খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ২৪
,,
#লেখকঃ- Tamim
,,
,,
,,
তামিম পিছন থেকে নীলাকে জড়িয়ে ধরে তার ঘাড়ে মুখ গুজে দাঁড়িয়ে আছে আর নীলা একদম রোবটের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।। তামিম এবার নীলাকে তার দিকে ঘুরে দাড় করালো আর নীলার কোমড় টেনে তাকে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসলো।। নীলা এবার জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো আর নিজের চোখ বন্ধ করে ফেললো।।
নীলার এমন অবস্থা দেখে তামিমের চোখ পরলো নীলার ঠোঁটের দিকে।। নীলার গোলাপি ঠোঁট জোড়া কাঁপছে সাথে নীলাও।। তামিম এবার আস্তে আস্তে নীলার মুখের কাছে তার মুখ নিয়ে আসলো আর নীলার গালে আলতো করে হাত রেখে নীলার ঠোঁটের মধ্যে তার ঠোঁট ডুবিয়ে দিল।। নীলার ঠোঁটের সাথে তামিমের ঠোঁট এক হতেই নীলা সাথে সাথে তার চোখ মেলে তামিমের দিকে বড় বড় চোখে তাকালো।। তামিম সেদিকে খেয়াল না করে নীলার ঠোঁটের মধ্যে একের পর এক চুমু খেতে শুরু করলো।।
তামিমের ভালোবাসার স্পর্শ পেয়ে নীলাও আস্তে আস্তে তামিমের সাথে রেসপন্স দিতে শুরু করলো।। নীলার রেসপন্স পেয়ে তামিম এবার নীলাকে আরও কাছে টেনে নিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল আর নীলার ঘাড়ে, গলায় পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো।। তামিমের এমন পাগলের মতো আচরণ দেখে নীলা এবার তামিমকে থামানোর চেষ্টা করলো কিন্তু তামিম কিছুতেই থামছে না।। নীলা এবার আর উপায় না পেয়ে তামিমের কানের মধ্যে জোরে একটা কামড় বসিয়ে দিল।। ব্যস এতেই কাজ হয়ে গেল, কামড় খেয়ে তামিম সাথে সাথে নীলাকে ছেড়ে দিল।।
তামিমঃ এই তোমার কি আজকাল মানুষকে চিমটি দেওয়ার আর কামড়ানোর রোগ হয়েছে নাকি? (কানে হাত দিয়ে)
নীলাঃ মানুষকে চিমটি দেওয়ার আর কামড়ানোর রোগ হবে কেন.?
তামিমঃ তাহলে আমাকে কামড় মারলে কেন.? সেই সকালে একবার পেটে চিমটি মারলে আর এখন কতো সুন্দর একটা মূহুর্তে ছিলাম কিন্তু কানে কামড় মেরে সব শেষ করে দিলে।।
নীলাঃ তা ছাড়া আর কি করবো শুনি.? তুমি যা শুরু করেছ এতে তো (বলেই থেমে গেল)
তামিমঃ থামলে কেন বল, এতে কি.?
নীলাঃ কিছু না, কিন্তু বাসর রাতে আমি তোমায় কি বলেছিলাম মনে নেই.? মনে না থাকলে আবার মনে করিয়ে দেই শুন, “যতদিন পর্যন্ত আমাদের পরিবার আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিচ্ছে ততদিন পর্যন্ত তুমি আমায় ছুঁবে না”।।
তামিমঃ আমরা তো এখন স্বামী-স্ত্রী তাহলে তোমাকে ছোঁয়ার সাথে পরিবারের মানা না মানার কি সম্পর্ক.?
নীলাঃ অনেক কিছু আছে।। যেমন, আমরা যদি মনে করি আমরা এখন স্বামী-স্ত্রী তাই আমাদের যা মন চায় তাই করতে পারবো, এটা কিন্তু ঠিক আবার না ও।। কারণ আমরা কিন্তু পালিয়ে বিয়ে করে স্বামী-স্ত্রী হয়েছি, পরিবারের কেউ কিন্তু এখনো জানে না যে আমরা বিয়ে করে ফেলেছি।। কিন্তু তারা যদি একসময় আমাদের খুজে বের করে ফেলে আর জেনে ফেলে যে আমরা বিয়ে করে ফেলেছি তাহলে হয়তো আমাদের উপর তারা একটু রাগ করবে এর বেশি কিছু না।। কিন্তু তারা যদি জানতে না পারে যে আমরা বিয়ে করে ফেলেছি আর তখন যদি আমার পেটে তোমার বেবি আসে তখন তাদেরকে আমরা কি বলবো.? তখন কি আমরা তাদেরকে এটা বিশ্বাস করাতে পারবো যে আমরা বিয়ে করে ফেলেছি আর আমরা স্বামী-স্ত্রী.? তখন তো তারা সবাই ভাববে যে আমরা বিয়ে না করেই ওইসব খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে পরেছিলাম যার ফল স্বরূপ এই বাচ্চাটা আমার পেটে এসেছে।। তখন তারা আমাদেরকে যাই বলুক না কেন আমাদের কিছু যায় আসবে না কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ বেবিকে নিয়ে যদি ওরা খারাপ কিছু বলে তখন কি তোমার ভালো লাগবে বল.? এখন বল আমি যে তোমায় বাসর রাতে ওই কথাটা বললাম সেই কথাটা কি তুমি রাখতে পারবে না.? অন্তত আমাদের ভবিষ্যৎ বেবির কথা চিন্তা করে নাহয় আমার কথাটা কি তুমি
তামিমঃ হ্যাঁ আমি তোমার কথাটা রাখবো, আর কারও জন্য নয় আমাদের ভবিষ্যৎ বাবুর জন্য হলেও আমি তোমার ওই কথাটা রাখবো।।
নীলাঃ সত্যি.! সত্যি তুমি আমার ওই কথাটা রাখবে তো.? (খুশি হয়ে)
তামিমঃ হ্যাঁ জানপাখি সত্যি, আমি সত্যি তোমার ওই কথাটা রাখবো কথা দিলাম।। এখন থেকে নিজেকে সবসময় কন্ট্রোল রাখার চেষ্টা করবো।।
নীলাঃ Thank You জানু তুমি অনেক ভালো Love U (বলেই নীলা তামিমকে জড়িয়ে ধরলো)।।
তামিমঃ এখন কিন্তু তুমিই তোমার কথাটা ভঙ করছ।।
নীলাঃ উঁহু করছি না কারণ ওই কথাটা শুধু তোমার জন্য, আমার জন্য নয় বুঝলে.? (তামিমের নাক টেনে)
তামিমঃ তার মানে আমি তোমার সাথে কিছু করতে পারবো না বাট তুমি আমার সাথে যা মন চায় তাই করতে পারবে.?
