কেঁও_আছে পর্ব – ২

0
2050

কেঁও_আছে
পর্ব – ২
লেখকঃ #Sanvi_Ahmed_Shakib
.
আকাশ সাহেব ভাবতে থাকে,
দেখা যাক কালকে কি হয়? হয়তো আরেকটা খুন হবে কালকে নয়তো রহস্যটা উদঘাটন হবে।
ভাবতে ভাবতেই চোখ লেগে আসে আকাশের।
ক্লান্ত শরীরটা ঘুমিয়ে পড়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই।
এখন ঘুমানোর সময় না তবুও ঘুমিয়ে পড়ে আকাশ।
সবকিছুই যে নিয়মের বাইরে ঘটছে। এটা আর এমন কি?
.
রাতে খাবার টেবিলে বসে তার মামা তাকে প্রশ্ন করে,
– তাহলে কালকে মেয়ে দেখতে যাচ্ছো?(মামা)
– হ্যা মামা, দেখি আরেকটা মেয়ে। তবে এবার ওসি সাহেব আর রাজিব সাহেব ও সাথে যাবে।(আকাশ)
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
– ওহ দেখো কি করবা তবে আমার মতে আর মেয়ে না দেখাই ভালো। যদি এই মেয়েটাও মারা যায়?(মামা)
– কিন্তু মামা তারা তো বিশ্বাস করছেনা। আমি কি করবো?(আকাশ)
– দেখো যা ভালো বুঝো তাই করো।(মামা)

খাওয়া শেষ করে গিয়ে সুয়ে পড়ে আকাশ।
চিন্তা হচ্ছে ভিষন। এই মেয়েটাও যদি মারা যায় তবে সে নিজেকে কিভাবে মাফ করবে? ১০ টা মেয়ের জিবন চলে যাবে তার জন্য।
দিনে ঘুমানোর ফলে এখন আর ঘুম আসছেনা তার।
তবুও জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ব্যার্থ।
ওদিকে রাজিব সাহেবের ও চোখে ঘুম নাই। একটা
উত্তেজনা বিরাজ করছে তার মাঝে। সত্তিই কি কিছু ঘটবে কালকে? এই প্রশ্নটা তার মাথায়ও ঘুরপাক খেতে থাকে।

পরের দিন তিনজনে মিলে রওনা দেয়।
মেয়েটার বাড়ি একটু গ্রামের দিকে। কাঁচা রাস্তায় বৃষ্টির ফলে কাঁদা হয়েছে।
গাড়ি নিয়ে যাওয়া খুব কষ্ট। বাড়িটা ভালোই তবে বাড়ির চারদিকেই কাদা। হালকা বৃষ্টি হলে যা হয় আরকি।
অনেক কষ্টে বাড়ি গিয়ে পৌছায় তারা। মেয়েটাকে দেখে।
দেখতে ভালোই, পড়ালেখাও জানে। মেয়েটাকে বেশ পছন্দ হয় আকাশ সাহেবের। এবার পাহাড়া দেওয়ার পালা।
মেয়েটা রাজিব সাহেবের আত্মিয়। তাই আগে থেকেই সবকিছু বলা আছে। তারা কিছুতেই এমন একটা প্রস্তাবে রাজি হবেনা কিন্তু অনেক বোঝানোর পর এবং সব দায় রাজিব সাহেব নিবে বললে তারা রাজি হয়।
তবে সবসময় তিক্ষ্ণ নজর রাখে তাদের ওপর।
.
রাত ঘনিয়ে আসে। সবাই অটল পাহাড়ায় দাড়িয়ে আছে।
মেয়েটার দিকে নজর সবার। ওসি সাহেব বাইরের দিকে নজর রাখছেন। তাদের বোকামি দেখে আকাশ সাহেব হেসে উঠে। এতো মানুষের মাঝে খুনি কি খুন করতে আসবে নাকি?
এতোদিন তার মনে ভয় থাকলেও সেটা কেটে যায় তখন যখন সারারাত নির্ঘুম পাহাড়া দেওয়ার পরও মেয়েটার কিছু হয়না।
মেয়েটা অক্ষত অবস্থায়ই আছে। ওসি সাহেব সন্দেহের দৃষ্টি নিয়ে তাকায় আকাশের দিকে।
পরের দিনও পাহাড়া দেয়। নাহ, কিছুই হয়নি এই মেয়েটার।
দুদিনে কিছুই হয়নি। তবে কি খুনি ভয় পেয়ে গেলো নাকি?
এরকম সাইকো আর সাইলেন্ট মাইন্ডের খুনি যে কি না ৯ টা খুন করেছে সে কি তবে থেমে গেলো?
তবে কি সব রহস্য উদঘাটন হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যাবে?
এরকম তো হওয়ার কথা ছিলোনা। প্রত্যেকটা মেয়ের মতো এই মেয়েটাও স্বাভাবিক একটা মেয়ে।
.
মামাকে ডাকে আকাশ সাহেব।
কয়েক ঘন্টা পর তার মামাও চলে আসে,
– তাহলে অবশেষে বিয়ে করছো??(মামা)
– হ্যা মামা। সেজন্যই তোমাকে ডাকা। বিয়ের ডেট ফিক্সড করো।(আকাশ)
– তাহলে আগামি সপ্তাহেই হোক। যত তারাতারি পারো বিয়েটা করে ফেলো। তবুও যদি এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাও।(মামা)
.
৭ দিন পর বিয়ে। ডেট ফিক্সড করে চলে আসে সবাই।
আরো দুদিন কেটে যায়, মেয়েটার কিছুই হয়না।
সবাই ধরেই নেয় এইবার আর কিছু হবেনা। সব রহস্য শেষ। কে খুনি সেটাও আর ধরা যাবেনা।
তবে এসব কিছুকে ভুল প্রমাণ করে ৫ দিন খবর আসে।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা

