গল্পঃ কিশোরী_বউ Part_৪

0
2142

গল্পঃ কিশোরী_বউ Part_৪
#Writer_কাব্য_আহম্মেদ

. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .

– বউ হয় ওও আমার। নাক গলানোর তো কথাই তাই না।
বলেই পাঞ্চ করলাম ছেলেটার মুখ বরাবর।
ছেলেটা তিথির হাত ছেড়ে দূরে গিয়ে পড়ল। আরেকটা ছেলে এগিয়ে আসল। সজোরে একটা চড় মারলাম। মনে হয় চোখে অন্ধকার দেখল নিচে পড়ে গেলো। তারপর সবাই দৌড়ে পালাল। বেশ হিরোগিরি দেখিয়ে ফেলেছি। হ্যাংলা পাতলা ছিল ছেলেগুলো। না হয় ওদের ঠেকানো বেশ মুশকিল হয়ে যেতো।
– ছেলেগুলো বেশ কতক্ষণ ধরে ডিস্টার্ব করছিল তোমাকে। কাউকে ডাকতে পারোনি বা আমাকে ফোন করতে পারনি।
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

তিথি কোনো কথা না বলে চলে যেতে লাগল।
– আরে আরে কোথায় যাচ্ছো?
দৌড়ে গিয়ে তিথির পাশে হাঠতে লাগলাম।
– কি সমস্যা তোমার? কথা বলছো না কেনো?
তিথি তবুও কোনো কথা বলছে না ।
– ছেলেগুলো তোমাকে ডিস্টার্ব করছিল কেনো?
– প্রপোজ করেছে আমাকে।
এবার মুখ খুলল তিথি।
– তুমি বলোনি তুমি বিবাহিতা?
– না।
– কেনো?
– আমারতো স্বামী নেই তাহলে আমি বিবাহিতা হবো কি করে?
অন্যদিকে তাকিয়ে হাঠতে লাগল।
– মানে, নেই মানে!
– নেই, মানে নেই।
– তাহলে আমি কে?
– আপনি আমার কেউ না। আপনি একটা বাজে লোক, খারাপ লোক, পচা লোক।
– আরে আরে আমি খারাপ আর পচা যাই হই না কেনো স্বামী তো তোমার।
– চাই না আমার এমন স্বামী। আপনি আমাকে একটু ভালোবাসেন না। শুধু কষ্ট দেন।
কেঁদে দিলো তিথি।
– আমি সত্যি সরি। আমি ভুল করে ফেলেছি ক্ষমা করে দাও আমায়। আর কখনো ভুল হবে না এই কানে ধরলাম।
তিথি কেঁদেই চলছে।
– প্লিজ, তিথি কেদো না। আর কখনো আমি কষ্ট দিবোনা তোমাকে।
– সত্যিতো..
কান্না মুছে বলল তিথি।
– হুম, তিন সত্যি।
জরিয়ে ধরলাম তিথিকে।
– আরে আরে কি করছেন? ছাড়েন। সবাই দেখছে তো। পাবলিক প্লেসে এভাবে কেউ কাউকে জরিয়ে ধরে নাকি?
– তো, আমি আমার বউকে জরিয়ে ধরেছি। এতে কার কি?
– ইশ! বুড়ো বয়সেও দুষ্টুমি গেলো না আপনার।
লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকালো..। গাড়িতে উঠে পড়লাম,
– জানো, কাল রাতে একটুও ঘুম হয়নি আমার।
– কেনো? তিথি বলল।
– কেনো আবার। আমার পিচ্ছি বউকে ছাড়া যে আমার ঘুম আসছিল না। বারবার তোমাকে মনে পড়ছিল।
তিথি মনে মনে ভাবল, আমারওতো আপনার কথা মনে পড়ছিল।
– তোমার আমার কথা মনে পড়েনি? (আমি)
– পড়েছিল তো।
– তাহলে, আসলে না কেনো আমার কাছে?
– আম্মুর ভয়ে, আম্মু বলেছেন, যদি আপনার কাছে যাই তাহলে থাপ্পড় দিবেন।
– ওও। আমার বউটা তাহলে আমাকে মিস করছিল?
