গল্পঃ #কেঁও_আছে
পর্ব – ১
লেখাঃ #Sanvi_Ahmed_Shakib
.
– আমি যেই মেয়েকেই বিয়ের জন্য দেখতে যাই সেই মেয়েই দুদিনের মাথায় মারা যায়।
আকাশ সাহেবের মুখে এরকম কথা শুনে ডাক্তার রাজিব বিচলিত হয়ে পড়েন।
এই ঘটনায় আকাশ সাহেব বেশ ভয়ে আছে। এমন কেনো হচ্ছে সে নিজেও জানেনা। যেই মেয়েকেই পছন্দ হইছে সেই মেয়েই মারা যাচ্ছে।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
এর পেছনের কাহিনী কি সেটা জানার জন্যই ডাক্তারের কাছে ছুটে আসা।
রাজিব সাহেবের সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব তার। কিন্তু তারপরও রাজিব সাহেব আজকে ভাবছেন আকাশ কি পাগল হয়ে গেছে নাকি? এরকম বুদ্ধিমান একটা মানুষ এসব কথাবার্তা বলছে। পাগলের লক্ষন ছাড়া আর কি? তিনি ভাবছেন আকাশের মাথায় কোনো গন্ডগোল হয়েছে।
তিনি আকাশের দিকে কেমন একটা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। মনে হচ্ছে তিনি মজা পাচ্ছেন খুব। আকাশ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আবারো বলে,
– আমি সত্তিই বলতেছি আমার সাথে এরকম হচ্ছে। আপনি বিশ্বাস করুন ব্যাপারটা।
– আমি তো বিশ্বাস করেছি।
– আপনার মুখ দেখে তা মনে হচ্ছেনা।
– দেখুন আমার মনে হচ্ছে আপনি পাগল হয়ে গেছেন তাই এ ধরনের প্রলাপ করছেন আমি তো সাইকিয়াটিস্ট নই? আমার কাছে কেনো এসেছেন?
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
– আপনি আমার বন্ধু মানুষ হয়ে আমাকে পাগল বলতে পারলেন?
– আপনি যেটা বলছেন সেটা যে কেউ শুনে পাগল বলবে।
– আমি জানি ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য তবে সত্যিই এটা ঘটছে আমার সাথে।
রাজিব সাহেব হেসে বললেন,
– আচ্ছা হয়েছে থামেন এবার। আর কত গল্প বলবেন? আপনি কিন্তু বেশ ভালো অভিনয় পারেন।
.
কথাটা শুনে রাগ করে বেরিয়ে আসে আকাশ।
তার কথা কেউ বিশ্বাস করছেনা। সে ভেবেছিলো একমাত্র রাজিবই তার কথাটা বিশ্বাস করবে কিন্তু সেওতো মজা করে উড়িয়ে দিলো এখন কি হবে?
কাকে বলবেন তিনি এই সমস্যার কথা?
কেই বা সমাধান করবেন এটার। কেনো মারা যাচ্ছে নির্দোষ মেয়েগুলা। এসবের জন্য কি আমি দায়ী? পুলিশ কি ধরে নিয়ে যাবে আমাকে? এ ধরনের হাজারটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে তার মনে।
আকাশ এই ২৭ বছরের জিবনে কখনো এরকম ভয় পায়নি আর এরকম কিছু সে কারো সাথে হতেও দেখেনি।
.
আনমনে হাটতে থাকে আকাশ।
এর আগে তো এমন হয়নি। এর আগে এক মেয়েকে তার খুব পছন্দ হয়েছিলো প্রেমও হয়েছিলো ৫ মাস রিলেশনও ছিলো। কই তখন তো মেয়েটি মারা যায়নি? মেয়েটি তো বিয়ে করে এখন সুখেই আছে তাহলে এই মেয়েগুলা কেনো মারা যাচ্ছে।
কে মারছে এদের? কেউ কি আমাকে ফাসাতে চাইছে?
