এ_কেমন_ভালোবাসা #পর্ব_১৫,১৬

0
1178

#এ_কেমন_ভালোবাসা
#পর্ব_১৫,১৬
#মাসুরা_খাতুন
১৫

সকাল থেকে স্বাধীন একটা কথাও বলেনি ছোঁয়ার সাথে। ছোঁয়া স্বাধীনের প্লেটে খাবার দেওয়ার জন্য এগিয়ে গেলেও স্বাধীন ছোঁয়ার কাছ থেকে নেয়নি,নিজেই তুলে নিয়েছে। নিহা ও খানিকটা খেয়াল করে এদের এড়িয়ে চলার দৃশ্য গুলো। ব্রেকফাস্ট করে যে যার মতো বেড়িয়ে গেছে। নিহাকেও আজকাল একটু বেশিই শান্ত দেখাচ্ছে। কোনরকম খারাপ ব্যবহার করেনি ছোঁয়ার সাথে। এমন কি স্বাধীনের গায়ে এলিয়ে পড়ার স্বভাব টাও মনে হয় বাদ দিয়েছে। যথেষ্ট ভদ্রভাবেই চলাফেরা করছে নিহা।যা কোনদিন স্বাধীন দেখেনি।
স্বাধীন আর নিহা বেরিয়ে গেলে ছোঁয়া যায় স্বাধীনের রুমে।স্বাধীনের একটা প্রিয় উপন্যাসের বইয়ের ভেতর রেখে দেয় ভাজ করা একটি চিরকুট।যা গতকাল রাতেই ছোঁয়া লিখে রেখেছিল।
রাতেই ছোঁয়া কাঁদতে কাঁদতে অনুধাবন করার চেষ্টা করে স্বাধীনের কথা গুলো,সত্যিই তো,একটা ছেলে একটা মেয়ের কাছে কখন এমন আবদার গুলো করে? যখন ছেলেটা মেয়েটাকে একান্ত ভাবে চায়।তারমানে স্বাধীন ভাই ও কি ওকে চায়? একদম আপন কর?মনের ভেতর থেকেই উত্তর আসে “হ্যাঁ”চায়।আর চায় বলেই তো এতো রাগী স্বাধীন নিজের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে ওই একরত্তি মেয়েটার কাছে মিথ্যে বলে একটু ভালোবাসা পাওয়ার চেষ্টা করেছিলো।স্বাধীনের মতো মানুষ ও বাচ্চাদের মতো অসুখের বাহানা দেখিয়ে আবদার করেছিলো।আর ছোঁয়া কি করলো? স্বাধীনের সেই রাতের আঁধারে করা ছেলেমানুষী টাকে সকলের হাসির বিষয় বানালো।এযে বড় অন্যায়।একজন মানুষ সব কিছু সহ্য করতে পারলেও তার ইমোশন নিয়ে মজা করাটা পছন্দ করেনা।আর ছোঁয়া তায় করেছে, নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য স্বাধীনের আবেগকে ছেলে খেলা করেছে। নিজের ভুল বুঝতে পারে ছোঁয়া।
আর যখন বুঝতে পারে তখনই স্বাধীনের জন্য ভালোবাসায় দুচোখ ভিজে ওঠে।নিজের ভুল গুলো মুখে স্বীকার করার সাহস ওর নেই, তায়তো কাগজ কলমে স্বীকার করে নেয় নিজের দোষগুলো।

প্রিয় স্বাধীন ভাই,

আমি অত্যন্ত দুঃখিত কালকের ব্যাপারটার জন্য। ক্ষমা চাওয়ার মুখ আমার নেই।তুমি তো জানোই তোমার ছোঁয়া একটু বেশিই বোকা। তায়তো রাতের আঁধারে তোমার আবেদন আমি বুঝতে পারিনি।আসলে এটা বুঝবো কি করে বলো? এটা যে আমার ভাবনাতীত।আমি কখনো কল্পনায় করিনি যে কোন দিন তুমি নিজে থেকে চায়বে আমায়।তোমার কোন চাওয়ায় আমি থাকতে পারি।এগুলো আমার স্বপ্ন বৈ কিছুই না,কিন্তু হটাৎ রাতের এক নির্জন প্রহরে আমার প্রতিদিন দেখা স্বপ্নটা সত্যিই যে ঘটছিলো,তা আমি বুঝতেই পারিনি। বিশ্বাস করো, এতোটুকুও বুঝতে পারিনি।সেই ছোটবেলা,কিশোরী বয়স থেকে যেই মানুষ টাকে ভালোবেসে যাচ্ছি, আর সেই মানুষ টা আমার কাছে কিছু চাইবে,আর আমি দেবোনা,এতোটা দুঃসাহস আমার কোথায় বলো?
এরপর আর কখনো এমন ভুল হবেনা।আমি বুঝতে পেরেছি তোমার কথা গুলোর মানে।এবার থেকে তুমি যা চাইবে তায় হবে।তাও প্লিজ তুমি এমন রাগ করে থেকো না।আমায় কথা শোনাও,যা ইচ্ছে বলো,শাস্তি দাও তাও চুপ করে থেকোনা প্লিজ। তোমার নিরবতা আমায় মৃত্যুসম যন্ত্রণা দেয়।

