গল্পঃ প্রতিশোধ পর্বঃ ০৩

0
3729

গল্পঃ প্রতিশোধ
পর্বঃ ০৩
লেখাঃ #Mst_Liza
,
বিছানায় উবূ হয়ে শুয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী রাইশার কথা ভাবছে রাইসূল সিকদার।না যানি কতদিন তার এই বুকে মাথা রেখে ঘুমাই নি রাইশা।বুকের ভেতরটা অস্থিরতায় ছটফট করছে।এমনটা যেন মাঝ রাত হলেই হয়।আর তো মাত্র কটা দিন।তারপরই তো রাইশা ঠিক আগের মতোন তার এই বুকে ঘুমাবে।আর তাদের সন্তান? সে এতোদিনে হয়তো বাবা ডাক টাও শিঁখে গেছে।
আচ্ছা! রাইশার মধ্যে কি এখনও সেই ছেলে মানুষী গুলোই আছে নাকি মা হওয়ার পর নিজেকে একটু বদলে নিয়েছে? খুব যানতে ইচ্ছা করে! আবার ভয় হয় অনেক।রাইশা যেরকম জেদি মেয়ে আমার উপর রাগ করে উল্টো পাল্টা কিছু করে বসে নিতো সেদিন? কিন্তু আমি কি করতাম তখন..! মাকে যে ওই রকম অসুস্থতার সময়ে কস্ট দিতে পারতাম না। তবে রাইসার দেখাশুনা করার জন্য আমি তো আমার মিরা আপুকে রেখে এসেছি। মিরা আপু থাকতে এতো চিন্তা কিসের? বাবা মারা যাবার পর মিরা আপু নিজ হাতে সংসারের সব দায়িত্ব তুলে নিয়েছে। একা হাতে সামলিয়েছে সবকিছু।যে আমার ডাক্তারি পড়ার খরচ চালাতে গিয়ে নিজের একটা কিডনি পর্যন্ত বিক্রি করেছে। এমন আপুর কাছে থাকতে কিছুতেই আমার রাইশা খারাপ থাকতে পারে না। কথাগুলো বিচারণ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে রাইসূল।

,

সকালের এলার্ম বাজতেই এক লাফে বিছানা ছেড়ে উঠে বসে মিরা।তাকিয়ে দেখে সোহাগ তার কানের কাছে ঘড়িতে এলার্ম বাজিয়ে ধরে রেখেছে।

মিরাঃ আপনি??? আমতা আমতা করে বলে।

সোহাগ মির্জাঃ ঘড়িতে টাইম দেখেছিস কয়টা বাজে? বাড়ির কাগজগুলো কে করবে শুনি? আজ আমি অফিসে যাব না।তাই আজ বাড়িতেই ব্রেকফাস্ট করব ভেবেছি।আর তুই কিনা পরে পরে ঘুমোচ্ছিস?

মিরাঃ আপনি একটু বসুন আমি এক্ষুণী আপনার জন্য ব্রেকফাস্ট রেডি করে আনছি।বলে দরজার কাছে গিয়ে কিছু একটা ভেবে মিরা আবার ফিরে আসে।

সোহাগ মির্জাঃ কি হল?

মিরাঃ না মানে আপনি তো রোজ সকালে খুব ভোরে অফিসে চলে যান। বাইরে ব্রেকফাস্টে কি খান তাতো আমি যানি না।

সোহাগ মির্জাঃ স্ত্রী হয়েছিস আর এটুকুর খোঁজও নিস না।এ তুই তো দেখছি স্বামীর কি পছন্দ, অপছন্দ কিছুই যানিস না।আর বলিস কিনা আমার বউ হবি! হাত দিয়ে মিরার গালটা শক্ত করে চেপে ধরে।

মিরাঃ আহ্ ছাড়ুন আমাকে! সোহাগের থেকে মিরা নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে, আপনি যদি না বলেন তাহলে আমি যানবো কি করে? তারপর আমি কি থেকে কি আপনার জন্য বানিয়ে আনবো যদি আপনার মুখে না রোচে?

সোহাগ মিরাকে বিছানায় ছুড়ে মারে।শক্তকরে মিরার দুই বাহু চেপে ধরে বলে, তোর সাহশ তো দেখছি দিন দিন বেরে যাচ্ছে।মিরার ফোলা ঠোটটাতে আঙুল দিয়ে চেপে ধরে, আজ দেখছি তোর এই মুখে খুব বলি ফুটেছে।আর যেন কখনও তোকে আমার মুখের উপরে কথা বলতে না দেখি।নইলে এর ঝাঁজ তোকে বোঝাতে আমার বেশী টাইম লাগবে না।

মিরাঃ সোহাগের আঙুলে একটা কামড় বসিয়ে দেই। অনেক হয়েছে আর না।বিয়ের আগে তো শুধু আপনার মুখে মধু ফুটতো।এখন তো ভাষার ছিড়িতে আপনার কাছেও আসতে ঘৃণা হয় আমার।সোহাগকে একটা ধাক্কা দিয়ে উঠে দাড়িয়ে, কাপুরুষের মতো আমার গায়ে যে ভাবে হাত দেন মাঝে মাঝে তো মনে হয় আপনার মতো লোকের পুরুষত্ব না থাকায় ভালো ছিল।এতো জঘন্য ব্যবহার করেন আমার সাথে। কেন কি অপরাধ করেছি আমি? আর কত? আর কত এইভাবে অত্যাচার করবেন আমার উপর।এই কি আপনার সেই ভালোবাসা? কি চান আপনি আমাকে একটু বলবেন? আমি আর পারছি না।হয় আমায় মুক্তি দিন নয় আমায় একটু ভালোবাসা দিন।খুব বিশ্বাস করেছিলাম আপনাকে আমি।বলেন না আপনার স্ত্রী হতে গেলে আর কি কি করতে হবে আমাকে? মেয়েরা তো বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর মনের পছন্দ অপন্দের খবরাখবরের খোঁজ নিয়ে আসে না।আপনি যদি আমাকে একটু সময় না দেন তাহলে কিভাবে আমি বুঝবো আপনাকে! কথাগুলো বলতে গিয়ে মিরার চোখে পানি চলে আসে।

