গল্প: ম্যানহোলের_অতলে পর্ব-১০

0
2914

গল্প: ম্যানহোলের_অতলে
পর্ব-১০
লিখা: #এম_আর_রাশেদ এবং #মল্লিকা_জাহান
ফজরের আজান হচ্ছে আলসেমি কাটিয়ে ঘুম ঘুম চোখে মেঝেতে পা ফেলে ধীরে ধীরে ওয়াশরুমে চলে গেলো আয়ান। ওজু করে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়া শেষে হাঁটতে বের হয়। সূর্যদয়ের আগে অাবছা অন্ধকারের সকাল অনেক বেশি স্নিগ্ধ হয়। পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত চারিদিক। আয়ানের মনে পড়লো আজ সুপ্তির সাথে দেখা করার কথা। খানিকটা সময় একাকী অনেক কিছুই ভাবতে থাকে। হাঁটাহাঁটির পর আবার বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা দিল।

বেশ কিছুক্ষণ ধরেই রিং হচ্ছে, সুপ্তি বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। পিয়াসের মৃত্যুর পর মেয়েটা একদম অগোছালো হয়ে পড়েছে। খাওয়া, ঘুম কোনো কাজেই মনোযোগ নেই, ছন্ন ছাড়া প্রকৃতির। গতকাল রাতে আয়ানের ফোন পাওয়ার পর কতকিছু ভাবলো তার ইয়ত্তা নেই, শেষমেশ পর রাত ২ টায় ঘুমিয়েছিল।
আরও কয়েকবার রিং বাজতে থাকায় ঘুম চোখে নিয়েই রিসিভ করে কানের কাছে নিলো;

— হ্যালো, কে বলছেন?

— হ্যালো সুপ্তি, আমি তিন্নি বলছি।

— হ্যাঁ তিন্নি বল, কি খবর তোর?

— আমি ভালো আছি, কিন্তু তোর তো খোঁজই নেই। আর কতদিন এভাবে বসে থাকবি সামনে তোর পরিক্ষা এভাবে নিঃস্তেজ হয়ে পড়লে তো চলে না। জানি পিয়াশ কতটা ক্ষত রেখে গেছে। তাই বলে এখন নিজের ক্ষতি করলে তো তোর বোন ফিরে আসবেনা তাই-না? আজ কলেজে আসবি কি?

— নারে আজ আমার গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ আছে। অন্যদিন যাবো।

— আচ্ছা ঠিক আছে।

কথা শেষে সুপ্তি বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো। আজ পিয়াশের কথা খুব বেশি মনে পড়ছে। কিছু মানুষ আছে যারা প্রদ্বীপের মতো আলো ছড়ায়। একটা অন্দরমহলের মাঝখানে বড় প্রদ্বীপের মতো, পুরো ঘরটাই আলোকিত করে রাখে। একটা সুন্দর বাড়িতে চাকচিক্যময় সবকিছু রয়েছে, কিন্তু রাতের আধার নিবারণের জন্য যদি আলো না থাকে তবে চাকচিক্যময় ঘরের সৌন্দর্যও অন্ধকারের মতো ঘুটঘুটে, থমথমে। পিয়াস বিহীন এই বাড়িটাও এখন সুপ্তির কাছে আলোহীন লাগে, রসহীন মনে হয়। পুরো বাড়িই মাতিয়ে রাখতো মেয়েটা। সুপ্তির খুব করে ইচ্ছে হলো আজ পিয়াশের রুমে গিয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে। পিয়াশের রুম এখন আর তালা দেওয়া নেই। সুপ্তি নির্বিঘ্নে রুমে ঢুকে গেলো। সুলতানা বেগম পিয়াশের ব্যবহৃত বেশিরভাগ জিনিস ঘর সরিয়ে ফেলেছেন, গরীব-অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন। দেয়ালে ফ্যামিলি ফটো ঝুলছে। সুপ্তি দেয়াল থেকে ফটোটা হাতে নিয়ে পিয়াশের বিছানা গিয়ে বসলো। ছবির দিকে তাকিয়ে চোখ ঘোলা হয়ে আসে। এতোটা দূরন্ত স্বভাবের মেয়েটা আজ চিরকালের জন্য নিশ্চুপ হয়ে আছে। কতক্ষণ ধরে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে বসে আছে সুপ্তি নিজেই জানে না। ঘোর কাটতে, বিছানাতেই ফটোটা রেখে রুমে থেকে বের হলো।
সকালের নাস্তা শেষে সুপ্তি নিজের রুমের জানালার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে রইলো। বাহিরের আলোতে চোখ ধাঁধিয়ে আসতে চাইছে যেন কতকাল ধরে আলো বাতাস থেকে বঞ্চিত। হঠাৎ আয়ানের ফোন, রিসিভ করেই বলল;

