কারনে_অকারনে_ভালোবাসি পর্ব:19,20

0
1478

কারনে_অকারনে_ভালোবাসি
পর্ব:19,20
Suraiya_Aayat
পর্ব:19

মুখের একপাশে পেন গুজে একটা ইকুয়েশন মেলানোর চেষ্টা করছে আরু, পাশে সানাও অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না ৷ অন্য সময় হলে আরু ঠিকই পারতো কিন্তু এখন পারছে না কারন ওর মনোযোগ তো অন্য দিকে ৷ অরিশ অনেকখন ধরে আরুর দিকে তাকিয়ে আছে মেয়েটা মুখে কলম গুজে বসে আছে ভীষন জোরে একটা ধমক দিতে মন চাইছে, যা ভাবা তাই কাজ , একটা গগনবিরাদী চিৎকার দিয়ে ধমকের সুরে বলল
” এই মেয়ে , পারছো না কেন?”

ধমক শোনামাত্রই আরুর মুখ থেকে পেনটা পড়ে গেল আর লিখতে লিখতে ভয়ে সানার হাত থেকে পেন কেঁপে একটা এলোমেলো দাগ হয়ে গেল খাতায় ৷ আরু নিজের ওপর তিনবার ফু দিয়ে বলল
” এভাবে কেউ চেঁচায় ! আর একটু হলে যদি হার্ট অ্যাটাক করে ফেলতাম তখন কি হতো?”

আরিশ রাগান্বিত কন্ঠে বলল
” এগুলো শেষ হয়েছে জুনের প্রথম দিকেই, এতো সহজে ভুলে যাও কি করে তুমি ?”

সানা ভয়ে ভয়ে আবার লেখা শুরু করলে আরিশ বলল
” তুই পারছিস না কেন সানা? ওর মতো তোর ও কি স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে যে পুরোনো সব পড়া ভুলে ঘেটে ঘ হয়ে গেছে ৷”

সানা মাথা নীচু করে আছে কি বলবে বুঝছে না ৷ আরুর সামনে থেকে খাতাটা টেনে আরিশ এক মিনিটের মধ্যে কতো ইজিলি সলভ করে দিলো , আরু আর সানা খুব মনোযোগ সহকারে দেখছে , আরিশের লেখা শেষ হলেই আরু তীব্র অনুশুচনার সুরে বলল
” ইইশশ্ হাও ইজি , এটা তো আমি পারতাম ৷”

আরিশ উঠে দাঁড়িয়ে বলল
” এক্সামে ঢাকা মেডিক্যাল অর স্যার সালিমুল্লাহ মেডিক্যাল এই দুটোর মধ্যে যদি নাম না আসে তো খবর আছে ৷ পানিশমেন্ট হিসাবে আরুপাখি তোমাকে আমি বাইরে বেরোতে আর শপিং একদম বন্ধ করে দেবো আর নো কফি আর সানার বিয়ে দিয়ে শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে দেবো মনে থাকবে ৷”
আরু মুখ ভাঙচি দিলো, সানার বোধহয় ওর নিজের পানিশমেন্টটা খুব একটা পছন্দ হলো না তাই কিন্তু কিন্তু নিয়ে বলল
” আরুর এতো সহজ পানিশমেন্ট আর আমার পানিশমেন্টটা এমন কেন? তুই ও আরুকে ওর বাসায় পাঠিয়ে দিবি পানিশমেন্ট হিসাবে ৷”

আরু তো খুশিতে গদগদ ৷ সানাকে এপ্রিশিয়েট করতে ইচ্ছে করছে ভীষন ৷ আরিশ ধমকের সুরে বলল
” চুপ, একটাও কথা না ৷”

আরু তখন উৎফুল্লতার সাথে বলে উঠলো
” ওটা No more words হবে মিঃঅভদ্র ৷”

আরিশ আরুর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল
” থামবে তোমরা দুজন, কথাটা বললাম কোথায় সিরিয়াসলি নেবে তা না তারা গবেষনা করতে বসেছে পানিশমেন্ট নিয়ে ‌৷ সত্যি বলছি ঢাকা চত্বরে যদি না পেয়েছো তো খবর আছে ৷”

কথাটা বলে আরিশ বেরিয়ে যেতেই দুজনে হাফ ছেড়ে বাঁচলো , আরিশ কফি বানাতে গেছে , আর ও শুধু এক কাপ কফিই বানাবে তা ওরা দুজনেই খুব ভালো করে জানে কারন সানা কালো হয়ে যাওয়ার ভয়ে কফি বা চা কিছুই খায় না আর আরু কফি খাওয়ার পোকা কিন্তু সবে অপারেশন হয়েছে বলে আরিশ ওকে খেতে দেবে না ৷ আরিশ চলে যেতেই সানা গাল ফুলিয়ে বলল
” আমি কিছুতেই এখন বিয়ে করবো না ৷”

