ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে,পর্বঃ২০

0
2890

ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে,পর্বঃ২০
অরিত্রিকা আহানা

ভ্রমরের রেজাল্ট বেরিয়েছে একমাসের বেশি হয়ে গেছে। সাথের বন্ধুবান্ধবরা অনেকেই ইতিমধ্যে হস্পিটালে জয়েন দেওয়া শুরু করেছে। বাদ আছে কেবল ভ্রমরই। নির্ঝরের আসার অপেক্ষা করছে সে। নির্ঝর অবশ্য বারবার করে বলেছিলো ভ্রমর যেন যততাড়াতাড়ি সম্ভব হস্পিটালে জয়েন দেয় কিন্তু ভ্রমর রাজী নয়। তাঁর এক কথা, নির্ঝর এলে তবে সে জয়েন দেবে। তাঁর গোয়ার্তমিতে খানিকটা বিরক্ত বলো নির্ঝর। শুধু শুধু সময় নষ্ট করছে ভ্রমর। একমাস আগে জয়েন দিলে একমাস আগে বেরোতে পারতো সে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? ভ্রমরকে এসব বোঝাতে গেলেই ঝগড়া বাধিয়ে বসে সে। কড়া করে কিছু বলতেও পারে না নির্ঝর। এমনিতেই আগে এত কষ্ট দিয়েছে যে নতুন করে আর কোন কষ্ট দিলে নিজেকেই মাফ করতে পারবে না নির্ঝর। তাই দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চুপ করে ভ্রমরের কথাগুলো শুনে যায় সে। কারণ, যেদিনই সে উত্তর দিয়েছে সেদিনই ভ্রমরের সাথে হালকাপাতলা একচোট ঝগড়া হয়ে যায় তাঁর। তিনচার দিন আগেও হয়েছে। তাই এখন থেকে প্রতিউত্তর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্ঝর। ভ্রমর যা খুশি করুক, নির্ঝর কিচ্ছু বলবে না! এদিকে ঝগড়ার ফলাফল স্বরূপ আবারো নির্ঝরের নাম্বার ব্লক করে দিয়েছে ভ্রমর। নির্ঝরের ওপর অতিরিক্ত রাগ হলেই এই কাজটা করে সে। কিন্তু রাগ পড়ে যাওয়ার পর ঠিকই আবার নিজে থেকেই ফোন দিয়ে সরি বলে! নির্ঝর কিন্তু বিরক্ত হয় না! প্রতিবারই ভ্রমরের অনুতপ্ত কণ্ঠের বিপরীতে মুচকি হেসে খুব আদুরে ভঙ্গিতে বলে,’রাগ তবে কমেছে আপনার? আমি তো ভেবেছিলাম এবারের অপরাধের পর আর বোধহয় ক্ষমা হবে না অধমের!’ কথাগুলো শোনার পর ভ্রমর খুশিতে আত্মহারা হয়ে কখনো খিলখিলিয়ে হেসে উঠে আবার কখনো লাজুক হেসে বলে,’ভালোবাসি! ভালোবাসি! ভালোবাসি!’
নির্ঝর হাসে! বোধকরি, ভ্রমরের ওপর বিরক্ত না হওয়ার পণ করেছে সে।
দুদিন বাদেই তাঁর ভিসার কাগজপত্র সব রেডি হয়ে গেলো। ভ্রমরকে খুশির খবরটা দিতে গিয়ে দেখলো তাঁর নাম্বারটা এখনো ব্লক করে রেখেছে ভ্রমর। হতাশ হয়ে ফোনটা আবার পকেটে ঢুকিয়ে নেয় সে।