নীলাঃ হুম অবশ্যই।।
তামিমঃ তুমি আমার সাথে কিছু করলে যে আমিও নিজেকেও কন্ট্রোল করতে পারবো না।।
নীলাঃ হাহা আমি তোমার সাথে কিছুই করবো না।। একবার আমাদের পরিবারের সবাই আমাদের সম্পর্কটা মেনে নেক তারপর যা করার আমিই করবো হু।।
তামিমঃ তাই তা তুমি কি করবে শুনি.?
নীলাঃ এখন বলা যাবে না সময় হোক তখন এমনিতেই দেখতে পাবে।। এখন একটু চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক তো।।
তামিমঃ ওকে দেখা যাবে বাট চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবো কেন.?
নীলাঃ এমনিই, আচ্ছা তুমি আজ গোসল করবে না.?
তামিমঃ উম হ্যাঁ করবো তো।।
নীলাঃ আচ্ছা ঠিক আছে এখন তাহলে তুমি গোসল করতে যাও (বলেই তামিমকে ছেড়ে দিল)।।
তামিমঃ আচ্ছা যাচ্ছি আর নেক্সট টাইম কখনো এইভাবে এইভাবে তোমার ভেজা চুলগুলো খুলে রাখবে না নাহলে আমি আবার নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না।।
নীলাঃ তাহলে চুল শুকাব কি করে.?
তামিমঃ চুলে তোয়ালে পেছিয়ে রাখবে তাহলে এমনিতেই শুকিয়ে যাবে।।
নীলাঃ আচ্ছা ঠিক আছে আর এরকম করে রাখবো না নেক্সট টাইম চুলে তোয়ালে পেছিয়েই রাখবো।।
তামিমঃ হুম
নীলাঃ আচ্ছা আজ আমায় কেমন লাগছে বললে না যে।।
তামিমঃ কেমন লাগছে এটা কি আর বলে দিতে হবে, তোমাকে নীল শাড়ি আর ভেজা চুলে দেখেই তো আমার হুশ উড়ে গেছিল তাইতো একটু আগে (বলেই থেমে গেল কারণ তার কথা শুনে নীলা লজ্জায় একেবারে লাল হয়ে যাচ্ছে)।। ওরে আমার লজ্জাবতী বউরে, থাক আর লজ্জা পেতে হবে না তুমি থাক আমি গোসল করে আসি (বলেই তাদের ব্যাগ থেকে তার লুঙ্গি আর তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল)।।
তামিম ওয়াশরুমে ঢোকার পর নীলা আবার আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে তার চুল মুছতে লাগলো।। বেশ কিছুক্ষণ পর তামিম গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বের হলো।। এর মধ্যে হোটেলের একজন স্টাফ এসে তাদেরকে দুপুরের খাবার দিয়ে চলে গেছে।। তারপর তামিম কাপড় পরে হাত ধুয়ে এসে নীলাকে নিয়ে খাবার খেতে বসে পরলো।। নীলাকে তামিম নিজের হাতেই খাইয়ে দিচ্ছে আর নীলাও চুপটি মেরে বসে তামিমের হাতে খাবার খেয়ে যাচ্ছে।। নীলাকে খাইয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তামিমও হালকা খাবার খেয়ে নিল।। দুজনের খাওয়া শেষ হলে কিছুক্ষণ পর হোটেলের একজন স্টাফ এসে তাদের প্লেটটা নিয়ে গেল।। তার দুজনেই বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিতে লাগলো।।
দুপুরবেলা…
সূর্য প্রায় আরও কিছুক্ষণ পর অস্ত চলে যাবে কারণ সূর্য একেবারে লাল বর্ণ ধারণ করে ফেলেছে।। তামিম আর নীলা হোটেল থেকে বেরিয়েছে প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করার জন্য।। দুজনেই দুজনের হাত ধরে পাশাপাশি হাটছে আর প্রকৃতির দৃশ্যগুলো উপভোগ করছে।। তামিম নীলাকে একটা কালো বোরকা পরিয়ে এনেছে যাতে কেউ নীলাকে চিনতে না পারে।। তামিম চারপাশে তাকিয়ে একটা খালি জায়গা খুজতে লাগলো যেখানে গিয়ে দুজন বসে আরামসে প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে।। কিছুক্ষণ খোজার পর তামিম একপাশে একটা নারিকেল গাছ দেখতে পেল যেখানের পরিবেশটা বেশ ঠান্ডা, আশেপাশে কোনো লোকজন নেই।।
তারপর তামিম নীলাকে নিয়ে প্রথমে একটা ডাব ওয়ালার কাছে গেল আর দুজনের জন্য একটা ডাব কিনে নিয়ে তামিম নীলাকে নিয়ে সেই নারিকেল গাছটার নিচে এসে বসে পরলো।। এরপর তামিম ডাবের মধ্যে এক চুমুক দিয়ে সেটা নীলাকে খেতে দিল।। নীলাও তামিমের খাওয়া ডাবটার মুখে চুমুক দিয়ে হালকা ডাবের পানি খেল।। এইভাবেই দুজনে একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে ডাবটা খেতে খেতে প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলো।।
–আরে নীলা তুই.! তুই এইখানে কি করছিস.?
