গল্পঃ কিশোরী_বউ Part_2

0
2297

গল্পঃ কিশোরী_বউ Part_2
#Writer_কাব্য_আহম্মেদ

. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .

– আমার একটা বাবু চাই। ( তিথি )
– তাই?
তিথি মাথা নাড়াল। আমি তিথিকে আরেকটু আকড়ে ধরলাম। মুখ কানের কাছের নিয়ে গেলাম,
– আমি জানি তুমি এটা মিথ্যা বলছো। (আমি)
তিথি কোনো কথা বলল না। মাথা নিচু করে রইল।
– আম্মু, বলে দিয়েছে তাই না।
তিথি মাথা নাড়াল। আমি তিথিকে নিজের দিকে ঘুরালাম।
– কারো শিখিয়ে দেয়া কথায় নয়। যখন তুমি নিজ থেকে আমার কাছে কিছু চাইবে। তখনই আমি পূর্ণ করে দিবো তোমাকে। তার আগে নয়…
তিথি ছল ছল চোখে তাকিয়ে রইল আমার দিকে। আমি তিথির কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালাম,
– তুমি নিজেইতো একটা বাচ্চা। আর একটা বাচ্চা অন্য একটা বাচ্চাকে লালন-পালন করবে কি করে?
তিথি কথা না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে রইল। তিথির খুব ইচ্ছে করছে বলতে, আমি পারব। আমি বাচ্চাকে লালন পালন করতে পারব। আর আমি নিজ থেকেই আপনার কাছ থেকে চাই সেটা।
কিন্তু, তিথি সেটা মুখ ফুটে বলতে পারছে না।
– তোমার না অনেক স্বপ্ন। অনেক পড়াশোনা করার শখ। তাহলে এখন যদি বাচ্চা কন্সিভ করো তাহলে তোমার পড়ালেখার ক্ষতি হবে। আর তুমি এখনো পিচ্ছি তুমি কন্সিভ করার জন্য উপযুক্ত নও। বুঝলে…
– হুম।
মাথা দু-দিকে নাড়াল।
– অবশ্য, তুমি তো নিজ থেকে চাওনি। তাই, এসব ফিজিক্যাল রিলেশনের জন্য আমি তোমাকে চাপ দিবো না। আমার পিচ্ছি বউকে আমি আমার মন থেকেই ভালোবাসবো। যদি তুমি আমাকে ভালো না বাসো তাও….
তিথি আমাকে জরিয়ে ধরল। আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগল।
– কি হলো তিথি?
তিথি কিছু না বলে কাঁদতে লাগল।
– তিথি, কি হলো তোমার?
– না, কিছু না।
আমাকে ছেড়ে দিয়ে চোখ মুছে বলল।
– বলনা…
– না, কিছু না। আজ আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবেন না।
তিথি কথা ঘুরিয়ে নিলো। যদিও তিথি বলতে চেয়েছিল যে, ওও ওর বুড়ো বরকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু, সেটা মুখ দিয়ে বেরই হচ্ছে না।
– তাই, ঘুরতে যাবে?
– হুম।
– ওক্কে, চলো তাহলে। আর একটা কথা বলি?
– বলুন।
– তোমাকে না শাড়িতে পরীর মতো লাগছে। পিচ্চি মার্মিডের মতো লাগছে। ইচ্ছে করছে জরিয়ে ধরে একটা…
– কি?
– কিস করতে।
বলতেই দেখলাম তিথি লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। আমি গাল দুটো টেনে দিলাম। তিথিকে নিয়ে ঘুরতে গেলাম। অনেক ঘুরাঘুরি করে বাসায় ফিরলাম। রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমানোর জন্য রুমে গেলাম।
মাঝে একটা বর্ডার হিসেবে কোলবালিশ রেখে শুয়ে পড়লাম। তিথিও এসে শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর দেখলাম তিথি ছটফটানি শুরু করে দিলো,
– কি হলো তিথি? ঘুম আসছে না?
– নাআআ।
– ঘুমিয়ে পড়ো আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর তিথি বলে উঠল,
– আচ্ছা, মাঝের এই বালিশটা সরিয়ে ফেলি?
