#কলা_পাতায়_বাঁধিব_ঘর,পর্ব_১১
#জিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
জানালার পর্দা সরিয়ে খাটের পাশে এসে দাঁড়ালো রাউফুন। চিন্তিত গলায় ডাকলো ঘুমন্ত পুষ্পকে। ইদানীং মেয়েটা বেশিরভাগ সময়ই ঘুমিয়ে কাটায়। ঘুমের কারণে প্রায়ই ভার্সিটি মিস দেয়। তার মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে। আগের মতো খাওয়াদাওয়া নেই, সারাক্ষণ ঘুমাতে পারলেই বাঁচে। গতবার পিরিয়ড মিস গিয়েছে। তাই রাউফুনের মন কিছু একটা আঁচ করলো। ভাবলো একবার ডাক্তার দেখিয়ে নিলে ভালো হবে। রাউফুনের ডাকে সাড়া দিলোনা পুষ্প। রাউফুন আরও কয়েকবার ডাকার পর পুষ্প অন্যপাশ ফিরে ঘুমায়। এবার রাউফুন কাঁথা সরিয়ে বলল,
-“দেখি ওঠো, বেশ বেলা হয়ে গিয়েছে। সকাল বেলা এতটা ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।”
পুষ্প বিরক্তি প্রকাশ করে সদ্য ঘুম থেকে জাগা ভাঙা ভাঙা গলায় বলল,
-“এমন করছেন কেনো? আমাকে ঘুমাতে দিন।”
রাউফুন ফোঁস করে শ্বাস ফেলে আরেকটু জোর দিয়ে পুষ্পকে উঠিয়ে বসালো। পুষ্প রেগে গেলো।
-“বিরক্ত করছেন কেনো? আপনি হাসপাতালে যাচ্ছেন যান। আমাকে কেনো ডাকছেন?”
রাউফুন পাত্তা দিলোনা পুষ্পর কথায়। জোর গলায় বলল,
-“যাও এক্ষুণি ফ্রেশ হয়ে আসো।”
পুষ্প দপদপ পা ফেলে মাথার রাগ ফ্লোরে ঝাড়লো। শব্দ করে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে কিছুক্ষণ দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে নিলো। বাইরে থেকে রাউফুনের ডাকে চমক কাটলো। ঘুম পালিয়ে গেলো দুচোখ থেকে। রাউফুন বলল,
-“তাড়াতাড়ি আসছোনা কেনো? একসাথে নাস্তা করবো। কতদিন তুমি একা একা নাস্তা করছো খেয়াল আছে? এই তুমি কি ওয়াশরুমে ঘুমাচ্ছো?”
পুষ্প উত্তর না দিয়ে চটপট ফ্রেশ হয়ে বের হলো। মুখ ভার করে তোয়ালেতে মুখ মুছে নিলো। রাউফুন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলের যত্নে হাত চালাতে চালাতেই বলল,
-“মনে হচ্ছে নিজের আরেকটু যত্ন নেওয়া উচিত।”
পুষ্প আয়নার ভেতর দিয়েই দৃষ্টি ফেলে আড় চোখের চাহনি নিক্ষেপ করলো রাউফুনের উপর। সেই দৃষ্টিকে উদ্দেশ্য করেই রাউফুন বলল,
-“নাহ্! আজকাল বউয়ের চোখ পড়ছেনা আমার উপর। সে সারাক্ষণ ঘুমিয়ে কাদা। ভাবলাম আমার রূপ বুঝি কমে গেলো। আদর কদর কিছুই পাচ্ছিনা।”
পুষ্পর ভাবান্তর হলোনা। তোয়ালে রেখে এলোমেলো চুলে বেরিয়ে গেলো। তার রাগ এখনো কমেনি। কেনো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে তুললো। কিছুক্ষণ পর আপনাআপনি রাগ পানি হয়ে যাবে। ইদানীং কেন এমন হচ্ছে সে নিজেও বুঝে পায়না।