— হ্যালো সুপ্তি বলছেন।

— হ্যাঁ আয়ান বলুন। আপনি কিছুক্ষণের মধ্যে সড়কের ত্রিমোড়ে চলে আসুন। ওখানেই কথা হবে।

— আচ্ছা আমি রেডি হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছি।

সুপ্তি রেডি হয়ে সুলতানা বেগমকে জানালো;

— মা আমি একটু বাইরে যাচ্ছি ঘন্টা খানেকের মধ্যেই ফিরবো।

সুলতানা বেগম মেয়েকে আজ আটকালেন না প্রশ্নও করলেন না কোথায় যাচ্ছে। জানে পিয়াশের মৃত্যুর পর সুপ্তি জীবন্ত লাশের মতো চার দেয়ালের করিডরে বন্দী করে রেখেছে নিজেকে। শেষ কবে সুপ্তির মুখে হাসি দেখেছে তাও আবছা মনে পড়েনা। বাইরে ঘোরাফেরার প্রয়োজনীয়তা আছে। তাই অন্য কোনো বিষয়ে না বলে একটা কথাই বললে;

— একটু তাড়াতাড়ি আসিস মা, যেখানেই যাস সাবধানে যাস। আর আমরা আজ একটু তোর ফুপির বাসায় যাচ্ছি। তুইও সোজা ওখানে চলে আসিস৷

সুপ্তি বৃথা হাসার চেষ্টায় সম্মতি জ্ঞাপন করলো। গেট থেকে বেরিয়ে পাঁচ মিনিট পায়ে হেটে ত্রিমোড়ে পৌছায়। গিয়ে দেখলো আয়ান এখনও আসেনি।
কোথাও গিয়ে কারও জন্য অপেক্ষা করাটা সবথেকে বিরক্তকর বিষয়। সুপ্তি ব্যাগ থেকে ফোন বের করতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তেই দেখে আয়ান রিকশা থেকে নেমে দ্রুত পদে তার দিকে এগিয়ে আসছে। কাছে এসে বললো;

— দুঃখিত কিছুটা দেরি হয়ে গেলো।
— আরে না ঠিক আছে। আমিও মাত্রই আসলাম। চলুন সামনের কফিশপের ভেতরে বসা যাক। ওখানে বসে আপনার সাথে ওই বিষয়ে নিয়ে বলি।

— ঠিক আছে চলুন।

আয়ান সামনের কফিশপে গেলো। সকালের এই পর্যায়ে লোকজন কম। বলা যায় পিন সাইলেন্স চারপাশে। আয়ান অর্ডার দিয়ে এলো। সুপ্তি গুটিসুটি হয়ে বসলো সোফায়। আয়ান ঠিক সামনা-সামনি বসলো। চোখের দিকে চোখ পড়তেই অন্য দিকে তাকালো সুপ্তী। আয়ান বললো,

— আপনার পছন্দ জিজ্ঞেস না করেই হট ব্লাক কফি অর্ডার করলাম। চলবে?

— হ্যাঁ।

— আসুন কাজের কথায় আসি।

— হ্যাঁ মার্ডারের ব্যাপারে কিছু বলতে চেয়েছিলেন। খুনীর ব্যাপারে ক্লু পেয়েছেন!

— হ্যাঁ আসলে খুনির একটা জিনিস আমার কাছে সংরক্ষিত আছে, কি আছে সেটা এখন নাই বা বললাম। আর কোনো ক্লু ছোট নয়৷ আচ্ছা যাই হোক, আপনি কলেজে যান না?

— আগে নিয়মিত যেতাম। এখন একটু ডিপ্রেশন, ইউ নো!

— কখনো স্ট্যাডি ট্যুরে গিয়েছেন? অথবা ফ্যামিলি টুরে?

— ২ বছর আগ গিয়েছিলাম সিলেটে! আর গতবার নীলগিরিতে পুরো পরিবার সহ। চাচা, চাচী, ফুপি, কাজিন সবাই।

— খুব ভালো। ছবি তুলতে তো নিশ্চয়ই পছন্দ করেন? (আয়ান শিওর হয়ে নিলো, যেহেতু সুপ্তিও সন্দেহের বাইরে নয় তাই পুরোপুরি কোনো কিছুই খোলসা করলো না)

— সেটা কম বেশি সবাই তো করে৷

— ভালো। পিয়াশের রুমটায় আগের মতোই আছে তো?

