গ্রামের মেয়েটি❤️,পর্ব_১
লেখক_Ananta Sanny(স্বপ্নচোর)
মা-বাবার পছন্দমত এক অচেনা জুনিয়র মেয়েকে বিয়ে করলাম। ইচ্ছে ছিলো সিনিয়র মেয়ের সাথে প্রেম করবো। বিয়ে করলে সিনিয়র মেয়েকেই বিয়ে করবো। একজনকে ভালোও লাগতো কিন্তু লজ্জায় বলতে পারতাম না। জুনিয়র হয়ে সিনিয়র মেয়েকে প্রপোজ করা অনেক সাহসের ব্যাপার যা আমার মাঝে নেই। আর তাই সিনিয়র মেয়ের সাথে প্রেম করা আর হলো না। ইচ্ছের ঠিক বিপরীত ঘটলো। চাইলাম সোনা পেলাম রুপা। চাইলাম সিনিয়র পেলাম জুনিয়র।
মা-বাবার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে নিজের স্বপ্নকে কোরবানি দিলাম। জুনিয়র এক মেয়েকে বিয়ে করলাম। তাও এক গ্রামের মেয়েকে। মেয়েটির নাম অবন্তী।
কথা বলতে বলতে পরিচয় দিতে ভুলো গেছি। আমি অনন্ত বাকিটা গল্পে জানতে পারবেন। আজ আমার বাসর রাত
বাসর রাতে অবন্তী আমার রাগী চেহারা দেখে কাপতে লাগলো। আমি বিষয়টা বুঝতে পেরে অবন্তীর কাছে যাইনি। চেয়ারে বসে ড্রয়ার থেকে পায়েলটা বের করে দেখছিলাম। এই পায়েল এখন মূল্যহীন। এই পায়েলের সাথে আমার অনেক স্বপের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পায়েল নিয়ে ভাবছিলাম তারপর ঘুমোতে গেলাম। অবন্তী খাটে শুয়ে আছে আর আমি সোফায় শুয়ে আছি।
বাসররাতে মানুষ কতকিছুই না করে কিন্তু আমার বাসররাতে কিছুই হলো না। অবন্তীর সাথে দুচারটে কথাও বলতে পারলাম না। আমার লাইফে এরকম পানসে বাসর রাত হবে কখনো ভাবিনি। যাইহোক
সকালবেলা ঘুম ভেঙে গেলে দেখতে পাই আমার গায়ে একটা চাদর দেওয়া। বুঝতে আর বাকি রইলো না যে এটা ওরই কাজ।
.
এরকম শীতে একা থাকাটা খুবই কষ্টের। ঘুম থেকে উঠতেই অবন্তী আমার ব্রাশ আর পেস্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি খেয়াল করলাম অবন্তীর হাত পা থরথর করে কাপছে। কারন অবন্তী জেনে গেছে যে এ বিয়েতে আমার মত ছিলো না। আমি অবন্তীর হাত থেকে ব্রাশ নিলাম। তারপর ব্রাশ করতে শুরু করলাম। ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুমের দরজা খুলতেই দেখি অবন্তী তোয়ালে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনেমনে বলছি। এ তো দেখছি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। চাওয়ার আগেই সবকিছু পেয়ে যাই। এটাই হয়তোবা লক্ষী বউয়ের লক্ষণ। তবুও কেন জানি অবন্তীকে বিয়ে করে আমি খুশি না। কোথায় জানি একটা ঘাটতি আছে। ছোট্ট একটা মেয়ে ওর এখন পড়ালেখা করার সময়। আর এই মেয়ে কিনা আমার সাথে সংসার করছে। অভাবের সংসার হলে যা হয় আরকি। এসব ভাবছিলাম হঠাৎ ছোট বোন এসে বললোঃ-
_ ভাইয়া খেতে আয়। (আলিশা)
_ তুই ভাত বেড়ে ডাক দিস। (আমি)
_ ভাইয়া ভাবী সব করছে।
_ বলিস কী.?
_ হ্যা,
নিচে গিয়ে দেখলাম অবন্তী শাড়ীর আচল কোমড়ে গুজে সবার জন্য ভাত বাড়তেছে। নতুন বউ যে এইভাবে কাজ করে এর আগে কখনো দেখিনি শুনিওনি। এমন সাইলেন্ট বউ এর আগে কখনো দেখিনি। কথা কম কাজ বেশি। মনেমনে বলছি অবন্তী তোমাকে ভালো না লাগুক কিন্তু তোমার এই বিষয়টা ভালো লাগছে।
.