নাস্তা করতে বসেও তেমন একটা খেলোনা পুষ্প। উঠে চলে গেলো রান্নাঘরে। একবাটি চানাচুর নিয়ে ঘরে ফিরলো।
রাউফুন ঘরে ঢুকেই হতাশ হলো। প্রতিদিনের মতো আজও বিছানায় হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে শুয়ে ফোন ঘাটছে। পাশে চানাচুরের বাটি রাখা। মাঝেমধ্যে দু’একটা চানাচুর পেটে চালান করছে। রাউফুন পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো,
-“নাস্তা করলেনা ঠিকমতো। এগুলো এখন কি খাচ্ছো? তুমি দেখছি দিন দিন স্বাস্থ্যের প্রতি অমনোযোগী হয়ে যাচ্ছো।”
পুষ্প স্বাভাবিকভাবে উত্তর দিলো,
-“আমার নাস্তা খেতে ভালোলাগে না।”
রাউফুনের কন্ঠ কোমল হলো। স্নিগ্ধ, নির্মল গলায় শুধালো,
-“আচ্ছা, ভার্সিটি যাবেনা? তুমি কিন্তু কারণ ছাড়া এখন ক্লাস মিস দিচ্ছো।”
এবার পুষ্প চোখমুখ কুঁচকে বলল,
-“ভালোলাগেনা ভার্সিটি যেতে।”
রাউফুন আদুরে হলো। কোমলতায় সিক্ত করলো পুষ্পর কপোল জোড়া। উষ্ণ চুম্বনে কন্ঠস্বর আরেকটু খাটো করে নিলো।
-“এভাবে সবকিছুতে হেলাফেলা করা ঠিকনা। পরে এসব নিয়ে প্রচুর সাফার করতে হয়। তখন আফসোস করবে।”
পুষ্পু মাথাটি এলিয়ে দিলো রাউফুনের কোলে। একপাশে ফোন ছুঁড়ে রেখে দুহাতে কোমর জড়িয়ে ধরে পেটে মুখ গুঁজে বলল,
-“আমার ইদানীং কিছুই ভালোলাগেনা। শুধু ঘুমাতে ইচ্ছে করে, প্রচুর ঘুম পায়।”
চুলের ভাঁজে ভাঁজে আঙ্গুল চালিয়ে আদর মেশানো গলায় রাউফুন বলল,
-“কেনো? আদর কি কম পড়ছে? আমি বোধহয় শুনেছি আদর কম পড়লে ঘুম পায় বেশি।”
পুষ্প নিঃশব্দে হেসে রাউফুনের পেটে নাক ঘষলো। হাসিতে শব্দ না হলেও টের পেলো রাউফুন। পুষ্পকে সরিয়ে দিয়ে বলল,
-“উঠে বসো।”
পুষ্প উঠতে না চাইলেও অগত্যা উঠলো। দুহাতে পুষ্পর নরম চিবুক ধরে চিকন অধর জোড়ায় স্পর্শ দিয়ে বলল,
-“চলো, হাসপাতাল থেকে ঘুরে আসি। রাতে আমরা ঘুরতে বের হবো।”
পুষ্প সরে বসলো।
-“নাহ্! ভালোলাগছেনা হাসপাতালে যেতে। আপনি যান।”
রাউফুনের জোর করাতেও কিছু হলোনা। হাসপাতালের দেরি হয়ে যাচ্ছে। রাউফুন ভাবলো রাতে ঘুরতে নিয়ে গেলে তখন রাজি করানো যাবে। পুষ্পর কপালে চুমু দিয়ে ঘর থেকে বের হলো। মাকে জড়িয়ে বলল,
-“আসছি মা।”
রোকসানা আল্লাহর হাওয়ালা করে বললেন,
-“সাবধানে যাস।”
★★★
পুষ্প নিচে নামলো রাউফুন যাওয়ার ঘন্টাখানেক পর। রান্নাঘরে উঁকি দিতেই দেখলো রোকসানা রান্না করছে, আর সাহায্যকারী মেয়েটি এটা-ওটা এগিয়ে দিচ্ছে। পু্ষ্প রোকসানার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। তিনি একবার তাকিয়ে বললেন,
-“শরীর ঠিক আছে তোর?”
