খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ১১

0
1997

খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ১১
#লেখকঃ- Tamim

,,
,,
,,
,,
নীলাকে একটা ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে দেখে তামিমের বুকের মধ্যে যেন তীরের মতো আঘাত এসে বাধলো।। তামিম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলো, নীলার সাথে এই ছেলেটা কে.? নীলার ফ্রেন্ড নাকি.?

এদিকে নীলা আর ওই ছেলেটা হেটে হেটে ভার্সিটি থেকে বের হতেই নীলা তামিমকে গেইটের কাছে দেখে দাঁড়িয়ে গেল।। তামিমকে দেখে নীলা সোজা গিয়ে তামিমের কাছে দাড়ালো।। নীলার পিছনে পিছনে ওই ছেলেটাও তামিমের কাছে গিয়ে দাড়ালো।।

নীলাঃ আরে ভাইয়া তুমি এইখানে.!

তামিমঃ হুম, সকালবেলা বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য বের হয়েছিলাম।। তাদের সাথে দেখা করে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে এদিক দিয়েই বাসায় যাচ্ছিলাম।। তো হঠাৎ ভাবলাম বাসায় যাচ্ছি যখন তোকে সঙে করেই নিয়ে যাই।। তাই তোকে নেওয়ার জন্য এইখানে চলে আসলাম।।

নীলাঃ ওহহ, আচ্ছা তাহলে চল এখন বাসায় যাই।।

তামিমঃ তোর সাথে এই ছেলেটা কে রে.?

নীলাঃ ওহহ সরি তোমাকে তো বলতেই ভুলে গেছি।। এ হলো আমার ফ্রেন্ড নাম সানি, আমরা এক ক্লাসেই পড়ি।। আর সানি এ হলো আমার ভাইয়া।।

সানিঃ হাই ভাইয়া, কেমন আছেন.?

তামিমঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি.?

সানিঃ জি আলহামদুলিল্লাহ।।

নীলাঃ আচ্ছা সানি আজ তাহলে আমি যাই, কাল দেখা হবে।।

সানিঃ ওকে নীলু বাই (বলেই সানি চলে গেল)।।

সানির মুখ থেকে নীলু ডাক টা শুনে তামিমের এবার কিছুটা রাগ উঠে গেল।। কারণ নীলাকে তামিম ছাড়া আর কেউ নীলু নামে ডাকে না।। এমনকি বাসার কেউও না।। তামিম এবার রাগে গজগজ করে নীলাকে উদ্দেশ্য করে বললো…

তামিমঃ ওই ছেলে তোকে নীলু বলে ডাকলো কেন.?

নীলাঃ সে তো আমায় সবসময়ই নীলু বলে ডাকে, কেন ডাকলে কি হয়েছে.?

তামিমঃ ওই ছেলেকে বলে দিবি সে যেন তোকে আর নীলু বলে না ডাকে।। কারণ তোকে নীলু বলে ডাকার অধিকার শুধু আমার রয়েছে, অন্য কারও নয়।। আর তোকে শুধু একজন মানুষই নীলু বলে ডাকবে আর সে হলাম আমি।।

নীলুঃ ও তো সবসময়ই আমায় নীলু বলে ডেকে এসেছে, হঠাৎ করে ওকে নীলু বলে ডাকতে না করলে সে কি ভাববে.?

তামিমঃ সে যাই ভাবুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না।। তোকে আমি যা বলেছি তুই শুধু তাই করবি।। ওকে কাল বলে দিবি সে যেন তোকে আর নীলু বলে না ডাকে (রাগে গজগজ করে)।।

নীলাঃ আচ্ছা ঠিক আছে বলে দিব, এবার বাসায় যাওয়া যাক নাকি এইখানেই দাঁড়িয়ে থাকবা.?