সকালের ফ্লাইটে দেশে ফিরেছে নির্ঝর। এয়ারপোর্টে তাকে রিসিভ করার জন্য নাফিসা রহমান, বোরহান সাহেব, ভ্রমরের মেজো ভাই রাসেল আর ভ্রমর এসেছে। ভ্রমর এসেছে ঠিকই কিন্তু কোন কথাবার্তা বললো না। উপরন্তু নির্ঝরের চোখে চোখ পড়তেই ভেংচি কেটে মুখ ফিরিয়ে নিলো। নির্ঝর মুচকি হেসে নাফিসা রহমান, বোরহান সাহেবেকে সালাম করে কুশল বিনিময় করলো। রাসেল একটু ইতস্তত করছিলো, নির্ঝর এগিয়ে গিয়ে তাঁকে সালাম করতে নিলেই ছিঁটকে দূরে সরে গেলো সে। নিজে পড়াশুনা কম জানে বলে নির্ঝরের সাথে কি কথা বলবে ভেবে ভেতরে ভেতরে সংকোচ বোধ করছিলো সে। তাই নির্ঝর সালাম করতে গেলে আঁতকে উঠলো। এতটা প্রত্যাশা করে নি সে। আসলে, মুখে প্রকাশ না করলেও ভ্রমরের ভাইয়েরা সবাই ভেতরে ভেতরে ভীষণ সমীহ করে চলে নির্ঝরকে । বয়সে ভ্রমরের চৌদ্দ বছরের বড় রাসেল! সেই হিসেবে নতুন আত্মীয়তার দিক থেকে মোটামুটি মুরুব্বীই বলা চলে তাঁকে! নাফিসা রহমান রাসেলের ইতস্তত মুখের দিকে চেয়ে মুচকি হেসে বললেন,’না করছো কেন রাসেল? ও তো এখন তোমার ছোট বোনের বর? নতুন জামাই! সবাইকে সালাম করতে হয়!’

রাসেল সলজ্জ হাসলো। নির্ঝরও হাসলো। ভ্রমর আড়চোখে একবার তাঁর দিকে চেয়ে আপন মনেই ভেংচি কাটলো। ইশ! বউয়ের কোন খোঁজ নেই অথচ শ্বশুরবাড়ির সবার কাছে ভালো সাজা হচ্ছে! বদ লোক একটা!

নাফিসা রহমান বলার পরেও সালাম নিতে রাজী হলো না রাসেল। শেষমেশ খাঁটি বাঙ্গালি পদ্ধতিকে কোলাকুলি করলো দুজনে। নির্ঝর মুচকি হেসে বললো,’ভাবি কেমন আছে ভাইয়া?’

রাসেল হাসলো। হাসিমুখেই কিঞ্চিৎ লাজুক স্বরে বললো,’তিনি ভালোই আছেন।’

-‘ভ্রমরের কাছে শুনলাম নতুন মেহমান আসছে?’

এবারে হাসিটা বেশ চওড়া হলো রাসেলের। রেহানার সন্তানসম্ভবা। আদনানের পরে দীর্ঘ আটবছর পরে আবার সন্তানের মুখ দেখছে তাঁরা। মুচকি হেসে লাজুকভাবে ‘হ্যাঁ’-সূচক মাথা নাড়ালো সে। লাজুক মানুষটার মুখের দিকে তাকিয়ে নির্ঝরও হাসলো। তারপর দুজনে মিলেই নির্ঝরের লাগেজ পত্রগুলো সব গাড়িতে তোলার ব্যবস্থা করলো।
আর ভ্রমর? তিনি ‘আমি অদৃশ্য!’ টাইপ একটা লুক নিয়ে চুপচাপ নাফিসা রহমানের পাশে দাঁড়িয়ে রইলো।
নির্ঝর তাঁর গোমড়া মুখের দিকে চেয়ে সবার অলক্ষ্যেই একবার চোখ মারলো। সঙ্গে সঙ্গেই মুখ ঘুরিয়ে নিলো ভ্রমর! নির্ঝরকে এত সহজে মাফ করবে না সে! রাগের পাল্লা ভাবি বুঝতে পেরে আর বেশি ঘাঁটালো না নির্ঝর। কাছে পেলে এবার এত ভালোবাসবে যে সব রাগ, অভিমান আপনা আপনিই ভুলে যাবে ভ্রমর! নাফিসা রহমান সব দেখেও না দেখার ভান করে মুখটিপে হাসলেন। ওদের ব্যপার ওরাই বুঝবে।
গাড়িতে উঠার সময়ও পূর্বের রাগ বজায় রেখে ভ্রমর গিয়ে তাঁর পাশে বসলো। এবারেও চুপ করে তামাসা দেখে গেলেন তিনি। নির্ঝরও ভালো ছেলের মত কোন উচ্চবাচ্য না করে চুপচাপ মায়ের পাশে বসে পড়লো। তারপর সারারাস্তা মা ছেলে মিলে কত গল্প! ভ্রমর টু শব্দ পর্যন্ত করলো না।

