গল্পঃ প্রতিশোধ
পর্বঃ ২৩
লেখাঃ #Mst_Liza
,
মায়ার চোখ বেয়ে দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পরে।মাহির দেখে গারদের গিরিলের উপর রাখা মায়ার হাত দুটি নিয়ে নিজের হাতের আঙুলে মায়ার হাতের আঙুল চেপে ধরে এক অপলক দৃস্টিতে মায়ার মুখপানে তাকিয়ে থাকে।মায়ার হাতের এই স্পর্শ মাহিরকে কাল রাতের কথাগুলো মনে করিয়ে দেয়।
মাহিরঃ কাল রাতে কি করেছিলে তুমি আমার সাথে?
মায়াঃ আমি?
মাহির চোখদুটো বড় বড় করে মায়ার দিকে তাকায়।যা দেখলে মায়া সত্যিই ভয়ে মরে যাবে।মায়া মাথাটা ডানে, বামে ঝাকিয়ে ভয়ে ভয়ে বলে,
মায়াঃ কই কিছু করি নি তো
মাহিরঃ একদম মিথ্যা বলবা না আমার সব মনে পরে গেছে
মায়াঃ কি মনে পরেছে?
মাহিরঃ আমাকে বোকা বানিয়ে আদর খেয়েছো!
মায়া কি বলবে বুঝে উঠতে পারে না।
মায়াঃ সরি আমি আসলে
মাহিরঃ থাক আর বলতে হবে না। এর শাস্তি তো তোমায় আমি বাইরে এসে দেব।এতো বড় সাহস তুমি পাও কোথায়?
মায়াঃ আমি ভেবেছিলাম আপনি..
মাহিরঃ আমি কি?
মায়াঃ কিছু না। আপনি আগে বাইরে আসুন তো তারপর আমাকে যে শাস্তি দেবেন দিয়েন।
কথাটা বলেই মায়া কেঁদে দেয়।
মাহিরঃ এই মেয়ে কাদঁছো কেন?
মায়া কাঁদতেই থাকে।
মাহিরঃ আচ্ছা থামো।এবারের মতো তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।আর কখনও যেন এমনটা করা হয় না।মনে থাকবে?
মায়া তবু্ও কেঁদে চলেছে।মাহির জোড়ে একটা ধমক দেয়।
মাহিরঃ থামো বলছি।
মাহিরের ধমক শুনে মায়া কেঁপে ওঠে।ভয়ে ভয়ে মাহিরের দিকে তাকায়।দেখে মাহির মুচকি মুচকি হাসছে।
মায়াঃ আপনি সত্যিই খুব খারাপ।এমন একটা পরিস্থিতিতেও আমাকে ধমকাচ্ছেন।
মাহিরঃ আচ্ছা আর ধমকাবো না যেটা বলেছি সেটা গিয়ে আগে কর।
মায়াঃ আমি যদি না পারি।
মাহিরঃ পারবে
মায়াঃ আমার খুব ভয় করছে স্যার
মাহিরঃ কিসের ভয়?
মায়াঃ হারিয়ে ফেলার ভয়।আমি পারবো না আপনাকে হারাতে।
মাহিরঃ কি বললে?
মায়া জ্বীব কামড়ে ধরে, কি বললাম এটা?
মাহিরঃ তুমি কিন্তু অনেক পেকে গেছো। তোমাকে এবার শাসন না করলে হচ্ছে না।
সোহেব খান উকিলের সাথে কথা বলছিল।সে এসে মায়া আর মাহিরের দিকে অসহায় দৃস্টিতে তাকায়।
মায়া শ্বশুরকে আসতে দেখে মাহিরের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে শ্বশুরের দিকে ঘুরে দাড়ায়।তারপর প্রশ্ন করে।
মায়াঃ কি হয়েছে বাবা?
সোহেব খানঃ উকিল বলেছে জামিন করানো যাবে না।কাল শনিবার কোর্ট বন্ধ।রবিবারে কেসটা কোর্টে উঠবে।আমাদের হাতে মাত্র দু’দিন সময় আছে।এর মধ্যেই যা করার করতে হবে।নইলে..
