গল্প:- খুন সিরিজ দ্বিতীয় সিকুয়েন্স,সপ্তম পর্ব
লেখনীতে:- যাবেদ খাঁন আবু বকর
গাড়ি ছুটতে লাগলো বাতাসের বেগে। পেছনে ধূলা উড়িয়ে চলল দিগন্তের দিকে। বেলা ফুরিয়ে এসেছে প্রায়। পশ্চিমাকাশে সূর্য হেলে পড়েছে। যেন ঘরে ফিরে যাবার তৈরি করা শেষ। গোধূলি লগ্ন পরিবেশ। এখন সূর্য কেবল তার ঘরে যাবার অপেক্ষার প্রহর গুনছে। দিনের ক্লান্তি সারাতে বিশ্রামের জন্য ডুবে যাচ্ছে সূর্য। অপেক্ষা কেবল নতুন দিনের দেখা পাবার। চিকচিক করা সূর্যের আলোক রশ্মিগুলো বাঁকা হয়ে তার কিরণ দিচ্ছে। এ আলোক রশ্মিতে নেই তেজ, তবে রয়েছে মুগ্ধতা। যেন সূর্য সারাদিন আলো দিয়ে এখন বড্ড ক্লান্ত। তবুও একরাশ হাসিমুখে বিদায় জানান দিচ্ছে। এবং পুনরায় পরের দিন উদিত হবার আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে।
এরকম একটি পরিবেশে যাবেদ বেশ ফ্রেস মুডে রয়েছে। মুখে একরাশ হাসির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। যেন কিছুক্ষণ আগে কিছুই হয়নি। মুহূর্তে মুহূর্তে যাবেদের পরিবর্তন দেখে ফারহান বেশ অবাক। তার জীবনেই যত আজীব প্রাণীর সাথে দেখা হয় বলে নিজের মনকে নিজেই গালি দিচ্ছে। একটু আগে মানুষটা কতটা ভয়ানক ছিল, সে মানুষটাকে এখন দেখলে যে কেউ বলবে এ এক নাদান বাচ্চা। খুন-খারাবার দিকে একে ভাবা অন্যায়। কিন্তু বাস্তবিকতা বড্ড ভিন্ন। তার দিকে ফারহান বেশিক্ষণ তাকিয়ে রইল না। কিঞ্চিৎ রাগ মনে পোষণ করে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে রইলো। সারাদিনের পরিশ্রান্ত দেহটা পেছনে হেলান দেওয়ার জন্য সিটে গা লাগাতেই চোখ দুটিতে অসাড় নেমে এলো। চোখের পাতা দুটি পরস্পর মিলায়তন ঘটে গেল। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে ফারহান, সে হুস নেই।
ফারাহানের ঘুমন্ত চেহারায় মায়া দিয়ে আবদ্ধ। তারদিকে তাকিয়ে যাবেদ একটু শব্দ করে মুচকি হাসি দিয়ে উঠল। সিটের সাথে গুটিসুটি মেরে কোনোমতে শুয়ে আছে বেচারা। সেদিকে সে ধ্যান না দিয়ে, সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাতে ব্যস্ত হয়ে গেল। দীর্ঘ ৫৪ মিনিট গাড়ি চলবার পর তারা বাসার কাছে এসে পৌঁছাল। গাড়ি গ্যারেজে ঢুকিয়ে যাবেদ গাড়িতেই বসে রইল। মনে মনে ভাবতে লাগল, ফারহানের কাঁচা ঘুমটা এখন ভেঙে দেওয়া উচিত কি নয়? অবশেষে ভাবাভাবির অবসান ঘটিয়ে সিদ্ধান্ত নিল তাকে জাগিয়ে তুলবে। মিহি কণ্ঠে ফারহানের উদ্দেশ্য করে যাবেদ ডাক দিল। কিন্তু তা সে কানেও তুলল না। যাবেদ বুঝতে পারল, সে এখন বেঘোর ঘুমে মগ্ন। কিন্তু তবুও সে চিন্তায় পড়ে যায়। এখানে কোনো মতেই ফারাহানকে রেখে যাওয়া যাবে না।
পরবর্তীতে ফারহানের গায়ে হাত রেখে যাবেদ একটু ঝাঁকুনি দিয়ে ডাক দিল।
-” ফারহান! এই ফারহান। ”
ঘুম জড়িত কণ্ঠে ফারহান জবাব দিল,
-” হুম!”
