খুন সিরিজ দ্বিতীয় সিকুয়েন্স,প্রথম পর্ব

0
797

খুন সিরিজ দ্বিতীয় সিকুয়েন্স,প্রথম পর্ব
যাবেদ খাঁন আবু বকর

“গতকাল রাত আনুমানিক তিনটার সময় সমুদ্র সৈকতের পাড়ে ফেলে রাখা হয় তিনটা মৃত দেহ। দেহগুলোর অবস্থা বেশ নাজেহাল। আজ সকাল দশটার সময় সদর থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানায় স্থানীয় কোনো একজন। অতঃপর একদল পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হয়ে তিনটি মরা দেহ উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মৃত দেহগুলো সবকয়টি মেয়েদের। এবং তা নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মেয়েগুলোর দেহে নানা রকমের ক্ষত চিহ্নের আভা পাওয়া যায়। এছাড়াও একটি চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এবং নগ্ন বুকের উপর ছুরি দিয়ে কেটে একটি ত্রিভুজ আকৃতি সৃষ্টি করা হয়েছে। এবং উপড়ে ফেলা চোখটি ত্রিভুজের মধ্যস্থানে পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলটি পুলিশ কর্মকর্তা দলের অধীনে নিয়ে নেওয়া হয়। এবং উক্ত স্থানের চারপাশে ফিতা টেনে এন্টার নট এলাউ জারি করে দেওয়া হয়। ”

খবর পাঠ হচ্ছিল দেশের সনামধন্য সবচেয়ে বড় চ্যানেল ” সময় ” থেকে। হাতে থাকা রিমোটটি দিয়ে টিভি বন্ধ করে ফেলল যাবেদ। শার্টের হাতা ফোল্ডার করতে করতে অলিনের উদ্দেশ্য করে বলে উঠল সে,
-‘ আজকাল আবার খুন-খারাবির দেখা পাওয়া যাচ্ছে মনে হয়। আর এই খুনগুলোর ধরণ বেশ ভিন্ন মনে হচ্ছে। ‘
-‘ হ্যাঁ, তাই তো দেখছি।’ যাবেদের কথার প্রতিত্তোরে বলল অলিন।
-‘ আমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এই কেসটা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাকেই দেওয়া হবে। ‘ হতাশ কণ্ঠে বলল যাবেদ।
-‘ হয়তো। যেয়ে দেখো আগে, কী বলেন তারা! অবশ্য তোমার মত ইন্টেলিজেন্ট অফিসার খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ‘ বলেই হাসতে লাগল অলিন।