হঠাৎ পিছন থেকে কারও এমন কথা শুনে তামিম আর নীলা দুজনেই চমকে উঠলো।। কে এই কথাটা বললো সেই মানুষটাকে দেখার জন্য তামিম আর নীলা দুজনেই পিছনে ফিরে তাকালো আর তাদের সামনে যাকে দেখলো তাকে দেখে নীলার চোখ কপালে উঠে গেল।। এতো বছর পর এইভাবে তার সাথে নীলার দেখা হবে এটা নীলা ভাবতেই পারেনি।।
.
.
.
.
.
Loading…….
কে হতে পারে ওই মানুষটা যাকে দেখে নীলা এতোটা অবাক হলো.?
আজকে একটু পারিবারিক ঝামেলায় ছিলাম তাই গল্পটা বেশি বড় করে লিখতে পারি নি সরি।। ইনশাআল্লাহ আগামী পর্ব বড় করে দিব।।
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই একটা গঠনমূলক কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন হেপি রিডিং ?
~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~
#খুব_ভালোবাসি_তোকে
#লেখকঃ- Tamim
#পর্বঃ- ২৫
,,
,,
,,
,,
–সাকিব ভাইয়া তুমি.! তুমি এইখানে কি করছ.? (কথাটা বলেই নীলা বসা থেকে উঠে দাড়ালো)
–এইতো বন্ধুদের সাথে এইখানে ঘুরতে এসেছি তুই.?
নীলাঃ আমিও
–এই ছেলেটা (তামিমকে দেখিয়ে) তোর ফ্রেন্ড.?
নীলাঃ না মানে হ্যাঁ ও আমার ফ্রেন্ড।।
নীলার মুখ থেকে এই কথাটা শুনে তামিম বেশ চমকে উঠলো আর সাথে সাথে বসা থেকে উঠে দাড়ালো।। এরপর তামিম কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই নীলা তাকে ইশারায় থামিয়ে দিল।।
–শুধু কি ফ্রেন্ড নাকি অন্য কিছুও.?
নীলাঃ অন্য কিছুও মানে.?
–মানে বয়ফ্রেন্ড
নীলাঃ না তেমন কিছু না ও জাস্ট আমার ফ্রেন্ড।।
–ওহ আচ্ছা তা তোরা আর কে কে এসেছিস এইখানে.?
নীলাঃ আরও অনেকেই এসেছি।।
–তো আর কাউকে তোদের সাথে দেখছি না যে।।
নীলাঃ আসলে ওরা কি যেন আনতে গিয়েছে তাই আমরা দুজন এইখানে এসে বসে আছি।।
–ওহ তা কয়দিন থাকবি এইখানে.?
নীলাঃ আজ থাকবো কাল চলে যাব।।
–ওহ তা কোথায় উঠেছিস.?
নীলাঃ এইতো —– এই হোটেলে, তুমি কোথায় উঠেছ.?
–আজকে চলে যাব তাই কোথাও উঠি নি।।
নীলাঃ ওহহ
–তা ফুফা আর ফুপি কেমন আছেন.?
নীলাঃ ভালোই, মামা-মামী কেমন আছেন.?
–ভালো, আচ্ছা তাহলে আমি এখন যাই থাক তোরা আল্লাহ হাফেজ (বলেই সাকিব নামের ছেলেটা সেখান থেকে চলে গেল)।।
তামিমঃ ওই ছেলেটা কে.? আর ওর কাছে আমায় তোমার ফ্রেন্ড বলে পরিচয় দিলে কেন.? (কিছুটা রাগ নিয়ে)
নীলাঃ তুমি চিন না উনাকে.? আরে উনি সাকিব ভাইয়া, আমার মামাতো ভাই।।
তামিমঃ মামাতো ভাই.! কই আমি তো উনাকে আগে কখনো দেখি নি।।
নীলাঃ দেখবে কীভাবে উনি কি কখনো আমাদের বাসায় এসেছেন নাকি।। উনি আমাদের বাসায় ২ বার এসেছেন।। ছোটবেলায় একবার, আরেকবার তুমি যখন আমেরিকায় ছিলে তখন, প্রায় দেড় বছর আগে।।
তামিমঃ দেড় বছর আগে.! তা কেন এসেছিলেন উনি.?
