কারনে_অকারনে_ভালোবসি?
পর্ব:8
Suraiya_Aayat?
আরিশ কাছে গেলেই আরু হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো, তা দেখে আরিশ হো হো করে হেসে ফেলতেই আরু খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল ৷ আরিশকে হাসতে দেখে আরু একটু বোকা বনে গেল, মুখটা আগের ন্যায় চেপে রেখে বলল
“হাসছেন কেন হ্যাঁ?আপনার জন্যই তো এমন হয়েছে আর আপনি হাসছেন ৷”
মুখটা হাত দিয়ে চেপে রাখায় অদ্ভুত এক গম্ভীর কন্ঠ শোনা যাচ্ছে আরুর, আরিশ হাসিটা থামিয়ে বলল
” এতো ছোট ছোট বিষয়ে ভয় পেয়ে যাও কেন আরুপাখি , আর তাছাড়া আমি তো তোমার হাজবেন্ড অন্য কেউ তো আর না তাই আমি কিছু করলে তা জায়েজ৷ ”
কথাটা বলে আরিশ দিকে খানিকটা এগিয়ে যেতেই আরু বলল
” খাওয়ার সময় এমন করছেন কেন, আমার ক্ষুদা লাগসে আর আপনি আছেন আপনার ধান্দায় ৷”
আরিশ এক লোকমা কাচ্চি আরুর মুখের দিকে ধরে বলল
” কে বলেছে তোমাকে আমি কিছু করার জন্য এগোচ্ছি আর তাছাড়া খাওয়ার সময় কিছু করা যায় নাকি! এখন তো দেখছি আমি কিছু বলতে না বলতেই তুমি অনেক কিছু ভেবে ফেলো, আই যাস্ট লাভ ইউর নেগেটিভ থট আরুপাখি ৷”
কথাটা বলে চোখ টিপ মারলো, আরুর লজ্জার রেশটা আরো কিছুটা বেড়ে গেল ,মানুষটির ঠোঁট চেরা লাগামহীন কথাবাত্রা গুলো ওর শরীরের ভিতর রক্তগুলোকে আরও বেশি শীতল করে দেয় ৷আরু খেয়ে নিলো,আরুকে খাওয়াচ্ছে আর আরিশ নিজেও খাচ্ছে ,তবে আরিশ নিজে খাচ্ছে কম আর আরুকে খাওয়াচ্ছে বেশি ৷ বিরিয়ানি বলে আরু মুখ বুজে খেয়ে নিচ্ছে অন্য কিছু হলে আরু দু লোকমার বেশি খেতো না ৷
খাবারটা শেষ হতেই আরিশ অত্যন্ত দায়িত্ব সহকারে আরুর মুখটা মুছিয়ে দিলো যেন ও একটা ছোট বাচ্চা ৷ আরুর পেটের ভিতর আইঢাই করছে, সন্ধ্যায় ওর ফুপি যেগুলো টিফিন বক্সে করে নিয়ে গিয়েছিলো সেগুলো খেয়েছে তার ওপর এখন এতোগুলো খেলো ৷
প্লেটটা হাতে নিয়ে আরিশ টেবিলের ওপর রেখে ওয়ালেটটা চেক করতে করতে আরুর দিকে তাকিয়ে বলল
” বিয়ের পর মেয়েদের মোটা হওয়ার সায়েন্সটা জানো আরুপাখি ?”
আরু জল খাচ্ছিল তখন আর কথাটা শুনে মুখ থেকে জল ছিটকে বলার সাথে সাথে নাকে মুখে হয়ে গেল ৷ আরিশ ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে বলল
” কি হলো? আর ইউ ওকে?”
