কনফিউশন,১৯,২০

0
516

#কনফিউশন,১৯,২০
লেখকঃ মৌরি মরিয়ম
পর্ব ১৯
.
.
তিরা যখন পার্লারে যাচ্ছিলো আরশি তাকে ডেকে বললো,
“আমাকে তোর সাথে নিয়ে যা।”
তিরা অবাক হয়ে বললো,
“তুই পার্লারে যাবি?”
“না। বাইরে ঘুরবো। বাসায় ভালো লাগছে না। তুই শুধু সাথে
নিয়ে বের হ। একা বের হতে দেবে না ফুপি।”
“একা ঘুরবি কোথায়?”
“রিক্সায় ঘুরবো, মার্কেটে ঘুরবো। এটা কোনো সমস্যা না। তুই
নিয়ে চল।”
তিরা আরশিকে নিয়ে বের হলো। বের হতে হতেই আরশি
কাব্যকে মেসেজ দিলো সে যাতে এক্ষুণি বের হয়ে
নিউমার্কেটে গিয়ে অপেক্ষা করে। তিরা ও তার কাজিনরা
পার্লারে ঢুকে গেলে আরশি চলে গেল নিউমার্কেট। কাব্য
আগে থেকে এসে অপেক্ষা করছিলো। আরশি এলে দুজন
একসাথে শাড়ির দোকানের দিকে যাচ্ছিলো কিন্তু কেউ
কোনো কথা বলছিলো না। শাড়ির দোকানের ঢুকে কাব্য
আরশিকে জিজ্ঞেস করলো,
“আচ্ছা তিরা কী ধরনের শাড়ি পছন্দ করে?”
“ওর কাতান খুব পছন্দ।”
“তাহলে একটা কাতানই পছন্দ করে নাও।”
অনেকগুলো কাতান শাড়ির মধ্যে আরশি তিরার জন্য একটা
মেরুন কাতান শাড়ি বেছে নিলো। শাড়ি কেনা শেষে মার্কেট
থেকে বেরিয়ে কাব্য বললো,
“আমরা কি এক্ষুণি বাসায় ফিরে যাবো?”
আরশি সেকথার উত্তর না দিয়ে জানতে চাইলো,
“আপনি ঝাল খেতে ভালোবাসেন নাকি মিষ্টি?”
“মিষ্টি।”
“চলুন তাহলে আপনাকে বিখ্যাত ইন্দ্রোমোহন সুইটসের মিষ্টি
খাইয়ে আনি।”
“সেটা কোথায়?”
“বড় বাজার। বেশি দূরে নয়।”
আরশি ও কাব্য যখন রিক্সায় করে মিষ্টি খেতে যাচ্ছিলো তখন
কাব্য নানান রকম গল্প করছিলো কিন্তু আরশি শুধু হু হা
করছিলো। এই কদিন আরশির যে কিছুটা হাসিখুশি ভাব ছিলো
সেটা আজ সকাল থেকে নেই। আবার বিষন্নতায় ডুবে গেছে
মেয়েটা। অনেক কিছু জানতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু জানার জন্য
আরশিকে অন্তত কিছু জিজ্ঞেস করা যাবে না।
এইযে কাব্যর সাথে রিক্সায় ঘোরা! আরশির জীবনে প্রথম
কোনো ছেলের সাথে রিক্সায় ওঠা তাও আবার সেই ছেলেটা
তার বিশেষ কেউ। গতকাল কত প্ল্যান করে রেখেছিলো
আজকের এই বের হওয়া নিয়ে। প্ল্যানমতোই সব হচ্ছে অথচ কিছু
অনুভব করতে পারছে না আরশি। মনে হচ্ছে না বিশেষ কিছু ঘটছে
তার সাথে। কাব্য একটু পর পর তার দিকে হা করে তাকিয়ে
আছে তাতেও কিছু যাচ্ছে আসছে না তার। সে একদৃষ্টিতে
তাকিয়ে আছে পিচঢালা রাস্তায়! জীবনটা টেনে সামনের
দিকে আগানো সবসময়ই তার জন্য কঠিন ছিলো। একটা মেয়ের
জীবনে যত স্বাধীনতা প্রয়োজন, যত বিলাসিতা প্রয়োজন
সবকিছু না চাইতেই তার ভাই ভাবি এনে হাজির করেছে তার