– একটুও না। কোনো বাজে লোককে আমি মিস করি না।
মুখ ভেংচালো।
– তাই। বেশ তো..।
তিথির গালে একটা চুমু দিলাম।
– আরে আরে কি করছেন? এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে তো।
– হবে না।
– আপনি জানেন নাকি? এরকম কেউ করে।
– কেউ না করলেও আমি করি।
– ফাজিল…
লজ্জা পেয়ে বলল তিথি। আমার কাধে মাথা রাখল। বাসার কিছু সামনে আসতেই তিথি বলে উঠল,
– ওয়েট, ওয়েট, ওয়েট।
– কি হলো?
– থামুন এখানে।
– কেনো?
– আরে আম্মু দেখলে তো মাইর দিবে। আমি বরং আগেই নেমে পড়ি। আপনি আমাকে এখানে নামিয়ে দিন।
– আমার বউটা বুদ্ধিও আছে দেখি। একদিকে স্বামীর সাথে রোমান্স করবে অন্যদিকে নিজেকে আম্মুর কাছে নিজেকে নিরপরাধ প্রমান করবে।
বাহ বাহ ভালো তো…।
তিথি কিছু না বলে মাথা নিচু করে নেমে পড়ল। আমি গ্লাসে তাকিয়ে দেখলাম তিথি বেশ লজ্জা পেয়েছে। গালদুটো লাল হয়ে গেছে…।
,
বাসায় পৌছে গেলাম। একটুপর তিথিও এসে পড়ল। আম্মুকে দেখলাম সোফায় বসে আছে।
– কিরে তোরা দুজনই দেখি আজ একসাথে?
– একসাথে কই? আমি আগে আগে আসলাম তারপর তিথি।
আমি তিথির দিকে তাকালাম।
– হ্যা, আম্মু। উনি সত্যি বলছেন।
– তাই।
– হুম। ( আমি)
– আমরার তো বিষয়টা খটকা লাগছে।
গালে হাত দিয়ে বলল আম্মু। যাহ বাবা এ কোন ঝামেলায় পড়লাম। আম্মু মনে হয় আচ করতে পেরে গেছে। কি জ্বালারে বাবা? নিজের বউয়ের সাথে থাকতেও দিবে না নাকি?
– আম্মু, বিশ্বাস করো উনি আমার কলেজে যান নি। আর আমাকে ড্রপও করেননি। আমি নিজেই এসেছি…
– আমি কখন বললাম যে, কাব্য তোর কলেজে গিয়েছে?
বেশ কাহিনী খতম। আম্মু এখন পুরোপুরিভাবে বুঝে নিলো যে, আমি তিথিকে সাথে করে নিয়ে এসেছি। এই মেয়েটাও না । মুখে কিছু আঠকায় না।
– আম্মু, বিশ্বাস করো। উনি আমাকে ঐ রাস্তার মোড়ে নামিয়ে দেন নি।
তিথি অসহায় ভঙিতে তাকাল আম্মুর দিকে।
– আমি কি সেটাও বলছি?
মুচকি হেসে বলল আম্মু। তিথি বুঝে নিলো কি বলে ফেলেছে? নিজের পায় নিজে কোড়ল মেরে ফেলেছে।
তিথির এমন ইনোসেন্ট কথায় আমিতো ফিদা। সামনের সোফায় বসে পড়লাম ঠাস করে। একে দিয়ে আর যাই হোক মিথ্যা কথা বলানো যাবে না। এতোটা ইনোসেন্ট বাচ্চা ও।
আম্মু মুচকি মুচকি হাসতে লাগল। আমি লজ্জায় উঠে পড়লাম সেখান থেকে। রুমে চলে আসলাম। ঐ পিচ্ছিটাও না। মুখে কিচ্ছু আঠকায় না ধ্যাত..।তিথি লজ্জায় তার শাশুড়ি আম্মুর দিকে তাকাল না। সোজা উপরে উঠে পড়ল। নিজের রুমে যেতে চাইলে,
– উহু, এদিকে না ওদিকে।
মিসেস সাবিনা নিজেদের রুমটা দেখিয়ে বললেন। তিথি অসহায় ভঙিতে তাকাল উনার দিকে। ফিক করে হেসে দিলেন মিসেস সাবিনা। বেশ! ভালো লাগছে ছেলে মেয়েদের এসব কাহিনী দেখতে।
,
এক সপ্তাহ হয়ে গেলো। তিথি আম্মুর রুমেই থাকে। তবে আম্মুর অগোচরে আমরা স্বামী- স্ত্রী বেশ জমিয়ে রোমান্স করে থাকি।
রাতে আম্মু ঘুমিয়ে পড়লে তিথি আমার কাছে চলে আসে। না, আসলে রুমে গিয়ে চুড়ি করে নিজের বউকে নিজের রুমে নিয়ে আসি। কি করব বলুন? ঘুম আসে না তো পিচ্ছি বউটাকে ছাড়া। বেশ ভালো লাগছিল লুকুচুরি প্রেম প্রেম খেলা।
( সকালে )
তিথি আম্মুকে লুকিয়ে আমার রুমে এলো। তিথি আসতেই আমি তিথি জরিয়ে ধরলাম।
– আহা! ছাড়ুনতো। একটা কথা বলার ছিল।
– বলো।
চুলে মুখ ডুবিয়ে বললাম।
– আপনি আমাকে একটু সময় দিবেন?