দুদিন পরের কথা, নির্ঝরের নিয়ে ভ্রমরদের বাড়িতে এসেছেন নাফিসা রহমান। ভ্রমর হস্পিটালে জয়েন দেওয়ার আগেই রিসেপশনের কাজটা সেরে ফেলতে চান তিনি। সেসবের আয়োজন নিয়েই বোরহান সাহেবের সাথে জরুরী আলাপে বসেছেন তিনি। আলোচনা করতে করতে বিকেল হয়ে গেলো তবুও তাদের আলোচনাই শেষ হলো না! নির্ঝর চুপচাপ বসে ছিলো! কিছুক্ষন পরে ভ্রমরের ভাবিরা এসে তাঁকে জোরপূর্বক ভেতরে নিয়ে গেলো। নতুন জামাই বিয়ের পর এই প্রথম বাড়িতে এসেছে কেউ ছাড়লো না। রান্নাবান্নার বিশাল আয়োজন শুরু হলো। অগত্যা নাফিসা রহমানকে থেকে যেতে হলো। ভ্রমর শ্বাশুড়ির সঙ্গে আলাপ সেরে নিজের ঘরে গিয়ে বসে আছে। নির্ঝরের ওপর খুব রাগ হচ্ছে তাঁর। এতদিন পর দেশে ফিরেছে অথচ বউয়ের কোন খবর নেই! সবার সঙ্গে গল্প গুজবে ব্যস্ত তিনি! এদিকে বউ যে রাগ করে আছে সেটাও বোধহয় ভুলে গেছে! আসুক একবার ভ্রমরের কাছে! কোন কথা বলবে না ভ্রমর।

এদিকে নির্ঝর পড়েছে বিপাকে। ভ্রমরের ভাবিরা কেউ তাঁকে ছাড়ছে-ই না। সবাই হাসিঠাট্টায় মশগুল। ভাবখানা এমন যেন, নতুন জামাই একটু না খোঁচালে বিয়েই হালাল হবে না। নিরুপায় হয়ে রেহানার দিকে চাইলো সে। তার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে রেহানাই ভ্রমরের কাছে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলো।

ভেতরে ঢুকে নির্ঝর খাটের ওপর বসলো। ভ্রমর খাটের ওপর পাশে বসে আছে। মুখ গম্ভীর! মুখের এক্সপ্রেশনের ধরণ অনেকটা ‘না এলেই তো পারতেন টাইপ!’ নির্ঝর চশমার ফ্রেমটা একটু ঠিক করে গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,’তোমাদের পাখাগুলোর বাতাস এত গরম কেন? একটুও বাতাস লাগছে না।’
খুব একটা গরম লাগছে না নির্ঝরের। আলোচনা কি দিয়ে শুরু করবে বুঝতে পারছিলো না। তাই কিছু একটা বলে শুরু করার প্রয়াস! তার কথার জবাবে ভ্রমর মুখ ঝামটা মেরে বললো,’আমাদের বাসার ফ্যানগুলো সব অশিক্ষিত, পড়ালেখা জানে না তাই এত গরম!’
নির্ঝর খানিকটা হতভম্ভ! খানিকটা বিস্মিত!
হেসে ফেললো সে! জীবনে এই প্রথম এমন অদ্ভুত যুক্তি শুনেছে! মুখটিপে হাসলো। প্রিয়তমা ভালোই খেপেছে! চশমাটা খুলে টেবিলের ওপর রেখে বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো সে। মাথার নিচে একটা হাত রেখে বললো,”সাইকোলজি বলে, কেউ যদি অল্প কিছুতেই রেগে যায়, তাহলে তার ভালোবাসা প্রয়োজন। আসো তোমাকে ভালোবাসি।”

