গল্প:- খুন সিরিজ দ্বিতীয় সিকুয়েন্স,অষ্টম পর্ব
লেখনীতে:- যাবেদ খাঁন আবু বকর
পিটপিট করে যাবেদ চোখ মেলে তাকায়। চারদিকে ঘন অন্ধকার। রুমে তেমন রুক্ষ আলো নেই বললেই চলে। তবে কোথা হতে যেন এক ফালি মিহি আলো এসে রুমের অন্ধকারত্বের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। রুমের দৃশ্যগুলো সাধারণভাবে খুব স্পষ্ট না হলেও, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখলে সকল কিছুই বুঝা সম্ভব। মাথাটা দাঁড় করিয়ে রাখা যাবেদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। মাথাটা কেমন যেন ভারী হয়ে আছে। যেন মাথার উপর কয়েক টন ওজনের একটি পাথর তুলে দেওয়া হয়েছে। মস্তিষ্কের নিউরনে থাকা সিনান্সগুলো একটু সজাগ হয়েছে। তবে মস্তিষ্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। যেন চোখ দুটো মেলে রাখা বড় দায় হয়ে পড়েছে। চোখের পাতা দুটো বারবার পরস্পর একত্রে মিলিয়ে যেতে চাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব হচ্ছে। যেন মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষগুলো চিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম। কিছু সময়ের জন্য যাবেদ তাত চোখ দুটি বন্ধ করে রইল। কী হয়েছিল? তা বুঝার চেষ্টা করল। মস্তিষ্কের নিউরনে থাকা সিনান্সগুলো একটু একটু করে জাগ্রত হচ্ছে। তবে পূর্বের ঘটনাগুলো তার খুব একটা মনে পড়ছে না। কেবল তার মনে আছে, সাদা ধোঁয়া তাকে ঘিরে নিতেই অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে ঢলে পড়েছিল। তবে অনুভূতিটা ছিল সবচেয়ে বাজে এবং ভয়ানক।
কিছু সময় বাদে পুনরায় ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকাল। চারদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বুঝার চেষ্টা করল, সে কোথায় আছে! স্থানটি তার পরিচিত নয়। তবে এতটুকু বুঝতে সক্ষম হয়েছে, এটি একটি চার দেয়ালে আবদ্ধ রুম। হাত-পা নড়াতে চাইলে বাঁধা অনুভব করে। কী থেকে তাকে বাঁধা প্রদান করছে, তা দেখার জন্য একটু প্রচেষ্টা চালাল। চার পায়া যুক্ত একটি চেয়ার এবং তাতে অস্তিত্ব রয়েছে দুটি হাতলের। চেয়ারের সামনে থাকা পায়া দুটোর সাথে রশি দিয়ে শক্ত করে তার দুই পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এবং চেয়ারের দুই হাতলের সাথে তার দুই হাত বাঁধা হয়েছে। এ দেখে ভ্রু কোচকে কিঞ্চিৎ অবাক হয়। কিন্তু পরক্ষণেই মস্তিকের নিউরনে থাকা সিনান্সগুলো আরেকটু জাগ্রত হতেই কিছু একটা ভাবতে লাগল। আচমকাই তার দুই ঠোঁটের কোণে একটি রহস্যময় মুচকি হাসি ফুটে উঠল। কিন্তু এ হাসির রহস্য সে বাদে আর কারোই জানা সম্ভব হয়নি আর না হবে। তার এই রহস্যময় হাসিটা শত্রু পক্ষের লোকেরা মোটেও ভালোভাবে নেবে না তা শতভাগ নিশ্চিত। মানুষ বিপদে পড়েও তখনই হাসে, যখন শত্রু পক্ষের উপর চওড়া হওয়া যায়। এবং বিপদটা তাদের উপরেই আসে।
একটু শব্দ করে গম্ভীর স্বরে যাবেদ বলতে লাগল,
