কাজের মেয়ে যখন ঘরের বউ♥ পার্ট :০৭,০৮

0
2452

কাজের মেয়ে যখন ঘরের বউ♥
পার্ট :০৭,০৮
লেখক :নাদিম আহাম্মেদ
পার্ট :০৭

আমি তারিনের আগে বলে ফেললাম ,
—সত্যি আমি ইচ্ছে করে আপনাকে নিয়ে পরে যায়নি ।
—হ্যা এখন তো বলবেন আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি ।
—সত্যি বলছি ।
—চুপ করেন । আপনার মতলব কি আমি বুঝতে পেরেছি । একজন মেয়েকে এরকম করে ফাঁদে ফেলে এরকম একটা জঘন্য কাজ করতে পারলেন । আমি ভাবতে পারি নি ছিঃ ছিঃ ।
—সত্যি বলছি আমি ইচ…..
—চুপ একদম চুপ । হ্যা নিজেকে কি মনে করেন । আপনি চাইলে সব করতে পারেন । কিন্তু সব মেয়েকে না । আপনার যদি এতো ইচ্ছে করে আমাকে ভোগ করার তাহলে আমাকে বিয়ে করে ভোগ করেন । আপনার যদি লোভ থেকে থাকে আমার শরীরের প্রতি তাহলে আমাকে বিয়ে করে আপনার ইচ্ছে মতো যা খুশি তাই করতে পারেন ।
কিন্তু না সেটা করবেন না । কারণ এক ফল আর কয় দিন খাবেন । আপনাদের মতো ছেলেদের তো এক ফল খেতে ইচ্ছে করে না বারে বারে । আপনাদের তো চাই প্রতিদিন একটা করে নতুন করে ফল । কিন্তু বিয়ে করলে তো সেটা করতে পারবেন না । তাই কাউকে ফাঁদে ফেলে ঠিক মতো অভিনয় করে আর কিছু টাকা দিবে আর তারপর বলবে এই টাকাটা রাখো কেউ জেনো জানতে না পারে । এরকম একটা জঘন্য কাজ করে কিছু টাকা দিলে সব শেষ হয় । অসম্ভ এটা কখন হতে পারে না । কিছু টাকার বিনিময়ে এরকম জঘন্য কাজ করে আর সেটা কিছু টাকার বিনিময়ে দিয়ে দেয় ।
.
আমি কি বলবো কিছু করার নেই । আমি শুধু তারিনের কথাগুলি শুনে যাচ্ছি ।
আবার তারিন বললো ,
—আমি জানি আপনাদের মতো ছেলেরা আব্বা – আম্মার সামনে ও পরিবারের সামনে নিজেকে ভালো উপস্থাপনা করে যাতে ফ্যামিলি ও আব্বা – আম্মা কিছু বুঝতে না পারে । আপনাদের মতো ছেলেরা নিজের ভালো রুপটি সবার সামনে উপস্থাপন করে দেখায় আমি ভালো । কিন্তু তারা এটা জানে না যে এই ভালো মানুষটির কালো মুখুস পরা আছে । যারা প্রতিনিয়ত একটা মেয়েকে টাকার বিনিময়ে কিংবা কাজের কিংবা সাহায্যের নামে জিনিস দেখিয়ে এই নংরা , জঘন্য কাজ করে । আপনার যদি এতো শখ হয় তাহলে জান ওই পতিতার কাছে । গিয়ে সব মনের আশা মিটিয়ে আসেন । কি আর বলবো আপনাদের । জানি এটা বলে লাভ নেই ।
আপনাদের তো অভ্যস হয়ে গেছে কারও না কারও দিনে কিংবা রাতের অন্ধকারে কোনে মেয়ের বুকের ওরনা সরিয়ে নিতে । আপনারা একটু চিন্তা করেন যে আপনাদের তো মা-বোন আছে । যদি তাদের সাথে এই একি রুপ হতো তাহলে কি আপনি সমাজে মুখ দেখাতে পারতেন । না কখন পারতেন না ।
আর আপনি বলছেন আমি ইচ্ছে করে কাজটা করি নি । ঠিক আছে মেনে নিলাম ইচ্ছে করে কাজটা করেন নি । কিন্তু কেনো আমার পিঁছনে এলেন । এটা কি ইচ্ছে করে কাজটা করেন নি ।
.
