#এ_কেমন_ভালোবাসা
#পর্ব_২১,২২
#মাসুরা_খাতুন
২১
চলন্ত গাড়িতে বসে গভীর চিন্তায় মগ্ন দুটি মানুষ। দু জনের কেউই জানেনা আজ কি হবে।ওরা কি আদৌও ওদের প্রিয় ছোঁয়া কে উদ্ধার করতে পারবে? সময় যতো গড়াচ্ছে স্বাধীনের চিন্তার পাল্লা ততো ভারী হচ্ছে। নিজের সবথেকে প্রিয় মানুষ টাকে মিছে এক জিদের কারনে কখনো আপন করে নিতে পারেনি।এতোটা কাছে থেকেও কখনো বলতে পারে নি, ছোঁয়া তোকে আমার চাই,খুব করে চাই।প্রতিটি সকালের প্রথম স্নিগ্ধ হাসি দেখার জন্য হলেও চাই,প্রত্যেকটা উপন্যাসে কল্পিত নায়িকা হিসেবে হলেও চাই।দিন শেষে রাতের ওই আকাশে যখন রুপালি জোছনা আলো ছড়াই,তখন ঐ জোছনা রাতের মায়াবী আলোয় গা ভাসিয়ে দেওয়ার সঙ্গী হিসেবে হলেও তোকেই আমার চাই।কিন্তু এই তুই টাকেই আমি যত্ন করে মনের একপাশে সাজিয়ে রাখলেও মুখে বলতে পারিনি।অবশেষে আজ তোকে হারিয়ে আমি বুঝতে পারছি তুই আমার জন্য কতোটা দরকারী। তোকে ছাড়া যে আমার এক মূহুর্ত চলে না।তুই আমার অভ্যেস,বড় বেয়াড়া একটা অভ্যেস,যাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমার নেই।
চোখের কোণ চিকচিক করে ওঠে স্বাধীনের।চোখের চশমা টা খুলে একবার মুছে নিয়ে আবার চোখে দেয়।পাশে কেয়া,সে ও এক মনে গাড়ির বাইরের নিকষ কালো অন্ধকার কে দেখছে।
বাঁধন ছোঁয়া কে নিজের পেছনে আড়াল করে নেয়। কালা বাবলা ওদের থেকে হাত দুই দূরে দাঁড়িয়ে আছে। বন্দু*ক টা এখনো বাঁধনের মাথায় তাক করা।চোখে হিং*স্রতা।প্রচন্ড খারাপ পরিস্থিতি তে ও মনে হয় শান্ত থাকার অভ্যাস বাঁধনের আছে।
“আমার সাথে বেইমানীর ফল তো তোকে পেতেই হবে রনি।আজ তুই যা করেছিস,এতো দিনে কেউ এতোটা কাছে থেকে ছু*রি মা*রার সাহস পায়নি, এই কালা বাবলা কে।তোর কলিজা আছে বলতে হয়।তুই যদি সত্যিই আমার দলে থাকতিস,তোরে তো আমি ডন বানাতাম রে।কিন্তু তোর দুর্ভাগ্য, সেই সুযোগ আর তুই পাবি না।”
কালা বাবলার কথার মাঝেই বাঁধন হুট করে ওর হাত ধরে ফেলে।দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হতে থাকে ব*ন্দুক নিয়ে। ছোঁয়া পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো,ভয়ে ওর হাত পা কাপছিলো।এমন সময় পুলিশের গাড়ি এসে ঘিরে ফেলে ওদের। ধরে ফেলা হয় চিন্টু কে।দুটো পুলিশ এসে বাবলাকে ধরার চেষ্টা করে, কিন্তু ওর হাতে বন্দু*ক থাকায় পুলিশ দুটো ও এগোতে পারছে না, কারণ যেকোনো মূহূর্তে গু*লি বাঁধন কে লেগে যেতে পারে । হাতা*হাতি শুরু হয় দুজনের মধ্যে। বাঁধন অনেক টা কায়দা করে বাবলা কে পরাস্ত করে।বন্দু*ক হাত থেকে নিয়ে পুলিশের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়। আর কালা বাবলা সহো ওর পুরো গ্যা*ং কে আট*ক করা হয়।ছোঁয়ার সাহায্য নিয়ে লুকিয়ে রাখা মেয়ে গুলো কে গাড়িতে তোলা হয়।পুলিশ অফিসার নাজিমুদ্দিন অত্যান্ত গর্বের সাথে বাঁধনের প্রসংশা করেন,