আচমকাই একটি কাচ ভাঙার শব্দ ঝংকার দিয়ে উঠল নিচতলার রুম। তৎক্ষণাৎ আয়ায়া করে একটি চিৎকার দিয়ে উঠল অলিন। অতঃপর ঢলে পড়ল মেঝেতে। আকস্মিকভাবে ঘটনাগুলো ঘটায় কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায় যাবেদ। কেবল মাথাটা একটু ডান দিকে নাড়িয়ে ছিল সে। অবিলম্বেই একটি চিৎকার দিয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে গেল অলিন। অলিনের দিকে তাকাতেই আৎকে উঠে সে। মেঝেতে রক্তের স্রোতধারা বয়ে যাচ্ছে। অবশ্য এ রক্তের স্রোতধারার উৎস অলিনের কপাল। সাদা রঙের থ্রিপিসটা রক্তে ভিজে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই নিথর হয়ে গেছে তার দেহ। চোখ দুটি খুলে এখনো যাবেদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অলিনের চিৎকার এবং কাচ ভাঙার শব্দ শুনে দৌড়ে উপর তলা থেকে নিচ তলায় নেমে এলো তাবিব। ভাইয়ের চোখে পানি এবং অলিনের দেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে কিছু সময়ের জন্য থমকে যায় সে। কী হয়েছে! তা নিয়ে ভাবতে থাকে। কিন্তু অলিনের দেহ মেঝেতে পড়ে থাকার মত উপযুক্ত কারণ খুঁজে পাচ্ছে না। আর যাবেদের চোখেই বা কেন পানি? এই দুটি প্রশ্নের জবাব কোনোভাবেই মেলাতে পারছে না সে। অলিনের কপাল থেকে বেয়ে গড়িয়ে পড়া রক্তগুলো মেঝে তলিয়ে তার দেহের পেছন দিকে আসতেই বিষয়টি নজরে আসে তাবিবের। অলিনের পেছন দিকে মেঝেতে লাল আভা বাড়তে দেখে মনে সন্দেহের বীজ উৎপন্ন হয় তার। দ্রুত অলিনের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। কপালের দিকে তাকাতেই তার সকল প্রশ্নের জবাব পেয়ে যায়। কপালের মধ্য বরাবর বেশ বড়সড় একটি ছিদ্রপথ নজরে বাধছে তার। আর উক্ত স্থান থেকেই গড়িয়ে পড়ছে রক্তের স্রোতধারা। তৎক্ষণাৎ একটি চিৎকার দিয়ে ওঠে সে। সেই চিৎকার শুনে ধ্যান ভাঙা যাবেদের। এতক্ষণ যেন সে একটি ঘোরের মাঝে আটকে ছিল। কী হচ্ছে? তা মনে নেই। অলিনের কপাল থেকে গড়িয়ে পড়া রক্তে মেখে থাকা মেঝের দিকে তাকিয়ে মৃদুস্বরে চিৎকার দিয়ে ওঠে সে। তাবিব দৌড়ে দ্রুত বাড়ির বাহিরে চলে আসে। কিন্তু কারো নামও নিসান খুঁজে পায় না সেখাবে। গুলিটি কোথা থেকে করেছে তা বলা মুশকিল। কিন্তু বুলেট প্রুফ গ্লাস ভেদ করে গুলিটা ভেতরে এলো কী করে? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজে পায় না সে।

বাংলায় একটি প্রবাদবাক্য আছে, ” অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর।” এই কথাটি যেন যাবেদের জন্যই লেখা হয়েছে। বাবা-মা হারিয়েছে বেশ কয়েকবছর ধরে। এযাবৎ কাল একাই ছিল। কেবল তাবিব তার সাথে থাকত। কিন্তু মনের নিঃসঙ্গতা দূর করতে প্রয়োজন হয় অন্য কারোর। অতঃপর অলিনের সাথে হুট করেই পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ভালোবাসা, অতঃপর বিয়ে। কিন্তু বিয়ের সম্পর্ক আট মাস গড়িয়ে ন’মাস হতেই দুঃখজনক কাণ্ড। বাবা-মায়ের মৃত্যুতে কাতর ছিল। তবে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছিল। অবশ্য এতে সাথ দিয়েছিল তাবিব। কিন্তু অলিনের মৃত্যুতে যেন পাথর হয়ে গেছে সে। হয়তো এখনও সাথ দেবে তাবিব, কিন্তু তাই বলে ভালোবাসার মানুষের স্থান তো আর পূরণ করে দেওয়া সম্ভব নয়। যাবেদের চোখ থেকে এখন আর কোনো পানি ঝড়ছে না। চোয়াল দু’টি শক্ত হয়ে গেছে। চোখ দু’টি রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। যেন একটু হলেই চোখ থেকে লাভার ফুলকি গড়িয়ে পড়বে।

ইতোমধ্যেই যাবেদের বাসায় এসে উপস্থিত হয়েছে, একটি অ্যাম্বুল্যান্সে। এবং দুই গাড়ি পুলিশ কর্মকর্তা। বাড়ির মাঝে এক প্রকার জ্যাম লেগে গেছে। ইতোমধ্যেই প্রতিটি চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজ হয়ে গেছে। প্রতিটি চ্যানেলেই ঘুরছে কেবল একটাই খবর, ” আজ সকাল নয়টার সময়, পুলিশ কর্মকর্তা যাবেদের বাসায় গুলি ছোঁড়া হয়। এবং উক্ত বন্দুকের গুলিতে নিহত হয় যাবেদের স্ত্রী তথা সদর থানার পুলিশ কর্মকর্তা অলিন। ”