নীলাঃ উনার আম্মুকে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন।।
তামিমঃ ডাক্তার দেখাতে আমাদের বাসায় আসার কি আছে, উনার শহরে কি ডাক্তার নেই.?
নীলাঃ উনারা শহরে থাকেন না গ্রামে থাকেন।।
তামিমঃ ওহহ আচ্ছা।। তা উনার কাছে তুমি আমায় ফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় দিলে কেন.?
নীলাঃ তা ছাড়া আর কি করবো, উনাকে যদি বলতাম যে তুমি আমার স্বামী তাহলে উনি বিশ্বাস করতেন না।। কারণ আমার বিয়ে হলে তো আম্মু তাদেরকে দাওয়াত দিতেন ই।। তো উনি যদি উনার বাড়িতে গিয়ে উনার আব্বুকে মানে আমার মামাকে আমার কথা বলেন তাহলে তো ঝামেলা হয়ে যাবে।। কারণ তারা কেউ তো আর জানে না যে আমার বিয়ে হয়ে গেছে।। তখন মামা আমার বিষয়টা নানু বাড়িতে পৌঁছে দিবেন আর নানু বাড়ির লোকজন আম্মু আব্বুকে ফোন করে আমার বিষয়ে জানাবে।। তখন তো আব্বু জেনে ফেলবে যে আমরা কোথায় আছি তাইনা.? এরপর আব্বু যদি এইখানে এসে আমাদের খুজে বের করে ফেলেন তখন কি হবে.?
তামিমঃ কি আর হবে আমাদেরকে আবার বিয়ে দিয়ে দিবেন (মজা করে)।।
নীলাঃ আমি কিন্তু এখন মজার মোডে নেই।।
তামিমঃ তো আমি মজার মোডে আছি নাকি.?
নীলাঃ আচ্ছা বাদ দাও এখন এইসব কথা।।
তামিমঃ আমরা যে এইখানে আছি এটা ছোট চাচ্চু জেনে যাবেন বলে তুমি উনার কাছে আমাকে ফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় দিয়েছ তাইতো.?
নীলাঃ হ্যাঁ
তামিমঃ এই ছোট্ট একটা বিষয়ের জন্য আমাকে উনার কাছে ফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় দিতে হয়.?
নীলাঃ এটা কোনো ছোট বিষয় না, উনি যদি বাড়িতে গিয়ে মামার কাছে আমার কথা বলেন আর মামা যদি আব্বুকে ফোন করে এই বিষয়ে জানান তাহলে যে কি হবে ভেবে দেখেছ কখনো.?
তামিমঃ এমনটা তো আর হবে না তাহলে ভেবে দেখার কি আছে.?
নীলাঃ কেন হবে না.?
তামিমঃ কারণ তুমি তো উনাকে আমাদের সম্পর্কে কিছুই বলনি।।
নীলাঃ হুম বাট যদি বলতাম তাহলে.?
তামিমঃ বলবে.? উনাকে ডাক দেই তাহলে.?
নীলাঃ থাক আর ডাক দিতে হবে না, ডাবটা এইদিকে দাও কথা বলতে বলতে গলা শুকিয়ে গেছে এতক্ষণে।।
তামিমঃ এই নাও (ডাবটা এগিয়ে দিয়ে)।।
তারপর নীলা তামিমের থেকে সেই ডাবটা নিয়ে খেতে শুরু করলো।। নীলা ডাবের কিছু পানি খেয়ে বাকিটুকু তামিমকে দিয়ে দিল।। তামিমও ডাবের বাকিটুকু পানি খেয়ে ডাবটা দূরে ফেলে দিল।। এরপর তারা দুজনে সেখানে বসে প্রকৃতির নানান দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলো।। দেখতে দেখতে একসময় সন্ধ্যা হয়ে আসলো তাই তারা দুজনেই আবার হোটেলে চলে আসলো।।
ওইসময় নীলা যার সাথে কথা বললো সে কে তা তো আপনারা জানলেনই।। ছেলেটা নীলার মামাতো ভাই ওর নাম সাকিব।। দেড় বছর আগে সে একবার তার আম্মুকে ডাক্তার দেখাতে নীলাদের বাসায় আসে।। নীলা তখন ইন্টার শেষ বর্ষের ছাত্রী আর সে তখন অনার্স ১ম এ পড়তো।। প্রথমদিন নীলাকে দেখেই তার ভালো লেগে যায়।। এরপর সে একদিন সুযোগ বুঝে নীলাকে নিজের কথাগুলো জানায়।। কিন্তু নীলা তাকে ওইদিন ফিরিয়ে দেয় আর বলে সে কখনো তার কাজিনদের সাথে এইসবে জড়াবে না।। এর কিছুদিন পরেই সাকিব তার আম্মুকে নিয়ে তাদের বাড়িতে চলে যায়।। তারপর থেকে আর তাদের দেখা হয়নি।। নীলা চায়না তামিম জানক যে সাকিব তাকে পছন্দ করতো, নাহলে তামিম কষ্ট পাবে।। তাই সে তামিমকে ওইসময় ওই মিথ্যা কথাটা বলেছে।।
