গল্পঃ কিশোরী_বউ Part_৫
#Writer_কাব্য_আহম্মেদ
. . . . . . .
তিথির এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো মেয়েটার গলা টিপে ধরবে গিয়ে। নাহ, এটা করা যাবে না। এমনিতেই এটা অফিস। এখন যদি কিছু করি তাহলে উনার আসম্মান হবে।
– আরে, তিথি তুমি? ভিতরে আসো।
আমি তিথিকে উদ্দেশ্য করে বললাম। তিথি গুটিগুটি পায়ে রুমে ডুকল। আমি এগিয়ে গেলাম।
– তুমি এই সময় এখানে?
অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম।
– আপনার জন্য খাবার নিয়ে এসেছিলাম লাঞ্চের জন্য।
একটু কষ্ট করে বলল তিথি।
– ওও, তোমাকে না কলেজে দিয়ে এলাম। তাহলে…
– কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে নিয়েছি।
– ওও।
পাশ থেকে নীরা বলে উঠল,
– মেয়েটা কে রে কাব্য?
– ওহ সরি, তোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে মনেই নেই। এদিকে আসো তিথি।
তিথির হাত ধরে নীরার কাছে নিয়ে গেলাম,
– এই হলো তিথি। মাই ওয়াইফ। আর তিথি এই হলো নীরা। আমার কলেজ ফ্রেন্ড।
– আসসালামু আলাইকুম, আপু। ( তিথি )
– ওয়ালাইকুম আসসালাম। কাব্য তুই বিয়ে করেছিস জানতাম না তো?
– সরিরে, তোর সাথেতো সম্পর্কটাই বিচ্ছিন্ন ছিলো। আই মিন বেশ দিন হলো যোগাযোগ নেই। ফোন নাম্বারও নেই…
– ওও, মেয়েটাকেতো পিচ্ছি মনে হচ্ছে। তোর সাথে তো মিলছেই না।
মুখ ভেঙচিয়ে বলল।
আমি হাসলাম। কিছু বললাম না।
– এরকম পিচ্ছি আন্ডার এইট্টিন মেয়েকে বিয়ে করেছিস। তোর রুচি দেখে তো অবাক হচ্ছি। এর সাথে তোর যায়…। তিথিকেতো তোর মেয়ে মনে হচ্ছে…।
ঠাট্রার স্বরে বলল নীরা।
আমি বুঝলাম নীরা তিথিকে ক্ষেপানোর চেষ্টা করছে। এ মেয়েটার লক্ষণ ভালো না। কি প্যাচ লাগানোর ধান্ধা করছে কে জানে?
– নীরা, তুই একটু যা। আমি পরে কথা বলছি তোর সাথে।
– বউ আসতেই বিদায় করে দিচ্ছিস। বাহ, ভালো তো।
– নীরা, ক্যান্টিনে গিয়ে বস না একটু। বুঝিস না স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার তো..।
নীরা গট গট করে চলে গেলো। আমি তিথির দিকে তাকিয়ে দেখলাম লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। আমি এগিয়ে গেলাম তিথির থুতুনি ধরে মুখ উঁচু করলাম। বাহ, বেশ লাগছে।
– সূর্য আজ কোনদিকে উঠল?
– মানে!
– মানে, তুমি আজ আমার অফিসে। এই প্রথম আমার অফিসে আসলে তোমাকে কি দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই বলো তো।
মুচকি হাসি দিয়ে বললাম।
– হুহ, আপনার শুভেচ্ছা দেয়া লাগবে না। এসে যা দেখলাম সেটাতেই বুঝে নিয়েছি কতোটা ভালোবাসেন আপনি আমায় । এমন সময় এভাবে আসাটা বোধ হয় ঠিক হয়নি।
মুখ ঘোমরা করে বলল তিথি। আমি তিথির দুই কাধে দুই হাত রাখলাম।
– বুঝেছি আমার বউটা আমাকে ভুল বুঝছে। আই লাইক ইট। বাট মাই ডিয়ার ওয়াইফ, তোমার ধরনাটা একটুও ঠিক নেই।
– হুহ।
– আরে বুঝনা কেনো? এই মেয়েটা না একটু গায়ে পড়া স্বভাবের।
– তো, ওও আপনার অফিসে এসেছে কেনো?