খবরটি যেন প্রতিটি চ্যানেলেই ভীড় লেগে আছে। আম জনতার মন বিক্ষুব্ধ হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। কয়েকমাস পূর্বেই সাইকো কিলার নীল রহমান মাইকলের মৃত্যুদণ্ড এবং তার সকল কার্যকলাপের প্রমাণ উপস্থিত করা হয় জনসম্মুখে। এবং তার এই দুঃসাহসিকতা দেখে সম্পূর্ণ দেশ গর্ব করেছিল। আর আজ তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। দেশের জনগণের মনে এসে লেগছে কর্মটি।

ইতোমধ্যেই বাড়িতে আগমন ঘটতেছে সনামধন্য ব্যক্তিবর্গদের। চেয়ারম্যান, মেয়র, এমপি, মন্ত্রী। এছাড়াও পুলিশ ডিপার্টমেন্টের আইজি পর্যন্ত এসে উপস্থিত হয়েছে। এরকম একটি ঘটনা ঘটা, আসলেও সকলের মনকে মর্মাহত করে তুলেছে। যাবেদ এখনো সেই স্মৃতি ঘোরেই আটকে আছে। একটু আগে যার সাথে হেসে খেলে কথা বলল সে, এখন সেই মানুষটার কপাল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিথর দেহটি মাটিতে পড়ে আছে। আর ভাবতে পারছে না! ইত্যবসরেই বাড়ির চারদিকে কেবল গাড়ির আনাগোনা। চার ঘন্টা পার হয়ে গেছে অলিনের মৃত্যুর। বিশেষ সুবিধার্থে বাড়িতেই চারজন ফরেনসিক বিভাগের মেয়ে ডাক্তার এনে অলিনের পোস্টমর্টেম করানো হচ্ছে। বাহিরে জনগণের ভীড় উপচে পড়ছে। মিডিয়ার লোকদেরও রয়েছে উপচে পড়া ভীড়। কেউ রিপোর্ট করছে তো কেউ ছবি তুলছে। কিন্তু তা বাড়ির বাহিরেই। ভেতরে প্রবেশের কোনো সুযোগ দেয়নি পুলিশ কর্মকর্তারা। অবশ্য এই উপচে পড়া ভীড় একদিক থেকে ক্ষতি বয়ে আনবে।

বড়বড় ব্যক্তিবর্গগণ এসে যাবেদকে সান্তনা দিয়ে যাচ্ছে,এবং দিয়ে চলেছে। এভাবে আরো কিছু সময় পেরিয়ে যেতেই, বাড়িতে আসা ফরেনসিক বিভাগের মেয়ে ডাক্তারগুলো অলিনের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হস্তান্তর করল তবে তা সম্পূর্ণ নয়। মনোযোগ দিয়ে একবার পোস্টমর্টেম রিপোর্টটি পড়ল যাবেদ। অতঃপর বড় অফিসারগণ যারা আছেন তদের কাছে রিপোর্টটি হস্তান্তর করে দেওয়া হলো। বেশি সময় মৃত দেহ উপরে রাখা ঠিক নয়, কথাটি বলে উঠলেন কয়কজন। এতে করে যাবেদের মনেও আশ্বাস যোগাল। অলিনের মৃত দেহের গোসল কার্য শেষ করার জন্য কয়েকজন মেয়ে বাসায় এনে কার্যক্রম শেষ করা হলো। অতঃপর বড় মাঠে জানাযার কার্যক্রম সমাপ্ত করে দাফন কার্য শেষ করা হয়। জানাযার সময় মাঠে বেশ মানুষের সমাগম দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু ধীরে ধীরেই মানুষের উপস্থিতি সংখ্যালঘু হতে আরম্ভ করল। এক পর্যায়ে সম্পূর্ণ বাড়িটাই খালি হয়ে গেল। রাত সাড়ে এগারোটা বাজতেই পুরো বাড়িতে নেমে এলো নিস্তব্ধতা। বাড়িতে কেবল উপস্থিত আছে যাবেদ এবং তাবিব। এ যেন নিয়তির খেলা। পূর্বে যেমন দুই ভাই ছিল, এখনও ঠিক তেমনই আছে। তাবিব নিজের রুমে ঘুমিয়ে আছে। এদিকে যাবেদের দুই চোখে ঘুম নেই। চোখ দু’টি বন্ধ করলেই যেন ভেসে উঠছে অলিনের সাথে কাটানো সুখময় মুহূর্তগুলো। আচমকাই যাবেদের সম্পূর্ণ দেহ কেঁপে উঠল। কাঁপুনি মূল উৎপত্তি প্যান্টের পকেট। দ্রুত পকেটে থাকা ফোনটি বের করে চোখের সামনে তুলে ধরল। তৎক্ষণাৎ স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটি মেসেজ। যাবেদের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে আছে। তবুও দুই ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠেছে এক রহস্যময় হাসি। কিন্তু এ কীসের হাসি? তা বুঝা বড় দায়।
অলিনের স্মৃতি নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন চোখ লেগে এসেছে তা ভাবতে পারেনি যাবেদ।