— না নেই, আসলে মা পিয়াশের রুমের অনেক জিনিসপত্র সরিয়েছে, বিলিয়ে দিছে। তার ভাবনা যে গেছে সে তো আর ফিরে আসবেনা৷

— কি বলেন? আমি বারবার বলা সত্ত্বেও এই কাজ কেনো করতে গেলো? কাজটা ঠিক করা হয়নি৷ অন্তত তদন্তের পরে সরালেই পারতো।

— দুঃখিত, আসলে মা’কে না বলা সত্ত্বেও তিনি তার মতো করেই করে গেছেন।

— যাইহোক, আপনি পুরো বাড়ির সব কয়টি কক্ষ দেখাতে পারবেন একবার?

— হ্যাঁ নিশ্চয়ই। কিন্তু ক্লুর সাথে এটার কি সম্পর্ক?

— প্রশ্ন করবেন না সম্পর্ক অবশ্যই আছে, আমি উত্তর মেলাই, পরে না হয় খোলাসা করবো। উত্তর তখনই পেয়ে যাবেন।

ইতিমধ্যে কফির অর্ডার এলো। আয়ান কফিতে দুইবার চুমুক দিয়ে বলতে সুপ্তিকে কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে ফোন বেজে উঠলো। অচেনা নম্বর থেকে কল এসেছে। রিসিভ করে সালাম দিয়ে বলল;

— হ্যালো কে বলছেন?

— হ্যালো আয়ান স্যার আমি তাওয়াফ বলছি। আপনার সাথে কিছু কথা গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিলো।

— হ্যাঁ তাওয়াফ বলো, তোমার মায়ের কি অবস্থা?

— স্যার, মা এখন ভালো আছে। আসলে মায়ের এক্সিডেন্টের পর আর কোথাও খোঁজ নিতে পারিনি। কয়েকদিন আগে জানতে পারলাম আপনার সন্দেহের স্বাপেক্ষে পিয়াসের যে ময়নাতদন্ত করা হয় সেটা প্রমানিত, পিয়াসের হত্যাটা আত্মহত্যা নয় বরং হত্যা। এই বিষয় নিয়েই আমি কিছু বলতে চেয়েছিলাম।

আয়ান ফোনের রেকর্ডিং অপশন চালু করে বলল হ্যাঁ তাওয়াফ তুমি প্রথম থেকে সব খুলে বলো;

— আসলে স্যার পিয়াশের পেছনে আমার ঘোরার উদ্দেশ্যটা কেবল একটা বাজি ছিল। আমি পিয়াশকে ভালোবাসার প্ররোচনায় ফেলি একটা বাজি ধরে। সত্যি বলতে বাজির আড়ালে পিয়াশের প্রতি একটা ভালো লাগা এবং একটা অনুরাগের সৃষ্টি হয়। স্যার আমি এমনি বাজে ছেলেদের সাথে আড্ডা দিলেও কখনও মেয়েদের অসম্মান, উত্যক্ত করাকে সমর্থন করি না বা আমার সামনে কাউকে করতেও দেইনা৷ পিয়াশের ওই বাজিতে আমি নিজেও তার প্রতি দূর্বল ছিলাম। তবে ক্ষতির কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না৷
আর এই বাজিটা আমি ইচ্ছে করে করিনি বরং আমাকে বাধ্য করা হয়েছিল৷ যদি পিয়াশকে প্রেমের ফাঁদে ফেলতে না পারি তবে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হয়। আর যদি তার কথা মতো কাজ করি তবে এবং সফল হই তবে অনেক টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়৷ টাকা নেওয়ার জন্য এই কাজ করাটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না৷ বরং নিজের জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে করেছি স্যার। আর বাড়ির দারোয়ানও টাকার জন্য সেদিন গেইট খুলে দেয়নি ওদের গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্য দারোয়ান কে শাসিয়ে গিয়েছিল। বলেছে যদি গেইট খুলে না দেয় তবে তার মেয়েদের ক্ষতি করবে। বেচারা নিজেই এই পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছে।

— সেটা কেমন?

