গল্পটা তোমার আমার ২য় পর্ব

0
4207

গল্পটা তোমার আমার
২য় পর্ব
Musfikun Nesa Tanjin

“ এসব আপনি বিয়ের আগে কেনো বলেন নি, তাহলে আমি বিয়েটা করতে রাজি হতাম না। ফাজলামি নাকি এখন বলছেন গার্লফ্রেন্ড আছে।“

অবাক হচ্ছে ফারহান যে মেয়ে পাঁচটা কথার একটা উত্তর দেয় সে রীতিমত শাশাচ্ছে।

“ আমি বলার সুযোগ পাই নি। আর আমি আমার গার্লফ্রেন্ডকে ঠকাতে পারবো না। তাই তোমাকে সেই অধিকার দিতে পারব না।“

“ শুধু শারীরিক চাহিদা পূরণ করাটাই যদি আপনার কাছে স্ত্রীর অধিকার হয়ে থাকে তাহলে আমি বলে রাখি, I am not interested in you. আর আমি এমন মেয়ে না যে ৪ বার কথা বলে একটা ছেলের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করবো, যতই সে আমার হাসবেন্ড হোক। এই শারীরিক সম্পর্ক বাদেও অনেক অধিকার আছে। আর তা আমি ছাড়বো না। আর হ্যা আপনি কি জানে বললেন গার্লফ্রেন্ডকে ঠকাবেন না। আমাকে কেনো ঠকাবেন?”

ফারহানের গায়ে লেগেছে কথাগুলো। সুঁইয়ের মত ফুটছে। কারন যেভাবে অরনী কথাগুলো বলছে পুরাই ফারহানকে ট্রিগার করে।

“ তুমি বিয়েটা করতে চাচ্ছিলে না তাই ভেবেছি হয়তো তোমার আমাকে পছন্দ না। তাই তোমাকে এ কথাগুলো বললে তুমি ইজিলি নিবা। আর ডিভোর্স ও দিয়ে দিবে আমাকে।“ রাগ কন্ট্রোল করে বললো।

“ বাহ্‌! দারুন প্লানিং ভালো। তা মেয়েটার নাম কি?”

“ অহনা”

“ তা প্রথমে ওকে বিয়ে করলেন না কেনো?”

“ ও অস্ট্রেলিয়ায়। ৬ মাস পর আসবে, ততদিনে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। আর বাবা বিয়ের কথা বলায় আমি বাবাকে অহনার কথা বলি। বাবার ওকে ভালো লাগে নি আর ওর বাইরে থাকাটা একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। আরো ও একটা কারন আছে, তাই”

“ বুঝলাম, তা আপনার অহনা জানে আপনার বিয়ে হয়েছে?”

“ হ্যা। ওর এতে কোনো প্রবলেম নেই।“

“ কিন্তু আমি তো আপনাকে ডিভোর্স দিবো না। আর সেটা ৬ মাস হোক বা ৬ বছর পর হোক না কেনো । আর নিজের অধিকার বুঝে নিতে আমি জানি। বেশি তেড়াবেড়া করলে আমার শ্বশুড় আব্বাতো আছেন। আর শুনুন আবার ও বলছি আপনাকে প্রথমত আমি বিয়ে করতে চাই নি। বিয়েটা আপনি করেছেন আমাকে। আপনি বিয়ে না করলে আমি ভেসে যেতাম না। তাই নিজের কর্তব্যটা পালন করুন। আর স্পাইনলেস হয়েন না। সবাই আপনার মতো স্পাইনলেস এটাও ভাববেন না। কেনো জানে আমার ভাগ্যে সব স্পাইনলেস জুটে!”

বলে চলেই যাচ্ছিলো অরনী হঠাৎ হেচকা টানে বিছানায় ফেলে দিলো ফারহান ওকে। চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে। চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে অরনীর দিকে। হাত দুটো এতো শক্ত করে ধরছে যেনো ভেঙ্গে ফেলবে। ফারহানের চোখের দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে আসে অরনী। ওকে দেখে মনে হচ্ছে না ওর ব্যাথা লাগছে বা কিছু।

“ তোকে তো আমি ভাবছিলাম ছয়মাস এঘরে রাখবো। কিন্তু একমাসের মধ্যে তুই নিজেই বাড়ি ছেড়ে দিবি, I challenge you. তোর মত অ্যারোগেন্ট মেয়ে টলারেট করা আমার পক্ষে সম্ভব না।“

