গল্পঃ নিষিদ্ধ_ভালোবাসা পর্ব_৫(শেষ-পর্ব)

1
6517

গল্পঃ
নিষিদ্ধ_ভালোবাসা
পর্ব_৫(শেষ-পর্ব)
লেখিকাঃ
#Nowrin_Khan

বিয়ের এতো মাস পর প্রাক্তন প্রেমিকের ফোন দেখে শুধু অবাকই নয় মনে মনে তার জন্য রাগ,ঘৃণাও হচ্ছিলো…
হয়তো রাগ আর ঘৃণাটা এতো তীব্র হতো না,যদি না জানতাম সে অতীতে আমার সাথে প্রতারণা করেছে।
আসলে মানুষ সব মাফ করতে পারলেও প্রতারণা ক্ষমা করতে পারে না….প্রতারণা যেন এক গরম লোহার হাতল যা একবার মনে ছুঁয়ে গেলে দাগ থেকে যায় আজীবন।
ফোনটা ধরবো নাকি ধরবো না ভাবতে ভাবতেই ধরে ফেললাম….
মনে জমা সকল তিক্ততা আজ কথার মাধ্যমে তাকে শুনিয়ে দিয়ে এই দায় থেকে আমায় আজ মুক্ত হতে হবে।
ফোনটা ধরতেই-
~কি পাইছো কি তুমি?এখনও আমাকে জ্বালিয়ে যাবা?একটুও শান্তি দিবা না?এখন তো তোমারও বিয়ে হয়ে গিয়েছে..এখন একটু রেহায় দাও আমায়।এতো অন্যায় আমার আর সহ্য হচ্ছে না।
~অথচ এই কথাগুলো আমার তোমাকে বলা উচিত ছিল তোমার করা অন্যায়ের জন্য।
“মানুষ নিজের দোষ অপরের উপর চাপিয়ে নিজে মহৎ সাজতে খুব ভালো পারে”
~তুমি আকাশকে ফোন দিয়েছো কেন?
~তোমার আমাকে ঠকানোর নমুনা জানতে…
এতটুকু বলেই ফোনটা কেঁটে দিলাম।অনেককিছু বলার পরিকল্পনা শুরুতে করে থাকলেও কথা বলার সময় পরে আর মুখ দিয়ে কিছু বের হলো না।
অথচ,যে দোষী সে-ই আমার থেকে বেশি কথা শুনিয়ে গেলো।
“দোষীদেরই তাদের দোষ আর ভুল ঢাকতে বেশি কথার প্রয়োজন পরে”
“বের হবেন কখন?আপনার ভর্তির কাজ শেষ করে আমাকে অফিসে যেতে হবে।আমারও তো অফিসে কাজ আছে,সারাদিন তো আর অপেক্ষা করতে পারিনা”-নীলয়..
হ্যাঁ চলুন..
গাড়িতে যেতে যেতে নিজেকে একবার স্বার্থপরের কাতারে চিন্তা করলাম।যেই নীলয়কে আমি স্বামী হিসেবে মেনে নিতে চাইনি এখন তার থেকেই কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য সাহায্য কামনা করছি!অবশ্য, এখনও তাকে স্বামীর মতো ভাবছি না।একজন উপকারী বন্ধুর তালিকায় তাকে ফেলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করছি।
~” আমি কি খুব বেশি স্বার্থপরের মতো আপনার থেকে সুবিধা নিচ্ছি? ”
~আপনি আমাকে স্বামী হিসাবে না মানলেও সামাজিক রীতিতে আমার স্বামী হিসাবে কিছু কর্তব্য আছে।আমি শুধু আমার কর্তব্যই করছি আর আপনিও কর্তব্যের খাতিরে আমার থেকেই সাহায্য চেয়েছেন।এখন যদি আপনার প্রাক্তন আপনার স্বামী হতো তাহলে আপনি তাকেই বলতেন….এটাই প্রকৃতির রীতি।আর এখন চুপ থাকেন।গাড়ি চালানোর সময় এতো কথা ভালো লাগে না।
নীলয় আমাকে প্রাক্তন নিয়ে কিছুটা খোঁচা দিলেও আমাকে সাপোর্ট করায় কৃতজ্ঞবোধও হচ্ছে।

