কাননে ফুটিল ফুল — ২

0
18

কাননে ফুটিল ফুল — ২ (১৬৩০+ শব্দ)

ফাহিমা জ্যোতিদের ভাড়াটিয়া। আগে প্রতিবেশি হিসেবে সখ্যতা থাকলেও একই কলেজে অ্যাডমিশন নেওয়ার পর থেকে দুজনের বন্ধুত্বটা গভীর হয়েছে অনেকটাই।

জ্যোতি চাচিকে প্রশ্ন করল,
“নৈশী আপু কই চাচি? তার রুমে?”

“আরে না, ও তো রান্নাঘরে। আজকাল রান্নাবান্না তো সেই সামলাচ্ছে। তোরা খেয়ে যাস কিন্তু আজ দুপুরে৷ এখানে বস এখন, আমি নৈশীকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

নৈশী রান্নাঘরের কাজ গুছিয়ে বসার ঘরে উঁকি দিল। সবার প্রথমেই ওর নজরে এলো আন্দালিব। হাত নেড়ে নেড়ে ফাহিমার উদ্দেশ্যে কী একটা বলছে আর ফাহিমা হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। জ্যোতি অবশ্য খুব একটা খেয়াল করছে না আন্দালিবের কথা। তার দৃষ্টি রুমের এককোনে মোবাইলে ব্যস্ত থাকা সাব্বিরের দিকে। নৈশী যখন রুমে ঢুকল তখন আন্দালিব সবে আরেকটা জোকস বলা শুরু করেছে,
“এই জোকসটা কিছুটা অ্যাডাল্ট৷ ক্লাসরুমে শিক্ষক প্রথমদিন ক্লাস নিচ্ছেন। প্রথমেই সবার সাথে তিনি পরিচিত হতে চাইলেন। একে একে ছেলেদের দাঁড় করিয়ে সবার নাম, রোল এবং হবি মানে শখ জানতে চাওয়া হলো। নাম আর রোল সবাই আলাদা বললেও হবি একই বলল সবাই। দিঘিতে শাপলা দেখা। স্যার তো অবাক। সবার হবি এক হয় কীভাবে? এবার তিনি ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটিকে দাঁড়াতে বলে তার নাম এবং হবি জিজ্ঞাসা করল। মেয়েটি উত্তর দিল, তার নাম শাপলা এবং হবি দিঘিতে গোসল করা।”

জোকস শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফাহিমা হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ল যেন। কথার ছলে একটা হাত আন্দালিবের হাতের উপরে রেখে বলল, “আন্দালিব ভাই, আপনি পারেনও।”

আন্দালিব সন্তপর্ণে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে বসল। এরকম হুটহাট নারীস্পর্শ ওর কখনোই পছন্দ ছিল না। নিজেদের মধ্যে মশগুল থাকায় নৈশীকে তখনও খেয়াল করেনি ওরা কেউ। নৈশী এবার নিজেই ওর আগমনী বার্তা দিল,
“সবাই তো বেশ ভালোই এনজয় করছে।”

আন্দালিব চট করে তাকাল নৈশীর দিকে। তাকিয়ে আরেকবার ধাক্কা খেল। অনেকক্ষন রান্নাঘরে তাপে থেকে ফর্সা মুখে লালচে আভা ফুটে উঠেছে। কী যে মারাত্মক সুন্দর লাগছে সেই মুখ। আন্দালিব মনে মনে বলল, “তুই ফিনিসড আন্দালিব। যত দ্রুত সম্ভব এই স্বর্গের অপ্সরাকে নিজের করে নে৷ নইলে আজীবন পস্তাতে হবে।”

নৈশী বাংলাদেশে এসেছে আজ এগার দিনে চলছে। ওর প্রতি আন্দালিবের মুগ্ধ দৃষ্টি নৈশী আবিষ্কার করেছিল সেই প্রথম দিনই৷ কিন্তু আজ মনে হলো একটু বেশিই ওর দিকে তাকাচ্ছে আন্দালিব। এসব দেখেও না দেখার ভান করল ও। আর যাই হোক, এত দ্রুত স্রোতের টানে গা ভাসাবার মতো মেয়ে নৈশী নয়।