— স্যার আমাকে যে বাধ্য করে তার নাম রুম্মন আলিফ। সবাই রুম্মন বলেই ডাকে। ওর গোপন একটা গ্যাং আছে স্যার। ওর নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে গ্যাংয়ের নাম দেওয়া হয় “এ.আর গ্যাংস্টার” গোপনে অনেক জঘন্য কাজও করে থাকে। আমাকেও ডেকে ওদের গোপন কামড়ায় নিয়ে গিয়ে এমন অফার করে। আমি নিরুপায় হয়ে পুলিশের আশ্রয়ও নিতে পারিনি৷ পিয়াশকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাড়ির গেইটের ভেতরে সেই চুম্বন দৃশ্যটাও তার ছকে আঁকা এবং তার কথাতেই করা। টিনএজ বয়সটা অনেক বেশি আবেগীয় এবং কৌতূহলপূর্ণ হওয়াতে রাজি করানোটা ছিল কিছু সময়ের ব্যাপার। এমন দৃশ্য পরিবারের সামনে সম্মুখে আসা মানে নিজেকেই হেয় করা, বিশ্বাসটা ভেঙে ফেলা। আর সেটাই হলো, পিয়াশের মা ব্যাপারটি প্রত্যক্ষ করে। সেদিনই আমার কাজ শেষ অর্থাৎ বাজিতে জিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু মনের মধ্যে ছিলো হাহাকার। হয়তো এই অল্প সময়ের মধ্যেই পিয়াশ মনের মধ্যে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিল। আমাকে টাকা দেওয়া হয়, আমি টাকাগুলো না নিয়ে ফেরত দিয়ে দেই। মনে কোনো প্রশান্তি ছিলো না। আমি ভেবেছি এর জন্য পরিবার থেকে অনেক চাপ আসবে দ্রুত বিয়ে দেওয়া হবে পিয়াশকে। এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্রের ছক আঁকা হচ্ছিল আমি সেই সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিলাম৷ বিশ্বাস করুন স্যার যদি এই বিষয়ে সামান্য ইঙ্গিত পেতাম, নিজের বড় ক্ষতি হয়ে গেলেও পিয়াশের ক্ষতি হতে দিতাম না। যখন ময়নাতদন্তে হত্যার কথা জানতে পারলাম তখন কেন জানি রুম্মনের নামটা চোখের সামনে ভাসতে লাগলো। রুম্মনের এই ক্ষেত্রে কি লাভ তাও জানি না৷ তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস স্যার ওকে ধরলে আপনারা সব তথ্য পাবেন৷ তাছাড়া শুনেছি কয়েক বছর আগে অয়না নামে এক মেয়ের নির্শংস ভাবে হত্যার পেছনে এই এ.আর গ্যাং হাত রয়েছে।

এই কথা শোনা মাত্রই আয়ান আঘাত প্রাপ্ত ক্ষিপ্র বাঘের মতো ফুঁসতে থাকে। চোখ রক্তিম বর্ণে অগ্নিগোলকের মতো হতে থাকে। নির্শংস ভাবে অয়না নামের যে মেয়েটি হত্যা হয়েছিল সেই মেয়টির ভাই তো আয়ান। আয়ান জানতো তার বোনের সব আসামীকে সে নিজের হাতে ক্রসফায়ারে মেরেছে। তবে থলের বেড়াল যে এখনও বাকী!

আয়ান গর্জে উঠে তাওয়াফকে বললো; ওর ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট আছে?
— হ্যাঁ স্যার আছে। আপনার ফেইসবুক একটাউন্টের নাম বলুন আমি খুঁজে ওর আইডির লিংক পাঠিয়ে দিচ্ছি।

আয়ানের তার ফেইসবুক একাউন্টের ডিটেইলস তাওয়াফকে বলে, সে খুঁজে বের করে রুম্মনের এ্যাকউন্টের লিংক ইনবক্সে দেয়। আয়ান আর অপেক্ষা করতে পারছেনা। এখনই উঠতে হবে। সুপ্তিকে বললো এখন উঠি তবে?

সুপ্তি আয়ানের এমন রুদ্র রূপ দেখে নিজেও কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। বুঝতে পারলো গুরুতর কিছু একটা হয়েছে। তাওয়াফের ব্যাপারটা নিয়েও কিছুটা বিচলিত ছিল। তারপরও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে সুপ্তি শান্তভাবে বললো,

— একটু দাঁড়ান, আপনার ফেসবুক বা ইমেইল আইডি দিন। ফোন নম্বরের বাইরেও যদি যদি এর প্রয়োজন পড়ে!

সুপ্তি নিজের ফোনে ফেসবুকে সার্চ বাটনটিতে লিখতে গিয়ে, আয়ানকে ফোন বাড়িয়ে দিলো। আয়ান নিজের নামটি টাইপ করলো। সুপ্তি বললো,

— মেসেঞ্জারেও নক দিয়ে রাখেন, আমি পরে ভুলে যাবো।

আয়ান কাজ শেষ করে সুপ্তিকে ফোনটা ফেরত দিলো। তার সমস্ত ভাবনা এখন এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত। তাড়াতাড়িই বাড়িতে চলে যাবার উদ্দেশ্য বের হলো।