ভর্তির কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরেই সবার মাঝে থমথমে ভাব উপলব্ধি করলাম।হয়তো,আমার ভর্তি নিয়েই বাড়ির এই হাল!
তবে,যেহেতু সামাজিক রীতিতে এই বাড়ির বউ আমি তাই তাদের থমথমে ভাব দূর করে শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করা আমারই কর্তব্যের মাঝে পরে।
তারা আমার ভর্তি হওয়াতে নারাজ ছিল বলে আমিও অভিমান করে থাকলে তাদের সাথে দূরত্ব আরোও বাড়বে।
আসলে,আমার মনটাও আজ ভালো আর মন ভালো থাকলে সব কর্তব্যই পালন করতে মন থেকে আগ্রহ পাই আর ভালো লাগে।

রান্না ঘরে ঢুকেই সবার পছন্দের খাবার বানালাম।সবাই খেয়ে যে অনেকটাই খুশি হলো মুখে না বললেও তা স্পষ্ট বুঝতে পারলাম।আর শ্বাশুড়ি মায়ের বাতের ব্যাথার জন্য আসার সময় একটা মালিশের তেলও নিয়ে এসেছিলাম।খাবারের পরে ওটা দিয়ে মালিশ করে দিচ্ছি…মা হয়তো আরাম পাচ্ছে..আমার পানে সন্তুষ্টির দৃষ্টিতে তাকালো…
এবার ননদের ঘরে গিয়ে আমার থেকে একটা থ্রিপিস দিয়ে আসলাম।বিয়ের পরেরদিনই সে ওইটা খুব পছন্দ করেছিলো।খুশিতে তো আমায় জড়িয়ে ধরলো….
তবে,দাদি শ্বাশুড়ি এখনও আমার উপর অসন্তুষ্ট।কথা শুনিয়েই যাচ্ছে…..
উনাকে পান সাজিয়ে দিলাম কিন্তু খেলো না…কিছুটা মন খারাপ হলো বটে!
আসলে,আমি একা সবার মন জয় করতে পারবো এমন তো না।কেউ কেউ থাকবে এমন যাদের আমাকে ভালো লাগবে না।সবাইকে নিয়েই তো সংসার।

সংসার!আমি কি সংসার করছি!তাহলে আমি কি নীলয়ের বউ হয়ে গিয়েছি!ভাবতেই অনেকবেশি লজ্জা পেয়ে লজ্জা-মিশ্রিত চোখে নীলয়ের ছবির দিকে তাকিয়ে আছি…এই প্রথম নীলয়কে ভালো করে দেখছি।নাহ খুব খারাপ না কিন্তু দেখতে!
তবে,মনে এখন আর কোন নীলয়ের ব্যাপারে দ্বিধা আর অনীহা আসছে না।

হয়তো কারো সাথে থাকতে থাকতে তার প্রতি মায়া চলে আসে।মন না চাইলেও আসে….আর মনের উপর কারো তো হাত নেই!

চা বানাচ্ছি..নীলয়ের অফিস থেকে আসার সময় হয়ে গিয়েছে।আসতেই চা-টা দিতে হবে।কলিং বেলটা বাজতেই দরজাটা খুলে মুচকি হাসি দিলাম….
কি করে ফেললাম!হাসতে তো চাইনি!নীলয় কি ভাবলো কে জানে!
তবে এই প্রথম নীলয়কে চা বানিয়ে দিচ্ছি দেখে সে বেশ অবাকই হলো।যদিও কিছুই বললো না ধন্যবাদ ছাড়া।

~আমার কিছু বই লাগবে।
~আমি কাল অফিস থেকে আসার সময় নিয়ে আসবো।কিন্তু আমার যদি মনে থাকে..কাজের চাপে আমাকে কিছু আনতে বললে ভুলে যাই আমি।
~আপনার নাম্বারটা দিন আমি মনে করিয়ে দিব।

প্রথমে নাম্বার নেওয়া।এরপর বই আনা,এটা-সেটা আনার অজুহাতে ফোন দেওয়া,কথা বলা,কথার পৃষ্ঠে আবারও কথা বলা,চা বানিয়ে দেওয়া,একসাথে খেতে বসা এসব করতে করতে আমাদের মাঝে জড়তা অনেকটাই কমে গিয়েছে।সম্পর্কটা ভালোবাসার সম্পর্ক পর্যন্ত না গেলেও একে ভালো সম্পর্ক বলাই যায়!

