খুন সিরিজ দ্বিতীয় সিকুয়েন্স,পঞ্চম পর্ব

0
214

খুন সিরিজ দ্বিতীয় সিকুয়েন্স,পঞ্চম পর্ব
– যাবেদ খাঁন আবু বকর

হাসিমুখে তিয়াজকে ধন্যবাদ জানিয়ে কল কেটে দিল যাবেদ। কিছু সময় অতিক্রম করতেই ফোনে একটি মেসেজ এলো। অবশ্য মেসেজটি তিয়াজের নাম্বার থেকে এসেছে। তৎক্ষণাৎ ফারহানের উদ্দেশ্য করে বলে উঠল যাবেদ,
-‘ গাড়ি দ্রুত ঘুরিয়ে মিরপুর ১১ নাম্বরে নিয়ে যাও। এবং সেখানে থাকা গ্লাসের দোকানের কাছে গাড়ি থামাবে।’ এক দমে কথাগুলো বলে থামল সে।
-‘ ঠিকাছে। কিন্তু আমার একটি প্রশ্ন অজানাই রয়ে গেল!’ হতাশায় আহত কণ্ঠে বলল ফারহান।
-‘কী?’ অবিলম্বে ফারহানের কথার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করল যাবেদ।
-‘ এত বড় শহরে একটা দোকান নির্দিষ্ট করে বাছাই করলেন কী করে?’ কিঞ্চিৎ পরিমাণ অবাক হয়ে প্রশ্নটি করল ফারহান।
-‘ যেহেতু আমার বাসা মিরপুর রোড নং ১। তো আমার বাড়ির থাই বদল করতে হলে কী করতে হবে? প্রথমে তাকে ক্রয় করতে হবে। কিন্তু এই ক্রয়টা কীভাবে করবে? তুমি তোমার হাতের কাছে যেই জিনিস পাচ্ছ, সেটা কি তুমি কয়েকশত মাইল দূর থেকে আনবে? অবশ্যই না।আর এত খাটুনি এত দূর থেকে বহন করে এনে লাগানোর কোনো মানেই হয় না।’ কিঞ্চিৎ হেসে প্রশ্নের জবাব দিল যাবেদ।
-‘ তা বুঝলাম। কিন্তু তারপরেও এতটা শিওর হচ্ছেন কী করে?’ পুনরায় অবাক হয়ে প্রশ্ন করল ফারহান।
-‘ একটু সহজভাবে বলি, তুমি যদি তোমার বাসার কাজের জন্য কিছু কেনো, তবে তা হাতের নাগালে পেলে সেখান থেকেই কিনবে! রাইট?” ফারহানের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল যাবেদ।

যাবেদের প্রশ্ন শুনে মাথা নেড়ে হ্যাঁ সম্মতি প্রদান করল ফারহান। পুনরায় বলতে লাগল যাবেদ,
-‘ তো হাতের নাগাল দুই কিলোমিটারই যথেষ্ট। আর আমার বাসায় যে কার্বনেট গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে তা অতি সাধারণ। আজকাল লোক এগুলো সচারাচর ব্যবহার করে না। সবাই দামী কার্বনেট গ্লাস ব্যবহার করে। আর যদিওবা কেউ ক্রয় করে। তবে অনেকগুলো এক সাথে নেয়। সে ক্ষেত্রে আমার বাসার একটা থাই গ্লাস বদলের জন্য একটাই থাই গ্লাস কিনেছে। আর তা দুই কিলোমিটারের মধ্যে যে কয়টা দোকান ছিল সবগুলোর মাঝে শুধু একটা দোকানেই একটা থাই বিক্রি হয়েছে। আর বিক্রিও করা হয়েছে দুদিন আগে। তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় উক্ত দোকান থেকেই বিক্রি হয়েছে। আর থাই গ্লাস যেহেতু গত পরশুদিন তথা দু’দিন আগের রাতে বদল করা হয় এবং তার পরেরদিনই আমার উপর হামলা করা হয়। তবে খুব সহজভাবেই বলা যায় এই দোকান থেকেই উক্ত থাই গ্লাসটি বিক্রি হয়েছে।’ খুব স্বাভাবিক স্বরে কথাগুলো বলল যাবেদ। কিন্তু সে কী বলল আর কী বুঝালো তা কিছুই মাথা ঢুকেনি ফারহানের। যেন মাথার উপর দিয়ে সাঁই করে উড়ে গেছে বোলতানুরূ।