আমি কিছু বলতে পারছিনা । শুধু ইচ্ছে করছে । কি করলে সে বিশ্বাস করবে আমি এটা ইচ্ছে করে করি নি ।
তাই কি প্রমাণ আছে যে তাকে দেখাবো যে আমি ইচ্ছে করে করি নি ।
তখন আবার তারিন বলতে শুরু করলো ,
—জানি এটার উত্তর নাই আপনার কাছে । কারণ আপনার কোনো কথা নাই বলার । আপনি হয়তো জানেন না যে একটা মেয়ের তার আসল সম্পদ কি । একটা মেয়ের আসল সম্পদ হলো তার ইজ্জত , তার রুপ ও দেহ । এই ইজ্জত আর এই দেহ শুধু তাকে দিবে সে হলো স্বামী । তার এই দেহ ভোগ তো সে করবে । যাকে বিবাহ করবে । তাকে সব বিলিয়ে দেবে ।
কিন্তু আপনাদের মতো ছেলেদের জন্য সেটা হয়ে উঠে না । কোনো ফাঁদে পরে নিজের অনিচ্ছা থাকা সত্যে নিজের শরীর বিলিয়ে দেয় আপনাদের ছেলেদের কাছে । তাদের কি ইচ্ছে করে না যে তার এই সম্পদ শুধু স্বামীকে দিয়ে দিতে । জেনো তার স্বামীকে জোর গলায় বলতে পারে এই সম্পদ টুকু শুধু স্বামীর জন্য রেখে । কিন্তু আপনাদের মতো ছেলেদের কারনে সেটা আর বলা হয়ে উঠে না । কোনো কারনে যদি কেউ খারাপ কথায় গালি দেয় তখন সে কি বলবে । তার তো কোনো জবাব নাই । কারণ সে জবাবটা যে অনেক আগে হারিয়ে ফেলে শুধু আপনাদের মতো ছেলেদের কারণে । শুধু এই টুকু জেনো রাখুন । একটা মেয়ের সব চেয়ে বড় সম্পদ হলো তার ইজ্জত আর দেহ । যতি সেটা হারিয়ে ফেলে সেকখন জোর গলায় বলতে পারবে না কখন আমি সতি নারী ।
.
কথাটা বলে তারিন রুম থেকে দৌড়ে চলে গেলো কাঁদতে কাঁদতে ।
আমি তাকে কয়েক বার ডাক দিলাম কিন্তু । তারিন থামলোনা । কিছু করার নেই সব দোষ তো আমার ।
খুব খারাপ লাগছে কথাগুলি শুনে । আসলে কি আমার কোনো মতলব ছিলো । বুঝতে পারছিনা কেনো এরকম হলো । আমি কি আসলে মামনি আর পরিবারের কাছে ভালো ব্যবহার করি নিজেকে ভালো বলে প্রমাণ করার জন্য ।
কেমন জানি হয়ে গেলাম । বুঝতে পারলাম না ।
কথায় আছে না ,
এমন কিছু করো না যে নিজেকে নিজের কাছে অপমানিত হয় ।
আমি তো ইচ্ছে করে নি । একটু দুষ্টুমি আর ভয় দেখানোর জন্য করেছি । কিন্তু এরকম একটা কাজ ঘটে যাবে আমি ভাবতে পারি নি । কোনো কিছু করতে হলে আগে নিজেকে ভাবতে হবে ।
আমার আর ঘরে থাকতে মন চায়ছে না ।
আমি ছাঁদের দিকে চলে গেলাম ।
কিছুখন পর আমি ছাঁদে চলে এলাম ।
মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে । আকাশটা অন্ধকার হয়ে আছে । একটা তারা ছাড়া কোনো তারা দেখা যাচ্ছে না ।
আমি কি সত্যি খারাপ । তারিন যে বললো আমি নাকি মামনি আর পরিবারের সামনে নিজেকে ভালো ব্যবহার উপস্থাপনা করি ।