– মানে!
– মানে, আজ একটু দেরীতে অফিস যাবেন। আসলে আমার বান্ধুবীরা আপনাকে দেখার আগ্রহ জানিয়েছে। ওদের সাথে আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিতাম।
– এই বুড়ো লোক তোমার বান্ধুবীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে তোমার লজ্জা করবে না?
– মোটেও না।
– ওকে, আই গিভ ইউ টাইম।
– থ্যাঙ্কু উম্মাহ…
তিথি জরিয়ে ধরে আমার গালে চুমু দিয়ে দিলো দৌড়। আমি হেসে দিলাম। পিচ্ছিই রয়ে গেলো আমার বউটা।
তিথিকে নিয়ে কলেজে গেলাম। তিথি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। সবার সাথে হাই, হ্যালো বিনিময় হলো। কফি শপে গিয়ে বসলাম সবাই। পকেটে ফোনটা কেপে উঠল। ফোনে কথা বলতে বলতে আমি পাশে চলে এলাম।
তিথি তার বান্ধবীদের সাথে গল্প করছিল। হঠাৎ রিনা বলে উঠল,
– তোর বরটা কি হ্যান্ডসামরে?
– হ্যা, সত্যিই বলেছিস রে। একটু বয়স হলে কি হবে বডি দেখেছিস। কি হট?
– সালমান খানের মতো। হাসিটাও সেই..। আমার যদি এমন একটা বর থাকতো।
– আমারতো একেই চাই।
এরকম আরোও অনেক কথা। বান্ধবীদের এসব কথাবার্তায় ফুলছিল তিথি। কফির কাপটা গট করে রেখে দিলো। টেবিল থেকে উঠে গট গট করে চলে আসল সেখান থেকে। ওর বান্ধবীরা পিছন থেকে ডাকছিল। কিন্তু, তিথি সেটা কানেই নিলো না।
,
ফোন রেখে পিছু ফিরতেই তিথি এসে আমার হাত ধরল,
– চলুন।
– কোথায়? আমি অবাক হয়ে বললাম।
– আর এক মুহূর্তও থাকব না এখানে।
– মানে, কেনো?
– বলছি না চলুন।
রেগে গেলো তিথি। আমাকে টানতে টানতে গাড়ির কাছে নিয়ে গেলো।
– গাড়ি স্টার্ট করুন। বাড়ি যাবো..
– বাড়ি যাবে মানে? কলেজে যাবে না তুমি। আর আমার অফিসও তো আছে।
– না আমি কলেজে যাবো, না আপনি অফিসে যাবে। নাও লেট’স মুভ।
– মানে, কি হয়েছে তোমার তিথি?
– মাথা গরম করাবেন না বলে দিচ্ছি। গাড়ি স্টার্ট করতে বলেছি স্টার্ট করুন।
আমি আর কোনো কথা না বলে গাড়ি স্টার্ট করলাম। তিথির হাবভাব বুঝা যাচ্ছে না। হঠাৎ কি হলো কিছুই বুঝতেছি না। বাসার সামনে আসতেই। তিথি আমার হাত আমাকে নিয়ে সোজা উপরে উঠল। রুমে নিয়ে গেলো।
– তিথি, কি হয়েছে তোমার বলবে প্লিজ?
– আপনি আর কখনো আমাকে নিয়ে কলেজে যাবেন না। না নিয়ে আসার জন্য যাবে।
রাগে ফুসতে ফুঁসতে বলল তিথি।
– মানে, কেনো?