আরু হাত দেখিয়ে বলল
” ইয়াহ, আই এম ওকে ৷”
আরিশ বুঝতে পারলো যে আরু ওর কথার মানে বুঝেছে তাই মুচকি হাসলো, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ঘড়ির কাঁটা 11.30টা ছুইছুই , আরিশ আরুর দিকে দৃষ্টিপাত করে বলল
” আমি একটু বাইরে যাচ্ছি, 20 মিনিটের মধ্যে বসায় ফিরবো ততখন তুমি জেগে থাকবা আর ঘুমিয়ে পড়লে খবর আছে ৷ ”
আরু কিছু বলল না, মনে মনে খুশি লাগছে ভীষন ৷ আরিশ ওয়ালেটটা পকেটে ভরে বেরোতে গেলেই আরুর দিকে আর একবার তাকিয়ে বলল
” এসে যেন দেখি জেগে আছো, মাইন্ড ইট ৷”
কথাটা শুনে আরু অনিচ্ছা স্বর্তেও মাথা নাড়ালো ৷
আরিশ বেরিয়ে যেতেই আরু বিছানার ওপর উঠে নাচতে লাগলো ,ওর আর কি ও তো ঘুমিয়ে পড়বে আর ওর ঘুম অনেকটা কুম্ভকর্নের ঘুমের মতো সহজে ভাঙানো মুশকিল আর চোখ বন্ধ করলেই 2 মিনিটের মধ্যে ঘুম চলে আসে ৷আরিশের ঘর অলওয়েজ পরিপাটি করা থাকে আর আরিশ নিজেও সবকিছু গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করে আর সেদিক থেকে আরু বিপরীত ৷ আরুর এখন ভীষনভবে ইচ্ছা করছে এই গোছানো ঘর টা কে খুব সুন্দর আর পরিপাটি করে লন্ডভন্ড করতে ৷ ঘড়ির দিকে তাকালো ,,আরিশ সবে বেরিয়েছে আর বলেছে যে 20 মিনিটের মধ্যে ফিরে আসবে , রাতে প্রচুর জ্য৷ম থাকে আরিশ কার নিয়ে বার হলে 20 মিনিটটা গিয়ে 1 ঘন্টাতেও থামতে পারে আর যদি বাইক নিয়ে যায় তো 30 মিনিটের মধ্যেই পৌছাতে পারে তো সেই সূত্রে আরুর কাছে 5মিনিট ই এনাফ সবটা লন্ডভন্ড করার জন্য আর তরপর ঘুম ৷
কথাটা ভেবে আরু বিছানা থেকে নামলো, কোনটা থেকে কি হুরুতুরু করবে বুঝছে না কা সব জিনিস ই পরিপাটি ৷প্রথমে গেল আরিশের ড্রেসিন টেবিলের সামনে, পারফিউম গুলো খুব সুন্দর ভাবে সাজানো আছে , আরু একে একে সব মাটিতে ফেলে দিলো তারপর হাত দিলো আরিশের আলমারিতে, সাদা শার্টগুলোতে আরিশের পেনদানি থেকে মার্কার নিয়ে তাতে নানান ধরনের ইমোজি আকলো আর লিখরো
” আরিশ একটা রাম ছাগল ৷”
আর এটা জামাতে লিখলো
” আই এম এ কাউ হি হি হি ৷”
আর একটাতে লিখলো
” আমার বউ পুরো টুইটুই ৷”
সাদা শার্টগুলো সব এভাবে নষ্ট করেছে আরু ৷ রঙিন শার্টগুলো নষ্ট করবে কি ভাবছে তখন আরিশের প্রতি খানিকটা দয়া মায়া দেখিয়ে সেগুলো রেখে দিলো ৷ আরু জানে যে সাদা শার্ট আরিশের কাছে অনেক প্রিয় তাই বেছে বেছে সাদা শার্ট গুলো নষ্ট করেছে ও ৷
