কালো মেঘ,পার্ট:6

0
1099

#কালো মেঘ,পার্ট:6
#লেখক:আঃরব।

একটা বলির কাটে আমার মাথা ঢুকানো আছে।আর পিছনে আমার হাত বাধা আছে।পাশে একটা বড় খাড়া রাখা আছে।

কিন্তু আমিতো এখানে।তাহলে বলির কাটে কে?আর বলির কাটে যদি আমি হয় তাহলে আমি কে?

লোকটা মন্ত্র পড়া বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালো।তারপর আস্তে আস্তে ওই বলির কাটের কাছে গেল।তারপর খাড়াটা হাতে তুলে নিল।

তারপর লোকটা জোরে আমার মাথা বরাবর আঘাত করতে গেল।ঠিক তখন কি একটা জাদুর দড়ি এসে লোকটার হাত ধরে ফেললো!

দড়িটা ওই লোকটার দিকে কে ছুড়লো তাকে দেখার জন্য আমি এদিক ওদিক তাকালাম।

কিছুক্ষণ পর একটা মেয়ে ওখানে হাজির হলো।দড়িটার এক প্রন্ত মেয়েটার হাতে।
তারমানে এই মেয়েটাই আমার প্রাণ বাচালো।

মেয়েটা দেখতে প্রচন্ড সুন্দর।একহাতে তসবি,আর অন্য হাতে দড়ি।সাধা একটা ড্রেস পরে আছে।একটা জায়নামাজে দাঁড়িয়ে আছে।জায়নামাজ টা শূন্যে ভাসছে। মানে আলিপ লাইলার জায়নামাজের মতো।আমি মেয়েটার দিক থেকে নজর ফিরাতে পারছি না।

কালো কাপড় পড়া লোকটি কি যেন মন্ত্র পড়লো।সাথে সাথে দড়িটা ছিড়ে গেল।

তারপর লোকটি হাত দিয়ে আগুন ছুড়ে মারলো মেয়েটির দিকে।আর মেয়েটি আগুনের কুন্ডুলি টি তসবি দিয়ে ঠেকালো।

তারপর শুরু হয়ে গেল।ওদের দুজনের লড়াই।আমি দর্শক হিসাবে দেখতে লাগলাম।আর বুঝতে লাগলাম বিষয়টা কি হচ্ছে।

মেয়েটি এক পর্যায়ে হাতের তসবিটি ২টা করে ফেললো। একটা তসবি সে নিজের কাছে রাখলো, আর অন্যটা ওই কালো কাপড় পরা লোকটির দিকে ছুড়ে মারলো।সাথে সাথে তসবিটি সাপের মতো ওই লোকটার পুরো শরীরে পেচিয়ে গেল।

তারপর মেয়েটি আমার দিকে কি যেন একটা ছুড়ে মারলো,আর আমার শরীরের সব বাধন খুলে গেল।তারপর মেয়েটি আমাকে তার জায়নামাজে উঠিয়ে নিল।আর ওখান থেকে চলে যেতে লাগলো।

আমি ওখান থেকে যাওয়ার আগে ওই লোকটির দিকে ঘুরে দেখলাম।লোকটা কে ওই তসবিটা বন্দি করে রেখেছে।আর লোকটি ছটফট করছে।আর আমার মতো দেখতে যেই ব্যক্তি বলির কাটে ছিল সে আর নেই।

তারপর মেয়েটি আমাকে জায়নামাজে করে নিয়ে যেতে লাগলো।

আমি কোথায় যাচ্ছি?কি হচ্ছে এগুলো?ওই কালো কাপড় পরা লোকটা কে?আর এই মেয়েটাই বা কে?আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি মেয়েটাকে ভয়ে কিছু জিগ্গাসাও করতে পারছি না।

তারপর মেয়েটা সুন্দর দেখতে একটা ছোট ঘরের কাছে এসে থামলো।আমি এবার একটু সাহস নিয়ে মেয়েটাকে জিগ্গাসা করলাম,”আপনি কে?আর আমাকে এটা কোথায় নিয়ে আসলেন?
মেয়েটা আমার প্রশ্নের কোন উত্তর দিল না।সুধু রাগি রাগি চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকালো।

আমি আবার ভয়ে চুপ করে গেলাম।এমনিই একটা বিপদ থেকে বেঁচেছি। আর কোন বিপদে পড়তে চাই না।আমি মুখে একবারে তালা মেরে নিলাম।