নীলয়ের সাথে তার অফিস থেকে সাজেকে ঘুরতে এসে সম্পর্কটা আরও ভালোর দিকে আগাচ্ছে….
এরপর আমরা প্রায়ই ঘুরতে যেতাম…
আর এভাবেই একপা-দুপা করে আমাদের মাঝে এখন আর জড়তা নেই বললেই চলে।

আসলে,সময় মানুষকে সব কিছুর সাথেই খাপ খাওয়াতে বাধ্য করে জিতেও যায়!

৩ বছর হয়ে গিয়েছে…
সম্পর্কটা এখন ভালো সম্পর্ক থেকে ভালোবাসার সম্পর্কে রূপ নিতে শুরু করেছে।

এমএসসিটাও শেষ করে বসে আছি তবে এখন চাকরি করার ইচ্ছাপোষণ করছি।
সেই আবার শ্বশুরবাড়ির চাকরি করা নিয়ে অশান্তি!তাদের বাড়ির বউয়েরা চাকরি করে না আরও কতো কি!
এবার তো আমার বাবা-মাকেও ডেকে এনেছে মিটিং করতে যাতে আমি চাকরি করতে না চাই আর তারা আমকে বোঝায়।
এতো হাঙ্গামা দেখে আমারও চাকরী করার ইচ্ছা চলে গেলো।
কাউকে আর কিছু বললাম না…..

কিছুদিন পরেই দেখছি এক সফটওয়্যার কম্পানি থেকে চাকরীর ইন্টারভিউ এর ইমেইল এসেছে।কিন্তু আমি তো কোন সিভি জমা দেইনি!
বুঝতে আর বাকিই রইলো না এটা নিশ্চয় নীলয়ের কাজ।
এরপর,আমি আর নীলয় মিলে আমার পরিবার আর নীলয়ের পরিবারকে বুঝিয়ে অনেক কষ্টে রাজী করালাম।
আমারও ইচ্ছাটা আবারও ফিরে এলো!
আসলে,পাশে কেউ সাহস জুগানোর মতো থাকলে সকল বাঁধাই অতিক্রম করা সম্ভব হয়।
সফটওয়্যার কম্পানিতে একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আর ভালো কোডিং পারার সুবাদে চাকরিটা আমার হয়েও গেলো।
আজ আমার অফিসের প্রথমদিন……
নীলয়ই আমায় নিয়ে যাবে..সবাইকে বলে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছি।সবার মুখেই সন্ধ্যার আধাঁর নেমে এসেছে।ভাবলাম, প্রথম বেতনের টাকা দিয়ে সবার জন্য উপহার কিনে এই আধাঁর মূহুর্তের মাঝেই একদিন কাটিয়ে দিবো।এই আশায় অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম….
আমার ডেস্ক,আমার কম্পিউটার সব কিছু দেখেই একজন মেয়ে হিসাবে এতো বেশি খুশি আর গর্ব হচ্ছিলো যা হয়তো ভাষায় বুঝানো সম্ভব না।
কিন্তু পাশের ডেস্কের দিকে চোখ যেতেই আমার উজ্জ্বল হয়ে জলজল করা চোখ দুটিতে যেন মেঘের আধাঁর নেমে এলো!
পাশের ডেস্কেই আদিব বসে কাজ করছে!

সেই বেঈমান চেহারাটা চিনতে আমার খুব বেশি কষ্ট হয়নি।
মনে মনে ঠিক করেই নিলাম এখানে আর কাজ করবো না।আজকেই আমার প্রথম আর শেষদিন।এমন কারো সাথেই বসে সারাদিন কাজ করা আমার পক্ষে শুধু অসম্ভই না বরং আরও অসহ্যেরও বটে!
মনে মনে খুব শক্ত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম আজই না করে দিব,আজকের মতো শুধু কাজ করে যাবো।
হঠাৎ করে দেখলাম আদিব আমার দিকে তাকিয়ে আছে।অনেক্ষণ ধরেই তাকিয়ে আছে…
এখন আমার বেশ অস্বস্তি লাগছে।এরই মাঝে লাঞ্চ টাইম হয়ে গেলো বলে মনে মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ দিয়ে উঠে অফিসের ক্যান্টিনে চলে গেলাম।

