#এমেলিয়া,০৫,০৬
০৫
এদিকে শহরের ঠিক একই জায়গায় বার বার খুন হওয়ায় পুলিশ ডিপার্টমেন্ট নড়ে চড়ে বসে।এতদিন খুনগুলোর কোনো মামলা জমা পরেনি বলে গায়ে লাগায়নি।তবে গতকালের খুন টা হওয়ায় উপর ডিপার্টমেন্ট থেকে তোড়জোড় শুরু করে। পুলিশ ফোর্স মাঠে নেমে পড়ে।প্রাথমিকভাবে তেমন কোনো আলামত পাওয়া যায় নি।তবে খুনের তরিকা একই।সেই চোখজোড়া বিদ্ধ করা,হাত ২টো দূরে পড়ে আছে,আর অন্ডকোষ দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন। সিরিয়াল কিলিং কেইস।
ডিবি পুলিশের একজন বিশেষ ব্যক্তি এই কেইসে অদ্রিকে রাখতে চায় এমন খবর চেয়ারম্যান ম্যামের মুখ থেকে শুনে সাত পাঁচ না ভেবেই অদ্রি রাজি হয়ে যায়।এরকম একটা কাজের জন্যই তো অদ্রি অপেক্ষা করে ছিল। যদিও ব্যক্তিটি আর কেউ নয়।ম্যামেরই স্বামী ইসতিয়াক আহমেদ।স্ত্রীর মুখে ছেলেটার এত প্রশংসা শুনেছে যে নিজেই তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নিতে আগ্রহী হয়।ইনভেস্টিগেশানও শুরু হয়ে যায়।
আজকাল অদ্রির মন ভালো থাকছে না।কেমন যেন উথাল পাথাল। কোনো কাজে মন বসছে না। মনে হয় খুব করে কারো কথা মনে পড়ছে। কিন্তু কে সে?অবণী?? নাহ সে তো নয়।সময়ের বহমানতায় অবণী নামক স্মৃতিটা আজকাল কেমন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে আজ বুধবার।অদ্রি বেড়িয়ে পড়ে। চলে আসে শাহবাগের সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গায়। অদ্রির চোখজোড়া যেন সেই সবুজ দুটি চোখ কে খুজে বেড়ায়।আশেপাশে কোথাও রহস্যময়ীর দেখা নেই।হঠাৎ পিছন থেকে এমেলিয়া ডাক দেয়।অদ্রি ভাইয়া……অদ্রি অবাক হয়ে যায়।এমেলিয়া কালো শাড়ি পড়েছে। কি ভীষণ সুন্দর লাগছে।চোখ সরাতে পারছেনা অদ্রি।আজকাল প্রায়ই এমেলিয়া শাড়ি পড়ে।বেশিরভাগই কালো রঙের।
এই কটা দিনে কেমন যেন পরিণত হয়ে গিয়েছে মেয়েটা।আর ওই সবুজ চোখ দুটোতে যেন মায়া আর রহস্য ক্রমশ বেড়েই চলছে।তবে কি অদ্রি নতুন করে এই মেয়েটার প্রেমে পড়ছে?আর অবণী?সে কি শুধুই মরীচিকা??
চলবে…..
লেখনীতে-Shahana urmi
#এমেলিয়া
আমলিয়া….হুইন্না যা। রুম্মার ডাকে দাঁড়িয়ে যায় এমেলিয়া।
রুম্মা রাগী গলায় প্রশ্ন করে, হুনতাছি আইজ কাইল সাইজ্জা সাইজ্জা বাইরাস (বাহির হওয়া) মনে রং লাগছে??হুনতাছস কি কইতাছি আমি??
— বসন্ত এসে গিয়েছে রুম্মা।তাই একটু রং লাগাচ্ছি গায়ে।
এমেলিয়ার এমন প্রতিউত্তরে রুম্মার রাগ এক নিমিষে পানি হয়ে যায়।এই মেয়ের উপর রাগ রাখবে কার সাধ্যি।হাসি চেপে রুম্মা বলে,বুঝবার পারছি তরে আর ঘরে রাহন(রাখা)যাইব না।এইবার সাদি দেওয়ন লাগবো..
এমেলিয়া মুখ টিপে হাসে।মনে মনে ভাবে আমিতো কবে থেকেই রাজি। শুধু অদ্রি ভাইয়া যদি একটু চাইত….
ইসতিয়াক সাহেব…..
দরাজ কন্ঠে আতকে ওঠে ইসতিয়াক সাহেব।মনে মনে পরতে থাকেন লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ…।খাটাস বস আজকে কি পরিমাণ ডোজ দিবেন তা বুঝাই যাচ্ছে।
বস রাগে গড়গড় করতে করতে বলেন,ঘোড়ার ঘাস কাটার জন্য আপনাকে ডিপার্টমেন্টে রাখা হয়নি।নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে কাজে লেগে পরেন।আগামী ৭ দিনের মধ্যে আমার এই কেইসের সুরাহা চাই।চাই মানে চাই ঠিক আছে??শুনেছেন আপনি??দয়া করে এখান থেকে বিদায় হয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।যান বের হন।
এভাবে কেউ অর্ডার করে?যেন মামা বাড়ির আবদার।কেইস সলভ করা এতো সহজ??খবিশ কোথাকার।
আল্লাহ আল্লাহ করে বেড়িয়ে আসেন ইসতিয়াক সাহেব।বসের ঘরে ঢোকা আর পুলসিরাত পার করা এক কথা।
শুনেছ অদ্রি…. এবার কি করব??
অদ্রি বিনয়ের সাথে স্যারকে জানায়,ছোটবেলায় আমার নানু যখন আমাকে গল্প শোনাতেন আমি না বুঝলে নানু আবার প্রথম থেকে বলতেন।তিনি সবসময় বলতেন সমস্যার সমাধান না পেলে গোড়া থেকে তা দেখা উচিত।চলেন গোড়াতেই যাই মানে ঘটনা স্থলে আবার যাই।
কিন্তু এতদিন পর কোনো আলামত পাওয়া যাবে?
অদ্রি জবাব দেয়,যেখানে দেখিবে ছাই উরাইয়া দেখিবে তাই পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।ছোটবেলায় পড়েননি স্যার?
ইসতিয়াক আহমেদ ছেলেটার ধৈর্য্যের প্রশংশা না করে পারেনা।সত্যিই তো…আচ্ছা চল।
বেড়িয়ে পড়ে দুজন সিভিল বেসে।
ইসতিয়াক আহমেদ খানিকটা খুজাখুজির পর বিরক্তির সুরে বলেন,নাহ কিছুই তো নাই অদ্রি।
স্যার ভালো করে খুঁজুন।
দীর্ঘ ৩ ঘন্টা খোঁজাখুঁজির পরও কিছুই পায়না তারা। খুনি অসম্ভব রকম ধূর্ত ।একটা এভিডেন্স ও পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত।অতি সন্তর্পণে খুন করে সে।দেখে মনে হয় যেন মাছ কাটার মত সহজ কাজ।
–আচ্ছা স্যার খুনি পুরুষ নাকি মহিলা?
ইসতিয়াক আহমেদ অসহায় ভঙ্গিতে জবাব দেন,জানিনা ছোট ভাই।আপাতত চল এখন, এখান থেকে যাওয়া যাক।
পর্ব ৬।
চলবে…
লেখনীতে-Shahana urmi