এই মেয়েটার ও মৃত্যু হয়েছে। সেই একি ভাবে। কোনো আঙুলের ছাপ নেই, শুধু পিঠের ওপর ক্রস চিহ্ন কাটা।
খবরটা শোনার পর মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে আকাশ সাহেব। আরো একটা খুন। নিজেকেই দোষী মনে হয় তার।
.
রাজিব সাহেবকে খবরটা দেওয়া মাত্র তিনিও চমকে উঠেন।
ঘাবড়ে যান তিনিও। এটা কি হলো? তারও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তবুও এটাই সত্য। মনে হচ্ছে তিনি কোনো বাজে স্বপ্নের মধ্যে আছেন, ঘুম ভেঙে গেলে সব ঠিক।
কিন্তু নিজের চোখের নোনতা পানিটা জানান দেয়,
– এটা বাস্তব, কোনো স্বপ্ন নয়।

আকাশ সাহেব ভেঙে পড়েছেন। রিতীমতো কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছেন। এসব কি হচ্ছে তার সাথে? এই নিয়ে ১০ টা মেয়ের মৃত্যুর জন্য একমাত্র দোষী সে নিজে।
চোখ বন্ধ করে একবার সুইসাইড করার কথা ভাবেন তিনি।
কারন এভাবে চলতে থাকলে সে খুব তারাতারিই পাগল হয়ে যাবে।
ওসি সাহেব এসে দেখেন আকাশ কাদতেছে।
ওসি সাহেব আকাশকে স্বান্তনা দেয়। সে নিজেও বুঝতে পেরে গেছে এতে আকাশ সাহেবের কোনো হাত নেই।খুনি অন্যকেউ, যে চায়না আকাশ বিয়ে করুক তাই হয়তো মেয়েগুলাকে মেরে ফেলছে। খুনির প্লান তো সফল, এখন হাজার বললেও আকাশ সাহেব আর কোনো মেয়ের দিকে ভুলে তাকাবেও না আবার বিয়ে।
.
আকাশ সাহেব ভাবতে থাকে,
কোনো মানুষের পক্ষে কিভাবে এতোগুলা খুন
করা সম্ভব তাও কোনো প্রমাণ না রেখেই।
এসব নিয়ে আর ভাবতে চায়না সে। বিয়ে করবেনা ঠিক করে নিয়েছে। তার মামাও কিছু বলেনা।
কি বলবে? এতোগুলা খুন হওয়ার পর আর কি ই বা বলার থাকে।
.
এরপর কেটে যায় দু মাস। কোনো মেয়ে দেখেনি আর আকাশ।
কোনো খুনও আর হয়নি। পুলিশ অনেক তদন্ত করেছে কিছুই পায়নি। আকাশ সাহেবের ওপর কড়া নজর রেখেও লাভ হয়নি। লাভ হবে কিভাবে? সে তো খুন করেইনি। পুলিশও থমকে গেছে। কোনো প্রমাণ নেই তাদের কাছে। কিভাবে খুজে বের করবে খুনিকে।
.
দু মাস ভালোই কাটে আকাশের। মামাকে নিয়ে ভালোই আছে সে। আজ দু মাস পর হঠাৎ একটা স্বপ্ন দেখে সে।
যেখানে সে দেখে একটা খুব পরিচিত মেয়ে তার নাম ধরে ডাকছে। মেয়েটার চেহারা স্পষ্ট নয়। তবুও খুব চেনা চেনা লাগে তার। মেয়েটা কিছু বলছিলো কিন্তু সে কিছুই বুঝতেছিলো না। ঘুম ভাঙতেই আকাশ সাহেব উঠে পানি খায়। এর আগেও অনেক বাজে স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। কিন্তু কেনো জানি আজকের স্বপ্নটা তার কাছে সাধারন মনে হচ্ছেনা। খুব অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে সবকিছু তার ওপর মেয়েটাকেও চেনা চেনা লাগছে তার।
এই স্বপ্নের মানে কি তাকে জানতেই হবে।
হয়তো এর মাঝেই লুকিয়ে আছে আসল রহস্য।
.


#________________চলবে________________


#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here