দুপুরে খেতে বসল সবাই একসাথেই। খাওয়ার টেবিলে বসে আফরোজা বেগম আগে ভিডিও কল দিলেন সারজিমকে। যদিও মুখ দেখা যাচ্ছিল না কিন্তু ওপাশের প্রত্যেকটা শব্দ স্পষ্ট শুনছিল নৈশী৷ ফোন রিসিভ করে প্রথমেই স্পষ্ট স্বরে সালাম দিল সারজিম,
“আসসালামু আলাইকুম আম্মা, কেমন আছো?”

“ওয়ালাইকুমুস সালাম। ভালো আছি বাবা, তুই কেমন আছিস?”
“আলহামদুলিল্লাহ আম্মা, ভালো আছি। তোমার শরীরের কী অবস্থা এখন? ঠিকভাবে খাওয়াদাওয়া করছ তো?”

“হ্যাঁ রে বাবা, করছি। তুই খেয়েছিস দুপুরে?”

“এখনও খাওয়া হয়নি আম্মা। মাত্র মিটিং শেষ করলাম। এখন রুমে গিয়ে গোসল সেরে নামাজ পড়ব। তারপরে খাব। তোমরা সবাই খেয়েছ?”

“না, মাত্রই খেতে বসলাম। মনে হলো খাওয়ার আগে একবার ফোন দিয়ে দেখি, তুই খেয়েছিস কিনা। আর কতদিন লাগবে তোর দেশে ফিরতে?”

সারজিম হেসে বলল, “আশা করছি আর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই কাজ হয়ে যাবে। চিন্তা কোরো না আম্মা, খুব জলদিই ফিরব ইনশাআল্লাহ।”

আফরোজা বেগম মোবাইল স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে বললেন, “আচ্ছা, চলে আসিস যত দ্রুত সম্ভব।”

সারজিম হাসল শব্দ করে, “আম্মা, আমি হাসলেই তুমি চোখ সরিয়ে নাও শুধু।”

“ভয় লাগে রে আব্বা। আমার বাবাটার হাসি এত সুন্দর মাশা-আল্লাহ। যদি সেই হাসিতে আমার নজর লেগে যায়।”

এবার সারজিমকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে পাশ থেকে কথা বলে উঠল আন্দালিব,
“এত সুদর্শন একটা ছেলে চোখের সামনে বসে থাকতেও আপনার ওই শ্যামলা ছেলের হাসি ভালো লাগে, খালাম্মা? না আজ একটা হেস্তনেস্ত হওয়া দরকার। আপনি আজ বলবেন, কে বেশি সুন্দর, আমি নাকি সারজিম?”

আফরোজা বেগম হেসে বললেন, “এই আরেকটা পাগল ছেলে। আচ্ছা যা, তুই বেশি সুন্দর।”

সারজিম এতক্ষন চুপচাপ শুনছিল সব। মায়ের কথা শেষ হওয়ার পর বলল,
“আম্মা, আন্দালিব ওখানে কেন? বদমাইশটা কি ওখানেই ঘাটি গেড়েছে? ওকে তো বলেছিলাম আমি না থাকলে মাঝেমধ্যে তোমার খোঁজ নিতে৷ তাই বলে খাবার খেতে বসে যাবে? বলি টাকা কি গাছে ধরে?”

