গল্পটা তোমার আমার ৩য় পর্ব

0
3166

গল্পটা তোমার আমার
৩য় পর্ব
Musfikun Nesa Tanjin

” নতুন বরের জরুরি তলবে তো আর ঘরে থাকা যাচ্ছিলো না, কেনো ডাকলি এভাবে?” ( ভুবন)
” খাওয়ার প্লেট থেকে চলে আসতে হলো রে। বিয়ে হয়ে গেছে এখন তো একটু শান্তি দে ভাই” ( প্রিন্স)
” লাল হনুমানের মত না বসে থেকে বলবি তো কি হয়েছে?” (ভুবন)
আচ্ছা বলে রাখি ভুবন আর প্রিন্স ফারহান এর স্কুল জীবনের ফ্রেন্ড। কোনো কথা ওদের থেকে লুকানো নেই। যখন যা দরকার এদের কাছেই ফারহান বলে। আর এরা যেন দেবপ্রদত্ত দূত, সব সমস্যার সমাধান এদের কাছেই। যাক গল্পে ফিরি
” আমি এই অ্যারোগ্যান্ট, রুড মেয়ের সাথে সংসার করতে পারবো না, ব্যাস” ( ফারহান)
” কে৷ অ্যারোগ্যান্ট?? অরনী?? ” ( ভুবন)
” না আমার তো আরোও পাঁচটা বউ আছে! এই একটারে টলারেট করতে পারবো না। আমি তো চ্যালেঞ্জ করে আসছি, একমাসের মধ্যে এই পিসটাকে ঘর দিয়ে বের করবো।” (ফারহান)
” কি হয়েছে খুলে বল না ভাই কি ভনীতা করতেছিস, এখনো একদিন যেতে পারলো না আর তুই কি সব বলতেছিস!!”( প্রিন্স)
” আমার পাঁকা ধানে মই দিছে, শোন তবে কি হয়েছে” ( ফারহান)
এদিকে বাসায়
” ভাবি তোমার হাত এতো লাল কিভাবে হলো? সকালে তো এত লাল ছিলো না” ( ফারিহা)
” না মানে…” ( অরনী)
” হুম বলো কি হয়েছে?” ( ভাবি)
অরনী ভুলেই গেসিলো যে ফারহান হাতে ব্যাথা দিয়েছিলো, আসলে মন যখন অস্থির থাকে তখন মস্তিষ্ক ও কাজ করতে পারে না। যথারীতি থতমত খেয়ে গেছে অরনী। নিজেকে সামলিয়ে বললো
” এলার্জি বোধ হয়, আসলে আমার এমন চুড়ি পরে থাকার অভ্যাস নেই।”
সবার মুখ দেখে বোঝা যাছে কেউ বিশ্বাস করে নেই।
“আসলে আমি একারনে কাঁচের চুড়ি পরি না, স্বর্নের চুড়িতে রিয়েক্ট হবে বুঝি নি।” একটু চুলকানীর অভিনয় করে বললো অরনী। বলতে বলতে রিমা বেগমের সাথে চোখাচোখি হলো, উনি এখনো সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছেন। অরনী মাথা নিচু করে খেতে লাগলো।
অপরদিকে রেস্টুরেন্টে
সব শুনে ভুবন বললো ” রিয়া কি আসলে ছয়মাস পর আসছে? ” ( ফারহানের গার্লফ্রেন্ডের নাম বদলিয়ে রিয়া রাখলাম)
” কাল ফোন এ তাই বললো” ( ফারহান)
” সিরিয়াসলি অরনীর জায়গায় অন্য মেয়ে হলে কি করতো আমি জানি না আমি হলে তোকে ওখানে মেরে ফেলতাম। বিয়ের পরদিন এরকম কথা কে বলে?” প্রিন্স রেগেই বললো।
” তোর তো অজানা নেই আমি বিয়েটা কেনো করছি?” ( ফারহান)
” তাই বলে তুই রিয়ার কথা বলবি? ভাই ওই মেয়েকে ছমাস কেনো সারাজীবন তোর বাবা মেনে নিবে না” ( প্রিন্স)