“ওয়েল ডান ইয়াং ম্যান,উই আর প্রাউড অফ ইউ।সত্যিই তুমি আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছো।একা জীবনের ঝুঁ*কি নিয়ে যেভাবে মেয়ে গুলো কে বাঁচি*য়েছো,ডিপার্টমেন্ট অবশ্যই তোমাকে নিয়ে গর্ব করে। ”
“থ্যাংক ইউ স্যার।এটা আমার ডিউটি ছিলো।”
“আর মিস ছোঁয়া, তোমাকেও ধন্যবাদ, সাহসিকতার সাথে বাঁধন কে সাহায্য করার জন্য। আর তোমার হাজব্যান্ড এবং ফ্রেন্ড কেয়া,উনারা আমাদের পেছনের গাড়িতে আছেন, এখুনি চলে আসবেন।”
“তোমার হাজব্যান্ড”কথাটা শুনে কিছু টা অবাক হয় ছোঁয়া। তারমানে কি স্বাধীন ভাই ওর পরিচয় দিয়েছে? চিঠিটা কি পেয়েছিলো স্বাধীন ভাই? মনের ভেতর একটা অচেনা অনূভুতি কাজ করে হাজব্যান্ড কথাটি শুনে।
পুলিশ অফিসার নাজিমুদ্দিন মেয়ে গুলো কে গাড়িতে তোলার ওদিকে গেলে বাঁধন ছোঁয়ার কাছে আসে,
“উহু্! বলছিলাম যে আপনার সেই উগান্ডার বান্ধবী টা কি এখানে ও আসছে? নখ গুলো কাটতে বলবেন।বলা যায় না,খামচি ধরার কাউকে না পেয়ে আবার দেখা গেলো নিজের গায়েই খামচি ধরছে।”
অন্য দিকে তাকিয়ে বলল বাঁধন।
বাঁধনের কথায় মুচকি হাসে ছোঁয়া। ছেলেটা যে ওর উগান্ডার বান্ধবীর প্রেমে পড়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে।
“আজ আপনি না থাকলে যে কি হয়ে যেতো,আল্লাহই জানে।আসলে আপনি যতোবড় উপকার করেছেন,ধন্যবাদ দিলে আপনাকে ছোট করা হবে। আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো ভাইয়া।”
“না মানে বলছিলাম যে এর দাম কিন্তু চাইলেই আপনি দিতে পারেন।আসলে বলছিলাম আমার আবার আ*সামি দের সাথেই জঙ্গলে জঙ্গলে কাজ তো,তায় কোন উগান্ডার বাসিন্দার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে ভালোই হয়।অনেক কিছু জানতে পারতাম আরকি। ”
“হুম,বুঝেছি। উগান্ডার মেয়ে টাকে যে আপনার মনে ধরেছে তা বুঝতেই পেরেছি। আর এই যে কি এতো আপনি আপনি করছেন,আমি আপনার থেকে বয়সে অনেক ছোট, আর আজ আপনি আমার জন্য যা করেছেন,আপন ভাই না হলে কেউ করে না। তায় আমাকে ছোট বোন ভাবতে যদি পারেন,আর তুমি বলতে পারেন, তাহলেই উগান্ডার বান্ধবীর সাথে আপনাকে ও উগান্ডায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারি।”
“তুমি আমার মায়ের পেটের বোন।এক্কেবারে কলিজার বোন।আর আমি তোর ভাই।ভাইয়ের জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা কর বোন।”
বাঁধনের বলার ভঙ্গি দেখে হেসে ফেলে ছোঁয়া ।
এর মাঝেই স্বাধীনের গাড়ি এসে থামে ওখানে। গাড়ি থেকে হস্তদস্ত হয়ে নামে কেয়া, আর পেছনে স্বাধীন।কেয়া এসে দৌড়ে জাপটে ধরে ছোঁয়া কে।দুজনেই আবেগে আপ্লূত হয়ে কেঁদে ফেলে,স্বাধীন আর বাঁধন দুজনেই অবাক হয়ে দেখে ওদের।এমন সময় কেয়ার চোখ যায় ছোঁয়ার পেছনে দাঁড়ানো বাঁধনের দিকে। তাড়াতাড়ি ছোঁয়া কে ছেড়ে হামলে পড়ে বাঁধনে দিকে।
