#কুয়াশায়_ঘেরা
#পর্ব_০৩
#জিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
অন্ধকারে নির্জন রাস্তায় একা একটা ম*র*দে*হ সামনে নিয়ে গলা শুকিয়ে আসলো আশরাফুলের। হঠাৎ মুঠোফোনের শব্দে চমকে উঠলো। কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন রিসিভ করে নিজেকে ধাতস্থ করে জিজ্ঞেস করলো,
-“কোথায় তুই?”
-“তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।”
আশরাফুল প্রভাতিকে আশ্বস্ত করে বলল,
-“আর একটু দাঁড়া, আমি এক্ষুনি আসছি। কোনো কিছুর আভাস পেলেই আমাকে কল করবি। ফোন চালু রাখ।”
প্রভাতির নাম্বার থেকে লাইন ডিসকানেক্ট করে ইলানের নাম্বারে কল দিলো। এটা যার কাজ, তাকেই সামলাতে দেওয়া উচিত। একবার রিং হওয়ার মাঝেই ফোন রিসিভ হলো।
-“এড্রেস পাঠাচ্ছি, এক্ষুনি ফোর্স নিয়ে চলে আয়। মনে হচ্ছে জটিল কে*স।”
ইলান ওপাশ থেকে বলল,
-“আসছি আমি।”
পনেরো মিনিটের মাথায় ইলান তার টিম নিয়ে পৌঁছে গেলো। মেয়েটির ন*গ্ন শরীর আশরাফুলের শার্টে ঢেকে রাখা। তার বাবার যথেষ্ট নামডাক আছে। বিজনেসের পাশাপাশি রাজনৈতিক লোকের সাথেও ওঠাবসা। বাবার সুবাদে মেয়েটিও লোকচোখে পরিচিত মুখ। এত ক্ষমতাশীল ব্যক্তির মেয়ে হয়েও এত অবহেলায় মৃ*ত্যুকে বরণ করে নিলো। আল্লাহ কখন কাকে কিভাবে মৃ*ত্য দেবেন সেটা একমাত্র তিনিই ঠিক করেন।
আশরাফুলের কাছ থেকে বিবরণ শুনে লা*শটি এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করলো। আশরাফুল তাড়া দিয়ে বলল,
-“প্রভা আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে শপিং মলে। ওকে বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে।”
প্রচন্ড আক্রোশের সাথেই ইলান চেঁচিয়ে উঠলো,
-“হোয়াট? এই তোর বোন কি রাত ছাড়া বের হতে পারেনা? সবসময় ও রাত করে কোথাও বের হবে বা ফিরবে। এই মেয়েটার দিকে দেখ? দেশের অবস্থা কিছুই কি নজরে পড়ছেনা? ওর কথা বাদই দিলাম, তুই? তোর কোনো কমন সেন্স নেই। বোনকে সামলাতে পারিস না? ব্যাটা কা*পু*রু*ষ।”
শেষ কথাটি দাঁতে দাঁত চেপেই বলল ইলান।
আশরাফুল তপ্ত শ্বাস ফেলে বলল,
-“এখন আমি যাই। অপেক্ষা করে আছে প্রভাতি।”
ইলান রা’গের চো*টে আর কথা বললনা। আগামীকাল জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুলকে থাকতে হবে। যেহেতু লা*শটি তার গাড়ির সামনেই পড়েছিলো!