এদিকে তামিম আর নীলাকে নিয়ে বাসার সবাই-ই এখন ভিষণ চিন্তিত।। চিন্তিত হবে না কেন সেই সকাল থেকে তাদেরকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না তার উপর আজ আবার নীলার বিয়ে হবার কথা ছিল রাফির সাথে।। নীলাকে কোথাও খুজে পাওয়া যায়নি বলে বিয়েটাও ভেঙে দিতে হয়েছে।। বিয়েতে যাদেরকে ইনভাইট করা হয়েছিল তাদেরকে নীলার আব্বু অনেক মিথ্যা বলে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাসা থেকে বিদায় করেছেন।। বিয়েতে আমন্ত্রিত সবার কাছেই আজ নীলার আব্বু ছোট হয়ে গেলেন।। তারপরও নীলার আব্বু শুধু নীলার কথাই ভাবছেন, কোথায় আছে মেয়েটা, কার সাথেই বা আছে, সারাদিনে কিছু খেয়েছে কি না, ইত্যাদি ইত্যাদি।।
নীলার আব্বু তার পুলিশ বন্ধুকে তামিম আর নীলার একটা ছবি আর তামিমের নাম্বারও দিয়েছেন নীলাকে খুজে বের করার জন্য।। উনার বন্ধু নীলাকে অনেক জায়গায় খুজেছে কিন্তু কোথাও পায়নি।। পাবে কি করে উনি তো আর জানেন না যে তারা কোথায় আছে।।
বাসার সবাই-ই নীলা আর তামিমের জন্য চিন্তিত।। কোথায় আছে তারা, কি করছে এইসব কথাই সবাই ভাবছে।। নীলার আম্মু তো একটু পর পর-ই নীলার জন্য ন্যাকা কান্না করে বসেন আর নীলার আব্বু উনাকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।। নীলার আম্মু স্বাভাবিক থাকলে তো বাসার সবাই উনার উপর সন্দেহ করবে তাই তিনি মাঝেমধ্যে একটু কান্নার অভিনয় করছেন আর কি।।
এদিকে তামিম আর নীলা হোটেলে এসে হাত-মুখ ধুয়ে রুমের মধ্যে বসে আছে।। হঠাৎ নীলা তামিমকে বললো…
নীলাঃ এই তোমার ফোনে টাকা আছে.?
তামিমঃ হ্যাঁ আছে তো কেন.?
নীলাঃ আসলে আম্মুর কথা খুব মনে পরছে তাই উনার সাথে একটু কথা বলতে চাচ্ছিলাম আর কি।।
তামিমঃ ওহ এই কথা কিন্তু চাচির নাম্বার যে আমার ফোনে নেই।।
নীলাঃ তাতে কি আম্মুর নাম্বার তো আমি জানি।।
তামিমঃ আচ্ছা তাহলে এই নাও ফোন আর কথা বল (নীলার দিকে ফোনটা এগিয়ে দিয়ে)।।
নীলাঃ তামিমের থেকে ফোনটা নিয়ে তার আম্মুর নাম্বার তুলে কল দিল।।
কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর নীলার আম্মু কল রিছিভ করলেন।।
নীলার আম্মুঃ হ্যালো কে বলছেন.?
নীলাঃ আম্মু আমি নীলা বলছি, তুমি কেমন আছ আম্মু (কাদো কাদো কণ্ঠে)।।
নীলার আম্মুঃ নীলা.! তুই কেমন আছিস মা.? আর তোর কণ্ঠ এমন শোনাচ্ছে কেন কি হয়েছে তোর.? (কিছুটা অস্থির হয়ে)
নীলাঃ আমি ভালো আছি আম্মু আর আমার কিছু হয়নি।। আসলে এতোদিন পর তোমার সাথে কথা বলতে পেরে খুশিতে কণ্ঠ এমন হয়ে পরেছে।।
নীলার আম্মুঃ ওহহ তা তোরা এখন কোথায় আছিস মা.?
নীলাঃ এখন আমরা কক্সবাজার আছি আম্মু।। তুমি এখন কোথায় আছ বাসার কেউ তোমার পাশে নেই.?
নীলার আম্মুঃ নাহ আমি একটু বারান্দায় আসছিলাম তামিম বাবার নাম্বার খুজে উনাকে ফোন দেওয়ার জন্য।। তার মধ্যেই তুই ফোন দিয়ে দিলি তা এই নাম্বারটা কার.?
নীলাঃ উনার ই, উনার আগের সিমটা খুলে নতুন আরেকটা সিম ঢুকিয়েছেন।।
নীলার আম্মুঃ ওহহ তা তোদের কাছে টাকা-পয়সা আছে তো নাকি আরও লাগবে.? লাগলে বল আমি আরও টাকা পাঠিয়ে দিব।।
নীলাঃ নাহ আম্মু টাকা-পয়সা লাগবে না আমাদের কাছে আছে।।
নীলার আম্মুঃ আর কতো টাকা আছে.?
নীলাঃ দাড়াও আমি জিজ্ঞেস করে বলছি, এই আমাদের কাছে আর কতো টাকা আছে আম্মু জিজ্ঞেস করছেন (তামিমকে বললো)।।
তামিমঃ উনি যত টাকা দিয়েছিলেন তার সব টাকাই রয়ে গেছে।।
নীলাঃ আম্মু তুমি যত টাকা দিয়েছিলে তার সব টাকাই নাকি রয়ে গেছে।।
নীলার আম্মুঃ ২ দিন হলো তোরা বাহিরে আছিস আর এখন বলছিস যত টাকা দিয়েছি তার সব টাকাই রয়ে গেছে, এটা কীভাবে সম্ভব.?