এমতাবস্থায় আকস্মিকভাবে গাড়ির ব্রেক চেপে থামিয়ে দিল ফারহান। তা দেখে কিঞ্চিৎ পরিমাণ অবাক চোখে তার দিকে তাকাল যাবেদ। চোখের ইশারায় বাহিরে দেখতে বলল সে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে বাহিরে তাকাল সে। বাহির দিকে তাকানো মাত্রই দ্রুত হাত থেকে ফোন চালু করে মেসেজ চেক করল। নিশ্চিত হওয়া মাত্রই দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে পড়ল সে এবং ইশারায় ফারহানকেও গাড়ি থেকে বের হয়ে তার পিছুপিছু ভেতরে প্রবেশ করতে বলল। গাড়ি থেকে নেমেই সোজা দোকানের ভেতর প্রবেশ করল যাবেদ। তার পিছুপিছু হেঁটে আসছে ফারহান। চারদিকে অসংখ্য কাচের টুকরো দেখা যাচ্ছে। তাদের দু’জনের প্রতিবিম্ব ফুটে উঠেছে গ্লাসগুলোতে। ভেতরে ঢুকতেই দোকানের এক কর্মচারী তাদের দেখা মাত্রই প্রশ্ন করল,
-‘ সালাম স্যার। কী নেবেন? পলি-কার্বনেট গ্লাস না-কি নন পলি-কার্বনেট গ্লাস?’
-‘ সবটাই নেবো, তার আগে বল তোর মাহাজন কোথায়?’ গম্ভীর স্বরে বলে উঠল যাবেদ।
-‘ আপনে এই হান দিয়া সোজা যাইবেন। হেরপর একটু বায় মোর নিয়া সোজা যাইবেন। হেরপরই দেখবেন চাইরদিকে থাই গ্লাস দিয়ে আটকাইন্না একটা রুম আছে। হেনে গিয়া নক কইরা ভিতরে ঢুকলেই হেরে পাবেন। তয় এহন মনে হয় হেয় ইট্টু ব্যস্ত আছে।’ আধো শুদ্ধ এবং আধো অশুদ্ধ ভাষায় কথাগুলো বলল দোকানের এক কর্মচারী যুবক।
-‘ সে দেখা যাবে। তুই তোর কাজ কর। ‘
গম্ভীর কণ্ঠে এই কথা বলে যুবকটির সামনে থেকে হেঁটে চলতে লাগল তারা। যুবকটির বলা রাস্তা মোতাবেক চলতে লাগল দু’জন। প্রথমে সোজা হেঁটে বাম দিকে মোর নিয়ে পুনরায় সোজা হাঁটতে লাগল তারা। কিছু সময় পেরিয়ে যেতেই নজরে এলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারো কাচের টুকরো। এর মাঝে এক কোনায় থাই দিয়ে চারকোনা আবদ্ধ হয়ে থাকা ঘর দেখা যাচ্ছে। তবে অবাক বিষয় হচ্ছে চারদিকে লাইটের আলোতে উজ্জ্বল আলোকিত হয়ে আছে। দ্রুত পায়ে হেঁটে দরজার কাছে উপস্থিত হয়। দরজায় নক না করেই জোরে একটি ধাক্কা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে যাবেদ। কিছু বলতে যেয়েও থেমে যায় ফারহান। ভেতরে প্রবেশ করতেই অবাক হয়ে যায় দুজন। একজন মধ্যবয়সী লোক এবং একটি যুবতী মেয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত উপভোগ করছে। তাদের দুজনের দেখা পাওয়া মাত্রই হন্ন হয়ে গেল দু’জন। যুবতী মেয়েটি প্রায় নগ্ন অবস্থায়। কেবল ছোটো কাপড়গুলো দেহে জড়িয়ে আছে। অপর দিকে মধ্যবয়সী লোকটিও কম যায় না। সেও প্রায় অর্ধ নগ্নের সীমা পেরিয়ে গেছে। কাপড় হাতে নিয়ে দ্রুত রুম ত্যাগ করল অর্ধ উলঙ্গ হয়ে থাকা যুবতী মেয়ে। দ্রুত নিজেকে অর্ধ নগ্ন অবস্থা থেকে প্যান্ট পড়ে নিল মধ্যবয়সী লোক। তবে তার পূর্বেই বেশ বাজে শব্দে গালি দিয়েছে সে। বেশ কড়া কণ্ঠে তাদের উদ্দেশ্য করে বলে উঠল মধ্যবয়সী লোক,
-‘ ন্যূনতম ভদ্রতা কি নেই? ভেতরে প্রবেশ করার পূর্বে যে একবার নক করে আসতে হয়, সেদিকে ধ্যান নেই! কোত্থেকে যে আসে এ সকল মূর্খের বাচ্চাগুলা।’