মেয়েটা জায়নামাজ থেকে নিচে নামলো।আমিও নিচে নামলাম।জায়নামাজ থেকে নিচে নামার সাথে সাথে জায়নামাজ টা উধাও হয়ে গেল।

তারপর মেয়েটি ওই ঘরটির দিকে অগ্রসর হতে লাগলো।আমিও মেয়েটির পিছন পিছন যেতে লাগলাম।আর বারবার আড় চোখে মেয়েটির দিকে তাকাতে লাগলাম।

এমন সুন্দর মেয়ের দিকে কে ই বা না তাকিয়ে থাকবে?আমিতো কোন পির ওলি নয়!
কিন্তু মেয়েটা সুন্দর হলেও রাগটা মনে হচ্ছে অনেক বেশি।

মেয়েটা ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলো।আমিও ঘরটির ভিতরে প্রবেশ করলাম।

ঘরটির ভিতরে দুটো’ রুম দেখলাম।মেয়েটি একটা রুমে প্রবেশ করলো।আমিও ওই রুমে প্রবেশ করলাম।রুমের ভিতরটা আরো সুন্দর।চারদিকে ভিবিন্ন রকমের আলো জ্বলছে।কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো রুমে কোন লাইট নেই।তবে আলো জ্বলছে কি করে!
রুমের ভিতরে দুটি আসন পাতা আছে।একটি আসনে একটা লোক বসে আছে।লোকটির গায়ে সাদা পাঞ্জাবি, পরনে সাদা পায়জামা আর মাথায় সাদা পাগড়ি।রুমটা সুগন্ধে ম-ম করছে।

আমাকে দেখে লোকটি বললো,”এই দিকে এসো আঃরব।

ওমা কি আশ্চর্য! লোকটি আমার নাম জানলো কি করে?

আমি আস্তে আস্তে লোকটির সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।
লোক:বসো ওই আসনে।

আমি ওই আসনে বসলাম।

আমি:আচ্ছা আমি কি একটা কথা জিগ্গাসা করতে পারি?
লোক:হুম বলো।
আমি:এটা কোন জায়গা?আর আমি এটা কোন জায়গায় আছি?আর আমাকে এখানে আনার কারন কি?
লোক:তুমি এখন কালো জাদুর দুনিয়ায় আছো।আর তোমাকে এখানে আনার কারন হলো,তোমাকে ওই শয়তানদের হাত থেকে বাচানো।
আমি:কোন শয়তান?
লোক:তোমাকে কালো জাদু করা হয়েছে।এই কালো জাদুর নাম হলো আত্না বন্ধ কালো জাদু।আর তুমিই তুমি না।
আমি:মানে?
লোক:মানেটা হলো এটা তোমার আত্না আর শরীরটা তোমার রুমে পড়ে আছে।তোমাকে এই কালো জাদু করার কারনে তোমার শরীর থেকে আত্না বের হয়ে গিয়েছে।
আমি:কিহ!তাহলে আপনারা কে?
লোক:আমরা হলাম ভালো জিন।আর যারা তোমাকে মারতে চায় তারা হলো খারাপ জিন।
আমি:কিন্তু আপনারা আমাকে সাহায্য কেন করছেন?
জিন:তোমাদের মসজিদের হুজুর আমাকে আদেশ করেছে তোমাকে বাচানোর জন্য।
আমি:কিন্তু আমি বাচবো কি করে?মানে আমার আত্না আমার শরীরে যাবে কি করে?
জিন:যে তোমাকে কালো জাদু করেছে তাকে তোমাকে শেষ করে দিতে হবে।মানে তাকে মেরে ফেলতে হবে।
আমি:কিন্তু আমাকে কালো জাদু করলো কে?
জিন:সেটা নিজের চোখেই দেখ।

আমার সামনে একটা বড় থালা দেখলাম। থালায় পানি রাখা আছে।বুড়ো জিনটা কি যেন সব পড়ে ওই থালার পানির ভিতরে ফুঁ দিল।সাথে সাথে পানিটা টকবক করে ফুটতে লাগলো।

তারপর ওই পানির ভিতর একটা ছবি ভেসে উঠলো।ছবিটা দেখে আমি ১০০০ভোল্টের শকট খেলাম!

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here