অন্তিম পর্ব

সুপ্তি রাস্তা দিয়ে ফেরার সময় ভাবছে,
” উনি চাইলে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিতে পারতো! ”
কথাটা ভাবার পরেই নিজেকে দুইবার মনে মনে বকলো, কেউ বিনা চাওয়ায় এতোটা সাহায্য করতে পারে, আয়ানকে না দেখলে বোঝা যায় না। হাতের কথা কব্জির দিকে তাকালো, এইখানে আয়ান কলম দিয়ে দাগ টেনেছিলো। দাগটা এখন না থাকলেও মনের দাগটা স্পষ্ট! নিজেকে সাথেই সাথেই সামলে নিলো সুপ্তি। তারপর বাড়ির দিকে এগোলো।

আয়ান বাড়ির সামনে এসে জুতা খোলারও যেন অবকাশ পায় না৷ দ্রুত গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়লো। ম্যাসেঞ্জার অন করে দেখলো যে তাওয়াফ লিংকটা পাঠিয়েছে। লিংকে প্রবেশ করতেই রুম্মনের আইডি চলে আসে। আইডি থেকে তেমন কোনো তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি৷ নিজের ছবির বদলে কালোছায়ার অবয়ব দেওয়া। পুরো ঘেটে তেমন কিছুই পেলো না। হঠাৎ টেবিলের উপরে রাখা সেই ব্রেসলেটের উপর নজর পড়ে। ততোক্ষণে আয়ানের মনে পড়ে ব্রেসলেট আর সাথে যুক্ত ওয়ার্ড ‘R’ এর কথা৷ যাকে খুঁজছে তার নামের প্রথম অক্ষরও তো ‘R’ দ্বারা শুরু তথা রুম্মন। আয়ান তাওয়াফের নম্বর বের করে আবার ফোন দিয়ে বলল;

— হ্যালো তাওয়াফ।

— হ্যাঁ স্যার বলুন।

— তোমার কাছে কি রুম্মনের কোনো ছবি আছে?

— না স্যার, ওর ছবি আমার কাছে নেই। তবে চাইলে আমি সংগ্রহ করে দিতে পারি কিন্তু সেটা হবে সময় স্বাপেক্ষ।

— ঠিক আছে সময় স্বাপেক্ষ হলেও তার একটা ছবি আমাকে পাঠিয়ে দিও।

— হ্যাঁ স্যার আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো।

কথা শেষে আয়ান আবার বাসা থেকে তাড়াহুড়ো করে দ্রুত বাইকে করে সুপ্তিদের বাড়িতে পৌছায়। সুপ্তির সাথে দেখা হওয়া মাত্রই কোনো ভূমিকা ছাড়াই বলল;

— আপনি সব রুম গুলো আমাকে ঘুরিয়ে দেখান। প্রথম পিয়াশেরটাই।

পিয়াশের রুমের দরজা খুলে দেখলো আগের মতো কিছুই নেই। ব্যবহার্য সামগ্রীর অধিকাংশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আয়ান খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। বিশেষ করে দেয়ালের দিকে তাকাচ্ছে। আয়ান ঠিক করতে চলেছে তা সুপ্তির বোধগম্য হলো না৷ আজ সকালেই সুপ্তি দেয়ালের ছবিটা নামিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলো। মনে করে আর দেয়ালে টানানো হয়নি বিছানাতেই রয়ে গেছে। হঠাৎ বিছানার উপর ছবিটার উপর চোখ পড়তেই আয়ান চমকিত হলো, বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো ক্ষাণিকটা সময়ে। সেই ব্রেসলেটের পড়া খুনীর ফটো এখানেই! আয়ান মনে মনে ভাবলো সাধাসিধা মুখের আড়ালে মানুষ কতটা ভয়ংকর হতে পারে এটাও তার উদাহরণ হয়ে থাকবে। মুখটা ঘুরিয়ে সুপ্তির দিকে তাকিয়ে বলল;

— এক গ্লাস পানি হবে?

— হ্যাঁ অবশ্যই। বসুন আমি নিয়ে আসছি৷

সুপ্তির চলে যাওয়ার সাথে সাথেই নিজের মোবাইল বের করে ওই বিছানায় পড়ে থাকা ফ্যামিলি ফটোর দ্রুত কয়েকটি ছবি তুলে নিলো। সাথে ফ্রেম থেকে খুলে ছবিটা নিজের সঙ্গে নিয়ে নিলো। সুপ্তির পানি আনার অপেক্ষায় আয়ান বসে থাকেনি৷ হনহন করে থেকে বেরিয়ে পড়লো। আয়ান খুনী সম্পর্কে এবার পুরো নিশ্চিত। বাইকে করে আবার বাড়িতে এসে ল্যাপটপ অন করে তাওয়াফকে নক দেয়। মোবাইলের সেই ফটো তাওয়াফকে পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করে দেখো তো এদের মধ্যে কাউকে চেনো কি-না? তাওয়াফ বিস্মিত হয়ে পরক্ষণে ফোন দিয়ে বলে;