ইতি,
তোমার অবুঝ ছোঁয়া

লিখে চিঠিটা ভাজ করে রেখে দিলো স্বাধীনের একটা উপন্যাসের বইয়ে।একটু পরে ছোঁয়া ও বেরিয়ে গেলো কলেজের উদ্দেশ্যে। কেয়া ওর জন্য প্রতিদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে, এতোটুকু রাস্তা ছোঁয়া ও হেটে যায়।তারপর কেয়ার কাছে গিয়ে দুজনে রিকশা নেয়।আজও কেয়া দাঁড়িয়ে ছিলো।ছোঁয়ার পৌঁছাতে একটু দেরিই হয়ে গেল।একটু দেরি হলেই কেয়ার গাল ফুলানো স্বভাব।ছোঁয়া যতোটা শান্ত, কেয়া ঠিক ততোটায় চটপটে স্বভাবের। দু বান্ধবী যে দুজনার কতটা আপন,তা মনে মনে মানলেও মুখে মানতে এরা নারাজ।

“আজও তুই দেরি করেছিস ছোঁয়া। খুব রাগ লাগে কিন্তু আমার।”
রিকশায় বসতে বসতে বলল কেয়া।

“সরি রে।আসলে জানিসই তো বড়মা বড়আব্বু বাসায় নেই, তায় সকালে একটু কাজ করেই আসতে হচ্ছে। তায়তো দেরি হয়ে যাচ্ছে। আর মাত্র কয়টা দিন, বড়মা ফোন করেছিল, পাঁচ ছদিন পরই চলে আসবে ”

“একা বাসায় তোর ভয় করেনা? আর তোর স্বাধীন ভাইয়ের কি খবর? বেচারার মাথা ব্যথা কি সেরেছে? ”
ঢং করে বলল কেয়া।

“আরে ভয়তো করতো,কিন্তু আমি তো একা থাকিনা।স্বাধীন ভাইয়া আছে, নিহা আপু থাকে।তায়তো ভয় করে না।আর বেচারার মাথা ব্যথার কথা আর বলিস না।”

“এই ছোঁয়া, তুই কিন্তু তোর স্বাধীন ভাইয়াকে একদিন ও দেখালি না।এটা কেমন বান্ধবী তুই বল? কোথায় বান্ধবীর কাজিন কে দেখে একটু ক্রাশ টাশ খাবো,কিন্তু তুই তো দেখাই করাস না।কবে নিয়ে যাবি বল?”

“নিয়ে যাবি মানে? কোথায় নিয়ে যাবো?”

“কেন? তোর বাসায়।কেমন মেয়েরে তুই? একটুখানি দূরেই থাকিস,আর একদিন ও বাসায় নিয়ে যাস না আমায়,ধুর ভাল্লাগে না।”
মুখ বাঁকা করে বলল কেয়া।

“আমি বলেছি, নিয়ে যাবো না? যাবো তো,একেবারে আমার বিয়ে তে,আমার বর দেখে চমকে যাবি তুই।”

মুখে ভেংচি কেটে চুপ করলো কেয়া।

আজকেও ক্লাসে স্বাধীন একটিবার তাকালোও না ছোঁয়ার দিকে। ছোঁয়া অনেক বার চেষ্টা করেছে স্বাধীনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার,স্বাধীনের আলোচনার মাঝে কথা বলে এটা সেটা প্রশ্ন করেছে,তাও স্বাধীন ফিরে ও তাকায়নি।অন্য দিকে তাকিয়েই ছোঁয়ার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।পুরো সময় টা কষ্টে ছোঁয়ার যেন বুক ফেটে যাচ্ছিল।
ক্লাস শেষে স্বাধীন যখন বেরিয়ে গেলো, পুরো চোখ কান্নায় টলমল করছিলো ছোঁয়ার। কলেজ শেষ করে ছোঁয়া আর কেয়া ফিরছিল। দুপুর টাইম,তায় রিকশা না পাওয়ায় দুজনেই ধীরে ধীরে হাঁটছিল। কেয়া কিছু চকলেট কিনে নিয়েছিলো,তায় দুজন মিলে খাচ্ছিল,আর বকবক করতে করতে বাড়ি ফিরছিল। যদিও ছোঁয়ার মন খারাপ তারপর ও কেয়ার কথার জোরে ওর ও চুপ থাকার উপায় নেই।
কলেজের রাস্তায় একটা নির্জন জায়গা পার হতে হয় ওদের, খুব একটা জনবহুল নয় জায়গাটা।ওখান দিয়েই যাচ্ছিল ওরা।এমন সময় একটা কালো রঙের গাড়ি এসে থামে ওদের সামনে।হঠাৎ সামনে এসে ব্রেক করায় দুজনেই খুব চমকে ওঠে। কেয়া কিছু টা রেগেই যায়।

“কেমন আক্কেল এদের? এভাবে কেউ সামনে এনে গাড়ি দাঁড় করায়?”