আমার এই সুযোগ নিয়ে সে কি মারছে এদেরকে?
হতেই পারে কারন আকাশ সাহেব বেশ নামকরা লোক।
ঢাকা শহড়ে ৭ টা গার্মেন্টস আছে তার।
আর পরিবার বলতে শুধু তার মামা। সেও বৃদ্ধ প্রায়।
বাবা মা মারা যাওয়ার পর সব আত্মিয়রা ছুড়ে ফেলে দিলেও তার মামা তাকে ফেলে দেয়নি।
তার বাবার সম্পত্তি তার মামা দেখভাল করে এই পর্যন্ত এনে দিয়েছে। আকাশের বয়স যখন ২০ তখনই তিনি সবকিছু আকাশের নামে করে দেন।
লোকটা বিয়ে করেনি কোনো এক কারনে। আকাশ অনেকবার জিজ্ঞেস করার পরও সে বলেনি কেনো বিয়ে করেনি। শুধু এটুকুুই বলেছে তুই থাকতে আমার কারোর দরকার নেই। জিবনের শেষ সময় পর্যন্ত আমার সাথে থাকিস তাহলেই হবে।
.
হয়তো তিনি চাননি যে, আমার ভালোবাসার কোনো কমতি হোক। কারন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মামিগুলা একটু বদরাগি টাইপের হয়।
.
কথায় আছে যার ভালোবাসার মানুষ যত বেশি তার শত্রুও অনেক বেশি। এমনও হতে পারে আকাশ সাহেবের কোনো শত্রু এই কাজ করছে।
হাটতে হাটতেই বাসায় ফিরে আকাশ।
চোখমুখ শুকনা দেখে তার মামা প্রশ্ন করে,
– কিছু হলো?
– না মামা। সেও বিশ্বাস করলো না। তুমিতো জানো পুরো ব্যাপারটা।
– হ্যা জানি। বিশ্বাস না করারই কথা তবে সত্তিটা তো আর মিথ্যা হয়ে যাবেনা।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
– মামা আমার ভালো লাগতেছে না আমি ঘুমাবো।
.
বলেই আকাশ উপড়ে উঠে যায়।
দোতলা বাড়িতে সে আর তার মামা।
আর কয়জন কাজের লোক থাকে। আর কেউ না।
আকাশ সাহেবের কথা হলো,
যদি তার কোনো শত্রু এ কাজ করে থাকে তাহলে তাকে মেরে ফেলবে কিন্তু এই নির্দোষ মেয়েগুলাকে কেনো মারবে?
মাথা ঘুরতে থাকে এসব নিয়ে ভাবলে। তবে ভাবতে তো হবেই না ভাবলে চলবে কিভাবে? সারাজিবন কি মামার মতো বিয়ে না করে থাকবো? নাকি মেয়েগুলা শুধু মরবে?
এর একটা সমাধান খুজে বের করতেই হবে। তবে তার আগে খুনিকে খুজতে হবে।
.
ওদিকে ডাক্তার রাজিব খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন।
এটা কি সত্তি নাকি মিথ্যা এইটা নিয়ে গভির চিন্তা তার।
আকাশ সাহেব কখনো তাকে মিথ্যা বলেনি আর আজকে তাকে দেখে খুব ভীত মনে হলো।তাহলে সত্যিই কি এরকম ঘটছে?
বিশ্বাস – অবিশ্বাসের মাঝখানে পড়ে যায় রাজিব সাহেব।
তবে দু নৌকায় পা দিয়ে তো আর চলা যায়না?
তাই সে ঠিক করলো এর প্রমান লাগবে তার।
.
