কালো মেঘ,পার্ট:8 (শেষ)

1
2167

#কালো মেঘ,পার্ট:8 (শেষ)
#লেখক:আঃরব।

আমি:তাহলে আমি এখন যায়।
জিন:দাঁড়াও। তোমাকে তো এখনো আসল অস্ত্র টাই দেওয়া হয়নি।

তারপর বুড়ো জিনটা ওটা গিয়ে একটা বাক্স খোলে।বাক্সটা খোলার সাথে সাথে ওই বাক্সের ভিতর থেকে এতো আলো বের হচ্ছে যে আমি একদম সয্য করতে পারছি না।

আমার চোখ মনে হচ্ছে ঝলসিয়ে যাবে!

আমি:আমি আর সয্য করতে পারছি না এই আলো।

বুড়ো জিনটা কি যেন পড়লো।সাথে সাথে সব আলো মিলিয়ে গেল।পুরো পুরো আগের মতো আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল।

তারপর জিনটা ওই বাক্স থেকে একটা ছুরি বের করলো।
তারপর ছুরিটা আমার হাতে দিল।
জিন:এটা হলো সেই ছুরি সেটা দিয়ে তুমি ওই কালো জাদুর জিন কে মারতে পারবে।

আমি ছুরিটা নিলাম।
আমি:তাহলে আমরা এখন যায়?
জিন:হুম যাও।

তারপর আমরা ঘরের বাইরে আসলাম।
জান্নাত তার জাদু জায়নামাজ কে আহ্বান করলো।সাথে সাথে জাদু জায়নামাজ হাজির হলো।

তারপর আমরা জায়নামাজে উঠে পড়লাম।
জান্নাত:আমাদেরকে ওই কালো জাদু জিনের সরদারের কাছে নিয়ে চলো।

জায়নামাজ টা উড়তে শুরু করলো।

উড়তে উড়তে একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে গেল।
আমি:আরে এটা কোন জায়গা?এখানে তো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
জান্নাত:এই আপনি চুপচাপ থাকেন।আর আমার পিছন পিছন আসেন।

আমি আর কোন কথা না বলে জান্নাতের পিছু পিছু যেতে লাগলাম।
জান্নাত হাঁটতে হাঁটতে একটা গোরস্থানের কাছে গেল।
ওখানে অনেক গুলো কবর আছে।কবর গুলো অনেক পুরোনো হয়ে গিয়েছে।

সব থেকে যেটা ভাঙা আর পুরাতন কবর ওটার কাছে গিয়ে জান্নাত দাঁড়ালো।আমিও ওর পিছনে পিছনে ওই কবরের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।

আমি:এটা আবার কার কবর?
জান্নাত:এটার নিচেই ওই শয়তান জিনের সরদারের বাড়ি।
আমি:এত বড় সরদার হয়ে এই ভাঙা কবরে থাকে, হা হা হা।
জান্নাত আমার দিকে রাগি রাগি চোখ নিয়ে তাকালো।
আমি মাথাটা নিচু করে নিলাম।

তারপর জান্নাত ওই কবরের ভিতর একটা লাফ দিল।আমিও লাফ দিলাম।

ওমা এটা কি!!এটাতো একটা রাজপ্রাসাদ!
কিন্তু উপরেতো ভাঙা কবরছিল,আর নিচে রাজপ্রাসাদ!

জান্নাত হাঁটতে শুরু করলো।আমিও ওর পিছনে হাটতে শুরু করলাম।

হঠাৎ একটা বিশাল বড় সাপ আমাদের দুজন কে লেজ দিয়ে একটা বাড়ি দিল।বাড়ি খেয়ে আমরা দুজন অনেক দূরে গিয়ে পড়লাম।

তারপর জান্নাত কি একটা যেন পড়লো।সাথে সাথে ওর মুখ দিয়ে আগুন বের হতে লাগলো।জান্নাত ওই সাপটা কে আক্রমণ করলো।
আর আমি হা করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলাম।

সাপটা মায়া শক্তি দিয়ে জান্নাত কে আঘাত করলো।সাথে সাথে জান্নাত মুখ থেকে বের হওয়া আগুন বন্ধ হয়ে গেল।

আবার জান্নাত কি যেন পড়তে গেল,কিন্তু কোন কিছু পড়ার আগেই সাপটা লেজ দিয়ে জান্নাত কে জড়িয়ে ধরলো।

