চাচাতো_বোন_যখন_বউ,পর্ব- ১০,১১

0
3027

গল্প – #চাচাতো_বোন_যখন_বউ,পর্ব- ১০,১১
✍️ #লেখক_আহমেদ_রাহী
১০

– কি হল হা করে কি দেখছিস?
– পরী দেখি
– এখানে পরী পাইলি কই?
– আমার সামনে

( মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেললাম। আমার কথা শুনে আপু কিছুটা লজ্জা পেয়ে যায়। )

– আর পরি দেখতে হবে না‌ চল ।
– হুম চলেন।‌

( তার পর আমি গিয়ে আমার বাইকটা বের করলাম ।‌ আপু এসে দাঁড়িয়ে আছে ।‌)

– উঠবেন না ?
– উঠছি তো।‌

( বলেই আপু বাইকে উঠে আমার কাঁধে হাত রাখলো ।‌ কাঁধে দাঁত দিতে অন্য রকম অনুভুতি হচ্ছিল।‌ এই প্রথম বাইকে কোনো মেয়েকে নিয়ে উঠলাম। চাচাতো বউকে নিয়ে বাইক চালাচ্ছি খুব ফিলিংস হচ্ছে । এই ফিলিংস টা আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।‌ তারপর বাইকটা স্টার্ট করে চালাতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর বাইকের স্পিড টা একটু বাড়িয়ে দিতেই আপু আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। এতোক্ষণ এটাই তো চাইছিলাম। নরম শরীরের স্পর্শ খুব ভালো লাগছিল। কিছুক্ষণ পর আমরা শ্রীমঙ্গল বধ্যভূমি ৭১ চলে আসলাম। চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল। আমরা বাইক থেকে নামতেই আপু আমার হাত শক্ত করে জরিয়ে হাঁটতে লাগলো। খুব ভালো লাগছিল তখন । আপু নিরবতা ভেঙ্গে বললো..

– রাহী?
– হুম বলেন।‌
– সরি ?
– সরি মানে কেনো?
– আমি তোকে মন থেকে স্বামী হিসেবে মানি না । কিন্তু সব সময় তোর উপর অধিকার দেখাই।‌
– না ঠিক আছে । আমি কিছু মনে করি না । সব আমার কপালে দোষ।
– এমন করে বলছিস কেন?
– কেমন করে বললাম আবার।‌
– কিছু না

( কিছুক্ষণ আপুর কিছু পিক তুলে দিয়ে আমি বললাম)

– কিছু খাবেন?
– হুম আইসক্রিম নিয়ে আয়।‌
– আমিতো জানি মেয়েরা ফুসকা পাগলি হয়।‌ কিন্তু আপনে আইসক্রিম পাগলি কেন?
– এমনি তোর কোনো সমস্যা?
– না আনছি আমি ।

( আইসক্রিম নিয়ে এলাম তার পর বললাম)

– এই নেন আপনার আইসক্রিম।
– একটা কেনো তুই খাবি না?
– না ওসব আমি খাই না ।‌ আপনে খান ?
– ওকে

( আইসক্রিম টা হাতে নিয়ে , বাচ্চাদের মতো খেতে লাগল । এতো বড় একটা মেয়ে হয়ে বাচ্চাদের মতো আইসক্রিম খাচ্ছে। কি অদ্ভুত ব্যাপারটা। আপু আইসক্রিম খাচ্ছে আর আমি তাকিয়ে শুধু দেখছি। )

– কি ব্যাপার অমন করে কি দেখছিস?
– ক ক ক কই নাতো
– আমি দেখেছি তুই আমার খাওয়া দেখছিলি ।
– না
– দেখতে হবে না , চাইলে তুই খেতে পারিস।
– না আপনি খান‌।
– আমি বলছি তুই খাবি এই এই নে ?
– আমি খাব না আপনে খান।
– তুই খাবি না কি আইসক্রিম তোর মুখে মেখে দিব?
– আচ্ছা ঠিক আছে
( আমি আর কিছু না বলে হা করি । আপু আইসক্রিম আমার মুখে দিল আমি খেতে না চাইলে ও বাধ্য হয়ে খেতে হলো )

– রাগ করলি?
– আমি সবার উপরে রাগ করিনা।
– ও তো কার কার উপর রাগ করিস না একটু শুনি?
– আপনাকে বলবো কেনো?