প্রথমদিন,তাই সকলের সাথে ব্রেক টাইমে পরিচিত হচ্ছিলাম এমন সময় আমার পরিচিত কন্ঠে ডাকঃ
“সুপ্তি”
পেছন ফিরে দেখলাম আদিব।মুখ ঘুরিয়েই সেখান থেকে চলে আসবো তখন আবারঃ
~”সুপ্তি দাঁড়া তোর সাথে আমার কথা আছে।প্লিজ দাঁড়া ১ মিনিট”
বেঈমানটার অনুনয় শুনে মানুষ হিসাবে ভদ্রতার খাতিরে দাড়াঁলাম।
~”জ্বি বলুন কি বলবেন?”
~”তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে আর তোকে আমি অনেকদিন যাবতই খুঁজে বেড়াচ্ছি আর কি ভাগ্য দেখ আজ এই অফিসে আমার শেষ দিন,অন্য জায়গায় ট্রান্সফার হয়েছি আর আজই তোর সাথে আমার দেখা!”
~”নাটক বন্ধ করেন,আমার আপনার সাথে কথা নেই।আর আপনি এই অফিসেই চাকরি করেন জানলে আমি কখনই জয়েন করতাম না”
~সুপ্তি তোর সাথে অন্যায়ের ফল আমি পেয়েছি।জেরিনের মানে আমার বউয়ের আমার সাথে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় সে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে আমার মান-সম্মান সব শেষ করে আর আমার পরিবার আর সমাজে মুখ দেখানোর পথ বন্ধ করে অন্য ছেলের সাথে স্কটল্যান্ড চলে যায়।ও যেদিন একটি চিঠি ফেলে চলে গেলো সেদিন খুব কেঁদেছিলাম আর তর সাথে যে একই অন্যায় করেছিলাম সেটাও উপলব্ধি করেছিলাম।মানুষ যখন এখন আমায় দেখিয়ে বলে ওই-যে ওর বউ ভেগে গিয়েছে তখন নিজেকে খুব অসহায় লাগে।পারলে আমাকে মাফ করে দিস!”
বলেই আদিবটা চলে গেলো।আমি মনে মনে ভাবছিলাম আল্লাহ পাপের শাস্তি পৃথিবীতেই কিছুটা ভোগ করায় তবে সেই শাস্তি থেকে সবাই ভুলটা বুঝতে পারে না।আদিব যে বুঝতে পেরেছে এই তো অনেক…..

বাড়ি ফিরে গেলাম চাকরিটা করবো বলে ভাবতে ভাবতে।কিন্তু বাড়ি ফিরেই আবার সেই অফিসে যাওয়া নিয়ে আশান্তি।আমি চলে গেলে ঘরের কাজ করার লোক থাকে না।গিয়ে দেখি ঘরের সমস্ত কাজ পরে আছে আমার জন্য আর সকলেরই মুখে অসন্তুষ্টির ছাপ…
অফিস থেকে গিয়ে ঘরের সমস্ত কাজ করছি এরই মাঝে নীলয় এসে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে চা চাইছে।অথচ,আমরা দুইজনই সারাদিন অফিসের কাজ সামলে এসেছি।
আজ ছেলে-মেয়ের তফাৎটা খুব করে উপলব্ধি করছি।
এভাবেই কাটতে লাগলো দিন আর শ্বাশুড়ির নাতি বা নাতনীর মুখ দেখার জন্য আগ্রহও বাড়ছে…অফিসে যাওয়ার অপরাধে অফিস থেকে ফিরিতেই ঘরের কাজ বাড়তি করে রেখে দেওয়া হয়…
হয়তো সব আমার চাকরী ছাড়ার জন্যই ফন্দি!