– কেনো?
– এমনি…
– আচ্ছা।
বলতেই তিথি বালিশ সরিয়ে দিলো। আমার কাছাকাছি সরে আসলো। হাত দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়ল। আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। খেয়াল করে দেখলাম তবুও ঘুমুচ্ছে না তিথি।
– তোমার খারাপ লাগছে তিথি?
কপালে হাত দিয়ে দেখলাম জ্বর রয়ে গেছে কি না?
– না তো।
– তাহলে…
– আমার ঘুম আসছে না। আপনার বুকে শুতে ইচ্ছে করছে।
– কি?
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম। তিথিকে যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি। অবশ্য, আমি বুঝতে পারছি বিষয়টা। তিথি যে, আমাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছে সেটা আমি খুব ভাল করে বুঝতে পারছি।
তিথি কিছু না বলে আমার বুকে এসে শুয়ে পড়ল। জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ল। আমি তাকিয়ে তাকলাম। ঘুমানো অবস্থায় তিথিকে ঘুমপরী মনে হচ্ছিলো। আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম।
,
( সকালে…)
ঘুম থেকে উঠে দেখলাম তিথি আগেই উঠে পড়েছে। আজ ওর কলেজ তাই হয়তো আগেই উঠে পড়েছে। চা হাতে রুমে ডুকল তিথি,
– ঘুম ভাঙল আপনার? সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি।
– তাই, ডাকলে না কেনো তাহলে?
– আপনি কি সুন্দর ঘুমাচ্ছিলেন তাই আর ডাকতে মন চাইল না। ঘুমানো অবস্থায় না আপনাকে খুব সুন্দর লাগে।
আমি হেসে দিলাম। তিথি ভ্রু কুচকালো।
তিথি ভাবছে, সত্যিইতো বললাম এখানে হাসার কি আছে? বদ লোক।
– তাই।
– হ্যা।
– কিছু করতে ইচ্ছে করে? (আমি)
– মানে!
– মানে, কিস করতে…
আমি বলতেই মুহুর্তের মধ্যে তিথি বুঝে গেলো আমি কেনো হাসছিলাম । লজ্জা পেলো তিথি। চা টা রেখে দৌড় দিবে তার আগে জরিয়ে ধরলাম বিছানায় থাকা আবস্থায়। তিথি আমার বুকে এসে পড়ল,
– ইশ! কি করছেন? ছাড়ুন না।
– ছাড়ার জন্য ধরলাম নাকি? বললে না তো, কিছু করতে ইচ্ছে করে?
– যাহ! ছাড়ুন না। আমার কলেজের লেট হয়ে যাচ্ছে। আপনি তাড়াতাড়ি উঠুন।
– আজ, কলেজে যেতে হবে না। (আমি)
– মানে, কেনো?
– আমি বলেছি তাই। আগে পুরোপুরিভাবে সুস্থ হোও তারপর যাবে।
– আমি পুরোপুরি সুস্থ আছি তো।
– যাবে না বললাম যাবে না।
– প্লিজ…
– স্বামীর কথা শুনবে না।
– আচ্ছা, ছাড়ুন।
তিথি মন খারাপ করে চলে গেলো। আমি ব্রেকফাস্ট করে। রেডি হয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
,
তিথি মুখ গোমড়া করে জানালার পাশে বসে আছে। মিসেস সাবিনা (মা) রুমে ডুকে বুঝতে পারলেন তিথির মন খারাপ। তিথির মাথায় গিয়ে হাত বুলিয়ে দিলেন,
– কি হয়েছে আমার পিচ্চি আম্মুটার?
তিথি মিসেস সাবিনার কোমড় জরিয়ে ধরল। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

– মন খারাপ? ( মিসেস সাবিনা)
তিথি মাথা নাড়াল।
– কেনো?
– উনিতো কলেজে যেতে দিলেন না। তার উপর উনিও অফিসে চলে গেলেন। ভালো লাগছে না।
মন খারাপ করে বলল।
– তাহলে আমার রুমে যেতিস। গল্প করতাম।
তিথি কোনো কথা বলল না।
– কাব্যকে মিস করছিস।
– হুম, উনাকে ছাড়াতো আমার ভালো লাগে না।
মিসেস সাবিনা হেসে দিলেন। মেয়েটা পিচ্ছিই রয়ে গেলো। এসব আবার কাউকে বলে নাকি?