প্রতিত্তোরে কিছু বলল না যাবেদ। কেবল কোমড়ে গুজে রাখা বন্দুকটি বের করে আঙুলের মাঝে রেখে ঘুরাতে লাগল। আকস্মিক ঘটনায় থতমত খেয়ে গেল মধ্যবয়সী লোক। কখনো সে ভাবেওনি তার সামনে এরকমভাবে কেউ বন্দুক নিয়ে এভবে খেলা করবে। ভয় জড়িত কণ্ঠে কাঁপিত গলায় বলতে লাগল মধ্যবয়সী লোক,
-‘ এএএএটা খেএএএলনা পিস্তল তাতাতাই না?’
-‘ মডেল .9mm। রেঞ্জ 180 মিটার। ফায়ার স্পীড 3496.23 মিটার। মেইড ইন রাশিয়া। গুলি চলি, তো খুলি উড়ি। ” একটি মুচকি হাসি দিয়ে কথাগুলো বলল যাবেদ।

যাবেদের কথা শুনে ঢোক গিলতে লাগল মধ্যবয়সী লোক। কী বলছে তার সামনে থাকা লোক তা সম্পূর্ণ বুঝতে না পারলেও শেষের বলা কথাটি দ্বারা বুঝতে পেরেছে, যদি কোনো রূপভাবে তার উদ্দেশ্য করে একটি গুলি ছোঁড়া হয়। তবে এই ভুবনে বেঁচে থাকা দায়। তৎক্ষণাৎ যাবেদের পায়ে পড়ে যায় মধ্যবয়সী লোক। এবং ক্রন্দন জড়িত কণ্ঠে বলতে লাগল সে,
-‘ কতটাকা লাগবে? যা লাগবে নিয়ে নাও। তারপরেও আমাকে প্রাণে মেরো না।’
এরূপ কথাবার্তা দেখে বিরক্তি ভরা কণ্ঠে বলতে লাগল যাবেদ,
-‘ এগুলোর জন্য আমি মোটেও আসিনি। এসেছি একটা কাজের জন্য। যদি কাজ করে দিতে পারো, তবে বেঁচে যাবে। নয়তো বায় বায়।’ একটি মুচকি হাসি দিয়ে বলল যাবেদ।
-‘ না না বলেন কী করতে হবে? আমি সব করব। কী লাগবে তা বলেন আমি দিয়ে দেবো।’ কান্না যুক্ত কণ্ঠে কথাগুলো বলল মধ্যবয়সী লোক।
-‘ এগুলোর কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই। আমার প্রয়োজন কেবল সিসিটিভি ফুটেজ। দেরি না করে কাজ শুরু করে দাও।’ শান্ত স্বরে কথাগুলো বলল যাবেদ।
-‘ আপনি বসেন আমি এক্ষুণি চালু করতেছি। কবেকার ফুটেজ লাগবে শুধু তা বলেন।’ চোখের পানি মুছে কথাগুলো বলল মধ্যবয়সী লোক।
-‘ গত পরশুদিনের সম্পূর্ণ ফুটেজ মিডিয়াম ফার্স্ট মুডে চালু করো।’ পুনরায় গম্ভীর স্বরে বলে উঠল যাবেদ। ফারহান কেবল চুপচাপ চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগল কর্মকাণ্ড।