– অনেকদিন হলো দেখা নেই। তাই বোধ হয় সোজা অফিসে চলে এসেছে।
তিথি কোনো কথা বলছে না।
– ওকে, বুঝেছি আমার বউটা রাগ করেছে। তাহলে আগে আমার বউটার রাগ ভাঙাই।
তিথির কোমড় শক্ত করে ধরলাম। মুখ এগিয়ে নিলাম তিথির দিকে। তিথির ঠোঁট কাপছে। আমি আমার ঠোঁট তিথির ঠোঁটের দিকে এগিয়ে নিচ্ছি। তখনি দরজায় নক পড়ল,
– স্যার, এই ফাইলটা…
কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলেন ম্যানেজার। চোখ দুটো বড়ো বড়ো মারবেলের ন্যায় করে তাকিয়ে রইলেন।
– ওয়াট দ্যা! কি ব্যাপার ম্যানেজার সাহেব?ম্যানার্সটাও ভুলে গেছেন নাকি আপনি?
রেগে গিয়ে বললাম। ততক্ষণে আমি আর তিথি স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে এলাম। তিথি লজ্জায় মাথা নিচু করে এক কোণায় দাঁড়িয়ে রইল।
– সরি, সরি স্যার।
– এতোটা রেসপেক্টলেস, আর কেয়ারলেস কি করে হতে পারেন আপনি? আপনার কাছ থেকেই তো অন্যরা শিখবে। আর আপনি…
– স্যার, আসলে আমি…
– স্টপ, মিঃ ফারিয়াদ। পারমিশন নিয়ে রুমে ডুকতে হয় সেটাও ভুল গেছো তুমি।
– স্যার, একটা জরুরি কাজ ছিল। তাই তাড়াহুড়ো করে ভুল করে ফেলেছি। সরি…
– ওকে, দেখি কি জন্য এসেছেন?
ফাইলটা দেখে সব ঠিকঠাক করে উনার হাত দিলাম,
– নেক্সট টাইম যেন এরকম না হয়।
– হবে না স্যার।
ম্যানেজার সাহেব মাথা নিচু করে চলে গেলেন। আসলে এরকম আচরন কখনো করিনি আমি কারো সাথে। আসলে মাথাটা একটু খারাপ হয়ে গেছিল তাই…
– উনার, সাথে আপনার এমন আচরন করা ঠিক হয়নি।
– মানে!
– ভুলতো করে ফেলতেই পারেন। তার জন্য এরকম আচরণ করবেন আপনি? এটা কিন্তু ঠিক না।
– ওহ।
– ওহ, বললে হবে না উনাকে সরি বলে আসেন।
– যথা আজ্ঞা মহারাণী।
বেল টিপলাম,
– ম্যানেজার সাহেবকে একটু আমার রুমে আসতে বলুন।
– জি, স্যার।
ম্যানেজার সাহেব রুমের সামনে এস,
– মে আই কামিং সার?
– আসুন ম্যানেজার সাহেব। আই এম রিয়েলি সরি একটু আগের ঘটনার জন্য। আসলে একটু মাথা খারাপ হয়ে গেছিল। তাই আপনাকে বকে ফেলেছি। ক্ষমা করবেন…
– কি বলছেন স্যার? এটা আপনি করতেই পারেন। আসলে ভুলটাতো আমিই করেছি।
– প্লিজ, লজ্জা দিবেন না মিঃ ফারিয়াদ।
– আসলে, আমিও একটু অবাক হয়েছিলাম স্যার যখন আপনি আমাকে বকছিলেন। আসলে আগে কখনো এরকম করেন নি তো তাই। অনেক বড় ভুল করে ফেললেও আপনি কিছু বলতেন না নিজে শুধরে নিতেন। আর সেই আপনিই কিনা? আমি বুঝতে পারছি।
– ওকে, এখন আপনি যেতে পারেন।
– ওকে, স্যার।
ম্যানেজারকে বিদায় করে তিথির দিকে তাকালাম,
– কি ম্যাডাম খুশি তো?