সামনে। অথচ কখনো কোনোকিছুই তার কাছে বিশেষ মনে হয়নি।
আরশি যখন বড় হচ্ছিলো, চোখের সামনে তিরা কত প্রেম
করেছে অথচ তার কখনো কোনো ছেলেকে ভালো লাগেনি,
প্রেম তো বহুদূরের কথা। কেউ নিজ থেকেও কাছে আসেনি তার।
অথচ কাব্য দমকা বাতাসের মতোই হুট করে এলো তার জীবনে।
কাব্যকে ঘিরে সবকিছুই কেমন যেন বিশেষ বিশেষ মনে
হচ্ছিলো। অথচ আজ সকালের পর গোছানো সবকিছু এলোমেলো
হয়ে গেলো। এখন আর কিছুই ভালো লাগছে না।
শেষ পর্যন্ত গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গেলো না আরশি।
মাথাব্যথার অজুহাত দিয়ে বাসায় ঘর অন্ধকার করে শুয়ে
থাকলো। অনুষ্ঠানে গিয়ে তিরার কাছে আরশির মাথাব্যথার
কথা শুনে কাব্য তাকে ফোন করলো,
“হ্যালো।”
“শুনলাম তোমার মাথাব্যথা! সরি আরশি আমি তো জানতাম না
আমরা তখন বের হবো। তাই একটা সিগারেট খেয়ে
ফেলেছিলাম।”
“আমি তেমন সিগারেটের গন্ধ পাইনি। আর আমার মাথাব্যথাও
হয়নি। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ্য আছি৷ অনুষ্ঠানে যাবো না বলে
মিথ্যে বলেছি।”
কাব্য অবাক হয়ে গেলো। আরশি চুপ, কাব্যও চুপ। কিছুক্ষণ পর
আরশি বললো,
“আমার একা থাকা প্রয়োজন তাই যাইনি।”
কাব্য বললো,
“আচ্ছা থাকো তাহলে, আমি রাখছি।”
আরশি হঠাৎ কাব্যর প্রতি কৃতজ্ঞতা অনুভব করলো, হাজারটা
প্রশ্ন করে মাথা না খেয়ে ফেলার জন্য। এজন্যই কাব্য অন্যদের
থেকে আলাদা!
বিয়ের দিন সকালে সাহিল এলেই আরশি তাকে বললো,
“ভাইয়া আমি তোমার সাথে আজই ফিরে যেতে চাই।”
“কেন? তোর না বৌভাত পর্যন্ত থাকার কথা?”
“ইচ্ছে করছে না।”
“ফুপি কি আবার তোকে কিছু বলেছে?”
“আমি বাসায় যাবো ভাইয়া।”
“ঠিকাছে আমি টিকিটের ব্যবস্থা করছি।”
“ফ্লাইটে যাবো। যতদ্রুত সম্ভব আমি বাসায় যেতে চাই।”
সাহিল এবার চিন্তায় পড়ে গেলো। জানে আরশিকে এখন কিছু
জিজ্ঞেস করে লাভ নেই। রশ্নিকে পেলে সে নিজেই সব বলবে।
তাই বললো,
“আচ্ছা যেভাবেই হোক ফ্লাইটের টিকিটের ব্যবস্থা করছি।”
তিরার ফটোশ্যুটের ইচ্ছেটা এবার মিটিয়েই দিলো কাব্য।
বিয়েতে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার থাকলেও কাব্য তিরা ও
যাদিদের বেশকিছু এক্সক্লুসিভ ছবি তুলে দিলো। যাদিদ তার
বন্ধুদের সময় দিতে একটু সরতেই তিরা কাব্যকে বললো,
“আব্বাজান মালটাকে দেখেছো ভালো করে?”
কাব্য হেসে বললো,
“একদম ঝাক্কাস মাল। মাথার চুল কিন্তু খাঁড়া বুইঝো মামনি।
রাগ উঠলে কিন্তু ছিঁড়ে ফেলবে তোমাকে।”
“ধ্যাত কী বলো! রাগ নেই ওর অত। শুধু একটু ভাব আছে, বুঝোনা
মাল তো!”
