খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ১৬
#লেখকঃ- Tamim
,,
,,
,,
,,
নীলা পাগলের মতো তামিমের ঠোঁট জোড়া চুষে যাচ্ছে আর তামিম আগের ন্যায় স্তব্ধ হয়ে বসে আছে।। তামিমের এখন বসে না থাকা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।। কারণ নীলা তাকে যেভাবে ধরে রেখেছে তাতে সে নিশ্চিত চাইলেও সে এখন নীলার থেকে ছুটতে পারবে না।। এদিকে নীলাও এখন আগের থেকে অনেকটা শান্ত হয়েছে, হয়তো তার ঝাল কমে গেছে তাই।।
–এহেম এহেম, বাজান পানি কি লাগবে.?
হঠাৎ কারও এমন কথায় তামিম আর নীলা দুজনেই চমকে যায়।। নীলাও সাথে সাথে তামিমকে ছেড়ে দিয়ে মাথা নিচু করে ফেলে আর তামিম মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে ফুচকাওয়ালা হাতে পানির গ্লাস নিয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে।। তামিম বুঝতে পারলো ফুচকাওয়ালা ই একটু আগের কথাটা বলেছে।। ফুচকাওয়ালার সাথে কথা বলতে তামিমের এখন ভিষণ লজ্জা করছে, এর কারণ একটু আগের ঘটনাটা।। সে তো জানে নীলা কেন তার সাথে এমন করেছে, কিন্তু এই ফুচকাওয়ালা এখন তাদেরকে নিয়ে কি না কি ভাবছে সেটা তার জানা নেই।। ফুচকাওয়ালা এটাও ভাবতেও পারে যে, তারা এইসব করার জন্য প্লেন করে পানির নামে ফুচকাওয়ালাকে এইখান থেকে ভাগিয়েছে।। নাহলে অন্যকিছুও ভাবতে পারে যা তামিমের জানা নেই।।
–কি বাজান পানি লাগবে না নাকি.?
তামিমঃ হে হে লাগবে দেন (বলেই ফুচকাওয়ালার হাতের পানির গ্লাসটা নিয়ে নিল আর নীলার দিকে এগিয়ে দিল)।।
নীলাও তামিমের থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে এক নিশ্বাসে পুরো গ্লাসের পানি খেয়ে ফেললো।। এরপর নীলা খালি গ্লাসটা আবার তামিমের কাছে দিয়ে দিল আর তামিম সেটা ফুচকাওয়ালার কাছে দিয়ে দিল।।
–আরও পানি খাবে নাকি মা.?
নীলাঃ মাথা নাড়িয়ে “না” সূচক জবাব দিল।।
–তো আর ফুচকা খাবে কি.?
নীলাঃ এবারও মাথা নাড়িয়ে “না” সূচক জবাব দিল।।
–আচ্ছা মা শুন, ফুচকা খাবে ভালো কথা কিন্তু অতিরিক্ত ঝাল দিয়ে আর খেও না।। নাহলে পরে কি হতে পারে আজ তো দেখলেই।।
নীলাঃ কিছু বললো না।।
তামিমঃ আচ্ছা মামা কতো টাকা হয়েছে.?