গাড়ি থেকে নেমে আসে দুটো লোক,একজনের মাথায় ঝাঁকড়া চুল,আর অন্য জন একটু কম বয়স।বড়জোড় ছাব্বিশ সাতাশ হবে। দেখে একটু পড়াশোনা জানায় মনে হচ্ছে। ঝাকড়া চুলের লোকটি মনে হয় সবসময় পান খায়,দাঁত গুলো কেমন কালচে খয়েরী হয়ে গেছে।গায়ের রং কুচকুচে কালো।এগিয়ে আসতে থাকে ওদের দিকে ।

ছোঁয়ার কেমন জানি ভয় করতে থাকে।এমনিই খেয়াল করছে কয়দিন ধরে কেউ যেন ফলো করছে ওকে,তার ওপর এমন চেহারার মানুষ গুলো ওর দিকে এমন ভাবে এগিয়ে আসছে দেখে ওর হাত পা ঠান্ডা হতে লাগলো।পাশেই কেয়া ও কিছু টা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।

“কি ব্যাপার? রাস্তার মাঝখানে এভাবে গাড়ি থামিয়ে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? এটা কোন ধরনের অসভ্যতা?”
প্রশ্ন করে কেয়া।

“এই চপ! একদম চুপ।নিজের ভালো চাস তো এখান থেকে চলে যা,তোর পাশের এই মেয়ে টিকে দরকার আমাদের। ”
ধমক দিয়ে বলল লোকটা।

“হ্যাঁ,তাতো যাবোই।কিন্তু দু জন একসাথেই যাবো।ভালোই ভালোই বলছি রাস্তা ছাড়ুন।না হলে কিন্তু আমরা চিল্লাবো।লোক জড় করবো।”
চোখ লাল করে বলে কেয়া।

“তো কর না?যতো পারিস চেঁচা, লোক জড়ো কর।দেখি কোন বাবা আসে ওকে বাঁচাতে?”
বলেই বিশ্রী দাঁতের হাসি দেয় লোকটি।

এবার কেয়ার ও একটু ভয় করতে শুরু করে।কিন্তু চোখে মুখে কোথাও ভয়ের চিহ্ন প্রকাশ করে না।
ছোঁয়া এমনিতেই খুব ভিতু,তারওপর লোক গুলোর কথা শুনে ও প্রায় কান্না করার জোগাড়।
ভয়ে ভয়ে বলে,

“দেখুন,কি ক্ষতি করেছি আমি আপনাদের? কেন আমাদের আঁটকাচ্ছেন।পথ ছাড়ুন না,আমরা বাসায় যাবো। ”

“হা,হা,,তোকে তো বাসায়ই নিয়ে যাবো।কিন্তু একটু অন্যরকম বাসায়।চুপচাপ আমাদের সাথে চল,নয়তো খারাপ কিছু হয়ে যাবে, সাথে তোর এই চেটাং চেটাং কথা বলা বান্ধবীর ও।”

“না না ওর সাথে কিছু করবেন না।প্লিজ আমাদের যেতে দিন। ”
হাতজোড় করে ছোঁয়া।

লোক দুটো এগিয়ে প্রায় ওদের কাছেই চলে আসছে। কেয়া এদিকে পায়ের কাছে পড়ে থাকা একটা ভাঙা ইট তুলে নেয় হাতে।সামনে গিয়ে দাঁড়ায় ছোঁয়ার।

“খরবদার,ওর গায়ে কেউ হাতও দিবিনা।মাথা ফাটিয়ে দেবো তোদের।চলে যা বলছি।”
ইটটা মাথার ওপর তুলে ধরে বলে কেয়া।

“হা হা,,,এই মেয়ে, এখনো নিজের ভালো চায়লে চলে যা, আর ওকে তো আমরা নিয়েই ছাড়বো।”
এই বলে যেই লোক দুটো সামনে এগিয়ে এসেছে, তখনই কেয়া হাতের ইট টা ছুঁড়ে মারে অল্পবয়সী ছেলেটার মাথায়।তৎক্ষনাৎ ছেলেটার মাথায় গিয়ে লাগে ইটের ভাঙা জায়গা।কিছুটা কেটে র* ক্ত গড়িয়ে পড়ে কপালের কাছে থেকে।
ওরা একটু অপ্রস্তুত হতেই কেয়া ছোঁয়ার হাত ধরে দৌড় দেয়।