নীলাঃ আমি জানি না তুমি উনার সাথে কথা বল এই নাও (তামিমকে ফোন দিয়ে)।।
তামিমঃ জি চাচি বলেন.?
নীলার আম্মুঃ আব্বু তোমাকে আমি যত টাকা দিয়েছি তার সব টাকাই নাকি রয়ে গেছে এটা কীভাবে সম্ভব, তোমরা কি টাকা খরচ কর নাই.?
তামিমঃ আসলে চাচি আমার বন্ধুরা আমাদেরকে এইখানে দিয়ে যাওয়ার সময় আমায় কিছু টাকা দিয়ে যায় সেই টাকাই এখন খরচ করছি।। আর হোটেলের মেনেজারের থেকে জানতে পেরেছি ওরা নাকি ৩ দিনের জন্য আমাদের রুমটা বুকিং করেছে আর ওরা ৩ দিনের টাকাটাও দিয়ে দিয়েছে।।
নীলার আম্মুঃ ওহহ এই ব্যাপার, আচ্ছা ঠিক আছে তোমাদের টাকা ফুরালে আমায় বলিও আমি আরও টাকা পাঠিয়ে দিব তোমার বিকাশে।।
তামিমঃ আচ্ছা চাচি আর চাচি বাসার লোকদের কি খবর.?
নীলার আম্মুঃ তোমাদেরকে বাসায় না পেয়ে নীলার আম্মু উনার এক পুলিশ বন্ধুর কাছে তোমাদের মিসিং ডাইরি লিখিয়েছেন।। পুলিশের কাছে তোমরা দুজনের ছবিও রয়েছে, তোমরা একটু সাবধানে থেক বাবা, আর হোটেল থেকে বেশি বেরিও না।।
তামিমঃ আচ্ছা চাচি আর আম্মু-আব্বুর কি খবর.?
নীলার আম্মুঃ ওরাও তোমায় আর নীলাকে নিয়ে বেশ চিন্তিত আছেন।। আচ্ছা এবার নীলার কাছে একটু ফোনটা দাও তো।।
তামিমঃ হুম এই নিন, নীলা কথা বল (নীলাকে ফোনটা দিয়ে)।।
তারপর নীলা তামিমের থেকে ফোনটা নিয়ে তার আম্মুর সাথে কথা বলতে লাগলো।। বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে নীলা ফোনটা রেখে তামিমকে তার ফোনটা দিয়ে দিল।। তামিমও ফোনটা নিয়ে তার কয়েকটা বন্ধুকে কল করে তাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বললো।।
রাত ৯টার সময় হোটেলের একজন স্টাফ এসে তাদেরকে খাবার দিয়ে গেল।। এরপর দুজনে সেই খাবার খেয়ে ওইদিনের মতো ঘুমিয়ে পরলো।।
সকালবেলা…
ঘুমের মধ্যে হঠাৎ তামিমের মনে হলো কে যেন তাদের রুমের কলিং বেল বাজাচ্ছে।। তামিম ঘুম ঘুম চোখে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখলো সকাল ৮টা বাজে।। এতো সকাল কে তাদের রুমের কলিং বেল বাজাচ্ছে দেখার জন্য তামিম বিছানা থেকে উঠতে যাবে তখন-ই সে দেখলো নীলা তাকে জড়িয়ে ধরে তার বুকের উপর শুয়ে আছে।। তামিম আস্তে আস্তে নীলাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাড়ালো।। এরপর সে রুমের দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে দরজাটা খুলে দিল।।
রুমের দরজা খোলার সাথে সাথে একটা কালো বোরকা পরা মেয়ে তাদের রুমে ঢুকে পরলো আর রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিল।। তামিম তো মেয়েটার কাজে পুরাই অবাক, কে এই মেয়ে আর আমাদের রুমেই বা কেন এসেছে.?
তামিমঃ এই মেয়ে কে আপনি আর এইভাবে আমাদের রুমে ঢুকেছেন কেন.?
তারপর মেয়েটা তামিমের প্রশ্নের উত্তরে এমন একটা কথা বললো যা শুনে তামিম পুরাই টাশকি খেয়ে গেল।। তামিম মনে মনে ভাবতে লাগলো, এ আবার কোন বিপদ এসে ঘাড়ে পরলো.?
.
.
.
.
.
Loading…….
কে হতে পারে এই মেয়েটা.? আর তামিমকে কি বলেছে সে.? (বলতে পারলে সবাইকে একটা গিফট দেওয়া হবে?)
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই একটা গঠনমূলক কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন হেপি রিডিং ?
~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~
#খুব_ভালোবাসি_তোকে
#লেখকঃ- Tamim
#পর্বঃ- ২৬
,,
,,
,,
,,
–আমি তোমার বউ, আমাকে চিনতে পারছ না.?
মেয়েটার এমন কথা শুনে তামিম অবাক না হয়ে পারলো না।। চিনা নেই জানা নেই একটা অচেনা মেয়ে এসে যদি কাউকে এমন কথা বলে তাহলে যে কেউ-ই অবাক হয়ে যাবে।। মেয়েটার কণ্ঠ শুনে মেয়েটাকে চেনার উপায় নেই, চিনতে হলে মেয়েটার ফেস দেখতে হবে।। কিন্তু মেয়েটার পুরো বডি ই তো বোরকা দিয়ে ঢাকা, এমতাবস্থায় মেয়েটা কে তা চিনা বড় মুশকিল।। তামিম মনে মনে ভাবতে লাগলো, মেয়েটা কি আমার সাথে ফাজলামি করছে.? কিন্তু একটা অচেনা মেয়ে কেন আমার সাথে ফাজলামি করবে.?