এদিকে স্বাধীনের চোখে ও পানি চিকচিক করছে। ছোঁয়া দেখে মানুষ কতোটা শুকিয়ে গেছে, ছোঁয়ার আর মন মানে না।দৌড়ে গিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে স্বাধীনের বুকে।স্বাধীন ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিজের প্রিয়তমা কে।দুজন দুজন কে এতোটা শক্ত করে ধরে যেন ওদের দুদিক থেকে কেউ টানছে,আর সে যেন ওদের আলাদা করতে না পারে।
“ছোঁয়া, আমায় তুই ক্ষমা করে দে ছোঁয়া। আমার ভুলের জন্য আজ তোকে এতোটা কষ্ট পেতে হলো।তুই বিশ্বাস কর,আর কক্ষনও এমন ভুল হবে না।কোথায়ও যেতে দেবো না তোকে।খুব খুব কাছে রাখবো তোকে।আমার ছোঁয়া কে কোন কষ্ট পেতে দেবো না।”
“তুমি আমায় ক্ষমা করে দাও স্বাধীন ভাইয়া, আমি কখনো বুঝতে চেষ্টা করিনি তোমায়। সবসময় তোমার উপর টা দেখেছি,ভেতরটা পড়ার চেষ্টা করিনি।”
“তোর খুব কষ্ট হয়েছে তাই নারে? মে*রেছে তোকে ওরা? আমি কিচ্ছু করতে পারিনি তোর জন্য। ”
ছোঁয়ার গাল দুটো দু’হাতে আগলে ধরে বলে স্বাধীন।
দুজন দুজনকে গভীর ভালোবাসায় আলিঙ্গন করছে বারবার।
এদিকে কেয়া একের পর এক খামচি, কিল মেরেই যাচ্ছে বাঁধনের বুকে।
“এই আপনি,আপনার জন্য আমার ছোঁয়া কে এতো কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। কেন? কেন আটকালেন সেদিন আপনি আমায়? না হলে আমিও ওদের দেখিয়ে দিতাম এই কেয়া কি জিনিস! ”
“আপনি কি জিনিস তা আর কেউ দেখতে হবে না, শুধু আমি দেখলেই হবে।”
কেয়ার হাত গুলো আটকাবার ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে।
“কি? আর হ্যা,এই আপনি নাকি সিআইডি পুলিশ,তো আমাকে এতো জোড়ে চড় মেরেছিলেন কেন? এই বুঝি আপনাদের শেখায়? শুধু আপনার জন্য আমার ছোঁয়া এতো কষ্ট পেয়েছে। নাহলে সেদিনই আমি ছোঁয়া কে উদ্ধার করে ফেলতাম।”
“এ্যাহ্! এক থাপ্পড়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়, আর উনি নাকি বান্ধবী কে উদ্ধার করবেন।এই শুনুন,আপনার ভাগ্য ভালো যে ওটা আমি ছিলাম, নইতো ওদের দলের কেউ হলে ওখানেই,, ”
“কি? কি ওখানেই? ওদের কারো সাহস ছিলো এই কেয়ার গায়ে হাত দেওয়ার? আজাইরা পাবলিক, খচ্চর কোথাকার।”
কেয়া ওভাবেই খামচি আর কিল মার*তে থাকে,
“এই যে মিস উগান্ডাবাসি,একটু ওদের ও দেখুন।একটু ওভাবে বুকে জড়িয়ে ও তো নিতে পারেন।বান্ধবী কে দেখেও একটু শিখতে পারেননি? গু*ন্ডি মেয়ে। ”
” এই কাকে গু*ন্ডি বলছেন? আপনি গু*ন্ডা,আপনার দাদা গু*ন্ডা,আপনার চৌদ্দ, ”
বলেই ছোঁয়াদের দিকে তাকাতেই থমকে যায় কেয়া।ছোঁয়া কে স্বাধীনের বুকে দেখে রিতীমত বিষম খায় ও।স্বাধীনের মনে যে ছোঁয়া কে নিয়ে কিছু একটা চলছিলো,তা বুঝতেই পেরেছিলো কেয়া,কিন্তু ছোঁয়া ও যেভাবে স্বাধীনের বুকে জড়িয়ে কাঁদছে,তাতে তো অন্য কিছু মনে হচ্ছে। কেয়া বাঁধন কে ছেড়ে ছোঁয়ার কাছে যায়।ওদের কাছে গিয়ে বড় করে কেশে নেয়।
“কি ব্যাপার,কি দেখছি আমি এসব? এগুলো কি সত্যি? নাকি আমার চোখ ভুল দেখছে?”
