খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ৩

0
3965

খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ৩
#লেখকঃ- Tamim

,,
,,
,,
,,
নীলা রুমের ভিতর ঢুকতেই তামিম বিছানা থেকে উঠে সোজা নীলার কাছে চলে আসলো আর নীলার ২ হাত দেয়ালের সাথে চেপে ধরে নীলার মুখের কাছে তার মুখ নিয়ে রাগে কটমট করে বললো…

–গতরাতে তুই আমার রুমে কেন এসেছিলি.? আর আমার উপর বসে কি করেছিলি আমার সাথে.? আর আমার ঘাড়ে কামড় মেরে পালিয়ে গেলি কেন.?

তামিমের এমন কথা শুনে নীলার ভয়ে কলিজা কেঁপে উঠলো।। এতক্ষণ সে যেটার ভয় পাচ্ছিল এখন সেটাই হলো।। অবশেষে সে তামিমের কাছে ধরা পরেই গেল।। কিন্তু তামিম ভাইয়া বুঝলেন কি করে যে আমি গতরাতে উনার রুমে এসেছিলাম.? নাকি উনি তখন ঘুমের ভান করে বসে ছিলেন.? নাকি আমি যখন উনার ঘাড়ে কামড় মেরে পালিয়ে যাচ্ছিলাম তখন উনি আমাকে দেখে ফেলেছিলেন, কোনটা.? (নীলা মনে মনে কথাগুলো ভাবছে আর বোঝার চেষ্টা করছে তামিম কীভাবে বুঝলো যে সে কাল রাতে তামিমের রুমে এসেছিল)

এদিকে নীলাকে চুপ করে থাকতে দেখে তামিমের মাথা আরও গরম হয়ে গেল।। তামিম এবার নীলার হাত দুটো দেয়ালের সাথে আরও শক্ত করে চেপে ধরলো আর সেই আগেই মতোই রাগী ফেস নিয়ে নীলাকে বললো…

তামিমঃ তোকে আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু তুই আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এতো কি ভাবছিস বলতো.?

হাতে ব্যাথা পেয়ে নীলা এবার আহ্ বলে একটু শব্দ করে কেদে ফেললো আর তামিমের দিকে কান্নাভেজা চোখে তাকিয়ে বললো…

নীলাঃ ভাইয়া আমার হাতে ব্যাথা পাচ্ছি, প্লিজ হাতটা ছাড় (করুণ শুরে বললো)।।

তামিমঃ ছাড়বো, তার আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে।। বল তুই গতরাতে আমার রুমে কেন এসেছিলি.?

নীলাঃ আমি তোমার রুমে কেন আসবো.? প্রযোজন ছাড়া তো আমি তোমার রুমে কখনোই আসি না।। তাহলে রাতে আমি কে (নীলাকে থামিয়ে)

তামিমঃ দেখ নীলু আমি কিন্তু মিথ্যা কথা একদম পছন্দ করি না।। আমার ঘাড়ে কোনো বাচ্চা কামড় দেয়নি, আর কামড়ের দাগটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে এটা কোনো বড় মানুষের দাতের দাগ।। তা ছাড়া বিছানার মধ্যে তোর ২-১ একটা চুলও পেয়েছি আমি।। চুলের স্মেলটা ঠিক তোর চুলের স্মেলের মতোই।। সত্যি করে বল গতরাতে তুই আমার রুমে কেন এসেছিলি.?

নীলাঃ তাহলে এর জন্য তামিম ভাইয়া বুঝে ফেলেছেন যে আমিই গতকাল রাতে উনার রুমে এসেছিলাম.! (মনে মনে) বললাম তো আমি তোমার রুমে আসি নি (ধরা পরে গেছে জেনেও মিথ্যা বলে বাঁচার চেষ্টা করছে)।।

তামিমঃ বুঝেছি তুই এইভাবে বলবি না।। দাড়া আমি এক্ষুণি গিয়ে বাড়ির সবাইকে বলছি যে তুই গতরাতে আমার রুমে এসেছিলি আর তুই ই আমার ঘাড়ে কামড় মেরেছিলি।।