( আর কিছু না বলে ঘোরা‌ঘুরি করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রাস্তায় হটাৎ আমার একটা ফ্রেন্ড মিতুর সাথে দেখা।

– কি রে রাহী কেমন আছিস?
– এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুই ?
– আমি ও ভালো আছি । তো তোর কি খবর?
– এইতো আর কি ।

( আমরা কথা বলছিলাম , হটাৎ আপুর দিকে চোখ যেতেই দেখলাম আপু রাগে ফুলছে । কিছু বুঝলাম না।‌)

– তোর সাথে মেয়েটা কে ?
– ও হলো আপনার বউ তানিশা।‌ আর তানিশা ও আমার ফ্রেন্ড মিতু ।
– হই আপু আপনে তো অনেক কিউট। ( মিতু বললো)
– ধন্যবাদ আপু ।

( মিতুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর বাড়িতে চলে এলাম। বাড়িতে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে।‌আমি ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে ছিলাম। তখন আপু রুমে আসলো। দেখে মনে হচ্ছে কোনো কারণে রেগে আছে।‌ রুমে এসে আমার সাথে কোনো কথা বলেননি। আমি ও বলিনি। রাতে আম্মু খাবার খেয়ে ডাকছে তাই আমি খাওয়া জন্য চলে এলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসি । এসেই শুয়ে পড়ি । তখন আপু রুমে আসলো । তখন আমি বললাম..)

– কি ব্যাপার আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো। সারাদিন তো ঠিকই ছিলেন।
– আমার সাথে কথা বলবি না তুই?
– কেনো আমি আবার কি করলাম।
– মেয়ে মানুষ দেখলেই গায়ে পড়ে কথা বলতে হবে তাই না ।
– কখন আবার মেয়েদের সাথে কথা বললাম।
– ও এখন তো মনে করিয়ে দিতে হবে। আসার সময় কি ওই মেয়েটির সাথে কথা বলিস নি , এতো হেঁসে হেঁসে কি কথা শুনি ?
– ওতো আমার ভালো ফ্রেন্ড ।
– তাহলে ওর কাছে যা আমার সাথে কথা বলবি না।
– আমি ওর সাথে কথা বলছি তাতে আপনার কি , আপনি এতো রাগছেন কেনো?
– আমারি তো সব।
– মানে?
-কিছু না

( বলেই শুয়ে পড়লো। কি আজব মেয়েরে বাবা । এখন দেখছি কারো সাথে কথা বলতে দেবে না । নিজে তো ভালো ভাবে কথা বলেই না আবার অন্য কারো সাথে কথা বললে রেগে যায়। মেয়েদের মন বুঝা আসলে অনেক কঠিন। কি কখন কি চায় তারাই ভালো জানে )

– কি বলছিস ?
– আপনে এখনো ঘুমান নি ?
– তুই ঘুমাবি না ?
– হুম ঘুমাচ্ছি।‌

( সকালে ঘুম থেকে উঠে তো অবাক আপু আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। আমার শরীর কাঁপছে ।‌ হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কি আর করবো‌ এতো রোমান্টিক হলে তো চলবে না । আপু কে ডাকতে লাগলাম।)

– আপু আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে কেনো?
– আমি আমার হাসব্যান্ড কে জরিয়ে আছি তোর কেনো সমস্যা?
– আপনার হাসব্যান্ড মানে বুঝলাম না।
– এখন ঘুমাতে দে বেশি কথা বলিস না ?
– আপনি ঘুমাবেন ভালো কথা । আমাকে তো ছাড়েন ।
– আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই ঘুমিয়েছি । ডিস্টার্ব করিস না তো এখন ?

( হারামজাদি কয় কি আমাকে জরিয়ে আছে আবার আমাকেই বলছে ডিস্টার্ব না করতে। মনে হচ্ছে লাথি মেরে মঙ্গলগ্রহে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু ততক্ষণে ভাবলাম যদি সেখানে পাঠিয়ে দেই আমার কি হবে । আমি তো আপুকে ভালোবাসি।
নিজেকে শান্ত করে বললাম..)

