গল্প : মি.ক্ষেত,পর্ব-3

0
3044

গল্প : মি.ক্ষেত,পর্ব-3
লেখক : Sojib Sen

এইসব আবেগের কথা ভাবতে ভাবতে বিষের বোতলটা মুখের কাছে নিয়ে যেই ঢালতে যাবো। পেছন থেকে কেউ একজন হাত চেপে ধরে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসে এবং কিছু বলার আগেই ঠাস করে চড় বসিয়ে দেই আমার গালে! তার দিকে তাকিয়ে দেখে আমি তো পুরাই অবাক কারণ এ আর কেউ না আমার বেষ্টফ্রেন্ড পরী ।

–তুই এখানে?(সজীব)
–তুই আমাদেরকে ছেড়ে চলে যেতে চাইছিস তাই না..(পরী)
–নিষ্চুপ,,,
–তুই কি ভাবছিস আমি কিছু জানি না আমি সবই জানি,,
এবং সব নিজ চোখে দেখেছি।..(পরী)
–আমাকে মাফ করে দে,,
আমার ভুল হয়ে গিয়েছে..(সজীব)
–আমি কিছু জানি না,,আমি এইসব ঘটনা আজকে আন্টিকে বলে দিবো।..(পরী)
–তুই আমার বন্ধু না,গুলু গুলু তুই এমন কখনও করতে পারবি না।..(সজীব)
–আর কখনও যেনো এসব চিন্তাভাবনা মাথায় আসতে দেখি,,আমি সবকিছু আন্টিকে বলে দিবো কিন্তু।..(পরী)
–হুম আর এমন হবে না,এই কান ধরলাম।..(সজীব)
–চল আমার সাথে বলেই হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলাম…(পরী)
–এই এই কি করছিস হাত ছাড় আমার আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস আমাকে ?(সজীব)
–কেনো আমার হাত ধরলে কি ফুশকা পড়বে। আর আপনার বাসায় নিয়ে আপনার বাবা মাকে বলবো যে আপনি কেন মরতে চাচ্ছিলেন!(পরী)
–তুই আমার সাথে এমনটা করতে পারবি,আমি তোকে ভালোবাসি না,বলল!(সজীব)
–কেনো? বিষ খাওয়ার সময় মনে ছিল না বাবা মার কথা আপনি মরে গেলে তাদের কি হবে !(পরী)
–নিষ্চুপ !(সজীব)
–কথা বলছিস না কেনো?(পরী)
–আসেপাশে মানুষদের জন্য আমার আর কিছু ভালো লাগে না,তারা মনে হয় সবসময় আমার পেছনেই লেগে থাকে।(সজীব)
–বর্তমান সমাজের সাথে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে! কারন এই সমাজে এগিয়ে এসে সাহায্য করার মানুষ নেই! কিন্তু পিছনে থেকে অপমান করার মানুষ অনেকেই আছে!আচ্ছা চল এখন মন খারাপ করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে..(পরী)
–কোথায় যাবো?(সজীব)
–তোকে আগে মানুষ করতে হবে তাই আগে তোর বাসাই যাবো তারপরে অন্যকিছু!(পরী)
–আমি কিন্তু কিছু বুঝতেছি না!(সজীব)
–বুঝলে আর বিষ খেতে চাইতি না,চুপ করে আমার সাথে চল।..(পরী)
–হুম।(সজীব)

তারপর আমরা দুইজন আমাদের বাসায় চলে গেললাম,,,

–কি রে বাবা তুই এতক্ষন কোথায় ছিল তোর জন্য কত চিন্তা করছিলাম!(মা)
–আসলে আন্টি ওহ একটা বাজে কাজ করতে যাচ্ছিল !(পরী)
–কি বলছো মা? কি বাজে কাজ করতে যাচ্ছিল?(মা)
–তারপর আমি সব কিছু আন্টিকে খুলে বললাম।
আমার কথা শুনে আন্টি সজীবকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো !..(পরী)
–আন্টি এখন এইভাবে কান্না করে কি হবে! এখন কি করতে হবে সেটা ভাবেন!(পরী)
–কি করবো মা আমার ছেলেটাকে নিয়ে আমি আর পারছি না?(মা)
–সুযোগ মনে হয় পেয়েই গেলাম,(মনে মনে) আগে এই গাদাকে বদলাতে হবে !(পরী)
–কিন্তু কিভাবে?(মা)
–সেটা আমার ওপরে ছেড়ে দেন! আমি আমার মনের মতো করে তাকে গুছাবো.(মনে মনে)(পরী)
–কিছু বললে মা..(মা)
–কিছু বলে নাই আন্টি।..(পরী)
–আচ্ছা মা দেখ তুমি পারো নাকি!(মা)
–আমাকে পারতেই হবে আন্টি,কারণ এই সুযোগের জন্যই এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম,যা এখন আর মিস করা যাবে না। (পরী)
–মা অনেক খুদা পেয়েছে খেতে দেও !(সজীব)
–হুম ,(মা)