_ভাইয়া ভাবী কিন্তু রান্নাবান্নাও করছে।
_হ্যা, এটা এখন বুঝে গেছি। কামের মেয়ে একাই সব কাম সেরে ফেলবে। গরিব ঘরের মেয়েরা পড়ালেখা করতে পারে না কিন্তু রান্নাবান্না আর স্বামীকে কিভাবে খুশি রাখতে হয় সেটা ঠিকই জানে। অবন্তীকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে। শহরের মেয়েদের মধ্যে এই জিনিসটা পাওয়া যায় না।
খাবার টেবিলে বসলাম। খেতে খেতে ভুলেই গেছি যে অবন্তী খেতে বসেনি। একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ খাওয়ার মাঝে আমার চোখ গেলো অবন্তীর কাছে।
_ অবন্তী এখানে এসো। অবন্তী আমার কাছে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। অবন্তীকে বসতে বললাম ও বসলো। আমার নিজ হাতে ভাত আর তরকারী বেড়ে দিলাম। ও ভয়ে ভয়ে খাচ্ছে। বাসর রাত থেকেই দেখছি অবন্তী আমাকে ভয় পায়। কিন্তু কেনো এত ভয় পায় জানি না।
.
নাস্তা খেয়ে সবাই যারযার মত চলে গেলো রয়ে গেলাম আমি আর অবন্তী। হঠাৎ অবন্তীর হেচকি শুরু হলো। আমি গ্লাসের পানি অবন্তীর হাতে দিলাম। আর মাথায় হালকা করে হাত বুলিয়ে দিলাম। ক্ষানিকক্ষন পর অবন্তীর হেচকি চলে গেলো । খাওয়া শেষ করে অবন্তীকে নিয়ে রুমে গেলাম।
প্রথমদিনেই অবন্তী সবার মন কেড়ে নিলো।
রুমে গিয়ে অফিসের পুরনো ফাইলগুলো খুজছিলাম। আর অবন্তী কাজ করতেছে। বিষয়টা খেয়াল করে অবন্তীকে ডাক দিলাম। অবন্তী সাথে সাথে আমার কাছে আসলো।
_ মাত্র খেয়ে আসছো এইবার রেস্ট নাও। কাজ পরেও করতে পারবা। আর নতুন বউ কি কাজ করে.? (আমি)
_ মা কইছে।(অবন্তী)
_ মা কইছে না বলছে। শুদ্ধ করে বলো।
_ মা বলছে কাম ছাড়া কেউ তোরে ভালোবাসতো না।
_ তোমার মা ভুল বলছে। সবাই এক না। আর তুমি শুদ্ধ করে কথা বলবা।
_আইচ্ছা ঠিক আছে।
_ আচ্ছা বলবা।
_জ্বী।
_জ্বী, মানে.! স্বামীকে কেউ জ্বী বলে?
_ আপনি আমার বড় তাই।
_ সমস্যা নাই। জ্বী বলবা না।
_ আইচ্ছা। না সরি আচ্ছা।
_ তোমার চুলগুলো যে এলোমেলো হয়ে আছে খেয়াল করছো? যাও আয়নার সামনে বসে ঠিক করো।
.
অবন্তী আয়নার সামনে বসে চিরুনী দিয়ে চুল আছড়াতে লাগলো। আমি একটু পরপর আড় চোখে তাকিয়ে অবন্তীকে দেখছি। যতই দেখছি ততই দেখতে ইচ্ছে করতেছে। এমন সময় কি কাজ করা যায়.? মোটেও না। আমি আর না পেরে অবশেষে অবন্তীর কাছে গিয়ে বসলাম।
_ আপনি না কাজ করতেছেন? (অবন্তী)
_ কাজ সবসময় করা যাবে কিন্তু তোমাকে এইরূপে সবসময় দেখা যাবে না।
_ আপনি যান তো আমার লজ্জা করতেছে।
_ ওমা আমার সাথে কিসের লজ্জা।
_ জানি না।
_ আচ্ছা আরেকটু দেখি।
_ আপনার বউকে আপনি ইচ্ছামত দেখেন এইটা কি কউয়া লাগে।
_ ইচ্ছে করছে তোমার ওই ঠোঁটে আমার ঠোঁট রাখতে।
_ রাখেন। বলেই অবন্তী চোখ বন্ধ করে ফেললো।
আমি অবন্তীর ঠোঁটে আমার ঠোঁট রাখবো অমনি ছোটবোন এসে ডাক মারলো। পাকা ধান ক্ষেতে মই দিয়ে দিলো। ইচ্ছে করছে বোনটাকে দুইটা থাপ্পড় দেই
চলবে…..