–বেশি না ১৫০ টাকা।।
তামিমঃ ওহহ এই নেন আপনার টাকা।। নীলু এবার চল যাওয়া যাক।।
তারপর তামিম নীলাকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো আর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে এক টানে বাসায় চলে আসলো।। বাসায় এসে দুজনেই ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নিল।। এরপর দুজনেই যার যার রুমে চলে গেল।।
রুমে এসে তামিম বিছানায় শুয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ আগের ঘটনাটা ভাবতে লাগলো।। নীলা যে তাকে এইভাবে পাবলিক প্লেসে কিস করবে এটা তামিম ভাবতেই পারেনি।। অবশ্য ফুচকাওয়ালার দোকানে তখন তারা ছাড়া অন্য কোনো মানুষ ছিল না নাহলে তার মানসম্মান একেবারে পানি পানি হয়ে যেত।। তামিমের কাছে অবশ্য তখনকার মূহুর্তটা ভালোই লাগছিল।। তামিমের মনে হচ্ছিল সে তখন পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তিময় জায়গায় রয়েছে, যেখানে শুধু শান্তি আর শান্তি, কোনো অশান্তি নেই।। এইসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে তামিম একসময় ঘুমিয়ে পরলো।।
সন্ধ্যাবেলা…
তামিম ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে ছাদে চলে আসলো সন্ধ্যার আবহাওয়া উপভোগ করার জন্য।। তামিম ছাদে আসার কিছুক্ষণ পর নীলাও ছাদে আসলো আর তামিমকে ছাদে দেখে তার পিছনে এসে দাড়ালো।।
নীলাঃ সরি
হঠাৎ কারও গলার আওয়াজ পেয়ে তামিম পিছনে ফিরে তাকালো আর দেখলো নীলা দাঁড়িয়ে আছে।।
তামিমঃ সরি কেন.?
নীলাঃ তখন যে তোমাকে কিস করেছিলাম সেই জন্য (মাথা নিচু করে)।।
তামিমঃ এইখানে সরি বলার কি আছে.? আমি তো জানি তুই কেন তখন আমায় কিস করেছিলি।।
নীলাঃ আবার তুই? (রেগে গিয়ে)।।
তামিমঃ ওহহ সরি সরি আর ভুল হবে না এই যে কানে ধরলাম।।
নীলাঃ হু
তামিমঃ আচ্ছা আমাকে একটা কথা বল, তখন আমাকে কিস করার চিন্তা তোমার মাথায় আসলো কি করে.? আর আমাকে কিস করে তুমি কি-ই বা পেলে.?
নীলাঃ তোমাকে কিস করে এক ধরণের মিষ্টি স্বাদ পেয়েছি (দুষ্টু হাসি দিয়ে)।।
তামিমঃ মিষ্টি স্বাদ মানে.?
নীলাঃ ৫ বছর আগের কথা মনে আছে তোমার.? একদিন তুমি রুমে বসে মোবাইল টিপছিলে তখন আমি তোমার রুমে ঢুকে তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম যে “ঠোঁটে চুমু খেলে নাকি এক ধরণের মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়” এটা কি সত্যি.? তখন তুমি আমাকে এর উত্তর না দিয়ে ধমকিয়ে আর ভয় দেখিয়ে রুম থেকে বের করে দেও।। এরপর আমি মিতুকে জিজ্ঞেস করলাম এখন আমি কি করবো।। তখন মিতু আমায় বলেছিল তুমি ঘুমিয়ে গেলে আমি যেন তোমার ঠোঁটে চুমু খাই।। আর ওইদিন রাতেই আমি তোমার রুমে এসে (নীলাকে থামিয়ে)
তামিমঃ এই থাম আর বলতে হবে না, এখন আসল কথায় আস, মানে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।।
নীলাঃ দিচ্ছি শুন, ওইদিন যখন আমি তোমার ঠোঁটে চুমু খেয়েছিলাম তখন আমি সত্যি তোমার ঠোঁটে এক ধরণের মিষ্টি স্বাদ খুজে পেয়েছিলাম।। তো আজকে ফুচকা খেয়ে যখন আমার ঝাল লেগেছিল তখন মনে মনে ভাবলাম এখন মিষ্টি জাতীয় কোনো জিনিস খেতে পারলে হয়তো ঝালটা কমে যেত।। এরপর হঠাৎ এই কথা মাথায় আসলো যে তোমার ঠোঁটের মধ্যেই যখন মিষ্টি রয়েছে তাহলে এতক্ষণ ধরে বসে রয়েছি কেন, তাই (আবারও নীলাকে থামিয়ে)
তামিমঃ হয়েছে আর বলতে হবে না, আমার যা বোঝার ছিল তা বুঝে গেছি।।
নীলাঃ যাক বুঝলেই ভালো।।
তামিমঃ আর যদি কোনোদিন ফুচকা খাওয়ার কথা মুখে এনেছ তাহলে বুঝবে মজা।।
নীলাঃ ফুচকা খাওয়ার কথা মুখে আনলে মজা বুঝবো কি করে.?