ছাঁদে ভালো লাগছেনা । আর কারও ভালো লাগবেনা কারণ এরকম অপমান হওয়ার পরে কার বা মনটা ভালো থাকে ।
,
তখন ফোনটা বেঁজে উঠলো । ফোনটা বের করে দেখি সায়েম ফোন করেছে । তখন ফোনটা রিসিভ করে বললাম ,
—হ্যালো ।
—কি রে দোস্ত কেমন আছিস ।
—ভালো না ।
—কেনো কি হয়েছে ।
—একটা ঘটনা ঘটে গেছে ।
—কি হয়ে খুলে বলতো ।
—আজ বিদুৎ ছিলো না । তখন তারিন আমার রুমে এলো । ঘরটা অন্ধকার ছিলো তাই আমি একটু ভয় দেখানোর জন্য তারিনের পিছনে গিয়ে দাড়ালাম । তারপর তারিন কয়েকবার ডাক দিয়েছিলো আমি কথা বলি নি তখন চুপ করে থাকলাম । ও সামনে এগুতে লাগালো আমিও চুপি চুপি করে পিঁছু পিঁছু এগুতে লাগলাম । একটু এগুতে হঠাৎ তারিনের জুতার সাথে লেগে যায় । তারপর দুজনে পরে যায় খাটে । তারপর আমার হাতের সাথে ওরনাটা লেগে যায় । এটা নিয়ে অনেক কথা বলেছে । আমি নাকি মামনি আর পরিবারের কাছে ভালো ব্যবহার করি দেখানোর জন্য । আমি নাকি কোনো মতলব নিয়ে তার সাথে এরকম করেছি । আমি নাকি তার দেহকে পছন্দ করি । এরকম অনেক কথা বলেছি
—এরকম কাজ করা ভালো হয়নি । আর মন খারাপ করিস না । সব ঠিক হয়ে যাবে । তারিন হয়তো সব জানে না তাই ।
—হুম কিন্তু আমি নাকি তার দেহকে লোভ করেছি কথাটা শুনে খুব খারাপ লেগেছে ।
—আরে অাল্লাহ তো সব জানে ।
—অাল্লাহ সব জানে ।
—শোন মন খারাপ করিস না । রুমে গিয়ে শুয়ে থাক । সব ঠিক হয়ে যাবে ।
—বাই ।
.
ফোনটা কেটে দিলাম ।
তারপর কিছুখন দাড়িয়ে রইলাম ছাঁদে । মনে হচ্ছে কেউ ছাঁদে আছে আমি ছাড়া ।
চারদিকে একবার ঘুরে দেখলাম । অন্ধকারের জন্য কিছু দেখা যাচ্ছে না । তবুও আবছা আবছা আলোতে কিছু দেখা যাচ্ছে । কিন্তু ছাঁদের শেষ পান্তে কিছু দেখা যাচ্ছে না । একবার মনে হলো কাছে এগিয়ে যায় । কিন্তু কি মনে করে আর গেলাম না ।
কিছুখন থাকার পর আর ভালো লাগলো না । তাই আবার ছাঁদে চলে এলাম ।
সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসার সময় একটু কাঁন্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম ।
আমি দৌড়ে ছাঁদে চলে গেলাম । কিন্তু কিছু নেই । আবারও চারদিকে ঘুরে তাকিয়ে দেখলাম কিন্তু কোথাও কেউ নেই ।
আবার রুমের দিকে চলে এলাম ।
রুমে এসে শুয়ে পরলাম ।
সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি ।
মামনি একবার ডেকে গেছে খাবার খাওয়ার জন্য । কিন্তু আমি যাই নি ।
অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম ।
নিচে চলে এলাম । তখন ছোটমা বললো ,
—নাদিম খাবি না ।
.