– মানে, আপনি কলেজ থেকে দূরে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। আমি সেখান থেকেই গাড়িতে উঠবো..
– মানে, কি হয়েছে তোমার? বলবে প্লিজ।
তিথি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলল,
– মেরে ফেলবো শাঁকচুন্নিদের।
– মানে! কাকে? কাদের মেরে ফেলবে তুমি।
– সবাইকে। আমার সব কয়টার শাকচুন্নি বান্ধবীদের।
– কেনো?
– ওরা, কি বলে জানেন? আপনি নাকি হিরোর মতো। আপনার বডি খুব হট। আপনার সাথে ওদের প্রেম করতে ইচ্ছে করে। আপনি হ্যান্ডসাম, হট যাই হোন তাতে ওদের কি? আপনিতো আমার বর। আর প্রেম ওরা করবে কেনো আমি করব আপনার সাথে। আমি আমার বরের সাথে করব।
রাগে ফুসতে ফুঁসতে বলল তিথি। আমি হেসে দিলাম। এজন্য তাহলে রেগে আছেন মাহরাণী। মহারাণীতো বেশ জেলাস হয়েছেন।
– আপনি আর কখনো ওদের সামনে যাবেন না। ওরা আপনার কাছে আসতে চাইলেও আপনি ইগ্নোর করবেন বুঝেছেন?
– হুম।
আমি মাথা নাড়ালাম।
তিথি রাগে গট গট করে হাঠতে লাগল। এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে হাঠতে লাগল। আর প্রতিবার একটা করে আমার গালে চুমু দিতে লাগল। আমি হাসব নাকি কাঁদবো? তিথির অবস্থা দেখে কি করব বুঝতে পারছি না। নিরব বসে আছি। আর তিথি বিড় বিড় করে ওর বান্ধবীর গালি দিচ্ছে। আর কিছুক্ষণ পর পর আমার গালে চুমু একে দিচ্ছে।
– তিথি, তুমি ক্লান্ত হয়ে গেছো। বসো এখানে।
তিথি আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকাল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম,
– আরে বাবা আমি কি করলাম?
– বসবো না।
– আরে তুমিতো ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছো।
– আর তুই কি করেছিস বলছিস? সব দোষ তোর।
আমি অবাক বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখছি তিথিকে। এতোটা রাগ ওর। আর আমাকে তুই করে বলছে। বাব্বা আমার বউতো দেখি সব গুণের অধিকারী। রাগলেতো বেশ লাগে আমার পিচ্ছি বউকে।
তিথি পয়চারী করছেতো করছেই।
– আর তুই এই শার্ট পড়েছিস কেনো? আর কিছু পাসনি।
আমার কাছে এসে আমার কলারে ধরে বলল।
– আরে আমি কি করব? আমি কি জানি নাকি যে এটা খারাপ শার্ট আর তোমার ভালো লাগবে না।
– খারাপ শার্ট মানে। জানিস এই শার্টে তোকে কতো হট লাগে। ওরা কি এমনি এমনি বলেছে নাকি?
আমি ফিদা হয়ে বসে আছি।
তিথি আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো।
– এক্ষুনি শার্টটা খুল। খুল বলছি।
তিথি আমার বুকের উপর উঠে বসল। তারপর কিল ঘুসি মারতে লাগল। টেনেটুনে শার্টটার নাজেহাল অবস্থা। অবশেষে খুলে ফেলতে হলো।
গেঞ্জিটাও ছিড়ে ফেলল টেনে। খালি গায়ে শুতে আছি।
তিথি আমার বুকে মাথা রাখল। কেঁদে দিলো…
– আরে কাঁদছ কেনো?
মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম। তিথি ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদতে লাগল,
– জানেন, আমার খুব ভয় করে।
কাঁদতে কাঁদতে বলল। আমার বুকে আকড়ে ধরল। নখ বসিয়ে দিয়েছে আমি বুঝতে দিলাম না। কোনো শব্দ করলাম না।
– কেনো?
– আপনাকে না হারিয়ে ফেলি।
হাউমাউ করে কেঁদে দিলো।

– আপনাকে না হারিয়ে ফেলি।
হাউমাউ করে কেঁদে দিলো।
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

– আরে পাগলী হারিয়ে ফেলবি মানে?
