গল্প -#চাচাতো_বোন_যখন_বউ,পর্ব-০২,০৩
✍️ #লেখক_আহমেদ_রাহী
০২
” আমি রনির কান্না সহ্য করতে পারছি না । তাই আমি রনিকে বললাম?
– রনি আমি আসছি ,তোমরা কোন হসপিটালে আছো?
– সিলেট উসমানি মেডিকেল হাসপাতালে!
– ওকে আমি আসতেছি !
” বলেই ফোনটা কেটে দিলাম। যখন আমি হাসপাতালে উদ্দেশ বের হবো তখন চাচা বললো?
– কোথায় যাস এ সময় রাহী?
– আমি এসে তোমাদের সব বলছি ।
( এ দিকে বিয়ে বাড়িতে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ছে বর এখনো আসতেছে না কেনো? চাচাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে আমি বাইক নিয়ে চলে আসলাম সিলেট উসমানি মেডিকেল হাসপাতালে।
তার পর রনির কেবিনের দিকে হাঁটতে লাগলাম।
কেবিনে গিয়ে রনিকে বললাম। )
– কেমন আছো রনি ? তুমি ঠিক আছো তো ?
– ভালো না ভাই..! ( বলেই কাঁদতে থাকে)
– কাদিস না ভাই !
– কান্না ছাড়া আর কিছুই নেই ভাই আমাদের!
– শান্ত হউ রনি , তোমার আম্মু আব্বু কোথায়?
– ভাইয়ের লাশের কাছে , পাশের কেবিনে..!!
( রনির কান্না দেখে আমার চোখে পানি চলে আসছে । তার পর কিছুক্ষণ কান্না করলাম। তার পর ভাবলাম আমি ও যদি কান্না করতে থাকি এ দিকে রনি কান্না করা থামাবে না তাই আমি , রনিকে শান্তনা দিয়ে , তানভীর ভাইয়ের লাশের কাছে আসলাম। এসে দেখি সবাই কান্না করতেছে!! এ দেখি সবার কান্না দেখে আমি আর শান্ত থাকতে পারলাম না ,আমি কাঁদতে লাগলাম। কাঁদতে কাঁদতে বললাম? )
– আন্টি প্লীজ কান্না করবেন না , আর আংকেল আপনি অন্তত কান্না করা থামান সবাই একসাথে এভাবে কান্না করতে থাকলে তানভীর ভাইয়ের আত্ম অনেক কষ্ট পাবে।
– কিভাবে কান্না থামাই বলো বাবা , আমাদের যে সব শেষ হয়ে গেলো!
– আংকেল আপনি এভাবে কাঁদতে থাকলে সবাইকে শান্তনা কে দিবে ?
– কিভাবে শান্ত থাকি তানভীর যে আমার বড় ছেলে, থাকে নিয়ে কতো স্বপ্ন বাবা।
– আপনারা এভাবে কান্না করলে কি আর তানভীর ভাই ফিরে আসবে ! বলোন? প্লীজ সবাই কান্না থামান !
” এই কথা বলার পর দেখি সবাই কান্না করা থামিয়ে দিলো ! আমি আবার বললাম?)
– আমার মনে হয় এখানে এভাবে কান্না না করে, তানভীর ভাইয়ের দাফন সম্পন্ন করা উচিত।
তখন পিছন থেকে রনি বললো?
– হ্যা! ভাইকে কবরের কাজ সম্পন্ন করা উচিত।
( তখন আংকেল বললেন )
– হুম চলো , সবাই !
– আংকেল আমি কি আপনাদের সাথে যেতে পারি ?
– হুম চলো বাবা!
( তার পর তানভীর ভাইয়াকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দাফন করার ব্যবস্থা করা হলো ! জানাজার নামাজ আদায় করে । সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।ফোন হাতে নিয়ে দেখি চাচা অনেক বার ফোন করেছেন । তাই তাড়াতাড়ি করে বাইক নিয়ে চলে আসলাম। বাড়ি পৌঁছাতে দুপুর পেরিয়ে গেলো ? বাসার ভিতরে ঢুকতে চাচা বললো?
– এতোক্ষণ কই ছিলে তুই বলতো রাহী? আর বর পক্ষের কেউ ফোন ধরছে না কেনো?
( দেখলাম চাচার পিছনে সবাই দাঁড়িয়ে আছে , এমনকি তানিশা অপু ও ? তাই আমি বললাম? )
– তোমরা সবাই শান্ত হউ আমি সব খুলে বলছি ?
– তাড়াতাড়ি বল কি বলবি?
– আসলে তানভীর ভাই …!
– কি হয়েছে , আর কান্না করছিস কেনো তুই ( চাচা)
– আসলে তানভীর ভাই আর আমাদের মাঝে নেই , উনি দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন..!