তামিমঃ সময় হলেই বুঝবে।।
নীলাঃ আমাকে কিন্তু প্রতিদিন ফুচকা খাওয়াতে হবে।।
তামিমঃ প্রতিদিন এইভাবে ঝাল দিয়ে খাবে তাইনা.?
নীলাঃ হুম ?
তামিমঃ আবার যদি ফুচকার কথা মুখেও এনেছ তাহলে এক চড়ে সব দাত ফেলে দিব (হালকা রেগে)।।
নীলাঃ তাহলে তো লোকে আমাকে বুড়ি বলে ডাকবে।।
তামিমঃ ডাকুক তাতে আমার কি।।
নীলাঃ তোমার কিছু না হলেও আমার অনেক কিছু আছে, এই বয়সে আমি আমার দাত হারাতে চাইনা।।
তামিমঃ তাহলে আর ফুচকা খেতে বায়না করবা না।।
নীলাঃ করবো।।
তামিমঃ ওকে করিও (বুঝেছে এই মেয়ের সাথে কথায় পারা যাবে না)।।
নীলাঃ আমাকে কিন্তু ফুচকা খাওয়াতে হবে।।
তামিমঃ ওকে খাওয়াব।।
নীলাঃ সত্যি তো.?
তামিমঃ হুম
নীলাঃ Thank You (বলেই তামিমের গালে একটা চুমু খেল)।।
তামিমঃ এটা কি হলো.? (গালে হাত দিয়ে)
নীলাঃ কি হলো মানে, চুমু দিয়েছি।।
তামিমঃ জানি তো কিন্তু হঠাৎ
নীলাঃ আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই দিয়েছি তোমার কোনো সমস্যা.?
তামিমঃ নাহ আমার কি সমস্যা হবে (কি মেয়েরে ভাই, আমার গালেই চুমু খায় আর বলে আমার কোনো সমস্যা কি না)।।
নীলাঃ কি ভাবছ.?
তামিমঃ কিছু না।।
নীলাঃ তাহলে এইখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন.?
তামিমঃ এমনিই সন্ধ্যার আবহাওয়াটা একটু উপভোগ করছি, এ ছাড়া আর কি করবো.?
নীলাঃ চল দোলনায় গিয়ে বসি।।
তামিমঃ ওকে চল।।
তারপর তামিম আর নীলা দুজনে ছাদের দোলনায় গিয়ে বসলো।। তামিম দোলনায় বসতেই নীলা তামিমের কাধে মাথা রেখে তামিমের এক হাত তার দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।।
তামিমঃ আরে এইসব কি করছ.?
নীলাঃ কই কি করছি.?
তামিমঃ আমার কাধে মাথা রেখেছ কেন আর হাতটা এইভাবে ধরেছ কেন.?
নীলাঃ একটা জিনিস ফিল করছি।।
তামিমঃ সেটা কি.?
নীলাঃ তুমি বুঝবে না, এখন একটু চুপ করে থাক তো আমার সমস্যা হচ্ছে।।
তামিমঃ কি যে করে মেয়েটা কিছুই বুঝিনা, পাগলি কোথাকার (মনে মনে)।।
নীলাঃ হুম শুধু তোমার।।
তামিমঃ মানে.?