“পালা ছোঁয়া, ”
বলেই দৌড়াতে শুরু করে দুজন।ঝাকড়া চুলের লোকটা দ্রুত ওদের পিছু নেয়।কিছু দূর যেতেই ধরে ফেলে ওদের।দু’হাতে দুজনকে টেনে এনে অল্প বয়সী ছেলেটার সামনে ছুঁড়ে ফেলে কেয়া কে।

“এই, এ তোকে ব্যথা দিয়েছে না? যা মজা কর এর সাথে। যা ইচ্ছে হয় তাড়াতাড়ি কর।আমি এটাকে গাড়িতে তুলি।”
বলেই টানতে টানতে ছোঁয়া কে গাড়ির দিকে নিয়ে যায়। গাড়িতে আরো একজন আছে।

“প্লিজ আমাকে নিয়ে যাবেন নিয়ে যান,কিন্তু কেয়ার সাথে কিছু করবেন না।ওকে ছেড়ে দিন,দোহাই আপনাদের।”
কাদতে কাঁদতে চেঁচিয়ে বলে ছোঁয়া।

এদিকে কেয়াকে ধরে রেখেছে ঐ ছেলেটা।মাথার র*ক্ত পড়া কিছুটা কমেছে। একহাত দিয়ে মাথার কে * টে যাওয়া জায়গা ধরে রেখেছে, আরেক হাত দিয়ে জাপটে ধরে আছে কেয়াকে।

ঝাঁকড়া চুলের লোকটা ছোয়ার মুখে ক্লোরোফম মেশানো রুমালটা চেপে ধরে অ জ্ঞান করে ফেলেছে তারপর গাড়িতে ফেলে রাখে ছোঁয়া কে

“কিরে তোর হলো? নাকি আরো মজা করতে চাস? তাহলে গাড়িতে তুলে নে,গদিতে গিয়ে আমাদের ও একটু ভাগ দিস।”

“না বস।একে নেওয়া যাবেনা।মেয়েটা একটু বেশিই ছটফট করে।এই সব রে নিয়ে লাভ নাই,তারচেয়ে বরং ফেলেই যায়।”
বলেই কেয়া কে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায় গাড়ির দিকে।

একছুটে গাড়িটি নিমিষেই স্থান ত্যাগ করে চলে যায় অনেক দূর।রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে কেয়া।গায়ে ধুলো লাগানো,চুলগুলো সব উষ্কখুষ্ক। গালে একটা কঠিন থাপ্পড়ের দাগ,যা ঝাকড়া চুলের লোকটার সামনে ঐ অল্প বয়সী ছেলেটা মে* রেছিলো।

অস্থির হয়ে কাঁদে কেয়া।

এমন সময় কলেজ শেষ করে গাড়ি নিয়ে ফিরছিলো স্বাধীন। ও একটু লাইব্রেরীতে গিয়েছিলো,তায় আসতে একটু দেরিই হলো।রাস্তায় কেয়াকে একায় বসে কাঁদতে দেখে গাড়ি থামায় স্বাধীন।
গাড়ি থেকে নেমে এসে কেয়াকে প্রশ্ন করে,

“এই মেয়ে, কি ব্যাপার? কাঁদছো কেন তুমি? আর তোমার সাথের জন কই? কি হয়েছে তাড়াতাড়ি বলো? তুমি একা কেন?”
উত্তে*জিত হয়ে প্রশ্ন করে স্বাধীন।

“স্যার,স্যার প্লিজ হেল্প মি।প্লিজ স্যার।”
কাঁদতে কাঁদতে বলে কেয়া।

“কি হয়েছে বলবে তো? ছোঁয়া? ছোঁয়া কোথায়? ”

“স্যার,আমাকে একটু তাড়াতাড়ি ছোঁয়াদের বাসায় নিয়ে চলুন না স্যার।বাসায় ওর স্বাধীন ভাই আছে,উনার কাছে নিয়ে চলুন না স্যার? আমার ছোঁয়া কে,আমার ছোঁয়া কে,”

“কি হয়েছে ছোঁয়ার? তাড়াতাড়ি বলো? কোথায় ছোঁয়া? ”
চিৎকার করতে করতে বলে স্বাধীন। আতং*কে ওর হিতাহিত জ্ঞান শুন্য হয়ে যায়।

“স্যার,ছোঁয়া কে কিড* ন্যাপ করা হয়েছে। কিছু লোক এসে ওকে তুলে নিয়ে গেছে”