– মানে, আপনি যদি কখনো অন্যকারো হয়ে যান বা হারিয়ে যান।
– মৃত্যু ছাড়া কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না। আর আমার এতো কিউট পিচ্ছি বউকে ছেড়ে আমি কার কাছে যাবো। হ্যা।
আমি জরিয়ে ধরলাম তিথিকে।
– আচ্ছা, এখন আমি অফিসে যাই?
– না, আপনি কোথাও যাবেন না।
– মানে!
– মানে, আজ আপনি সারাদিন আমার সাথে থাকবেন। আমি কোত্থাও যেতে দিবো না আপনাকে।
– ওকে, ওকে। শুধু কি দিন? রাতে কার সাথে থাকব?
– মানে!
– মানে, তুমিতো বললে সারাদিন তোমার সাথে থাকব। তাহলে রাতে কার সাথে থাকব?
– অবশ্যই আমার সাথে থাকবেন।
– ওও।
তিথি কিছুক্ষণ ভাবল। তারপর চেঁচিয়ে উঠল,
– একমিনিট একমিনিট। আমি ছাড়া আপনার আর কয়টা বউ আছে যে, রাতে অন্যকারো সাথে থাকবেন।
– কয়টা বউ মানে! আমার বউতো একটাই..
– তাহলে, যেহেতু আপনার বউ একটা সেহেতু তার সাথেই থাকবেন। তাহলে আমাকে প্রশ্ন করলেন কেনো যে কার সাথে থাকবেন?
– আরে, তুমিই তো বললে সারাদিন তোমার সাথে থাকব। তাই আমি বললাম রাতে কার সাথে থাকব।
– আচ্ছা, সত্যি করে বলেন তো। আপনার আর বউ টউ নাই তো..
আমি তিথিকে জরিয়ে ধরলাম,
– আমার আরেকটা বউ থাকলে কি তোমাকে একাই এতো ভালোবাসা দিতাম?
– ওও, তাহলে আপনার আর দু-একটা বউ থাকলে আমাকে কম ভালোবাসতেন বুঝি।
মুখ ঘোমড়া করে বলল।
– তোমার মতো পিচ্ছিকে না এমনিতেই ভালোবাসতে ইচ্ছে করে বুঝলে।
– বুঝলাম।
তখনই আম্মু কাব্য, কাব্য ডাকতে ডাকতে রুমে এলো। আমি তাৎক্ষণিক তিথিকে ছেড়ে দিলাম। তিথি ও নিজেকে গুটিয়ে নিলো,
– কিরে তোরা ফিরে এলি যে? ( আম্মু )
– এমনি আম্মু। তিথির ভালো লাগছিল না তাই নিয়ে এলাম।
– বুঝলাম। তাহলে তুই বসে আছিস কেনো? যা অফিসে যা।
আমি বসা থেকে উঠতে গেলে তিথি আঠকালো,
– আম্মু, একদিন অফিসে না গেলেই তো হয়। আমিই উনাকে আঠকিয়েছি। আসলে আমার ভালো লাগছিল না..।
– তোর শরীর খারাপ নাকি?
তিথিকে উদ্দেশ্য করে বললেন আম্মু।
– নাতো, এমনিই।
– ওও, ভালোতো। কাব্য আজ তাহলে বাসায়ই থেকে যা।
আম্মু চলে গেলো। তিথি উঠতে গেলে আমি জরিয়ে ধরলাম। ওর কাধে থুতুনি রাখলাম। হাত পেটে স্লাইড করতে লাগলাম। তিথি বারবার কেপে কেপে উঠছিল।
– কিক কি করছেন?
চোখ বন্ধ অবস্থায় বলল।
– কেনো? আদর করছিল।
– ইশ! ছাড়ুন তো। আমার কাজ আছে।
– উহু, আমি জানি তোমার কোনো কাজ নেই।
– ছাড়ুন না। আমার কাতুকুতু লাগছে। খুব সুড়সুড়ি করছে পেটে।
আমি কোনো কথা বললাম না। তিথির ঘাড়ে মুখ ঘসতে লাগলাম। তিথি ঘন ঘন নিশ্বাস নিতে লাগল। চুল সরিয়ে ঘাড়ে চুমু একে দিলাম। তখনি আম্মু ডাকলো তিথিকে,
– তিথি, তিথি এদিকে আয়তো একটু..।
আমি ছেড়ে দিলাম তিথিকে। তিথিও ছাড় পেয়ে দিলো দৌড়।
( বিকেলে )
সারাদিনে একবারও তিথি আমার কাছে আসলো না। আমাকে অফিস যেতে দিলো না। বলল আজ সারাদিন আমার সাথে থাকবে। আর এখন কি না ওর দেখাই মিলছে না।
যাক বেশ ভালো হয়েছে। পাশে থাকলে তো শুধু আদর করতে ইচ্ছে করে পরী বউটাকে। কখন যে কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি কে জানে?