পুষ্প অবাক হয়ে বলল,
-“আমার আবার কী হবে?”
রোকসানা বললেন,
-“তোর শরীর কিন্তু অন্য কথা বলছে? কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করিসনি তুই? পিরিয়ড মিস গিয়েছে?”
পুষ্প অবাক হলো রোকসানার কথায়। মাথা নেড়ে জানালো তার গতমাসে পিরিয়ড মিস গিয়েছে। রোকসানা হাসিহাসি মুখ করে বললেন,
-“রাউফকে বলে একবার ডাক্তার দিখিয়ে এসো।”
পুষ্প বোধহয় বুঝতে পারলো রোকসানার ইঙ্গিত। তাই আমতা আমতা করে বলল,
-“কিন্তু মা, আমারতো মাথা ঘোরানো, বমি এসব হচ্ছে না। খালি ঘুম পাচ্ছে, আর শরীর একটু দুর্বল লাগছে।”
রোকসানা বললেন,
-“সবার তো আর এক রকম সমস্যা দেখা দেয়না। তাছাড়া সব সন্তানের ক্ষেত্রে ও মায়েদের সবসময় একরকম সমস্যা হয়না। একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম৷ পুষ্প খানিক লজ্জা পেলো। কথা ঘুরাতেই বলল,
-“আমি তোমাকে হেল্প করি। কী করতে হবে বলো।”
রোকসানা বাধ সাধলেন। বললেন,
-“এখন আর সাহায্য লাগবেনা। মুন্নি সব করে দিচ্ছে, আমি শুধু রান্নাটাই করছি।”
পুষ্প তবুও সাথে দাঁড়িয়ে রান্নায় হাত দিলো।
★★★
গোসল করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলে তোয়ালে চালাতে গিয়েই মনে পড়লো শাশুড়ীর কথা। আপনাআপনি নজর চলে গেলো শরীরের সাথে লেগে থাকা চিকন পেটে। জামার উপর দিয়েই পেটে হাত রাখলো পুষ্প। অদ্ভুত অনুভূতিতে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো। সত্যি সত্যি কি এই পেটে একটি বাবু আছে? নরম, তুলতুলে, গুলুমুলু বাবু! আচ্ছা যদি বাবু না থাকে? কথাটি ভেবেই মন খারাপ হয়ে গেলো পুষ্পর।
মুঠোফোনের তীব্র শব্দে ভাবনার সুতো কাটলো। পুষ্প ফোন তুলে রাউফুনের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
রাতে বেশ হাসিখুশি ভাবেই রাউফুনের সাথে বের হলো পুষ্প। নির্জন রাস্তায় স্টিয়ারিং এ হাত রেখে ধীর গতিতে ড্রাইভ করতে করতেই রাউফুন বলল,
-“আমি তোমার কথা শুনছিনা। কাল একবার ডাক্তার দেখিয়ে আসবে আমার সাথে গিয়ে।”
পুষ্প মৃদু হেসে বলল,
-“ডাক্তার তো আমার পাশেই আছে। পুরো রাত ও ডাক্তার আমার পাশে থাকে।”
রাউফুন কপট রাগ দেখিয়ে চোখ রাঙালো। পুষ্প হেসে ফেললো। বলল,
-“আচ্ছা ঠিক আছে। কাল আপনার সাথে যাবো।”
রাউফুন স্বস্তির শ্বাস ফেললো।
জনমানবহীন একটা জায়গায় গাড়ি থামালো। পুষ্পকে নিজের দিকে ফিরিয়ে দুহাতে আলতো করে চিবুক চেপে ধরলো। ভাসা ভাসা চোখজোড়ায় গভীর দৃষ্টি ফেলে বলল,
-“নিজের খেয়াল রাখা শিখতে হবে। সাথে তোমাকে মনে রাখতে হবে তোমার সাথে কতগুলো মানুষ জড়িত। এখন তুমি যদি নিজের প্রতি যত্ন নেওয়া না শেখো তাহলে অসুস্থ হয়ে পড়বে। তখন তো আমি আরেকটা বিয়ে করে ফেলবো। সে সময়টা তোমার ভালোলাগবে?”