সোহাগের মিরার মুখটা দেখে খুব মায়া হতে থাকে।একটা সময় মিরার চোখের পানি সোহাগ সহ্য করতে পারত না।মিরার মন খারাপ থাকলে সারাদিন একটার পর একটা সারপ্রাইজ দিয়ে মিরার মুখে হাসি ফোঁটানোর চেস্টা করত।
সোহাগ মিরার খুব কাছে চলে আসে।দুই হাত দিয়ে মিরার গালটা আকড়ে ধরে মুখটা উঁচু করে তোলে। নিজের ঠোঁট দিয়ে মিরার চোখের পানি মুছিয়ে দেই।তারপর যখনই নিজের ঠোঁটটা মিরার ঠোঁটে বসাতে যাবে ঠিক তখনই মিরা নিজের হাতটা দুইজনের ঠোঁটের মাঝখানে নিয়ে আসে।

মিরাঃ আমি ব্রাশ করি নি! সরুন। বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে কিচেনে চলে যায়। গ্যাসের চুলাটা অন করে দিয়ে বিরবির করে বলে লোকটা আস্ত একটা অসভ্য! যখন তখন শুধু আমাকে হেনস্তা করার বাহানা খুঁজে। নাহ এই লোকটাকে যেভাবেই হোক সোজা পথে আনতে হবে। কি পেয়েছেটা কি? আমি কি মানুষ না? আমারও একটা মন আছে।সেই মনটাতে খুব কস্ট হয় যখন আমার সাথে উনি খারাপ বিহেভ করেন।

কিছুক্ষণ পর,, মিরা গরম, গরম পরোটা আর আলুভাজি নিয়ে ঘড়ে এসে দেখে সোহাগ বিছানার উপর গাদাগাদি কাপড় মেলে রেখেছে।

মিরাঃ আমরা কি কোথাও যাচ্ছি?

সোহাগ মির্জাঃ নাহ।

মিরাঃ তাহলে এতো কাপড় কেন বের করে রেখেছেন? মনে তো হচ্ছে আলমারীর সব কাপড়ই এখানে!

সোহাগ মির্জাঃ তোমার কথাগুলো শুনে আমার মনটা বদলে ফেললাম।ভেবে দেখলাম তোমাকে স্ত্রী হবার একটা সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। সুযোগটা নিতে রাজি থাকলে তোমাকে কিছু পরীক্ষা দিতে হবে।পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলেই তুমি আমার স্ত্রীর হবার সম্পূর্ণ সম্মাণ ও মর্যাদা পাবে।হতে পারবে আমার যোগ্য অধাঙ্গিনী।আর মনে রেখ আমার পরীক্ষায় উত্তির্ন না হলে আজ কিন্তু পুরো বাড়িতে ঝাড়ু-পোছা লাগিয়ে মেঝে পরিষ্কার করতে হবে।বাড়ির একটা কোনাও বাদ দিতে পারবে না। কয়েকটা কাপড় মিরার হাতে ধরিয়ে দিয়ে, ওয়াশরুমে যাও।৩০ মিনিট সময় আছে তোমার কাছে,,ওয়াশিন মেশিন ছাড়াই সব পরিষ্কার করবে। তারপর আয়রন করে ঠিক যেভাবে আগে আলমারীতে সাজানো ছিল সেভাবেই গুছিয়ে রাখবে।
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
মিরাঃ একটু মুচকি হেসে, এমন ফালতু আইডিয়া কোথা থেকে বের করেন বলেন তো? আমাকে কি আপনার বোকাঁ মনে হয়? পুরো কাপড়ের দোকান সামনে রেখে বলছেন ৩০ মিনিটে ধূয়ে আয়রন করে দিতে? আর শুনুন আমি আপনার খেলনা পুতুল নই।কোনো পরীক্ষা টরীক্ষাই আমি দিতে পারব না।আপনার এসব ছেলে মানুষী এবার বন্ধ করুন।আর এটা ভুলে যাবেন না আমাকে বিয়ের প্রস্তাবটা আপনিই দিয়েছিলেন।আমি আপনার যোগ্য নাকি অযোগ্য সেটা তো আপনার বিয়ের আগেই ভাবা উচিত ছিল।

মিরা বিছানা থেকে একটি শাড়ি আর তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।আর সোহাগ থ হয়ে পরে থাকে।বিছানার উপর বসে পড়ে পা ঝুলিয়ে দিয়ে ভাবে আর কি উপায়ে মিরাকে শাস্তি দেবে!

(সরি, আমার ফোনে টাসে প্রবলেম।যার কারণে সাজিয়ে লিখতে পারলাম না।ক টাইপ করলে ঝ টাইপ হচ্ছে আর ন টাইপ করলে ম।অনেক কস্টে এটুকু লিখছি।চাইলেও বড় করতে পারি নি।যদি করতাম পোস্টের আগেই ডিলিট হয়ে যেত।২য় ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষা আমার।পরীক্ষাটা শেষ হলেই নিউ ফোন থেকে বড় করে পার্ট দেওয়ার চেস্টা করব।তখন লেখাগুলোও সাজানো গোছানো হবে।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here