#কনফিউশন,৪৪,৪৫
লেখকঃ #মৌরি_মরিয়ম
পর্ব ৪৪
তিরা বাথরুমের দরজা লাগিয়ে কাঁদতে শুরু করেছে। থরথর করে কাঁপছে সে। ওদিকে যাদিদ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর দরজায় টোকা দিল,
“তিরা.. বেরিয়ে এসো।”
তিরা কোনো জবাব দিল না। যাদিদ আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর বাথরুমের লকের চাবি খুঁজতে লাগলো। চাবি খুঁজে না পেয়ে যাদিদ আবার দরজায় টোকা দিয়ে বলল,
“দরজা খোলো তিরা, নাহয় দরজা ভেঙে ফেলব।”
এবারো তিরা দরজা খুলল না। কোনো জবাবও দিল না। এবার যাদিদ রাগে ফেটে পড়ল। দরজায় ধাক্কা দিয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করতে লাগলো। শব্দ শুনে রেহানা চলে এলেন। ছেলেকে এই অবস্থায় দেখে বললেন,
“তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে যাদিদ? একে তো এতদিন ধরে ওকে কষ্ট দিলি তার উপর এখন আবার জেদ দেখাচ্ছিস! ওর যখন ইচ্ছা বের হবে।”
“মা তিরা অনেকক্ষণ ধরে বাথরুমে। এতবার ডেকেছি কোনো সাড়া দেয়নি। যদি আগেরবারের মত অজ্ঞান হয়ে যায়? ফর গড সেক তোমার কাছে চাবি থাকলে দাও, নাহয় আমি দরজা ভেঙে ফেলব।”
এ কথা শুনে রেহানারও চিন্তা হতে লাগলো। সে বলল,
“এ ঘরের সব চাবি তো আমি তিরাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। আমার কাছে নেই।”
রেহানা চাবি খুঁজতে লাগলেন। ওদিকে যাদিদ আবার দরজায় ধাক্কা দিতে লাগলো। দরজা যখন কিছুটা আলগা হলো তখন ভেতরে একটা শব্দ হলো। যাদিদ রেহানা সবাই শব্দ শুনে চমকে গেল। যাদিদ আরো জোরে ধাক্কা দিলো। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দরজা ভেঙে গেল। যাদিদ দেখল তিরা বাথরুমের জানালার গ্রিলের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে। যেহেতু ওদের বাথরুমের উচ্চতা ঘরের মতই ১০ ফুট উঁচু তাই এটা সম্ভব হয়েছে। তিরা বালতি উল্টো করে তার উপর উঠে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বালতিটা লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে। যাদিদ দৌড়ে গিয়ে তিরাকে কোলে নিয়ে গলা থেকে ওড়না খুলে তাকে ঘরে এনে বিছানায় বসালো।
রেহানা চিৎকার করে বললেন,
“এ কি করছিলি মা। কেন করছিলি?”
তিরা কিছুক্ষণ কাশলো। তার চোখে পানি। যাদিদ হঠাৎ করেই প্রচন্ড এক চড় বসালো তিরার গালে। রাগান্বিত স্বরে বলল,
“মরার এত শখ? এতদিন মরতে পারলি না? আজকে আমাকে দেখে মরতে ইচ্ছে করল?”
তিরা এবার শব্দ করে কাঁদতে লাগলো। রেহানা ছেলেকে ধমকে বলল,
“যাদিদ তোর সাহস তো কম না!”
যাদিদ মায়ের দিকে ফিরে বলল,
“মা প্লিজ তুমি তোমার ঘরে যাও। আমাদেরকে কথা বলতে দাও।”
রেহানা কি করবেন বুঝতে পারছিলেন না। ছেলেকে এত রাগান্বিত অবস্থায় তিরার কাছে একা রেখে যেতে সাহস হচ্ছেনা। কিন্তু যাদিদ এমনভাবে বলছে এখানে থাকাও সম্ভব না। যাদিদ আবার বলল,
“মা প্লিজ।”
রেহানা ঘর থেকে বের হতেই যাদিদ দরজা লাগিয়ে দিল। রেহানার এত ভয় করছিল যে তিনি দরজার পাশেই দাঁড়িয়ে রইলেন। যাদিদ তিরার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“কী সমস্যা তোমার?”