-‘ ওহে নকল ইলুমিনাতির সদস্যগণ। কোথায় তোমরা? আমাকে কি এখানে শুধুশুধু ধরে এনে বেঁধে রেখেছ না-কি! না-কি ভয়ের তাড়নায় লেজ গুটিয়ে বসে আছো! অবশ্য এটা হতেও পারে। নয়তো ভীতুর ডিমের মত লুকিয়ে তো আর বসে থাকতে না।’
এই বলে সে কিছুটা উচ্চস্বরে হসতে লাগল। তবে তার হাসির শব্দ যেন চার দেয়ালে আবদ্ধ সম্পূর্ণ রুমটা একটি ঝংকার দিয়ে উঠল। আকস্মিকভেবে একটু শব্দ করেই যাবেদের পেছন দিক থেকে একটি দরজা খোলার শব্দ শোনা যায়। এ শব্দটি শুনে সে যেন আরো খুশি হয়েছে। আগের তুলনায় হাসির পরিমাণ বৃদ্ধিও পেয়েছে বটে। দরজা খুলে বুটের গটগট শব্দ তুলে হাতে একটি .9mm বন্দুক নিয়ে এক যুবক ভেতরে প্রবেশ করল। বয়স ততটা না হলেও মোটামুটি ২৮ অথবা ২৯-এর কাছাকাছি পর্যায়। দেহের উচ্চতা ৫ ফুট ৮। দেহের গড়ন বেশ চিকনচাকন। গায়ের রঙ অতিব উজ্জ্বল নয় এক কথায় কালো বললেই চলে। তবে সাধারণ উজ্জ্বলতার কিছুটা নিম্নভেগের কাতারে পড়বে। গায়ে পরিধান করা কোর্ট-টাই। বন্দুকটা হাতের আঙুলে নিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে যাবেদের সামনে এসে উপস্থিত হয়। ইতোমধ্যেই রুমের খোলা দরজাটি পূর্বের মত আটকে গেছে। যুবকটিকে দেখা মাত্রই পুনরায় যাবেদ হাসতে আরম্ভ করল। কিন্তু সেদিকে যুবকিটি ধ্যান না দিয়ে যাবেদের উদ্দেশ্য করে বলতে লাগল। অবশ্য তার কথার চাপা তলে লুকিয়ে ছিল দাম্ভিকতা।
-‘ হ্যালো এজেন্ট যাবেদ! এতক্ষণে আপনার ঘুম ভেঙেছে। আমি তো ভেবেছিলাম আপনি এতক্ষণে ওপারে পাড়ি জমিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু আমাকে তো চমকেই দিলেন। সে যাইহোক। একটু আগে আপনি একটি কথা বলেছেন। আগেই বলে রাখি আপনার কথাটি অত্যন্ত ভুল একটি বার্তা ছিল। আমরা লুকিয়ে নয়, প্রকাশ্যেই খুন করি। কাউকে ভয় পাওয়া আমাদের রক্তে চলে না।’
উচ্চস্বরে হাসি দিয়ে যাবেদ বলতে আরম্ভ করল,
-‘ আহা! আমাকে উপরে পাঠানোর এত তাড়া কেন বাজান? আমি যে তোমাদের ধ্বংস। তোমাদের মত নরক কীটদের ধ্বংস না করে দিয়ে কীভাবে ওপারে যাই বলোতো! আর তোমার কথাগুলো তো আমার আগে জানা ছিল না। কিন্তু জেনে বেশ ভালোই লাগছে বলা যায়।’
-‘ তোমার মুখে হাসির ঝিলিক ফুটতে দেখে বেশ ভালোই লেগেছে। এর আগে যে কয়টা মার্ডার করতে হয়েছে, সেগুলোর একটাতেও মনের আনন্দ খুঁজে পাইনি। সবগুলোই ভয়ের চোটে পা ধরে মাফ চেয়েছে। তুমিই বলো, বাঘ যখন শিকার করে, তার শিকার কি দুর্বল হলে চলে? তবে তোমার হাসি দেখে মনে হচ্ছে আজ শিকার করে শান্তি পাব। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তোমার এই হাসি আর কতক্ষণ টিকবে তা নিয়ে সন্দিহান। না-কি পূর্বেরগুলোর মত তোমার হাসিও মিলিয়ে যাবে। তা কে জানে? হয়তো তোমার এই হাসিটাও পাপড়ি ঝড়া ফুলগুলোর মত নেতিয়ে পড়বে। তবে আপাতত এই হাসিটা দেখে মনে শান্তি মিলেছে।’
-‘ আমার হাসি নিস্তেজ হয় না-কি তোমার! সেটা বুঝা বড্ড দায় বৎস। নিজ নিজ ইয়ানফসি করো বৎস। তবে তোমার কাছে আমার দুটো প্রশ্ন। আশা করছি আগেরগুলোর মত বলতে ভয় পাবে না।
আমার প্রথম প্রশ্ন: তোমাদের এই মূর্খ তথা নকল ইলুমিনাতির প্রধান কে?
আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন: তোমাদের আসল উদ্দেশ্য কী? কী চাচ্ছ তোমরা?’
-” প্রথম প্রশ্নের জবাব বলছি না! তবে একটু পর যখন মারাই যাবা সেই সুবাদে শেষ ইচ্ছাটা পূর্ণ করেই দিই। বাংলাদেশ হবে আমাদের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। আর বাকি রাস্ট্রগুলোও আমাদের হুকুমতেই চলবে।’
বেশ কিছু সময় নিস্তব্ধতায় কেটে গেল। দুজনের মাঝে কোনোরূপ কোনো কথার আদান-প্রদান ঘটছে না। যার হেতু চার দেয়ালে আবদ্ধ অন্ধকার রুমটি যেন একেবারব নিঝুম হয়ে গেছে। কিন্তু নিস্তব্ধতাকে ব্যাঘাত ঘটিয়ে যুবক বলতে আরম্ভ করল,
-‘ নিজ মৃত্যুর জন্য তৈরি তো মিস্টার এজেন্ট যাবেদ খাঁন! আর তৈরি না হলে হয়ে নাও।’
দুই ঠোঁটের কোণে একটি রহস্যময় হাসি ফুটিয়ে যাবেদ যুবকটির উদ্দেশ্য করে বলল,
-‘ তুমি নিজ মৃত্যুর জন্য তৈরি হয়েছ তো! না-কি আবার ভয়ে পালাবে?’
যাবেদের এই কথা শোনা মাত্রই যুবকটি তৎক্ষণাৎ চটে যায়। বন্দুকের গুলি লক করে যুবকটি যাবেদের দিকে তাক করল। আকস্মিকভানে যাবেদ তার বন্ধিকৃত চেয়ারটা একটু উঁচু করে মৃদু নড়া দিতেই যুবকটির ডান পায়ের উপর চেয়ারের পায়া পড়ল। অবিলম্বেই যুবকটি তার লক্ষ্যভ্রষ্ট করে ফেলল। এছাড়াও যুবকের মাথাটি যাবেদের দিকে কিছুটা ঝুঁকে যায়। যাবেদ তার হাতে পাওয়া এত সুন্দর একটি মোক্ষম সুযোগ স্বত্বচুত্য করতে মোটেও উদ্যত হয়নি। ডান হাতটা একটু ঝাঁকুনি দিতেই কাটা রশি থেকে হাতটি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হয়ে যায়। হাত ঘুরিয়ে ১৮০° একটি ঘূর্ণন করে। হাতের মধ্যমা এবং তার পাশের আঙুলের মাঝে চেপে ধরে থাকা ব্লেডটি দিয়ে তার দিকে ঝুঁকে থাকা যুবকটির চোখ বরাবর আঘাত করে। যুবকটি তার এরকম আক্রমণের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। যার ফলে ব্লেডের পোঁচ সোজা তার চোখে আঘাত হানে। এর হেতু সে নিজের হাতের বন্দুকটি ফেলে দিতে একপ্রকার বাধ্য হয়। এবং দুই হাত দিয়ে দ্রুত নিজের চোখ চেপে ধরে। যাবেদ তার ডান হাতটা আরেকটু জোরে ঝাঁকুনি দিতেই ব্লেজারের হাতার ভেতর থেকে একটি ছোট্টো পকেট নাইফ হাতের তালুতে এসে উপস্থিত হয়। তৎক্ষণাৎ নাইফে থাকা ছোট্টো বোতামমে একটু চাপ প্রয়োগ করতেই লম্বায় পাঁচ থেকে ছয় ইঞ্চি ব্যাসের একটি ছুরি হয়ে যায়। দ্রুত ডান হাতে থাকা ছুরিটি দিয়ে বাম হাত বেঁধে রাখা রশিতে একটি পোঁচ দেয়। ছুরিটা দেখলেই বুঝা যায় এতে অসম্ভব ধার রয়েছে। রশিতে ছুরি দিয়ে একটিবার পোঁচ লাগা মাত্রই কেটে গেল। তৎক্ষণাৎ হাতের বাঁধনে থাকা রশিগুলো কেটে হাত উন্মুক্ত হয়ে যায়। দ্রুত বাঁধা দুই পায়ের রশিতে একবার করে পোঁচ বসায়। পোঁচ লাগা মাত্রই পা দুটো বাধন মুক্ত হয়ে যায়। দ্রুত যাবেদ তাকে বেঁধে রাখা চেয়ার ছেড়ে উঠে যায়। এবং পাশেই পড়ে থাকা বন্দুকটি দ্রুত হাতে তুলে নেয়।