এদিকে তামিমকে কি যেন ভাবতে দেখে মেয়েটা আবার বলে উঠলো…
–কি গো কি ভাবছ তুমি.? (আদুরে গলায়)
তামিমঃ আরে আপনি এইসব কি পাগলের মতো কথা বলছেন.? চেনা নেই জানা নেই হুট করে এসে রুমে ঢুকে গেলেন আর এখন আবার বলছেন আপনি আমার বউ।। আপনি আমার বউ মানে.? আপনাকে তো আমি চিনিই না তাহলে (তামিমকে থামিয়ে)
–এখন তো চিনবেই না কারণ আমি তো এখন তোমার পর হয়ে গেছি (কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে)।।
তামিমঃ আজব তো, আরে আমি সত্যি আপনাকে চিনি না, কে আপনি আপনার পরিচয় দেন।।
–বললাম তো আমি তোমার বউ।।
তামিমঃ আপনাকে আমি চিনিই না তাহলে আপনি আমার বউ কীভাবে হলেন.? আর আমি অলরেডি একটা মেয়েকে অনেক আগেই বিয়ে করে ফেলেছি।। এই যে বিছানার মধ্যে যে মেয়েটা শুয়ে আছে সেই মেয়েটাই আমার বউ (নীলাকে দেখিয়ে)।।
–কিহ.! তার মানে তুমি আরেকটা বিয়ে করে ফেলেছ.! ওকে ঠিক আছে সতিন নিয়ে সংসার করতে আমার কোনো সমস্যা নেই।।
তামিমঃ সতিন নিয়ে সংসার মানে.? কে সতিন আর কীসের সংসার.?
–এই যে বিছানায় শুয়ে থাকা মেয়েটা আমার সতিন এন্ড আমার আর তোমার সংসারের কথা বলছি।।
তামিমঃ আমার মনে হয় আপনার মাথা পুরাই গেছে নাহলে পাগলের মতো এইসব কথা বলতেন না।। আপনি এক্ষুণি আমাদের রুম থেকে বের হোন নাহলে কিন্তু (তামিমকে থামিয়ে)
–নাহলে কিন্তু কি.? আমাকে রুম থেকে বের করে দিবেন নাকি আমায় মারবেন কোনটা.? যাই করেন না কেন এটা কিন্তু আমারও রুম সো আমি এইখান থেকে কোথাও যাব না।। এই যে আমি আমার সতিনের পাশে বসে পরলাম (বলেই বিছানার গিয়ে নীলার পাশে বসে পরলো)।।
তামিমঃ আরে কি করছেন নীলুর ঘুম ভেঙে যাবে তো।। আপনি ওইখান থেকে উঠে আসেন বলছি।।
–ওহ তাহলে আমার সতিনের নাম নীলু, খুব সুন্দর নাম তো আমার সতিনের।। দাড়াও ওর সাথে একটু কথা বলে নেই, নীলু এই নীলু উঠ বলছি (নীলাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে)।।
তামিমঃ এই মেয়ে আপনি কিন্তু
–উফ তুমি একটু চুপ থাক তো।।
তারপর মেয়েটা তামিমকে চুপ করিয়ে নীলাকে ডাকতে লাগলো।। তামিম কিছু বলেও মেয়েটাকে থামাতে পারছে না।। মেয়েটা যদি ছেলে হতো তাহলে সে এতক্ষণে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দিত।। কিন্তু মেয়ে হওয়াতে তামিম ওকে কিছু করতে পারছে না। ছেলে হয়ে কীভাবে একটা অপরিচিত মেয়ের গায়ে হাত দিবে সে.?
এদিকে মেয়েটা নীলাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে তাকে ঘুম থেকে তুলেই ফেলেছে।। নীলা ঘুম থেকে উঠে ঘুম ঘুম চোখে আশেপাশে তাকাতে লাগলো ঠিক তখনই তার চোখ পরলো তার পাশে থাকা মেয়েটার দিকে।। তার পাশে একটা মেয়েকে দেখে নীলা অনেকটাই ভয় পেয়ে গেল আর সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো।। রুমে তো তারা দুজন ছাড়া আর কোনো মানুষ নেই তাহলে এই মেয়ে তাদের রুমে আসলো কোথা থেকে.?
–কি হলো তুমি এইভাবে উঠে পরলে কেন, ভয় পেলে নাকি আমাকে দেখে.?
নীলাঃ ককে আপনি আর আমাদের রুমেই বা কি করছেন.?
–আরে আমি তোমার স্বামীর ১ম বউ মানে আমি তোমার সতিন।।
নীলাঃ আমার স্বামীর ১ম বউ মানে.! কি পাগলের মতো কথা বলছেন আপনি.? আমার স্বামী একটাই বিয়ে করেছে আর আমিই তার ১ম বউ (কিছুটা রাগ নিয়ে বললো)।।
–উঁহু আমি তোমার স্বামীর ১ম বউ আর সে আমার স্বামী।। তুমি হলে আমার স্বামীর ২য় বউ বুঝলে.?