তারপর এলো গিটারের কাছে, গিটারটার দিকে আরুর হাতটা এগোছে আবার পিছোচ্ছে , ভুলবশত ও যদি গিটারটার কিছু হয়ে যায় তো আরু শেষ, আরিশ একেবারে জানে মেরে দেবে ওকে ৷ কথাটা ভেবে আরু গিটারটার দিকে মুচকি হেসে গুটিগুটি পায়ে বিছানায় গেলো ৷ সাদা শার্টগুলো নষ্ট করেছে বিষয়টা ভেবে আরুর এবার ভয় লাগছে ৷ আরিশ যদি জানতে পারে তখন? আরু এবার বিছানা থেকে নেমে শার্ট গুলো আরিশের বিছানার নীচে ছুড়ে মারলো , আরিশ ওকে জিজ্ঞাসা করলে ও বলবে যে ও জানে না ৷ আরু বিছানায় শুয়ে এবার একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলো , ঘড়ির কাটা 11.45 ছুইছুই ৷ 2 মিনিট ও লাগলো না যেন তার আগেই আরুর ঘুম চলে এলো ৷
____
” আই লাভ ইউ রাফিয়া,,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি , আই রিয়েলি লাভ ইউ এন্ড আই ওয়ান্না ম্যারি ইউ ৷”
রাফিয়াকে কাছে টেনে কথাগুলো বলল আরিশ ৷
রাফিয়া ও আরিশের কাছে গিয়ে বলল
” এন্ড আই লাভ ইউ টু জান , আই কান্ট লিভ উইথ আউট ইউ ৷ লাভ ইউ সো মাচ ৷”
আরিশ রাফিয়ার গা থেকে ওড়নাটা ফেলে দিয়ে রাফিয়ার গলায় ঠোঁট ছোয়াতেই রাফিয়া আরিশকে ওর শরীরের সাথে লেপ্টে নিলো ৷
হঠাৎ আরিশ বলে উঠলো
” আমি কি তোমাকে নিজের করে নেওয়ার মতো করে ভালোবাসতে পারি ?”
রাফিয়া বেশ লাজুক কন্ঠে আরিশের বুকে মাথা গুঁজলো ৷ আরিশ ওর উত্তর পেয়ে গেছে , আরিশ রাফিয়াকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো ,,রাফিয়ার ঠোঁটের দিকে এগোতে যবে আরিশ তখনই আরু চিৎকার করে উঠলো
” নাহ….”
আরুর ঘুমটা ভেঙে গেল ৷ ভয়ে সারা শরীর কাঁপছে,,দরদর করে ঘামছে আরু, এটা ও কি দেখলো ? আরিশ , আরিশ কোথায় ?
কথাটা ভেবে বিছানায় ওর পাশে তাকালো আরু,আরিশ নেই, তাহলে কি এটা ওর স্বপ্ন না সত্যি ? কথাগুলো ভাবতেই আরুর চোখ ছলছল করে উঠলো ৷ বিছানা থেকে কোন রকমে ওড়নাটা গায়ে জড়িয়ে বিছানা থেকে নেমে এদিক ওদিক খুজলো আরিশ কোথাও নেই ৷ তারপর ঘরে না পেয়ে একটা ক্ষীন আশা নিয়ে ব্যালকনির দিকে এগোতেই দেখলো আরিশ ব্যালকনির সোফাতে ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে ৷ আরিশকে ওখানে দেখে আরু থীতু হলো,,তারমানে এটা ওর একটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন ছিলো এতখন ধরে ৷ হঠাৎ খেয়াল করলো আরিশ মুচকি হাসছে ৷ আরিশের হাসি দেখে আরু ভ্রু কোঁচকালো তার মানে কি আরিশ কারোর সাথে চ্যাট করছে ? কথাটা ভাবতেই রাগে আরু তিরতির করে উঠলো, তড়িঘড়ি অরে আরিশের কাছে গেল , তারপর আচমকায় আরিশের হাত থেকে ল্যাপটপ টা কেড়ে নিলো ৷ হঠাৎ এমনটা হওয়াতে আরিশ বেশ চমকে গেল ৷ একটা ইংলিশ ওয়েব সিরিজ দেখছিলো আরিশ যেখানে মেয়েটা তার বয়ফ্রেন্ডকে অন্য একটা মেয়ের সাথে রেসটুরেন্টে গল্প করতে দেখে ফেলেছিলো তারপর গার্লফ্রেন্ডটা রেগে রেসটুরেন্টের সবার সামনে তার মুখে জুস ছুড়ে মারে তারপর পরে জানতে পারে যে সেটা তার কাজিন ছিলো ৷ বিষয়টা আরিশের কাছে একটু হাস্যকর বলে মনে হলো তাই আরিশ হাসছিলো আর আরু তা দেখে ওকে