-” উঠো, বাসায় এসে গেছি তো। এখন আর গাড়িতে ঘুমানোর প্রয়োজন নেই। ঘরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে এরপর ঘুম দিও। ”
এবার ফারহান কিছুটা হকচকিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠল। ঘুম থেকে জেগে কিঞ্চিৎ অবাক হয়ে যায়। ভেবে পায় না সে গাড়িতে ঘুমিয়ে গেল কী করে! আর এখন তারা আছেই বা কোথায়? তৎক্ষণাৎ তার উদ্দেশ্য করে যাবেদ বলতে আরম্ভ করল,
-‘ এত ভেবে লাভ হবে না। এখন চলো।’
চোখ কচলাতে কচলাতে ফারহান জবাব দিল,
-‘ আসলে কখন যে চোখ লেগে এসেছিল খেয়াল নেই! তা এখন আমরা কোথায় আছি?’
কোনোরকম নিশ্বাস ত্যাগ না করে যাবেদ ব্যক্ত করতে লাগল,
-‘ বুঝেছি! সমস্যা নেই। আপাতত আমার বাসায় আছো। আর মিশন শেষ হবার আগ অবধি আমার সাথেই থাকবে।’
যাবেদের উদ্দেশ্য করে ফারহান কিছু বলতে যাবে, কিন্তু তার পূর্বেই যাবেদ তার হাতের ইশারায় চুপ করিয়ে দিল। ইশারায় তাকে অনুসরণ করতে বলে দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে গেল। তার পিছুপিছু ফারহান গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে লাগল। গ্যারেজ থেকে বেরিয়ে তারা কয়েক মিনিট হাঁটতেই প্রবেশ করল বাসায়। বাসার ভেতরে ঢুকতেই তাবিবের সাথে দেখা হলো তাদের। ইশারায় যাবেদ তাবিবকে দেখিয়ে বলল,
-‘ ফারহান, তাবিব। আমার ছোটো ভাই। তাবিব, ও ফারহান। মিশনের নিউ পার্টনার।’
দুজন দুজনকে হায় হ্যালো বলে করমর্দনে লিপ্ত হলো। তৎক্ষণাৎ যাবেদ প্রশ্ন রাখল তাবিবের উদ্দেশ্য করে,
-‘ খাবার কি রান্না করেছিস? না-কি করা লাগবে?’
-‘ হ্যাঁ রান্না করেছি। গরুর গোসতের ভুনা, ভাত, ডাল আর ভাজি…”
তাবিবের কথা সম্পূর্ণ শেষ করে না দিয়ে যাবেদ পুনরায় পালটা প্রশ্ন উপস্থাপন করল,
-‘তুই খেয়েছিস?’
প্রতিত্তোরে একটি মুচকি হাসি দিয়ে তাবিব ব্যক্ত করল,
-‘ নাহ, তোমার সাথে খাব বলে এখনো খাইনি। ‘
ভাই-ভাইয়ের প্রতি এতটা মিল দেখে ফারহান রীতিমত অবাক। তাকে পুনরায় চমকে দিয়ে যাবেদ বলতে লাগল,
-‘ আচ্ছা তবে তুই খাবারগুলো টেবিলে পরিবেশন কর। আমরা ফ্রেশ হয়ে আসছি। আর ফারহানকে ওয়াশরুমটা দেখিয়ে দিস। ”
এই কথা বলে যাবেদ দ্রুত পায়ে উঠে গেল দোতলায়। ড্রেস পালটে গোসল সেরে দ্রুত নিচে নেমে এলো। ইতোমধ্যেই তাবিব ও ফারহান টেবিলে খেতে বসে গেছে। তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে চেয়ার টেনে বসে গেল খাবার উদ্দেশ্যে। তবে তার পূর্বে রিমোট চেপে টিভি অন করে নিয়েছে। প্লেটে নিজে নিজের খাবার তুলে খেতে লাগল সবাই। এমতাবস্থায় শুরু হলো সন্ধ্যা সাতটার খবর। খবরের এক পর্যায় পাঠ করতে লাগল,