কেয়ার গলা পেতেই ঝটকে সরে পরে দু’জন। স্বাধীন অন্য দিকে আলাদা দাঁড়ায় আর ছোঁয়া লজ্জায় মুখটা একেবারে নীচু করে রাখে।
“কি? এখন আর এতো লজ্জা পেতে হবেনা।যা দেখার দেখে ফেলেছি।কি ব্যাপার ম্যাডাম? রাগী বদমেজাজি সাহারিয়ার স্যার যে কিনা সবার সামনে ছোঁয়া কে প্যানিশম্যান্টই দিয়ে যায়, আর সেই সাহারিয়ার স্যারের বুকে একেবারে লেপ্টে পড়ে আছিস? কবে থেকে চলছে এসব? ”
দুহাত ভাজ করে বলল কেয়া।
“আআসলে কেয়া,মানে আসলে,যা ভাবছিস তা নয়”
“মাগো,এখনো বলছিস যা ভাবছি তা নয়? ও আল্লাহ গো আরো কতো কিছু আছে দেখার।”
হাত টা কপালে রেখে বলল কেয়া।
“স্যার,কি ব্যাপার বলুন তো? একটা ছাত্রী মি*সিং,আর তাট জন্য সবসময় ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে থাকা স্যার টা এতোটা উদগ্রীব? আমি তো আগেই সন্দেহ করেছিলাম।”
লজ্জায় স্বাধীন ও একেবারে একাকার। সবসময়ের ধরে রাখা গম্ভীর ভাবটা আর ধরে রাখতে পারলো না।চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ও কতোটা অপ্রস্তুত।
“কেয়া শোন না,আমি তোকে বলছি,আসলে উনিই আমার স্বাধীন ভাই। ”
কথাটি শুনেই হো হো করে হেসে ওঠে কেয়া।
“উনিই মানে,সাহারিয়ার স্যারই তোর স্বাধীন ভাই? তারমানে মাথা ব্যাথার ঔষধ টা তুই উনাকেই দিয়েছিলি?”
হাসি চেপে রেখে বলল কেয়া ।
“একদম মা*ইর খাবি কিন্তু।তুই আসলেই উগান্ডা। বদমায়েশ মেয়ে”
এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনলেও এবার মুখ খোলে বাঁধন,
“হ্যাঁ,একদম। আমি কি আর স্বাধে উনাকে উগান্ডার বাসিন্দা বলেছিলাম।এখন তুমিই দেখো ছোঁয়া, ও আমার কি করেছে, ”
বলে অসংখ্য আঁচড়ে জর্জরিত বুক নিয়ে এগিয়ে এলো বাঁধন।
“ইস,এই কেয়া,তুই করেছিস কি? উনাকে এমন আঁচড়েছিস কেন? তুই জানিস উনি কতো উপকার করেছেন আমার।আজ উনি না না থাকলে আমাকে ফিরে পেতিস না রে।”
“কিন্তু আমিতো ভাবলাম,উনার জন্যই সেদিন ওরা তোকে আনতে পেরেছে, তায়তো,”
মুখটা ভার করে বলে কেয়া।
“নারে গাধি মেয়ে। উনি সেদিন আমায় এনেছিলেন কারন আরো পাঁচটা মেয়ে ওদের জি*ম্মায় ছিলো। সরি বল বোন।”
“আচ্ছা আচ্ছা, ঠিক আছে।এই যে সরি।”
অন্য দিকে তাকিয়ে বলে কেয়া।
স্বাধীন ও এগিয়ে আসে বাধনের দিকে,
“আপনিই মনে হয় সিআইডি পুলিশ অফিসার বাঁধন? অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।আসলে আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা আমার নেই। আমার কতো বড় উপকার আপনি করেছেন তা বলে বোঝানোর নয়।এক কথায় বলতে চায়,সত্যিই আমি কৃতজ্ঞ।আপনার এ উপকার কিছু তোই শোধ করার নয়।”
“আসলে এরকম কিছু নয়।এটা আমার ডিউটি। আর ছোঁয়া আমার ছোট বোনের মতো।ওকে কি করে বিপদে পরতে দিতাম বলুন।”
“অনেক ধন্যবাদ মিস্টার বাঁধন। তবে আমার একটা রিকুয়েষ্ট আছে,আপনাকে আমার বাসায় ডিনারে যেতে হবে একদিন। প্লিজ না করবেন না”
“আরে না করবো কেন,ভাই তো বোনের বাসায় যেতেই পারে। তবে আরেকজন ও কিন্তু বান্ধবী বান্ধবী করে কম রি*স্ক নেয়নি।ওরকম লোকদের সামনে ঢাল হয়ে দাড়িয়েছে।তাকেও ইনভাইট করা উচিত। ”
আড়চোখে কেয়ার দিকে তাকিয়ে বলল বাঁধন।
“আপনি চিন্তা করবেন না ভাইয়া,কেয়াও থাকবে ডিনারে,,”
বলেই হেসে উঠলো ছোঁয়া,,,,,,
চলবে,,,,,,
#এ_কেমন_ভালোবাসা
#পর্ব_২২
#মাসুরা_খাতুন