— এই ছবি কোথায় পেলেন স্যার। হাতের ব্রেসলেট পড়া ছেলেটাই তো রুম্মন।

— আমি এখান থেকে পুলিশ সদস্যদের তোমার বাসায় পাঠাচ্ছি তুমি ওর গ্যাং দের দেখিয়ে দেবে।

আয়ান তো আগেই এর ধারণা ধারণা করেছে, এবার নিশ্চিত হয়ে নিলো। আজিম সাহেব কল করেছে, আজ না-কি সুপ্তির ফুপির বাসায় দাওয়াত। আয়ানকেও যেতে বললো। আয়ান মনে মনে ভাবছে সব মিরাকল একসাথেই হতে চলছে। সুপ্তিকে আবার ফোন দিলো;

— আপনি কি আপনার ফুপির বাসায় যাবেন?

— কেনো বলুন তো?

— প্রয়োজন আছে। আমি আপনার বাসার সামনে কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছি। রেডি হয়ে নিন।

সুপ্তিকে বাইকে করে সজলদের বাসায় পৌঁছালো। সেখানে গিয়ে দেখে সুপ্তির মা-বাবা, আজিম সাহেব সহ আরও অনেকে আছে। আয়ান সজলকে দেখা মাত্র ভূমিকা ছাড়াই সবার সামনে সজোরে লাথি মারে। সজল নিজেকে সামলাতে না পেরে ছিটকে দূরে পড়ে যায়, চেয়ার থেকে অনেকটা দূরে। সবাই আয়ানের এমন হিংস্র আচরণ দেখে হতবাক। সুপ্তি তো পুরো ভয় পেয়ে যায়, এটা কি আয়ান! আজিম সাহেব বেশ ঘাবড়ে যায়, আয়ান তো কারণ ছাড়া অহেতুক এমন ক্রুদ্ধ হয়না। সে নিজেও আয়ানের ক্রুর আচরণ খুব কম দেখেছে। এটা খুব বেশিই, কিছু বলতে গিয়ে বলতে পারলো না৷ সুপ্তির বাবা-মাও ঘাবড়ে গেছে। আয়ান, শোয়া অবস্থায় আরও চার, পাঁচটা লাথি মারে সজলকে। সজলের মা দোতালা থেকে দৌড়ে আসে সজলের চিৎকার শুনে। আয়ানকে বাঁধা দিয়ে বলে;
— আমার ছেলেকে কেনো মারছো? ও কি করেছে?

আয়ান এবার প্রথম মুখ খুলে বলল;

— পিয়াশকে কেনো মারলি সজল ওরফে রুম্মন?

এবার সবাই নিশ্চুপ হয়ে যায়। রুম্মন নামটা পরিবারের কেউ জানে না৷ সজলও ভড়কে যায়। কাঁপা কাঁপা ঠোটে উত্তর দেয়;

— এসব কি বলছেন? পিয়াশকে আমি কেনো মারতে যাবো ও তো আমার বোন।

এবার আয়ান আর থামতে পারলো না। সাবিহা বেগমকে সরিয়ে আবার উত্তম মধ্যম শুরু করলো। আজিম সাহেব আয়ানকে বাঁধা প্রদান করতে গেলে আয়ান বলল;

— সরে যান স্যার আমি প্রমাণ ছাড়া মাঠে নামিনি।

সজলের আর্তনাদে পুরো বাড়ি ফেটে পরদ। একবার মায়ের কাছে, একবার আজিম সাহেবের কাছে, একবার সুপ্তির কাছে যায় নিজেকে আয়ানের থেকে বাঁচানোর জন্য। ইতোমধ্যে তাওয়াফের সহায়তায় রুম্মনের সহযোগীদের ধরা হয়। পুলিশ কর্মকর্তার সাথেই তাওয়াফ ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। রুম্মনের এবার গলা শুকিয় গেলো। তাওয়াফ আজিম সাহেবকে সমস্ত কিছু খুলে বলে। সজল ওরফে রুম্মনের সহযোগীরা স্বীকারোক্তি দেয়। কিন্তু সজল তখনও অস্বীকার করতে থাকে। এবার আয়ান তার পকেট থেকে সেই ব্রেসলেট বের করে যেটা পিয়াশের রুম থেকে পাওয়া যায়। যে ফটোটা আয়ান নিয়ে এসেছিলো সেটা বের করে মিলিয়ে সবাইকে দেখায় আর নানা তথ্য উঠে আসে, সজলের আসল চেহারা। সুপ্তির এবার আর বুঝতে বাকী রইলো না, যে আয়ান আজ কেনো ফটোর কথা জিজ্ঞেস করেছিল। সুপ্তি ভালো করেই জানে এটা সজলের ব্রেসলেট। আজিম সাহেব থমকে যায় আর একটা কথাও বলছেনা৷ সুপ্তি ক্রোধের অনলে ফুঁসছে। সুপ্তির মা প্রথম থেকেই নীরব দর্শক। এখন শুধু সজলের নিজের মুখে স্বীকার করার পালা। সুপ্তির এবার পায়ের জুতো খুলে সজলের গালে ছুড়ে মারলো।

