গল্পঃ প্রতিশোধ পর্বঃ ১৩

0
2066

গল্পঃ প্রতিশোধ
পর্বঃ ১৩
লেখাঃ #Mst_Liza
,
মিরা আর রাইশা দুজনে রুমে বসে গল্প গুজব করছে।হঠাৎ রাইশার ঘড়ের জানালায় কেউ একজন ঢিল ছুড়ে দিয়ে চলে যায়।রাইশা এগিয়ে গিয়ে দেখে ঢিলের সাথে একটি কাগজ মোড়ানো।যাতে লেখা আছে, “আমি যানি তোমার সন্তান কোথায় আছে।যদি তোমার সন্তানকে পেতে চাও এক্ষুনি রূপসা ব্রীজের নিচে চলে এসো।” রাইশা ব্যাপারটা মিরাকে গিয়ে যানায়।মিরা রাইশাকে একা যেতে দিতে চাইনা।তাই দু’জনে মিলেই রইনা হয়।

ওদিকে,
সোহাগ মির্জাঃ মোনাআআআ! কোথায় তুমি মোনাআআ?
চিৎকার করে ডাকতে থাকে সোহাগ মোনাকে।

মোনার মেজো বোন জুলি সোহাগের চিৎকার শুনে বেড়িয়ে আসে।

জুলিঃ একি সোহাগ মির্জা।এখানে কি মনে করে আসলেন?

সোহাগ মির্জাঃ তোমার বোন কোথায় জুলি?

জুলিঃ আমার বোন? হাহাহা! কোন বোনের কথা বলছেন আপনি?

সোহাগ মির্জাঃ প্লিজ জুলি বল তোমার আপু কোথায়?

জুলিঃ আমার আপু? তা হঠাৎ আমার আপুকে আপনার কি দরকার পরল?

সোহাগ মির্জাঃ সেটা তোমাকে আমি পরে বলব! এখন তোমার আপুকে একটু ডেকে দাও।তার সাথে আমার কিছু কথা বলার আছে।

জুলিঃ সরি! আমার আপু এখন বাসায় নেই আর যদিও থাকত আপনার সাথে কখনোই কথা বলতে চাইতো না।

সোহাগ মির্জাঃ কেন?

জুলেঃ কেন সেটা আবার যানতে চাইছেন?
ভুলে যাবেন না সোহাগ মির্জা আপনার জন্য আমরা আমাদের বাবাকে হারিয়েছি।ছোট বোন দিনাকে হারিয়েছি!

সোহাগ মির্জাঃ তোমরা ভুল বুঝছো আমাকে!

জুলিঃ আমরা ভুল বুঝছি? যেটা নিজের চোখে দেখেছি সেটাও কি ভুল?

সোহাগ মির্জাঃ হ্যাঁ হ্যাঁ ভুল।তোমরা ভুল বুঝছো আমাকে।সেদিন আমি দিনাকে অতন্ত্য সুন্দরভাবে বুঝিয়েছিলাম।আমি যখন চলে যায় তখন স্যান্ডি তোমাদের বাড়িতে ঢোকে।আমার পুরো বিশ্বাস সেই রাতের ঘটনার জন্য স্যান্ডিই দায়ী।

জুলিঃ মিথ্যা বলবেন না সোহাগ মির্জা। দিনা নিজে আমাদেরকে ফোন করে বলেছিল আপনি ওকে ভালোবাসেন, বিয়ে করতে চান।সেদিন আপনিই আমাদের বাড়িতে ছিলেন।আর ওর সাথে..

সোহাগ মির্জাঃ আমি এমনটা কিছুই করি নি।আমি তো জানতামই না দিনা আমাকে ভালোবাসে।আমি তো শুধু ওকে বোঝাতে চেয়েছিলাম আমি মিরাকে ভালোবাসি আর মিরাকে বিয়ে করতে চাই।

জুলিঃ আমি বিশ্বাস করি না।

সোহাগ মির্জাঃ তুমি বিশ্বাস না করলেও এটাই সত্যি! ভেবেছিলাম তুমি অন্তত আমাকে বিশ্বাস করবে কিন্তু না তুমিও মোনার মতোই আমাকে ভুল বুঝলে।আরে ওতো আমার ফ্রেন্ড ছিল।স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি একসাথে আমরা পার করেছি।ও আমাকে বুঝলো না।তুমি কিভাবে বুঝবে?
দিনাকে আমি শুধুই ছোট বোনের মতো দেখতাম।দিনার সাথে এমন কিছু আমি কল্পনায়ও ভাবতে পারি না।আমি জানতামই না দিনাকে রেপ করে খুন করা হয়েছিল! তোমাদের অসুস্থ বাবাকে খুন করা হয়েছিল।কারণ নিউজটা আমি দেরিতে পায়। আর পাওয়া মাত্রই ছুটে এসেছিলাম কিন্তু তোমাদেকে পায় নি।তোমাদের বাড়িতে আদালত কতৃক সিল পরে গিয়েছিল।ব্যবসায় ডুবে গিয়েছিল তোমার বাবার।সবার ঋণ আমি পরিশোধ করি।তোমাদের বাড়িটা আমি নিলামীর হাত থেকে বাচাঁয়।আর তোমরা কিনা!