“কি বলছো কি তুমি?”,,,,,

চলবে,,,,

#এ_কেমন_ভালোবাসা
#পর্ব_১৬
#মাসুরা_খাতুন

কেয়ার কাঁপতে কাঁপতে বলা কথা গুলো শুনে স্বাধীন কি হয়েছে বুঝে গেলো। বুকের ভেতর যেন মোচড় দিয়ে উঠলো।এক অজানা হারানোর ভয়ে কেঁপে উঠল ওর অন্তর* আত্মা। ওর ছোঁয়ার যদি কিছু হয়ে যায়? দুই দিন থেকে একটা কথাও বলেনি মেয়েটার সাথে। কতো চেষ্টা করেছে ছোঁয়া কথা বলার,কিন্তু স্বাধীন নিজে এড়িয়ে গেছে। অনুশোচনায় ঘিরে ধরলো ওকে। এই মূহুর্তে নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে স্বাধীনের।এটা ওর কি হয়ে গেলো?কি বলছে কি কেয়া? ছোঁয়ার সাথে কেউ এমন কেন করবে? ছোঁয়া তো কারো ক্ষ*তি করেনি।

“কি বলছো তুমি কেয়া? কখন হয়েছে এসব? আর তুমি কাউকে চিনতে পেরেছো? ”

“না স্যার, আমি কাউকেই চিনতে পারিনি।তবে ওদের দেখলে চিনতে পারবো। ছোঁয়া কে আপনি বাঁচান স্যার,আমার ছোঁয়া কে বাঁচান। ও খুব কাঁদছিল। ”
কাঁদতে কাঁদতে বলে কেয়া।

“ওহ্ গড! এটা কি হয়ে গেলো? এখন আমি কি করবো? ছোঁয়া কে আমি কি করে উ*দ্ধার করবো? বাবা মা কে কি জবাব দেবো? ”
মাথা চেপে ধরে বসে পরে স্বাধীন।

“স্যার, ছোঁয়ার বাবা মা নেই,ও ওর বড় আব্বু, বড়মার সাথে থাকে।উনারাও বাসায় নেই, তবে ওর স্বাধীন ভাই বাড়িতে আছেন,উনি ওকে খুব ভালোবাসেন।উনাকে খবর দিতে হবে স্যার।”

“কে বলেছে তোমাকে এসব কেয়া? স্বাধীন ওকে ভালোবাসে এটা কে বলল তোমায়?”
উঠে দাঁড়িয়ে বলে স্বাধীন।

“ছোঁয়াই বলেছে স্যার,ওর স্বাধীন ভাই ওকে খুব ভালোবাসেন। প্লিজ স্যার,একবার উনাকে খবর দিন।আমার ছোঁয়া খুব ভীতু।”

কেয়ার কথা শুনে এবার সত্যিই কেঁদে দেয় স্বাধীন। পুরুষ মানুষের কান্না গুলো বুঝি খুব কঠিন।খুব সহজে গলা থেকে বের হয়না।শুধু চোখ দুটো নোনা জলে ভরে আসে।স্বাধীনের মনে পড়ে ছোঁয়া কে দেওয়া কষ্টের কথা গুলো।আর এতো কষ্ট সহ্য করে এসেও মেয়েটা ওর নামে কাউকে অভিযোগ করেনি,করেছে মিথ্যে প্রসংশা।

“কেয়া,চলো এক্ষুনি আমাদের পুলিশ স্টেশন যেতে হবে। তাড়াতাড়ি ইনফর্ম করতে হবে পুলিশকে। ছোঁয়া কে খুঁজে বের করতে হবে। ”

“হ্যাঁ তায় চলুন স্যার।”

বলেই স্বাধীন আর কেয়া দুজনেই গাড়িতে ওঠে।

বদ্ধ একটা অন্ধকার ঘরে ছোঁয়া কে রাখা হয়েছে।চেয়ারে বসিয়ে হাত পা বে*ধে রেখেছে দড়ি দিয়ে। এখনো ওর জ্ঞান ফেরেনি।ঝাকড়া চুলের লোকটি সহ আরো তিনজন ঘরে ঢুকলো।সাথে ঐ ছেলেটিও।ঝাকড়া চুলের লোকটি ঘরে ঢুকেই একদলা পানের পিক ছুঁড়ে মারলো দেওয়ালে।কিছুটা ওর ঠোঁটের কোণেও লেগে রইল,খুব বিশেষ নজর নেই সেদিকে।

“আরে,দেখছি শালীর জ্ঞান ফেরেনি এখনো? এই চিন্টু,একটু পানি আনতো।”

চিকন এক কালো লোক রং ওঠা এক জগে করে পানি এনে দিলো।

“আরে,এতো পানি এনেছিস যেন আমি তোর কাছে গোসলের পানি চেয়েছি? শালা! সব কয়টা অকর্মার জাত।”
টইটম্বুর জগ টা চিন্টুর মাথার ওপর ঢেলে দিয়ে অর্ধেক টা পরিমাণ পানি বাঁচিয়ে রাখলো লোকটা।
এবার হাতে করে একটু পানি নিয়ে ছোঁয়ার চোখে মুখে ছুঁড়ে মারল।

