অর্ষা শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলো। প্রিয়ন্তি হঠাৎ এসে এই কথা বলাতে ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘কেনোরে? তোর ভাইয়ের কি আর কোনো কাজ নাই? খালি আমাকপ ডাকে।
‘আমি গিয়ে ভাইয়াকে বলবো? যে তুই ভাইয়াকে এইসব বলেছিস। দাঁড়া আমি যাচ্ছি।
প্রিয়ন্তি যেতে নিবে এমনিই অর্ষা দড়ফর করে বিছানা থেকে উঠে প্রিয়ন্তির সামনে গিয়ে বললো,
‘যাইতাছি বইন আমার। যেমন ভাই তেমনি তার ভাই। এইটা বলেই অর্ষা রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আর এইদিকে প্রিয়ন্তি ফিক করে হেসে ফেলে।
১৪১.
‘দরজা খোলা আছে ভেতরে আসো’ প্রান্তিকের কথা শুনে অর্ষা গুটি গুটি পায়ে প্রান্তিকের রুমে প্রবেশ করে।
‘আমাকে ডেকেছেন?
‘না ডাকলেতো আর এইখানে আসতেনা তাইনা? যাইহোক শুনো কাল খালুজান আর খালামনি আসছে।
‘কিইই!
‘হুম কাল ওনারা আসছে।
‘সত্যি??
‘হুম সত্যি।
‘ইয়াহুুু’।
‘এতো লাফানোর কিছু হয়নি এখন শুনো। তুমি একটু স্টের রুমে যাওতো। গিয়ে দেখোতো ওইখানে আমার ‘একটা নোট বই আছে কিনা।
‘আপনি গেলে সমস্যা কি?
প্রান্তিক রাগে দাঁত কটমট করে বলে,
‘তোমাকে যেতে বলেছি কারণ ওইখানে একটা মেয়ে ভাড়ায় উঠেছে।
‘ওমা ভাইয়া আপনি জানেন না? ওই মেয়েটা তাইফা আপু।
‘তাইফা কে?
অর্ষা কোমড়ে এক হাত দিয়ে মাথায় আরেক হাত রেখে বলে,
‘আল্লাহ মালুম৷ ওই যে আমাদের গাড়ি করে যে একটা মেয়ে ঢাকায় এসেছিলো! সেই মেয়েটা।
প্রান্তিকের হঠাৎ মনে পড়ে হুম মেয়েটার নামতো তাইফা। ইনফেক্ট সে আমাকে বলেছিলো৷ প্রান্তিক অবাক হয়ে বলে কি! ওই মেয়ে এইখানে? কিভাবে?
‘জানিনাতো। প্রথমে আমিও অবাক হয়েছিলাম।
‘নোট বই?
‘খালামনিতো পরিষ্কার করেছে স্টোর রুম। খালামির কাছে নিশ্চয়ই।
‘এনে দাও।
‘ওফ আচ্ছা আনছি। অর্ষার হাত প্রান্তিক ধরে ফেলে। অর্ষা আমতা আমতা করে বলে, ‘কি হলো ছাড়ুন নোট এনে দেয়। প্রান্তিক অর্ষার কপালে এসে থাকা চুলগুলো সরিয়ে নিজের কাছে শক্ত করে মিশিয়ে বললো,
‘চোখে কি আছে তোমার সত্যি করে বলোতো?
‘আপনিই বললেন আমার চোখ টেরা টেরা এখন আমার এই চোখে আর কিইবা থাকবে? ওফ ছাড়ুনতো আমায়।
‘তোমার এই চোখে আমার পৃথিবী আছে।
চলবে…..
#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ২১
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
১৪২.
অর্ষা দৌড়ে নিজের রুমে এসে বুকে এক হাত দিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগ করছে। প্রিয়ন্তি ভ্রু কুচঁকে বললো, ‘কিরে কুত্তা কামড় টানড় দেওয়ার জন্য তাড়া করেছে নাকি?
‘কুত্তা না বাঘ বল বাঘ।
‘কিই বলিস! আমাদের বাড়িতে বাঘ আসবে কোথা থেকে?
‘ওমা তোর ভাই থাকতে অন্য কোনো বাঘের দরকার হয় নাকি?
‘কিই আমার ভাই বাঘ? দুই কোমড়ে হাত গুজে রেগে কথাটা বললো প্রিয়ন্তি। পর মুহুর্তেই আড়চোখে অর্ষার দিকে তাকিয়ে একটু ভাব নিয়ে বললো,
‘ওহ আমার ভাই বুঝি তোকে কামড় দিয়েছে?
প্রিয়ন্তির কথা শুনে চোখ বড় বড় করে ফেলে অর্ষা। প্রিয়ন্তি পুনরায় বললো,
‘তা কোথায় কামড় দিয়েছেরে? ঠোঁটে?
অর্ষাকে আর ধরে রাখে কে.. নিতে থাকে প্রিয়ন্তির পিছু। আর প্রিয়ন্তি দৌঁড়াতে থাকে।
১৪৩.