জুলিঃ এর সবই আপনার নাটক! আমাদের কাছ থেকে আপন জনদের কেড়ে নিয়ে আবার দয়া দেখাতে কে বলেছিল আপনাকে?

সোহাগ মির্জাঃ সবই কি দয়া? আচ্ছা তোমাদের দয়া দেখিয়ে আমার কি লাভ ? আমি যদি এতোই খারাপ হবো তাহলে কেন তোমাদের জন্য ভাববো?

জুলি ভেবে দেখে সত্যিই তো এটা তো ভেবে দেখি নি।সোহাগ মির্জার কি লাভ ছিল আমাদের উপকার করার! তাছাড়াও উনি তো আমার দিকে কখনও খারাপ নজরে তাকায় নি! সোহাগ ঘুরে চলে যাচ্ছে জুলি সোহাগকে ডাক দেই।

জুলিঃ সোহাগ ভাইয়া?

সোহাগ পিছনে জুলির দিকে ঘুরে তাকায়।

জুলিঃ ভাইয়া আমি আপনাকে বিশ্বাস করছি।এখন খুব দেরি হয়ে গেছে।মোনা আপু প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মিরা আপু আর রাইশাকে কৌশলে রূপসা ব্রীজ নিয়ে গেছে।

সোহাগ মির্জাঃ কি বলছ কি তুমি?

জুলিঃ হ্যাঁ ভাইয়া। আপু ওদেরকে মেরে ফেলবে।

সোহাগ মির্জাঃ তোমার আপুকে আটকাও জুলি!

জুলি মোনাকে ফোন করে কিন্তু ফোনটা বন্ধ পায়।

জুলিঃ মোনা আপুর ফোনটা বন্ধ ভাইয়া।আমাদেরকে ওখানে যেতে হবে।


মিরাঃ কে আপনি? আমাদের এভাবে বেঁধে রেখেছেন কেন?

মোনা মিরার চুলের মুঠি টেনে ধরে।

মোনাঃ আমি কে সেটা জানতে চাস? তোর জম আমি!

মিরার মাথায় হাতের বন্দুকটা দিয়ে অনবরত আঘাত করতে থাকে মোনা।

রাইশাঃ প্লিজ মোনা আপু আমার ভাবিকে তুমি ছেড়ে দাও।মারতে হয় আমাকে মারো।

মোনাঃ মরবার এত্তো সক তোর? ঠিক আছে আগে তোকেই মারবো।

মিরাঃ নাআআআ আমাকে মারো ওকে ছেড়ে দাও!

রাইশাঃ না আমাকে!

মিরাঃ না আমাকে।

মোনা রেগে যায় বাআআআআচ।অনেক হয়েছে।আজ তোরা দুজনই মরবি।তোদের মৃত্যু এতোটা যন্ত্রণা দায়ক হবে যে দাফন করার জন্য শরীরের একটা হারও খুঁজে পাওয়া যাবে না।মোনা মিরার দিকে তাকায়, আগে তোকেই মারি।বন্দুকটা নিয়ে মিরার সামনে ধরে।তারপর এক থেকে দশ পর্যন্ত গুনে ঘ্যাচাং করে মিরার বুকে একটা গুলি বসিয়ে দেয়।তারপর মোনা তার গুন্ডাগুলোকে ডেকে মিরাকে জাহাজে উঠিয়ে দেয়।আর গুন্ডাগুলোকে বলে যাও গিয়ে মাঝ নদীতে ফেলে এসো একে।গুন্ডাগুলো মাঝ নদীতে মিরাকে গিয়ে ফেলে দিয়ে মোনাকে ফিরে এসে জানায়।মোনা তখন একটা বিজয়ীর হাসি দিয়ে চিৎকার করে বলে, সোহাগ মির্জাআআআ আমার বোনের সাথে যা করেছিস আমি তার প্রতিশোধ নিতে পেরেছি।রূপসা নদীর মাছগুলো তোর বউকে ছিড়ে ছিড়ে খাবে।
তারপর রাইশার দিকে বন্দুকটা ধরে……

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here