সকালে ঘুম ভাঙল পাখির কিচিরমিচির শব্দে। হাত ঘড়ির দিকে নজর ফেলতে দেখতে পেল, সকাল ছয়টা বেজে তেতাল্লিশ মিনিট। এখনো সূর্যটা তেমন ভাবে আলো ছড়ায়নি। তৎক্ষনাৎ বিছানা ছেড়ে উঠে গেল সে। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে নিচ তলায় নেমে এক কাপ কফি তৈরি করে পুনরায় উপর তলায় উঠে এলো। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় উপভোগের সাথে গরম ধোঁয়া ওড়া কফি পান। সূর্যোদয় পরিবেশটা বেশ উপভোগ করছে। কফির কাপে চুমুক দিয়ে পরিবেশ উপভোগের সাথে বেশ তৃপ্তি করেই খাচ্ছে। গতকাল তার ভালোবাসার মানুষটা মারা গেছে, আজ তাকে দেখলে কেউ মনে করবে না এটি। তাকে এই মুহূর্তে দেখলে যে কেউ বলে উঠবে, নিসন্দেহে সে একজন সুখি মানুষ। তবে কি গতকাল রাতের রহস্যময় হাসির রাজ এখানে কিছু রয়েছে? এই প্রশ্নের জবাব একমাত্র যাবেদ ছাড়া আর কারোই জানা নেই। পকেট থেকে ফোনটা বের করে ডায়েল পেডে একটি নাম্বার তুলল। অতঃপর কল দিল উক্ত নম্বরে,
-” হ্যালো, কে বলছেন?” ঘুম ঘুম কণ্ঠে ওপাশ থেকে কথাটি ভেসে এলো।
-” নাদিম, আমি তোমার স্যার যাবেদ বলছি।” বেশ ধীর কণ্ঠে জবাব দিল যাবেদ।
-” ওহ্ স্যার আপনি! বলুন কী প্রয়োজন? ” হকচকিয়ে ঘুম থেকে ওঠে কথাটি বলল ওপাশে থাকা নাদিম।
-” বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। গতকাল অলিনের পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা আর গুলির স্যাম্পল প্রয়োজন। ” গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠল যাবেদ।
-” ওকে স্যার! আমি এক্ষুণি আপনার ই-মেইলে যাবতীয় ডেটা সেন্ড করতেছি। চেক করে নেবেন।” তাড়াহুড়ো করে কথাগুলো বলল নাদিম।
-” তুমি সেন্ড করো। আমি অপেক্ষায় রইলাম। ”