গত কয়েকদিন যাবত শহরে খুনের আশংকা বেড়েছে আগের তুলনায় বহুগুণ। গত দু’দিনে খুনের পরিমাণ ছয়টি হলেও, আজ তা অবাক করে দিয়ে বেশ বড় এক একটি খুনের এমাউন্ট যোগ হয়েছে। আজ সারাদিনে মোট ৪০টির বেশি মরা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ কর্মকর্তারা। তন্মধ্যে ৩২টি মেয়ের এবং বাকি ৮টি ছেলের। এছাড়াক প্রত্যেকটি দেহ একই ভাবে খুন করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে কমন বিষয় হচ্ছে, প্রতিটি মৃত দেহের বুকে ত্রিকোণ একটি ত্রিভুজ এবং তার মধ্যস্থানে একটি চোখ আকৃতি করে কেটে রাখা হয়েছে। বিজ্ঞজনের মাঝে অনেকের দাবি, এই খুনগুলো ইলুমিনাতির দ্বারা সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও ইতোমধ্যেই জনসাধারণের মনে ভয় ঢুকে গেছে। রাত ৮টার পর কেউকে বাহিরে দেখা গেলে ক্রস ফায়ারের নির্দেশ পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট থেকে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ পাঠিকা আর কিছু বলার পূর্বে যাবেদ রিমোট চেপে টিভি বন্ধ করে দিল। তা দেখে তাবিব বলতে লাগল,
-‘ এতো দেখছি খুন করার ট্রেণ্ড শুরু হয়েছে। আগে তিনটা কি চারটা খুন হতো। আজকে তো ইতিহাসের সম্পূর্ণ রেকর্ড ভেঙে দিল! সিরিয়াল কিলারদের সিরিয়াল কিলিংয়ের রেকর্ডও হয়তো এরা ব্রেক করে দিয়েছে। ‘
কিঞ্চিৎ রাগ নিয়ে যাবেদ বলতে আরম্ভ করল,
-‘ এরা নিজেদের পালের সীমা পার করে ফেলেছে। এবার তো এদের মরতেই হবে। ‘
দ্রুত খাওয়া শেষ করে যাবেদ তার ঘরে চলে যায়। ফারহানের খাওয়া-দাওয়ার পর্ব সম্পন্ন করতেই তাবিব তার জন্য গেস্ট রুম সুন্দর করে পরিপাটি এবং থাকার মত একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দেয়। এবং এখানেই তাকে ঘুমানোর জন্য বলে যায়। টেবিলে থাকা সকল খাবারগুলো সুন্দর করে রেফ্রিজারেটরে গচ্ছিত রেখে তাবিব তার রুমে চলে যায়।
চারদিকে নিস্তব্ধতা জুড়ে আছে। পিনপতন নীরবতা বিরাজমান। মৃদু বাতাস বয়ে চলেছে। আর তা রীতিমত শীতল করে দিচ্ছে দেহ। ছাদে দাঁড়িয়ে যাবেদ এক দৃষ্টিতে বিশাল আকাশের তাকিয়ে আছে। পেছন দিক থেকে ফারহান তার কাছে এসে উপস্থিত হয়। কারো উপস্থিতি টের পেয়ে যাবেদ পেছন দিকে ফিরে তাকায়। ফারহানকে দেখে কিছু বলল না আর। তৎক্ষণাৎ তার উদ্দেশ্য করে ফারহান প্রশ্ন রাখে,
-‘ খুব মনে তার স্মৃতি তাই না?’
-‘ যাকে ভালোবাসবে তার স্মৃতি তোমার চোখে ভাসতে বাধ্য। হও তুমি যতই নিষ্ঠুর। তবুও এক সময় তোমার নিষ্ঠুরতার বাঁধ ভেঙে দুর্বলতা বেরিয়ে আসবে। হয়তো তা লোক চক্ষুর আড়ালে। কিন্তু বেরিয়ে আসতে বাধ্য। ‘
ফারহান কিঞ্চিৎ হতাশায় নিমজ্জিত কণ্ঠে বলল,
-‘ হয়তোবা! এরকম অনুভূতি অনুভব করার মত সুযোগ কখনো হয়ে উঠেনি!’
