এখানে বেলি ফুলের মালা-১

0
1207

এখানে বেলি ফুলের মালা-১
মিফতা তিমু

এক টানা কানের কাছে একই গান শুনতে শুনতে শেষমেশ বাধ্য হয়েই চোখ জোড়া খুললো বিনী। এখন ভর দুপুর বলে সে ঘুমাচ্ছিল। কিন্তু তার এত শান্তি কি আর তার বোনের সহ্য হয় ? তাইতো ওর সাধের ঘুম নষ্ট করতে চলে এলো। তারই প্রস্তুতি স্বরূপ এতক্ষণ কানের কাছে একই গান গাইছিল। সে ভালো করেই জানে বিনী গান বাজনা দুই চক্ষে দেখতে পারেনা তবুও বিনীকে জ্বালাতে সে গানই ধরেছে।

বিরক্তিতে নাক মুখ কুচকে আসফিয়ার দিকে তাকিয়ে বিনী বললো ‘ আফু তোর কোন পাকা ধানে আমি মই দিয়েছি বলতো ? কেন আমার সাধের ঘুমটা নষ্ট করছিস বলতো ? একটু ঘুমোতে দে না… আবার কবে না কবে এমন দুপুরে ঘুমাতে পারবো খোদা জানে। তোরা তো আছিসই আমাকে কখন বিয়ে দিয়ে বিদায় করবি এই সুযোগে। ধুর সর… আমি ঘুমাবো। ‘

কথাগুলো বলেই বিনী বালিশের নরম গায়ে মাথা এলিয়ে দিয়ে চোখ জোড়া বুজে নিলো। কিন্তু তার আর সাধ করে ঘুমানো হলো না কারণ পাশ থেকে আসফিয়া তাকে ঠেলছে। বিনী বেশ বিরক্ত হলো কিন্তু জবাব দিল না। আসফিয়া ওকে ঠেলতে ঠেলতে বললো ‘ এই আপা উঠ না… মা ডাকছে তোকে। বলেছে উঠে একটু মুখে চন্দন পাউডার দিয়ে ফেস প্যাক দিতে। এখন দিলে নাকি সন্ধ্যার সময় মুখ ঝলমল করবে। ‘

বিনী ভেবেছিল একটু প্রতিবাদ করবে কিন্তু যখন শুনলো মা ডেকেছে তখন আর কিছু বললো না। বিছানা ছেড়ে নেমে গেলো। ঘরের সঙ্গে লাগোয়া বাথরুমে গিয়ে ছোট বাটিতে করে চন্দন পাউডারের তৈরি ফেসপ্যাক এনে ঘরের মেঝেতে বসলো। হাতে আলতো করে নিয়ে মুখে লাগাতে লাগাতে আসফিয়াকে বলল ‘ তুই লাগাবি নাকি ? ‘

‘ হুম লাগাবো তো… আজকে তো লাগানো মাস্ট। এই আপা শুনেছি সন্ধ্যায় নাকি দুলাভাইয়ের চাচাতো ভাই বোনেরাসহ অনেকেই আসবে। তুই জানিস কে কে আসবে ? ‘ আসফিয়া মুখে ফেস প্যাক লাগাতে লাগাতে বললো।

‘ উহু…আমি কি করে জানবো ? আমি তো তোদের প্রিয় দুলাভাইকেই দেখলাম না আবার তার কোন ভাই বোন আসবে সেটা কি করে জানবো ? ‘ বিনী বললো।

‘ এই আপা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ? সত্যি করে বলবি তো ? ‘ আসফিয়া দুষ্টু হেসে বললো।

‘ তোকে মিথ্যা বলে আমার কি লাভ বলতো ? এত ভনিতা না করে পেটে যা আছে উগড়ে দে। শুনি তোর বিশেষ কথা। ‘

‘ আপা সত্যি করে বলতো তোর দুলাভাইকে দেখতে ইচ্ছা করে না ? তুই তো উনার নামটাও জানিস না। তোর কি একটুও ইচ্ছা করেনা তার নাম জানতে, তাকে দেখতে ? ‘ আসফিয়া জিজ্ঞেস করলো।

‘ নাহ্ দেখতে ইচ্ছা করবে কেন ? আজই তো উনার সঙ্গে বিয়ে হবে। তারপর বাসর রাতে তো এমনিতেই দেখতে পারবো। আমি তোর মতো এত বিয়ে পাগল না। আমার শখ নেই কাউকে দেখার বা নাম জানার। আমি নিতান্তই ভদ্র মেয়ে। ‘