সটাং দাঁড়িয়ে গেলো ভ্রমর। রাগত স্বরে বললো,’আপনি খুব খারাপ! আপনার এসব মিষ্টি কথায় আমি ভুলছি না।’
নির্ঝর খপ করে তাঁর একটা হাত ধরে তড়িৎগতিতে তাঁকে বিছানায় ফেলে দিলো। নিজে তাঁর ওপর ঝুঁকে বললো,’তবে কিসে ভুলবে?’

আচমকা বুক ধড়ফড় করছে ভ্রমরের! নির্ঝর আগে কখনো তাঁর এতকাছাকাছি আসে নি! এমনকি ছুটিতেও যেই কদিন সে দেশে ছিলো ভ্রমর তাঁর বাবার বাসায় ছিলো! কারণ, মুখে কেউ না বললেও নির্ঝর বিদেশে চলে যাওয়ার পর একটা অলিখিত নিয়ম হয়ে গিয়েছিলো যে, যতদিন ভ্রমরের এমবিবিএস কমপ্লিট না হবে ততদিন আলাদা থাকতে হবে দুজনকে! সেই অনুযায়ী এতদিন আলাদা থেকে এসেছে তাঁরা!
কিন্তু বিয়ের পাঁচবছর পর হঠাৎ করেই মানুষটা তাঁর এত কাছাকাছি! লজ্জায় যে সমস্ত শরীর নুইয়ে আসছে তাঁর! চোখ বন্ধ করে দ্রুত শ্বাস নিলো সে। নির্ঝর মুখোমুখি ঝুঁকে পলকহীন ভাবে চেয়ে রইলো লজ্জাবতী প্রিয়তমার অপূর্ব সুন্দর মুখখানার দিকে। ইশ! লজ্জা পাওয়ায় এত সুন্দর লাগছে কেন ভ্রমরকে? একটা চুমু কি খেয়ে নেবে নির্ঝর? ভ্রমর পিটপিট করে চোখ খুলতেই দেখলো নির্ঝর তাঁর দিকে চেয়ে দুষ্টু হাসছে। নির্ঝরের জব্দ করার জন্য মনে মনে একটা ফন্দি আটলো সে। মুচকি হেসে বললো,’দুইশোবার কানেধরে উঠবস করবেন আপনি। তবে আপনার মাফ হবে নতুবা আমি আপনার সাথে কোন কথা বলবো না।’

কানেধরে উঠবস? নির্ঝর? তাও দুইশোবার? হতভম্ভ হয়ে গেলো নির্ঝর!
ভ্রমর তাঁকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে উঠে বসলো। পিঠের ওপর ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো হাতখোঁপা করে বললো,’কি হলো শুরু করুন?’

নির্ঝর জবাব দিলো না। চোখবন্ধ করে যেমন শুয়ে ছিলো তেমনিভাবে শুইয়ে রইলো, যেন শুনতেই পায় নি ভ্রমর কি বলেছে। ভ্রমর তাঁকে দুইতিনবার ঝাঁকি দিয়ে বললেন,’এক্ষুনি যদি না উঠেছেন তবে কিন্তু আমি রাতে ভাবির ঘরে ঘুমাবো?’

-‘ভ্রমর?’, অসহায় কন্ঠ নির্ঝরের। ঠোঁট দুটো কিঞ্চিৎ অভিমানে বাঁকিয়ে ফেললো সে। ভ্রমর সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বললো,’নো। কোন ছাড় দেওয়া হবে না। শুরু করুন তাড়াতাড়ি!’