তামিমের কথা শুনে নীলা এবার আরও ভয় পেয়ে উঠলো।। নীলা ভালো করেই জানে বাড়ির সবাই তামিমকে অনেক বিশ্বাস করে, বিশেষ করে নীলার আম্মু-আব্বু।। তামিম ভাইয়া যদি এখন সত্যিই সবাইকে গিয়ে বলে যে গতরাতে আমি উনার রুমে এসেছিলাম আর আমিই উনার ঘাড়ে কামড় মেরেছিলাম, তাহলে সবাই নিশ্চয়ই তামিম ভাইয়ার কথা বিশ্বাস করবে।। তখন তো আমি সবার চোখে খারাপ হয়ে যাব।। আমাকে নিয়ে সবাই কি না কি ভাববে তখন।। নাহ এর চেয়ে ভালো আমি ভাইয়াকে সব সত্যি বলে দেই আর ভাইয়ার কাছে মাফ চেয়ে নেই।।

তামিমঃ আবার কি ভাবছিস.? আমি কি সবাইকে গিয়ে গতরাতের কথা বলবো নাকি তুই নিজেই সত্যিটা বলবি.?

নীলাঃ আসলে ভাইয়া “ঠোঁটে চুমু খেলে যে এক ধরণের মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়” এটার সত্যতা যাচাই করতেই গতকাল রাতে আমি তোমার রুমে এসেছিলাম (ভয়ে ভয়ে)।।

তামিমঃ এটার সত্যতা যাচাই করতে আমার রুমেই কেন আসলি আর আমার ঘাড়ে কামড় ই বা মেরেছিলি কেন.? (ভ্রু কুচকে)

নীলাঃ আমি মিতুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এটার সত্যতা যাচাই করবো কি করে।। তখন মিতু বললো, তুমি ঘুমিয়ে গেলে আমি যেন তোমার রুমে এসে তোমার ঠোঁটে চুমু খাই।। তাহলে আমি আমার সব প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবো (নিচু গলায়)।।

তামিমঃ তার মানে তুই গতরাতে আমার রুমে এসে আমার ঠোঁটের মধ্যে চুমু খেয়েছিলি.! (অবাক হয়ে)

নীলাঃ হুম, ভাইয়া আমার ভুল হয়েগেছে প্লিজ এইসব বাড়ির কাউকে বলিও না।। আমি আর কখনো এইসব করবো না? (বলেই ছোট বাচ্চাদের মতো ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিল)।।

নীলার কথায় তামিমের রাগ করা উচিত নাকি নীলাকে মাফ করে দেওয়া উচিত, তামিম কিছুই বুঝতে পারছে না।। নীলা গতরাতে তার রুমে এসে তার ঠোঁটের মধ্যে চুমু খেয়েছে, এটা শুনে তামিমের যত রাগ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে নীলার কান্না দেখে।। যদিও গতরাতের কাজটা নীলা ঠিক করে নি কিন্তু তামিম এটার জন্য নীলার উপর রাগও করতে পারছে না, কারণটা হলো নীলার চোখের পানি।। তামিম নীলার প্রতি হাজার রাগ দেখালে নীলার চোখের পানি তামিম একদম সহ্য করতে পারে না।। তামিমের মনে হয় পৃথিবীতে তার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে নীলার চোখের পানি।। যেটা সে একদমই সহ্য করতে পারে না।।
তামিম এবার নিজের মনকে নরম করে নীলার হাত ছেড়ে দিয়ে তার দুই হাত দিয়ে আলতো করে নীলার চোখের পানি মুছে দিল।। আর বললো…

তামিমঃ এই পাগলি কাদছিস কেন.? আমি কি তোকে মেরেছি, নাকি বকেছি হে.?