মনিশা চৌধুরী রান্না করছিলেন। অর্ষা আর প্রিয়ন্তিকে দৌঁড়াতে দেখে বিরক্ত নিয়ে বললো,
‘তোরা দুইটা কি থামবি? এইভাবে দৌঁড়াচ্ছিস কেনো?
অর্ষা ক্লান্ত হয়ে সোফায় বসে আর প্রিয়ন্তিও। অর্ষা প্রিয়ন্তির দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
‘খালামনি তোমার মেয়েটা ভীষণ পাজি হয়ে গেছে ওকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দাও।
‘প্রিয় তোকে কি করলোরে মা?
‘খা… অর্ষা কিছু বলতে যাবে তার আগেই বাসার কলিংবেল বেজে উঠে।
‘খালামনি আমি দেখছি কে এসেছে।
অর্ষা দরজা খুলতেই দেখলো তাইফা। চোখের চশমাটা ঠিক করতে করতে বললো,
‘আস আসলে…একটু চিনি দরকার ছিলো। হবে?
‘আরে আপু। আসো আসো ভেতরে আসো। অর্ষা তাইফাকে ভেতরে নিয়ে যেতেই প্রিয়ন্তি খুশিতে লাফিয়ে বললো, ‘আরে আপু বসো এইখানে। মনিশা চৌধুরী আদুরে কন্ঠে বললো,
‘মা বাটি টা দাও আমি চিনি নিয়ে আসছি তোমরা বসে গল্প করো।
‘না না আন্টি। আমি বসবোনা রান্না করা এখনো বাকি। প্রিয়ন্তি এই কথা শুনে বলে,
‘আরে আপু তোমার রান্না করা লাগবেনা। আজ দুপুরবেলা তুমি না হয় আমাদের সাথেই লাঞ্চটা করে নিও।
‘হে হে আপু প্রিয় ঠিকি বলেছে। আমাদের সাথে না হয় খাবার খেয়ে নিও।
‘ না না অর্ষা এ কি করে হয়? আর তাছাড়া আমি আজকেই বিল্ডিংয়ে উঠেছিতো তাই গুছিয়ে উঠতে পারিনি। এর জন্যই চিনি টা.
‘ওমা এইসব কেমন কথা মা? তুমিতো আমার অর্ষা আর প্রিয়র মতোই। রান্নাঘর থেকে বের হতে হতে কথাটা বললেন মনিশা চৌধুরী।
‘না মানে আন্টি..
‘ওরা যেহেতু এতো করে বলছে আজ না হয় লাঞ্চটা আমাদের এইখানেই সেরে ফেলো।
‘হুম আপু খালামনিতো ঠিকি বলছে এইখানেই খেয়ে নিও প্লিজ।
‘ঠিক আছে অর্ষা আজ না হয় তোমাদের এইখানেই খাবো।
প্রিয়ন্তি খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরে তাইফাকে।
১৪৪.
প্রান্তিক সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে দেখে তাইফাকে নিয়ে আড্ডায় মেতেছে অর্ষা আর প্রিয়ন্তি। আর রান্নাঘর থেকে মনিশা চৌধুরীও তালে তাল মিলাচ্ছে। প্রান্তিক একটু কাশি দিয়ে গলাটা ঝেড়ে বললো,
‘কি করা হচ্ছে সবার? তাইফা প্রান্তিক কে দেখে আগের ন্যায় চুপই আছে। অর্ষা বলে,
‘দেখছেন ইতো তাইফা আপুর সাথে আড্ডা দিচ্ছি।
‘বুঝলাম। তবে তোমরা কি বুঝছোনা? যে পাশে থাকা ব্যাক্তিটি তোমাকের ফাটা বাঁশের কন্ঠে এতো গদগদ শুনে বিরক্ত হচ্ছে। মিনমিনিয়ে হেসে প্রান্তিক কথাটা বলাতে প্রিয়ন্তি নাক ফুলিয়ে তাইফাকে বললো,
‘আপু তোমার বিরক্ত লাগছে?
‘ না না আমার ভালোই লাগছে।
‘তাইফা মিথ্যে বলো কেনো তোমার বিরক্ত লাগছে ওদেরকে বলো।
‘না ভাইয়া আমার ভালো লাগছে। একা থাকার থেকে অনেক ভালো এই দুইটা মিষ্টি মেয়ের বকবক।
অর্ষা আর প্রিয়ন্তির মুখে বিজয়ের হাসি। আর প্রান্তিকও মিনমিনিয়ে হেসে বলে,
‘অর্ষা প্রিয়ন্তি অংক করে রাখবি তোরা। আমি এসে দেখবো।
‘ভাইয়া তুমি কোথাও যাচ্ছো?
‘হুম অফিসে।
‘সে কিরে না খেয়েই চলে যাবি? কিছু খেয়ে যা।
‘না আম্মু। আমি গেলাম লেইট হয়ে যাচ্ছে। এইটা বলেই প্রান্তিক চোখের সানগ্লাসটা পড়ে বেরিয়ে পড়লো। সুট এর সাথে ঘড়ি, সানগ্লাস সব মিলিয়ে প্রান্তিক অফিসের জন্য ফুলশিপ পারফেক্ট।
প্রিয়ন্তি কাঁদো কাঁদো ফেইস নিয়ে বলল,
‘ওফ আবার অংক?
