কালো মেঘ,পার্ট:7

0
1524

#কালো মেঘ,পার্ট:7
#লেখক:আঃরব।

আমার সামনে একটা বড় থালা দেখলাম। থালায় পানি রাখা আছে।বুড়ো জিনটা কি যেন সব পড়ে ওই থালার পানির ভিতরে ফুঁ দিল।সাথে সাথে পানিটা টকবক করে ফুটতে লাগলো।

তারপর ওই পানির ভিতর একটা ছবি ভেসে উঠলো।ছবিটা দেখে আমি ১০০০ভোল্টের শকট খেলাম!

আরে এটা তো আরশির ছবি।তারমানে আরশি আমাকে কালো জাদু করেছে?ওর মনে আমার জন্য এতো ঘৃণা জমে আছে।আমাকে মেরে ফেলার জন্য ও এমন করতে পারলো?আমি কল্পনাও করতে পারছি না।

এখন আপনারা ভাবছেন এই আরশি কে?
আরশি হলো আমার এক্স জিএফ।
আর এখন সে আমার আন্টি।মানে সোহানের মা।
কথাটা শুনে খুব অবাক হচ্ছেন তাই না?!
কথাটা শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।

চলুন তাহলে আপনাদের পুরো ঘটনা খুলে বলি।

আমি আর আরশি দুজন দুজন কে খুব ভালোবাসতাম।খুব মানে খুব।

সেই ক্লাস 10 য়ের কথা।নতুন নতুন fb খুলি । আমি মেয়েদের সাথে তেমন কথা বলতাম না।কোন মেয়ের রিকুয়েষ্টও একসিপ করতাম না।আসলে আমি মেয়েদের থেকে সব সময় দূরে থাকার চেষ্টা করতাম।কারন,মেয়েরা কান্না করতে করতেও মিথ্যা বলে।আমি ওদের একদম বিশ্বাস করতাম না।কিন্তু জানিনা,আরশি আক্তার নেহা নামক আইডিটা আমার সাথে এড হলো কি করে?

একদিন হঠাৎ করে ওই আইডি থেকে ম্যাছেজ আসে।
আরশি:আসসালামু আলাইকুম।
আমি অনেকক্ষণ চিন্তা করার পর সালামের উত্তর দিলাম।
আরশি:কেমন আছেন?
আমি:আলহামদুলিল্লাহ।
আরশি:কি করছেন?
আমি:কিছু না।
আরশি:খাওয়া দাওয়া করেছেন?
আমি:হুম।
আরশি:আমি আপনাকে কত প্রশ্ন করছি,আর আপনি আমাকে কোন প্রশ্ন করছেন না কেন?
আমি:দেখেন আমি মেয়েদের সাথে কথা বলিনা।
আরশি:কেন?কোন সমস্যা?
আমি:আমি মেয়েদের বিশ্বাস করিনা।
আরশি:কেন? মেয়েরা আবার আপনার কি ক্ষতি করলো?
আমি:ওতো আমি বলতে পারবো না

এভাই প্রথমে একটু একটু কথা হতো।তারপর আস্তে আস্তে কথা বলা বাড়ে।তারপর দুজন বন্ধুও হয়ে যায়।

কিন্তু হঠাৎ একদিন আরশি আমাকে প্রপোজ করে।আমি একবারে না করে দিয়।কিন্তু ও না ছোড় বান্দা।

আমি ওর সাথে আস্তে আস্তে কথা বলা কমিয়ে দিয়।কিন্তু কেন জানিনা ওর সাথে কথা না বলে আমিও থাকতে পারতাম না।

আস্তে আস্তে আমিও ওর প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ি।তারপর আমাদের ভালোবাসা শুরু হয়।

১বছরের রিলেশন টা ভালোই ছিল।কত মান-অভিমান ভালোবাসা।

কিন্তু ১বছর পর একদিন সন্ধা সময় আরশি ফোন দিয়ো খুব কান্না করছিল।
আমি জিগ্গাসা করতে সে বললো,”আমার ফ্যামেলির লোকজন জেনে গেছে সব।ওরা আমাকে খুব মেরেছে। ওরা বলেছে আমার নাকি অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দেব।প্লিজ আঃরব আমি তোমাকে ছাড়া বাচবো না।আমি সুধু তোমার হয়েই থাকতে চাই।

আমি ও-কে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে শান্ত করি।
রাতের বেলায় একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসে।
আমি ফোন করতেই একজন লোক বলে,”তোমার নাম কি আঃরব?
আমি:হুম
লোক:আমি আরশির বাবা বলছি।
আমি:জি আংকেল বলেন।
আংকেল:শোন,তুমি আরশির সাথে আর কখনো যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবে না।আর যদি করো তাহলে আমরা আরশিকে খাবারে বিষ দিয়ে মেরে ফেলবো।আমাদের কাছে ওর থেকে আমাদের মান -সম্মানটাই বড়।
আমি:আংকেল ওকে কিছু বলবেন না প্লিজ।ওর কোন ক্ষতি করেন না।আমি ওর সাথে আর যোগাযোগ রাখবো না।

আমি অনেক ভয় পেয়ে যায়।ওরা যদি সত্যিই আরশির কিছু করে দেই।তাই আমি আরশির সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিই।কারন,আমার কাছে ওর ভালো থাকাটাই সব থেকে বড় বিষয়।