” প্রিন্স থাম, আমার চিন্তা অরনী বেঁকে বসলো কেন? ও তো এ বিয়েটায় রাজি ছিলো না। আর ওকে দেখে অনেক শান্ত মেয়ে আর বুঝদার মেয়ে লেগেছিল” ( ভুবন)
” আজব ফারহান আসল কারন না বলে যদি আশেপাশে ফাউ কারন বলে তাহলে ও বুঝবে কেমনে? আর যে কারন বলছে একটা মেয়ে যার আত্মসম্মান আছে তার এভাবেই রিয়েক্ট করা উচিত” (প্রিন্স)
” দেখ প্রিন্স আমি ভুল কিছু বলি নি, আমি রিয়ার কারনেই কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে চাই না” ( ফারহান)
” তুই ওই মেয়েকে ভুলে কেনো যাচ্ছিস না। বিয়ে হয়েছে তোর।” ( প্রিন্স)
” আমরা এই বিষয়ে কথা না বলি প্লিজ। আর এই মেয়ের সাথে আমি ঘর করবো না, ও আমাকে বাবার থ্রেড দেয়। আমি তো আজকে ওরে মেরেই ফেলতাম। কোনো রকম রাগ কন্ট্রোল করে আসছি এখানে। কোনদিন যে আসলে মেরে ফেলবো।”( ফারহান)
” আচ্ছা ভাবতে দে আর তুই মাথা ঠান্ডা কর। কালকের দিন যাক। একটা সমাধান করবো।”( ভুবন)
” তোরা যা খুশি কর আমি নেই এর মধ্যে” ( প্রিন্স)
” আমার প্রিন্সেস ডায়ানা রাগিস না বন্ধু তো লাস্ট বার”( ভুবন)
” আচ্ছা খুদা লাগছে খাই কিছু?”( ফারহান)
তিন বন্ধু একসাথে খাওয়া দাওয়ায়া করলো। যদিও প্রিন্স রাজি না হেল্প করতে কিন্তু বন্ধুতো খারাপ হলেও বন্ধু।
বিকালে আসলো বাসায় ফারহান। এসে মায়ের সাথে কথা বলেই রুমে চলে গেলো। অরনী পাঁচ মিনিট পর চা নিয়ে এলো। অরনীকে দেখে মেজাজ বিগড়ে গেলো ফারহানের। চা টা হাতে দিতেই ইচ্ছা করে চা অরনীর হাতে ফেলে দিলো। গরম চা পরতেই হাতে ঠসা পরে গেলো অরনীর। অরনী তাকিয়ে একবার ফারহানের দিকে দেখলো। ফারহানের এমন ভাব যেনো কিছুই হয় নাই। অরনী ওয়াসরুমে যেয়ে হাত ধুয়ে এলো। জ্বলছে হাত কষ্ট হচ্ছে কিন্তু চোখ জোড়া যেন কাদতে ভুলে গেছে। শীতল চোখে ফারহানের দিকে তাকিয়ে আছে। ফারহান তখন আধশোয়া হয়ে মোবাইল গুতাচ্ছে। কিছু কাজ করছে হয়তো। অরনী তড়িৎ গতিতে এসে মোবাইলটা নিয়ে মাটিতে আছাড় দিলো। ঘটনা কি হলো বুঝতে কিছু সময় লাগলো ফারহানের। অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো অরনীর দিকে। অরনীর ভাব এমন কিছুই হয় নেই।
” কি হলো এটা? ” দাঁতে দাঁত চেপে বললো ফারহান
” তখন আমার হাতে চা ফেলার পর আমিতো প্রশ্ন করি নি, তখন কি ছিলো ওটা?”( অরনী)
” তোমার সাহস দেখে আমি অবাক।” ( ফারহান)
” বিয়ে করে এসেছি বলে আপনার প্রোপার্টি না যা ইচ্ছা করবেন। আজকের ঘটনাটা মনে রাখবেন। Tit for tat”( অরনী)
” তোর তেজ কিভাবে কমাতে হয় আমার জানা আছে।”…..
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here