আরু সানার মাথায় গাট্টা মেরে বলল
” গাধী, ওসব ছাড় এই দেখ তোর নতুন ভাবী ৷”

সানা অবাক চোখে তাকালো আর বলল
” কে এটা আরু ? আর আমার ভাবী হতে যাবে কোন দুঃখে ? আমার একটাই ভাইয়া আর তার বউ তুই ৷”

আরু বিরক্তি ভরা কন্ঠে বলল
” আরে বললাম না যে মিঃ অভদ্রর আবার বিয়ে দেবো আমি, তাই একটা মেয়ে পেয়েছি ভীষন সুন্দরী আর মেডিক্যাল এর ই স্টুডেন্ট, স্যার সালিমুল্লাহ র ৷ মিঃ অভদ্রর সাথে ভালো মানাবে ৷”

সানা রাগী রাগী চোখ করে তাকিয়ে বলল
” আরু এটা কিন্তু খুব বাড়াবড়ি হয়ে যাচ্ছে ভাইয়া জানলে ভীষন রেগে যাবে ৷”

আরু বিরক্তসূচক ভাবভঙ্গি করে বলল
” আরে ছাড় না তুই মেয়েটা কে দেখ ৷”

সানা আরুকে মেয়েটার ছবি দেখালো, সানা ফোনের দিক থেকে চোখ সরিয়ে রেগে বলল
” ইট ইজ টু মাচ আরু ,এবার সত্যিই একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলছিস তুই , ভাইয়া আসলে কিন্তু এবার আমি বলে দেবো ভাইয়াকে ৷”

আরু খানিকটা ভয় পেয়ে বলল
” এই এখনই বলিস না ,যেদিন পাকা কথা হবে সেদিনই বলিস ৷”

ওদের করার মাঝে কারোর আসার আভাস পেয়ে ওরা চুপ হয়ে গেল, আরু ফোনটা পাশে রেখে দিলো ৷ আরিশ কফি নিয়ে ওদের সামনে বসেছে , সানা আরু দুজনের দিকে তাকাতাকি করলো , সানা ইশারায় বলছে যে সে আরিশকে বলে দেবে কিন্তু আরু ও ইশারায় বলছে না বলতে , আরিশ ওদের এই কাজভাজ দেখে বলল
” কি হচ্ছে টা কি ? মাত্র 2 ঘন্টা পড়াশোনা করে হয়ে গেল ?”

আরু নিরাশ হয়ে বলল
” মাত্র দুই ঘন্টা না, পুরো বিশ বছর মনে হচ্ছে ৷”

আরিশ ও আরুর শরীরের কান্ডিশানের কথা ভেবে বলল
” ওকে ঠিক আছে আমার ও একটু কাজ আছে তাই আবার সন্ধ্যায় বসবো ৷”

আরু আর সানা দুজনেই ভীষনরকম খুশি হলো ৷
সানা বইপত্র নিয়ে বেরিয়ে যেতে নিলেই আরু ও সাথে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে আরিশ বলল
” তুমি কোথায় যাচ্ছো ? এখানে থাকো কথা আছে ৷”

সানা ও দাঁতবার করে একপ্রকার রাক্ষুসি হাসি আরুর দিকে নিক্ষেপ করে বেরিয়ে গেল, আরু বিড়বিড় করে সানাকে বেশ কথা শোনাতে লাগলো ৷

আরিশ কফিতে এক সিপ দিয়ে বলল
” দরজাটা বন্ধ করে এসো ৷”
আরু ও আর বেশি তর্কাতর্কি করলো না,দরজা বন্ধ করে দিয়ে আরিশের কাছে এসে ভদ্র মেয়ের মতো দাঁড়ালো ৷ আরিশ আরুর দিকে ঘুরে বলল
” ফোনের পাসওয়ার্ড চেন্জ করেছো কেন? বলেছিলাম তো চেন্জ করবে না ৷”

আরু মুখ বাকিয়ে বলল
” বেশ করেছি, আর করবো না ই বা কেন ? আপনি কখনও আপনার ফোনের লক খুলে আমার হাতে দিয়ে বলেছেন যে এই নাও আরুপাখি এটা আমার ফোন তুমি যতখুশি ঘাটাঘাটি করো ৷ বলেছেন কখনও ? বলেননি তো ? তাই আমিও বলবোনা ৷”

আরিশ বুঝতে পারলো আসলে যে আরু এতো সহজে বলবে না , ও আরুর ফোন চাইছে এটা দেখার জন্য যে কোনক্রমেই আরু সে নয় তো যে ডিভোর্স এর জন্য আপিল করেছে ৷ আরিশ তাই একটু থেমে বলল
” কফি খাবে ?”