– কথা বলতে ইচ্ছে করছে?
– হুম।
– তাহলে কল কর।
– উনি যদি কাজে থাকেন। বিরক্ত করাটা বোধ হয় ঠিক হবে না।
– আগে তো কল কর।
– সত্যি করব?
– হুম, কর। আর আমি রুমে গেলাম। ফোনে কথা বলার পর আমার রুমে চলে আসিস।
– আচ্ছা।
শাশু মা রুম থেকে বেরুতেই তিথি ফোন করল কাব্যকে। ফোন রিসিভ করতেই তিথি সালাম দিলো,
– আসসালামু আলাইকুম।
– ওয়ালাইকুম আসসালাম, কে বলছেন? ( ওপাশ থেকে মেয়ে কন্ঠে)
– আপনি কে বলছেন? উনি কোথায়?
– স্যার তো মিটিংয়ে।
– ওও, মিটিং থেকে আসলে বলবেন তিথি কল করেছিলো।
– স্যার আপনার কি হোন?
– কেউ না।
ফোন কেটে দিলো তিথি। মন খারাপ হয়ে গেলো তিথির। দূর! উনার সাথে তো কথাই বলতে পারলাম না।
,
মিটিং থেকে এসে বসলাম কেবিনে। তখনই নক করে রুমে ডুকল রিয়া আমার পিএ। আমার ভার্সিটি ফ্রেন্ডও রিয়া।
– স্যার, এই নিন মোবাইল। আপনার ফোনও এসেছিল একটা।
– আরে রাখ তো স্যার। তোকে না বললাম ওসব স্যার টার না ডাকতে।
– ওকে ওকে সরিরে বাবা।
– আচ্ছা, এখন বল কে ফোন করেছিল?
– বলল, তিথি। জিজ্ঞেস করলাম কে হয় তোর? বলল কেউ না।
মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো কথাটা শুনে।
– আচ্ছা, তুই এখন যা।
মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলাম তিথিই ফোন করেছিলো। রাগে শরীর জ্বলছে।
আমি ওর কিছু হই না? আর ওও আমার কিছু হয় না। আজ দেখাচ্ছি মজা বাসায় ফিরে। বজ্জাত মেয়ে। আমি কি ওর কেউ হই না?
,
বাসায় ফিরলাম। কলিং বেল টিপতেই দরজা খুলল তিথি। আজও শাড়ি পড়েছে। অবশ্যই আগের দিন থেকে আজ একটু বেশীই সুন্দর লাগছে। মনে হয় আম্মু শাএই পড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাকালাম না। না তাকিয়ে ডুকলাম বাসায়।
তিথি অবাক হয়ে গেলো সাথে খারাপও লাগল। তিথি ভাবছে, কি ব্যাপার? আজ উনি আমার দিকে তাকালেন না কেনো? কথাও বললেন না।
– আপনার কি মন খারাপ? ( তিথি)
আমি কিছু না বলে উপরে উঠে গেলাম। রুমে এসে অফিস ড্রেস চেঞ্জ করতে লাগলাম। রাগ এখনো রয়ে গেছে। কি ভাবে কি মেয়েটা? এতো সহজ সবকিছু। আমি ওর পিছু পিছু ঘুরবো আর ও আমাকে এভাবে পর ভাববে।
তিথির কান্না পাচ্ছে খুব। গাল বেয়ে টুপ করে পানি পড়ল।উনি আমার সাথে কথা বললেন না কেনো? আমি কি কোন দোষ করেছি? উনি আমার দিকে তাকিয়েও দেখলেন না।
তিথি রুমে আসল।
– আপনার কি হয়েছে? মন খারাপ কেনো আপনার? ( তিথি)
আমি কোনো কথা বললাম না। কাপড় পালটে টাওয়াল হাতে নিলাম শাওয়ার নেওয়ার জন্য।
– কি হলো কথা বলছেন না কেনো আপনি?