আশরাফুল স্পিড বাড়িয়ে দিয়ে শপিংমলে পৌঁছেছে। রাস্তায় দু’একজন মানুষকে দেখা যাচ্ছে। সমস্ত কার্যাদি শেষে বিছানায় শরীরটুকু এলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ফিরছে সবাই। মলের সামনে একপাশে প্রভাতিকে ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কলিজায় পানি ফিরে এলো। প্রভাতি এগিয়ে এসে গাড়িতে চড়লো। মুখ ঝামটা মেরে বলল,
-“তুমি না আসতে, এটাই ভালো ছিলো। একঘন্টা যাবত অপেক্ষা করিয়েছো আমায়। ভাবি যে কিভাবে তোমাকে সহ্য করে? বিরক্তকর মানুষ।”
বোনকে সুস্থসবল পেয়েছে এতেই শান্তি। তাই চুপচাপ প্রভাতির সব কথা হজম করে নিলো আশরাফুল।
ভাইবোন রাতে বাসায় ফিরেই দেখলো এলাহিকান্ড।
আনোয়ারা জাহান রান্নাঘরের হাঁড়ি-পাতিল ছো*ড়া*ছু*ড়ি করছেন। নিচের বিল্ডিং এর মোহনা এসে সাইফার কথা জিজ্ঞেস করলো।
-“আন্টি ভাবি কবে আসবে?”
এরপর থেকেই শুরু। মেয়েটা ভ*য় পেয়ে চলে গেলো।আনোয়ারা জাহান সাইফার কথা শুনেই মোহনার উপর অযথা চেঁচামেচি করলেন। রান্নাঘর থেকে হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে ছুঁ’ড়ে মা*র*ছে*ন। স্বামী মা*রা যাওয়ার পর থেকেই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সব সময় সুস্থই থাকেন। হুট করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রতিবার যেকোনো একজনের প্রতি উনার ক্ষো*ভ জন্মে। চিকিৎসা চলছে, কিন্তু খুব একটা উপকার হচ্ছেনা। আবার ও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই সময় টাতে অতিরিক্ত ঠান্ডা আর টক খাবার বেশি খান। এবার সাইফার প্রতি ক্ষো*ভ দেখে আশরাফুল আগেই চাইছিলো সাইফাকে তার বাবার বাড়ি রাখতে। সাইফা এখন অন্তঃসত্ত্বা। এসবে তার উপর মানসিক প্রভাব পড়বে। তারউপর কখন কি ছুঁ*ড়ে মা*রে*ন আনোয়ারা বেগম। কোনোভাবে পেটের উপর আ*ঘাত লাগলে কি হবে ভাবতে পারছেনা আশরাফুল। সব মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিলো সাইফাকে বাবার বাড়ি রেখে আসবে।
সাইফার যাওয়ার কথা তুলতেই আনোয়ারা জাহান না করে দিলেন। এ সময় মায়ের কথার বিপরীতে কিছু বললে মা আরও ক্ষে*পে যাবেন। একদিকে স্ত্রী-সন্তান, অন্যদিকে মা। মা তাকে জন্ম দিয়ে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছে, আর স্ত্রী তার শারিরীক মানসিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাবা হওয়ার আনন্দ দেবে। কারো গুরুত্বই কম নয়। কাউকেই ছাড়তে পারবেনা আশরাফুল।
তাই সেদিন সুযোগ পেতেই হাত ছাড়া করেনি। মা যখন টাকার হিসেব নিয়ে একটু চেঁচামেচি করছিলেন, তখনই সাইফাকে বাবার বাড়ি দিয়ে আসার মোক্ষম সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে সে।
প্রভাতিকে রুমে পাঠিয়ে আশরাফুল ব্যস্ত হয়ে পড়লো মাকে সামলাতে। মা যেমনই হোক, সে তো মা’ই।
পরেরদিন প্রভাতি সাইফার নাম্বারে কল দিলো তার খোঁজখবর নিতে।
একপর্যায়ে সাইফা বলল,
-“সেদিন বিয়ের চমকটা কেমন ছিলো? আমি এখানে আসার দুদিন আগেই শুনেছি, মা বলছিলেন ছেলেটার সাথে তোমার দেখা করিয়ে দেয়ার কথা।”
প্রভাতি নাকের পাটা ফুলিয়ে বলল,
-“একদমই বাজে ছিলো।”