“এই ওঠ,জন্মের জ্ঞান হারাইলি নাকি? ওঠ শালি।”

চোখে মুখে পানির ঝাপটা পেতেই ছোঁয়ার জ্ঞান ফেরে।কিছুটা হকচকিয়ে ওঠে পিটপিট করে চোখ খোলে।
ভালো করে তাকাতেই বুঝতে পারে খুব কাছেই চার জোড়া চোখ তাকিয়ে পরখ করছে ওকে।প্রত্যেকের দৃষ্টিই যেন আগু*নের।এতোটুকু মায়া নেই এসব কোন চাহনিতে। হঠাৎ করে ছোঁয়ার মনে হলো,এগুলো যেন মানুষের চোখ না, জঙ্গলের কোন হিং*স্র জানো*য়ার তাকিয়ে আছে ওর দিকে।ভয়ে ছোঁয়া জড়সড় হয়ে গেলো।

“এই মেয়ে একদম চুপ থাকবি,চিল্লাবি না।চিল্লালে তোরই ক্ষতি। বুঝেছিস?”

“আ আপনারা কেন আমাকে এখানে এনেছেন? আমি তো আপনাদের কোন ক্ষতি করিনি,প্লিজ আমায় যেতে দিন, আমার স্বাধীন ভাই, বড় আব্বু, বড়মা খুব চিন্তা করবে আমার জন্য। প্লিজ আমায় যেতে দিন”
অনুরোধ করে কাঁদে ছোঁয়া।

“এই চুপ কর!তোকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ধরে আনিনি,বুঝলি? একদম চেঁচাবি না।তোকে এখানে আনার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। আমরা টাকা পেয়েছি, কাজ করেছি। আর বেশি দিন এখানে ও থাকবিনা।সোজা বাইরে চা* লান করে দেবো।আর এই কয়দিন যদি কোন চেচামেচি ঝামেলা করিস,তো সোজা উপরে।”
বলেই কালচে খয়েরী দাঁত গুলো বের করে বিশ্রী হাসি দিলো লোকটা।সাথে থাকা ছেলে গুলোও সায় মেলালো তাতে।পুরো ঘরটা একটা বিশ্রী হাসির কারখানার মতো মনে হলো,মানুষের হাসি যে এতোটা বিশ্রী হতে পারে,তা এই প্রথম খেয়াল করলো ছোঁয়া।

“কে টাকা দিয়েছে আপনাদের? কেন আমায় বেধে রেখেছেন? যেতে দিন না আমায়,আমি তো কোন দোষ করিনি।প্লিজ ছেড়ে দিন আমায়।আমি আপনাদের পা ধরছি প্লিজ। ”

”আবে চুপ কর! এসব পা টা ধরায় পেট চলেনা আমাদের। এসব ঘ্যান ঘ্যান বাদ দিয়ে খাবার দিচ্ছি খেয়ে নে।আর এতো প্রশ্ন করে একদম বিরক্ত করবি না।”
ধমক দিয়ে উঠলো আরেকটি লোক।

ছোঁয়া বুঝলো এদের মিনতি করে লাভ হবে না।তায় চুপ করে গেলো। তৎক্ষনাৎ ওর মনে পড়লো কেয়ার কথা, ওরা তো কেয়াকেও ধরেছিল।কেয়ার সাথে খারাপ কিছু হয়নি তো?হালকা বয়সী ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বলল,

“আপনি,আপনি ধরেছিলেন না আমার কেয়া কে? ও কোথায়? বলুন ওর সাথে কি করেছেন? কোথায় আমার কেয়া? উত্তর দিন।”
উদগ্রীব হয়ে বলল ছোঁয়া।

“আরে তোর কেয়া পাখি আছে,ভালোই আছে।আগে নিজের চিন্তা কর।ওকে তো আমিই যত্ন আত্তি করেছি।এবার তুই ও চুপ কর।নাহলে,,”

বলেই হেসে ওঠে ছেলেটি।ছোঁয়া এবার যেন নিজের সব শক্তি হারিয়ে ফেলে।ওর জন্য কেয়ার সাথে ও এই লোক গুলো খারাপ কিছু করেনি তো? ভেঙে পড়ে ছোঁয়া।
একটু পরেই খাবার এনে দেওয়া হয় ওর সামনে।একহাত শুধু খুলে দিয়েই খেতে বলা হয়।ঝাকড়া চুলের লোকটায় মনে হয় এদের বস।সে বোধহয় বাইরে গেছে।বাকি তিনজনের একজন বাইরে পাহারা দিচ্ছে, আর ঐ ছেলেটি এবং চিন্টু ছোঁয়া কে খাবার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