আমি কোনো কথা না বলে ওয়াসরুমে ডুকে পড়লাম।
তিথি খুব কষ্ট পেলো। হো হো কেঁদে উঠল। দৌড়ে রুমে থেকে বেরিয়ে পড়ল। সোজা তার শাশু মার রুমে গেলো। মিসেস সাবিনা তখন বসে ছিলেন বিছানায়। তিথি গিয়ে কোলে শুয়ে পড়ল মাথা রেখে। কান্না করতে লাগল খুব। মিসেস সাবিনা অবাক হয়ে গেলেন তিথির কান্ড দেখে।
– কি হয়েছে তিথি?
তিথি কাঁদতে থাকল।
– তিথি, আম্মুকে বল কি হয়েছে?
– উনি আমার সাথে কথা বলছেন না আম্মু। এতো কষ্ট করে সাজলাম উনি আমার দিকে তাকালেনও না।
– কি বলছিস? কাব্য এসেব করেছে।
– হ্যা, আম্মু। আমি কথা বলার চেষ্টা করেছি উনি আমার এড়িয়ে চলছেন। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আম্মু।
কাঁদতে কাঁদতে বলল তিথি। মিসেস সাবিনা তিথিকে কোল থেকে উঠালেন।
– এভাবে কাঁদতে নেই আম্মু। হয়তো কাব্য রেগে আছে।
– কিন্তু, আমি তো কিছু করিনি।
– নিশ্চয়ই কিছু করেছিস।
– সত্যি, আমি কিছু করিনি। তুমি না বলো আমি খুব লক্ষি মেয়ে।
– হ্যা, তুই তো আমার লক্ষি মেয়ে। তুই নিশ্চয়ই কাব্যকে রাগিয়ে দিয়েছিস। তাই কাব্য তোর উপর রুষ্ট।
– তাই বলে আমার সাথে কথা বলবেন না উনি। এড়িয়ে চলবেন আমাকে। উনি কি জানেন না উনাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না। উনার অবহেলায় আমি কষ্ট পাই।
তিথি কাঁদতে লাগল।
– হয়েছে হয়েছে এখন আর কাঁদতে হবে না। এখন যা রুমে যা।
– কিন্তু, উনি তো আবার আমার সাথে কথা বলবেন না। আমিতো কষ্ট পাবো।
উনি তো আবার আমার সাথে কথা বলবেন না। আমিতো কষ্ট পাবো। (তিথি)
– তাই বলে পিছু ছেড়ে দিবি। যা জানার চেষ্টা কর কাব্য রেগে আছে কেনো? একদম পিছু ছাড়বি না জানার আগ পর্যন্ত বুঝলি…
– আচ্ছা।
তিথি রুমে এলো। তিথিকে রুমে আসতে দেখে আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। শরীর মুছতে লাগলাম। তিথির দিকে তাকিয়ে দেখলাম চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
– সমস্যা কি? এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
ভ্রু কুঁচকে রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বললাম।
আমার রাগ করে বলা কথাটা অনেক কষ্টে হজম করল তিথি। তিথির সত্যি খুব কান্না পাচ্ছে।
উনি এতোটা রাগ করেছেন আমার উপর? আমি তো কিছুই করিনি তাহলে…। খুব খারাপ উনি? জানেন না আমি উনাকে ছাড়া থাকতে পারি না। আর আজতো জ্বরের কারনে কলেজে যেতে দিলেন না। অফিস থেকে এসে একবারওতো আমার শরীর কেমন আছে জিজ্ঞেস করলেন না।
– কি হলো? বোবা হয়ে গেছো নাকি?
তিথি কিছু বলে চোখ সরিয়ে নিলো।
তিথি ভাবছে, আমার কি দোষ? এমনিতেই তো উনাকে আমি ভালোবাসি। তার উপর উনার লোমশ লোভনীয় বুক দেখেতো আমার তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। কি যে ভালো লাগে বলে বুঝাতে পারব না।
– আচ্ছা,আমাকে কেমন লাগছে? ( তিথি )
কিছু খুঁজে পাচ্ছিলো না। তাই এটা দিয়েই শুরু করল।
– কেমন লাগছে মানে? প্রতিদিন যেমন লাগে তেমনই লাগছে।
বিরক্ত হয়ে বলল।
তিথির মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে যে, কাব্য ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করছে। কঠিন করে কথা বলছে। তিথি এসবে অভ্যস্ত না। তাই কেঁদেই দিলো।
– আপনি এরকম করছেন কেনো আমার সাথে?