– হ্যা।
– আচ্ছা, তোমার হাত এটা কি? টিফিন। লাঞ্চের জন্য খাবার?
– হুম।
– লাঞ্চের সময় তো হয়ে গেছে। চলো লাঞ্চ করে নিই।
,
তিথি একটু মন খারাপ করে রইল। উনি একবারওতো জিজ্ঞেস করলেন না কে রেঁধেছে ? কতো কষ্ট করে উনার জন্য রাঁধলাম। আর উনি কিনা।
খাবার প্লেটে বেড়ে তিথির সামনে রাখলাম,
– শুরু করো।
– হুম।
কোনরকমে বলল তিথি। আমি খেতে শুরু করলাম। তিথি নিজে খাচ্ছে না। আমার খাওয়া দেখছে।
তিথি ভাবছে, উনি একবারও কি জিজ্ঞেস করবেন না? আর খাবারটা কি ভালো হয়নি। উনারতো কোনো রিয়েক্সশন দেখছি না। মনে হয় ভালো লাগেনি উনার।
– আচ্ছা, এটা কি রেষ্টুরেন্ট থেকে এনেছো?
– না, আমি রেঁধেছি।
মন খারাপ করে বলল তিথি। আমি হা করে রইলাম তিথির দিকে,
– তুমি?
– হ্যা, কেনো? ভালো হয়নি?
– তিথি, তুমি রেঁধেছ এটা। তাও আমার জন্য। আর আমার ফেভারিট বিরিয়ানি। রিয়েলি?
– হ্যা।
– তিথি বুঝতে পারছি না আমি কি বলব?
– বুঝেছি। বিরিয়ানিটা বোধ হয় আপনার ভালো লাগেনি। আসলে আমি আগে কখনো রান্না করিনি। আম্মু, আর রহিমার খালার সাহায্যে রেঁধেছি।
মন খারাপ করে বলল তিথি। আমি চেয়ার টেনে তিথির চেয়ারের পাশে নিলাম। তিথির মুখ উপরে তুললাম,
– তিথি, আমি খুব খুশি যে তুমি আমার জন্য আমার ফেভারিট বিরিয়ানি রান্না করেছো। বুঝতে পারছি না কেমন রিয়েক্ট করব।তবে তুমি কি জানো? এটা আমার খাওয়া সবচেয়ে সেরা বিরিয়ানি।
তিথি ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে,
– সত্যি, এতোটা ভালো হয়েছে?
– দেখো আমি নাক ধরে বলছি, যা বলছি সব সত্যি।
তিথি কান্নার মাঝেও হেসে দিলাম। ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার উপর। জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগল।
– আগে পাগলি কাঁদছিস কেনো?
তিথি কাঁদতেই লাগল।
– তিথিমনি, কাদাঁর কি হলো?
– আসলে, আমি মনে করেছিলাম বোধ হয় ভালো হয়নি। কিন্তু, আপনি এতোটা ভালো বলছেন। সত্যি আমার খুব খুশি লাগছে।
– তো, কাঁদতে হবে নাকি?
– জানিনা, আমার কেনো জানি কান্না পাচ্ছে?