কাব্য হাসতে লাগলো।
বিয়ের অনুষ্ঠানে কাব্য পাঞ্জাবি পড়েছে। তাকে খুব সুন্দর
লাগছে। আরশি দূর থেকে দেখেই ভাবছিলো কেন কাব্য তাকে
পছন্দ করলো? সেতো বেমানান কাব্যর পাশে। কাব্য আশেপাশে
আরশিকেই খুঁজছিলো। হঠাৎ চোখে চোখ পড়ে গেলো। আরশি
একটা একটা অফ হোয়াইট কালারের কাজ করা জামা পড়েছে।
এই প্রথম সে আরশিকে একটু জমকালো কোনো জামা পড়তে
দেখলো তাও রঙিন নয়। কিন্তু আজও সাজেনি আরশি। কাব্যর
কাছে আরশিকে এভাবেই খুব সুন্দর লাগে। তবে কাব্যর শাড়ির
প্রতি অনেক দুর্বলতা। একদিন যদি শাড়ি পড়া দেখতে পারতো
আরশিকে! শাড়িতে কেমন লাগবে এই মায়াময়ী মেয়েটাকে?
আরশি নিজে এগিয়ে কথা বললো,
“খেয়েছেন?”
“হ্যাঁ, তুমি?”
“খেয়েছি। তিরাকে বিদায় দেয়ার পরই আমি ভাইয়ার সাথে
ঢাকা ফিরে যাচ্ছি।”
কাব্য অবাক হয়ে বললো,
“সত্যি? তোমার না বৌভাত পর্যন্ত থাকার কথা?”
“ভালো লাগছে না এখন আর।”
কাব্য আর কিছু জিজ্ঞেস করতে পারলো না।
তিরা আজ মহাখুশি। এই প্রথম তার কোনো ক্রাশ খাওয়া
সাকসেসফুল হলো! তার শ্বশুরবাড়ি খুলনা শহরেই। শ্বশুরবাড়িতে
ঢুকে তার চোখ ঝলসে গেলো। এত বড় এত সুন্দর বাড়ি ভাবতেই
আনন্দ হচ্ছে। বাসরঘরে ঢুকেও তার একফোঁটা ভয় করলো না। পুরো
ঘরটা এদিকে সেদিক ঘুরে দেখলো, কিন্তু কোথাও কোনো
বিড়াল দেখতে পেলো না। বাসরঘরের বিড়াল মারার
ব্যাপারটা নিয়ে সে কিছুটা চিন্তিত। এই বাসরঘরের বিড়াল টা
যে কীভাবে মারতে হয় সে বিষয়ে কেউই তাকে খোলাসা করে
কিছু বলেনি। যাকেই জিজ্ঞেস করে সেই শুধু হাসে। ওর আগেই
যদি যাদিদ বিড়াল টা মেরে ফেলে তাহলে তো মহাবিপদ!
তিরা যখন এসব ভাবছিলো যাদিদ তখন বললো,
“পাগলের মতো এদিক ওদিক কী খুঁজছো? এদিকে এসো।”
তিরা যাদিদের সামনে এসে দাঁড়াতেই যাদিদ তিরার একটা
হাত ধরে বললো,
“প্রথমে আমি বিয়েতে রাজী ছিলাম না জানো তিরা?”
তিরা অবাক হয়ে বললো,
“কেন?”
“এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চাচ্ছিলাম না। বাবা মা অনেক
মেয়ের ছবি আর বায়োডাটা দিলো কিন্তু কোনোটাই আমি
দেখলাম না। অবশেষে তারাই কয়েকজনকে সিলেক্ট করলো
যাদের দেখতে যেতে হবে। আমার প্ল্যান ছিলো মেয়ে দেখে
গিয়ে বলবো পছন্দ হয়নি। কারণ বিয়ে করবো না বলে বাবা
মাকে মানানো যাচ্ছিলো না। তারচেয়ে এটাই উত্তম পন্থা।
তোমার আগে আমরা আরো ৪ টা মেয়ে দেখেছিলাম,
প্রত্যেককে দেখে এসে বলেছি পছন্দ হয়নি। কিন্তু তোমাকে
দেখতে গিয়ে আটকে গেলাম।”
তিরা এবার দ্বিগুণ অবাক হয়ে বললো,
“কেন?”
যাদিদ তিরার মাথায় একটা গাড্ডা মেরে বললো,
“বুদ্ধু কোথাকার! এতো সুন্দরী মেয়ে দেখলে কারো মাথা ঠিক
থাকে? আমারো ছিলো না।”
একথায় তিরা কী যে লজ্জা পেলো! কখনো কোনো ছেলের
কথায় লজ্জা লাগেনি তিরার। অথচ যাদিদের এই সামান্য
কথায় এতো লজ্জা লাগলো কেন? যাদিদ বললো,
“আর যখন ছাদে কথা বলতে গেলাম এবং বুঝলাম আমি দুনিয়ার
নাম্বার ওয়ান গাধা মেয়েটার সাথে কথা বলছি তখন তো
সিদ্ধান্ত নিয়েই নিলাম যে বিয়ে একেই করতে হবে। বোকা বৌ
ভাগ্যবানের কপালে জোটে!”