– আপনি ঘুমান আমি মান করেছি না কি । কিন্তু আমাকে ছাড়ুন ।

( তারপর আপু আমাকে ছেড়ে দেয় )

– আপনি চাইলে আরো ঘুমাতে পারেন।
– হুম ।
– তার আমি ফ্রেশ‌ হয়ে নাস্তা করে রুমে এসে দেখি বাচ্চাদের মতো বালিশটাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। এটা দেখে আমার ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুটে উঠেছে। কালকে দিনটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগছিল ‌। যতো দিন যাচ্ছে আপুর প্রতি দুর্বলতা কাজ করছে কেনো জানি অনেক ভালোবাসে ফেলেছি । আপুকে ছাড়া হয়তো এখন এক সেকেন্ড ও বাঁচতে পারবো না । আমি কি আমার মনের কথা বলে দিবো । কিন্তু তখন যদি রেগে যায় । কিন্তু আমার মনের কথা না বলা পর্যন্ত তো আমি শান্তি পাচ্ছি না । সব সময় আপুর প্রতি ভালোবাসা, দুর্বলতা, ওকে স্পর্শ করার ইচ্ছা , ওর‌ প্রতি নেশা , আমার ভেতর টাকে শেষ করে ফেলছে। আচ্ছা আপু কি আমাকে ভালোবাসে। ওর ব্যবহার দেখে তো তাই মনে হচ্ছে । আপুও আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু বলতে পারছে না । আচ্ছা আমি কি সরাসরি গিয়ে বলে দিবো । আমরা কি সব কিছু ভুলে দুজন দুজনকে ভালোবাসতে পারি না। আজকে বলে দিবো যা হবার হবে ।‌)

( এ দিকে তানিশা ঘুম থেকে উঠে রাহীকে কোথায় খুঁজে পাচ্ছে না । সকাল থেকে একবার ও দেখছে না । তানিশা ও রাহী কে ভালোবাসে কিন্তু কখন বলতে পারছে না । কারন একেতো ও একটা মেয়ে তার উপর রাহী ওর চাচাতো ভাই তার উপর ছোট লজ্জার কারনে বলতে পারছে না। কিন্তু মন থেকে রাহী কেই ভালোবাসে। )

” রাতে বাড়ি আসার সময় আপুর জন্য আইসক্রিম চকলেট আর ফুল নিয়ে আসলাম ‌। যে গুলো আপুর পছন্দ করে সে গুলো নিয়ে আসি । আজকে আমার মনের কথা বলেই দিবো পরে যা হবার দেখা যাবে। বাড়িতে এসে এ গুলো নিয়ে সুজা আমার রুমে চলে এলাম। আমার রুমে মধ্যে ঢুকতে যাবো তখনি দেখি আপু কারো সাথে ফোনে কথা বলছে । কি‌ জেনো মনে করে আর ভিতরে গেলাম না। দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে শুনতে লাগলাম।

( হে আমি সত্যিই ওকে ভালোবাসি। আর ওর সাথে সারাজীবন থাকতে চাই । কিন্তু এই ঝামেলা টা থেকে আগে বের হই তার পর আব্বু আম্মু কে সব বলে আমরা দুজন হানিমুনে যাবো । )

” তাদের কথা শুনে আমি তো অনেক বড় একটা ধাক্কা খাই । তার মানে আপু অন্য কাউকে ভালোবেসে। মুহুর্তের মধ্যে আমার সব আশা ভরসা সব নষ্ট হয়ে যায় । আমি কখনো ভাবতে পারিনি আমি ওর কাছে এতো বড় একটা সমস্যা।
আমি ফুল গুলো ফেলে দিয়ে আইসক্রিম আর চকলেট চুটকি কে দিয়ে দিলাম। না আর নয় আমি ওকে মুক্ত করে দিবো । আমি তাদের মাঝে ঝামেলা হয়ে থাকতে চাইনা । তাই অনেক কিছু ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম আমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দিবো । ও যদি অন্য কাউকে নিয়ে সুখে থাকতে চায় আমি বাধা দিব না । আমি রুমে ঢুকতেই আপু ফোন রেখে দেয় ।
( গতকালকে ইফতারের পর গল্প লিখতে বসেছিলাম। লেখা শেষ কিন্তু যখন কপি করতে যাবো তখন ডিলেট অপশনে লেগে ডিলেট হয়ে যায় । তাই দিতে পারিনি। তার জন্য দুঃখিত। আর গল্পটা কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না। তানিশা কি সত্যি অন্য কাউকে ভালোবেসে, রাহী কি সত্যি ডিভোর্স দিয়ে দিবে। জানতে হলে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করেন । আর এর মধ্যে আমার পেজে টা থেকে ঘুরে আসবেন। )
????? ????-আহমেদ রাহী 彡

চলবে …?