ড্রয়িং রুমে মুখোমুখি বসে আছে ছোঁয়া, স্বাধীন, নিহা।কারো মুখেই কোন কথা নেই।স্বাধীন নির্বিঘ্নে পরখ করেই যাচ্ছে নিহা কে।ছোঁয়া এখনো সব কিছু পরিষ্কার ভাবে জানে না।রাতে বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় চারটা বেজে গিয়েছিল। প্রথমে পুলিশ স্টেশনে কিছু ফর্মালিটিস পূরণ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে চারটা বেজে গিয়েছিলো।সেসময় নিহা ঘুমাচ্ছিল,ও হয়তো বুঝতেই পারেনি স্বাধীন ছোঁয়া কে নিয়ে বাসায় ফিরেছে।এই কয়দিন স্বাধীন কে একা পেয়ে খুব সিমপ্যাথি দেখিয়েছে মেয়ে টা,যা স্বাধীনের একেবারেই সহ্য হচ্ছিল না।কিন্তু কিছু বলতেও পারেনি,পুলিশ অফিসার নাজিমুদ্দিন নিষেধ করেছিলো নিহা কে কিছু জানাতে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছোঁয়া কে দেখে নিহা যেন ভূত দেখার মতো আশ্চর্য হলো।আরো বেশি আশ্চর্য হলো স্বাধীন কে ওর দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে।
“আরে ছোঁয়া, তুমি কখন আসলে? আর কোথায় ছিলে এতোদিন? কেমন মেয়ে তুমি বলতো? বাড়ি থেকে যাবে আর কাউকে কিচ্ছু বলে যাবে না,শুধু শুধু টেনশন করছিলাম আমরা।এই তো তুৃমি দিব্যি ভালো আছো।”
“একসাথে এতোগুলা প্রশ্ন করলে আমি কোনটার উত্তর দেবো বলতো? আর হ্যাঁ, তুমি যে বলছো আমি বলে যাইনি কেন? কারণ আমি ইচ্ছে করে কোথাও যাইনি, আমাকে কিড*ন্যাপ করা হয়েছিল। ”
“কিড*ন্যাপ! ও বাবা! কি বলছো তুমি? ”
অবাক হওয়ার ভান করে বলল নিহা।
“কি ব্যাপার বলতো নিহা,তুমি কি ছোঁয়া কে বাড়িতে দেখে খুব অবাক হচ্ছো? খুব নিশ্চিত ছিলে,যে ও আর বাড়িতেই ফিরবে না?”
“কি বলছো স্বাধীন? অবাক তো হওয়ারই কথা।হটাৎ করে কলেজ থেকে উ*ধাও হয়ে গেলো, আবার হটাৎ করে সকাল বেলা আগমন, তাহলে অবাক হবো না বলছ”
“হুম্।তুমি মনে হয় খুশি হওনি ছোঁয়া ফিরে এসেছে, তায়না? ”
“কিই কি সব বলছো স্বাধীন? আমি খুশি হবো না কেন? আর তুমি আমাকে এভাবে দেখছো কেন?”
“দেখছি মানুষ যখন কারো সাথে বেইমানী করে,তখন তাকে দেখতে কেমন লাগে।কতোটা সুন্দর অভিনয় করতে পারো তাই দেখছি।”
“বেইমানী করতে পারে মানে? কি সব বলছো স্বাধীন? কি বলতে চাচ্ছ তুমি?”
“কি বলতে চাচ্ছি তা তুমি খুব সুন্দর ভাবেই বুঝতে পেরেছো নিহা।আমার ভালোমানুষির সুযোগ নিয়ে কতো সুন্দর অভিনয় টাই না তুৃমি করলে।”
“শাট আপ স্বাধীন! তোমার কাজিন, সরি ওয়াইফ,কলেজে যাওয়ার নাম করে কোথায় কোন ছেলের সাথে নোংরামি করতে না করতে গেছে,আর তার দায় তুমি আমাকে দিচ্ছ? যখন তিনদিন পর সে এসে আমার বিরুদ্ধে তোমাকে বলল আর তুমি আমার দিকে আঙ্গুল তুলছো? একটা বেয়াদব, ক্যারেকটার লেস মেয়ে.”
ছোঁয়ার চরিত্র সম্পর্কে এমন ভাবে বলায় রাগে স্বাধীনের মুখ চোখ লাল হয়ে গেলো। ঠাস্ করে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো নিহার গালে।পরপর দুইটা থাপ্পড় মা*রতেই ছোঁয়া গিয়ে আটকালো স্বাধীন কে।
“কি করছো ভাইয়া? নিহা আপুকে এভাবে মারছো কেন? প্লিজ মাথা গরম করো না।”
“ওর সাহস হয় কি করে,তোর নামে খারাপ কথা বলার।ওর জিভ টেনে আমি ছিঁড়ে ফেলবো। তোর চরিত্র সম্পর্কে বাজে কথা বলে? ”
“স্বাধীন, অনেক বলেছো।একটা রাস্তার মেয়ের জন্য তুৃমি আমার গায়ে হাত তুললে? বাবা মা না থাকা অনাথ, বস্তি মার্কা মেয়ে, তোমার সাহস হয় কি করে আমাকে থাপ্পড় দেওয়ার? আমার পাপা জানলে তোমায় কি করতে পারে জানো তুমি?”
