গল্পঃ প্রতিশোধ পর্বঃ ১১

0
2166

গল্পঃ প্রতিশোধ
পর্বঃ ১১
লেখাঃ #Mst_Liza
,
মিরাঃ আপনার মতো পুরুষের সাথে সংসার করা যায়? আমার জীবনটায় শেষ করে দিলেন।ইচ্ছা তো করছে আপনাকে.. দাঁতেদাঁত চেপে মিরা এদিকে, ওদিকে তাকাতে থাকে..

সোহাগ এক ঝাটকায় টেনে মিরাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

সোহাগ মির্জাঃ বেশি পকপক করছো কিন্তু তুমি।

মিরাঃ আমি পকপক করছি? ছাড়ুন আমাকে! আপনার সাথে আমি আর এক মুহূর্তও থাকবো না।

সোহাগ মির্জাঃ এভাবে থামবে না তুমি! তোমাকে আমি?

মিরাঃ কি করবেন মারবেন? মারুন। শুধু তো ওইটাই করতে পারেন।

সোহাগ মির্জাঃ না তোমাকে আর মারা যাবে না।অন্যরকম শাস্তি দিতে হবে।

মিরাঃ অন্যরকম শাস্তি?

সোহাগ মির্জাঃ হুমম। দিয়ে দেখায়?

মিরাঃ দেখুন আপনি যদি এখন উল্টা পাল্টা কিছু করেন তাহলে ভালো হবে না বলে দিলাম।

মিরা আর কিছু বলার আগেই সোহাগ মিরার মুখটা উঁচু করে মিরার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নেয়। মিরার মাথাটা এমন ভাবে চেপে ধরে রাখে, যে চাইলেও মিরা সোহাগের থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারে না।মিরা অনেক দাপাঁদাপিঁ ঝাপাঁঝাপিঁ করতে থাকে। সোহাগের তাতে কোনো হুশ নেয়।সে এবার মিরার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে কপালে, গালে, গলায়, মুখে কিস করতে ব্যস্ত।

মিরা হাতদুটো দিয়ে সোহাগের বুকে আর পিঠে ইচ্ছামত নখের আচর দেয়।সোহাগ আহ্ করে ওঠে। মিরাকে ছেড়ে দিয়ে মিরার মুখের দিকে তাকায়।মিরা সোহাগকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরাতে চাই।আর সোহাগ মিরার হাতদুটো শক্ত করে চেপে ধরে।

সোহাগ মির্জাঃ কি হচ্ছে তোমার? আমাকে ভালো লাগছে না?

মিরাঃ ছাড়ুন আমায়! আপনি আমাকে স্পর্শ করবেন না!

সোহাগ মির্জাঃ তাই নাকি? তোমাকে আমি..

সোহাগ আবার মিরার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট জোড়া বসিয়ে দেয়।অনেকক্ষণ এভাবে থাকার পর
সোহাগ মিরাকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে গিয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে থাকে।

মিরা সোহাগকে টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।রাগী দৃষ্টিতে সোহাগের দিকে তাকায়।

মিরাঃ এটা কি করলেন আপনি?

সোহাগ একটু মুচকি হেসে মিরার গালটা আকড়ে ধরে।

সোহাগ মির্জাঃ কি করলাম দেখতে পাও নি? আমার বউটাকে আদর করেছি।

মিরাঃ কেন করলেন?

সোহাগ মির্জাঃ আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই!

মিরাঃ ইচ্ছা হয়েছে বলেই আমার কাছে আসবেন? আমায় জোড় করে আদর করবেন?
সোহাগের শার্টের কলারটা মিরা টেনে ধরে,
যখন আপনার ইচ্ছা হবে আমার প্রতি অত্যাচার করবেন।ইচ্ছা হলেই চোখের সামনে অন্য মেয়ে নিয়ে বেড রুমে চলে যাবেন।এই, আর কত অপমান করবেন আমাকে বলতে পারেন?

সোহাগ মির্জাঃ আমি তোমাকে অপমান করেছি?