তিরা কাঁদছে, কোনো কথা বলছে না। যাদিদ এবার আরো রেগে গিয়ে বলল,
“আমাকে দেখেই মরতে ইচ্ছে হলো! তা তোমার সমস্যা যদি আমি হই তাহলে পাগলের মত দিনরাত ফোন করতে কেন আমাকে? এত চিঠি লিখতে কেন? কেন বারবার আসতে বলতে?”
রাগে সারা শরীর কাঁপছে যাদিদের। তিরা চোখ মুছে উঠে গেল তার সামনে থেকে। দরজা খুলে ডাইনিং এ গিয়ে নাস্তা করতে বসলো। রেহানা তিরার কাছে গিয়ে বলল,
“মা আর কিছু দেব?”
“আপেলের জুস খাব মা।”
“এক্ষুণি বানিয়ে দিচ্ছি।”
যাদিদ দরজায় দাঁড়িয়ে এতক্ষণ সবকিছু দেখছিল। এবার ঘরে গিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দুহাতে মাথা ধরে বসে রইলো। তিরা নাস্তা খেয়ে রান্নাঘরে এসে ঢুকলো। এটা ওটা করার বাহানায় রান্নাঘরেই রইলো। রেহানা বললেন,
“ঘরে যাও তিরা। যাদিদ অপেক্ষা করছে।”
“আমি ওর সামনে যেতে পারব না মা।”
“কেন?”
“ও রেগে আছে। আর আমিও কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছি না।”
“ও এতদিন যেমন অপরাধ করেছে। আজ তুমিও একটা ভয়ঙ্কর অপরাধ করেছ। ওর রেগে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তুমি ঘরে যাও কিছু হবে না। ও এতদিন পর এসেছে তোমার দূরে থাকা ঠিক হবে না।”
তিরা ঘরে গেল। তিরাকে ঘরে ঢুকতে দেখে সাথে সাথেই যাদিদ কাপড় পালটে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
যাদিদ ড্রয়িং রুমে চুপচাপ বসে আছে। রেহানা এসে পাশে বসতেই যাদিদ বলল,
“বাবা কোথায় মা?”
“তুই আসার একটু আগেই অফিসে গেল।”
“এত তাড়াতাড়ি অফিস?”
“আজ একটু আগে বেরিয়েছে। হয়তো অফিসের আগে কোনো কাজ আছে।”
“বাবা কি সব জানে মা?”
“কোন সব?”
“তিরা ওর পাস্ট সম্পর্কে তোমাকে যা বলেছে সেসব।”
“না তোর বাবাকে এসব কেন বলতে যাব?”
“মা তুমি কি জানো তুমি খুব ভালো একটা মানুষ?”
রেহানা হেসে বললেন,
“তিরার কাছে যা।”
“নাহ আমার মনে হয় এখন ওর সামনে না যাওয়াই ভাল। মাথা অনেক গরম হয়ে আছে। শেষে রাগের মাথায় এমন কিছু বলে ফেলব বা করে ফেলব যেটা আরো খারাপ হবে।”
রেহানা ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“কিছুই হবে না। তুই ঘরে যা, একবার ওর পেটের দিকে তাকা। চিন্তা কর সেখানে কে আছে। ফুটফুটে একটা মেয়ের মুখ দেখতে পাবি। দেখবি মাথা ঠান্ডা হয়ে গেছে।”
যাদিদ চমকে গিয়ে বলল,
“মেয়ে হবে?”