সাইফা খিলখিলিয়ে হেসে উঠে বলল,
-“ইশ! কাছে নেই বলে তোমার চেহারা দেখার দারুণ মুহূর্তটা মিস করে গেলাম।”
——————
সকাল সকাল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আশরাফুলকে ডাকা হলো। যে মেয়েটি মা*রা গিয়েছে তার নাম তুর্শি। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হলো। আপাতত তুর্শির ম*র*দে*হ পোস্টমর্টেম এর জন্য পাঠানো হয়েছে।
আশরাফুলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সে ইলানের সাথে কিছু কথা শেষ করে বেরিয়ে পড়ে। কে*সের ত’দন্তের ভার এসে পড়ে ইলানের উপর। ইলানের আন্ডারে সে সহ পাঁচজন আছে। ইলান ক্রাইম ব্রাঞ্চের লোক। আপাতত তুর্শির বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলো ইলান, মুনির, শিহাব, নাজমুল, তনুশ্রী।
তুর্শির বাড়ির সকলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেই বাসায় ফিরবে।
তুর্শির বাবা স্বপন মির্জা মেয়ে হারিয়ে শান্ত, নিরব হয়ে পড়েছেন। উনার স্ত্রী মেয়ের শোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। যেনো বাড়ি নয়, স্তব্ধপুরীতে এসেছে ইলান। জহুরি নজরে ইলান সহ পাঁচজন অফিসার সবকিছু পরোখ করছে। ইলান স্বপন মির্জার মুখোমুখি বসলো। সরাসরি কথা বলতেই পছন্দ করে সে। তাই কোনরকম ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে না বলে সোজাসাপ্টা শুধালো,
-“আপনার মেয়ে কবে নিখোঁজ হয়েছিলো?”
সময় নিলেন না স্বপন মির্জা। তিনি জানালেন,
-“গত পরশু সকালেই বেরিয়েছে স্কুলের উদ্দেশ্যে। সেদিন বিজনেসের কিছু কাজ সেরে ওর স্কুলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম আমি। স্কুলের ভেতর ঢুকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তুর্শি স্কুলে আসেনি। প্রচন্ড অবাক হলাম আমি। আমার মেয়ে তো কখনো এমন কাজ করেনা, সবসময়ই বাবা মায়ের বাধ্য মেয়ে ছিলো। ভাবলাম বাড়ি ফিরলেই জেরা করবো। কিন্তু সারাদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও তুর্শি বাড়ি ফেরেনি।”
ইলান তীক্ষ্ণচোখে তাকালো স্বপন মির্জার দিকে।
-” আপনার মেয়ে বাড়ি থেকে বের হলো স্কুলে যাবে বলে। আপনি খোঁজ নিয়ে জানলেন মেয়ে স্কুলে যায়নি। সারাদিনেও বাড়ি ফেরেনি। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো আপনি বা আপনার পরিবার মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে কোনো পুলিশ কমপ্লেন করেন নি! তারউপর আপনি একজন ক্ষমতাবান ব্যক্তি। ভাবনার বিষয়, মোটেও ফে’লে দেওয়ার মতো ব্যাপার নয়।”
স্বপন মির্জাকে বেশ অপ্রস্তুত দেখালো, যা কারোরই চোখ এড়ালোনা।
স্বপন মির্জার চ্যালা জহির খ্যাঁক করে উঠলো। বলল,
-“স্যারের একটা ইমেজ আছে সমাজে। তার মেয়ে নিখোঁজ, হুট করেই ব্যাপারটা ছ’ড়া’ছড়ি হয়ে গেলো। স্যারের ইমেজের উপর একটা ছাপ পড়তো না?”
জুনিয়র অফিসার মুনির বলল,
-“উনার মেয়ে আগে, নাকি ইমেজ?”
স্বপ্নন মির্জা নিজেকে ধাতস্থ করে বললেন,
-“আমি পুলিশকে না জানিয়ে ব্যাপারটা নিজেই হ্যান্ডেল করতে চেয়েছি। চারদিকে লোক লাগিয়ে দিয়েছি তুর্শিকে খুঁজতে। কিন্তু খুঁজে পাওয়ার আগেই….