আমি ছোটমার দিকে একবার তাকালাম । আমার দিকে তাকিয়ে আছে । তারিনের দিকে তাকালাম দেখি চোখটা বাঁকা করে তাকিয়ে আছে ।
—না ছোটমা আজ খেতে ইচ্ছে করছে না ।
—কেনো , শরীর খারাপ ।
—না । শরীর খারাপ না ।
—তাহলে ।
—এমনি । মানুষকে দেখাচ্ছি যে আমি ভালো ।
—কি বললি তুই কিছু বুঝতে পারলাম না ।
—ও কিন্তু অফিস তো আরও ৪০ মিনিট সময় আছে ।
—আজ একটু তাড়াতাড়ি বের হতে হবে ।
—তাহলে কিছু খেয়ে নিস ।
—চেষ্টা করবো ।
—মানে ।
—খেয়ে নিবো ।
—ঠিক আছে ।
—ছোটমা দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি যাচ্ছি ।
—আচ্ছা ঠিক আছে যা ।
.
আমি বাসা থেকে বের হলাম ।
আসার সময় শুনতে পেলাম । ছোটমা আর তারিনের কথা ।
—তারিন অর্ধেক খাবার রেখে উঠে যাচ্ছিস যে ।
—খেতে মন চাচ্ছে না আন্টি ।
—কেনো কিছু হয়েছে নাকি ।
—না এমনি ভালো লাগছেনা আন্টি ।
—ও খাবার খেলে ঠিক হয়ে যাবে ।
—না আন্টি খেতে পারছিনা ।
.
কথাটা বলে চলে যেতে লাগলো ।
আমিও চলে এলাম ।
গাড়িতে বসে আছি । পেটের ভেতর ইঁদুর দৌড়া দৌড়ী করছে ক্ষুধার কারণে । এত সকালে কোনো রেস্টুরেন্ট খোলা পাওয়া যাবেনা । কি করা যায় এখন বুঝতে পারছিনা । এদিকে তারিনের কথা আমার মাথাটা শেষ করে দিচ্ছে আর অন্য দিকে ক্ষুধার জন্য খারাপ লাগছে ।
কিছুখন দেরি করে রেস্টুরেন্টের দিকে রওনা দিলাম । যদি কোনো দোকান খোলা পাওয়া যায় ।
.
ভাগ্য ভালো একটা রেস্টুরেন্ট খোলা আছে ।
রেস্টুরেন্ট থেকে সকালের খাবার খেয়ে নিলাম ।
তারপর অফিসে চলে এলাম ।
অফিসে বসে আছি তখন কথাটা মনে পরে ভাবতে লাগলাম ।
কিভাবে প্রতিশোধ নেওয়া যায় । আমি নাকি তার শরীরের জন্য কাজটা বরেছি । মনে মনে প্রতিশোধ নেওয়ার প্লান করলাম ।
রাতে বাসায় এসে খাবার খেয়ে ছাঁদে চলে গোলাম
। ছাঁদে গিয়ে দেখি তারিন ফোনে কার সাথে কথা বলছে । আমার উপস্থিতি বুঝতে পেরে পিছনের দিকে তাকালো ।
দেখে যে আমি দাড়িয়ে আছি । তখন ফোনটা কেটে দিলো । আমি আর দেরি না করে ছাঁদে থেকে চলে এলাম রুমে ।
এভাবে চলতে থাকে কিছুদিন ।
কয়েক দিন পর আবার আগের মতো কথা বলা শুরু হলো ।
মনের ভেতর তবুও প্রতিশোধ নেওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাইয়ে যেতে লাগলাম ।
এভাবে চলতে থাকলো কিছুদিন ।
এদিকে তারিনের পরীক্ষা চলে আসছে । মানে এইচ,এস,এসসি ফাইনাল পরীক্ষা সামনে । এখন আর তেমন কথা হয় না প্রথমকার মতো । তবুও একটু একটু কথা হয় মাঝে মাঝে ।