আন্দালিব গলায় কৃত্রিম রাগ তুলে বলল,
“কী? এত বড় অপমান? তুই একবার দেশে আয় শালা, দেখে নেব তোকে আমি। আর আমি যত খুশি খাব এখানে। দেখি তুই কী করতে পারিস।”

দুপুরের খাবার খেতে খেতে হাসি ঠাট্টা হলো প্রচুর। বলা যায় আন্দালিব একাই কথায় মাতিয়ে রাখল সবাইকে। কিন্তু নৈশীর কানের কাছে অবিরত বাজতে থাকল একটি কন্ঠস্বর। কী যেন একটা আছে ওই স্বরে, যা ওর ভেতর পর্যন্ত আলোড়ন তুলল।

ইতালি থাকাকালীন বহুবার সাব্বির এবং আফরোজা বেগমের সাথে ভিডিও কলে কথা হলেও সারজিমের সাথে হয়নি কখনও। সারজিম নিজেই এড়িয়ে যেত বিষয়টা। সাব্বির মাঝে মাঝে ঘুরতে গেলে বা এমনিতে নানারকম ফ্যামিলি ফটো দিত নৈশীকে। সেখানে সারজিমকে দেখছে ও অনেকবার, কিন্তু সারজিমের কন্ঠস্বর শোনেনি কখনও। কথায় কথায় সাব্বিরের থেকে জেনেছিল, এমনিতে কাছের মানুষজন এবং গুটিকয়েক বন্ধুবান্ধবের সাথে হাসিখুশি থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সারজিম গম্ভীর প্রকৃতির। সব মিলিয়ে নৈশীর কল্পনাপ্রসূত মন ধারণা করে নিয়েছিল সারজিম খুবই গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ, যে কথা বললেও কন্ঠ থেকে রাগ ঝরে ঝরে পড়ে। অবচেতন মনে বোধহয় ওই কন্ঠস্বর শোনার একটা আকাঙ্ক্ষাও তৈরি হয়েছিল।

আজ নিজের সেই ধারণা ভুল প্রমানিত হয়ে গেল। শান্ত, সৌম্য, রাশভারি গলার স্বরটা কিছুটা গুরুগম্ভীর হলেও একদমই রাগি বলে মনে হলো না নৈশীর।

দুপুরের খাওয়ার পরপরই বিদায় নিল আন্দালিব। যাওয়ার আগে আরেকবার নৈশীর দিকে পূর্ণদৃষ্টিতে তাকাল। নৈশীও তখন তাকিয়েছিল ওর দিকে। সচরাচর এই পরিস্থিতিতে পড়লে মেয়েরা লজ্জিতভাবে চোখ সরিয়ে নেয়। কিন্তু নৈশী তাকিয়েই থাকল আন্দালিবের দিকে। মনের মধ্যে চিন্তার ঝড়৷ আন্দালিব মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। সেই চাহনীতে মুগ্ধতার সাথে আরও কিছু একটা আছে। কিন্তু সেটা কী? অনেকক্ষন ভেবেও নৈশী বুঝতে পারল না, গড়বড়টা ঠিক কোথায়। শেষে আন্দালিবই চোখ সরিয়ে নিল। নৈশীর মনের মধ্যে খচখচে অনুভূতিটা তবুও রয়েই গেল।

৩.
আজকের আকাশ ঝকঝকে পরিস্কার। যতদূর চোখ যায় শুধু স্বচ্ছ নীল রঙ। সেই নীলের মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘ, তুলো তুলো মেঘ। মনে হয় এক্ষুনি খপ করে এক টুকরো মেঘ মুখে পুরে নিলেই সেটা হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো মিলিয়ে যাবে। নৈশীর মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল বাসার বাইরে বের হয়ে।

নৈশী বের হয়েছে সাব্বিরকে নিয়ে। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার জন্য লম্বা একটা বইয়ের লিস্ট করে রেখেছিল নৈশী। সেই বইগুলো কেনার জন্যই মূলত বের হওয়া। বুকশপে ঢুকে সাব্বির জিজ্ঞাসা করল, “আপু, তোমার কতক্ষন লাগবে এখানে?”

“দেখেশুনে সব বই কিনতে ঘন্টাখানেক তো লাগবেই।”

“ওকে, তুমি তাহলে বই দেখতে থাকো। আমি একটু কাজ সেরে আসছি। আগেই কিন্তু টাকা দিয়ে দিও না। আমি এসে দামদর করব।”

“ওকে।”

সাব্বির চলে গেল। নৈশী আপনমনে ডুবে গেল বইয়ের জগতে।
“হ্যালো, নৈশী। কেমন আছো?”