আর কিছু বলতে পারলেননা স্বপন মির্জা। হু হু করে কেঁদে ফেলেন।
ইলানের জন্য আপাতত এতটুকু ইনফরমেশনই যথেষ্ট। স্বপ্নন মির্জাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“নিজেকে শক্ত রাখুন। যেকোনো ইনফরমেশনের জন্য আমরা আপনার বাড়িতে চলে আসতে পারি। তৈরি থাকবেন।”
ইলানসহ তার আন্ডারের পুরো টিম বেরিয়ে পড়ে।
তনুশ্রী চিন্তিত কন্ঠে বলল,
-“স্যার! স্বপন মির্জাকে কেমন স’ন্দেহজনক লাগছে না?”
ইলান নাজমুলকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“প্রত্যেকটা লোককে কড়া নজরে রাখতে হবে। আমরা কিন্তু জানিনা কে আসল কালপ্রিট। হয়তো সভ্য সমাজে সভ্য মানুষের মুখোশ পড়ে সে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
নাজমুল মনযোগ দিয়ে শুনলো কথাটি।
-“শিহাব, তুমি আজ রাতের ভেতর তুর্শির ফ্রেন্ড সার্কেলের সমস্ত ইনফরমেশন জোগাড় করে আমাকে মেইল করবে।”
ইলান আর কাউকেই কিছু বললোনা। আপাতত সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেলো।
বাসায় ফিরেই লম্বা একটা শাওয়ার নিলো ইলান।
প্রভাতি চিংড়ি মাছের তরকারি নিয়ে ইলানের বাসায় নক করলো। ওর মা পাঠিয়েছে।
কলিংবেলের শব্দে চুল মুছতে মুছতে ইলান এসে দরজা খুলে দিলো। ইরতিজা ব্যস্ত থাকায় ইলানকেই দরজা খুলতে হলো।
এমনিতেই প্রভাতির উপর রা*গ চড়ে আছে, দরজা খুলে তাকে দেখতেই ইলান কাঠকাঠ স্বরে প্রশ্ন করলো,
-“কি চাই?”
ইলানের প্রশ্নে থতমত খেলো প্রভাতি। চোখ গিয়ে স্থির হলো ইলানের ভেজা পেটানো শরীরে। বুক টা’নটা’ন করে দাঁড়িয়ে আছে। বুকের বাঁ পাশে খানিকটা উপরে একটা গাঢ় তিল। প্রভাতির বেহায়া চোখজোড়া সেখানে গিয়েই আটকে গেলো।
প্রভাতির থেকে কোনো প্রকার রেসপন্স না পেয়ে তার দৃষ্টি অনুসরণ করে বাঁকা হাসলো ইলান।
হালকা ঝুকে প্রভাতির মুখের সামনে চোয়াল এগিয়ে নিলো।
-“ইন্টারেস্ট জাগছে? চাইলে ছুঁ’য়ে দেখতে পারো।”
প্রভাতি অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। আমতা আমতা করে রাগ দেখানোর ভঙ্গিতে বলল,
-“একদম ফা’লতু কথা বলবেনা। অ*সভ্য লোকের সবসময় অ*সভ্য কথা।”
তরকারির বাটি ইলানের হাতে জোর করে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
-“এটা আন্টির জন্য মা পাঠিয়েছে।”
ইলান তরকারির বাটি হাতে নিয়ে প্রভাতিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ক্রুর হেসে ভ্রু নাচিয়ে বলল,
-“বাটি নিতে দাঁড়িয়ে আছো, নাকি আরেকটু দেখার জন্য?”