তামিমঃ হুম দাড়া আগে একটা রিক্সা ডেকে নিয়ে আসি।।

নীলাঃ আচ্ছা যাও।।

তারপর তামিম গিয়ে একটা রিক্সা ডেকে নিয়ে এসে নীলাকে রিক্সায় উঠতে বললো।। নীলা রিক্সায় উঠার পর তামিমও রিক্সায় উঠে বসলো।। এরপর রিক্সাওয়ালা রিক্সা চালাতে শুরু করলো।।

রিক্সা চলছে আর এদিকে নীলার চুলগুলোও বাতাসের সাথে উড়াউড়ি করছে।। হালকা বাতাসে নীলার কয়েকটা চুল গিয়ে তামিমের নাকে মুখে লাগছে।। তামিমও চোখ বন্ধ করে নীলার মাতাল করা চুলের ঘ্রাণ নিতে লাগলো।। নীলা বার বার নিজের চুলগুলো হাত দিয়ে কানে গুজে দিচ্ছে, কিন্তু তবুও তার চুলগুলো বাতাসের সাথে উড়ে গিয়ে তামিমের নাকে মুখে লাগছে।।

হঠাৎ নীলা চিৎকার দিয়ে উঠে রিক্সাওয়ালাকে রিক্সা থামাতে বললো।। নীলার চিৎকার শুনে তামিম ধড়ফড়িয়ে উঠলো আর বোঝার চেষ্টা করলো নীলা কেন চিৎকার করছে।। এদিকে রিক্সাওয়ালাও নীলার কথায় রিক্সা থামিয়ে ফেললো।।

তামিমঃ কি হয়েছে নীলু হঠাৎ এইভাবে চিৎকার করলি কেন.?

নীলাঃ ভাইয়া আমি ফুচকা খাব।।

তামিমঃ এইখানে ফুচকা কোথায় পাব.?

নীলাঃ ওই যে পিছনে দেখ একটা ফুচকার দোকান দেখা যাচ্ছে।।

তামিমঃ নীলার কথায় পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো সত্যিই একটা ফুচকাওয়ালা ফুচকা নিয়ে বসে আছে।। আরে ওইগুলা ভালো না, বাসায় চল তোকে আমি ভালো কোনো রেস্টুরেন্ট থেকে ফুচকা এনে দিব নে।।

নীলাঃ না আমার রেস্টুরেন্টের ফুচকা ভালো লাগে না, আমি ওই লোকের ফুচকাই খাব।। ওই ফুচকাওয়ালা খুব মজা করে ফুচকা বানায়, আমি প্রায়ই উনার থেকে ফুচকা খাই।।

তামিমঃ আরে ওইগুলা

নীলাঃ ভাইয়া প্লিজ চল না প্লিজ প্লিজ লক্ষি ভাইয়া আমার প্লিজ চল (মিনতির শুরে)।।

তামিমঃ উফফ তোকে নিয়ে আর পারা যাবে না বুঝেছি, আচ্ছা ঠিক আছে চল।।

তামিমের কথা শেষ হতে না হতেই নীলা রিক্সা থেকে নেমে দৌড়ে ফুচকাওয়ালার কাছে চলে আসলো আর ফুচকাওয়ালাকে ২ প্লেট ফুচকা দিতে বললো বেশি ঝাল দিয়ে।। তামিমও এতক্ষণে রিক্সাওয়ালার ভাড়াটা দিয়ে নীলার কাছে চলে আসলো আর নীলার পাশের চেয়ারে বসে পরলো।।

কিছুক্ষণ পর ফুচকাওয়ালা ২ প্লেট ফুচকা বানিয়ে নীলার হাতে দিয়ে গেল।। ২ প্লেটের মধ্যে এক প্লেট ফুচকা তামিমের দিকে এগিয়ে দিয়ে নীলা বললো…

নীলাঃ ভাইয়া এই নাও এটা তোমার।।

তামিমঃ আমি এইসব খাইনা, তুই ই খা।।

নীলাঃ আচ্ছা যাও খেতে হবে না তবে এইটা হাতে নিয়ে বসে থাক আর আমি বসে বসে এইটা খাই।।

তামিমঃ কোনো কথা না বলে ফুচকার প্লেটটা হাতে নিয়ে বসে রইলো।।

তারপর নীলা নিজের প্লেটের ফুচকা খেতে শুরু করলো।। নীলা খাচ্ছে আর তামিম একনজরে নীলার দিকে তাকিয়ে আছে।। একদম বাচ্চাদের মতো মুখ ফুলিয়ে খাচ্ছে নীলা।। তামিম যে তার দিকে তাকিয়ে আছে এটা নীলার চোখে পরতেই নীলা ইশারায় জিজ্ঞেস করলো তামিম ফুচকা খাবে কি না।। তামিমও মাথা নাড়িয়ে “না” সূচক জবাব দিল।। তারপরও নীলা তার প্লেট থেকে একটা ফুচকা নিয়ে জোর করে তামিমের মুখে ঢুকিয়ে দিল।। তামিমও আর উপায় না পেয়ে মুখের ফুচকাটা খেতে লাগলো।।

