চাদর_জড়ানো_চিরকুট #পর্বঃ- ২১

0
1969

#চাদর_জড়ানো_চিরকুট
#পর্বঃ- ২১

মুমূর্ষু রবিউলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন। চোখ দিয়ে দেখা ছাড়া তেমন কিছু করার নেই। লতা কিছু বলতে গিয়ে যেন গলা আটকে আসে তার। বলি বলি করে আবার চুপ হয়ে যায়, চোখের পানি হয়তো শুকিয়ে গেছে।

সাবরিনা বললো,
– এভাবে তাকিয়ে থেকে কোনো লাভ নেই। জ্ঞান ফিরে এলে তারপর কথা বলতে পারবো সবাই।

সাজু বললো,
– আমার মনে হয় পুলিশকে জানানো দরকার। ওদের সেই লিডারকে আমরা এখনো গ্রেফতার করতে পারিনি। সে যেকোনো সময় ক্ষতি করার চেষ্টা করতে পারে।

– আপনি থাকেন, তাছাড়া আমি আমার কিছু সিকিউরিটি বাড়িয়ে দিচ্ছি। ওই লোকটা কীভাবে জানবে যে রবিউল এই হাসপাতালে আছে।

– জানবে জানবে, কিন্তু আমাকে যেতে হবে নতুন একটা ঝামেলা সামলাতে।

লতাকে নিয়ে আবারও বারান্দায় এলো তারা। লতা বললো,
– কিসের ঝামেলা?

– আপনার বাবা সিঙ্গাপুর থেকে আসার পরে আপনার সঙ্গে কতবার দেখা হয়েছে?

– হয়েছে কয়েকবারে, তবে আমরা তো আলাদা বাসায় থাকতাম তাই রোজ একবার করে দেখা হতো আমাদের।

– সিঙ্গাপুর থেকে আসার পরে আপনার বাবার প্রতি কোনো সন্দেহ হয়েছে? মানে আপনার সেই বাবার সঙ্গে এই বাবার কোনো পার্থক্য মনে হয়?

– এই বাবা আর সেই বাবা মানে কি?

– আমার ধারণা হচ্ছে আপনার বাবা সিঙ্গাপুর গিয়ে চিকিৎসা করেননি। আপনার আসল বাবা মারা যাবার পরে যাকে নতুন বাবা হিসেবে জানেন। সেই বাবাকে সম্ভবত খুন করা হয়েছে বা কোথাও বন্দী করে রাখা হয়েছে।

– কি বলছেন এসব?

– জ্বি, সেজন্যই তিনি কারো সঙ্গে কথা বলে না। নকল বাবা সেজে যিনি আপনার বাবার ভূমিকায় অভিনয় করছেন তাকে ধরতে হবে।

– আপনি কি নিশ্চিত?

– হ্যাঁ, কারণ আমি হাসান ভাইকে দিয়ে বেশ কিছু খবর নিলাম। আপনার বাবা ক্যান্সার অপারেশন করতে সিঙ্গাপুর যাননি।

এমন সময় লতার কেবিনে যে নার্স ছিল তিনি দৌড়ে এলেন। তারপর সাবরিনার দিকে তাকিয়ে বললো,

– যে পুলিশটা ওখানে দাঁড়িয়ে ছিল, তিনি কাকে যেন কল দিয়ে বলছে যে ” রবিউল আর লতার সন্ধান পাওয়া গেছে। ”

সাজু বললো,
– শা/লা বেঈমান কোথাকার।

★★★

দাদাজান যখন মায়াজালে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াতেন তখন কিছু পুলিশ তার নিজের করে নিয়েছিলেন। হাসান সাহেব স্থানীয় থানা থেকে ব্যাকআপ টিপ নিয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন ছিল দাদাজানের টাকার লোভী। সাজুর সঙ্গে যখন একজন পুলিশ দরকার হলো তখন দুজনের মধ্যে একজন নিজেই এগিয়ে আসেন।

তার এগিয়ে আসার পিছনে কারণ আছে। কারণ হচ্ছে, তারা দাদাজানকে আগেই বলে দিয়েছিল যে পুলিশ ওখানে যাচ্ছে। দাদাজান লতাকে রেখে যখন পালিয়ে গেল তখন এই দুজনকে বলেছিল সবকিছু খবর জানাতে।

কামাড়পাড়ার একটা গুদামঘরে বসে আছেন দাদাজান। রবিউল যে চারজনকে মারার টার্গেট করেছিল তাদের মধ্যে বাকি দুজন ছিল মানিকগঞ্জ। সেই দুজনকেই ডেকে আনা হয়েছে। ওরা দুজন মিলে এখন সেই হাসপাতালে যাবে।

দাদাজান নিজে যাবেন না এটাই স্বাভাবিক। হতে পারে সেখানে তার জন্য বিপজ্জনক কিছু অপেক্ষা করতে পারে। তাছাড়া অসুস্থ রবিউলকে মারার জন্য এটাই বেশ নিরাপদ মনে হচ্ছে। এখন এমন পরিস্থিতিতে যদি তাকে মারা না যায় তাহলে আর কবে মারা যাবে?