দুইহাতে দুইকান ধরে দাঁড়িয়ে আছে নির্ঝর। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে ভ্রমর। কোন কিছুতেই তাকে শান্ত পারে নি নির্ঝর। তাই বাধ্য হয়ে কানে ধরে উঠবস করতে রাজী হলো। মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দিলো সে,’হায় ডক্টর নির্ঝর রহমান! কী হবে এই জীবন রেখে? শেষে কি না বউয়ের সামনে কান ধরতে হচ্ছে?’ কিন্তু তার করুণ মুখের দিকে তাকিয়ে কোনরকম দয়া হলো না ভ্রমরের। ইশারায় উঠবস শুরু করার নির্দেশ দিলো সে। শেষ চেষ্টা স্বরূপ নির্ঝর উঠবস শুরু করার আগে বাচ্চাদের মত অনুযোগ করে বললো,’মা আমাকে মেরে ফেলবে ভ্রমর! কেন আমার মানইজ্জত নিয়ে এভাবে খেলছো?’

-‘মা জানবে না। এবার আপনি শুরু করুন তাড়াতাড়ি? নইলে আমি ভাবির ঘরে যাচ্ছি?’

নির্ঝর আবারো কিছু বলতে যাচ্ছিলো তাঁর টাইয়ের নটটা টেনে ধরলো ভ্রমর! আলতো করে একটা কিল মেরে তাঁর বুকে কপাল ঠেকালো। মৃদু নরম কন্ঠে বললো,’শুরু করুন বলছি!’
ব্যস! আর কিছু বলার রইলো না নির্ঝরের! এইটুকুতেই কুপোকাত প্রফেসর সাহেব! মুচকি হেসে কান ধরে বসে পড়লো সে। তার সঙ্গে সঙ্গে ভ্রমরও বসলো। নির্ঝর উঠলো, তার বুকে কপাল ঠেকিয়ে ভ্রমরও উঠলো! নির্ঝর বসলো সঙ্গে ভ্রমরও বসলো! নির্ঝর দাঁড়ালো তাঁর সঙ্গে ভ্রমরও দাঁড়ালো!
এত রোমান্টিক ভাবে কেউ কাউকে কানধরে উঠবস করাতে পারে এটা নির্ঝরের জানা ছিলো না। চোখ বন্ধ করে নিচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরলো সে। মুখে মিটিমিটি হাসি! ভ্রমরের তপ্ত নিশ্বাস বুকে লাগছে! ফের কানে ধরে উঠবস করলো সে। ভ্রমরও করলো!

এভাবে আরো কিছুক্ষন চলার পরে নির্ঝরের শক্ত, পুরুষালী হাতদুটো ধীরেধীরে ভ্রমরের ক্ষীণ মেদবিহীন কটিখানা জড়িয়ে ধরলো। তাঁর একেবারে কানের কাছে মুখ লাগিয়ে ফিসফিস করে বললো,’শ্যেল্ আই কিস ইউ?’ ভ্রমর হাসলো। কপালটা নির্ঝরের বুকে ঠেকিয়েই দুদিকে মাথা নাড়িয়ে না বোঝালো সে। নির্ঝর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আবার উঠবস করার প্রস্তুতি নিয়ে বললো,’তুমি খুব কোমল ধরনের নিষ্ঠুর ভ্রমর!’ ভ্রমর আবারো নিঃশব্দে হাসলো। নির্ঝরের কান থেকে হাতটা ছাড়িয়ে দিলো সে। ফিসফিস করে বললো,’জড়িয়ে ধরুন আমাকে! খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরুন! এতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরবেন যেন আমি এক্ষুনি মরে যাই!’
নির্ঝর হাসলো! তারপর? তারপর খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ভ্রমরকে! হ্যাঁ! শক্ত করে! খুব শক্ত করে! এবং ধরার পর বুঝতে পারলো ডাকিনী শুধু নিজে মরার প্ল্যান করে নি নির্ঝরকেও মারার প্ল্যান করেছে!
.
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here