আরু ভ্রু কুঁচকে বলল
” মজা করছেন?”

” একদম না ৷”

আরু এবার একপ্রকার আরিশের জামা কাপড় ধরে টানাটানি শুরু করে বলল
” আমি কফি খাবো , কফি খাবো আমি ৷”

আরিশ ওর কফির কাপটা আরুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল
” এই নাও ৷”

আরু কফিটা নিয়ে একসিপ দিয়ে আরিশের কোলের ওপর বসে আরুশের বুকে মাথা রেখে বলল
” আহহ…কি শান্তি ৷”

আরিশ ও আরুকে জড়িয়ে ধরলো ৷ আরু আরিশের বুকে মাথা রেখে কফি খাচ্ছে আর একটা সময় আরুর চোখের কোনা বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তেই আরিশের শার্ট ভিজলো , আরিশ বুঝতে পারলো যে আরু কাঁদছে ৷ আরিশ কিছু বলতে যাবে তখনই আরু বেশ অন্যমনস্ক হয়ে বলল
” আপনার জীবনে যদি কখনও অন্য কেউ আমার জায়গাটা নিয়ে নেয় তাহলে আপনি তাকে অনেক ভালোবাসবেন তাইনা ‌ ? আমার থেকেও বেশি ! আমি তো সারাদিন দুষ্টামি করি, আপনার কোন কথায় শুনি না, আপনার বরাবরের মতো একজন অবাধ্য ছাত্রী এবং স্ত্রী আমি , না আপনাকে অন্যদের মতো কাছে টেনে ভালোবাসতে পারি আর না আপনার কোন শখ আহ্লাদ পূরন করতে পারি উল্টে আপনি আমার সব চাওয়া পাওয়া পূর্ণ করছেন ৷ আপনি সত্যিই তাকে অনেক ভালবাসবেন তাইনা?”
কথাগুলো বলতে বলতে আরিশের বুকের শার্ট টা খামচি মেরে ধরলো,,প্রিয় মানুষকে হারাতে ভয় লাগে , নিজের জায়গাটাতে অন্য কাওকে কল্পনা করতেও কষ্ট লাগে ৷
আরিশ কিছু বললো না চুপ করেই রইলো , ও জানে আরু কি ভেবে কথা গুলো বলছে ৷ আরু কফির কাপটা রেখে আরিশের বুকের মাঝে গুটিশুটি মেরে চুপটি করে রইলো ৷আরিশ ওকে আগলে নিচ্ছে না দেখে আরু উঠে চলে যেতে নিলেই আরিশ আরুকে শক্ত করে নিজের মাঝে আবদ্ধ রেখে বলল
” ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি ভাবিনা,তা উপরওয়ালার হাতেই ছেড়ে দিয়েছে, আমরা যা পরিকল্পনা করি তিনি তার থেকে উত্তম আর ভালো কিছু পরিকল্পনা করে রাখেন , কারোর অপূর্ণতার মাঝেই তিনি রেখেছেন হাজারো সুখ তেমনি আমার আরুপাখিটাই আমার কাছে হাজারো সুখের ভান্ডার আর কখনও যদি শুনি কোন রকম কোন ঘাড় ত্যাড়ামো করে কিছু করেছো তো সেদিন আমি ভুলে যাবো তুমা আমার কাছে কি ৷ ”
মানুষের আবেগের ওপর মানুষের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না , আরুর ও নেই , আরুর চোখ থেকে অনবরত জল গড়াতে লাগলো, ঠোঁট জোড়া কাঁপছে, যতোই বলুক ও আরিশের কাছে থাকতে চাইনা তা ভুল, আরিশকে নিজের থেকেও বেশি ভলোবাসে তাই তো তার ভালো থাকার পথটা আরও সুগম করে দিতে চায় ৷
আরিশ আরুকে দু হাত দিয়ে আগল নিলো ,যদি সময়টা এখানেই থেমে যেতো তাহলেই বোধহয় ভালো হতে কোন রকম কোন শর্ত ছাড়াই তার আরুপাখিকে বুকের মাঝে আগলে রাখতে পারতো ৷

…..

sms,,,,,,

Aru:” আপু তোমার পছন্দ হয়েছে ওনাকে? ”

Papia : হমম পছন্দ হয়েছে কিন্তু তিনি কি আদতেও রাজি হবেন?

Aru : উনি তো রাজি, তোমার ছবি দেখে ওনার অনেক পছন্দ হয়েছে ৷

papia: উনি ঢাকা মেডিক্যালে পড়েন তাই বললে তাইতো?