তারেক ও রুবেল নামের ওই দুজন একটা বাইক নিয়ে রওনা দিল। দাদাজান তাদের নিশ্চিত করে দিয়েছেন যে তারা সেখানে পুলিশের সাহায্য পাবেন। সুতরাং কোনো প্রকার ঝামেলা সেখানে হবে না, যদি হয় তাহলে তো তিনি আছেনই।

|
|

সাজু ভাইয়ের সঙ্গে আসা সেই পুলিশের নাম তৌহিদ আহমেদ। সাজু তার সামনে এসে প্রথমে তার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। তৌহিদ খানিক অপ্রস্তুত হয়ে গেল। বললো,

– কিছু বলবেন?

– আপনার মোবাইলটা দেখি।

– মানে?

– মোবাইলটা দেন তারপর বলছি।

তৌহিদ সাহেব অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের মোবাইল সাজুর দিকে এগিয়ে দিল। নাম্বার ডিলিট করে দিয়েছে আগেই। সাজু তার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল কেবিনে। তারপর সেখানে দাঁড়িয়ে আস্তে করে বললো,

– একটা মানুষ কখন বেঈমানী করতে পারে জানের?

– চুপচাপ।

– বলেন, জানেন কিনা।

– আপনিই বলেন।

– আপনাকে যখন কেউ বিশ্বাস করবে, তখন কিন্তু আপনি তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার সুযোগ পাবেন। আপনি নিজেকে হয়তো চালাক মনে করবেন কিন্তু আসলে কি তাই?

– এসব আমাকে বলছেন কেন?

– দাদাজানের কাছে কল করেছিলেন তাই না?

– কোন দাদাজান?

– আপনার সিমটা এখন যদি কললিস্ট চেক করা হয়। তাহলে সেখানে কিছুক্ষণ আগে কথা বলা যে নাম্বারটা পাওয়া যাবে সেটাই দাদাজান।

– আমি কাউকে কল করিনি।

– এরচেয়ে বাচ্চারা ভালো মিথ্যা বলতে পারে। আপনি আইনের মানুষ তাই এসব ভালো করে জানেন আপনি।

– চুপচাপ।

– নিজেকে বাঁচানোর এবং ভালো হবার একটা সুযোগ আপনি পাবেন। কিন্তু সেই সুযোগে আপনি পিছনের বেশ কিছু অপকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন।

– মানে?

– দাদাজানের নাম্বারটা দেন, আমরা তাকে ট্রাকিং করতে চাই। তাকে গ্রেফতার করার জন্য আমরা তার নাম্বার চাই। কথা দিচ্ছি, আপনার দোষত্রুটি আমি গোপন রাখবো। ভালো হবার সুযোগ।

তৌহিদ বেশ চিন্তায় পড়ে গেল। সাজু ভাই কল দিয়ে হাসানকে সবকিছু জানালো। হাসান সাহেব রবিউলের কথা শুনে নিজেও চমকে গেল।

তৌহিদের মোবাইল দিয়ে সে আবার দাদাজানকে কল দিয়ে বললো,
– রবিউল ও লতা দুজনকেই হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাচ্ছে সাজু ভাই। সুতরাং এখানে এসে বা লোক পাঠিয়ে কোনো লাভ নেই।

কথাটা সম্পুর্ণ সত্যি নয়। লতাকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে ঠিক কিন্তু রবিউলকে রাখা হবে এই হাসপাতালে। তৌহিদ নামের ওই পুলিশকে হাত-পা বেঁধে বন্দী করে রাখা হয়েছে। হাসান সাহেব নিজেই বলেছেন আপাতত এরকম ব্যবস্থা করা হোক। কেননা তিনি এখন যাচ্ছেন কামাড়পাড়া সেই গুদামঘরে।

হাসান তার দল নিয়ে যখন গুদামঘরে আক্রমণ করে তখন দুপুর সাড়ে বারোটা। তৌহিদের কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে সেই লোকেশন ট্র্যাকিং করে এ পর্যন্ত এসেছে তারা। পুলিশের আগমন পেয়ে যেন হতভম্ব হয়ে যায় সাইদুর রহমান টুকু বা দাদাজান নাম নেওয়া লোকটা।

পুলিশ ঘিরে ফেলেছে ঠিকই কিন্তু তবুও বাঁচার জন্য চেষ্টা করতে লাগলো। নিজের কাছে পিস্তল ছিল, সে পিস্তল দিয়ে আক্রমণ করেন। হাসান সাহেব নিজেও তখন গুলি করতে বাধ্য হন। দাদাজানের লক্ষ্য ব্যর্থ হলেও হাসানের বুলেট ছিদ্র করে দেয় দাদাজানের বুকের মধ্যে। আরো দুটো গুলি করেন হাসান সাহেব, তবে সেগুলো ঘৃণা নিয়ে।