তারপর আস্তে আস্তে জান্নাত কে তার মুখের দিকে নিয়ে যেতে লাগলো। জান্নাত কে যখন সাপটা খেয়ে ফেলতে যাবে ঠিক তখন ই আমি ওই ছুরিটা সাপের দিকে ছুড়ে মারলাম।সাপটার শরীর থেকে মাথাটা আলাদা হয়ে গেল।

জান্নাত সাপের কবল থেকে মুক্তি পেল।
জান্নাত আমার দিকে একবার তাকিয়ে সাপের চোখের ভিতর লাফ দিল।

আমিতো অবাক!এটা কি হলো?
কিন্তু বেশি অবাক হওয়ার সময় আমার হাতে নেই।
আমিও ওই সাপের চোখের ভিতর লাফ মারলাম।

আমরা একটা জঙ্গলের ভিতর এসে পড়লাম।

কিন্তু এই জঙ্গল টা তো আমার চেনা চেনা লাগছে।
কোথায় যেন দেখেছি? কোথায়,কোথায়?
হুম মনে পড়ছে। আরে এটাতো কালো মেঘের জঙ্গল। কিন্তু জান্নাত আমাকে এখানে কেন নিয়ে আসলো?
তাহলে এখানেই কি ওই শয়তানের বাড়ি?

জান্নাত জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ওই বাড়িটাই গেল।আমিও জান্নাতের পিছু পিছু গেলাম।
জান্নাত বাড়িটার সামনে গিয়ে কি যেন একটা পড়লো।সাথে সাথে মাটির নিচের দরজা খুলে গেল।

জান্নাত তার ভিতরে প্রবেশ করলো,সাথে আমিও করলাম।

ভিতরটা অনেক অন্ধকার। এতোটাই অন্ধকার যে নিজেকেই নিজে দেখতে পাচ্ছি না।

তখন ই জান্নাতের চোখ দিয়ে এক প্রকার আলো বের হলো।সাথে সাথে পুরো ঘর আলোকিত হয়ে গেল।

একজন কে সুয়ে থাকতে দেখলাম।
ঘরটা আলোতে ছেয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ওই জীবটা ওঠে দাঁড়ালো।

আমার মনে হচ্ছে এটাই ওই শয়তানটা।মাথাটা কুকুরের। হাত দুটো মানুষের। পা দুটো গাধার। আর গায়ের রং লাল টকটকে।

আমাদের দেখে ওই শয়তানটা বলে উঠলো, “এই কারা তোরা?আর তোদের সাহস কি করে হলো আমার ঘুম ভাঙানোর?
জান্নাত :তোকে এবার চির নিদ্রায় সজ্জিত করবো।তোর মৃত্যুর সময় এসে গিয়েছে শয়তান।
শয়তান : কি!আমার মৃত্যু? হা হা হা!তোরা এখানে এসে নিজের মৃত্যু নিজেরাই ডেকে এনেছিস।
জান্নাত:দেখা যাক কারা কাকে মারে।

তারপর জান্নাত ওই শয়তানটার দিকে মায়া জাদু মারতে লাগলো।কিন্তু জান্নাতের কোন কিছুতেই শয়তানটার কিছুই হচ্ছে না।

শয়তানটা জান্নাতের দিকে জাদু দিয়ে আঘাত করলো।জান্নাত দূরে ছিটকিয়ে গিয়ে পড়লো।

আমি জান্নাত কে তুললাম।
তারপর আমরা দুজন মিলে শয়তানটার সাথে লড়াই করতে লাগলাম।
জান্নাত:ওকে মারতে হলে ওই ছুরিটা ওর কপালে মারতে হবে,তাহলেই ওই শয়তানটা মারা যাবে।
আমি:ওকে।

আমরা দুজন মিলে শয়তানটাকে মারার পরও ওর কিছুই হচ্ছে না।
শয়তানটা নিজের শরীরের আকার বড় করতে লাগলো।

আমি ইচ্ছা করেই ওর হাতে ধরা দিলাম।
শয়তানটা আমাকে হাত দিয়ে ধরে ওর মুখে যখন ই ঢুকাতে যাবে ঠিক তখন ই আমি ওই ছুরিটা বের করে ওর কপালে ঢুকিয়ে দিলাম।