Aru : হমম হমমম, উনি DMC তে পড়েন ৷

papia : দেখো আরু relationship হলেও একটা কথা ছিলো কিন্তু একেবারে সরাসরি বিয়ে ? ব্যাপারটা কেমন না? যদিও আমার বাসাতেও বিয়ের জন্য ছেলে খুঁজছে কিন্তু ছেলে পাচ্ছেনা ভালো তাই আর কি ৷

Aru : তোমার বাসার লোক কেও পিকটা দেখাও আর ওনার সমন্ধে সব তো বললাম ৷

papia :ওনার সাথে একটু কথা বললে আগে ভালো হতো না?’

Aru : উনি একটু লাজুক স্বভাবের খুব কম কথা বলেন, গলার স্বর এতো মিষ্টি কি বলবো আহা ৷

আরু মনে মনে : সারাদিন আরুপাখি ? আরুপাখি? বলে আমার মাথাটা খেয়ে ফেলে ৷

papia : তাহলে এখন কি করবো?

Aru : তুমি তোমার বাসার লোক কে কালকে নিয়ে এসে পাকা কথা বলে যাও উনি কালকে বাসায় থাকবেন ৷

papia : আচ্ছা ৷ কিন্তু উনি তোমার কি হয় সেটা তো বললে না ৷

Aru : আমরা কাজিন? ৷

আরুর Sms টা seen করতেই পাপিয়ে বলে উঠলো
” আমি তোমার সাথে একটু পরে কথা বলছি , আম্মু ডাকছে ৷”

Aru : আচ্ছা যাও ৷

আরু ফোনটা রেখে,হাত ছড়িয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লো ৷ চোখ বন্ধ করলো,সকালে আরিশ ওকে কতো সুন্দর কথে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো তা চোখে ভাসছে আর কিছুদিন পর আরিশের বাহুডোরে থাকবে অন্য কেউ ৷
কথাটা মনে পড়তেই ফোন নিয়ে চটপট কল করলো ও
” আঙ্কেল ডিভোর্স পেপার রেডি ?”

” হমম কালকে পৌছে যাবে ৷”

কথাটা শুনে আরু ফোনটা কেটে দিলো ৷

কালকে পাপিয়া আসবে আর আরু ডিভোর্স পেপারে আরিশকে দিয়ে সই করাবে ৷

চলবে,,

#কারনে_অকারনে_ভালোবাসি
#পর্ব:20
#Suraiya_Aayat

রাত 12.25,,,,,

আরিশের দিকে ফিরে শুয়ে ছিলো আরু,মানুষটা ল্যাপটপে কাজ করতে করতে ওর দিকে তাকাচ্ছে ,যতখন না ল্যাপটপ এর দিকে তাকাচ্ছে আর আর থেকে আরও বেশিখন ওর দিকে তাকিয়ে থাকছে ৷ আরিশের কাজে আরুর ঘুম উড়ে গেছে, কনটিনিউয়াসলি একটা মানুষ যদি একজনের দিকে তাকায় তাহলে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক , আরুর ঘুম আসছে না তাই ৷ আরু পাশ ফিরে ঘুমাতে গেলেই আরিশ বলল
” ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু ডু দ্য৷ট,আমার দিকে ফিরে ঘুমাও ৷”

আরু এবার বিরক্ত হয়ে উঠে বসে বলল
‘ এমন করছেন কেন মিঃঅভদ্র আমি ঘুমাবো তো ৷”

আরিশ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে খুব সাবলীল ভাবে বলল
” হমম ঘুমাও , ঘুমাচ্ছিলেই তো ৷’

আরু একটু তিতিবিরক্ত হয়ে বলল
‘মোটেও না আপনি বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছেন আমার ঘুম আসছে না , সারদিন তো আরুপাখি আরুপাখি করেন আবার সারিদিন ই তো আপনার চোখের সামনে ঘুরঘুর করি তবুও !’

আরিশ মুচকি হেসে বলল
‘ আর 5 মিনিট অপেক্ষা করো ৷’

‘ হাহ ! 5 মিনিট অপেক্ষা করতে পারবো না নাও আই এম স্লিপি ৷’

আরিশ কিছু বললো না এদিকে মুখের রিয়েকশানটাও এমন করে রেখেছে যে কি বলতে বা করতে চাইছে তাও বোঝার ও উপায় নেয় তাই ভয়ে আরু ঘুমাতেও পারছে না এদিকে ঘুমে চোখ ঢুলুঢুলু হয়ে আসছে ৷
আরিশ কাজ করছে আর তখন আরুর মনে পড়লো পাপিয়ার কথা , কিছুখন আগেও পাপিয়ার সাথে আরুর কথা হয়েছে ,কালকে তারা আসবে সেই কথা জানিয়েছে ৷ আরিশকে কালকে যে করেই হোক বাসায় রাখতে হবে যতখন না ওরা আসে , কথাটা ভেবেই আরু প্রশ্ন করে উঠলো
” আচ্ছা আপনি কালকে বাসায় থাকবেন তো ?”