আয়ান কোনো ভূমিকা না করে রিভলবার সজলের মাথায় ঠেঁকিয়ে বলে;

— আমার বোনকে হত্যার পেছনে তোর এই গ্যাং কোনো না কোনো ভাবে জড়িত। পিয়াশও আমার এক বোন৷ তোর পীঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে সজল যদি সত্যিটা স্বীকার না করিস তবে আমার এক সেকেন্ড এর জন্য হাত কাঁপবে না তোর মতো কুকুরকে মারতে।
সজল মাথা তুলে এবার বলল;

— আর রিভলবার ঠেকিয়ে কি হবে স্যার? সত্যিটা তো জেনেই গেছেন। হ্যাঁ আমিই পিয়াশকে মেরেছি।

কথাটা শোনা মাত্রই সুপ্তির বাবা-মার মাথায় বাজ ভেঙে পড়লো। সুপ্তি চোখের পানি ছেড়ে দিলো, আজিম সাহেব চমকিত হয়ে গেলেন। আর সজলের মা সেখানেই সেন্সলেস হয়ে যায়। তাকে ধরাধরি করে কয়েকজন উপরে নিয়ে যায়। সুপ্তির বাবা-মা আর্তনাদে ফেটে পড়ে। আর বলে;

— আমার মেয়ে তোর কি ক্ষতি করে ছিলো, কেনো মারলি তুই?

সুপ্তি কাছে গিয়ে চিৎকার দিয়ে সজলের গলা চেপে ধরে। আয়ান ছাড়িয়ে নেয় আজিম সাহেব কিছু বলছে না শুধু নির্বাক শ্রোতা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। সুপ্তি বলে উঠল;

— কেনো মারলি আমার বোনকে ও কি দোষ করে ছিল?

— ও কোনো দোষ করেনি৷ দোষ করেছিস তুই। তোর দোষেই পিয়াশকে মরতে হয়েছে। তোকে অনেকবার আমি ভালোবাসার কথা জানিয়েছি৷ যতবার জানিয়েছি ততবারই খালি হাতে ফিরেছি। শেষ মেশ একদিন তুই তোর বন্ধুদের সামনে আমাকে অসহনীয় অপমান করেছিলি। সেটা মেনে নিতে পারিনি৷ জাস্ট পারে নি। তোর মনে আছে ওইদিন রাতে তোকে ফোন দিয়ে বলেছিলাম তোর জীবনের সবথেকে প্রিয় জিনিসটা আমি কেঁড়ে নেবো, আর এটাই হবে তোর বড় শাস্তি। সময়ের তাগিদে সব স্বাভাবিক হলেও, তুই সবকিছু ভুলে গেলেও আমি ক্ষোভ পুষে রেখেছি বুঝতে দেইনি। তোর জীবনে সবথেকে প্রিয় এবং কাছের ছিল পিয়াশ। তাই তোকে আঘাত দিতে পিয়াশকে বলি দিতে হয়েছে। আর তাওয়াফে আমিই বাধ্য করেছি মারার হুমকি দিয়ে।
আয়ানের হৃদপিণ্ডে যেন শুল ফুটতে লাগলো সজলের কথায়। মনে চাইছে রিভলবারের সবকয়টি গুলি দিয়ে ওর বুকে পাঁজর এফোঁড় ওফোঁড় করে দিতে। আবার কষিয়ে চর লাগিয়ে বলল কিভাবে মারলি পিয়াশকে।