গল্প – #চাচাতো_বোন_যখন_বউ ( পর্ব-১১ )

✍️ #লেখক_আহমেদ_রাহী
________________________

” ও যদি অন্য কাউকে নিয়ে সুখে থাকতে চায় আমি বাধা দিব না । আমি রুমে ঢুকতেই আপু ফোন রেখে দেয় ।

– সারাদিন কই ছিলি একবারও বাড়িতে দেখলাম না ?
– একটা কাজ ছিল ।
– সারাদিন কিছু খেয়েছিস ? দাঁড়া আমি তোর জন্য খাবার আনছি ।
– না না আমি খাব না বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি । ( যে কথা গুলো শুনেছি , আর খাবার মুখে দিয়ে কি আর যাবে।)
– তোর সাথে আমার কিছু কথা ছিল ?
– বলেন
– অনেক দিন থেকেই তোকে বলতে চাইছিলাম। কিন্তু বলতে পারিনি। জানিনা এই বিষয়টা তুই কিভাবে নিবি ?
– অত কিছু না বলে আসল কথাটা বলেই ফেলুন ।
– আসলে আমি তোকে ..
– ডিভোর্স দিতে চান তাইতো
– মানে ?
– মানেটা খুব সহজ । আপনি আর এই মিথ্যা সম্পর্ক রাখতে চান না । তাই আমাকে ডিভোর্স দিতে চান । সমস্যা নেই দিয়ে দিব । আপনার ইচ্ছা আমি খুব তাড়াতাড়ি পূরণ করে দিবো । আমি ডিভোর্স পেপার রেডি করছি । আপনি আপনার পছন্দ মতো একটা ছেলেকে বিয়ে করে নিয়েন ।
– কিন্তু আমি তো ..
– বাড়িতে কিভাবে জানবেন ? ওইটা আপনাকে চিন্তা করতে হবে না আমি ম্যানেস করে দিবো ।

( তারপর আমি আর আপুকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফ্লোরে শুয়ে পড়লাম। আর বেশিক্ষণ কথা বললে হয়তো চোখ দিয়ে বন্য শুরু হয়ে যেত। যাকে এতোটা ভালোবাসি সে আজ আমাকে এভাবে চ্যাকা দিয়ে দিল । এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নেই‌ । হটাৎ কারো কান্না করার আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখ খুলে দেখি তানিশা আপু কান্না করতেছে। )

– কি ব্যাপার এতো রাতে কান্না করছেন কেনো?
– কিছু না এমনি ।‌
– আজব তো এতো রাতে কেউ কাঁদে? নিজেও ঘুমাচ্ছেন না আমাকেও ঘুমাতে দিচ্ছেন না ?
– আচ্ছা তুই ঘুমা ..

( আমি ঘুমিয়ে যাই ।)

” এ দিকে তানিশা ভাবতে থাকে ! কেনো তোকে বলতে পারলাম না আমি তোকে কতটা ভালোবাসি। আমাকে একবার বলার সুযোগ না দিয়ে তুই সব বলে গেলি । আমি নাকি ডিভোর্স চাই কিভাবে ভাবছি এসব । ওকে তুই যদি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে ভালো থাকিস । তাহলে চলে যাবো তোর জীবন থেকে অনেক দূরে। তাছাড়া তোকে বিয়ে করে তোর জীবনটা আমি নষ্ট করে দিয়েছি। পারলে ক্ষমা করে দিস …!! )

” পরেরদিন আমি উকিল এর সাথে যোগাযোগ করে ডিভোর্স এর এপ্লাই করে আসলাম। আমাদের ৬ মাসের ডেট দিয়েছেন । সেখান থেকে আফিকুল এর সাথে দেখা করলাম।

– দোস্ত আমার সব শেষ..!!
– কেনো তোর আবার কি হলো? আর কাঁদছিস কেনো?
– তানিশা আমার কাছে থেকে ডিভোর্স চায়।
– কি বলছিস এসব তুই ?
– হ্যা আমি সত্যিই বলছি।
– তাহলে কি করবি এখন তুই?
– আমার সাথে চল ?
– কোথায়?
– চল না ।

( আমি আর আফিকুল একটা ব্যারে আসলাম। )

– এখানে আনলি কেনো?
– ড্রিংকস করবো তাই ।
– কি তুই ড্রিংকস করি ?
– হুম
– কিন্তু তুই তো আজ পর্যন্ত একটা সিগারেট ও মুখে নিয়ে দিখিস নাই ।
– আজকে মতো তো আর কখনো কষ্ট পাই নাই।