নীলাঃ মেয়েটার এমন কথা শুনে নীলা তামিমকে খুজতে লাগলো আর দেখলো তামিম তার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।। নীলা তাড়াতাড়ি করে তামিমের কাছে গিয়ে দাড়ালো আর বললো, এই মেয়ে এইসব কি বলছে আমার তো কিছুই মাথায় ঢুকছে না।। ১ম বউ ২য় বউ এইসব কি.?
তামিম কিছু বলতে যাবে তার আগেই মেয়েটা বলে উঠলো…
–মানেটা খুব সোজা, আমি হলাম তামিমের ১ম স্ত্রী মানে তামিম তোমাকে বিয়ে করার ২ মাস আগে আমাকে বিয়ে করেছে।। বিয়ে করে আমরা দুজন যার যার বাসায় ই থাকতাম কিন্তু হঠাৎ একদিন আমার আর ওর মধ্যে একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া বাঁধে এরপর তামিম আমার সাথে আর যোগাযোগ করেনি।। এর ঠিক ২ মাস পর হঠাৎ জানতে পারলাম তামিম নাকি একটা মেয়েকে বিয়ে করে তাকে নিয়ে কক্সবাজার পালিয়ে এসেছে।। তাই আমিও তামিমকে খুজতে কক্সবাজার চলে আসলাম আর তামিমের দেখা পেয়েই গেলাম।।
মেয়েটার কথা শুনে নীলা যতটা না অবাক হয়েছে তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছে তামিম।। তামিম নিজেই জানে না যে সে ২ মাস আগে কাউকে বিয়ে করেছিল আর এই মেয়েটাই নাকি তার বউ।। নীলাও মনে মনে ভাবছে মেয়েটা কি সত্যি বলছে নাকি আমাদেরকে আলাদা করার জন্য বানিয়ে বানিয়ে এইসব কথা বলছে.?
নীলাঃ আপনি যে উনার স্ত্রী তার প্রমাণ কি.? এর কোনো প্রমাণ আছে আপনার কাছে.?
–হ্যাঁ অবশ্যই আছে, থাকবে না কেন প্রমাণ সাথে নিয়েই তো এইখানে আসলাম।। দাড়াও দেখাচ্ছি প্রমাণ (বলেই মেয়েটা তার ব্যাগ থেকে একটা চিঠি বের করে নীলার হাতে দিল)।।
মেয়েটার থেকে চিঠিটা নিয়ে নীলা চিঠিটা পড়তে লাগলো।।
“আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি মুন, তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না”।। আমরা কালকেই কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করবো তুমি রেডি থাক।। আর হে বিয়ের পর কিন্তু আমরা কিছুদিন আলাদা থাকবো।। তারপর আমাদের পরিবার আমাদেরকে মেনে নিলে নাহয় আমরা আবার এক হব।। কাল তাহলে দুপুর ৩টায় —- এই কাজি অফিসে চলে এস কেমন.?
ইতি তোমার তামিম….
চিঠিটার মধ্যে এইসব লিখা পড়ে নীলার চোখ মূহুর্তের মধ্যেই জলে ভরে গেল।। নীলার চোখে পানি টলমল করছে যেন সে এক্ষুণি কেঁদে দিবে।। নীলা এবার ছলছল চোখে তামিমের দিকে তাকালো আর বললো…
নীলাঃ তুমি আমার সাথে এমন প্রতারণা করতে পারলে.? কি দোষ করেছিলাম আমি.? ভালোই তো বেসে ছিলাম তোমায়।। তুমি তো নিজ থেকে এসেই আমাকে তোমার ভালোবাসার কথা বলেছিলে।। তারপরও তুমি আমাকে এইভাবে ঠকালে.? নাহ আমি আর থাকবো না তোমার সাথে, চলে যাব আমি বাসায় আর আব্বু যার সাথে আমার বিয়ে দিবেন তাকেই আমি বিয়ে করবো (বলেই নীলা নিজের জামাকাপড় গুছানো শুরু করে দিল)।।
তামিমঃ আরে নীলা এইসব তুমি কি বলছ আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।। প্রতারণা, ঠকানো এইসবের মানে কি.?
নীলাঃ চিঠিটেই সব লিখা আছে চিঠিটা পড় তাহলে সব বুঝতে পারবে।।
নীলার কথায় তামিম চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলো।। চিঠিটা পড়া শেষ করে তামিম নীলার দিকে তাকিয়ে দেখলো নীলা তার সব জামাকাপড় ঘুছিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।। তামিম নীলাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওই বোরকা পরা মেয়েটা হো হো করে হেসে উঠলো।। মেয়েটার হাসি শুনে নীলা সাথে সাথে দাঁড়িয়ে গেল আর মেয়েটার দিকে তাকিয়ে মেয়েটার হাসির কারণ খুজতে লাগলো।। তামিমও মেয়েটার হাসি দেখে অবাক হয়ে গেছে।। মেয়েটা এইভাবে হাসছে কেন তামিম বুঝে উঠতে পারছে না।।
.
.
.
.
.
Loading…….
আচ্ছা গল্পটা দুপুরে দেওয়াতে কি আপনাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে.? (মানে রোজার কোনো সমস্যা) সমস্যা হলে বলতে পারেন গল্পটা নাহয় এখন থেকে রাতে দিব।। আর গল্পটা ছোট হওয়ার জন্য সরি, আগামী পর্ব বড় করে দিব ইনশাআল্লাহ, হেপি রিডিং ?
~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~