ঘটনা এত দ্রুত ঘটে গেলে যার হেতু কী থেকে কী হলো? তা বুঝে ওঠা বড্ড দায় হয়ে পড়েছে। যাবেদ তার মুখের ভেতর জিহ্বা নাড়িয়ে মেঝেতে থু থু ফেলল। থু থু-এর সাথে বেরিয়ে এলো একটি ছোট্টো ডিভাইস। যা ট্রাকিং ডিভাইস নামে পরিচিত। অবিলম্বেই চার দেয়ালে আবদ্ধ রুমের দরজাটি খুলে গেল। মুখে কালো মুখশ পরিধান করে বেশ কয়েকজন লোক যাবেদের উদ্দেশ্য করে হাতে রাইফেল নিয়ে দৌড়ে ভেতরে আসতে লাগল। কিন্তু কোনো কিছু না ভেবেই লোকগুলোর উপর যাবেদ গুলি চালায়। পরপর পাঁচটি গুলি চালাবার পর শেষ গুলিটি একটি লোকের পায় বরাবর তাক করে গুলি ছুঁড়ে। যার হেতু লোকটি উপুড় হয়ে পড়ে যায়। এবং হাতে থাকা রাইফেলটা ছিটকে যাবেদের কাছাকাছি অবস্থানে এসে পৌঁছায়। কোনোরকম বিলম্ব না করেই একটি ড্রাইভ দিয়ে হাতে তুলে নেয় সেটি। যাবেদের হাতে রাইফেল আসা মাত্রই কিছু সেকেন্ডের জন্য লোকগুলো নিজ স্থানে থমকে যায়। কিন্তু তাদের মরার পাখা গজাবার হেতু পুনরায় রাইফেল হাতে তাক করে এগিয়ে আসতে থাকে। কিন্তু তাদেরকে অপ্রস্তুত করে দিয়ে গুলি ছোঁড়ার পূর্বেই তাদের উদ্দেশ্য করে যাবেদ একের পর এক গুলি ছুঁড়তে আরম্ভ করে। অবস্থা এমন এক কঠিন পর্যায় এসে দাঁড়িয়েছে যে, দরজার সামনে এসে যেই নিজ উপস্থিতি জানান দিচ্ছে, তাকেই গুলি করার সুযোগ না দিয়ে পালটা আক্রমণে নিহত করে দিচ্ছে গুলির আঘাত। বেশ কয়েকজন যাবেদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালানোর ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়ে ছিল! কিন্তু এতে বিন্দু পরিমাণ লাভ হয়নি তাদের। ইতোমধ্যেই যাবেদের হাতের রাইফেলটি যেন অটোমেশন গান হয়ে গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এর ভেতরে গুলি অবশিষ্ট আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত হয়তো গুলি চলতেই থাকবে। মেঝেতে গুলির অবশিষ্ট অংশগুলো বিছিয়ে পড়ে আছে। আর দরজার সামনে পড়ে আছে নিহত লাশের স্তুপ। যাবেদকে চমকে দিয়ে বাহির দিক থেকে একত্রে বেশ জোরেসোরে বন্দুক থেকে ছোঁড়ার শব্দ ভেসে আসতে শোনা যায়। মস্তিষ্কে কিছু একটা ভেবেই যাবেদ উচ্চস্বরে হেসে দেয়। সেদিকে ধ্যান না দিয়ে দরজার কাছে খুঁজতে লাগল আর কেউ জীবিত অবশিষ্ট আছে কি-না! কাউকে দেখতে না পেয়ে হাতে থাকা রাইফেলটি নিয়ে যুবকটির কাছে হেঁটে উপস্থিত হলো।
যুবকটি যাবেদের কাণ্ডতে যেন স্তব্ধ হয়ে একপ্রকার জমে গেছে। বাম হাত দিয়ে বাম চোখটি শক্ত করে চাপ দিয়ে ধরে আছে। তবুও রক্ত গড়িয়ে হাত মেখে আছে। অবশ্য রক্ত দিয়ে মেঝের অনেকটা অংশ লাল হয়ে আছে। কিন্তু সেদিকে বিন্দু পরিমাণ লক্ষ্য না দিয়ে যাবেদ তার কাছে থাকা চেয়ারটি টেনে যুবকটির সামনে পায়ের উপর পা তুলে বসে পড়ল। বাহির থেকে আসা অবিরাম বন্দুকের চালিত শব্দ জোড়ালো হতে লাগল। শব্দ শুনে যুবকটিও আধিক্য