,
তিথি মিসেস সাবিনার পাশে বসে গল্প করছে। বারবার সকালের কথা মনে পড়ছে তিথির। ইশ! উনি কি বেশরম? আমার পেটে হাত দিয়েছেন। খুব সুড়সুড়ি করছিল তখন। বেশ ভালোও লাগছিল। তিথি একটু লজ্জা পেলো। গালদুটো গোলাপি হতে গেলো। রহিমা খালা (কাজের লোক) ডেকে গেলেন তিথিকে,
– তিথিমনি, ছোট সাহেব তোমাকে ডাকছেন।
তিথি যাবে কি না ভাবছে? গেলেইতো আবার জরিয়ে ধরবেন। আগেরবার ছাড় পেলেও এখন তো ছাড় দিবে না বুড়োটা। বুড়ো বয়সেও এতো রোমান্টিকতে কই থেকে যে আসে।
– কিরে তিথি কি ভাবছিস? যা কাব্য তোকে ডাকছে।
– হ্যা, হুম যাচ্ছি।
তিথি আস্তে আস্তে হেটে রুমের দিকে গেলো। দরজা ফাক দিয়ে থাকিয়ে দেখল কোথায় আছেন উনি? উঁকিঝুঁকি মেরে দেখল,
– নাহ, মনে হয় ওয়াসরুমে আছেন উনি ।
দরজা ঠেলে রুমে ডুকতেই ধাক্কা খেলো তিথি। পড়েই যেতেই আমি ধরে ফেললাম।
তিথি চোখ বন্ধ করে আছে। আমি তাকিয়ে আছি তিথির মুখের দিকে। কি বাচ্চা বাচ্চা আভাস মুখে? এতো কিউট। তিথি একটু একটু করে তাকাল,
– উফ! আপনি?
– হ্যা, আমিইতো। আর কেউ থাকবে নাকি?
তিথিকে সোজা করে দাড় করিয়ে বললাম।
– হ্যা, আমিতো ভেবেছিলাম অন্যকেউ।
– মানে!
তিথির দিকে এগিয়ে গেলাম রাগী লুক নিয়ে।
– আরে এভাবে তাকাচ্ছেন কেনো? আমিতো ভেবেছিলাম দেয়াল। আমি ভাবলাম এই বুঝি আমার কপালে ফেটে গেলো।
– আমাকে তোমার দেয়াল মনে হয়।
– হ্যা।
বলেই জিভ কাটল তিথি। আমি এগিয়ে গেলার তিথির দিকে।
– না, মানে। একটা কথা বলার ছিল।
– বলো।
– এভাবে, এগিয়ে আসবেন না প্লিজ। আমার ভয় করে।
বাচ্চাদের মতো কাচুমাচু হয়ে বলল।
– ওকে, এগুবো না। বলো..
হাসি দিয়ে বললাম।
– আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবেন?
– আচ্ছা। চলো তাহলে রেডি হয়ে যাও।
– সত্যি, থ্যাঙ্কু। উম্মাহ।
বলে আমার গলা জরিয়ে ধরে চুমু খেলো। আমি তিথির দিকে তাকিয়ে রইলাম। তিথি আমতাআমতা করে বলল,
– আসলে বেশ কয়দিন পর ঘুরতে যাচ্ছিতো তাই খুশি হয়ে ওটা করে ফেললাম। আপনি আগেতো ঘুরতে নিয়ে যেতেন। এখনতো বিজি থাকেন আপনি।
– ওকে, যাও রেডি হয়ে নাও। আর শুনো একটা শাড়ি পড়ে নাও।
তিথির মুখ মলিন হয়ে গেলো। মাথা নিচু করে বলল,
– আমি শাড়ি পড়তে পারি না।
– সমস্যা নেই। আমি পড়িয়ে দিবো।
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

তিথি অবাক হয়ে তাকাল আমার দিকে।
– মানে! না, না আমি আম্মুর কাছে গিয়ে পড়ে নিবো।
আলমারি থেকে একটা মেরুন কালারের শাড়ি নিয়ে তাড়াতাড়ি বের হতে গেলে। আমি সামনে গিয়ে দাঁড়াল,
– বউদেএ স্বামী কথা শুনতে হয়। তুমি জানো না?