রাউফুনের হাত সরিয়ে দিলো পুষ্প। রাউফুন ভাবলো বিয়ের কথা বলায় রাগ করে তার সাথে কথা বলবেনা। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে পুষ্প রাউফুনের দিকে আরেকটু এগিয়ে এসে দু’হাতে রাউফুনের গালে হাত রাখলো। পরপর সময় নিয়ে গালে, কপালে, নাকে, চোখে, ঠোঁটে অধরের মিষ্টি ছোঁয়া দিয়ে বলল,
-“আপনাকে আমি দ্বিতীয়বার বিয়ে করার সুযোগটাই দেবোনা। এত ভালোবাসবো যে, আমার ভালোবাসা ছেড়ে অন্যকারো ভালোবাসা পাওয়ার ইচ্ছেই জাগবেনা।”
রাউফুনের চোখজোড়ায় হাসির ঝলক। পুষ্পকে টে’নে নিজের কোলে বসিয়ে নিলো। নাকের ডগায় চুমু দিয়ে বলল,
-“আমার তো একটু একটু ভালোবাসায় হয়না। অনেকখানি ভালোবাসা লাগে।”
পুষ্প মিটিমিটি হেসে অধরের গাঢ় ছোঁয়া দিলো রাউফুনের অধরে। পুষ্পকে তার সিটে বসিয়ে রাউফুন পুনরায় ড্রাইভে মন দিলো। দুজনের মেজাজই বেশ ফুরফুরে। অনেক রাত করে তারা বাড়ি ফিরলো। ফ্রেশ হয়ে ক্লান্ত শরীর বিছানায় এলিয়ে দিলো। সকাল হলেই আবার ছুটতে হবে ব্যস্ত শহরের ব্যস্তময় জীবনে। নিজের শরীরের তুলনায় ছোট শরীরটাকে বুকে চেপে চোখ বুঁজলো রাউফুন।
★★★
চোখ সয়ে আসা অন্ধকার বিলীন হয়ে ধরনীর বুকে এক চিলতে আলোর দেখা মিললো। সূর্যের কিরণ জালানা ভেদ করে চোখে পড়তেই উঠে পড়লো রাউফুন। পাশে পুষ্প নেই। আজ এত তাড়াতাড়ি পুষ্প উঠে গিয়েছে দেখে অবাক হলো রাউফুন। ফ্রেশ হয়ে ঘরে ফেরার আগে বারান্দায় উঁকি দিলো। পুষ্পকে দেখা যাচ্ছে। মুখ ভার করে দূরের কিছু লক্ষ্য করছে। রাউফুন দূরে দৃষ্টি রেখে কিছুই দেখতে পেলোনা। তাই মুখের পানি ঝেড়ে পুষ্পর দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলল,
-“কী দেখছেন মিসেস? আপনার হাসবেন্ড তো এখানে। তাকে দেখুন।”
পুষ্প মলিন চেহারায় তাকালেও কিছুই বললনা। রাউফুন সেটা লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলো। পুষ্পর কাঁধে হাত রেখে বলল,
-“কী হয়েছে? আজ আবার মন খারাপ কেনো?”
পুষ্প দুহাতে রাউফুনের পিঠ জড়িয়ে বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে মন মরা হয়ে বলল,
-“পিরিয়ড। আমি ভেবেছিলাম…..