তিরা একথায় আরো বেশি লজ্জা পেলো। যাদিদ বললো,
“রাগ করোনা আবার, গাধা বোকা কিন্তু খারাপ না। ভদ্র
ভাষায় এদের বলে সহজ সরল। আজ থেকে তুমি আমার বৌ।
তোমার সাথে এতো ভদ্রতা দেখিয়ে কী হবে?”
তিরা যাদিদের বুকে মুখ লুকালো। যাদিদ তিরাকে জড়িয়ে ধরে
বললো,
“আমার বোকা বৌ।”
চলবে…..

#কনফিউশন
লেখকঃ মৌরি মরিয়ম
পর্ব ২০
.
.
আরশি নিজের ঘরে ঢুকে শান্তি পেলো। দুনিয়ার আর কোথাও
গিয়ে শান্তি পায় না সে। এই বাড়ির বাইরে সবকিছুই অন্যদের
মনে হয়। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই আরশির ঘুম এসে গেলো।
প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছে এমন সময় কাব্যর মেসেজ এলো। সে
লিখেছে,
“পৌঁছেছো?”
আরশি রিপ্লাই দিলো,
“কিছুক্ষণ আগেই।”
“ওকে টেক রেস্ট।”
“আপনি কি করছেন?”
“অন দ্যা ওয়ে টু কক্সবাজার।”
“বাড়ি যাচ্ছেন হঠাৎ!”
“ছুটি নষ্ট করতে ইচ্ছে করলো না। কিছু পারসোনাল প্রব্লেমের
কারণে অনেকদিন বাড়ি যাই না। তাছাড়া, ওখানে তুমি নেই
তিরা নেই। বাকি সবাই আমার অপরিচিত। আমি একা কী
করতাম?”
“সরি আমার জন্য মেবি আপনার প্ল্যান বরবাদ হলো।”
“ডোন্ট বি সরি। আমার তেমন কোনো প্ল্যান ছিলো না। খুলনা
ঘুরে দেখতাম হয়তো একটু! সেটা পরেও কখনো করা যাবে।”
অর্নব গেট খুলে কাব্যকে দেখে জড়িয়ে ধরে খুশিতে চিৎকার
করে উঠলো,
“মা দেখো ছোট ভাইয়া এসেছে!”
কাব্য অর্নবকে দেখে বললো,
“কি খবর মিস্টার ম্যাকগাইভার?”
অর্নব দাঁত কেলিয়ে বললো,
“বাবার ঘরের টিভি টা গতকাল খুলে ফেলেছিলাম। এজন্য বাবা
আমাকে কি মার মেরেছে দেখ!”
অর্নব টি-শার্ট উঠিয়ে মারের দাগ দেখাচ্ছিলো। কাব্য হেসে
বললো,
“তোর তো কলিজা কম বড় না। আর মানুষ পেলি না বাবার টা?”
“আর কোনো টিভি ফ্রি থাকে না।”
“বাদ দে এসব। তোর সাথে আমার কাজ আছে। এবার তোকে
নিয়ে আমি একটা মিশনে যাবো।”
অর্নবের চোখ চকচক করে উঠলো,
“সত্যি ছোটো ভাইয়া? কোথায়?”
“সেটা পরে বলবো।”
অর্নব ফিসফিসিয়ে বললো,
“তোমার সাথেও আমার প্রাইভেট কথা আছে।”
শাহনাজ বেগম রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে ছেলেকে দেখে
খুশিতে কথাই হারিয়ে ফেললেন। কাব্য কাছে গিয়ে মাকে
জড়িয়ে ধরলো।
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*
“মা কেমন আছো তুমি?”
“আসবি বললি না কেন?”
“সারপ্রাইজ দেব বলে।”
“চাইনা তোর এসব সারপ্রাইজ। সারাক্ষণ তোর সারপ্রাইজের
অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু বছরে পাই কয়বার?”
“কেন দুই ঈদে তো আসি।”
“তোর পড়াশোনা শেষ হলে সোজা বাড়ি চলে আসবি। তোর মত
ছেলের অতদূরে থাকার অধিকার নেই যে কিনা দুই ঈদ ছাড়া
ফ্যামিলিকে মনে করে না।”
“ওমা মনে করিনা মানে? প্রতিদিন ফোনে কথা হচ্ছে না?”