তারিন এখন স্টাডি নিয়ে খুব বিজি । তাই আগের মত কথা হয় না ।
কেমন জানি খুব খারাপ লাগে । কিন্তু প্রতিশোধ নিতে হবে আমার । এরকম অপমান সহ্য করতে পারছিনা ।

চলবে

কাজের মেয়ে যখন ঘরের বউ♥
লেখক : নাদিম আহাম্মেদ
পার্ট:০৮

ঘুম থেকে উঠে বিছানার উপর একটা চিরকুট পেলাম । ভাবতে লাগলাম কে রেখে গেলো আমার রুমে । দরজার দিকে তাকালাম দেখি দরজা লক করা আছে । তাহলে এটা এখানে কে রেখে গেলো বুঝতে পারছিনা । ভূত বা পরী রেখে যায়নি এটা ।
শরীরের লোম সিওরে উঠলো ।
একটু সাহস এলো মনের ভেতর । যদি ভূত বা পরী হতো তাহলে তো আমাকে তাদের সাথে নিয়ে যেতে পারতো ।
এতো কিছু ভাববার চাইতে চিরকুটটি খুলে দেখলে তো হয় ।
তাড়াতাড়ি করে চিরকুটের কাছে গেলাম । চিরকুটটি হাতে নিলাম । খুলতে খুব ভয় করছে । কি লেখা আছে এই চিরকুটের ভেতর ।
কিছুখন চিরকুটটি হাতে নিয়ে বসে রইলাম । কি লেখা আছে এই চিরকুটের ভেতর । কে রেখে গেলো আর কেনো দিবে বুঝতে পারছিনা ।
চিরকুটটি খুলে অবাক হলাম । চিরকুটে লেখা ।
.
জানিনা আমি কোনো অপরাধ করেছি কিনা । কিন্তু তবুও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ।
আপনি হয়তো জানেন একটা মেয়ের কাছে তার বড় সম্পদ হলো তার ইজ্জত । আর এই সম্পদের উপর যদি কেউ ইচ্ছে বা অনিচ্ছা থাকা সত্যে যদি কেউ তার ইজ্জতের উপর ক্ষতি করে । তখন যে কোনো নারী সহ্য করবেনা তেমনি আমিও পারিনি । আমি জানিনা তখন কি কথা বলেছি আপনাকে । তখন আমি সহ্য করতে পারিনি তাই অনেক কিছু বলেছি । আমার মাথায় তখন কাজ করছিলো না । আর কোনো মেয়ে পারবেনা তখন নিজেকে কন্ট্রোল করতে । সেরকম আমিও পারিনি নিজেকে কন্ট্রোল করতে ।
বেশি কিছু বলতে চাই না ।
আমি আপনাদের বাসা থেকে চলে যাচ্ছি ।
আমি পরীক্ষাটি হোস্টেলে থেকে পরীক্ষা দিবো ।
ভালো থাকবেন ।
পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন ।
.
চিরকুটটি পড়ে তাড়াতাড়ি করে উঠে ফ্রেশ হলাম । তারপর তাড়াতাড়ি করে ড্রয়িং রুমে চলে এলাম ।
মামনির মুখটা কেমন জানি শুকনো লাগছে । কি হয়েছে বুঝতে পারলাম না ।
—কিছু হয়েছে মামনি ।
.
আমার কথাটা শুনে মামনি চুমকে গেলো ।
এরকম করে চুমকে গেলো কেনো কিছু একটা হয়েছে ।
—কি হলো মামনি কথা বলছেন না কেনো কি হয়েছে ।
—তারিন চলে যাচ্ছে ।
.
মামনির কথাটা শুনে বোঝা যাচ্ছে নতুন বউ বাপের বাড়ি যাচ্ছে রাগ করে কখনো আর আসবে না ।
—কোথায় ।
—তুই জানিস না ।
.