আরিশ নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায় বলল
” নাহ !”

আরু উত্তেজিত হয়ে বলল
” কেন কেন কেন? ”

আরিশ ল্যাপটপটা বন্ধ করে দিলো, কাজ শেষ, ল্যাপটপ টা পাশে নিজে শুয়ে আরুর হাত ধরে টেনে আরুকে বিছানায় ফেলল, আরু আর আরিশ দুজন দুজনের দিকে মুখ করে শুয়ে আছে, আরিশ দুই হাত মুঠিবদ্ধ করে নিলো নিজের হাতের মধ্যে তারপর বলল
” তোমার এই কেন কেন কেন র উত্তর যদি আমি না দিয় তাহলে ?”

আরু ফিক করে হেসে বলল
” না দেবেন, না দেবেন ,কিন্তু কালকে আপনাকে বাসায় থাকতেই হবে ৷”

আরিশ একহাত দিয়ে আরুর কোমর ধরে আরুকে আরও কাছে টেনে এনে বলল
” আমার বাসায় থাকার পিছনে আপনার স্বার্থটা কি মিসেস আরু পাখি ?”

আরু বিরক্তসূচক কন্ঠে বলল
” উদ্দেশ্য থাকবে কেন? উদ্দেশ্য কিছুই না , আমার ও তো মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় তাই না যে আমি আপনার সাথে সময় কাটাবো ৷”

আরিশ ভ্রু কুঁচকে বলল
” ওহহ রিয়েলি আরুপাখি !”

আরু মাথা নাড়িয়ে বলল
” হমম হমম হমম ৷”

আরিশ হো হো করে হেসে আরুর হাতটা ছেড়ে আরুকে নিজের মাঝে জড়িয়ে নিয়ে আরুর কপালে ভালোবাসার পরশ একে বলল
” কোন ঘাপলা কেস নিশ্চয়ই আছে নাহলে তুমি এমন বলতেনা আরুপাখি ৷”

আরু অরিশের বুক থেকে মুখ উঠিয়ে বলল
” মি ঃ অভদ্র আমি কিন্তু এবার এক্ষুনি এখান থেকে উঠে চলে যাবো , বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে ৷”

আরিশ এবার ঝড়ের মতো হাসি হেসে বলল
” আরে মজা করছিলাম আরুপাখি ৷”

আরু আর কিছু বলল না ৷ আরু আরিশের মাঝে গুটিশুটি মেরে শুয়ে রইলো একদম ছোট্ট বাচ্চাদের মতো ৷ আরিশ আরুর মাথায় হাত বুলাতে লাগলো, আরুর ঘুম এখন অনেক অনিয়মিত হয়ে গেছে অপারেশানের পর এখন আর আগের মতো ঘুমায় না, হয়তো সব কথা ভেবে আর ঘুম আসতে চাই না ৷

…….

” ফুপি আজকে কিছু স্পেশাল আইটেম রান্না করো কেমন ?”
সোফাতে বসে না নাচাতে নাচাতে বললো আরু ৷ সানাও সোফাতে হাটু ভাজ করে ম্যাগাজিন পড়ছিলো তখন আরুর এমন কথা শুনে সানা ভ্রু কুঁচকে বলল
” কি ব্যাপার আরু ! আজকে স্পেশাল কি ৷”

আরু মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো কিন্তু সানাকে বলেনি দেখে সানা আরুর কাছে এগিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বলল
” কিরে বল ৷”

আরুও আর এক্সাইটমেন্ট ধরে রাখতে পারছে না আর কোন জিনিস ও সানার কাছে লুকিয়েও রাখতে পারে না তাই ফিসফিস করে বলল
” শোন তোকে বলছি কিন্তু তুই আবার কাওকে বলিস না ৷”

সানা মাথা নাড়িয়ে বলল
” আবার কি গন্ডগোল করেছিস তুই ?”

আরু বলে উঠলো
” ধূর, গন্ডগোল না, আজকে পাপিয়ারা আসবে ৷”

সানা বেশ ভাবুক সুরে বলল
” কোন পাপিয়া ?”

” আরে ভুলে গেলি ? কালকে না তোকে একটা মেয়ের ছবি দেখালাম আর বললাম ওনার জন্য এই মেয়েটা পছন্দ করেছি, আজ তারা আসবে বিয়ের কথা বলতে ৷”

কথাটা শুনে যেন সানা 440 ভোল্টের শক খেলো, রেগেও গেল ভীষন, চাপা স্বরটা এবার উচ্চস্বরে পরিনত হলো
” কালকে তোকে বারন করলাম না এসব বাড়াবাড়ি বন্ধ করতে তুই তাও এতো কিছু করে ফেলেছিস ?”