“এই সময় নষ্ট করিস না।আমাদের এসব নাটক দেখার সময় নেই।তাড়াতাড়ি খেয়ে নে।বস এসে দেখলে না খাওয়া,খুব খারাপ আছে কপালে।”
চিন্টু বলল ছোঁয়া কে উদ্দেশ্য করে।

“না আমি খাবোনা।তোমরা তো চাও আমায় মে*রে ফেলতে।তাহলে আবার খাওয়াতে এসেছো কেন? খাবোনা আমি।তোমাদের ওসব খাবার খাওয়ার থেকে না খেয়েই ম*রবো আমি।বুঝেছ?”
চেঁচিয়ে বলে ছোঁয়া।

“এই শালীর দেখি তেজ বেড়েছে।আরে শালি, তোরে মারলে বাইরে পাঠিয়ে ডলার কামাই করবো কেমনে আমরা? তাই তোর খেতে হবে। খা বলছি,”
চিন্টু বলে উঠলো।

“এই মেয়ে খেয়ে নে,তাড়াতাড়ি খাবার শেষ কর।বস আসলে খারাপ আছে তোর কপালে। ভালোই ভালো খেয়ে নে।”
ছেলেটি ও বলে উঠলো।

ছোঁয়া রাগে ঘৃণায় খাবারের থালাটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো।আর মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বলল,
“প্রয়োজনে না খেয়ে মর*বো আমি,তাও তোমাদের আশা পূর্ণ হতে কিছুতেই দেবোনা।”

এমন সময় ঘরে ঢুকলো ওদের বস,ঝাকড়া চুলের লোকটা।
ঠাস করে চড় বসিয়ে দিলো ছোঁয়ার গালে।শক্ত হাতের চড়ে সাথে সাথেই ঠোঁটের কোণে কে*টে কিছু র* ক্ত বেরিয়ে আসলো।মাথা ঘুরে আবারও অজ্ঞান হয়ে গেলো ছোঁয়া।

“এই শোন,আমাদের সতর্ক হতে হবে।স্বাধীন নামের ছেলেটি পুলিশের কাছে গেছে।ম্যাডাম এক্ষুনি ফোন করে জানালো আমাদের কোন ভুল হওয়া চলবেনা।আর যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব একে পা*চার করে দিতে হবে। ”

“ওকে বস।”

পুলিশ অফিসার সিরাজউদ্দীনের সামনে বসে আছে কেয়া আর স্বাধীন। সিরাজউদ্দীন সাহেব একটু বয়স্ক লোক হলেও চোখের তীক্ষ্ণতা কমেনি।গম্ভীর মুখটাকে একটু প্রশস্ত করে বললেন,

“বলো,কি কি ঘটেছে তোমাদের সাথে। আর এখন থেকে কতোক্ষন আগের ঘটনা?”

কেয়া এতোক্ষণে একটু ধাতস্থ হয়েছে। ওর বিশ্বাস পুলিশ ঠিক ওর ছোঁয়া কে খুঁজে এনে দেবে। পাশে স্বাধীন ও উদ্বিগ্ন হয়ে তাকিয়ে আছে কেয়ার দিকে। পরিষ্কার ভাবে সব শুনতে। এখানে আসার পথে নিহা কে ফোন করে জানিয়েছে ছোঁয়ার মি*সিং হওয়ার ব্যাপারে।

কেয়া পুরো ঘটনার বর্ণনা দিলো পুলিশ অফিসার কে।বলার মাঝে একবার টেবিলে রাখা গ্লাস থেকেঠান্ডা পানি খেয়ে গলাও ভিজিয়ে নিলো।সবটা পুলিশ কে বলতে পেরে কিছুটা হালকা লাগছে ওর।এবার হয়তো ঠিক ওর ছোঁয়া কে পাওয়া যাবে।

“আচ্ছা মিস্টার সাহারিয়ার।আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি,আর কোন কিছু জানা গেলে অবশ্যই আপনাদের জানাবো।আর মিস কেয়া,যেকোনো কিছু জানতে হলে আমরা আপনাকে ডাকবো।প্লিজ আপনি এসে আমাদের সহোযোগিতা করবেন।”

“অবশ্যই স্যার,তাও আপনার আমার ছোঁয়া কে খুঁজে বের করুন।আর একটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম স্যার,”

অফিসার এবং,স্বাধীন দুজনেই ফিরে তাকায় কেয়ার দিকে,

“বলুন কেয়া,যেকোন কিছু মনে পড়লে আমাদের বলুন।প্রতিটি ছোট ছোট ইনফরমেশনই আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ”

“স্যার,বলছিলাম যে, যেই অল্প বয়সী ছেলেটা ছিলো,যে আমাকে ধরেছিল,সে একটা কথা বলে গেছে আমাকে।যখন ঐ ঝাকড়া চুলের লোকটি ছোঁয়া কে নিয়ে গাড়িতে যায়।”

“কি? কি কথা বলেছে কেয়া? কে ছেলেটি?”