নীলার হাতের ফুচকা শেষ হলে এবার সে তামিমের হাতের ফুচকাটা নিয়ে আবার খেতে লাগলো।। খেতে খেতে ঝালের কারণে চোখ দিয়ে হালকা পানি বের হতে লাগলো নীলার।। তারপরও নীলা এক নাগালে ফুচকা খেয়েই যাচ্ছে।। একসময় নীলার ফুচকা খাওয়া শেষ হলে তামিম নীলার দিকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিল।। নীলাও সাথে সাথে তামিমের হাত থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে এক নিশ্বাসে পুরো গ্লাসের পানি খেয়ে ফেললো।।

তামিম এবার নীলার চোখের মধ্যে জমে থাকা পানিগুলো তার হাত দিয়ে মুছে ফুচকার বিল দিয়ে নীলাকে সেখান থেকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো।। তামিম আর নীলাকে একসঙ্গে বাসায় আসতে দেখে নীলার আম্মু এগিয়ে এসে বললেন…

নীলার আম্মুঃ আরে তোমরা দুজন একসাথে.!

তামিমঃ আসলে বন্ধুদের সাথে দেখা করে নীলার ভার্সিটির পাশ দিয়েই বাসায় আসছিলাম।। তাই ভাবলাম নীলাকেও সাথে নিয়ে আসি।।

নীলার আম্মুঃ ভালো করেছ, আচ্ছা এবার দুজনে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও আমি তোমাদের জন্য টেবিলে খাবার দিচ্ছি।।

তারপর তামিম আর নীলা দুজনেই যার যার রুমে চলে গেল।। রুমে গিয়ে দুজনেই ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে খাবার খেয়ে আবার রুমে চলে গেল।। রুমে এসে বিছানার উপর শুয়ে শুয়ে তামিম ভাবতে লাগলো…

তামিমঃ আচ্ছা ওই ছেলেটা কি সত্যিই নীলার ফ্রেন্ড নাকি তাদের মধ্যে অন্য কোনো সম্পর্ক আছে.? নীলার মতো মেয়ে কোনো ছেলের সাথে প্রেমে জড়াবে বলে তো মনে হয়না।। অবশ্য নীলার সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধ হয়ে অনেকেই তার প্রেমে পরে যাবে।। কিন্তু নীলা এইসব প্রেম ভালোবাসায় জড়াবে বলে মনে হয়না।। এখন থেকে নীলার উপর একটু নজর রাখতে হবে, তাহলেই বুঝতে পারবো নীলা আর ওই ছেলেটার মধ্যে বন্ধুত্ব ছাড়া অন্য কোনো সম্পর্ক রয়েছে নাকি।।

এইরকম নানান কথা ভাবতে ভাবতে তামিম একসময় ঘুমিয়ে পরে।। সন্ধ্যাবেলায় তামিম ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে রুমের মধ্যে বসে রইলো।। রুমে বসে থাকতে থাকতে তামিমের আর ভালো লাগছিল না তাই সে রুম থেকে বেরিয়ে নীলার রুমে চলে আসলো, নীলা কি করছে দেখার জন্য।।

–সরি জানু আজ ভাইয়া সাথে থাকার জন্য আমি তোমার সাথে দেখা করতে পারি নি।। তবে কাল আমি তোমার সাথে দেখা করবোই প্রমিস, বাই জানু লাভ ইউ।।

নীলার রুমের দরজার কাছে এসে দাড়াতেই তামিম ভিতর থেকে এইসব কথা শুনে ওইখানেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।। নীলা কাকে এইসব বলছে.? নীলা কি তাহলে কারও সাথে প্রেমে জড়িয়েছে.? কিন্তু কে সে যার সাথে নীলা প্রেমে জড়িয়েছে.?
.
.
.
.
.
Loading…….

ভাইয়া ও আপুরা কি মনে হয়, নীলা কি সত্যিই কারও সাথে প্রেমে জড়িয়েছে.? কমেন্টে বলবেন কিন্তু।। আর দয়া করে কেউ শুধু স্টিকার কমেন্ট করবেন না প্লিজ।। কারণ এতে আমার অন্যান্য কমেন্ট চেক করতে অসুবিধা হয়।। গল্পের মধ্যে ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন, হেপি রিডিং ?

~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here