মাহিরঃ এতো চিন্তা করো না বাবা তোমার বৌমা আছে তো ও সব ঠিক করে দেবে।
মাহিরের মুখে বৌমা কথাটা শুনে মায়ার মনের ভেতরটা খুশিতে ভরে ওঠে।তাহলে কি মাহির মন থেকে মায়াকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিলো?
আবার মনে মনে ভাবতে থাকে, সে কি পারবে মাহিরকে নির্দোষ প্রমাণ করতে?
কিছুক্ষণ পর,
মায়া আর সোহেব খান বাড়িতে আসে।মায়ার শ্বাশুড়ি মা তখন সবজি কাটছে দুপুরে রান্না করার জন্য।সে কিছুই যানে না।
মুফতি খানঃ কি গো দুজন একসাথে কোথা থেকে আসছো?
বৌমা আজ কি হসপিটালে যাও নি?
এই তুমিও অফিসে না গিয়ে বৌমাকে নিয়ে আজ আবার কোথা থেকে আসছো?
তোমাদের এই অভ্যাসটা আর গেল না।
মাহির যদি যানতে পারে কি হবে যানো? ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বৌমাকে নিয়ে তুমি আজও নিশ্চয় ফুসকা খাওয়াতে গিয়েছিলে? এসবের জন্যই ওদের দুজনের মাঝে মনোমালিন্য চলে। তোমার অন্তত এসব বোঝা উচিৎ ছিল।
সোহেব খানঃ আহ মুফতি থামবে।সেই এসেছি ধরেই শুধু বকবক করে যাচ্ছো।
মুফতি খানঃ আমি বকবক করছি?
মায়াঃ প্লিজ থামো না তোমরা।
মায়া তার শ্বাশুড়ি মায়ের কাছে গিয়ে সব খুলে বলে।
।
স্নিদ্ধা বসে বসে টিভিতে মাহিরের নিউজ দেখে চোখের পানি ফেলছে।নেহা ঠাসসসস করে ডা. নাহিদের গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।মনা এসে নেহাকে টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
মনাঃ তোমার সাহস হয় কিভাবে আমার ছেলের গায়ে হাত তোলার?
স্নিদ্ধা উঠে এসে ডা. নাহিদকে টেনে ধরে নেহার থেকেও জোড়ে একটা থাপ্পড় মারে।
মনা ভীষণ রেগে যায়।সিদ্ধার দিকে ঘুরে রাগী দৃস্টিতে তাকায়।
মনাঃ সিদ্ধা তুই তোর ভাইকে মারছিস?
নেহাঃ ঠিকই করেছে মেরে।একটা অকর্মের ঢেকি।একটা কাজও ঠিক ভাবে করতে পারে না।
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
মনাঃ দেখ নেহা তোমার শত্রুতা রাইসূল সিকদারের সাথে আর আমার শত্রুতা সোহাগ মির্জার সাথে।
নেহাঃ আর সেজন্যই এদের উপর প্রতিশোধ তুলতে আমি তোমার সাথে হাত মিলিয়ে ছিলাম।
তোমার ছেলে কি একটা কাজও ঠিক ভাবে করতে পারে না?
ডা.নাহিদঃ প্লিজ আন্টি বিশ্বাস করুন আমি আমার দিক থেকে যথেষ্ট চেস্টা করেছি রাইসূল সিকদারের স্বপ্নের হসপিটালের দুর্নাম করতে।ভেবেছিলাম আপনাদের সারপ্রাইজ দেব তাই প্লানটার কথা আগে বলা হয় নি।
স্নিগ্ধাঃ তোর প্ল্যানের চক্করে আজ আমার মাহিরটা ফেঁসে গেছে বেয়াদব।
সিদ্ধা ডা.নাহিদকে আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।
ডা.নাহিদঃ আপু আমি আসলে…
চলবে….