প্রভাতি নাক ফুলিয়ে চলে গেলো। ইলান মিটিমিটি হেসে দরজা বন্ধ করে দিলো।
রাতে শিহাবের পাঠানো ইমেইল চেক করতে স্ক্রিনে ট্যাপ করলো ইলান। ইমেইল চেক করার পরই কপালে ঢেউ খেলানো ভাঁজ পড়লো।
“তুর্শির সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড মনি আজ বিকেল থেকে মিসিং।”
————
অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী প্রভাতি। আজ ইম্পরট্যান্ট ক্লাস এটেন্ড করার জন্যই তৈরী হয়ে আশরাফুলের সাথে একই গাড়িতে বের হলো। বন্ধুদের সাথে ভার্সিটি থেকে বেশ কিছুদূর কাঁঠালীজঙ্গল ঘুরতে গেলো। কাঁঠালীজঙ্গল নাম হলেও কোনো কাঁঠাল গাছের ধোঁয়া-ছোঁয়া ও দেখতে পেলোনা প্রভাতি। জঙ্গল ঘুরতে ঘুরতে প্রভাতি একসময় বন্ধুদের থেকে আলাদা হয়ে গেলো। পিছু ফিরে বুঝলো আশেপাশে কেউ নেই। সে বেশ গভীরে চলে এসেছে। বুকে সাহস সঞ্চার করলো। তাকে তো এখান থেকে বের হতে হবে। ভ’য় পেলে চলবেনা। একসাথে চারপাঁচটা পথ। বের হওয়ার পথ খুঁজতে খুঁজতে আরও ভেতরের দিকে চলে গেলো প্রভাতি।
নিয়ন, তন্ময়, রিজু প্রভাতিকে সাথে না দেখে ঘাবড়ে গেলো। তিনজনে জোরে জোরে ডেকেও কোনো সাড়া পেলোনা। হন্যে হয়ে তিন বন্ধু একসাথে খুঁজে যখন পেলোনা, তখনই নিয়ন হাঁপানো গলায় বলল,
-“আমার মনে হয় আশরাফুল ভাইয়াকে ব্যাপারটা জানানো উচিত।”
রিজু নিয়নের কথায় বিরক্তি হয়ে উঠলো। এমনিতেই ভ*য়ে গলা শুকিয়ে আছে। প্রভাতির কিছু হলে আশরাফুল ভাই ওদের ছে’ড়ে দেবেনা।
-“তোদের মাইয়া মানুষের মাথায় সব গোবর। তুই কি আশরাফুল ভাইকে খবর দিয়ে বি*প*দ বাড়াতে চাস? গবেট কোথাকার।”
তন্ময় বিজ্ঞদের মতো বলে উঠলো,
-“নিয়ন ঠিকই বলেছে। আশরাফুল ভাইয়াকে ব্যাপারটা জানানো উচিত। আল্লাহ না করুক, যদি কোনো ধরনের দু*র্ঘ*না ঘটে যায়? ঘটনা ঘটে গেলেতো আমরা প্রভাতির ক্ষ*তি এড়াতে পারবোনা। ভাইয়াকে খবর দিয়ে তিনি আসতে আসতে আমরা আরেকটু খুঁজে দেখি।”
রিজু এবার মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো। তন্ময় আশরাফুলের নাম্বারে ডায়াল করলো। এখনি ভ’য়ে গলা শুকিয়ে আসছে নাজানি আশরাফুল ভাই কি রিয়েক্ট করে? রিজু আর সে সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে প্রভাতিকে নিয়ে এসেছে। অথচ অল্প কিছুক্ষণেই কি থেকে কি হয়ে গেলো?
#চলবে…….
(অনেকেই কাহিনিটি বুঝতে পারছেননা। আমি প্রথমেই বলে দিয়েছি গল্পটিতে রহস্য থাকবে। এখন টু’করো টু’করো কাহিনী পড়ে হয়তো বুঝতে পারছেননা কি থেকে কি হচ্ছে? সামনের দিকে সব খোলসা হবে। সমস্ত ঘটনা গিয়ে একটা জায়গায় মিলিত হবে। তাই যারা এখন কাহিনি বুঝতে পারছেননা, বা যারা অপেক্ষা করতে পারবেননা তারা গল্পটি শেষ হলে পড়ুন। আজকের পর্ব পড়ে মন্তব্য করার অনুরোধ রইলো। ভুল ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেবেন। হ্যাপি রিডিং।)