সন্দেহ করে ওর ল্যাপটপ টা কেড়ে নিয়ে চেক করতে লাগলো ৷ আরিশ দেখলো আরু রেগে আছে বেশ, মুখে গম্ভীরতার ছাপ স্পষ্ট ৷ আরিশ বুঝলো যে মাঝরাতে আরিশকে এমনভাবে হাসতে দেখে আরু ও ওকে সন্দেহ করছে ,ব্যাপারটা তে আরিশ মুচকি হাসলো ৷ আরু পুরো ল্যাপটপ তন্ন তন্ন করে খুঁজছে কোন মেয়ের চ্যাট বা ছবি পায় কি না বা কি এমন কারন কিছু ৷ আরিশ হাসছিলো একা একাই তার রহস্য উদ্ঘাটনে আরু এখন নেমেছে ৷আরিশ খুব ভালো ভাবে আরুর গতি প্রকৃতি লক্ষ করছে,বেশ কয়েক মিনিট ধরে চরম আর চূড়ান্ত লেভেলের খোঁজা খুজির পর ও আরু কিছু পেলো না তাই ল্যাপটপটা বন্ধ করে আরিশের দিকে তাকালো ৷ কিছুখনের জন্য মনে হচ্ছিলো যেন সব কিছু হারিয়েছে ও তাই আর নিজেকে সামলাতে পারেনি ৷
ল্যাপটপ বন্ধ করতেই আরিশ বলে উঠলো
” ডিড ইউ ফাইন্ড এনিথিং?”
আরুর কথাটা শুনে মাথা নীচু করে নিলো, নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে কিন্তু ওর মনের মাঝে কি চলছে তা তো আর আরিশ জানে না ৷ আরু কিছু বলছেনা দেখে আরিশ আবার বলল
” কি খুঁজছিলে আরুপাখি,,আর ওভাবে চেঁচিয়ে উঠলে কেন ঘুমের মাঝে ?”
আরু এবার কাঁদোকাঁদো স্বরে আরিশের দিকে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
” আমি একটা খারাপ স্বপ্ন দেখেছিলাম তাই ৷”
কথাটা বলতে বলতেই আরুর চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো , আরিশ এবার আরুকে টেনে ওর কোলে বসিয়ে আরুর চোখটা মুছিয়ে বলল
” কি স্বপ্ন দেখেছিলে তুমি যে তোমার চোখে জল? বলো !”
আরু কিছু বলছে না, ঠোঁট ফোলাচ্ছে ৷ আরিশ আরুকে কাঁদতে দেখে বিরক্ত হয়ে বলল
” বলেছি না কাঁদবে না কান্না থামাও নাহালে এক্ষুনি ব্যালকনি থেকে ছুড়ে সুইমিং পুলে ফেলে দিবো ৷ স্টপ ক্রায়িং ৷”
আরু এবার ফুঁপিয়ে উঠতে উঠতে বলল
” আমি স্বপ্ন দেখছি আপনি অন্য একটা মেয়ের সাথে অনেক ঘনিষ্ঠ অবস্থায় !….” এটুকু বলে আর আরু বলতে পারলো না, কান্না করছে ৷ আরিশ বুঝতে পেরেছে এবার আরুর কান্নার কারন তারমানে আরু ও আরিশকে অন্য কোন মেয়ের সাথে সহ্য করতে পারে না ৷ ব্যাপরটাতে অনেক বেশি খুশি হয়েছে আরিশ ৷ আরুকে রাগানোর জন্য আরিশ বলল
” হ্যাঁ এতখন তো অন্য কারোর সাথেই ছিলাম, তোমাকে বলেছিলাম জেগে থাকতে তুমি তো জেগে থাকলেনা ঘুমিয়ে পড়লে তাই আমার আর কি করার বলো আমি অন্য এক জনের কাছে ছিলাম ৷”
আরু আরিশের বুকে মাথা রেখে আরিশের শার্টটা খামচি মেরে ধরলো, চোখ থেকে অনবরত জল গড়াচ্ছে তা আরিশের মনের মাঝে বন্যা করে দিচ্ছে ৷আরু আরিশের বুকে মাথা রেখে বলে উঠলো
” যদি কখনো এমনটা ভেবেছেন ও তাহলে সেদিনই আপনাকে শেষ করে দিবো আমি , মনে রাখবেন ৷”
আরিশ এবার আরুর চোখে চোখ রেখে বলল
” আর যদি….”