এই বলে কান থেকে ফোন নামিয়ে নিল যাবেদ। তৎক্ষনাৎ ফোনটি কেটে গেল। বেশ সময় গড়িয়েছে। পূর্ব আকাশে থালার মত একটি সূর্যের দেখা মিলছে। সূর্যের আলোয় চারদিক আলোকিত হয়ে গেছে প্রায়। একটি চুমুক দিয়ে কাপে থাকা অবশিষ্ট কফিগুলো পান করে নিল সে। অতঃপর বেলকনি প্রস্থান করে রুমে প্রবেশ করল। কাঠের আলমিরার পাল্লা খুলে ড্রয়ারে হাত রাখে যাবেদ। তৎক্ষনাৎ মিটমিটে একটি সবুজ আলো ঘিরে নেয় যাবেদের হাতের আঙুল। একটি টক করে শব্দ হয়। অতঃপর পূর্বের ন্যায় নিভে যায় সবুজ রশ্মিটি। এখন আর দেখলে কেউ বলবে না এখানে স্ক্যানার ছিল। আচমকাই ড্রায়ারটি বাহির দিকে ঠেলে বেরিয়ে এলো। সেদিকে ধ্যান না দিয়ে ড্রায়ারের ভেতরে রাখা ল্যাপটপটি বাম হাতে তুলে নিল সে। অতঃপর পুনরায় ডান হাত পূর্বের স্থান ছোঁয়াতেই পুনরায় সবুজ রশ্মিটি যাবেদের আঙুলগুলো ছেয়ে নেয়। তৎক্ষণাৎ আকস্মিকভাবে ড্রায়ারটি ভেতর দিকে চলে যায়। এবং একটি কাঠের পাল্লা এসে উক্ত স্থানটি ঢেকে যায়। কেউ দেখলে বলবে না এখানে একটি ড্রয়ার ছিল। বেশি কিছু না ভেবে ডান হাত দিয়ে কাঠের আলমিরার পাল্লা দু’টি লাগিয়ে নেয়। ল্যাপটপটি নিয়ে অতঃপর বিছানায় এসে বসে যায়। ল্যাপটপের উপর দিকে গোলাকার একটি চিহ্ন। তার মাঝে লেখা রয়েছে ” DIDO”। ল্যাপটপের পাল্লা খুলতে স্ক্রিনে ভেসে উঠল, ” Please verified your eye scene “।

যাবেদের চোখ দু’টি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে ল্যাপটপের স্ক্রিনের উপরে থাকা ক্যামেরার দিকে তাকাল। কয়েক সেকেন্ড পেরিয়ে যেতেই স্ক্রিনে ” Welcome ” লেখাটি ভেসে উঠল। দ্রুত ই-মেইল ফাইলে ঢুকে গেল সে। দুই মিনিট আগে নাদিম নামের একটি ই-মেইল থেকে মেইল এসেছে। দ্রুত উক্ত স্থানে প্রবেশ করে সে। তৎক্ষণাৎ একটি সাদা পেইজ চলে আসে, যাতে বেশ কিছু লেখা দেখা যাচ্ছে। একটু নিচে যেতেই একটি ছবির দেখা মিলল। ছবিটি একটি বুলেটের। তবে অবাক ব্যাপার হচ্ছে, বুলেটের পেছন দিকে ত্রিভুজ আকৃতির একটা সাইন রয়েছে। যার মধ্যস্থানে একটি অর্ধ উন্মুক্ত চোখ দেখা যাচ্ছে। অবিলম্বেই যাবেদের মস্তিষ্ক নাড়া দেয় সকালে টিভিতে দেখা খবর। সেখানে বলা হচ্ছিল, নগ্ন বুকের উপর একটি ত্রিভুজ সৃষ্টি করা হয়েছে ছুরি দিয়ে কেটে। এবং উপড়ে ফেলা চোখটি ত্রিভুজের মধ্যস্থানে পাওয়া যায়।

ঘটনা দু’টি মিল পাওয়া যায় একটি স্থানে। তবে এই সাইন কীসের, তা অজানা নয় কারো। তবুও নিশ্চিত হবার জন্য গুগল করল সে। একদম নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়েছে সাইন দুটি। দু’টি সাইন পরস্পর একত্র করে রাখতেই বুঝতে পারল সে। দু’টি সাইন হুবহু এক। কোনো ভিন্নতা নেই।

— ” চলবে ” —

*কী হতে যাচ্ছে?
*যাবেদের মুখে হাসি কেন?
*খুন কি তবে যাবেদই করিয়েছে?
*সাইনগুলো কীসের?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here