সাথে সাথে শয়তানটা বিকট একটা চিৎকার দিল।

আর আমি নিজেকে আমার বিছানায় আবিস্কার করলাম।
আমি দেখলাম আমি আমার বিছানায় সুয়ে আছি।আর আমার একপাশে আমার আব্বু আর আম্মু।আর অন্য পাশে মসজিদের হুজুর।

সব কিছু যেন আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে।আমার কিছুই মনে পড়ছে না।তবে শেষ বার জান্নাতের হাসিটা সুধু মনে পড়ছে।

আমি:আম্মু আমার কি হয়েছিল?
আম্মু কিছু বলতে যাবে,ঠিক তখন ই আব্বু আম্মুকে থামিয়ে দিয়ে বললো,”কিছু হয়নি বাবা।তুমি ঘুমাও।
আমি:আচ্ছা।

তারপর সবাই আমার ঘর থেকে চলে গেল।

আমি কিছুক্ষণ সুয়ে থাকার পর সোহানের কাছে ফোন করলাম।কিন্তু সোহানের ফোন বন্ধ বলছে।আমি অনেক বার চেষ্টা করলাম।কিন্তু বারবার একিই প্রবলেম।ফোন বন্ধ।

আমি রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।আম্মু কে রান্না ঘরে দেখতে পেলাম।আমি আম্মুর কাছে গিয়ে জিগ্গাসা করলাম,”আম্মু সোহানের কি হয়েছে বলতে পারবে?ওর ফোন বারবার বন্ধ বলছে কেন?
আম্মু:শোন বাবা,সোহানের আম্মু সোহান আর সৌরভ কে খুন করে নিজে আত্মহত্যা করেছে।
আমি:আরে আম্মু তুমি এটা কি বলছো!এটা হতে পারে না।আমি এটা বিশ্বাস করিনা।
আম্মু:আমি সত্যি কথায় বলছি।
আমি:আমি তাহলে কিছু জানতে পারলাম না কেন?আর এটা কবে হলো?আর আমি তখন কোথায় ছিলাম?
আম্মু:তখন তুই,,,,,,,,,,,
আব্বু:এই তুমি আবার শুরু করেছো?বাবা তুমি নিজের রুমে গিয়ে এখন সুয়ে পড়ো।এখন রাত হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কাল সকালে কথা বলবো।

আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ নিজের রুমে চলে আসলাম।কিন্তু আমি এখনো আম্মুর কথা বিশ্বাস করতে পারছি না।

আস্তে আস্তে রাত বাড়তে লাগলো।ঘড়িতে তখন ২:৩০ বাজে আমার চোখে ঘুম নেই।আমি কোন শব্দ না করে বাইরে চলে আসলাম।
তারপর বাইকটা বের করলাম।বাইকটা কিছু দূর ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে গেলাম।

তারপর বাইকটা স্টাট দিয়ে সোহানদের বাড়িতে গেলাম।কিন্তু গেটে তালা লাগানো।
তাহলে আম্মুর কথা গুলো কি সত্য?

আমি বাইক নিয়ে চলে গেলাম গোরস্থানে।তারপর বাইক রেখে আমি গোরস্থানের ভিতরে ঢুকলাম।

প্রচন্ড অন্ধকার।আশেপাশে সুধু কুকুরের ডাক শোনা যাচ্ছে।ফোনটাও নিয়ে আসা হয়নাই।
আমি ভিতরের দিকে যেতে লাগলাম।
মনে হলো কেউ আমাকে ডাকছে!

আমি ভালো করে শোনার চেষ্টা করলাম।
আরে এটাতো সৌরভের আওয়াজ!কিন্তু ও এতো রাতে এখানে কি করছে?
আমি আওয়াজটা কোথায় থেকে আসছে সেটা খুজতে লাগলাম।

তারপর মনে হলো আওয়াজটা কবরের ভিতর থেকে আসছে!কিন্তু এটা কি করে সম্ভব?কবরের ভিতর থেকে কি করে আওয়াজ আসতে পারে!

ভয়ে আমার হাত-পা থর থর করে কাঁপতে লাগলো।আমি আওয়াজটা ভালো করে শোনার জন্য মাটিতে বসে কবরের একবারে কাছে কান পাতলাম।

আওয়াজটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আমি মাথাটা তুলতে যাব ঠিক তখন ই কবর থেকে একটা হাত বের হয়ে আমার গলা চেপে ধরলো!

(শেষ)

গল্পটা কেমন ছিল কমেন্টে জানাবেন।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here