( তার পর আমারা দুজনেই ড্রিংকস করি আমি একটু বেশি খেয়েছি যার কারণে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না । তাই আফিকুল আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসে । বাড়িতে দরজায় নক করতেই তানিশা দরজা খুলে দেয় । )

– ভাবি আসলে আজকে রাহী একটু ড্রিংকস করে ফেলছে।
– আচ্ছা ঠিক আছে আপনি ওকে ভিতরে নিয়ে আসুন ।

( তার পর আফিকুল আমাকে রুমে রেখে চলে যায়। একটু পরে আপু আসলো। )

– তুই ড্রিংকস করেছিস?
– হ হ হ হু ম ম ক রে ছি তোর কোনো সমস্যা?
– তুই তো আগে এমন ছিলি না ?
– স‌.‌..ব স….ম…য়..কি একরকম থা..ক…তে হবে?

( এই বলে আমি তানিশার দিকে এগোচ্ছি , আর তানিশা পিছন যাচ্ছে।)

– এ দিকে আসছিস কেনো?
– আমার ইচ্ছে হয়েছে আমি আমার বউকে আদর করবো যা ইচ্ছা তাই করবো আপনার কোনো সমস্যা?
– আমি তোকে আগেই বলেছিলাম?

( পুরো কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি ওকে ধরে ফেলি । )

– ক‌ ক কি করছিস কি ছাড় আমাকে?
– আজকে আমার বউয়ের অধিকার নিয়েই ছাড়বো।

” এই বলে তানিশা কাছে যেতেই ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দিল । এতো জুরে ধাক্কা দেয় যে আমি আর উঠতেই পারি না । একে তো নেশা করা অবস্থায় । কখন যে ওখানেই ঘুমিয়ে পড়ি নিজেই জানিনা। সকালে উঠে দেখি আজকে আমার আগেই আপু উঠেছে। তাতে আমার কি আমি আর ওকে নিয়ে ভাবতে চাই না । ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলাম কিন্তু তানিশা কে কোথায় দেখতে পাচ্ছি না। কি ব্যাপার গেলো কই। তার পর কিচেন গেলাম । গিয়ে দেখি আম্মু আছে তানিশা নেই ।

– আম্মু তানিশা কোথায়?
– ও তাসনিয়া রুমে আছে।
– আচ্ছা ।

” তারপর তাসনিয়ার রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি দুজনে বসে কি যেনো বলছে । আমাকে দেখে তাসনিয়া বলতে লাগল )

– ভাইয়া কেমন আছিস ?
– ভালো তুই ?
– আমিও ভালো। ভাবিকে ডাকতে এসেছিস?
– নাহ এমনিতেই তোকে দেখতে এসেছিলাম।
– হে আগে তো এতো ভালো ছিলি না ?এখন কি ব্যাপার।‌
– ..
– ভাবি যাও , ভাইয়া তোমাকে দেখতে না পেয়ে মনটা কে শান্তনা দিতে পারছে না ।
– তুই কিন্তু একটু বেশি পেকেছিস ?
– দেখছো ভাবি তোমার সামনে ভাইয়া আমাকে বকা দিচ্ছে।
( এতক্ষণ চুপ ছিল এবার বললো?)

– ওকে আর জ্বালাতে হবে না চলো ।

( তারপর আমি আর আপু চলে আসলাম, পিছনে ফিরে দেখলাম হারামিটা মিটমিট হাসছে। )

– কিছু বলবি ?
– আসলে কালকে রাতের জন্য সরি ।

( আপু মাথা নিচু করে আছে)

– আসলে কালকে রাতে মনে হয় একটু বেশিই করে ফেলেছি। আমি কখনো ভাবিনি এমনটা হবে প্লীজ মাফ করে দিয়েন ।
– আচ্ছা ঠিক আছে, তখন তুই হুশে ছিলি না । কিন্তু তুই ড্রিংকস কেনো করেছিস?
– এমনি বাদ দেন ।

( বলেই চলে আসতে চাইছিলাম, এমনি আপু আমার হাত টেনে ধরে। আপুর হাতের ছোঁয়ায় কেমন যেনো বুকের মধ্যে ইলেকট্রিক শক লাগলো। )

– আমাকে ইগনোর করছিস কেনো?
– কই না তো ।‌
– তাহলে বললি না কেনো?
– এমনি ভালো লাগছে না ।
– ও আচ্ছা বলতে হবে না।