“তো ডাকো তোমার পাপা কে।এক্ষুণি। আমিও জানতে চাই,তোমার এইসব কু কৃর্তীর পেছনে কি উনার ও হাত আছে নাকি? তাহলে বাবা মেয়ে একসাথে জেলের ভাত খেও। ”
“খবরদার! আমার পাপা কে নিয়ে একটা বাজে কথাও বলবে না।আমি যা করেছি, বেশ করেছি।আমি সহ্য করতে পারিনা ঐ মেয়ে টাকে।ও আমার কাছে থেকে তোমাকে কেড়ে নিয়েছে। অনেক আগে থেকেই আমি তোমাকে ভালোবাসি, ঐ মেয়েটার জন্য আমি তোমায় পাইনি।ওকে আমি ছাড়বো না”
“ওর জন্য নয়,তোমার মতো মেয়ে কে কখনো আমি নিজেই নিজের পাশে ভাবতে পারিনা।তোমার সম্পর্কে ডিটেইলস জানা আছে আমার।তুমি ভাবতে কি করে পারো এই স্বাধীন তোমাকে বিয়ে করবে? ছোঁয়া না থাকলেও আমি কখনো তোমায় না বিয়ে করতাম,আর না বন্ধু ভাবার চেয়ে বেশি প্রায়োরিটি দিতাম।কারণ তুমি শুধুই আমার বন্ধু ছিলে।আর এই ঘটনার পর তাও হারালে।”
“আমি তোমাকে পেয়েই ছাড়বো স্বাধীন। সেটা যে করেই হোক।তুমি আমাকে পুরোপুরি চেনোনা।আমি যা চাই,তা আদায় করেই ছাড়ি।”
“তুমি আর সে সুযোগ পাবে না।পুলিশ কে অনেক আগেই ফোন করেছি।কিছুক্ষনেই উনারা চলে আসবেন।”
“স্বাধীন! তুমি আমাকে ধরার জন্য পুলিশ ডেকেছো?”
“আমি ডাকতে হতো না নিহা।পুলিশ এমনিতেই আসতো।ওরা তোমার নাম্বার ট্যাগ করেছিলো,তোমার আর কালা বাবলার সব কথায় ওরা শুনেছে।আমি বারণ করায় কাল রাতে আসেনি।আজ সকালেই চলে আসবে।অন্যায় করলে তো তার সাজা পেতেই হবে নিহা।আর তুমি ছোট খাটো অন্যায় করো নি।ছোঁয়ার মতো নিষ্পাপ, শান্ত একটা মেয়ে কে কতো বড় বিপদে ফেলেছো বুঝতে পারছো? তার শা*স্তি তো পেতেই হবে।”
এরই মাঝে পুলিশ চলে এলো।দু’জন মহিলা কনস্টেবল আট*ক করলো নিহা কে।
“কাজটা তুমি ভালো করলে না স্বাধীন। ”
বলতেই পুলিশ অফিসার নাজিমুদ্দিন নিহা কে নিয়ে চলে গেলো।
এতোক্ষণে ছোঁয়া বুঝতে পেরেছে, ও যেটা অনেক আগেই সন্দেহ করেছিলো,সেটাই ঠিক।তারমানে বাঁধনের বলা সেই মহিলা টি নিহাই ছিলো।কয়দিনের এতো মানসিক চাপে ছোঁয়া অনেক টা দূর্বল হয়ে গেছে। ঠিক মতো না খাওয়ায় শরীর টাও কেমন হয়ে গেছে।
হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে এসে স্বাধীন বলল,
“দেখি হা কর।আমি খাইয়ে দিচ্ছি, তাড়াতাড়ি খেয়ে নে।”
“ভাইয়া আমি নিজেই খেতে পারবো তো।দাও আমায়।”
“উহু,হাতের যেই অবস্থা একদম র*ক্ত মরে গেছে দু কব্জিতেই।এ অবস্থায় হাত নাড়া চাড়া করতে হবে না।”
“তুমি কখন দেখলে ভাইয়া?”
“কেন? কাল রাতেই তো দেখলাম,তুই ঘুমচ্ছিলি। আমি পেইন কিলার লাগিয়ে,, ”
বলেই বাকি টুকু আর বলল না স্বাধীন। ধরা পড়ে গিয়ে কিছু টা লজ্জিত হলো।
“রাতে ঘুমচ্ছিলাম মানে?”