রেহানা হেসে বলল,
“হ্যাঁ।”
যাদিদ চুপ। তবে ভেতরে ভেতরে একটা অস্থিরতা হচ্ছে। রেহানা বললেন,
“এতকিছু করেও তোকে আনতে পারলাম না। আর তিরার পেট দেখাতেই চলে এলি। নিজের সন্তান এমনই হয়।”
যাদিদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“শুধু এজন্য আসিনি।”
“তাহলে?”
“তিরার এই বিদ্ধস্ত অবস্থা দেখে মায়া লাগছিল। এতদিনের রাগ যে কোথায় গেল!”
রেহানা হাসলো। যাদিদ বলল,
“মা আমি কি চলে যাব?”
“এ আবার কেমন কথা? চলে চাবি কেন? কয়দিনের ছুটি?”
“এক মাসের ছুটি নিয়ে এসেছিলাম।”
“দারুণ! এক মাসের ছুটি! শুনলে তিরা পাগল হয়ে যাবে খুশিতে।”
“তিরা আমাকে দেখেই যা করল তা তো দেখলেই। আমি চোখের সামনে থাকলে যদি আবারও কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে?”
“তিরা কেন এমন কাজ করতে যাচ্ছিল আমি জানিনা। কিন্তু ৭ টা মাস বাচ্চা পেটে নিয়ে স্বামীর উপেক্ষা সহ্য করা অনেক কঠিন কাজ বাবা। একটু রাগ একটু অভিমান তো ওর হতেই পারে।”
“তাই বলে মরতে যাবে? আমি এসেছি, আমার সাথে ঝগড়া করতো। রাগ করে কথা না বলত। কিংবা অন্যকোনো ভাবে রাগ দেখাতো। মরতে কেন গেল? মরে গেলে ওর এই রাগ-অভিমানের কী দাম থাকতো?”
“ঘরে যা বাবা। তিরার সাথে কথা বল। সব মিটে যাবে দেখিস। তোকে অনেক বেশি ভালোবাসে মেয়েটা। আমি নিজের চোখে দেখেছি।”
চলবে…
#কনফিউশন
লেখকঃ #মৌরি_মরিয়ম
পর্ব ৪৫
তিরা বিছানায় বসে আছে। তার পাশেই বসে আছে যাদিদ। তিরার হাত দুটো দুহাতে ধরে সে নরম গলায় বলল,
“এমন কেন করলে তিরা?”
তিরা চুপ। যাদিদ তিরার আরো কাছে গিয়ে তাকে বুকে টেনে নিল। তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
“অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি?”
যাদিদের বুকে মাথা রাখতেই তার হার্টবিট শুনতে পেল তিরা। সাথে সাথেই অস্থির লাগা শুরু হলো। এবার সে কাঁদতে শুরু করল। যাদিদ বলল,
“আমাকে আর কখনো মিথ্যে বলোনা তিরা। একটা মিথ্যের জন্য ৭ টা মাস চলে গেল আমাদের জীবন থেকে। তাও এত গুরুত্বপূর্ণ ৭ টা মাস।”
তিরার কান্না আরো বেড়ে গেল। যাদিদ তিরার মুখটা দু’হাতে ধরে চোখে চোখ রেখে বলল,
“আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তিরা তাই মাফ করে দিয়েছি, নাহলে হয়তো আমাদের আর কখনো দেখা হতো না।”
তিরা অবাক হয়ে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো, যেখানে এতদিন দূরে থাকার জন্য এবং খোঁজখবর না নেয়ার জন্য যাদিদের মাফ চাওয়া উচিৎ ছিল সেখানে সেই কিনা মাফ করে দয়ার কথা বলছে! এ কার পাল্লায় পড়েছে সে!
যাদিদ গভীর রাতে ঘুম ভেঙে দেখল তিরা পাশে নেই। আতঙ্কিত হয়ে বাথরুমে যেয়ে দেখল সেখানে নেই। এরপর বারান্দায় যেতেই দেখতে পেল তিরা হাফ রেলিং দেয়া গ্রিলের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যাদিদ তিরার কাছে গিয়ে বলল,
“কী হয়েছে? এখানে কি করছো?”
