চন্দ্রাকাহিনী,পর্ব ২

0
3919

চন্দ্রাকাহিনী,পর্ব ২
Tasmima য়েয়াস্মিন

-ফাদার বলতে শুরু করলো,
চন্দ্রা তুই কোন সাধারণ মানুষ নয়। তুই একটা নাগকন্যা। এক তান্ত্রিক তোদের নাগপুরিকে দখল করে ফেলে। নাগরাজ আর নাগিনীকে মেরে ফেলে কিন্তু তোকে তোর বাবা নাগরাজ আমার কাছে দিয়ে যায়। তুই স্বপ্নে যে গুহাটা দেখেছিস ওইটাই নাগপুরিতে যাওয়ারর রাস্তা। কিন্তু নাগপুরির দরজা বারো বছরে একবার খোলে। শুধু মনি থাকলেই যখন তখন নাগপুরীতে ঢোকা যায়। তোর কাছে যেহেতু মনি নেই তাই আগামী আমাবস্যা পর্যন্ত তোকে অপেক্ষা করতে হবে। আগামী আমাবস্যায় নাগপুরী আপনা আপনি খুলে যাবে। আর তোকে এতদিন যে নীল পানীয়টা খাইয়েছি ওটা হচ্ছে বিষ। তুই এখন পৃথিবীতে সবচেয়ে বিষাক্ত নাগিনী। কারন তোকে প্রতিশোধ নিতে হবে।
চন্দ্রা এতক্ষণ ফাদারের কথা চুপচাপ শুনছিল। হটাত প্রশ্ন করে উঠলো,
-ফাদার আমি একা কি পারবো প্রতিশোধ নিতে?
-অবশ্যই পারবি। তোর কাছে এখন নাগমনি নেই। সেই নাগমনি আছে নাগপুরির পিছনে দিঘীর নিচে একটা পাতাল পথে। তোকেই সেটা উদ্ধার করতে হবে। আর নাগরানী হওয়ার আগে তুই সাপের রুপ ধারন করতে পারবি না। কিন্তু তুই এখন কোন সাধারন মানুষকে ছুয়ে দিলেই সে মারা যাবে। ছোটখাটো সাপকে তুই চোখের ইসারায়ই মেরে ফেলতে পারবি।
-ফাদার আপনি আমাকে নাগপুরির রাস্তা বলে দিন। আমি এখনি যাবো।
চন্দ্রার চোখদুটো জ্বলে ওঠে।
-না চন্দ্রা এখনো যাওয়ার সময় হয়নি। সামনের আমাবস্যায় যাবি।
এখন আর তোর আশ্রমে থাকা ঠিক নয়। জংগলে চলে যা। আগামী আমাবস্যার রাতে আমার সাথে দেখা করবি।
ঠিকাছে ফাদার বলে চন্দ্রা আশ্রমের বাইরে চলে আসে।
সারাদিন চন্দ্রা বন জংগলে ঘুরতে থাকে। মনটা একটুও ভালো লাগছে না। দূর থেকে চার্লস ছেলেটাকে দেখতে পেল। ইসস কি সুন্দর ঘুরে বেড়াচ্ছে। চন্দ্রা যদি মানুষ হত সে চার্লস এর সাথেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিত আর এখন তো ছুতেও পারবে না। চন্দ্রা চলে যাচ্ছিল ঠিক তখনি চার্লস বলে ওঠে,
-কোথায় যাচ্ছ চন্দ্রারানী?
চন্দ্রা কিছু বলে স্মিত হাসার চেষ্টা করে।
চার্লস খেয়াল করলো এখন আর সে চন্দ্রার মনের কথা পড়তে পারছে না।
-আশ্রমে যাচ্ছি। আমার তাড়া আছে বলে চলে যেতে নিলে চার্লস ওর হাতটা ধরে ফেলে,
কোথাও যাবেনা। কি হয়েছে আগে বলো।
চন্দ্রা খেয়াল করলো চার্লস ছেলেটা ওর হাত এত শক্ত করে ধরে আছে কিন্তু ওর কিছু হচ্ছেনা কেন।
-কি ভাবছো চন্দ্রা? কি হয়েছে বল?
– কিছুনা। আসলে আমি আশ্রম থেকে একেবারে চলে এসেছি।
-তা এখন কোথায় যাবে?
-জানিনা। জংগলেই থাকবো।
-জংগলের শেষ প্রান্তে আমার বাড়ি চাইলে আমার সাথে থাকতে পারো।
চন্দ্রা চায়না তার বিপদের সাথে সাধারণ একটা মানুষকে জড়াতে যাকে সে ভালোবাসে। কিন্তু চার্লস এর কাছে হার মেনে তার সাথে যেতে বাধ্য হয়।
-আচ্ছা আমি যে আপনার সাথে থাকবো মানুষ খারাপ বলবে, আমি একটা কুমারী মেয়ে।
-ঠিকাছে চল তোমাকে বিয়ে করে নিবো।
চন্দ্রা অবাক হয়ে যায়। ভালোবাসার মানুষকে এত তাড়াতাড়ি পাবে ও ভাবতেই পারেনি। খুশিতে কোন কিছু না ভেবেই ও সম্মতি দিয়ে দেয়। ভাবে আগামী আমাবস্যা পর্যন্ত ও চার্লসের কাছে থাকবে কিন্তু চার্লসকে জানাবেনা ওর আসল পরিচয়।
চন্দ্রা আর চার্লস একটা ছোট মন্দির থেকে বিয়ে করে নেয়। চন্দ্রা চলে আসে চার্লস এর সাথে ওর বাড়িতে। জংগলের এক কোনে একটা ছোট্ট কুটির। চন্দ্রার বেশ ভালো লাগে।
সেরাতেই ওদের প্রথম মিলন হয় আর চার্লস এর ভ্রুন চন্দ্রার গর্ভে স্থান করে নেয়।
পরদিন সকালে চার্লস ভাবছে চন্দ্রা ওর আসল পরিচয় জেনে যাবে নাতো। আর চন্দ্রা ভাবছে চার্লস ওর এত কাছে আসলো তবুও ওর কিছু হলোনা কেন’ ও কি তাহলে মানুষ নয়।
ভ্যাম্পায়ার কিং চার্লিয়াম এর কাছে পৌছে গেছে প্রিন্স চার্লস ঠিক জ্যোতিষির ভাষ্যমত একটা নাগকন্যাকে বিয়ে করে তাদের রাজ্যের ধংসের পথ সৃষ্টি করে দিয়েছে। তাদের সন্তানই হবে ভ্যাম্পায়ার রাজ্য ধংসের কারন…

চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here