এদিকে সানার গলার আওয়াজ শুনে অনিকা খান প্রশ্ন করে উঠলেন
” সানা কি হলো রে এভাবে চেচাচ্ছিস কেন?”

সানা এবার সোফা ছেড়ে উঠে যেতে গেলেই আরূ হাত ধরে বসানোর চৈষ্টা করে বলল
” জানু প্লিজ শান্ত হ, যা হবে ভালো হবে আমি ওনার ভালোর জন্যই সব করেছি ৷”

সানা আরূর হাতটা ঝাড়ি মেরে ছাড়িয়ে দৌড়ে আর আম্মুর কাছে গেল, আরুও সানার পিছন পিছন ছুটলো যাতে সানা না বলতে পারে তাই আটাকানোর চেষ্টা করলো ৷

সানা ওর আম্মুকে গিয়ে সবটা বলে দিলো, আরূ মাথা নীচু করে আছে , অনিকা খান রিতিমতো রাগী চোখে আরূর দিকে তাকিয়ে আছে ৷
না পেরে বললেন
” কি করেছিস তুই এসব ?আরিশ জানলে কি হবে জানিস ?”

আরূ ওনাকে থামানোর চেষ্টা করে বলল
” ফুপি আস্তে এক্ষুনি ওনারা চলে আসবেন আর এসে এমন পরিবেশ দেখলে খারাপ ভাববে ৷”

উনি আরও বেশ কিছু বলতে যাবে তখনই কলিংবেল বেজে উঠতেই আরূর বুকের ভিতর ধক করে উঠলো ৷ সানা আর অনিকা খান দুজনেই আরূর দিকে তাকাতাকি করতে লাগলেন, অনিকা খান রাগী কন্ঠে বললেন
“সানা দরজাটা খোল, দেখ তো কে এসেছে ৷”

আরূ ওনার মুখের অবস্থা দেখে আর কিছু বলার সাহস পেলো না ,কথাটা শুনে অনিকা খান তিনিই এতো রেগে গেছেন আর আরিশ শুনলে না জানি কি হবে ভেবেই আরূর হাত পা ঠান্ডা হয় আসছে, গলা শুকিয়ে যাচ্ছে , এবার ভয় লাগতে শুরু করেছে ভীষন ৷

সানা গিয়ে দরজা খুলতেই উকিল সাহেব ওরফে মফিজ আকতার উনি বাসায় ঢুকলেন, ওনাকে বাসায় ঢুকতে দেখেই আরূর কলিজা কেঁপে উঠলো,,নির্ঘাত এখন উনি ডিভোর্স পেপার এনেছেন ৷ আরুর পা যেন থরথর করে কাঁপছে , মফিজ সাহেবকে ঢুকতে দেখে অনিকা খান রান্না কোনরকম শেষ করে তড়িঘড়ি এগিয়ে গেলেন ওনার দিকে, আরুর ভয়ে এক পা ও নড়ছেনা ,এখন যদি উনি ডিভোর্স এর কথাটা বলে দেন তাহলে এই বাড়িতে একটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়ে যাবে ৷

“ভাইজান ভালো আছেন?অনেকদিন পর আপনি আমাদের বাসায় এলেন ৷”

উনি ওনার ঠোঁটে মিথ্যা জোরপূর্বক একটা হাসি আনার চেষ্টা করে মৃদু হেসে বললেন
” ভাবী একটু পানি হবে ?”

অনিকা খান তড়িঘড়ি করে বলল
“হ্যাঁ বসুন আনছি ৷”

অনিকা খান একটু হাক দিয়ে বললেন
” আরূ একটু জল নিয়ে আই তো ভাইজানের জন্য ৷”

আরূর হাত পা কাঁপা কাঁপির মাত্রা ছাড়িয়ে গেল, কোনরকমে এক গ্লাস জল নিয়ে ওনার দিকে এগিয়ে যেতেই উনি আরূকে দেখে খানিকটা,স্তব্ধ হয়ে গেলেন , আরূকে দেখেও উনি,কিছু বললেন না তবে আরূকে চিনেছেন ঠিকই ৷ মফিজ সাহেব প্রশ্ন করে উঠলেন
” ভাবী এই মেয়েটা কে আগে আপনাদের বাসায় দেখি নি তো ৷”

অনিকা খান মৃদু হেসে বললেন
“ও? ও তো আমার ভাতিজা আর এখন তো আমার আরিশের বউ , এই কদিন হলো ওদের বিয়ে হয়েছে ৷”