মধ্যবয়সী লোকটি ফুটেজ চালু করতেই গম্ভীর দৃষ্টিতে দেখতে লাগল যাবেদ। কিছু সময় বাদে মৃদুস্বরে আচমকাই বলে উঠে সে,
-‘ ফ্রিজ।’

লোকটি যাবেদের কথা মত উক্ত স্থানেই তৎক্ষণাৎ চলিত সিসিটিভি ফুটেজ বন্ধ করে দেয়। স্ক্রিনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে কিছু সময়ের জন্য তাকিয়ে রইল যাবেদ। তা দেখে কিঞ্চিৎ পরিমাণ অবাক হয় ফারহান। একটা ছবির দিকে এতটা কঠোর দৃষ্টিতে তাকানোর কোনো মানে খুঁজে পায় না। কিছু বলতে যাবে সে, এর পূর্বেই মধ্যবয়সী লোকটির উদ্দেশ্য করে বলে উঠে যাবেদ,
-‘ ধন্যবাদ। আর আগামীতে যেন এসকল কাজ না দেখি। মনে থাকবে?’ এ কথা শুনে তৎক্ষণাৎ বিশাল এক ধাক্কা খায় ফারহান।
-‘ আচ্ছা করে মনে থাকবে স্যার। কিন্তু আপনি কে তা তো বললেন না!’ কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করল মধ্যবয়সী লোক।

পকেট থেকে একটি কার্ড লোকটির দিকে তুলে দিয়ে বলতে লাগল যাবেদ,
-‘ আপাতত এতটুকুই দেখে নাও। আর আগামীতে খবরের চ্যানেলে নজর রেখো। তবেই আমার পরিচয় খুঁজে পাবে।’ একটি হাসি দিয়ে বলল।

এই বলে তৎক্ষণাৎ লোকটির সামনে থেকে সরে গেল যাবেদ। হাতের ইশারায় ফারহানকে তার পিছুপিছু আসতে বলল। চলতে চলতে বেশ বিরক্তি মাখা স্বর নিয়ে যাবেদের উদ্দেশ্য করে বলে উঠল ফারহান,
-‘ আমি এখনো বুঝতেই পারলাম না, এখানে কেন এসেছি!’
-‘ সকল কিছু সকলের বুঝবার মত সামর্থ্য থাকে না। যার যতটুকু বুঝার ক্ষমতা, সে ততটুকই বুঝবে।’ একটি রহস্যময় হাসি মুখের কোণে এনে কথাটি বলল যাবেদ।
-‘ কিন্তু বললেই তো বুঝা যায়! আমরা এখানে কেন এলাম?এখানে এসে কী পেলাম? এখানে আসার উদ্দেশ্য কী?’ কিঞ্চিৎ অবাক হয়ে প্রশ্নগুলো করল ফারহান।
-‘ এখানে এসেছি বিশেষ একটি কাজে। আর এখানে এসে অনেক কিছুই পেয়েছি। এখানে আসার উদ্দেশ্য তোমার জানা আছে। তাই বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ‘ পুনরায় মুখের কোণে একটি রহস্যময় হাসি ফুটিয়ে কথাগুলো বলল যাবেদ।
-‘ পুনরায় শুরু হয়েছে আপনার রহস্যময় কথা। যে কথার আগামাথা আজও খুঁজে পাইনি আমি। বাদ দেন! প্রয়োজন নেই জানার। যখন ঘটবে তখন দেখা যাবে। ঘাট হয়েছে আপনার সাথে মিশনে এসে। আগে জানলে এরকম সাইকোর সাথে কখনোই মিশনে আসতাম না। ” ঈষৎ রেগে কথাগুলো জ্ঞাপন করল ফারহান।

ফারহানের কথা শুনে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলতে লাগল যাবেদ,
-‘ গুড বয়। গাড়িটা তৈরি রাখো। আর আমার পিছুপিছু গাড়ি নিয়ে আসো। ‘