খুব কষ্ট হতো।রাতের বেলাই সাদের উপরে উঠে পাগলের মতো চিৎকার করতাম।

আরশি আমার সাথে যোগাযোগ করার বারবার চেষ্টা করতো।কিন্তু আমি কোন ভাবেই ওর ফোন রিসিপ করতাম না।কিন্তু ও না ছোড় বান্দি।

তাই আমি বাধ্য হয়ে ফোন+ সিমটা পাল্টিয়ে ফেলি।

কিন্তু ওকে ছাড়া আমার যে কত কষ্ট হতো।সেটা বলে বুঝাতে পারবো না।

আস্তে আস্তে দিন কেটে যায় আরশি কে ছাড়ায়।প্রায় বছর ৩বছর কেটে গিয়েছে।এখন আর আরশির কথা ওতোটা মনে পড়ে না।

কিন্তু একদিন সোহানের বাড়ি যায়।সোহানের খোজে। দরজায় টুকা দিতেই দরজা খুলে দেই একটা মেয়ে।

আমি মেয়োটাকে দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না।চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়তে লাগলো।কারন ওটা আমার সেই আরশি ছিল।
আমি ওখান থেকে চলে আসি।

পরে সোহানের থেকে জানতে পারি ওর আব্বু আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেছে।কারন সোহানের মা অনেক আগেই মারা গিয়েছিল।সোহানের ভাইটাও খুব ছোট ছিল।ওর খেয়াল রাখার জন্যেই আবার দ্বিতীয় বিয়ে করা সোহানের আব্বুর।

আমার তো বুকটা আবার কেমন যেন হাহাকার দিয়ে উঠে।

একটা সময় ওই মেয়েটাকে কত ভালোবাসতাম।আর আজ সে আমার বন্ধুর আব্বুর স্ত্রী।কখনো ভাবিনি আরশির সাথে আবার দেখা হবে?তাও আবার এই ভাবে।

আমি অনেক কষ্ট করে নিজেকে কন্ট্রোল করি।কিন্তু আমি আরশির মধ্যে আমার জন্য তেমন কিছুই লক্ষ্য করিনি।সব সময় স্বাভাবিক ব্যবহার ই করতো আমার সাথে।

আমি ভেবেছিলাম হয়তো সে আমাকে তার মন থেকে পুরোই মুছে দিয়েছে।এখন নতুন করে আবার শুরু করেছে।

আমিও নিজের মনকে অনেক করে বুঝিয়ে নিই।

খুব ভালোই কাটছিল দিন গুলো।তারপর প্রায়৩-৪ বছর পর এইসব ঘটনা শুরু হয়ে গেল।

জিন:কি ভাবছো?অতিতের কথা?
আমি:জি না।কিছুই ভাবছি না।আচ্ছা আমি যদি এই কালো জাদু কাটি তাহলে কি যে আমাকে কালো জাদু কটেছে তার কি কোন ক্ষতি হবে?
জিন:দেখ,যেই তান্ত্রিক তোমাকে কালো জাদু করেছে তার ক্ষতি হবে।কিন্তু তাকে দিয়ে যে করিয়ে নিয়েছে তার কোন ক্ষতি হবে না।
আমি:আলহামদুলিল্লাহ। আমাকে এখন কি করতে হবে?
জিন:তোমাকে এখন জানু শয়তানের সাথে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে।
আমি:এই জানু শয়তান আবার কে?
জিন:ও হলো কালো জাদু জিনদের সরদার।ও একজন শয়তান।ওকে খুশি করতে পারলেই ওর কাছে যা চাওয়া যায় ও তাকে তাই দেয়।
আমি:কিন্তু আমি একজন সাধারণ মানুষ হয়ে একজন কালো জিনের সরদারের সাথে যুদ্ধ করবো কি করে?আমিতো ওকে দেখতেই পাব না।
জিন:আমি তোমার ভিতরে শক্তি দেব।যেই শক্তি দিয়ে তুমি আল্লাহ আর ফেরেস্তা ব্যতীত সব অদৃশ্য বস্তুকে দেখতে পাবে।আর তোমার এই কাজে তোমাকে জান্নাত সাহা্য্য করবে।
আমি:জান্নাত আবার কে?
জিন:যেই পরিটা তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসলো।
আমি:ওহ

তারপর ওই বুড়ো জিনটা কিসব পড়ে একটা পানির গ্লাসে ফুঁ দিল।তারপর ওটা আমাকে খেতে বললো।আমিও ওই ওানিটা খেয়ে নিলাম।পানি খাওয়ার সাথে সাথে শরীরে একটা আলাদা শক্তি অনুভব করতে লাগলাম।মনে হচ্ছে হাজারটা দত্যের শক্তি আমি পেয়ে গিয়েছি।

আমি:তাহলে আমি এখন যায়।
জিন:দাঁড়াও। তোমাকে তো এখনো আসল অস্ত্র টাই দেওয়া হয়নি।

তারপর বুড়ো জিনটা ওটা গিয়ে একটা বাক্স খোলে।বাক্সটা খোলার সাথে সাথে ওই বাক্সের ভিতর থেকে এতো আলো বের হচ্ছে যে আমি একদম সয্য করতে পারছি না।

আমার চোখ মনে হচ্ছে ঝলসিয়ে যাবে!

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here