– পাগলী।
অতঃপর তিথিকে খাইয়ে আমিও খেলাম।
,
এভাবেই আমার পিচ্ছি বউটাকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলাম। তিথি এসে বলল কিছুদিন পরেই ওর পরীক্ষা খুব টেনশান হচ্ছে। আমি পাগলীটার কপালে চুমু দিয়ে বললাম,
– টেনশন করার কি আছে? আছিতো আমি।
– আপনি আমার পাশে থাকলেই হবে।
আমাকে জরিয়ে ধরে বলল।
আস্তে আস্তে তিথির পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে এলো। তিথি সব কিছু ছেড়ে পড়াশোনায় মন দিলো। যাকে বলে ফাটিয়ে পড়া।
আগামীকাল তিথির পরীক্ষার শুরু। বেশ করে পড়ছিল। এভাবে দিচ্ছিল পরীক্ষা গুলো। পড়ার সময় রাতে ওর পাশের চেয়ারে আমাকে বসে থাকতে হয়। যখন ওর ঘুম আসে আমার কাধে মাথা রেখে পড়ে। মাঝে মাঝে ঘুমিয়েও পড়ে। মাথায় বিলি কেটে দিতে হবে আর ওও পড়বে। এরকমটাই হচ্ছিল। ভোরে উঠে নামাজ আদায় করে পড়ায় বসবে। তারপর সময় হলে পরীক্ষায় যাবে। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
এই মুহূর্তে আমি তিথির পাশে বসে আছি। আর তিথি পড়ছে। তিথির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার ঘোর লেগে গেছে। হঠাৎ কি হলো? তিথিকে টান মেরে আমার চেয়ারে এনে আমার কোলে বসিয়ে দিলাম। চুলগুলো সরিয়ে ঘাড়ে কিস করলাম। তিথিকে ঘুরিয়ে আমার মুখামুখি করলাম। ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে নিলাম। বেশকিছুক্ষণ পর ছাড়লাম। তিথি হাপাচ্ছে। আমি তিথিকে ছেড়ে দিলাম। ওর চেয়ারে বসিয়ে দিলাম। ইশ।কি যে হয় মাঝে মাঝে? কি করছিলাম এটা? কাল না তিথির এক্সাম। ধ্যাত্তেরী।
– সবসময় এগুলো ভালো লাগে না আপনার। দেখছেন ও আমি পড়ছি আর আপনি ডিস্টার্ব করছেন। উফ! আপনাকে পাশে বসানো একদম ঠিক হয়নি।
বিরক্তি নিয়ে বলল তিথি। আবার পড়ায় মন দিলো। আমার খুব আঘাত লাগল তিথির কথায়। জানি ভুল করেছি। কিন্তু, তিথি এরকম করে বলতে পারল। আমি চেয়ার থেকে উঠে পড়লাম। বেলকনিতে গিয়ে কিছুক্ষণ নিশ্চুপ বসে রইলাম অনেক্ষণ। এসে দেখলাম অনেক রাত হয়ে গেছে। তিথি টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। তিথিকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম। মাঝে একটা কোলবালিশ দিয়ে পাশে শুয়ে রইলাম। না জানি কখন নিজের উপর কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি।
( সকালে )
সকালে উঠে দেখলাম তিথি পড়ছে। কলেযে টাইম হয়ে গেলে ওকে কলেজে ড্রপ করে অফিসে চলে গেলাম। দুদিন ধরে মন খারাপ। এই দুদিন তিথির পাশে বসিনি রাতে। বারান্ধায় কাটিয়ে দিতাম। তিথিও কিছু বলতো না।
( তিথি)
দুদিন ধরে দেখছি উনি আগের মতো আমার পাশে বসেন না। আমি অপেক্ষায় থাকি কখন আমার পাশে বসবেন। আমাকে জ্বালাবেন। আর উনি কিনা লেপটপে কাজ করছেন। কি হয়েছে উনার? সেদিনের কথায় কষ্ট পেয়েছেন নাকি? সেদিন তো আমি না বুঝেই কথাটা বলে ফেলেছি। উনি কি রাগ করেছেন? খুব পড়া ছিল সেদিন। মাথা ঠিক ছিল না কি না কি বলে ফেলেছি নিজেও জানি না।
আমি উপুড় হয়ে বিছানায় শুয়ে কাজ করছিলাম। তিথি এসে আমার পিটে বসে পড়ল,
– কি হলো তিথি?
– আমি জানি আপনি আমার উপর রেগে আছেন।
– রেগে থাকব কেনো? তুমি ভুল ভাবছো তিথি।
একটা হাসি দিয়ে বললাম।
– মিথ্যা কথা বলছেন। এই দুদিন ধরে আপনি আমার ঠিক মতো কথা বলছেন না। আমার পাশে বসছেন না। কেনো বলুনতো?