এই বলে দোকান থেকে বের হয়ে ডান দিকে যেতে লাগল। এবার বেশ রেগে গেল ফারহান। তীব্র রেগে বলতে লাগল সে,
-” আমি বুঝতে পারছি না আপনি কী শুরু করছেন! তবে আপনার এ সকল কাজে আমার বিরক্তি এসে যাচ্ছে।’
ফারহানের কথা শুনলেও প্রতিত্তোরে কিছুই বলল না যাবেদ। তার কথার জবাব কেবল দুই আঙুল দিয়ে ইশারায় তাকে অনুসরণ করতে বলল সে।

কিছুদূর হাঁটতেই বাম দিকে একটি মোর নজরে এলো তার। ঘড়ির দিকে তাকাল যাবেদ। তিনটা বেজে উনচল্লিশ মিনিট। রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যাও নেই বললেই চলে। তৎক্ষণাৎ বাম দিকে মোর ঘুরে গেল যাবেদ।

চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকারে। মাথার উপরে কেবল ২৫ ওয়াটের একটি লাল লাইটের আলোতে মিটমিটে আলোকিত হয়ে আছে রুমের চারদিক। আর তাতে রুমের সামান্যতম অন্ধকারের রেশ থেকে রক্ষা পাচ্ছে ঘর। খুব একটা আলোও নয় আবার একেবারে অন্ধকারও নয়। চারদিক পিনপতন নীরবতা। কোনো আওয়াজ অবশিষ্ট নেই। মিটমিটে জ্বলা লাল লাইটের আলোর নিচে রয়েছে দুটি চেয়ার। এবং উক্ত চেয়ার দুটিতে দুজন লোকের উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছে। চেয়ারে বন্ধি দু’জনের মধ্যে একজন পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো। কোথায় আছে সে বুঝার চেষ্টা করতে আরম্ভ করল। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছে না। তৎক্ষণাৎ পাশে থাকা বন্ধি হয়ে থাকা লোকটিও পিটপিট করে চোখ মেলে তাকাল। সেও বুঝতে পারছে না কোথায় আছে তারা। আচমকাই একটি উচ্চস্বরে হাসি ভেসে আসছে তাদের দিকে। সে হাসির শব্দে কিছুটা ভীতিকর পরিস্থিতিতে পড়ে গেছে দু’জন। কোনোভাবেই খুঁজে পাচ্ছে না এখানে কে এনেছে? আর তারাই বা কোথায় আছে? গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বেরুচ্ছে না দু’জনের। এর কারণ কী? তা বুঝতে পারছে না তারা। এটা কি ভয়ের তাড়নায় কথা বেরুচ্ছে না! না-কি অন্য কিছু বুঝতে পারছে না তারা। পায়ের কদম ফেলার ঠকঠক শব্দ ভেসে আসতে লাগল ঘরের ভেতর। দুই জোড়া পায়ে হাঁটার শব্দ। বুট জুতা পরিধান করে যদি কেউ হাঁটে তবে এরকম ঠকঠক আওয়াজের সৃষ্টি হয়। এই আওয়াজটিও তার ব্যতিক্রম নয়। ঠকঠক আওয়াজ তুলে চেয়ার বন্ধি লোক দুটির কাছে দুজন লোক এসে হাজির হয়। মিটমিটে আলোয় খুব একটা বুঝা যাচ্ছে না। বহু কষ্টে আগত লোক দুটির দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল চেয়ার বন্ধি একজন,
-‘ কারা তোমরা? তোমাদের কোনো আন্দাজ আছে তোমরা কাকে ধরে নিয়ে এসেছ?”

এ কথা শুনে আগত দুজনের কণ্ঠে উচ্চস্বরে হাসি ভেসে আসতে লাগল। সে হাসির শব্দে সম্পূর্ণ ঘর যেন ঝংকার দিয়ে উঠেছে।
,
,
,
[– ” চলবে ” –]

* কী হতে যাচ্ছে?
*কাদেরকে ধরে এনেছে?
*কারা হাসছে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here