তারপর দুইজন খাওয়া দাওয়া শেষ করে পরী বললো ,,,

–আচ্ছা আন্টি আমাকে বাসাই যেতে হবে না হলে মা চিন্তা করবে!(পরী)
–সেকি আসলে তো একটু আগে আজ থেকে যাও মা!(মা)
–না আন্টি অন্য একদিন থাকবনি আজ যাই!(পরী)
–আচ্ছা মা! (মা)

এই বলে মা ভিতরে চলে গেল…
–এই যে মিষ্টার শুনছেন!(পরী)
–আমাকে বলছেন!(সজীব)
–উফ এইখানে কি আর অন্যকেও আছে তুই বাদে?(পরী)
–না নেই তো !(সজীব)
–তাহলে তোকেই বলছি!(পরী)
–জি বল?(সজীব)
–হুম! আমি কাল সকালে তোর বাসাই আসবো তুমি রেডি থেকো তোমাকে নিয়ে বাইরে যাবো!(পরী)
–হুম কিন্তু কেনো?(সজীব)
–সেটা কালকেই বুঝতে পারবে আমি এখন আসি (পরী)

এই বলে পরী চলে গেল রাতে ঘুমানোর সময় ভাবতে লাগলাম। আসলে আমার সাথে কি হচ্ছে একটা ভুলের জন্য আজ কত কিছুই না হয়ে যেতো। এইভাবে কিছুক্ষন ভাবার পর ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে কারো ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো..
–ওঠেন মশাই…(পরী)
–হুম মা ওঠছি …(সজীব)
–ওই আমি তো মা,, হুম!..(পরী)
–আমি কথাগুলো শুনে চোখ খুলে অবাক হয়ে যাই কারন তাকে তার মা না পরী ডাকছে…

–এই তোমার মা কে হুম!(পরী)
–কি এতো সকালে তুমি আমার রুমে কি করছো?(সজীব)
–নিজের শশুর বাড়িতে মানুষ কি করে (অস্পষ্ট ভাবে বললো পরী)
–কি বললে?(সজীব)
–কিছু না তোমাকে কাল কি বলেছিলাম মনে নাই তাড়াতাড়ি ওঠ বাইরে যেতে হবে!(পরী)
–হুম তুমি বসো আমি আসছি এই বলে যেই না আমি খাটে থেকে নামবো সাথে সাথে পরী হো হো হো করে হাসতে লাগলো। আমি নিচে তাকিয়ে দেখলাম আমার পরনে শুধু একটা হাফ প্যান্ট আর কিছু নেই। আমি দৌড় দিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলাম।
আর এইদিকে পরী তো হাসতে হাসতে শেষ। আমি ফ্রেস হয়ে নাস্তা শেষ করে পরী আর আমি বাইরে চলে গেলাম….

–আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি?(সজীব)
–এতকথা না বলে চুপ করে থাক। (পরী)
–বল না কোথায় যাচ্ছি!(সজীব)
–উফ তুমি এতো কথা বলো কেন চুপচাপ বসে থাকো তো!(পরী)
–আচ্ছা,
তারপরে দুজনে শপিংমলে চলে গেলাম,পরী দুএকটা করে র্শাট,পেন্ট,ঘড়ি,চশমা কিনলো।

–আচ্ছা এগুলো কার জন্য?(সজীব)
–এই গুলো সব তোমার !(পরী)
–কি এই গুলা আমি পড়তে পারবো না!(সজীব)
–কেন?(পরী)
–দেখো শার্ট কত ফিটিং আর প্যান্টের কি অবস্থা । আচ্ছা প্যান্ট এতো ছিড়া কেএএ?(সজীব)
–দেখ আমাকে রাগাবি না কিন্তু যা বলছি তাই কর, যা ভিতরে গিয়ে চেন্স করে আস!(পরী)
–সজীব কোনো কথা না বলে সোজা ভিতরে চলে গেল কিছুক্ষণ পরে বের হয়ে আসতেই আমি হা করে তাকিয়ে আছে…(পরী)

–কি হলো তুমি এইভাবে হা করে আছো কেন?(সজীব)
–সজীব এর কথাই আমার যেন ঘোর কাটলো না আমি তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি..সজীব আমার ঘারে হাত দিয়ে ডাকাতে আমার ঘোর কাটলো…(পরী)

–তুমি কি সত্যিই সজীব?(পরী)
–কেন তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না?(সজীব)
–আমি কেন, তোমার বাবা মাও তোমাকে চিনতে পারবে না!(পরী)
–তাই !(সজীব)
–হুম…আচ্ছা চল এইবার তোমার চুল গুলো ঠিক করতে হবে।,,(পরী)

বলে পরী আমাকে সেলুনে নিয়ে গিয়ে বর্তমান কাটিং করিয়ে বাসাই নিয়ে গেল !বাসাই গিয়ে কলিং বেল বাজায়ে পরী আমার পেছনে চলে…..

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here