নীলাঃ এই যে এখন বললে পাগলি কোথাকার, তাই বললাম শুধু তোমার।।
তামিমঃ আমার মনের কথা তুমি কীভাবে বুঝলে.? (অবাক হয়ে)
নীলাঃ ফিল করে বুঝেছি।।
তামিমঃ ওহহ
নীলাঃ হু
তারপর দুজনেই বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে নিরবতা পালন করলো।। নিরবতা ভেঙে একসময় নীলাই বললো…
নীলাঃ অন্ধকার হয়েগেছে তো চল এবার নিচে যাই।।
তামিমঃ তুমি যাও আমি একটু পরে আসছি।।
নীলাঃ না আমার সাথেই আস।।
তামিমঃ আরে আমাদের দুজনকে একসাথে দেখলে আম্মু আর চাচি কি ভাববে, তাই বলছি তুমি আগে যাও আমি একটু পরে আসছি।।
নীলাঃ ওকে তাহলে আমি গেলাম।।
তারপর নীলা ছাদ থেকে চলে গেল।। নীলা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তামিমও ছাদ থেকে নেমে তার রুমে চলে আসলো।।
এইভাবেই তাদের দিনটা কেটে গেল।।
পরেরদিন সকালবেলা তামিম নীলাকে নিয়ে তার ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলো।। নীলাকে তার ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে তামিম অফিসে চলে গেল।। দুপুর পর্যন্ত অফিসের কাজ করে তামিম আবার নীলাকে নিতে তার ভার্সিটিতে চলে আসলো।। নীলার ভার্সিটির সামনে এসে তামিম অনেক্ষণ ধরে বসে আছে কিন্তু নীলা ভার্সিটি থেকে বের হচ্ছে না।। ভার্সিটির ভিতর থেকে অনেক ছাত্র-ছাত্রী বেরিয়ে আসছে এতে তামিম বুঝতে পারলো ভার্সিটি একটু আগেই ছুটি হয়ে গেছে।। ভার্সিটি ছুটি হয়ে গেছে তাহলে নীলা কোথায়.? নীলা এখনো আসছে না কেন.? নাকি নীলা বাসায় চলে গেছে.? (এইরকম নানান চিন্তা-ভাবনা করতে করতে তামিম গাড়ি থেকে বেরিয়ে নীলার ভার্সিটির ভিতরে ঢুকলো)।।
তামিম ভার্সিটির ভিতরে ঢুকে নীলাকে খুজতে লাগলো।। কিন্তু নীলার দেখা সে কোথাও পেল না।। হঠাৎ তামিম দেখলো একটা বড় বটগাছের নিচে নীলা একটা ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে আছে আর কি নিয়ে যেন কথা বলছে।। তামিম এবার একটা শক খেল যখন সে দেখলো নীলার সাথে থাকা ছেলেটা নীলাকে হাটু গেড়ে ফুল দিয়ে প্রপোজ করছে।। নীলাও সাথে সাথে ছেলেটার হাত থেকে ফুলটা নিয়ে নিল আর ছেলেটাকে দাড়াতে বললো।।
নীলার এমন কর্মকান্ডে তামিম পুরো স্তব্ধ হয়ে গেল।। চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে তামিমের মাথাটাও সাথে সাথে গরম হয়ে গেল।। তামিম এবার নীলা আর ওই ছেলেটার দিকে এক পা, দু পা করে এগোতে শুরু করলো।। একসময় সে তাদের কাছাকাছি আসতেই নীলার মুখ থেকে এমন কিছু শুনলো যা শুনে তামিম পুরোপুরি অবাক হয়ে গেল.!
.
.
.
.
.
Loading…….
তামিম কি এমন শুনলো কেউ কি বলতে পারবেন.? বলতে পারলে অবশ্যই কমেন্টে বলবেন।।
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই একটা কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।। আর হে গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক সো গল্পকে গল্প হিসেবে দেখবেন বাস্তবতায় নিবেন না।। গল্প ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন তবুও কেউ খারাপ মন্তব্য করবেন না প্লিজ।। হেপি রিডিং ?
~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~