পিছনে ফিরে আন্দালিবকে দেখে বেশ ভালোই অবাক হলো নৈশী।
“আপনি এখানে?”
“এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম, তোমাকে দেখলাম তখন। কী খবর, একা বের হয়েছ নাকি বাসা থেকে?”
“নাতো, সাব্বির আছে সাথে। চলে আসবে এক্ষুনি।”
আন্দালিব বরাবরই স্পষ্টভাষী। কোনো ভণিতায় না গিয়ে সরাসরি প্রস্তাব দিল ও,
“নৈশী, যদি খুব ব্যস্ততা না থাকে, তাহলে আজ তোমার দুপুরটা আমাকে দেবে?”

“কেন বলুন তো।”

“তেমন বিশেষ কোনো কারণ নেই। খুব ইচ্ছে হলো তোমার সাথে একদিন লাঞ্চ করতে।”

“দুইদিন আগে খালামনির বাসায় আমরা একসাথে একবার লাঞ্চ করেছিলাম।”

আন্দালিব হাসল, “আচ্ছা, সে নাহয় করেছিলাম, তাই বলে আজ আরেকবার যাওয়া যাবে না?”

“অবশ্যই যাবে। কিন্তু হুট করেই আপনার সাথে দেখা হলো। এরমধ্যেই আপনি আবার লাঞ্চ অফার করছেন। সব মিলিয়ে কেমন একটা খটকা লাগছে।”

“এত খটকা লাগার কিছু নেই সুন্দরী। আচ্ছা, সেদিন তো তোমাকে ব্রুশেটা খাওয়াতে পারলাম না। ধরে নাও আজ সেটা খাওয়ানোর জন্যই নিয়ে যাচ্ছি।”

“এত করে যখন বলছেন, যাবো। তবে আপনাকে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে। আমার কিছু বই নিতে হবে। তাছাড়া সাব্বির এসে পড়বে একটু পরে।”

“কিছুক্ষন কেন, তুমি চাইলে অনন্তকাল ওয়েট করতেও রাজি আছি।”

বইয়ে পাতায় চোখ রেখে এতক্ষন যাবত কথা বলছিল নৈশী। আন্দালিবের শেষ কথাটুকু শুনে ও চোখ তুলে তাকিয়ে হাসল, “আর ইয়্যু ট্রাইং ট্যু ফ্লার্ট?”

“নট অ্যাট অল। জাস্ট ট্রাইং টু ইমপ্রেস ইয়্যু।”

“ওয়েল, আমাকে ইমপ্রেস করা এতটা সহজ নয়।”
“জানি। মূল্যবান যেকোনো কিছু পেতে গেলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।”
“ওকে, তাহলে করতে থাকুন পরিশ্রম। দেখা যাক কী হয়। এনিওয়ে, আমার বই সিলেক্ট করা শেষ। সাব্বিরকে একটা কল দেই তাহলে।”

“কল দিতে হবে না, আমি এসে গেছি।” বুকশপের দরজায় দাঁড়িয়ে সাব্বির বলল। পরক্ষনে আন্দালিবকে দেখে নৈশীর মতো একই প্রশ্ন করল ও, “আরে, আন্দালিব ভাই, আপনি এদিকে হঠাৎ?”

সাব্বিরকেও প্রায় একইরকম উত্তর দিল আন্দালিব। নৈশী ওকে দেখে বলল, “সাব্বির, এসে গেছ তাহলে। আমার বইগুলো সিলেক্ট করা শেষ। কষ্ট করে একটু বাসায় নিয়ে যাবে এগুলো?”

“কেন? তুমি কোথায় যাবে?”