তিরা বলল,
“কিছু না। ভাল্লাগছে না তাই এখানে এসে দাঁড়িয়েছি।”
“হয়েছে এতরাতে এখানে দাঁড়াতে হবে না। ঘরে এসো।”
তিরা চুপচাপ ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল। যাদিদ পাশে শুয়ে হাত বাড়িয়ে দিল কারণ তিরা যাদিদের হাতের উপর শুতে খুব পছন্দ করে। তিরা যাদিদের কাছে এসে তার হাতের উপর মাথা রাখলো। অন্যহাতে যাদিদ তিরার চুলে হাত বুলিয়ে বলল,
“তুমি ছেলে চেয়েছিলে নাকি মেয়ে?”
“ছেলে।”
যাদিদ হেসে বলল,
“আমি কিন্তু মেয়ে হওয়াতেই বেশি খুশি।”
তিরা একটু হাসার চেষ্টা করল। তিরা এখন আর হাসে না, তেমন কথাও বলে না। কিছু জিজ্ঞেস করলে যন্ত্রের মত জবাব দেয়। যাদিদ জিজ্ঞেস করল,
“রাগ করে আছো আমার উপর?”
“না।”
“তাহলে এমন করছ কেন?”
“কেমন?”
“এইযে মনে হচ্ছে আমি তোমার পর কেউ। আমার কাছে আসছ না, কথা বলছ না, হাসছো না।”
“আমার হাসি পায় না।”
যাদিদ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো তিরার দিকে। তারপর হঠাৎ তার ঠোঁটে চুমু খেল। তিরা ভীষণ লজ্জা পেল। যাদিদ হেসে বলল,
“তার মানে তুমি ঠিক আছো।”
তিরা বলল,
“মানে?”
“এইযে চুমু খেতেই লজ্জা পেলে। মানে অনুভূতি এখনো সচল।”
এবার তিরা হেসে ফেলল। যাদিদ বলল,
“দেখেছো হাসিও পাচ্ছে এখন।”
তিরা যাদিদের আরো কাছে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলো। তিরার উঁচু পেট যাদিদের গায়ে লাগতেই তার এক অদ্ভুত অনুভূতি হলো। তিরা স্বাভাবিক হয়েছে দেখে মনটাও হালকা হলো। যাদিদ তিরার পেটে হাত বুলিয়ে বলল,
“রাগ করে থেকো না তিরা। তাতে নিজেরাই বঞ্চিত হব। গত ৭ মাস কাটতে না চাইলেও, ছুটির এই এক মাস দেখতে দেখতেই কেটে যাবে।”
তিরা অভিমানী সুরে বলল,
“নিজে তো ঠিকই এতদিন রাগ করে থেকেছ।”
“রাগ করে থাকলেও তুমিহীন থাকতে পারিনি একটি দিনও।”
তিরা মুখে ভেংচি কাটলো। যাদিদ বলল,
“সত্যি বলছি। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে তোমাকেই ভেবেছি শুধু। তোমার কনফেস করা চিঠিটা পড়েই আমি তোমাকে মাফ করে দিয়েছিলাম। ওটা আমি ছিঁড়ে ফেলি যাতে আর কারো হাতে না পড়ে। কিন্তু বাকি চিঠিগুলো যত্ন করে রেখে দিয়েছি, বারবার পড়তাম। প্রতিদিন তোমার ছবি দেখতাম।”
তিরা অবাক হয়ে বলল,
“এত আগেই মাফ করে দিয়েছ? তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে না কেন?”
“তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য। এটা বোঝানোর জন্য যে আমার সাথে মিথ্যে বললে কী হতে পারে!”
“আমাকে কষ্ট দিতে গিয়ে নিজেকে এভাবে কষ্ট দিলে কীভাবে?”