— যেহেতু দারোয়ানকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাই বাড়িতে প্রবেশ সহজসাধ্য ছিল। আর এমনতেই এই ঘটনার পর বাড়ির সবাই পিয়াশকে আড় চোখে দেখছে। সেই সুযোগ বাড়ি ফাঁকা পেয়ে প্লান মাফিক ওর রুমে প্রবেশ করি। পিশায় এই ব্যাপারে অবগত নয়। তাই সহজে ক্লোরোফোম দিয়ে অজ্ঞান করার পর ছুড়ি চালাই। মারার পর আমি ছাঁদে চলে যাই। জানি এটা দেখার পর সবাই হসপিটালে চলে যাবে। তাই হলো, তারা হসপিটালে যাওয়ার পর আমি নির্বিঘ্নে নিরাপদে বাড়ি থেকে চলে আসি।
আমির সাহেবের নিজের বোনের সন্তান এই কাজ করেছে ভাবতে পারছে না৷ ছোট ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে বললো,

—- আজিম, তোর ওই পুলিশ ছেলেটাকে বল, সজলকে আমাফ চোখের সামনে থেকে নিয়ে যেতে!

আমির সাহেবের নিজের বোনের সন্তান এই কাজ করেছে ভাবতে পারছে না৷ ছোট ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে বললো,

—- আজিম, তোর ওই পুলিশ ছেলেটাকে বল, সজলকে আমাফ চোখের সামনে থেকে নিয়ে যেতে!

আজিম সাহেব ও আজ নীরব শ্রোতা, ভাগনে এইভাবে নির্মম ক্ষতি করেছে ভাবতে পারছে না যেন বুকে বিঁধে বিঁধে যাচ্ছে। আয়ান সজলকে নিয়ে যাবে এমন সময় সজল রাজ্যের হাসি হেসে বললো,

—- তোমরা কি ভেবেছো, আমি আমার থেমে যাবো! আমি আবার আসবো, আর সুপ্তি আজকে তোকে আবার বলছি, আমি আবার এলে তোকে বাঁচাতে পারবে না৷ আবারো সবটা কেড়ে নেবো।

আয়ান আবারো মারলো সজলকে। রক্তাক্ত অবস্থায়, হ্যান্ডকাপ পরানো হলো। সুলতানা তখনও মুখ চেপে কান্না করছে। সুপ্তির চোখে পানিগুলো আজ সার্থক, আজ সে চিৎকার করে কান্না করতে পারবে, তার বোন নিন্দুকের নিন্দা নয়। পিয়াশ কোনো ভুল করে নি। বাচ্চা মেয়েটা এতো বড় ষড়যন্ত্র বোঝার বয়সই হয় নি। সুপ্তি জানালা দিয়ে দেখিছে, আয়ান সজলকে গাড়িতে উঠিয়ে তার বাইক স্টার্ট দিচ্ছে। আয়ানের মতো কয়জন আছে যে ম্যানহোলের মত গভীর, অতলের রহস্য মীমাংসা করতে এতোটা গভীরে ঝাপ দেয়। প্রতিটা পদক্ষেপে অন্ধাকারের অতলে হারিয়ে যাওয়ার পর৷ ম্যানহোলের উপর যে সাধারণ, সাধারণ মানুষ অতলে কি আছে বুঝবে কি করে! সুপ্তি যে ধন্যবাদ জানানো হলো না৷ পরক্ষণে নতুন নিজেকে বললো, ” অতলে ধন্যবাদটাও মিলাক, সে হয়তো অন্য সুপ্তির রহস্য মেটাবে, অন্য পিয়াশের খুনীকে গভীর অন্ধকার থেকে টেনে আলোতে আনবে।”

#সমাপ্ত

(পাঠকদের উদ্দেশ্যেঃ “নাকফুল” গল্পের পর দ্বিতীয় বারের মতো “ম্যানহোলের অতলে” গল্পটা নিয়ে আমরা দু’জন হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে। দু’জন লেখক/লেখিকার সমন্বয়ে ১১ টা পর্বের ধারাবিক থ্রিলার গল্পটা আজ শেষ হলো। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে উন্মোচন হলো রহস্যের। এমন হাজারো ম্যানহোলের অতলের ঢাকা পড়ে রহস্য। কতটা উন্মোচন হয় কতগুলো অগোচরেই রয়ে যায়। এই ভিন্ন ধর্মী গল্প জানিনা কতটা আপনাদের মনে ধরাতে সক্ষম হয়েছি। তবে আপনাদের ভালোবাসায় বরাবরই সিক্ত। আর অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ এতোটা অধীর আগ্রহে গল্পেটি পড়ার জন্য। গঠনমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরুন আপনার অভিব্যক্তি গুলো। আশাকরি পূর্বের মতোই সঙ্গে থাকবেন। আমরা আবার হাজির হবো নতুন কোনো গল্পের নতুন কোনো রহস্য নিয়ে। ভালোবাসা অবিরাম সকল পাঠকের জন্য❤❤)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here