মিরাঃ এটা অপমান ছাড়া আর কি? এখন তো আপনার কোথাকার কোন বউকে বাড়িতে এনে রেখেছেন।আপনার বেড রুমে তো এখন থেকে সেই থাকবে। আমার কোনও মান-সম্মাণ কি আছে আপনার কাছে? বিয়ের পর থেকে চোখের সামনে প্রতিনিয়ত আপনার পরকিয়া দেখতে হয়েছে।এরপরও আপনার সাথে কিভাবে থাকি বলুন তো?

সোহাগ রেগে যায়।মিরার গালটা জোড়ে চেপে ধরে।

সোহাগ মির্জাঃ সমস্যাটা কি তোমার? একটা কথা একবার বললে কি বোঝ না?

মিরার চোখে পানি চলে আসে।

মিরাঃ আজ যদি আপনি আমায় মেরে ফেলেন তবুও বলবো আপনি একজন দুশ্চরিত্র, খারাপ, নোংরা মানুষ!

সোহাগ মির্জাঃ মিরা আমাকে রাগীও না কিন্তু।

মিরাঃ আমি আপনাকে রাগাছি? আমি তো আপনাকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম।আর আপনি কি করলেন? আসলে আমারই ভুল। আমার বোঝা উচিৎ ছিল আপনি কখনও শুধরাবেন না।

সোহাগ মিরাকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে যায়।মিরার উল্টো দিকে মুখ করে দাড়িয়ে থাকে।

সোহাগ মির্জাঃ সরি!

মিরাঃ সরি! সরি বললেন আর সব ঠিক হয়ে গেল?

সোহাগ মির্জাঃ কেন এমন করছো তুমি?

মিরাঃ বুঝতে পারছেন না? আমার উপর যেভাবে নিজের অধিকার বোধটা খাটান, এতে আমার অসহ্য লাগে।

সোহাগ মির্জাঃ ঠিক আছে! এরপর থেকে তুমি না চাইলে আমি আর তোমার কাছে আসবো না।

মিরাঃ তা কেন আসবেন এখন তো নতুন শরীর পেয়ে গেছেন।

সোহাগ মির্জাঃ কি চাউ তুমি বল তো? আমি কি এই বাড়ি থেকে চলে যাব? এতো অশান্তি আমি আর নিতে পারছি না!

মিরাঃ অশান্তি কি আমি করি?

সোহাগ মির্জাঃ আমি কি সেটা বলেছি?

মিরাঃ আপনার বলা আর না বলায় কি যায় আসে সতিন তো ঢুকিয়ে ফেলেছেন আমার জীবনে।

সোহাগ ঘুরে মিরার সামনে আসে।

সোহাগ মির্জাঃ তোমাকে আমি কিভাবে বললে বুঝবে বল তো?

মিরাঃ আমার যা বোঝার বোঝা হয়ে গেছে।আমি আর আপনার সাথে থাকতে চাই না।

সোহাগ মির্জাঃ কি চাউ তুমি?

মিরাঃ ডিভোর্স!

সোহাগ মির্জাঃ এই মিরা মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? কি বলছো ভেবে বলছো? বিশ্বাস কর! ঐ মেয়েটিকে আমি চিনি না।

এমন সময় জড়িনা ড্যাং,ড্যাং করে লাফিয়ে সিঁড়ি থেকে গান গাইতে গাইতে নামে।

ঝুঁঠ বোলে কাউয়া কাটে…
কালি কাউয়ে ছে ডারিও..
মে মাইকে চালি যাউংগি..
তুম দেখতে রাহিও
মে মাইকে চালি যাউংগি..
তুম দেখতে রাহিও

জড়িনা গান গাইতে গাইতে সোহাগ আর মিরার চারপাশে হাততালি বাজিয়ে বাজিয়ে ঘুরছে।

মিরাঃ এই মেয়ে, এইভাবে লাফাচ্ছো কেন?

জড়িনাঃ মনে সুখ জাগছে তো তাই।আচ্ছা, সতীন আফা! আপনে কি আজই চইলা যাইবেন? আমি কি আপনের ব্যাগ পত্র সব গুছাইয়া দিবু? ভালোই হইবে! আমারও ইচ্ছা করে না সতীনের ঘড় করতে।

মিরা সোহাগের দিকে তাকায়,

মিরাঃ শুনেছেন? এরপরও আপনার সাথে থাকা যায়?

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here