কথাটা শুনে উনি মাথা নীচু করে নিলেন,ধীমে কন্ঠে বললেন
” বুজেছি ৷”

অনিকা খান বললেন
” ভাইজান আপনার কি আপনার বন্ধুর সাথে কোন দরকার ? না মানে উনি তো এখন বাসাতে নেই তাই আরকি ৷”

উনি ফ্যাকাশে মুখে বললেন
” নাহ ভাবী আমার আরিশের সাথে দরকার আছে একটু ,আরিশকে কি ডাকা যাবে ?মানে বাসায় আছে ?আমি যতদূর খবর পেয়ে এসেছি তাতে আরিশের আজকে বাসায় থাকার কথা ৷”

অনিকা খান আরূর দিকে তাকিয়ে বললেন
” আরূ যা আরিশকে ডেকে আন ,বল যে মফিজ আঙ্কেল এসেছে ওর সাথে দেখা করতে ৷”

আরুর পা আর নড়ছে না সেখানেই আটকে আছে , চোখে জল চলে এসেছে ভয়ে ,টলটল করছে চোখের জল কিন্তু কাওকে বুঝতে দিচ্ছে না মাথা নীচু করে আছে ৷ আরূ যাচ্ছে না দেখে অনিকা খান খানিকটা গম্ভীর চোখে সানাকে উদ্দেশ্য করে আরিশকে ডাকতে বলল ৷
আরু চুপচাপ দাঁড়িয়ে, পারলে ও পালিয়ে বাঁচে ৷

” আপনার মেয়ে কেমন আছে ভাই জান ৷”

উনি নির্বিকার ভাবে বললেন
” জ্বি ভাবী ভালোই ৷”

উনি বেশ ঝিমিয়ে আছেন যেন, মনের ভিতর যেন দোটানা কাজ করছে ৷
কথায় কথায় আরিশ আসলো, আরিশ ওনাকে দেখে বলল
” আঙ্কেল আপনি যে , পেপার্স রেডি ?”

উনি আরিশের দিকে তাকালেন ঠিকই তবে মুখের অবস্থা শোচনীয় ৷ উনি কিছু না বলে বললেন
” বসো তোমার সাথে কিছু কথা আছে ৷”

আরু চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে, ও জানে এর পর যা হবে তার ফলাফল হবে ভীষন রকম দূর্বিষহ ৷

” হমম আঙ্কেল বলুন ৷”

অনিকা খান উঠে গেলেন, নাস্তার ব্যাবস্থা করার জন্য ৷

উনি প্রথমে আরুর দিকে তাকিয়ে তারপর আরিশকে উদ্দেশ্য করে বলল
” বাবা তুমি কি আমার মেয়ে পাপিয়াকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলে ?”

ওনার কথাটা কানে যেতেই আরুর পায়ের নীচে থেকে যেন মাটি সরে গেল, পাপিয়া ওনার মেয়ে ?
আরু পারলে এক্ষুনি হার্ট অ্যাটাক করে ৷
আরিশ নির্লিপ্ত ভাবে হেসে বলল
” কে পাপিয়া ?”

” জ্বি আমার মেয়ে ৷”

” না তো আঙ্কেল , আমি বিয়ের কথা কেন বলতে যাবো , আপনি তো জানেন যে আমি বিবাহিত ৷”

উনি মাথা নীচু করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন
” আমি তো তেমনটাই শুনলাম , গতকাল রাতে পাপিয়া আমাকে তোমার ছবি দেখিয়ে বলল যে তুমি নাকি তাকে পছন্দ করো তাকি বিয়ে করতে চাও , প্রথমে তোমার ছবি দেখে ভীষন অবাক হলাম , তারপর আমি বিশ্বাস করলাম না যে তুমি এমনটা বলেছো কারন এই কদিন আগেই তো তুমি….”

আরিশ বলল
” হমম বুঝেছি কি বলতে চাইছেন , তারপর ৷”

উনি আবার বলতে শুরু করলেন
” তারপর আমি পাপিয়া কে আবার জিজ্ঞেস করালাম যে সে আদেও সঠিক বলছে কি, তারপর সে আমাকে কয়েকটা চ্য৷ট দেখলো কিছু, কালকে রাতের ৷ আসলে আমি আমার মেয়ের সাথে অনেক ফ্রি মাইন্ডের তাই সে সব কথা আমাকে নির্দিধায় বলে ৷ চ্যাটগুলো পড়ে যা বুঝলাম তাতে এটুকু জানলাম যে তোমার সাথে বিয়ের কথা বলেছে সে তোমার কাজিন হয় ৷ আমি আমার মেয়েকে বোঝালাম যে আরিশ এমনটা বলতেই পারেনা কারন আরিশ অলরেডি বিবাহিত আর হয়তো কোন ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে এর মাঝে ৷ আমার মেয়ে স্যার সালিমুল্লাহ তে মেডিক্যাল এ পড়ে 2য় বর্ষ ৷ তোমাকে দেখে তার পছন্দ হয়েছিলো তাই সে কথাটা আমাকে জানিয়েছে , তোমার কাজিনের থেকে বিয়ের প্রস্তাবটা এসেছে তাই মনে হলো তোমাকে জানানো প্রয়োজন তাই ফোনে না বলে সরাসরি বলতে এলাম ৷”