‘ ধুস ওটা বলিনি… তোদের বিয়ের কথাবার্তা তো এক মাস ধরে চলে। এক মাস কি তোর কম মনে হয় ? সেই কবে থেকে দেখছি বিয়ের কথাবার্তা শুরু হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত তুই দুলাভাইয়ের নাম জানতে কিংবা তাকে দেখতে চাসনি। আচ্ছা তুই এমন অদ্ভুত কেন ? তোর কি ইচ্ছা করে না দুলাভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে প্রেম করতে ? তোর জায়গায় আমি হলে প্রেম অবশ্যই করতাম। জানিস আপা আমি ঠিক করেছি যার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে তার সঙ্গে আমি বিয়ের আগে পুরো এক মাস প্রেম করবো। তারপর বিয়ে করবো… এই আজ তো তোর চাচাতো দেবর আসছে। তার সাথে প্রেম করলে কেমন হয় ? ‘ আসফিয়া তার দুই বেনি দুলাতে দুলাতে বললো।

আসফিয়ার কথা শুনে প্রথমে বিনী কোনো উত্তর না দিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত রইলো তবে একটু পরেই ধীর স্বরে বলল ‘ আচ্ছা আফু আমি যদি এখন হুট করে বিয়ে ছেড়ে পালিয়ে যাই তখন কি হবে ? বাবা কি মান সম্মান বাঁচাতে আমার জন্য তার ঠিক করা পাত্রের সঙ্গে তোর বিয়ে দিবে ? ‘

বিনীর কথায় আসফিয়ার চোখে মুখে এতক্ষণ বোনের বিয়ে নামক যেই আনন্দ ছিল তা ক্ষনিকেই কর্পূরের মতো উড়ে গেলো। তার পরিবর্তে চেহারায় এসে ভিড় করলো এক রাশ ভীতি। সে ভীত গলায় বলল ‘ আপা তুই এসব কি বলছিস ? পালিয়ে যাবি মানে ? কেন পালাবি ? ‘

আসফিয়ার কথায় বিনী বাটি গুছাতে গুছাতে বললো ‘ মজা করছিলাম… ভাবলাম তোকে চমকে দেই। তুই চমকে গেছিস না ? ‘
‘ এভাবে কেউ মজা করে আপা ? আমি ভাবলাম বাবা জোর করে তোর বিয়ে দিচ্ছে আর তোর এই বিয়েতে মত নেই। ‘ আসফিয়া সঙ্গে সঙ্গে হেসে দিয়ে কথাটা বলল।

‘ বাবা আমাকে আমার মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দিবে না এটা তোর জানার কথা তাইনা ? তোর দুলাভাইয়ের পরিবার কেমন জানিস ? ‘ বিনী তার কাজে ব্যস্ত থেকেই বললো।

‘ বাহ্ এতদিন পর বিয়ের দিন বিকেলে জিজ্ঞেস করছিস শশুর বাড়ি নিয়ে। আমি ভাবলাম তুই একবারে শশুর বাড়ি উঠেই সবার সঙ্গে আলাপ করবি। আমি তেমন কিছু জানিনা তবে কিছু কিছু জিনিস জানি তোর হবু বর সম্পর্কে। বলবো ? ‘ আসফিয়া দুষ্টু হেসে বললো।

‘ বলতে পারলে বল… সম্পূর্ণ তোর ইচ্ছা। ‘

‘ দুলাভাইয়ের নাম আবির হাসান। উনারা সবাই যৌথ পরিবারে থাকেন। উনার এক চাচা, তার পরিবার, ভাইয়ার বড় ভাই,তার বউ বাচ্চা এবং উনিসহ উনার মা বাবা। উনার মা শাহিদা আন্টি একটু গম্ভীর এবং অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ। ‘

‘ ভালো ‘ এক বাক্যে কথাটা বললো বিনী।

‘ ভালো বলছিস তুই ? এখানে ভালোর কি দেখলি ? বাবা যে বেছে বেছে যৌথ পরিবারে তোর বিয়ে ঠিক করবে এটা কে জানত। এই ব্যাপারে মাও জানতো না। আজ সকালেই জানতে পারলো। জেনেই সে রেগে এক চোট। বাবাকে অনেক কড়া কথা শুনিয়েছে। আর বাবা নিরীহ মুখে কেবল বললো কথাবার্তা তো সব ঠিক করে ফেলেছে, বিয়ের তারিখও চলে এসেছে। এখন কিছু বললে মান সম্মান সব ধুলোয় মিশে যাবে। অথচ তুই ভালো বলছিস। তুই না ছোট থেকে জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলি ? ‘ আসফিয়া আরক্ত মুখে বললো।