– আরে তোমার পাশে বসলে তো তোমার পড়ার ডিস্টার্ব হবে। তাই বসিনা।
– আপনি জানেন আপনি আমার পাশে না বসায় আমার পড়ায় কতোটা ডিস্টার্ব হচ্ছে।
তিথি আমার সামনে এসে বসল।
-মানে!( আমি)
– এই দুদিন আমি ঠিক মতো একটুও পড়তে পারিনি। এই দুদিন খুব খারাপ হয়েছে আমার পরীক্ষা। বারবার আপনার জ্বালাতনগুলো মনে পড়ছিল। আর সেদিন ঠোঁটা ঐটা দেয়ার পর থেকে বারবার ঐটার কথা মনে পড়ছে। আমি একটুও পড়তে পারছি না। বারবার মনে হচ্ছে, আপনি আবার ঐটা দিবেন। ঐটা না দিলে আমি একটুও পড়তে পারবো না।
কাঁদতে কাঁদতে বলল তিথি।
– আরে তুমি কি…
বলার আগে তিথি আমার দুগালে ধরে নিজের ঠোঁট আমার ঠোঁটে ডুকিয়ে দিলো।
আরে তুমি কি…
বলার আগে তিথি আমার দুগালে ধরে নিজের ঠোঁট আমার ঠোঁটে ডুকিয়ে দিলো। চোখ বন্ধ করে নিলাম। অনেক্ষণ হয়ে গেলো তিথি ছাড়ছেই না। একটা অজানা আবেশে যেন নিঃশ্বাস নেওয়ার কোনো প্রয়োজনই পড়ছে না। দীর্ঘ সময় পর ছাড়ল। তিথি ঠোঁট মুছলো,
– এখন ঠিক আছে।
– মানে!
হাপাতে হাপাতে বললাম।
– মানে, এখন পড়ায় মন বসবে। কি যে ভালো লাগছে?
আবার লজ্জায় নুয়ে পড়ল তিথি। আমি হেসে দিলাম।
– তাই, তাহলে তো আরেকটা দিতে হয়।
– এই না, না। এখন আমি পড়ব। ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।
– তাই, তাহলে একটু আগে যে আমার কাজে ডিস্টার্ব করলে। তখন..
– কেনো আপনার ভালো লাগেনি?
– লেগেছে।
– তাহলে, ডিস্টার্ব বলছেন কেনো?
– তোমারও ভালো লেগেছে। তাহলে এটাকে ডিস্টার্ব করা বলছো কেনো?
তিথিকে টান মেরে বুকে টেনে নিলাম।
– হুম, হুম বলো।
তিথি বুকে মুখ লুকালো,
– প্লিজ, আর না পড়ব তো।
– আমি যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না। একটু আগে যা করলে না…
– আচ্ছা, তাহলে আর মাত্র একটা ওকে।
– ওকে।
– নিন।
তিথি চোখ বন্ধ করে ঠোঁট এগিয়ে দিলো। আমি অপলক চোখে তাকিয়ে রইলাম। কি গোলাপি ঠোঁট! নেশা ধরিয়ে দেওয়ার মতো। তিথির ঠোঁট কাঁপছে। আমি তাকিয়েই আছে অনেক্ষণ ধরে। তিথি পিট পিট করে তাকাল। দেখল আমি তাকিয়ে আছে ওর দিকে,
– কি হলো?
– কিছু না।
– আরে তাড়াতাড়ি করেন না পড়ব তো।
– ওকে, চোখ বন্ধ করো।
তিথি চোখ বন্ধ করে ঠোঁট এগিয়ে দিলো আবার। আমি আবারও অজানা আবেশে তাকিয়ে রইলাম। আবার তিথি চোখ খুলে রাগী লুক নিয়ে তাকাল। তারপর আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল,
– কুত্তা, খবিশ, খারাপ লোক, বদ লোক। আপনি আমাকে নিয়ে খেলছেন।
আমার বুকে কিল ঘুসি মারতে লাগল।
আমি তিথিকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম।
তারপর ঠোঁটে আলতো করে একটা চুমু দিলাম।
– যাও, এখন পড়তে বসো।
– উঁহু।
– কি?