আকাশের ফোনটা বেজে উঠতেই কলটা রিসিভ করে,
– হ্যালো।
– আমি রাজিব বলছি।
– হ্যা বলুন।
– আপনার ব্যাপারটা নিয়ে ভাবলাম অনেকক্ষণ। আমার প্রথমে বিশ্বাস হয়নি তবেবে এখন অবিশ্বাসও হচ্ছেনা। আমি চাই নিজের চোখে ব্যাপারটা দেখবো। তাহলেই বিশ্বাস হবে। তারপর না হয় কোনো একটা ব্যাবস্থা করা যাবে।
– কিন্তু আরেকটা মেয়ে মারা যাবে। শুধু শুধুই মারা যাবে।আমি চাইনা এরকম হোক।
– কেউ মারা যাবেনা। আমরা পাহাড়া দিবো দুদিন। যদি কেও এরকম করার চেষ্টা করে তবে অবশ্যই সে ধরা পড়বে। এতে আপনার সমস্যার ও সমাধান হবে।
– তারপরও যদি মারা যায়?
– কিছু হবেনা ভরসা রাখেন।
.
আকাশ সাহবেকে নানা ভাবে বুঝানোর পর সে রাজি হয় মেয়েটাকে দেখতে যাওয়ার জন্য।
তবে সে ভয়ে আছে। আরেকটা মেয়ে না মারা যায়।
যদি মেয়েটা মারা যায় তাহলে কি হবে?
আর রাজিব সাহেব অবিশ্বাস কেনো করছে সে বুঝতে পারেনা। তারও তো ক্ষতি হতে পারে?
.
৯ টা মৃত্যুর তদন্ত চলছে এটা নিয়ে কি ১০ নম্বর হবে?
পুলিশ সারাক্ষণ নজর রাখছে আকাশ সাহেবের ওপর।
বেশ সাবধানে চলতে হয় তাকে। বুঝা যায়না কোনটা পুলিশের লোক আর কোনটা সাধারন মানুষ।
পুলিশ আকাশ সাহেবেকে এখনো ধরে নেয়নি কারন খুনি প্রমান না হওয়া পর্যন্ত সে নির্দোষ। কিন্তু নজর রাখছে তার ওপর। হঠাৎ আকাশ সাহেবের মাথায় আসলো, পুলিশ নিয়ে গেলে কেমন হয়? দুদিন পাহাড়া দিলো আমাদের সাথে তখন সেও নিজের চোখেই দেখতে পারবে কে খুন করেছে।
.
ওসি সাহেবকে কল দিয়ে সবকিছু বলার পর সেও রাজি হয়ে যায়। যদি কোনো সুত্র পাওয়া যায় এখান থেকে। একটা সাধারন কেস না একটা ৯ টা খুনের কেস। আর খুনের কারনও একটাই মেয়ে পছন্দ হওয়া। খুন কে করেছে কিভাবে করেছে কিছুই জানা যায়নি।
এমনকি কোথাও কোনো আঙুলের ছাপও পাওয়া যায়নি।
শুধু একটা নির্দিষ্ট জায়গায় প্রত্যেকটা লাশের মধ্যেই চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মেয়েগুলার পিঠের ওপর একটা করে ক্রস চিহ্ন পাওয়া যায়।
কাটা দাগ। নতুনই কাটা। রক্তও বের হয় সেখান থেকে। তবে কিভাবে কাটে কে জানে। পিঠের এমন একটা জায়গায় কাটা হয় যেখানে মেয়েটার হাত পৌছাবে না। অথচ খুব নিঁখুত ভাবে কাটা হয় যায়গাটা। এরকম কেস ওসি সাহেবও আগে দেখেনি।
.
আকাশ সাহেব ভাবতে থাকে,
দেখা যাক কালকে কি হয়? হয়তো আরেকটা খুন হবে কালকে নয়তো রহস্যটা উদঘাটন হবে।
.
To Be Continue….?
( Nc,Nxt, কমেন্ট করা বাদ দিয়ে গল্পটা কেমন লেগেছে এরপর কি চান এ ধরনের কমেন্ট করতে পারেন। আমি কষ্ট করে আপনাদের জন্য ২০০ লাইনের গল্প লিখতে পারলে আপনাদের ২ লাইনের কমেন্ট করতে খুব একটা কষ্ট হবেনা মনে হয়।)