-‘ আচ্ছা বাদ দাও। কাল সকালে খুব ভোরে উঠতে হবে। এখন ঘুমাতে যাও। আর কাল খুব বড় কাজ আছে। সাথে রয়েছে মানসিক ঝুঁকি। তাই আগে থেকেই ঘুমিয়ে প্রিপারেশন নাও।’
এই বলে যাবেদ তৎক্ষণাৎ ছাদ ত্যাগ করল।
সকাল সাতটা বাজে। ঘুম থেকে জেগে গেছে সবাই। ফ্রেশ হয়ে গোসল করে যাবেদ সাদা শার্ট এবং কালো ব্লেজার পরিধান করে নিল। দ্রুত পায়ে হেঁটে নিচ তলায় নামল। তাবিব এবং ফারফানের অস্তিত্ব নিচে দেখা যাচ্ছে। দুজনেই তৈরি তাদের কর্মসংস্থানে যাবার জন্য। তাবিবের সাথে যাবেদ নাস্তা তৈরিতে হাত লাগাল। পনেরো মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে গেল খাবার। ব্রেকফাস্ট অনুযায়ী টেবিলে পরিবেশন করা হলো রুটি এবং ভাজি। তিনজন তৃপ্তি সহকারে ভোজন সম্পন্ন করল। খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষ করে কাজের জন্য যাবেদ এবং ফারহান গ্যারেজ থেকে গাড়ি নিয়ে রওনা দিল। ফারহান গাড়ি পরিচালনা করছে। বর্তমান উদ্দেশ্য তাদের অফিসে যাওয়া। চলতি পথে ফোনের ডায়ল প্যাডে যাবেদ একটি নাম্বার তুলে কল দিয়ে ব্লুটুথ কানেক্ট করে ডিভাইসটা কানে তুলে নিল। দুইবার রিং হতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো,
-‘ জি স্যার বলুন।’
যাবেদ কিছুটা উৎসুক হয়ে জানতে চাইল,
-‘ যে কাজটা দিয়েছিলাম, তা কতদূর হলো?’
ওপাশ থেকে কিছুটা হতাশাগ্রস্ত কণ্ঠে ভেসে এলো,
-‘ দুঃখিত স্যার। যে নাম্বারটা ট্রেস করার জন্য দিয়েছিলেন তা ট্রেস করতে সফল হইনি। এটা এপ্স থেকে তৈরিকৃত নাম্বার। যা প্রতি সেকেন্ডে তার আইপি এড্রেস বদল করে একেক দেশ দেখাচ্ছে। যার হেতু সনাক্ত করতে সম্ভব হইনি এটা কোথা থেকে পরিচালিত হচ্ছে।”
-‘ আচ্ছা ঠিক আছে। তবে ট্রাকিং ডিভাইসটার লোকেশন ট্রেস করতে পেরেছ?’
ওপাশে থাকা অজ্ঞাত লোক পুনরায় হতাশাগ্রস্ত কণ্ঠে জবাব দিল,
-‘ এক্ষেত্রেও ব্যর্থ বলতে পারেন স্যার! এখানেও প্রতি সেকেন্ডে তাদের আইপি এড্রেসগুলো এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তরিত হচ্ছে।
কিঞ্চিৎ রেগে যাবেদ বলল,
-‘ ড্যাম ইট। তবে আর কোনো রাস্তা নেই!’
-” অবশ্যই আছে। আমরা খুঁজে পেয়েছি সেই সাইন্টিস্টকে। এই মাসের মধ্যে কেবল এই একজন সাইন্টিস্টই কেবল মালয়শিয়া থেকে ঢাকায় এসেছে। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় আমরা যেই সাইন্টিস্টকে খুঁজতেছি, ইনিই সেই লোক।’
-‘ দ্যাট’স গুড বয়। সাইন্টিস্টের লোকেশন দ্রুত শেয়ার করো।’
-‘ জি স্যার! আমি এক্ষুণি লোকেশন শেয়ার করে দিচ্ছি।’
যাবেদ তার কানে থাকা ডিভাইসে চাপ দিয়ে কল কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পরই ফোন কাপিয়ে একটি মেসেজ উপস্থিত হয়। মেসেজ চেক করতেই লোকেশন ভেসে উঠল ঢাকা ধানমণ্ডি ছয় নাম্বার সেক্টর। একটি দোতলা বাড়ি। ফারহানের উদ্দেশ্য করে ফোনটি তার দিকে তুলে ধরে। লোকেশন দেখা মাত্রই বুঝে যায়, এখন তার কী করতে হবে। গাড়ির গতিপথ আগের চাইতে বৃদ্ধি করে দিয়ে ছুটতে লাগল সামনের দিকে। মিনিট ত্রিশ পাড় হতেই তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত স্থানে এসে পৌঁছাল। অবিলম্বেই যাবেদ দ্রুত পায়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াল। ফারহান তার পিছুপিছু নামল গাড়ি থেকে। দ্রুত পা চালিয়ে তারা বাড়ির দরজায় এসে পৌঁছাল। টানা কয়েকবার কলিংবেল বাজাতেই মধ্যবয়সী এক লোক চোখে মোটা একটি ফ্রেমের চশমা। দরজা খুলে দিলেন তিনি। দ্রুত পায়ে তারা দুজন ভেতরে প্রবেশ করল। তাদের দুজনের এরকম আচরণে লোকটি বেশ অবাক হয়। সোফায় বসে যাবেদ লোকটির উদ্দেশ্য করে বলল,
-” মিস্টার রিজওয়ান, ওয়ান গ্রেট সাইন্টিস্ট! ”
সাইন্টিস্ট রিজওয়ান তাদের কথা শুনে বেশ অবাক হন। দ্রুত তাদের সামনে থাকা সোফায় তিনি বসে পড়লেন। যাবেদের উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলেন,
-‘ কে আপনি? আমায় চিনেন কী করে?’