মামনির কথাটা শুনে মনে হচ্ছে । তারিনের সাথে আমি সংসার করছি ।
—কেমনে জানবো আমি কি তার সাথে সংসার করছি যে জানবো ।
—কিছু বললি ।
মামনি আপনি কি তারিনের জন্য অন্য জগতে চলেগেছেন যে কিছু শুনতে পাচ্ছেন না যে ।
—কিছু না মামনি ।
—ও । জানিস কত করে বলছি কিছু হয়েছে কি না কিন্তু বলে কিছু হয়নি । সেদিন বলেছিলো তার সাথে বলে খুব খারাপ আচারণ করেছে কেউ তাই সে থাকবেনা ।
.
ওমা বলে কি সে কথা বলেছে । মাথাটা ঘুরাচ্ছে কিন্তু নামটা তো বলেনি । যাক বাবা বাঁচা গেলো । নাহলে ছোটমা আমাকে যে কি করতো সেটা অাল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা । কারণ ছোটমা মেয়েদের অসম্মান করা একদম পছন্দ করে না । তাও আবার এ বাড়ির সবার মন জয় করেছে । এখনতো বুঝতে পারছেন কি হবে ।
—কেনো কি হয়েছে বলেছে কি ।
—না কিছু বলেনি শুধু বলেছিলো তার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে । যেটা তারিন বলতে পারছে না । তাহলে দেখ কি হয়েছে তার সাথে যেটা বলতে পারছেনা ।
.
ও কি হয়েছে এমন যে বলতে পারছেনা । তেমন তো কিছু হয় নি । শৃধু ওরনাটা হাতের সাথে লেগে যায় সো তাছাড়া তেমন কিছু ঘটেনি তারিনের সাথে । আর আমি তো ইচ্ছে করে কিছু করিনি তারিনকে ।
—কি হয়ছে তোর কি ভাবছিস ।
.
মামনির কথাটা শুনে চুমকে উঠলাম ।
—আমি কিছু করি নি ।
—কি হয়ছে তোর এমন কথা বললি কেনো এখন ।
—কিছুনা একটা কথা মনে পরে গেছে তাই আর কি ।
—কিছু কি লুকালি ।
.
মামনি তো বেশ পুলিশের মতো কথা বলছে । পেট থেকে সব কথা বের করার জন্য পয়েন্ট নিয়ে কথা বলছে । মামনি পারবেন না তেমন কিছু বের করা ।
—কি হলো কি ভাবছিস ।
—কিছুনা মামনি । তারিন কোথায় ?
—তারিনের রুমে ব্যাগ গুছিয়ে বের হবে ।
—মানে আজ বাড়িতে ফিরে যাবে ।
—হুমম কত করে বললাম কি হয়েছে বল আমি সেটা দেখছি কিন্তু না সেটা বলছে না ।
—তারিন যাবেনা ।
—মানে কি বলছিস তুই ।
—মানে বলছি এই বাড়িতে থাকবে । তারিন কোথাও যাবেনা ।
—সত্যি বলছিস । জানিস খুব ভালো মেয়ে । রান্নার তো কোনো কথায় নাই ।
.
হুমম এই একটা জিনিস তো খুব ভালো লাগে তাছাড়া কিছুই ভালো লাগে না ।
—হুমমম ।
—১ বছর বেশি হয়ে গেলো মেয়েটা থেকে গেলো । কি হলো বুঝতে পারলাম না । হঠাৎ চলে যাবে কেনো ।
—যাবে না ।
—কি বলছিস তুই ।
—বলছি তারিন যাবে না বাসা থেকে ।
—পাগল নাকি তুই ।
—পাগল কেনো হবো । যা বলছি ঠিক বলছি ।
—কেমনে ও তো কারও কথা শুনছে না ।
—তারিনের রুমে চলেন ।
—শুনবে না তোর কথা ।
—আগে চলেন ।
.
মামনি আর আমি তারিনের রুমে চলে এলাম ।
দেখি চোখের কোণে আর ব্যাগ ঘোচাচ্ছে । আমাদের দেখে তারিন চোখের পানি মুছে ফেললো ।
আমাদের দিকে তাকিয়ে আবার ব্যাগ ঘোছাতে লাগলো ।
—কোথায় যাচ্ছেন ।
—নিশ্চুপ ।
—কি হলো বলেন ।
—নিশ্চুপ ।
—বেশি কথা বলবোনা আমি ।
.