“হ্যাঁ,মানে না,না।”
“থাক,এতো মানে না না বলতে হবে না।আমি জানি ব্যথা দিয়ে আবার রাতে আমার হাতে কে মলম লাগিয়ে দিয়ে আসে।এতো মানে মানে করতে হবে না।”
খাবারের প্লেট টা রেখে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে স্বাধীন ছোঁয়া কে।
“বিশ্বাস কর ছোঁয়া, আমি ভেবেছিলাম আর বুঝি তোকে দেখতে পাবোনা।সারা জীবনের জন্য মনে হয় হারিয়ে ফেললাম। তুই আমাকে ক্ষমা করে দিস ছোঁয়া। আমি যদি নিহা কে বাড়িতে না আনতাম,তাহলে তোর আজ এই পরিস্থিতির সামনে পড়তে হতো না।”
নিহা আপু বাড়িতে না আসলে,মনে মনে যে একটা মানুষ এতোটা দুর্বল এটাও তো জানতে পারতাম না।খুব তো আমাকে কষ্ট দেওয়া হতো।এবার আমার পালা।আরো জ্বা*লাবো তোমায়।ইস,মনে মনে এসব,আর মুখে একেবারে ঝাল উড়ছিলো!
মনে মনেই এসব বলে হাসে ছোঁয়া।
“না না স্বাধীন ভাইয়া। এতে তোমার কোন দোষ নেই। আচ্ছা, বড় আব্বু বড়মা কি জানে?”
“না না।বাবা মাকে বলিনি। সে সাহস আমার ছিলো না।মা ফোন করে শুধু তোকে চাইতো,আর আমি এটা সেটা বাহানা দেখিয়ে কাটিয়ে দিতাম।খাওয়া শেষ করে তুই একবার কথা বলে নে।বাবার নাকি কি এক কলেজের বন্ধু জুটেছে ওখানে, তায়তো ফিরতে আরো চার পাঁচ দিন দেরু হতে পারে।”
“ভালো করেছো ভাইয়া,উনাদের না বলে।আর বাড়িতে আসলেও বলতে হবে না। নিহা আপু সম্পর্কে ও কিচ্ছু না।শুধু শুরু চিন্তা করবেন উনারা। ”
“আচ্ছা ঠিক আছে।তুই খাওয়া শুরু কর।তোকে খাইয়ে আমিও খাবো।ভাবছি আজ কলেজ যাবো না।তোকে সময় দেওয়া উচিত এসময়।আর রাতে বাঁধন আর কেয়া কে আসতে বলবো। কয়দিন মেয়ে টাও খুব কষ্ট পেয়েছে। ”
“আচ্ছা ঠিক আছে। দুপুরে তুমি বাজার যেও।আর মাছ মাংস কিনে এনো।”
“পাগল তুই? কাঁচা মাছ মাংস এনে কি হবে? তুই ভাবলি কি করে,এই অবস্থায় তোকে আমি রান্না করতে দেবো।খাবার অর্ডার করে দেবো রেস্টুরেন্ট থেকে।তাহলেই হবে।”
“কি যে বলো না ভাইয়া?আমার কিচ্ছু হয়নি। আর হাতের এ জায়গায় ব্যথা পেয়ে আমার অভ্যেস আছে।”
“কথা শোনাচ্ছিস? নে, হা কর।”
মুখে তুলে ছোঁয়া কে খাইয়ে দেয় স্বাধীন। খাওয়া শেষ হলে নিজেও খেয়ে নেয়।তারপর কদিন থেকে না আঁচড়ানো চুল গুলো আঁচড়ে বেণী করে দেয় ছোঁয়ার।ছোঁয়া যেন প্রতি পদে পদে স্বাধীন কে দেখে অবাক হচ্ছে। কতো পাগলামো করছে শক্ত খোলসে ঢেকে থাকা মানুষটা।একদম বাচ্চাদের মতো। ছোঁয়া কে কিচ্ছু করতে দিচ্ছে না।আয়নার সামনে ছোঁয়ার চুলে চিরুনি করার সময় যে মাদ*কময় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিলো স্বাধীন, তা প্রতি ক্ষণে ক্ষণে ছোঁয়া কপ শিহরিত করছে।এতো এতোটা ভালোবাসা লুকিয়ে রেখেও কোন মানুষ যে দিনরাত কঠোরতার চাদর জড়িয়ে থাকতে পারে তা স্বাধীন কে না দেখলে হয়তো বুঝতেই পারতো না ছোঁয়া ।