“এতোকিছু জানিনা আমি। তুই পড়াশোনা শেষে এখানেই যা
করার করবি। তোকে ঢাকা পাঠিয়ে আমি বড় ভুল করেছি।”
কাব্য হেসে বললো,
“আচ্ছা মা তা নাহয় সময় হলে দেখা যাবে। এখন তাড়াতাড়ি
ভাত খেতে দাও তো।”
“এই সকালবেলা তাড়াতাড়ি ভাত কোথায় পাবো? তুই ফ্রেশ হ।
আমি ভাত বসাচ্ছি। হতে সময় লাগবে না।”
কাব্য খাওয়া শেষ করে ঘরে যেতেই পেছন পেছন গেলেন
শাহনাজ বেগম। কাব্য বিছানায় শুতেই উনি গিয়ে পাশে বসলেন।
কাব্য বললো,
“মনে হচ্ছে স্পেশাল কথা আছে?”
“তা তো আছেই।”
“বলো।”
“তনিকার সাথে তোর কথাটথা হয়?”
“ওর তো বিয়ে হয়ে গেছে মা।”
শাহনাজ বেগম অবাক হয়ে বললেন,
“কী বলছিস তুই? মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেলো?”
“হ্যাঁ।”
“তুই আমাকে একবারও বললি না?”
“বলার কী আছে মা? ব্রেকাপের পর ওর কী হচ্ছে না হচ্ছে সেটা
নিয়েও আমি কেন মাথা ঘামাবো?”
“ওর ব্যাপারে মাথা ঘামিয়েছিলি কবে তুই? এতো লক্ষী একটা
মেয়েকে কতো কষ্টই না দিলি!”
“মা দুনিয়ার সব মেয়েই তো তোমার কাছে লক্ষী।”
“না তনিকা অন্যরকম ছিলো। কাব্য রে আমার তো ভয় হয়,
তনিকার অভিশাপে তোর আবার না বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যায়!”
কাব্য হেসে বললো,
“কেন? তোমার লক্ষী মেয়ে অভিশাপ কেন দেবে?”
“তো দেবেনা? ওর জীবনটা তুই নষ্ট করেছিস।”
“আমি ওর জীবন মরন কিছুই নষ্ট করিনি মা। দেখো গিয়ে কি
সুন্দর বিয়ে করে সুখী হয়েছে। আবার নাকি বাচ্চাও হবে।
তাহলে জীবন নষ্ট কীভাবে হলো? দোষ আমার একার না। দোষ
ওরও ছিলো। আর ব্রেকাপও আমি করিনি, ওই করেছে।”
“তনিকা তো ব্রেকাপ করেছে। ওর জায়গায় আমি হলে তোকে
খুন করতাম।”
“মা তুমি বেশি সেন্টিমেন্টাল। তনিকা আমাদের পারসোনাল
কথাগুলো তোমাকে আংশিকভাবে বলেছে। এজন্য তুমি
আমাকে ভুল বুঝছো। ওর উচিত ছিলো বললে পুরোটা বলা।”
“তাহলে তুই পুরোটা বল।”
“আমি তো ওর মতো ডেস্পারেট না যে নিজেকে ভালো প্রমাণ
করার জন্য কার সাথে কী সম্পর্ক মাথা রাখবো না। সবাইকে সব
বলে বেড়াবো।”
“আরে! বিয়ে না করে একটা মেয়ের সাথে স্বামী স্ত্রীর মতো
থেকেছিস। মেয়েটার এতো বড় ক্ষতি করেছিস আর ও তোকে
ছেড়ে দেবে? এসব জানার পর থেকে আমার তো তোকে নিজের
ছেলে বলে পরিচয় দিতেও লজ্জা লাগে।”
“হ্যাঁ মা আমি অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলেছি ওর। আমি স্বীকার
করছি। কিন্তু ওকে জিজ্ঞেস করো তো ও কেন বাক্সপেটরা
নিয়ে আমার বাসায় এসে উঠেছিলো? এর কোনো উত্তর যদি ওর
কাছে থাকে তাহলে আমি এ বিষয়ে তোমার সাথে কথা
কন্টিনিউ করবো নাহয় এই চ্যাপ্টার এখানেই ক্লোজ।”
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here