” তার পর আমি সব কিছু খুলে বললাম। এসব শুনে তানিশা আপু রুমের দিকে দৌড়ে গেলেন ? বুঝতে পারলাম কিছু একটা হবে । আমি ও পিছন দৌড়ে গেলাম। যেই ভাবা এই কাজ যা ভাবছিলাম তাই হলো..!!
চলবে……?
গল্প – #চাচাতো_বোন_যখন_বউ ( পর্ব-০৩ )
✍️ #লেখক_আহমেদ_রাহী
________________________
“এসব শুনে তানিশা আপু রুমের দিকে দৌড়ে গেলেন? বুঝতে পারলাম কিছু একটা হবে । আমি ও পিছন দৌড়ে গেলাম। যেই ভাবা সেই কাজ যা ভাবছিলাম তাই হলো..!! জানালা দিয়া দেখলাম তানিশা আপু সুইসাইড করতে যাচ্ছে! তানিশা আপু গলায় ফাঁস দেওয়া চেষ্টা করছে! এখন কি করবো বুঝতে পারছিলাম না । সবাই দরজার ধাক্কা ধাক্কি করতেছে । এখন কিছু একটা তাড়াতাড়ি করতে হবে ! যে ভাবে হোক দরজা ভাঙতে হবে । দরজার পাশে গিয়ে সবাইকে বললাম জুরে জুরে লাথি মারার জন্য । আমার কথায় সবাই দরজার লাথি মারতে থাকে , ৫-৬ টা মারার পর দরজা ভাঙতে সক্ষম হলাম। ভিতরে গিয়ে আপুকে নামিয়ে ঠাসস ঠাসস করে গালে বসিয়ে দিলাম। আপু হয়তো এটা কখনো ভাবতে পারিনি আমি আপুকে থাপ্পড় মারবো। আপু থাপ্পড় খেয়ে আমার গায়ে হেলান দিয়ে জ্ঞান হারালো! থাপ্পড়টা মেবি অনেক জুরে লেগেছে তাই হয়তো জ্ঞান হারিয়েছে! আমি আপুকে নিয়ে নিচে নামলাম। সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে । তার পর আপুর জ্ঞান ফিরার জন্য অনেক চেষ্টা করলাম।
– আম্মুকে বললাম একটু পানি নিয়ে আসো ।
আম্মু পানি এনে আপুর চোখে দিলেন। সাথে সাথে আপুর জ্ঞান ফিরে। তখন আমি বললাম।
– এটা কি আপু ? নিজের জীবন এভাবেই নষ্ট করে দিতে গেলি?
– তো কি করবো বল ! কি নিয়ে বাঁচবো আমি ! আমার সব আশাইতো শেষ!!! ( কান্না করতে করতে)
– তাই বলে কি সুইসাইড করতে হবে!
– তো আমার কি বা করার ছিল বল..!
– আমারা আবার তোমার জন্য পাত্র খুঁজবো!
– আমাকে কে বিয়ে করবে শুনি ? যে মেয়ের হবু বর রাস্তায় আসার আগেই মারা যায়! সেই মেয়েকে কে বিয়ে করবে তুই বল?
– আমি কিছুই জানিনা ।
” বলেই ওখান থেকে চলে আসলাম। এখানে আর বেশিক্ষণ থাকলে হয়তো আমি ও কেঁদে দিতাম। তাই সেখান থেকে চলে ছাদে চলে আসলাম। ছাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে রইলাম। আপুর জন্য অনেক কষ্ট হচ্ছে । আমার চোখের কোনায় হাত দিয়ে দেখলাম পানি চলে এসেছে। ছাদে অনেক সময় দাঁড়িয়ে আপুর কথা ভাবতে লাগলাম। হটাৎ কাঁদে কারো হাতে স্পর্শ অনুভব করলাম। পিছন ফিরে দেখি আব্বু..!
– আব্বু কিছু বলবা?
– হুম বলবো ।
– বলো কি বলবা?
– তুই আমাকে আগে কথা দে , আমি যা বলবো আমার সে কথা গুলো রাখবি ?
– হুম রাখবো বলো ?
– আমি বলি কি তুই তানিশা কে বিয়ে করে নে?
– কি বলো আব্বু এটা কিভাবে সম্ভব তানিশা আমার আপু হয় ? তার উপর আমার বড় ..!
– আমি জানি , তানিশার যদি কিছু হয়ে যায় ?
– আমি জানিনা? আমি পারবো না।
– হুম… কিন্তু তুই ভেবে দেখতে পারিস । তোর জন্য হয়তো সে বেঁচে থাকতে পারবে ?
– ঠিক আছে ভেবে দেখবো।
” সেখান থেকে আব্বু চলে গেলো . আমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পর চাচু আমাকে বললো..!
– রাহী আমি একটা কথা বলি ?
চলবে…!