আর কিছু বলতে পরালো না,আরু মুখ চেপে ধরলো
” যদি র কথা নদীতে ফেলুন,কোন যদি টদি না, আপনি অন্য কারোর দিকে তাকাবেন না বলে দিলাম ৷”
আরিশ এবার আরুকে সোফাতে বসিয়ে নিজে আরুর দিকে হাটু গেড়ে বসে আরুর আঙুল গুলো মুঠিবদ্ধ করে বলর
” অনেক বলে ফেলেছো , নাও ইটস মাই টার্ন ৷ ”
আরুর কান্না থেমেছে ,চোখ গুলো ঈষৎ ফোলা ফোলা লাগছে ৷ আরিশ আরুর পাশে বসলো
” তোমাকে বলেছিলাম জেগে থাকতে কিন্তু তুমি ঘুমিয়েছো কার পারমিশন নিয়ে?”
আরু একটু থেমে বলল
” সরি , আমার ঘুম পেয়েছিলো তাই…”
” কি পানিশমেন্ট নেবে সেটা বলো ৷”
আরু চুপ করে রইলো , কিছু বলছে না দেখে আরিশ আরুর দিকে এগিয়ে বলল
” স্পিক আপ ৷”
আরু এবার নির্লিপ্ত কন্ঠে বলল
” আপনি যা পানিশমেন্ট দিবেন তাই ৷”
আরিশ আরুর দিকে আরও খানিকটা ঝুকে বলল
” আর ইউ সিউর?”
আরু লজ্জা পাচ্ছে ভীষন, এই মুহূর্তে ওর ঠিক কেমন রিয়েকশান দেওয়া উচিত ও জানে না, নিজেকে অনেক শক্ত করে রেখেছে আরু কোনভাবেই নিজেকে লজ্জায় ফেলতে চাই না ৷ আরিশ আরুর মুখের দিকে তাকালো ,আরু লজ্জায় চোখ তুলে তাকানোর ক্ষমতা অবধি পাচ্ছে না ৷ আরিশ এবার আরুর কোমর ধরে কাছে টেনে নিতেই আরুর কলিজা কেঁপে উঠলো,,ওর চোখের ভাষায পরিবর্তন হচ্ছে, ঠোঁট গুলো কাঁপছে , সমগ্র শরীর জুড়ে অস্থির এক অনুভূতি ৷ আরিশ আরুর শরীর থেকে ওড়নাটা ফেলে দিয়ে ওর হাতটা আরুর ঘাড়ে রেখে আরুকে কাছে টেনে আনলো ৷ আরুর নিশ্বাস গুলো ক্রমশ গতি হারাচ্ছে ,এক বিদ্ধস্ত অনুভুতি, আরিশের গরম নিশ্বাস আরুর গলায় এসে আছড়ে পড়ছে ৷ আরিশ এবার ওর ঠোঁটটা আরুর গলায় ছোঁয়াতেই আরু সোফায় খামচি মারলো, আরিশের ঠোঁটের ছোঁয়া আরুর গলা আর কাধের সমগ্র অংশে ছড়াচ্ছে, আরু আর সহ্য করতে পারছে না,দু হাত দিয়ে আরিশকে আঁকড়ে ধরলো, আরু এবার বেশ জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে , আরিশ সরে এসে আরুর ঠোঁটে আলতো করে স্লাইড করে বলল
” ভয় পাচ্ছো আরুপাখি?”