কিন্তু শক্ত মনে সব করে দেই।চাকরীটা আমি করবই।আমার পরিচিতি এটা,আমি কেন ছাড় দিব!নিজেকে এখন শুধু এই বাড়ির বউ হিসাবে পরিচয় দেইনা।একজন চাকরিজীবী হিসাবেও পরিচয় দেই।
এভাবে কেটে গেলো আরও ১মাস…

হঠাৎ করে অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন ধরতেই বললোঃ
“নীলয় এক্সিডেন্ট করেছে”
আকাশটা মনে হলো মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ল দৌড়ে গেলাম হাসপাতালে।আঘাত গুরুতরভাবেই লেগেছে….
এক্ষুনি অপারেশন করতে হবে…
অপারেশন ভালোভাবেই করা হলো আর কিছুদিন পর নীলয়টা এখন কিছুটা ভালো আছে।
দীর্ঘ দেড়মাস হাসপাতালে থাকার পর নীলয়কে নিয়ে আজ বাসায় ফেরার পালা কিন্তু অপারেশন, ইঞ্জেকশন,ঔষধ খরচের পেছনে ক্যাশ যা ছিল সবই শেষ…হাসপাতাল থেকে ছাড়াতে বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন আর এই টাকাটা জোগাড় হলো আমার বেতনের টাকা থেকে।
বাসায় আসার পর বিপদের সময় আমার চাকরীটা যে কতোটা ভূমিকা পালন করলো তা বুঝতে পেরে শ্বশুর বাড়ির লোকের এতোদিন পর আমার চাকরিটার জন্য তাদেরও গর্ববোধ হলো আর তারা সেটা মেনেও নিলেন….
নীলয়ের সেবা করে নীলয়কে অনেকটা সুস্থ তো করে দিলামই সেই সাথে নীলয়ের মনে ভালোবাসায় জায়গাটাও পরিপূর্ণভাবে পেয়েও গেলাম।…..

বহুবছর পর আজ আমার মেয়ে রাজকন্যা আর নীলয়কে আমার জন্মদিনের ট্রিটটা আমার টাকাতে দিতে এক বড় রেস্টুরেন্টে নিয়ে এসেছি।রেস্টুরেন্টে ঢুকার সময় এক দম্পতি তাদের ছেলেকে নিয়ে বের হওয়ার সময় আমাদের দেখেই দাঁড়িয়ে গেলো।অনেক সম্মান আর শ্রদ্ধাবোধ মিশ্রিত আদিবের মুচকি হাসি আর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে আমাকে তার পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।হয়তো, আবার বিয়ে করেছিল।আর করবেই তো কারোর জন্যই তো কারোর জীবন থেমে থাকে না।আমার যেমন,আদিবের জন্য থেমে থাকেনি কিছু আদিবেরও তেমন জেরিনের জন্য থেমে নেই কিছু।
আমিও শ্রাদ্ধবোধ ধরে রেখে ধন্যবাদ জানালাম আদিবকে।
আর রাজকন্যা আদিবের ছোট্ট ছেলেকে তার হাতের চকলেটটা এগিয়ে দিলো….একে অপরকে সালাম দিয়ে যে যার পথে আবার হাটঁতে শুরু করলাম……

আমার আদিবের জন্য আজ নেই কোন আর ঘৃণা।এসব ঘৃণা,রাগ থেকে নিজের মনকে বহুদিন আগেই সরিয়ে এনেছিলাম।

শেষ হয়ে যাক শেষ হওয়ার আকাঙ্খা নিয়ে মরার মতো বেঁচে থাকা সম্পর্কগুলো..রয়ে যাক মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা আর সম্মান।এখানেই একসময় ছিলো নামের সম্পর্কগুলোর নয় নিজের মানসিকতার সার্থকতা….
[সমাপ্তি]

1 COMMENT

  1. গল্পগুলো সবযময়ি এতো ডিপ্লোমেটিক ওয়েতে শেষ করেন কেনো?. “আমার টাকায়” “চাকুরির টাকা থেকে এক্সসিডেন্টের চিকিৎসা ” এক্সিডেন্ট করলো চিকিৎসা করার টাকা তাদের নাই৷ আপনার চাকরির অল্প কিছু টাকাতেই হয়ে গেলো?.
    জঘন্য শেষ পর্ব। হলুদ সাংবাদিকরা যেমন গল্প সাজায় তেমন সাজালেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here