“আমি তোমাকে যতটুকু কষ্ট দিতে পারব তারচেয়ে অনেক গুণ বেশি কষ্ট দিতে পারব নিজেকে। বরং নিজেকে যতটা কষ্ট দিতে পারব, তোমাকে ততটা পারব না।”
“ভাল্লাগছে, খুব ভাল্লাগছে।”
যাদিদ ভ্রু কুঁচকে বলল,
“হঠাৎ?”
“এতদিন ভাবতাম আমি তোমাকে যতটা ভালোবাসি তুমি আমাকে ততটা বাসোনা। এখন বুঝতে পারছি তুমিও আসলে আমাকে আমার মত করেই ভালোবাসো।”
যাদিদ হাসলো। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“রাগ যতটা প্রকাশ করতে পারি ভালোবাসা ততটা পারি না।”
“সামনে থাকলে পারো, দূরে থাকলে পারো না।”
“হতে পারে। তুমিই ভালো বলতে পারবে।”
তিরা বলল,
“একটা কথা বলি?”
“বলো?”
“শুধু কি একটা মিথ্যের জন্যই এত রাগ? নাকি অন্যকিছু?”
যাদিদ তিরার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
“ওর গালে চুমু খাচ্ছিলে সেই ছবিটা দেখে সম্ভাবত আমার মাথার তার একটা ছিঁড়ে গিয়েছিল।”
তিরা চোখ নামিয়ে নিল। যাদিদ বলল,
“আর কিছু চিঠি পড়ে আমি এই দুনিয়াতে ছিলাম না। আমার সাথে অন্তরঙ্গ হয়ে তোমার যে অনুভূতি, সেইম অনুভূতি অন্যদের বেলাতেও। আবার সেটা তুমি তাকে ঠিক সেভাবেই লিখেছিলে যেভাবে আমাকে লিখেছিলে। মানতেই পারছিলাম না।”
তিরা ভয়ে ভয়ে বলল,
“অন্তরঙ্গ বলছো কেন? এতকিছু হয়নি। জড়িয়ে ধরা আর চুমু খাওয়া পর্যন্তই। এসবের তো একই অনুভূতি হবে তাইনা? মানুষ দুজন হলেই কি অনুভূতিও দুইরকম হবে নাকি?”
যাদিদ খিটখিটে করে উঠলো,
“আমি কী করে বলব? আমি তো তুমি ছাড়া কাউকে ছুঁয়েও দেখিনি। এক্স গার্লফ্রেন্ডকে জড়িয়ে ধরা চুমু খাওয়া তো দূরে থাক কোনোদিন হাত ধরারও সুযোগ পাইনি।”
“সুযোগ পেলে তো তুমিও এসব করতে তাইনা?”
যাদিদ চোখ বড় বড় করে তাকালো। তিরা ভয় পেয়ে প্রসঙ্গ পালটাল,
“আমি তাহলে প্রাউড ফিল করতেই পারি, তোমার জীবনের সবকিছুতে আমিই প্রথম।”
যাদিদ বলল,
“প্রথম হতে পেরেছ বলে এত আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। শেষও যে তুমিই হবে তার কি গ্যারান্টি?”
তিরা হঠাৎ মুখ কালো করে ফেলল। যাদিদ সাথে সাথে হেসে তিরাকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর চোখে চোখ রেখে বলল,
“তুমিই প্রথম, তুমিই শেষ, তুমিই একমাত্র।”
“তুমিও কিন্তু কিছুক্ষেত্রে আমার প্রথম এবং শেষ।”
“কোনক্ষেত্রে?”
“প্রথম ভালোবাসা এবং শেষ ক্রাশ।”
যাদিদ হেসে বলল,
“তোমার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বিয়ে করেছিলাম। তখনো জানতাম না কখনো এত ভালোবাসতে বাধ্য হব এই আমি।”
তিরার এবার চোখে পানি এসে গেল।
চলবে..