১৪৩.
আব্বা আমি হেগোরে ছারমুনা। আগে ওই মাইয়া কই আছে হেইডা কও।
‘বাজান তুই এইহানো ব’। কেমনে পলাইছোস বাজান?
‘আব্বা আস্তে কও। কেউ হুনলে পুলিশ জাইনা যাইবো। সাহিল কই?
‘ভাই তুমি কখন আইছো? সারা গ্রাম ছইড়া গেছে। তুমি জেল থেইকা পালাইয়া গেছো।
‘অর্ষা ম** কই হেইডা ক আমারে।
‘ভাই শুনছি এই মাইয়া ওর খালার বাসায় থাকে।
‘ঠিকানা জানোস?
‘না ভাই। তবে ঢাকা শহরেই থাকে। হঠাৎ সাহিল পুলিশের গাড়ির আওয়াজ শুনে বলে,
‘ভাই পুলিশ আইতাছে পালাও। এইটা শুনেই সাহিলের ভাই সোহেল চাঁদর মুড়ি দিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে তড়িগড়ি করে ভেঙে যায়।
১৪৪.
ফরহাদ চৌধুরী, মনিশা চৌধুরী, অর্ষা, প্রিয়ন্তি আর তাইফা বসেছে খাবার টেবিলে খেতে।
‘তোমার নাম কি মা?
‘আমার নাম তাইফা আঙ্কেল।
‘বাড়িতে কে কে আছে?
‘জ্বি। আমার মামনি শুধু।
‘বাব?
তাইফার মনটা মুহুর্তেই খারাপ হয়ে গেলো৷ মনিশা চৌধুরী বুঝতে পেরে বললেন,
‘ওফ তুমি খাওতো। মেয়েটাকে ভালোভাবে খেতেও দিবেনা নাকি?
‘মা তুমি মন খারাপ করোনা। আমিতো তোমার বাবার মতোই। খাও।
‘তাইফা খেতে লাগলো।
‘প্রান্তিক খেয়ে গেছে?
‘তোমার ছেলের কি আর খেয়ে যেতে হয়? ওহতো না খেয়েই দিব্যি কাজ করতে জানে। হঠাৎ অর্ষা বললো,
‘খালুজান আমি আর প্রিয় গিয়ে ভাইয়াকে খাবার দিয়ে আসি? অর্ষার কথা শুনে মনিশা চৌধুরী ফরহাদ চৌধুরীর দিকে একবার তাকান। পরে বলে,
‘সত্যি যাবি মা?
‘হুম খালামনি সত্যি যাবো। না খেয়েতো আর কাজ করা যায়না। তাই খাবারটা বরং আমরাই নিয়ে যায়।
‘ঠিক আছে তোরা খেয়ে নে আমি টিফিন রেডি করছি। এইটা বলেই মনিশা চৌধুরী টেবিল থেকে উঠে রান্নাঘরে গেলেন।
১৪৫.
খাবার শেষে তাইফা নিজের রুমে যায়। তার ভীষণ খারাপ লাগছে। সে বরাবরই নিরবতা পছন্দ করতো। কিন্তু আজ সে একা কতো নীরবতা! অথচ তার যেনো ভালোই লাগছেনা। হঠাৎ রিমি কল দিলো।
‘কিরে তাফু কল দিলাম এতো ধরলিনা কেনো?
‘আরে বলিসনা। বাড়িওয়ালা আন্টির কাছে গিয়েছিলাম। খাবার খেয়েছি ওখানে তাই।
‘বাহ। তা বাড়িওয়ালার কোনো ছেলে টেলে আছে নাকি?
‘ওফ রিমি তোর ফালতু কথা ছাড়তো। আসবি এইখানে?
‘হুম আমি ভাবছি কদিন তোর সাথে থাকবো।
‘সত্যি?
‘হুম।
‘আন্টি কিছু বলবেনা?
‘দূর না। আমি ম্যানেজ করে নিবো। আমি আজকে বিকেলেই আসবো।
‘ঠিক আছে।
১৪৬.
ঢাকা শহরে এসেছো সোহেল। লক্ষ অর্ষা। এইখানে পুলিশ তাকে খুঁজে বের করবেনা এইটাই সে ভাবছে। আপাতত সে নিরাপদ।
‘ভাই নতুন নাকি?
পিছন থেকে হঠাৎ কারো কন্ঠ শুনে চমকে উঠে সোহেল। পরে দেখলো একটা লোক।
‘হো ভাই নতুন।
‘থাকবার জায়গা নাই খাইবার জায়গাও নাই তাইতো?
‘হুম ভাই।
‘আমার সাথে আহো। প্রতিদিন একটা ম*ল আইনা দিবার পারলেই টাকার অভাব পড়বোনা। সোহেল বুঝতে পেরেছে যে লোকটা কি বুঝাতে চাইছে। সে হেসে বললো,
‘বুঝবার পারছি ভাই চলেন।
চলবে…..