কাঁদতে লাগল।
– কেমন করছি? ( অবাক হয়ে বললাম)
– অফিস থেকে আসার পর থেকে আমার সাথে কথা বলছেন না। আগে তো এসেই আমাকে জরিয়ে ধরতেন। আমাকে শাড়িতে কেমন লাগছে সেটা কি সুন্দর করে বর্ণনা দিতেন।
– তো, এখন কি করতে হবে? তোমাকে জরিয়ে ধরতে হবে, তোমার গুণগান করতে হবে।
রাগ দেখিয়ে বললাম।
– আপনার কি হয়েছে? এমন করছেন কেনো?
তিথি আমার পাশে এসে দাঁড়াল।
– আমার কিছুই হয়নি।
– তাহলে, এমন করছেন কেনো?
– দেখো, আমার লেট হচ্ছে আমি বাইরে যাবো। এসব আজাইরা কথা বলে টাইম ওয়েস্ট করে লাভ নেই আমার।
শার্ট পড়তে পড়তে বললাম। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

তিথি ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। কোনো কথা বলছে না। আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিথি মুখ ফুলিয়ে কাঁদছে। দেখে মনে হচ্ছে প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে তিথির।
আমার খুব খারাপ লাগছে কিন্তু গলে গেলে চলবে না। এই মেয়েকে শিক্ষা দিতেই হবে।
আমি হাতের ওয়াচটা পড়ে চুল ঠিক করে নিলাম। তিথির সামনে দিয়ে বেরুতে যাবো তখনই জরিয়ে ধরল তিথি আমাকে। হো হো করে কেঁদে উঠল। আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু, তিথি ছাড়ছেই না। জোর করে জরিয়ে ধরে ভ্যে ভ্যে করে কাঁদছে।
– আরে কি হলো তোমার?
– আপনি এমন করছেন কেনো আমার সাথে? আপনার এমন ব্যবহারে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আপনি কি জানেন না যে, আমি আপনার অবহেলায় নয় ভালোবাসায় অভ্যস্ত। আপনি আমাকে অবহেলা করবেন না প্লিজ আমার খুব কষ্ট হয়।
( তিথি)
তিথির কথা শুনে আমারও খারাপ লাগল। খুব কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা। উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে।
– বলুন না আর কষ্ট দিবেন না আমাকে। আমার সাথে কথা বলুন প্লিজ…
– তাহলে, আমাকে কষ্ট দাও কেনো? আমাকে কষ্ট দেয়ার সময় মনে থাকে না এসব।
,
তিথি বুক থেকে মুখ তুলে তাকাল আমার দিকে,
– আমি কখন কষ্ট দিলাম আপনাকে?
– কেনো? মনে নেই।
– না,তো। আমার তো মনে পড়ছে না। আমি কেনো কষ্ট দিতে যাবো আপনাকে?
– তাহলে, ফোনে আমার পি,এ কে বললে কেনো যে, তুমি আমার কিছু হও না।
তিথির মনে পড়ল বিকেলের কথা। তাহলে এজন্যই রেগে আছে উনি। এই এটুকু কথার জন্য এতো কষ্ট পেয়েছেন উনি?
– সরি, আমি বুঝতে পারিনি আপনি কষ্ট পাবেন।
জরিয়ে ধরে বলল তিথি।
– এখন বল, তুমি আমার কি হও?
– বউ।
– আর আমি?
– আপনি আমার বুড়ো স্বামী।
– তাহল, তখন বললে কেনো যে, তুমি আমার কেউ হও না।
– আমি তো বুঝিনি আপনি কষ্ট পাবেন। আমিতো ভেবেছিলাম, ঐ মেয়েটার সাথে আপনার কোনো সম্পর্ক আছে। যদি বলি আমি তোমার বউ তাহলে আপনাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে।
– ওয়াট ডু ইউ মি?