অরনীর কানে মুখ নিয়ে বললো ফারহান। ওর নিঃশ্বাস অরনীর মুখে পড়ছে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে অরনী বললো যা শোনার পর ফারহান তখনই উঠে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

“ একটু আগে বললেন যাতে আমি আপনার কাছে কোনো স্ত্রীর অধিকার না চাই, এখন আমার উপর উঠে বসেছেন। মতলব কি ? উঠুন আমার উপর থেকে।“

কথাটা শুনে ফারহানের রাগ আরোও বেড়ে যায়। আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো অরনীকে মেরে বসবে। তাই সে বের হয়ে যায়। অরনী ফারহানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। বুকে যেনো কেউ পাথর চাঁপা দিয়ে দিয়েছে। খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে না। রাগ হচ্ছে, চেঁচিয়ে কাঁদতে মন চাচ্ছে, কিন্তু মরার চোখের পানি আসছেই না। কেনো এমন লাগছে। ও এই বিয়েতে রাজি ছিলো না। ফারহানকে ওর অতটাও ভালো লাগে নি যে ডিভোর্স দিতে পারবে না। কারন ওতো ফারহানকে ভালোবাসে না শুধু জিদ দেখিয়ে শেষমেষ বিয়েটা করেছে। তাহলে কেনো কষ্ট পাচ্ছে? থাক না ফারহান ওর অহনাকে নিয়ে । আসলে বিয়ে জিনিসটা পবিত্র। আল্লাহই ঠিক করেন জন্ম, মৃত্যু আর বিয়ে। এজন্য একদিনের বিয়েটাই অরনী ছাড়তে পারছে না। আর হাসবেন্ড তো ভালোবাসুক বা নাই বাসুক কারোর সাথে ভাগ করা যায় না। আর অরনী ছোটবেলা থেকে নিজের জিনিস কারোর সাথে শেয়ার করে না। নিজের ছোট চুলের ক্লিপই হোক না কেনো, আর এত হাসবেন্ড। কি করবে বুঝছিলো না যখন ফারহান ওকে ওই কথাগুলো বলছিলো, রাগে জিদে কুল সেজেতো বলে দিছে যে ডিভোর্স দিবে না কিন্তু আসলে কি সংসার করতে পারবে অরনী। এগুলো ভাবছিলো বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে। ফাবিহা ডাকতে আসলো অরনীকে। ওর ডাকে বাস্তবতায় ফিরে এলো অরনী। ২ টা বেজে গেছে আর ঘরের বউয়ের খোঁজ নেই। অরনী তাড়াতাড়ি মাথায় কাপড় দিয়ে নিচে গেলো। নিচে টেবিলে খাবার দেয়া হয়েছে টেবিলে। ফারহানের আম্মু রিমা বেগম আর চাচি ফরিদা বেগম টেবিল গুছাচ্ছেন।

“ কি হলো? ঘরের বউ এভাবে ঘরে বসে থাকলে কি হবে একটু ফ্রি হতে হবে তো।“ ( রিমা বেগম)

“ না আসলে ঘড়ির দিকে খেয়াল ছিলো না। সরি আর হবে না।“ মিষ্টি করে হেসে অরনী বললো।

“ আরে আমি তো এমনি বলেছি , সরি বলার কি আছে !”

“ কিরে তোর কি বাসার কথা মনে পড়ছে ?”( ফরিদা বেগম)

“ আসলে মা বাবা আর পুচকিকে ছেড়ে এই প্রথম থাকা তাই “

“ টাইম সব ঠিক করে দেবে এখন খেতে বস” ( ফরিদা বেগম)

“ আচ্ছা ফারহান কোথায় ছোটো মা? “( ভাবি)
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
“ ও তো বললো বাইরে খাবে বন্ধুদের সাথে। আজকাল ছেলেমেয়ে কি বলব বিয়ে হয়েছে বাসায় থাক না বাইরে খেতে যাবে।“(রিমা বেগম)

“ থাক না আর তো এভাবে যাওয়া হবে না সংসার শুরু হলে” (ফরিদা বেগম)

অরনী খেতে বসলো , তখন ফারিহা বলে উঠলো………

চলবে

[ আমার ব্যাক্তিগত কারনে কালকে গল্প দিতে পারবো না । আজকে রাতে আর একটা পার্ট দিতে পারলে দিবো]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here