আরু লজ্জায় আরিশের বুকে মুখ লুকালো ৷আরিশ আরুকে জড়িয়ে ধরলো, আরিশের ঠোঁটের কোনে হাসি ৷ আরিশ আর কোনরকম দেরি না করে আরুকে কোলে তুলে নিলো, আরু আরিশের গলা জড়িয়ে আছে , আরিশের চোখের দিকে চোখ রাখার সহসটুকু পাচ্ছে না আরু ৷ আরিশ আরুকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো, আরুর দিকে এগোতে গেলেই আরু বলে উঠলো
” লাইটটা অফ করে দিন, লাইট জ্বললে আমার ঘুম হয়না ৷”
আরিশ মুচকি হেসে লাইট অফ করে বলল
” সারা রাত ঘুমাতে দেওয়ার মতো বোকা বোকা পানিশমেন্ট আবরার আরিশের কাছে নেয় ৷ কিছু কিছু জিনিস অভ্যাস করে রাখা ভালো ,এখন থেকে নিদ্রাহীনতার অভ্যাস আনো ৷”
আরিশের এমন কথা শুনে আরুর ইচ্ছা করছে ছুটে পালাতে ৷ লাইট অফ করে আরিশ আরুর কাছে যত এগিয়ে আসতে লগলো আরুর বুকের ধুকপুকানি তত বাড়তে লাগলো, আরিশ এসে আরুর দিকে ঝুকে রইলো বেশ কিছুখন, ঘরের হলুদ রঙের ডিম লাইটের আলোতে আরুকে দেখছে আরিশ, ওর মায়াবতী ৷ আজ ওর সব ভালোবাসা আরুর কাছে এনে দেবে , ভালোবাসবে ওর আরুপাখিকে ৷
____
রাত3.45,,,,, আরিশের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে আরু , আরিশ আরুকে আষ্ঠেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে আগলে ৷ আরিশের মুখে মৃদু হাসি , আরু ঠোঁট চেপে আছে, খানিকটা পেইন হচ্ছে পেটে ৷ আরিশ আরুকে শুইয়ে দিয়ে বলল
” আরুপাখি কষ্ট হচ্ছে?”
আরু একটু কাঁপা কন্ঠে বলল
” নাহহ…”
আরিশ আরুর কপালে ভালোবাসার পরশ একে বলল
” জানো তোমাকে আমি এখন বিয়ে করেছি কেন?”
আরু অবাক হয়ে বলল ” কেন?”
আরিশ আরুর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলল
“আমরা নিজেদের ভালোবাসার মানুষগুলোকে একান্তে নিজের করে পাওয়ার জন্য অনেক কিছু করি, কেন জানো? ভয় হয় ৷ ভীষনরকম ভয় ৷ যদিও আমি জানি যে আমি তোমাকে কখনো কারোর হতে দেবো না তবুও নিজের মনের প্রশান্তির জন্য আমি এতদূর এগিয়েছি ৷”
আরু ঈষৎ মুচকি হাসলো ৷ ধীমে কন্ঠে প্রশ্ন করলো
” ভালোবাসেন আমাকে?”
আরিশ আরুর কপালে ভালোবাসার পরশ একে বলল,
” এত সহজে কি আসলেই ভালোবাসার প্রকাশ হয় ? ভালোবাসি বললেই কি ভালোবাসা হয়ে যাই?”
” আমি শুনতে চাই ৷”
আরিশ মুচকি হেসে বলল
” শোনো না রুপসী….
তুমি যে শ্রেয়সী
কি ভীষন উদাসী
প্রেয়সী….
না না না না, জীবনের গলিতে
এ গানের কলিতে
চাইছি বলিতে
ভালোবাসি ৷”
গানটা শুনে আরু আরিশের বুকে মুখ লোকালো, আরিশ ও ভালোবেসে জড়িয়ে ধরলো ৷ এভাবেই যেন পূর্নতা পায় হাজারো ভালোবাসার ৷
চলবে,,,,,