পুষ্পর অসম্পূর্ণ বাক্য সম্পূর্ণ করতে না দিয়ে রাউফুন শান্তনার সুরে বলল,
-“এত মন খারাপ করার কী আছে? মাঝেমধ্যে অনেকেরই এমন সমস্যা হয়। কারো দু’মাস-তিনমাস পিরিয়ড মিস হয়ে আবার সব ঠিক হয়ে যায়।
আল্লাহ যখন চাইবেন, তখন আমাদের ঘরেও বাবু আসবে।”
পুষ্পর মন খারাপ ভাব কিছুটা কাটলো। রাউফুন বলল,
-“ঘরে এসো। আমরা একসাথে নাস্তা করবো।”
পুষ্প রাউফুনের সাথেই নিচে গেলো। নাস্তা করে যথারীতি রাউফুন হসপিটালে চলে গেলো। রাউফুনের বাবা তার কাজে বের হলেন, রিশা ক্লাসের উদ্দেশ্যে গেলো। বাড়িতে বউ-শাশুড়ী দুজন রইলো। সাথে মুন্নি মেয়েটাও আছে। রোকসানা বললেন,
-“তোকে না বললাম আজ রাউফের সাথে হাসপাতাল যেতে?”
পুষ্প মুখ ভার করে বলল,
-“ওসব কিছুনা মা। আজ সকালেই পিরিয়ড শুরু হয়েছে।”
রোকসানা বললেন,
-“তাহলে আমার ভাবনাটাই ভুল। আচ্ছা মন খারাপ করে থাকিসনা।”
★★★
স্বাভাবিক এর তুলনায় অধিক রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তলপেটে অস্বাভাবিক যন্ত্রণা করছে। পুষ্প রোকসানাকে শুধু পেটে ব্যথার কথা জানালো। তিনি স্বাভাবিক পিরিয়ডের ব্যথা ধরে নিয়ে ব্যথা নিরাময়ের একটা ট্যাবলেট ধরিয়ে দিলেন। কিন্তু ব্যথা কমলোনা। পুরোদিন এভাবেই কাটলো। কিছুসময়ের জন্য ব্যথা কমে আসায় চোখের পাতা এক করলো পুষ্প। রাউফুন বাড়ি ফিরে আজ পুষ্পকে ঘুমে পেলো। খাবার খাওয়ার সময় রোকসানাকে একবার জিজ্ঞেস করলো,
-“সবাই খেয়েছে কি-না?”
তিনি বললেন,
-“পুষ্প খায়নি। পেটে ব্যথা হচ্ছে।”
রাউফুন কোনোরকমে খেয়ে পুষ্পকে ডাকলো। চোখমুখ কেমন সাদা হয়ে আছে। একদিনে চোখদুটো কেমন গভীরে তলিয়ে গিয়েছে। পুষ্প একবার তাকিয়ে আবার চোখ বুঁজে নিলো। রাউফুন চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
-“না খেয়ে ঘুমিয়েছো কেনো? খাবেনা?”
পুষ্প মাথা নেড়ে জানালো খাবেনা। রাউফুন বেশ কয়েকবার খাওয়ার কথা বললেও পুষ্প উঠলোনা। অসুস্থ বলে রাউফুন ও আর বেশি জোর দিলোনা।
রাতে রাউফুন জেগে গেলো। অনেকক্ষণ যাবত কানে মৃদু গোঙানির শব্দ হচ্ছিলো। উঠে দেখলো পুষ্প পেটের নিচে বালিশ দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে আছে। রাউফুন ডিম লাইট বন্ধ করে বেশি আলোর লাইট জ্বালিয়ে দিলো। অস্থির গলায় বলল,
-“কী হয়েছে? পেটে বেশি ব্যথা হচ্ছে?”
পুষ্প শুধু মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ জানালো। রাউফুন সময় দেখলো। এখন মধ্যরাত। এমুহূর্তে হাসপাতালে গেলেও গাইনোলজিস্ট পাওয়া যাবে কি-না সন্দেহ। তাদের ও একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে।
হট ব্যাগে গরম পানি নিয়ে পুষ্পর পেটে, কোমরে সেঁক দিলো। রাতটা কোনোভাবে পার হলো।
রাউফুন সকালে হাসপাতালে যাওয়ার সময় পুষ্পকে সাথে নিয়ে গেলো।
★★★
ছেলের ফোন পেয়ে রোকসানা হন্তদন্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটলেন।
#চলবে…….