‘ কপালে যা থাকবে তাইতো মেনে নিতে হবে। ভাগ্যের লিখন কি খন্ডানো যায় ? আমার ভাগ্যে জয়েন্ট ফ্যামিলি আছে তাই ওই পরিবারে বিয়ে হচ্ছে। এখানে আমার ভালো বলা ছাড়া আর কিছু করার উপায় আছে ? আফসোস করলে যদি লাভ হতো তাহলে নাহয় আফসোস করতাম। আফসোস করলে যখন কাজে দিবে না তখন শুধু শুধু করে লাভ কি ? ‘ কথাগুলো বলে বিনী হাতের ফেস প্যাকের বাটিটা টি টেবিলের উপর রেখে মুখ ধুতে গেলো।

বিনী যখন মুখ ধোয়ায় ব্যস্ত তখনই ঘরে সালমা ইসলাম ঢুকলেন। মেয়েকে মুখ ধুতে দেখে বললেন ‘ বিনী তোর কি মুখ ধোয়া শেষ ? ‘
বিনী মুখটা ধুয়ে বাথরুমের স্ট্যান্ড থেকে সাদা ফকফকে টাওয়েলটা নিয়ে তাতে মুখ মুছে বললো ‘ হ্যাঁ শেষ… কিছু বলবে ? ‘

সালমা ইসলাম মেয়ের কথায় মেয়ের হাতে মেহেদীর টিউব ধরিয়ে দিয়ে বললেন ‘ চট করে মেহেদীটা হাতে দিয়ে ফেলতো দেখি। বিয়ের কনে তুই। হাতে মেহেদীর রং না থাকলে আত্মীয় স্বজন অনেক কথা বলবে। আফি তোর আপার হাতের এক কোণায় তোর দুলাভাইয়ের নামটা লিখে দিস তো। তোর দুলাভাইয়ের নামে মেহেদী দিলে মেহেদীর রং ভালো হবে । ‘

‘ মা তুমি এখনও এসব বিশ্বাস করো ? কোন মান্দাতার আমলে বাবার নামে মেহেদী পড়েছিলে আর তখন মেহেদীর রং ভালো এসেছিল বলে এখনও সেই ধারণা নিয়ে বসে আছো। এসব কুসংস্কারকে পাত্তা দিও না মা। ‘ আসফিয়া উঠে এসে বললো।

‘ এত কথা না বলে মা যেটা বলেছে সেটা কর। আমি মেহেদী দেওয়া শেষে তোর দুলাভাইয়ের নামটা লিখে দিবি। তাহলে তোর কাজ শেষ। আমি বাড়তি কথা চাচ্ছি না। ‘ বিনী মেহেদীর টিউবটা ছিদ্র করতে করতে বললো।

‘ হ্যাঁ তোর আপা যা বলছে তাই কর আফি। এত কথা বলিস না। আর কি যেন বলতে এলাম ? ওহ হ্যাঁ বিনী এই পাঁচশো টাকাটা নে… বিয়ের পরে এটা দিয়ে নিজের পছন্দ মতো কিছু কিনিস। নে তুই মেহেদী দিতে বস আর আমি তোর লাগেজটা গোছাচ্ছি। ‘ বলে সালমা ইসলাম বিনীর হাতে পাঁচশো টাকার নোটটা গুঁজে দিয়ে লাগেজ বের করতে গেলেন।

বিনী হাতে থাকা পাঁচশো টাকার নোটের দিকে তাকিয়ে আছে। আজকালকার দিনে এই পাঁচশো টাকার একটা নোট অনেক দামি। সে বাবার আদরের মেয়ে হলেও এটাই তার পাওয়া সবথেকে বড় অঙ্কের টাকা যেটা তার মা দিয়েছে। ওর মা সালমা ইসলাম মেয়েরা বাবার আদরের মেয়ে বলে হাতে ইচ্ছা মতো টাকা দিয়ে ছেড়ে দেননি কখনও।

সালমা ইসলাম তার পুরো জীবনে ভীষন হিসাব করে চলেছেন আর মেয়েদেরকেও তাই শিখিয়েছেন। উনার এই হিসাবী স্বভাবের জন্য আত্মীয় স্বজনরা আড়ালে উনাকে অ্যাকাউন্ট্যান্টের বউ বলে ডাকেন। কিন্তু উনি ওসবে কান দেন না। হিসাব করে চলেন বলেই উনার ঢাকা শহরের মতো দামী জায়গায় উনার দোতলা বাড়ি আছে।

—-

‘ এই আফু হাতের মেহেদী তো ভালই রং উঠেছে। তাহলে কি মায়ের কথাই সত্যি ? তোর দুলাভাইয়ের নাম লেখাতে মেহেদীর রঙ গাঢ় হয়েছে ? ‘ বিনী ওর মেহেদীর রঙে রঙিন হাতের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো।