– সরি, সরি। আপনি রেগে যাবেন না প্লিজ। আমিতো এমনিই ভেবে ফেলেছিলাম।
আমতাআমতা করে বলল তিথি।
– এই বিশ্বাস করো আমাকে। আর তোমার স্বামী সাথে যদি অন্য কোনো মেয়ের সম্পর্ক থাকে তুমি সেটা মেনে নিবে। তুমি জেলাস হবে না?
অবাক হয়ে বললাম।
– মোটেও না। আমিতো ঐ মেয়েকে কুচি কুচি করে কেটে ফেলব। আপনি শুধু আমার স্বামী, আপনি শুধু আমাকেই ভালোবাসবেন।
আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলল।
– তাহলে..
– আসল, আমি ভেবেছিলাম অফিসের কাউকে আপনার বিয়ের কথা জানান নি। আমি যদি বলি আমি আপনার বউ তাহলে সমস্যা হবে। তাই বলিনি।
– মানে! সমস্যা হবে মানে?
– আচ্ছা, বাদ দিন না। প্লিজ ক্ষমা করে দিন আমাকে।
ছল ছল চোখে তাকাল আমার দিকে।
– হুম, ক্ষমা করা যায়। তবে শাস্তি স্বরুপ কিছু দিতে হবে আমাকে।
– কি?
– পাপ্পি..
– ওক্কে… উম্মাহ
পা উচু করে আমার গলা নামিয়ে গালে চুমু দিলো।
– এখন হয়েছে?
– না।
– আর কি করতে হবে?
মন খারাপ করে বলল তিথি।
– এখন তোমাকে বলতে হবে যে, তুমি আমার স্ত্রী।
– কাকে?
– আমার পি,এ কে।
– আচ্ছা, ফোন দিন। নাম্বার বের করে দিন।
আমি রিয়ার নাম্বার বের করে তিথির হাত মোবাইল দিলাম। তিথি কল করল রিয়াকে। রিয়ে কল রিসিভ করতেই তিথি বলতে শুরু করল,
– আসসালামু আলাইকুম, আমাকে চিনতে পেরেছেন? অফিস টাইমে ফোন দিয়ে যে আপনার স্যারের কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম।
– হ্যা, চিনতে পেরেছি। ( রিয়া)
– আমি উনার স্ত্রী হই বুঝেছেন। আমাকে ম্যাডাম বলে ডাকবেন।
– মানে!
অবাক হয়ে বলল রিয়া।
– মানে, আমি কাব্যর বউ। আপনার স্যারের বউ।
– কাব্য, বিবাহিত?
– হ্যা, কেনো বিশ্বাস হচ্ছে না। ওকে ওয়েট এ মিনিট। কল কেটে দিলো তিথি।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
– আপনি একটু নিচু হোন তো।
– কেনো?
– আরে হোন না।
– আমি নিচু হতেই।
– উম্মাহ…
আমার গলা জরিয়ে ধরে গালে পাপ্পি দিয়ে সেটা ক্যামেরা বন্ধী করল তিথি। তারপর ফোনে কিসব করতে লাগল।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি তিথির দিকে। মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম তিথি ফটোটা রিয়াকে সেন্ড করেছে।
– কি করলে এটা? (আমি)
– কেনো? ঐ শাঁকচুন্নি তো বিশ্বাস করছিল না তো যে, আমি আপনার বউ। এখন পিকটা সেন্ড করলাম এখন নিশ্চয়ই বিশ্বাস করবে যে, আমি আপনার বউ।
আমি হাসবো না কাঁদবো। হো হো করে হেসে দিলাম। সাথে তিথিও হেসে দিলো।
– আচ্ছা, এখন শার্টটা খুলুন।
তিথি কথাটা বলতেই আমি লাফিয়ে উঠলাম,
– মানে!
– মানে কি আবার? খুলতে বলেছি খুলবেন।
– শার্ট খুলব কেনো?
– আমার খুব ইচ্ছে করছে..
.
#_____________চলবে________________
.

#কোনো গল্পের পর্ব খুজে না পেলে সর্বশেষ পোস্ট কমেন্ট করে জানাবেন।



#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here