আরিশ যেন এতোকিছু শুনে হতভম্ভ হয়ে গেল, ওর সন্ধেহের আঙুল একজনের দিকেই যাচ্ছে আর তা কে তা খুবই স্পষ্ট ওর কাছে তবুও শিওর হওয়ার জন্য বলল
” আচ্ছা আমার কাজিনের একটা ছবি দেখাতে পারবেন?”

উনি একটু হেসে বললেন
” ছবি তো আমার কাছে নেই বাবা কিন্তু আমার মেয়ের কাছ থেকে যতটুকু শুনেছি তার নাম আরুশি ৷ ”

আরিশ আরুর দিকে তাকালো অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে , আরু নীচের দিকে তাকিয়ে আছে, চোখ থেকে জল গড়াচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন এক্ষুনি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে ৷

উনি উঠে দাঁড়ালেন, আরিশ ও উঠে দাঁড়ালো, উনি আরুকে উদ্দেশ্য করে বলল
” তোমাকে সেদিন বলেছিলাম না একটা মেয়ে ডিভোর্স এর জন্য আপিল করেছে আর সেই মেয়েটা হলো এই যে এই মেয়েটা, এসে শুনলাম সে নাকি তোমার ওয়াইফ ৷ সে বেশ কয়েকদিন আগে আমাকে ফোন করে বলে যে ডিভোর্স পেপার বানাতে, আজকে আমি এনেছিও সাথে করে পেপারটা ৷ কিন্তু আমার এখন মনে হচ্ছে তোমরা আগে নিজেদের মধ্যে কথা বলে দেখো , নিজেরা কি চাও সেটা ভালো করে জানো তারপর না হয় ডিভোর্স এর কথা ভেবো ৷”

আরিশ মাথা নীচু করে আছে, চোয়াল শক্ত হয়ে এসেছে, হাতটা মুঠিবদ্ধ করে রেখেছে , ফরসা কপালে সুক্ষ সুক্ষ শিরা উপশিরা গুলো দৃশ্যমান ৷ আরিশের শরীর কাঁপছে ভীষন রকম দাঁতে দাঁত চেপে রেখেছে, আজ আরু সব সীমা পার করে ফেলেছে ৷

উনি আরুকে উদ্দেশ্য করে বললেন
” এই যে আরুশি, তুমি নেহাতই অল্প বয়সী, আমার মেয়ের বয়সের ,বলতে গেলে আমার মেয়ের সমতুল্য , আমি কখনো তোমার খারাপ চাইবো না তাই বলছি বিয়েটা ছেলে খেলা না তাই হুঠ করে কিছু করার আগে হাজার বার ভেবো, আরিশকে আমি চিনি, ও সোনার টুকরো একটা , রত্নকে হারাতে চাইছো তুমি ৷ ‌”

আরিশের দিকে তাকিয়ে বলল
“আচ্ছা আরিশ আজ আসি,অন্যদিন কথা হবে ৷”

আরিশ মাথা নীচু করে মাথা দাঁড়ালো, ওর মাথায় রক্ত চড়ে গেছে, শরীর রাগে থরথর অরে কাঁপছে ৷ আরু ফুঁপিয়ে কাঁদছে, পাথরের মূর্তির মতো হয়ে গেছে ৷

আরিশের চোখের কোনা বেয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়তেই আরিশ তা দ্রুত মুছে আরুর দিকে একবার তাকিয়ে হনহন করে সিঁড়ি বেয়ে চলে গেল ৷ আরু কাঁদছে, অনিকা খান খাবার এনে বললেন
” ভাইজান চলে গেছেন?”

আরু কাঁদছে কিছু বলছে না দেখে উনি বললেন
” কি হয়েছে ! আরিশ কিছু বলেছে !”

কথাটা শোনার সাথে সাথে আরিশের ঘর থেকে কিছু ভাঙার ঝনঝন আওয়াজ এলো , আরু চমকে উঠলো , ভীষন রকম কষ্ট হচ্ছে আজ ৷ আরু দৗড়ে সিঁড়ি বেয়ে রুমের দিকে ছুটলো, আজ আরিশকে থামানো ওর সাধ্যর বাইরে ৷

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here