“একচুয়্যালি আন্দালিব ভাই আমাকে লাঞ্চ ইনভাইট করেছে আজ। তিনি আমাকে ব্রুশেটা খাওয়াতে চান।”
“ওহ, ওকে। আমি নিয়ে যাচ্ছি।”

খুঁটিনাটি বিষয় যেসব মানুষ তেমন খেয়াল করে না, সেসব কেন জানি নৈশীর চোখে পড়ে যায় খুব সহজে। যেমন এইমাত্র কিছুটা গম্ভীর হয়ে যাওয়া সাব্বিরের মুখটা দেখেই নৈশী বুঝে গেল, আন্দালিবের সাথে ওর লাঞ্চে যাওয়ার কথা শুনে সাব্বির তেমন খুশি নয়।

নৈশী বইয়ের দাম মিটিয়ে সেগুলো সাব্বিরের কাছে দিয়ে আন্দালিবের সাথে বের হলো। প্রায় দুই ঘন্টা ড্রাইভ করার পর অবশেষে রেস্টুরেন্টে পৌঁছাল ওরা। আন্দালিব সত্যিই ব্রুশেটা অর্ডার করল নৈশীর জন্য।

“তোমাকে একটা প্রশ্ন করি?”
“জি, করুন।”
“তখন বুকশপে বললে তোমার খটকা লাগছে। হঠাৎ দেখা হওয়ার পর পরিচিত একজন আরেকজনকে লাঞ্চ অফার করতেই পারে। এতে খটকা কেন লাগল তোমার।”

“কারও সাথে পরিচয় কিংবা কথোপকথন যদি আমার মনে একাধিক প্রশ্ন তৈরি করে, তখনই আসলে আমার খটকাটা লাগে।”

“একটু বুঝিয়ে বললে ভালো হতো।”

“ওকে, বুঝিয়ে বলছি। আপনার সাথে আজ যখন হুট করে দেখা হলো, তখনই প্রথম প্রশ্নটা মনে এলো, এই দেখাটা কি সত্যিই কাকতালীয়?

এতদিন আপনি আমাকে ‘আপনি’ বলে সম্মোধন করলেও আজ করলেন তুমি বলে, তখনই দ্বিতীয় প্রশ্নটা মাথায় এলো, এই হুট করে তুমি বলাটা কি শুধুই মনের ভুল নাকি সবটা ইচ্ছাকৃত।

তৃতীয় প্রশ্নটা মাথায় এলো তখন যখন আপনি আমাকে লাঞ্চ অফার করলেন। হুট করে হঠাৎ দেখায় আলাপচারিতা পর্যন্ত ঠিক আছে কিন্তু একসাথে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেওয়াটা একটু কেমন জানি। তখনই মনে হলো, এই একসাথে লাঞ্চ করার প্রস্তাব দেওয়াটা হুট করে বলা নাকি পূর্বপরিকল্পিত?

চতুর্থ প্রশ্নটা মনে হলো এইমাত্র। আপনি দুইঘন্টা জার্নি করে আমাকে এই রেস্টুরেন্টে নিয়ে এলেন এবং ব্রুশেটা অর্ডার করলেন। এর আগেও কয়েকটা রেস্টুরেন্ট আমরা ফেলে এসেছি, সেগুলোতে না গিয়ে আপনি এখানেই নিয়ে এলেন। মানে আপনি আগে থেকেই খোঁজ নিয়েছিলেন যে এখানে ব্রুশেটা পাওয়া যাবে। কথা হলো আমাকে হঠাৎ এত ইমপ্রেস করার প্র‍য়োজন কেন পড়ল আপনার? এই সব প্রশ্ন মাথায় জট পাকিয়ে খটকা তৈরি করেছে মূলত। আপনি এখন কি বুঝতে পেরেছেন নাকি আরও বোঝাতে হবে?”

আরেকবার নৈশীর কাছে ক্লিন বোল্ড হয়ে আন্দালিব ঝিম মেরে গেল। ও সকাল থেকেই আজ সারজিমদের বাড়ির আশেপাশে ছিল। শুধু আজ না, গত দুইদিন ধরে সময়ে পেলেই ও সারজিমদের বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করেছে, নৈশী বের হবে বাসা থেকে এই আশায়।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here