“স্যার,ছেলেটি বলেছে,সে নাকি গো*য়েন্দা বিভাগের একজন পুলিশ।ছোঁয়ার কোন বড় ক্ষতি সে থাকতে হবেনা।আর আমায় বলেছে তাড়াতাড়ি আপনাদের ইনফর্ম করতে। সে চায়লে আমারও ক্ষতি করতে পারতো কিন্তু করেনি।”

“ওহ্ গুড! কোন ঠিকানা দিয়েছে ও? বা কোন রকম কোন ক্লু?”

“না স্যার, আসলে সে সুযোগ পায়নি,তবে যাওয়ার আগে এই ছোট্ট কাগজটা ফেলে গেছে আমার সামনে।আসলে গাড়িতেই ওরা ছিলো,তায় ও সুযোগ পায়নি।”

“কই,দেখি কাগজ টা? ”

কেয়া ছোট্ট একটা কাগজের টুকরো দিলো অফিসারের সামনে।

“আরে কাগজটাতো ছেঁড়া, তবে দেখে মনে হচ্ছে কোন হোটেলের বিলের কাগজ।ও এটা তো সবজি হোটেল নামক হোটেলের বিলের কাগজ।এই শহরে এই নামের অনেক হোটেল আছে।তবে সমস্যা নেই আমরা ঠিক খুঁজে বের করবো।আমাদের একজন অফিসার যেহেতু সাথে আছেন,তাহলে এটুকু কথা দিতে পারছি যে মিস ছোঁয়ার কোন ক্ষতি হবেনা।আপনারা চিন্তা করবেন না।বাসায় জান আর আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন।”

“ঠিক আছে অফিসার। আর প্লিজ অফিসার যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ছোঁয়া কে খুঁজে বের করুন। প্লিজ। ”
অফিসারের হাতে হাত রেখে বলে স্বাধীন।

স্বাধীনের এতোটা উদ্বিগ্ন হওয়ায় কেয়াও কিছু টা অবাক।আবার যখন দেখলো অফিসার যখন ছোঁয়া কে হয়, জিগ্যেস করলো, তখন স্বাধীন বলল চাচাতো বোন। এখানে ও কিছুটা অবাক হয় কেয়া।যেই সাহারিয়ার স্যার ছোঁয়া কে দু-চোখে দেখতে পারেন না তিনি ছোঁয়া কে চাচাতো বোনের পরিচয় দিচ্ছেন? কিন্তু পরিস্থিতির কারণে কিছু বলেনি কেয়া।

স্বাধীনের নিজেকে খুব অস্থির অস্থির মনে হচ্ছে। নিজের সব থেকে প্রিয় জিনিস টাকে ছেড়ে ও যেন আজ বাসায় ফিরছে।কেয়াকে ওর মেসের সামনে নামিয়ে দিয়েছে। কোন রকমো ড্রাইভ করে স্বাধীন বাড়ি ফেরে।বাড়িতে গিয়েই সোজা নিজের রুমে চলে যায়। দরজাটা লক করেই এতোক্ষণ থেকে ধরে রাখা চোখের পানি ছেড়ে দেয়।ফ্লোরে হাত পা ছড়িয়ে বসে কাঁদতে শুরু করে।

অন্ধকার ঘরে থেকেও ছোঁয়া বুঝলো এখন রাত হয়েছে। কারণ চারদিক থেকে ঝি ঝি পোকার ডাক আসছে,যা শুধু রাতেই শোনা যায়। ঝি ঝি পোকার ডাক শুনে ছোঁয়া বুঝলো ওকে যেখানে রাখা হয়েছে সেটা পুরোপুরি শহরের ভেতরে নয়।হয়তো কিছু টা নির্জন জায়গা। কারন কোলাহল পূর্ণ শহরে আজকাল রাতেও ঝি ঝি পোকার ডাক শোনা যায় না।
এমন সময় ছোঁয়া লক্ষ্য করে কেউ যেন চুপি চুপি দরজা খুলছে।বাইরে থাকা চাঁদের আলো কিছু টা ভেতরে এসে লাগায় খেয়াল করলো কোন এক লোক এগিয়ে আসছে ছোঁয়ার দিকে। ভয়ে ছোঁয়া কেঁপে উঠল, এ লোক এতোরাতে লুকিয়ে কেন আসছে ওর দিকে? যদি খারাপ কোন উদ্দেশ্য হয়? কি করে বাঁ*চাবে ছোঁয়া নিজেকে? চোখ মুখ শুকিয়ে আসে ছোঁয়ার।এতোক্ষণে লোকটা প্রায় ছোঁয়ার কাছাকাছি চলে এসেছে,,,,,,,

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here