– আমি আপনার পিটে বসে পড়ব।
– কেনো?
– জানি না।
অন্যদিকে মুখ করে বলল।
– ওকে।
আমি উপুড় হয়ে শুলাম। লেপটপে কাজ করতে লাগলাম। তিথি আমার পিটে শুয়ে পড়লাম পড়তে লাগল।
– কি হলো পড়ছো না কেনো?
– পড়ছিতো।
– কই পড়ছো। আওয়াজই তো পাচ্ছি না।
– আরে বুদ্ধু, মনে মনে পড়ছি তো।
– ওও, আচ্ছা। ভালো….।
পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়ল তিথি। ডাক দিলাম দু-একবার শুনল না। মেয়েটাতো না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। এখন কি করি?
– তিথি, এই তিথি।
– হু।
– হু কি? হ্যা। উঠো খাবে।
– কি?
– কি আবার? রাতের খাবার খাবে না?
– না, খাবো না।
– কেনো?
– পেট ভরে গেছে।
– কি এমন খেলে যে পেট ভরে গেছে?
– ঐ যে, ঐটা খেলাম না। চুমু।
ঘুম ঘুম চোখে বলল। আমি হেসে দিলাম তিথিকে পিট থেকে নামালাম।
আবার আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।
– তিথি, তিথি।
– কি?
– উঠো না। খাবে তো। আমিওতো খাইনি।
– তাহলে কোলে তুলুন।
তিথিকে কোলে করে টেবিলে নিয়ে গেলাম। মনেই নেই যে, নিচে আম্মু-আব্বু আছেন। ওহ, সরি বলাই হয়নি। আব্বু কাজ শেষ দেশে ফিরেছেন গত কালই।
নিচে নেমে যেতেই মাথায় বাজ পড়ল। হায় হায়! আম্মু-আব্বু টেবিলে বসে আছেন।
– ওওহ, ভালো হলো তোকে ডাকার আগেই এসে পড়েছিস।
বলে আব্বু মুখ ঘুরাতেই। হা হয়ে তাকিয়ে রইল। আম্মু মুচকি মুচকি হাসছেন। তিথি আমার গলা জরিয়ে আছে।
– এই আমাকে সন্ধ্যার মতো একটা চুমু খান না।
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলাম তিথির।
– তিথি, চুপ। কি বলছো এসব?
– উউউ উউ।
তিথি উউ উউ করতে লাগল।
– আরে কি করছিস পড়ে যাবে তো?
আম্মু বলে উঠল।
– আরে তোকে এই বডি বিল্ডার হিসেবে তৈরি করলাম আমি। বউকে কোলেই নিতে পারিস না।
(আব্বু)
– আম্মু, আসলে ওও ঘুমিয়ে ছিল
– তো। (আম্মু)
– ডাকতে ডাকতে উঠছিল না।
– তো। (আব্বু)
– রাতের খাবারও খায়নি। ( আম্মু)
– আরে কি তো তো করছো? ঘুম থেকে উঠছে না। রাতের খাবার ও খায়নি। তাই কোলে করে নিয়ে এসেছি।
রেগে গিয়ে বললাম।
– তো। ( আম্মু)
– আবার তো।
বিরক্তি নিয়ে বললাম।
– তোর বউকে তুই কোলে নিবি। এতে আমাদের কি? ( আব্বু)
– হ্যা, তাইতো। (আম্মু)
– তবুও,
– ইয়ং ম্যান। বি ইজি। বাই দ্যা ওয়ে, তিথি কি যেন বলছিল, সন্ধ্যায় তুই কি খাইয়েছিলি তিথিকে?
– আরে আব্বু কই কি?