অবাক। আচমকাই দরজার কাছ থেকে একটি বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেল। যাবেদ একটু তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে সেদিকে তাকাতেই নজরে এলো, কেউ একজন তার দিকে বন্দুক তাক করে গুলি করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পেছন থেকে কেউ তাকে গুলি করে মেঝেতে রক্তাক্ত করে ফেলে দিয়েছে। যুবকটির চেহারা দিকে তাকিয়ে যাবেদ একটি মুচকি হাসি দিল। রুমের ভেতরে অকস্মাৎ কোনো ব্যক্তি যদি প্রবেশ করে, তবে সে কোনো কিছু চিন্তাভাবনা না করেই বলবে, রুমে লাল রং দিয়ে হলি খেলা হয়েছে। যেন রক্তের হলি খেলা হয়েছে। দরজার কাছে থাকা অজ্ঞাত লোকটি একটু সামনে আসতেই তার চেহারা দেখা যাচ্ছে। এ আর কেউ নয়, এজেন্ট ফারহান স্বয়ং নিজে। অবশ্য সে একা নয়। তার পাছনে আরো কয়েকজনের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। যাদের প্রত্যেকের হাতে রয়েছে একটি করে মেশিন গান। ফারহানের দেহে পরিধান করে আছে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট। এবং হাতে রয়েছে .9mm মডেলের রাশিয়ান মেইডের বন্দুক। মেঝেতে পড়ে থাকা লাশের স্তুপের উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে তার কাছে সবাই উপস্থিত হলো।
তৎক্ষণাৎ যাবেদ মেঝেতে হাত দিয়ে চোখ ধরে মেঝেতে বসে থাকা যুবকটির উদ্দেশ্য করে বলল,
-‘ মিস্টার নিক! আমার লোকেদের ধামাকেদার এন্ট্রি এবং আমার ধামাকেদার সারপ্রাইজ কেমন লাগলো? ”
অবিলম্বেই মেঝেতে বসে হাত দিয়ে চোখ ধরে রাখা যুবকটি তার দিকে মাথা উঁচু করে তাকালো। চেহারার ভঙ্গিমায় বুঝা যাচ্ছে সে বেশ অবাক হয়েছে তার এরূপ কথাবার্তায়। এরূপ আচরণ দেখে যাবেদ তৎক্ষণাৎ তার উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,
-‘ চমকাবার মত কিছুই হয়নি মিস্টার নিক। তোমার নাম জানা আমার কাছে হিমালয় জয় করার মত কঠিন কিছু নয়। সকলেরই ভোটার কার্ড থাকে। যেখানে জন্মতিথি থেকে সকল কিছু নথিপত্র করে রাখা হয়। আশা করি এ কথাটা ভুলে যাওনি।’
যাবেদের কথা শেষ হতেই ফারহান গরম ঝাঝ ওঠা কণ্ঠে বলতে লাগল,
-‘ এখন আপনি কী বলেন স্যার? একে উড়িয়ে দেবো?’
-‘ না না। আমরা এখনো এই নকল ইলুমিনাতির প্রধানের ব্যাপারে একটু জানতে পারিনি। তার পর্যন্ত পৌঁছানোর একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে মিস্টার নিক।’
যাবেদের কথায় সম্মতি প্রদান করে ফারহান বলল,
-‘ তা অবশ্য ঠিক বলেছেন।’
-‘ তা মিস্টার নিক। আপনি কি এখন স্বাভাবিকভাবে সকল কিছু খুলে বলবেন? না-কি 3rd ডিগ্রির সাথে 4th ডিগ্রিও প্রয়োজন আপনার?’
[– চলবে — ]
*আসলেই কি মিস্টার নিক অপরাধী?
*মিস্টার নিকের মাধ্যমে আসলেই কি মূল ষড়যন্ত্রকারী পর্যন্ত পৌঁছানো যাবে?
*না-কি তাকেও মেরে দেওয়া হবে?
*তবে কি মোড় অন্য দিকে ঘুরবে এবার?।