– না, আসলে
– কোনো আসলে টাসলে নাই। আমি পড়িয়ে দেবো ব্যাছ।
তিথিকে ঠান মেরে বুকে নিয়ে এলাম। দরজা লাগিয়ে নিলাম। তিথি মাথা নিচু করে রইল লজ্জায়।
,
শাড়ি পড়িয়ে দিতে লাগলাম তিথিকে। তিথি চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল।
আমি পেটের কাছে বসে কুচি ঠিক করতে লাগলাম। আমার নিঃশ্বাস তিথির পেটে পড়ছিল। তিথি কেপে কেপে উঠছিল। চোখের সামনে তিথির নাভি দেখে ঠিক থাকতে পারলাম না। চুমু খেয়ে নিলাম পাশে। তিথি আমার মাথা চেপে ধরল।
আমি উঠে পড়লাম। কুচি ডুকিয়ে দিলাম। হাত লাগল পেটে। তিথি হাত আকড়ে ধরল। নখ বসিয়ে দিলো।
আমি আচলটা তিথির কাধের উপর রাখলাম। তিথির থুতুনি উপরে তুলে তিথির দিকে তাকালাম। তিথি চোখ খুলল। আমাকে জরিয়ে ধরল লজ্জায়। বেশ কিছুক্ষণ পর,
– আচ্ছা, আপনি শাড়ি পড়ানো শিখলেন কোথা থেকে?
অবাক হয়ে প্রশ্ন করল আমাকে।
– ইউটিউবে দেখে।
– তাই।
তারপর কিছুক্ষণ কি যেন ভাবল তিথি?
– তার মানে, তুমি নিশ্চয়ই ঐ মেয়েটার পেট দেখেছিলে তাই না।
– হুম।
মুচকি হেসে বললাম।
– ইউ চিটার। তুমি খুব খারাপ, বদ লোক একটা ।
আমাকে মারতে লাগল। কয়েকটা কিল ঘুসি বসিয়ে দিলো বুকে। তিথি কাঁদোকাঁদো হয়ে গেলো। চলে যেতে চাইলে আমি ঠান মেরে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম,
– আমার বউ কি জেলাস?
তিথি কান্না করতে লাগল। আমি তিথির চোখ মুছে দিলাম,
– আরে পাগলি। ওটাতো পুতুল ছিলো।
– সত্যি।
– হুম।
তিথি জরিয়ে ধরল আমাকে।
– আপনি শুধু আমার। আমার সব দেখবেন। আর কারো কিচ্ছু দেখবেন না।
– তাই।
– হুম।
– তাহলে দেখাও।
– কি?
– এই না বললে আমি শুধু তোমার সব দেখব আর কারো কিচ্ছু দেখবেন না।
তিথি বুঝতে পারল আমি কি বলছি? লজ্জা পেলো একটু,
– যাহ, খবিশ..
– এখন আমি খবিশ হয়ে গেলাম।
– আরে বুঝেন না কেনো আমার লজ্জা করেতো।
– আচ্ছা, এখন চলো যাওয়া যাক।
– হুম।
,
আম্মুর পার্মিশান নিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। তিথি পাশেই বসে ছিল। আমি বারবার তিথির দিকে তাকাচ্ছিল,
– আচ্ছা, আপনি এই শার্ট পড়েছেন কেনো?
– মানে, কেনো? ভালো লাগছে না।
– উফ! আপনাকে না বললাম এসব হট হট শার্ট না পড়তে।
মুখ-কপাল কুঁচকে বলল।
– শার্ট আবার হট হয় কি করে?
হাসি আঠকিয়ে বললাম।
– আপনি জানেন। আপনাকে কি হ্যান্ডসাম লাগছে এই শার্টে?
– ওহ, ধন্যবাদ।
– ধন্যবাদ বললে হবে না। আপনাকে না বলেছি এরকম শার্ট না পড়তে। সব মেয়েতো তাকিয়ে থাকবে আপনার দিকে।
– তো।
– তো মানে।
তিথি চেঁচিয়ে উঠল।
– আরে চেঁচাচ্ছ কেনো?