সাথে সাথে তিথি বলে উঠল,
– চুমু,চুমু।
ঘুম ঘুম কন্ঠে। লজ্জায় আমার মাঠির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
– এই চুপ করো তুমি।
আম্মু-আব্বুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম দুজনেই মুখ টিপে হাসছে। আমি কোনো রকমের চেয়ারে বসলাম,
– তিথি, এখানে বসো। খাবার খাবে।
– না, আমি এসব খাবো না। আমি চুমু খাবো।
ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই বলছে আমার বুকে হেলান দিয়ে।
আব্বু-আম্মু উচ্চস্বরে হেসে দিলো।
আমি তিথিকে কোলে তুলে নিলাম,
– আরে কোথায় যাচ্ছিস?(আম্মু)
– উপরে। খাবার পাঠিয়ে দিয়ো রুমে।
তাড়াতাড়ি করে উপরে উঠতে লাগলাম।
– আস্তে, আস্তে যা। (আব্বু)
মিসেস সাবিনা নিজের স্বামীর দিকে তাকালেন। দুজনেই হেসে দিলেন।
,
উফ আর একটু থাকলে তো ইজ্জতের ফালুদা বানিয়ে দিতো। এই পিচ্ছি মেয়েটাও না। আর আব্বু-আম্মুকেওতো আমার সন্দেহ হয়। এরা আমার আম্মু-আব্বু নাকি বন্ধু।
তিথিকে কোনোরকমে খাইয়ে দিলাম। তারপর শুয়ে পড়লাম তিথিকে বুকে নিয়ে।
,
তিথির পরীক্ষা শেষ। এখন ফ্রি সময়। মাঝে মাঝেই নিজের হাত রান্না করে অফিসে আমার জন্য নিয়ে আসে। নিজের হাতে খাইয়েও দেয়।
,
সামনে রুমে বসে ছিলাম। সবাই বসে টিভি দেখছিলাম। আজ অফিস ছুটির দিন। কলিং বেল বাজল। রহিমা খুলে দিলেন। একটা মেয়ে ডুকল। আরে এতো নিশি। আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে। আমাকে দেখেই জরিয়ে ধরল,
– কাব্য, কেমন আছিস তুই?
– এইতো ভালো, তুই?
– ভালো। কি হ্যান্ডসাম লাগছেরে তোকে?
– ধন্যবাদ।
তিথির দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিথি রাগে ফুঁসছে। বেচারি জেলাস হয়েছে। বেশ ভালো লাগছে তিথিকে জেলাস করতে।
সবার সাথে কুশল বিনিময় করল নিশি। আমি তিথির সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। নিশি কেমন চোখে যেন তাকাল আমার দিকে।
নিশি সারাক্ষণ আমার পিছুপিছু ঘুর ঘুর করছিল। আর তিথিতো সেই জেলাস।
– কাব্য, ছাদে চল।
– হুম, চল।
নিশির পিছুপিছু ছাদের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ হাতে টান অনুভব করলাম।
– আরে তিথি, এভাবে টান মারলে কেনো?
– একদম এই মেয়ের সাথে মিশবি না। বুঝলি?
– আরে ওতো…
– চুপ! আর যদি দেখি না। মেরে ফেলব একদম।
,
( বিকেলে)
ঘুরতে যাবো নিশি আর তিথিকে নিয়ে। নিশি একটা কালো শার্ট নিয়ে আসল,
– কাব্য, তুই এটা পড়। বেশ মানাবে তোকে।
– ধন্যবাদ।
পাশ থেকে তিথি বাদ সাধল,
– না, আপনি এই শার্ট পড়বেন।
মিষ্টি কালারের একটা শার্ট।
– আরে তিথি। এটাতেই তো বেশী মানাবে কাব্যকে।
নিশি বলল তিথিকে।
– নাহ, আপনি এটাই পড়েন। এটায় বেশী মানাবে।
নিশি আমার কলার ঠিক করে দিতে দিতে বলল,
– আমার চুজ করা শার্টটাই পড় না ।
– ওকে।
তিথির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। তারপর হাতের শার্ট ফেলে ঘটঘট করে চলে গেলো।
আমি হেসে দিলাম। পিচ্ছি জেলাসবতী বউ আমার।
____চলবে_____
.
#কোনো গল্পের পর্ব খুজে না পেলে সর্বশেষ পোস্ট কমেন্ট করে জানাবেন।
।
।
।
#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।