( তারপর আপু চলে যায়। সারাদিন আর একবারও কথা বলেনি । তাতে আমার কি দু’জনে দূরে দূরে থাকাই ভালো । কিছু দিন পর আবার শরীরটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। এই কয়দিনে তানিশার সাথে দরকার ছাড়া কেনো কথা হয় নাই। তানিশা ও দরকার ছাড়া কথা বলে নি । )

– দেখি শুজা হয়ে শো আমি তোকে জলপট্রি দিচ্ছি।
– লাগবে না আমার আমি ঠিক আছি ।
– লাগবে না মানে জ্বর তো এখনো কমেনি।
– তো কি হয়েছে মরেই তো জাবো তার থেকে তো বেশী কিছু না ।
– এতো বেশি কোনো বুঝিস সব সময়?
– আমি বেশি বুঝি তাতে আপনার কি ?
– আজব তো এইরকম করছিস কেন তুই আমার সাথে?
– কি করছি ?
– কিছু না । এখন চুপ করে থাক

( কিছু আর বললাম না , জানি আর কিছু বললে হয়তো কষ্ট পাবে । আর কিছু শুনবেও না । তাই শুয়ে থাকলাম। আপু আমাকে জ্বলপট্রি দিয়ে দিল। যতদিন পর্যন্ত সুস্থ হইনি আমার পাশে থেকেছে। কিন্তু একবার ও ভালো ভাবে কথা বলেনি । ‌এতো যত্ন করিস কিন্তু ভালোবাসি কথাটা বললেও কি হয় ।‌ নিজেও কষ্ট পাবে আমাকে ও কষ্ট দিবে । ফাজিল একটা মাইয়া । কিছু দিন পর বলে ও না কি তাদের বাড়িতে যাবে । )

– কাল আমাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাবি?
( কি ব্যাপার আগে তো বললে না না করতো । আজ বলতেই রাজি হয়ে গেলো‌ ।)

” পরেরদিন আপুকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাই। আপুকে রেখে আসতে যাবো তখন ..

– বাবা আজকে দিনটা থেকে যা । এখনি আসলি আবার চলে যাবি?( শাশুড়ি মা কথা টা বললেন)
– না মা আমার কাজ আছে। ও থাকুক যতদিন থাকার আমি পরে এসে নিয়ে যাবো।
– আচ্ছা ।‌

( তানিশা কাছে ওর মা গিয়ে বললো ।)

– কি ব্যাপার তানিশা রাহীর সাথে কি তোর কিছু হয়েছে ও এমন ভাবে চলে গেল কেন?

( তানিশা কিছু না বলে ওর মাকে জরিয়ে ধরে কাঁদে দেয়।)

– কি হলো কাদছিস‌ কেনো?
– (কান্না করতে থাকে )
– কি হয়েছে পাগলি মেয়ে এভাবে কাদছিস কেনো‌? রাহী কি তোকে কিছু বলেছে ?
– আম্মু আমি রাহী কে ভালোবাসে ফেলেছি কিন্তু বলতে পারছিনা । ও অন্য কিছু ভেবে আমার উপর রেগে আছে।

( তার পর ওর মাকে সব খুলে বলে। )

– আমি রাহীর সাথে কথা বলে দেখছি।
– না আম্মু তোমাকে বলতে হবে না।
– তুই তো বলতে পারবি না। পাগলি একটা আমি বলছি ।
– না আমিই বলবো । তারপর যা হবার হবে ।
– ওকে তাহলে এবার কান্না থামা পাগলি একটা।

( এ দিকে আমি বাড়িতে এসে কিছু ভালো লাগে না । মনটা শুধু হাহাকার করছে ‌ , কি জেনো নেই মনে হচ্ছে। আপুকে ওখানে রেখে এসে তো এখন রুমটা ফাঁকা ফাঁকা মানে হচ্ছে। ওকে কি নিয়ে আসবো । কিন্তু এতো রাতে কিভাবে যাবো। কাল সকালে গিয়ে নিয়ে আসবো তা না হলে ওকে দেখতে না পেয়ে মরেই যাবো। এদিকে রাতটা যেনো কাটতেই চাচ্ছেনা। ওপাশ ও পাশ করছি ‌ । এ দিকে তানিশা ও অস্থির অস্থির লাগছে। কেনো যেনো রাহিকে ছাড়া ভালো লাগছে না । অনেক কষ্টে পর সকাল হল । আমি রেডি হয়ে বেরিয়ে পারবো তখনই…
????? ????-আহমেদ রাহী 彡

চলবে ….??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here