– স্বামী আমার তাকাবে কেনো ওরা? মেরে ফেলবো শাঁকচুন্নিদের।
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলল।
– তিথিমনি, কি বলেছিলাম মনে নেই? আমি শুধু তোমারই থাকবো। কারো হবো না।
– সত্যিতো..
– হুম, সত্যি।
– তাহলে, নাক ধরে প্রমিস করুন।
আমি ফিক করে হেসে দিলাম।
– নাক ধরে কেউ প্রমিস করে নাকি?
– কেউ করে না তাই আপনাকে দিয়ে করাচ্ছি।
অতঃপর নাক ধরে প্রমিস করতে হলো । গাড়ি নিয়ে থামালাম একটা পার্কে গিয়ে। পার্কটার পরিবেশ খুব সুন্দর। নেই কোনো কোলাহল। চারপাশের পরিবেশ মনকে মুগ্ধ করে দেয়।
পার্কে ডুকে তিথি চারপাশ দেখতে লাগল। আর প্রশংসা করতে লাগল। সাথে ফ্রিতে একটা পাপ্পি দিলো।
পার্ক থেকে বের হয়ে ব্রিজে নিয়ে গেলাম তিথিকে। পাশের রেলিংয়ের কাছে উঁচু স্থানে দুজন হাঠছিলাম। তিথি আমার ধাক্কা মেরে নিচে নামাল। তারপর হাইট মাপল,
– এখন ঠিক আছে। সমান সমান। একেবারে পার্ফেক্ট।
আমি হেসে দিলাম। হাওয়াই মিঠাই দেখে তিথির সেকি খুশি। তাকে কিনে দিতেই হবে। ঝাল দিয়ে ফুসকাও খেলো। চুখ দিয়ে পানি পড়ছে তবুও খাচ্ছে। বুঝিনা এতো ঝাল দিয়ে খাওয়ার দরকার কি? তাহলে।
আইসক্রিম ওয়ালাকে দেখে দাঁড়িয়ে রইল। তাকিয়ে রইল আইসক্রিমের গাড়িটার দিকে।
– কি হলো তিথি?
– নাহ, কিছু না।
মন খারাপ করে রইল তিথি। আমি বুঝে নিলাম তিথি কি চাইছে?
– আইসক্রিম খাবে?
খুশিতে তিথির চোখ জ্বলমল করে উঠল। আবার মুখ ঘোমড়া করে নিলো,
– আপনি বকবেন।
– আমি কখনো বকি তোমাকে?
– একটু আগেওতো বকলেন। ফুসকা খাওয়ার সময়।
– তখন বকেছি। বেশ করেছি। এতো ঝাল দিয়ে কেউ ফুসকা খায়।
– আচ্ছা, এখন তাড়াতাড়ি যান না। আইসক্রিম নিয়ে আসুন।
– আরে যাচ্ছিরে বাবা।
তিথিকে আইসক্রিম এনে দিতেই খপ করে নিয়ে নিলো। বাচ্চাদের মতো খেতে লাগল। বেশ কিছুক্ষণ পর আমার মুখের সামনে ধরল আমি একটা কামড় দিলাম। তিথি হেসে উঠল,
– এতো বড়ো কামড় দিয়ে কেউ আইসক্রিম খায়।
আমিও হেসে দিলাম।
( পরদিন)
তিথিকে দিয়ে আমি অফিসে এলাম। ফাইলগুলো দেখতে দেখতে লাঞ্চের সময় হয়ে গেলো। তখনি উপস্থিত নীরার। নীরা আমার কলেজ ফ্রেন্ড। আমাকে পেয়েই জরিয়ে ধরল। তারপর অনেক কথা।
দরজায় তাকাতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। এ যে তিথি দাঁড়িয়ে। হাত এটা কি? টিফিন বক্স।
,
(তিথি)
লাঞ্চে উনার জন্য খাবার নিয়ে গেছিলাম উনার অফিসে। গিয়ে যা দেখলাম। আমার খুব কান্না পাচ্ছে। একটা মেয়ে উনার গলা জরিয়ে ধরে আছে পিছন থেকে। আর উনি হেসে হেসে লেপটপে কি যেন দেখাচ্ছেন?
.
#_____________চলবে________________
.

#কোনো গল্পের পর্ব খুজে না পেলে সর্বশেষ পোস্ট কমেন্ট করে জানাবেন।



#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here