তৎক্ষণাৎ ট্রি-টেবিলের উপর থাকা ডাইরির দিকে যাবেদের নজর যায়। দ্রুত হাতে তুলে নেয়। এ দেখে মিস্টার রিজওয়ান তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন। ডাইরি দেখতে দেখতে তার প্রশ্নের প্রতিত্তোরে যাবেদ জবাব দিল,
-‘ ইলুমিনাতি সংগঠনের সাথে যুক্ত সাইন্টিস্টকে না চেনার কোনো হেতু খুঁজে পাচ্ছি না। ”
এ কথা শুনে রিজওয়ান সাহেব বিষম খান। থতমত খেয়ে তিনি বলতে লাগলেন,
-‘ আপনি কী বলতে চাচ্ছেন?’
-‘ আরে আরে! হাইপার হচ্ছেন কেন! সঠিক উত্তর দিলে বেঁচে যাবেন,নয়তো ভুবনের মায়া হারাবেন।’
একটি মুচকি হাসি দিয়ে যাবেদ তার কোমড়ে গুজে রাখা বন্দুকটি হাতে তুলে নেয়। তা দেখে রিজওয়ান সাহেব রীতিমত ভড়কে যান।
হাত দিয়ে কপালে থাকা ঘাম মুছতে মুছতে তিনি বললেন,
-‘ কী..কী..কী.. বলতে চাচ্ছেন?’
-‘ আপনি বিষাক্ত পয়জন এনেছেন কার কথায়? তথা কার জন্য এনেছেন?’
জনাব রিজওয়ান সাহেব তার ডান হাত উঁচু করে ডাইরির দিকে দেখালেন। ঠিক তখনই একটি বন্দুকের গুলি এসে আঘাত হানে জনাব রিজওয়ান সাহেবের মাথায়। বন্দুকের গুলি দিয়ে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হতেই সেখানেই তিনি মারা যান। আচমকাই পুনরায় আরও একটি বন্দুকের গুলি এসে রুমের ভেতর আঘাত হানে। কিন্তু অবাক বিষয় হলো, বন্দুকের গুলিটি শেষ স্থানে থামতেই ছোটোখাটো একটি বিস্ফোরণের ঘটল। যার থেকে চারদিকে সাদা ধোঁয়া ছড়াতে লাগল। এক পর্যায়ে ধোঁয়াগুলো রুমে থাকা সমস্ত বায়ুগুলোকে গ্রাস করে নেয়। সাদা ধোঁয়ার কবলে যাবেদ পড়তেই তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। মুহূর্তেই মাথা চক্কর কেটে উঠল। চোখ মেলে রাখতে পারছে না আর। আচমকাই ঢলে পড়ল মেঝেতে। চোখ মেলে রাখাটা বড্ড দায়। ধীরে ধীরে দুচোখের পাতা একে অপরের সাথে পরস্পরভাবে মিলিত হয়ে যায়।
[– চলবে –]
*এবার কী হবে?
* যাবেদ কি আসলেই মারা যাবে?
*কেবল যাবেদ এরকম অনুভব করছে কেন?
*তবে কি ফারহান অই দলের সাথে সম্পৃক্ত?