মামনি তখন বললো ,
—ওকে যেতে দে নাদিমম ।
—বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি ।
—কেনো ।
—সেটা সে জানে ।
—আপনি যাবেন না ।
—আমি যাবো ।
—পরীক্ষার আগে যেতে পারবেন না ।
—আমি হোস্টেলে থেকে পরীক্ষা দিবো ।
—বেশি কথা না বলে যেটা বলছি সেটা হবে ।
—আমি যাবো ।
—বেশি কথা শুনতে চাই না । আর আমি জেনো ফিরে এসে আপনাকে দেখি ।
.
আমি কথাটা শুনে রুম থেকে বের হলাম ।
আমি রুমের পাশে দাড়িয়ে রইলাম । দেখি তারিন কি করে ।
মামনি কয়েকবার ডাক দিয়েছিলো । আমি দাড়ায় নি কারণ এরকম ভাবে না চলে এলে তারিন চলে যাবে ।
—আন্টি আমার এই ইট পাথরের দালান কোঠাতে ভালো লাগছেনা ।
—কি হয়েছে সেটা বল দেখবি হালকা হতে পারবি ।
—কিছু হয়নি আন্টি ।
—তাহলে কি করবি এখন যাবি কি যাবি না ।
—বুঝতে পারছিনা আন্টি । আমার একদম ভালো লাগছেনা ।
—তুই তো সব জানিস নাদিম কেমন যেটা বলে সেটা করে ।
—কি করবো এখন ।
—তোর ইচ্ছা ।
—আন্টি আমাকে একটু একলা থাকতে দিন ।
—ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি । তুই একা একা ভাব কি করবি ।
.
মামনি রুম থেকে বের হয়ে গেলো ।
আমি কান পেতে শুনতে লাগলাম কি করে ।
তারিন কাঁন্না করতেছে আর বলছে ।
আমি কি করবো আল্লাহ । আমার কারনে এবাড়ির ছেলে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করছে না । আমি কি করবো বলো আল্লাহ । আমি তো ইচ্ছে করে সে গুলি কিছু করিনি ।
তুমি বলো কোনো মেয়ে কি পারবে । তার ইজ্জতের উপর ক্ষতি করলে সে কি চুপ করে সহ্য করবে বলো । আমি তো সেরকম করেছি ।
আমি কি অপরাধ করেছি তুমি বলে দাও । ব্লা ব্লা …..
আমি বুঝতে পারলাম কাজ হয়েগেছে । আর তারিন বাসায় যাবেনা ।
এখন গিয়ে একটু ঘুম দেওয়া যাক ।
রুমে এসে শুয়ে পরলাম । ফোনটা বের করে ম্যাসেজ দিলাম তারিনকে ।
বিকালে ছাঁদে আসবেন ।
ম্যাসেজ দিয়ে কিছুখন অপেক্ষা করলাম রিপ্লে আসে কিনা ।
কিন্তু কোনো রিপ্লে নাই । আমি আর দেরি না করে ঘুমিয়ে পরলাম । আজ শুক্রবার তাই একটু ঘুমিয়ে পরলাম জুম্মার নামাজ পড়তে হবে ।
.
ঘুম থেকে উঠে গোসল করে ।
মসজিদে দিকে রওনা দিলাম ।
নামাজ পড়ে এসে খাওয়া দাওয়া করলাম ।
দুপুরে একটু ল্যাপটপে ভাইসিটি গেম খেলতে লাগলাম ।
গেম খেলতে খেলতে কয়েক ঘন্টা কেটে গেলো ।
.
ফোনে ম্যাসেজ আসলো ।
আপনি কই আমি তো ছাঁদে আছি ।
আমি তাড়াতাড়ি করে উঠে ফ্রেশ হয়ে ছাঁদে চলে এলাম

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here