নীলাঃ মেরেছও বকেছও (গাল ফুলিয়ে)।।

তামিমঃ ওমা কখন মারলাম আর কখন বকলাম.! (অবাক হয়ে)

নীলাঃ এই যে আমার হাত এতো জোরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ছিলে এটাকেই মারা বলে।। আর আমার সাথে যে রাগী গলায় কথা বলেছ এটাকে বকা বলে (বাচ্চাদের মতো ফেস করে)।।

নীলার এমন কথা শুনে তামিম ফিক করে হেসে দিল।। এতোক্ষণ তামিমের মধ্যে যা রাগ ছিল তা নিমিষেই শেষ হয়ে গেল নীলার কথা শুনে।। তামিমের মুখে হাসি দেখে নীলার মন থেকেও এতোক্ষণে তামিমের প্রতি ভয়টা চলে গেছে।। নীলাও এখন কিছুটা খুশি হয়েছে তামিমের রাগ কমে গেছে দেখে।।

তামিমঃ খুব ব্যাথা পেয়েছিস হাতে তাইনা.? (নীলার হাত দুটো ধরে)

নীলাঃ হুম

তামিমঃ সরি রে আসলে তখন আমার কি যে হয়েছিল নিজেই জানি না।। আর তুইও কিন্তু গতরাতে যা করেছিস তা একদম ঠিক করিস নি।।

নীলাঃ নিশ্চুপ (মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে)।।

তামিমঃ গতরাতে যা করেছিস আর কোনোদিন এমন কাজ করবি.?

নীলাঃ মাথা নাড়িয়ে “না” সূচক জবাব দিল।।

তামিমঃ মনে থাকবে তো.?

নীলাঃ মাথা উপর নিচ করে “হ্যাঁ” সূচক জবাব দিল।।

তামিমঃ যা আজকের মতো তোকে মাফ করে দিলাম।। তবে আর কোনোদিন যদি এমন করেছিস তাহলে কিন্তু আমি ওইদিন সত্যি সত্যি বাড়ির সবাইকে সবকিছু বলে দিব।।

তামিমের কথা শুনে নীলা বেজায় খুশি হয়ে উঠলো।। আর খুশির ছুটে টুপ করে তামিমের ডান গালে একটা চুমু এঁকে দিল আর বললো…

নীলাঃ Thank You ভাইয়া, আমি আর কোনোদিন এমন কাজ করবো না (খুশি মনে)।।

নীলার এমন কাজে তামিম গালে হাত দিয়ে নীলার দিকে হালকা অবাক + ভ্রু কুচকে তাকালো।। নীলাও এতক্ষণে বুঝে গেল তামিমের গালে হয়তো তার চুমু দেওয়াটা ঠিক হয়নি।। নীলা এখন নিজের কাজের জন্য নিজেই লজ্জা পেয়ে গেল।। নীলা আর ১ সেকেন্ডও ওইখানে দাড়ালো না।। তামিমের রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এসে নিজের রুমে চলে আসলো।।

নীলার এইভাবে দৌড়ে চলে যাওয়াতে তামিম মুচকি হাসলো আর বললো, পাগলি একটা…

আজ শুক্রবার হওয়াতে তামিম একটু তারাতাড়ি গোসল করে একটা পাঞ্জাবী পরে জুমআর নামায আদায় করার জন্য মসজিদে চলে গেল।। নামায শেষে তামিম আবার বাসায় চলে আসলো।। বাসায় এসে দুপুরের খাবার খেয়ে তামিম একটু ঘুমিয়ে পরলো।।

এইভাবেই দিনটা কেটে গেল।। পরেরদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে তামিম তার কলেজে চলে গেল আর নীলা তার স্কুলে।। স্কুলে এসে নীলা মিতুকে খুজতে লাগলো গতরাতের ঘটনাটা বলার জন্য।। কিন্তু সে মিতুকে কোথাও খুজে পেল না।। অনেক খোজার পর অবশেষে মিতুকে পাওয়া গেল স্কুলের পিছনের বটগাছের নিচে।। কিন্তু নীলা মিতুর কাছে গিয়ে যা দেখলো তা দেখে নীলা ওইখানেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো…
.
.
.
.
.
Loading…….

নীলা এমন কি দেখলো কেউ কি বলতে পারবেন.? বলতে পারলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে বলে যাবেন।। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই একটা কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।। আর হে গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক সো গল্পকে গল্প হিসেবে দেখবেন বাস্তবতায় নিবেন না।। গল্প ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন তবুও কেউ খারাপ মন্তব্য করবেন না প্লিজ।। হেপি রিডিং ?

~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here