‘ মায়ের মত বোকা বোকা কথা বলিস না আপা। ওটা নারিকেল তেলের কেরামতি। অদ্ভুত তোদের কুসংস্কার। আমি হোম রেমেডিসের কথা বুঝাতে বুঝাতেই পাগল হয়ে যাবো। ‘ আসফিয়া ওর পায়ে আলতা দিতে দিতে বলল। আজ সে ঠিক করেছে তার আপার বিয়েতে লাল আলতা পায়ে ছামছাম নূপুর পায়ে পুরো বাড়ি হাঁটবে। আলতা পায়ে নূপুর এক অন্যরকম ভালোলাগা।

‘ এই আপা তোর ভয় লাগছেনা জীবনে প্রথম বিয়ে করে শশুর বাড়ি যাবি তাও আবার জয়েন্ট ফ্যামিলিতে ? ভয় তো লাগার কথা। জয়েন্ট ফ্যামিলিতে মানিয়ে নেওয়ার একটা ব্যাপার আছে। ‘

‘ ভয় লাগবে কেন ? আর বিয়ে তো মেয়েদের একবারই হয়। তার আবার প্রথম আর দ্বিতীয় কি ? বিয়ে যৌথ পরিবারে হোক আর একক পরিবারে, দুই জায়গায়ই মানিয়ে নিতে হয়। মানিয়ে নেওয়া ছাড়া সংসার করা যায় না। ‘

‘ একটা গোপন কথা বলবো আপা ? ‘

‘ বলতে পারলে বল… তোর ইচ্ছা ‘

‘ দুলাভাইয়ের চাচাতো বোন রঙ আছে না ? ওই যে আমার বয়সী মেয়েটাকে যে দেখলে তোমাকে যখন দেখতে এসেছিল ? ওর না বয়ফ্রেন্ড আছে। নাম তুষার…. সিএ ফার্মে ফাইনাল ইয়ারে পড়ে। ‘ আসফিয়া বললো।

‘ ওর বয়ফ্রেন্ড আছে তুই কি করে জানলি ? তোকে কে বললো ? ‘ বিনী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো।

‘ ওই তো বললো যে ওর বয়ফ্রেন্ড আছে। অবশ্য বলেছিল এই কথা কাউকে না বলতে। কিন্তু তুই তো জানিস আমি কোনো কথা চেপে রাখতে পারিনা। তাই তোকে বলেছি… ‘ আসফিয়া বোকা বোকা মুখ করে বলল।

‘ তাহলে তো মেয়েটার কপালে শনি আছে। বেছে বেছে তোকেই বলতে হলো ওর। তুই মীর জাফরের দলের নেতা, কথা রাখতে জানিস না। আমার আগে আর কাকে কাকে বলেছিস কথাটা ? আর কাউকে বলিস না কিন্তু… ‘

‘ তোকেই প্রথম বললাম। আর কাউকে বলিনি… আচ্ছা বলবো না কিন্তু তুই এটা ঠিক করলি না আমাকে মীর জাফরের দলের নেতা বলে। আমি কিন্তু তুই যে ছোটবেলায় একবার মেনী বিড়ালকে ঘরে এনে মাছ ভাত দিয়েছিলি ওটা মাকে বলিনি। ‘ আসফিয়া কপট রাগ দেখিয়ে বললো।

‘ বুঝেছি, তোকে এখন থেকে আর মীর জাফরের দলের নেতা বলা যাবে না। তোকে তাহলে ঘসেটি বেগম বলে ডাকতে হবে। ঘসেটি বেগম, হবে না ? ‘ বিনী চোখে মুখে মেকি অসহায় ভাব ফুটিয়ে বললো।

‘ আপা তুই বড্ড খারাপ হয়ে যাচ্ছিস। এখনই এই অবস্থা… না জানি বিয়ের পর কি হবে। বুঝে গেছি তোকে আর কোনো সিক্রেট বলা যাবে না। ঠিকাছে আমিও বলবো না। ইন ফ্যাক্ট আর কথাই বলবো না। তোর সাথে আর কোনো কথা নেই আমার ‘ বলে আসফিয়া রাগ করে মেঝে থেকে উঠে গিয়ে ধুপধাপ পা ফেলে চলে গেলো আর বিনী আপন মনে হাসতে লাগলো।

~ চলবে ইনশাআল্লাহ্ ….

ছবিয়াল: Maksuda Ratna

( উপন্যাসটা ১৯৯০ সালকে কেন্দ্র করে এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আগেই লিখা ছিলো দুই পর্ব তাই আস্তে আস্তে লিখে লিখে দিবো। রোজ দিতে পারবো কিনা জানিনা তবে শুরু যখন করেছি শেষ করবই। সবাই আশা করি গঠনমূলক মন্তব্য করে উৎসাহিত করবেন। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here