বিনুনি গাথা শেষ হলে ছোঁয়া কে পেছন থেকেই জড়িয়ে ধরে স্বাধীন। ছোঁয়ার নিশ্বাস যেন বন্ধ হওয়ার জোগাড়, প্রিয় মানুষটির এমন গভীর আলিঙ্গন পেয়ে।ছোঁয়ার ঘাড়ে নাক ঘসতে ঘসতে নে*শা ভরা কণ্ঠে স্বাধীন বলে,
“ছোঁয়া, তোকে আমার চাই।খুব আপন করে চাই।একদম নিজের করে চাই।আমি আর পারছিনা নিজেকে পো*ড়াতে।তোকে খুব স্বাধীন ভাবে ছুঁতে আমার মন চায়।আমাদের নামটা দেখেছিস,স্বাধীন ছোঁয়া। কিন্তু আমি তোকে স্বাধীন ভাবে ছুঁতে পারিনা।এখন আর পারবো না নিজেকে তোর কাছ থেকে দূরে রাখতে।তুই আমার অভ্যেস,বড় বেয়াড়া অভ্যেস।”
স্বাধীনের প্রতিটি কথায় নিশ্বাস আছড়ে পড়ছে ছোঁয়ার কাঁধে। ছোঁয়ার নিজের ও নিজেকে পাগল পাগল লাগছে।কোন রকমে স্বাধীন কে আটকিয়ে ছোঁয়া বলল,
“আমি তো আপনার চিরকালই ছিলাম স্বাধীন ভাই।আপনি কখনো খোঁজেন নি আমায়।আপনার প্রতিটা ব্যথা দেওয়া স্পর্শ ও যে আমার কতোটা আকাংখার ছিলো তা যদি জানতেন,তবে তখন আপনি ব্যথা দেওয়ার জন্য হলেও ছুঁতেন না আমায়।আমি যে আপনার শার্ট থেকে কতোবার আপনার ঘ্রাণ নিয়েছি তা যদি আপনি তখন জানতেন,তাহলে আর শার্ট আমাকে কাচতে দিতেন না।আপনার আমার প্রতি বিরক্ত হয়ে তাকানো তির্যক দৃষ্টি যে আমায় কতোবার খু*ন করেছে,তা যদি জানতেন,তবে আমার দিকে তাকানোও ছেড়ে দিতেন।”
“তুই ও জানিস না,ঐ আঘা*ত দেওয়ার নাম করে তোকে ছোঁয়া টাও আমার একটু তোর কাছে যাওয়ার বাহানা ছিলো।গভীর রাতে গিয়ে তোর গায়ের ঘ্রাণ নেওয়াটা আমার অভ্যেস ছিলো।তোর চুলের গন্ধ আমার এতোটায় চেনা যে চোখ বন্ধ করে বলতে পারি পাশে কে দাঁড়িয়েছে।তোর প্রতিটা পদক্ষেপ মাপতে আমার একবার তাকানোই যথেষ্ট। কিন্তু নিজের জিদের কাছে আমি এতোটায় প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম,যে এতো কাছে পেয়ে ও তোকে আঁকড়ে ধরতে পারিনি।রাতে সিগারেটে নিজেকে না পু*ড়িয়ে একবার তোর কাছে গিয়ে তোকে বুকে টেনে নিয়ে নিজের জিদ কে পোড়াতে পারিনি।কিন্তু আজ আমি জিতকে পরাজিত করেছি।আজ আমি তোর কাছে হেরে গেছি ছোঁয়া। আমার তোকে চাই।খুব কাছে চাই।তুই শুধুই আমার।”
“স্বাধীন ভাই,”
বলেই ছোঁয়া ও জড়িয়ে ধরে স্বাধীন কে।
“কিন্তু জানিস ছোঁয়া, আমি এখন তোকে গ্রহণ করবো না।এতোদিন বাবা মাকে যতোটা জ্বালিয়েছি,উনারা আসুক।আবার ও ধুমধাম করে বিয়ে করবো তোকে।তখন তো বিয়ের কোন মজাই পায়নি।আর আমাদের রেজিস্ট্রি ও তো হয় নি।তারপর একেবারে তোকে আমার করবো।আমাদের বাসর ঘর হবে রজনীগন্ধায় ভরানো।তুই যেমন আমার রজনীগন্ধা,ঠিক তেমনই সাদা রজনীগন্ধায় ভরিয়ে দেবো তোকে।”
স্বাধীন কে হালকা ধাক্কা দিয়ে ছোঁয়া লজ্জা পেয়ে বলে,
“ছিহ্ স্বাধীন ভাই, কি বলেন এগুলো,আমি ছোট মানুষ। লজ্জা করে।খুব নির্লজ্জ পুরুষ আপনি।”
“তাতে কি?আমি আমার একমাত্র বউয়ের সামনে বলছি।এতে লজ্জা কিসের? ”
“বউ”কথাটি স্বাধীনের মুখ থেকে শুনে লজ্জায় একেবারে লাল হয়ে গেলো ছোঁয়া। দৌড়ে স্বাধীন কে ছেড়ে নিজের ঘরে চলে গেলো,,,,,,
চলবে,,,,,,