হাসান সাহেবের এখনো মনে আছে এই লোকটা সাজুকে মারার জন্য বন্দী করেছিল আজিমপুরে। সেবার রবিউল সাজুকে সেখান থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে যায়। হাসান সাহেব চাইলে গুলিটা শরীরের অন্য কোথাও করতে পারতেন। করে তিনি ভালো করে জানেন যে এই লোকটাকে আটক করে হাজতে নিয়ে কোনো লাভ হবে না।

যেহেতু সে আক্রমণ করেছে, সুতরাং এমতাবস্থায় এর হিসাবটা ক্লোজ করাই ভালো। অন্তত কোর্টে দিনের পর দিন সত্য মিথ্যার লড়াই করতে হবে না।

★★★

বিকেল চারটা।
ডিবি অফিসে হাসান, লতা, সাজু ভাই ও রামিশা বসে আছে। পাশের ঘরে রাখা হয়েছে লতার বাবা বেশে নকল বাবা এবং তার বৃদ্ধ এসিস্টেন্টকে।

ইতিমধ্যেই তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের মূল দানব দাদাজান মারা গেছে। সুতরাং তাদের পক্ষে সবচেয়ে ভালো হবে সত্যি স্বীকার করা। নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করার জন্য তাদের কুড়ি মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে।

হাসান বললো,
– হাসপাতালের খবর কি? রবিউলের কি খবর?

– জ্ঞান ফিরেছে দুপুরের দিকে, আশা করি ভয় একটু কম হবে।

– সুস্থ হলে আবার পালিয়ে যাবে না তো?

– জানি না, তবে এতো তাড়াতাড়ি পালাতে পারবে বলে মনে হয় না। এখনো তো ঠিকমতো কথা বলতে পারে না।

– এদিক মোটামুটি ঝামেলা শেষ, হাসপাতালের মধ্যে পুলিশ পাহারা রাখা হোক। মানবিক বিচারে ফাঁসি হবে বলে মনে হয় না।

লতা বললো,
– যদি ফাঁসির আদেশ হয়ে যায়? তাহলে এতো কষ্ট করে বেঁচে থেকে ওর লাভ কি?

– সাজু বললো, আগে সুস্থ হোক তারপর সকল আইনি বেআইনি হিসাব হবে।

লতা চৌধুরী সাজুর একটা হাত ধরে বললো,
– একটা অনুরোধ করবো?

– করেন।

– রবিউলকে পুলিশে দিয়েন না।

– এটা সম্ভব না, অপরাধ করলে শাস্তি তো হবেই।

লতা কিছু বললো না।
রামিশাকে নিয়ে সাজু ভাই বেরিয়ে গেল। তাদের পিছনে পিছনে হাসান সাহেব ও লতা চৌধুরী উঠে গেল।

|
|

সাজু ভাই নিজে কোনকিছু প্রশ্ন করতে চাইলেন না। হাসান সাহেবকে সবকিছু জিজ্ঞেস করতে বললেন। হাসান কোনো ভূমিকা না করে বললো,

– লতার বাবা কোথায়? তাকে কী করা হয়েছে?

– দুজনেই চুপচাপ।

– আপনারা যতক্ষন চুপচাপ থাকবেন ততক্ষণ পর্যন্ত এখানেই থাকতে হবে।

– তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
গম্ভীর কণ্ঠে বললো বৃদ্ধ এসিস্টেন্ট।

লতা বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইল। এমনিতেই তার শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। যদিও গতকাল থেকে বাবাকে ঘৃণা করেছে। কিন্তু সাজুর কাছে যখন শুনেছে ইনি তার আসল বাবা নয় তখন থেকে আর ঘৃণা কাজ করেনি।

বৃদ্ধ এসিস্টেন্ট একনাগাড়ে বলতে লাগলো। তার এলোমেলো কথা গুলো সাজিয়ে লিখলে এখানে দাঁড়ায়,

আট মাস আগে লতার বাবার দেহের ন্যায় একটা লোক বের করে দাদাজান। তারপর অপারেশন করে প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে লতার বাবার চেহারার ন্যয় আকৃতি ধারণ করায়।
এরপর শুরু হয় দ্বিতীয় পরিকল্পনা। লতার বাবার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে তাকে মিথ্যা অপারেশন করার কথা বলা হয়। তারপর লতার বাবাকে কিডন্যাপ করে আটকে রাখা হয়। অফিসের সব স্টাফদের জানানো হয় তিনি অপারেশন করতে সিঙ্গাপুর গেছে।

তাকে দিয়েই লতার বাবার পুরাতন এসিস্ট্যান্টকে কল করানো হয়। বলা হয় চাকরি ছাড়ার জন্য। লতার বাবা নিজের পুরাতন এসিস্ট্যান্টকে তখন সত্যি সত্যি বের হয়ে যেতে বলেন। এরপর হঠাৎ করে একদিন তাকে মেরে ফেলে দাদাজান।

নির্দিষ্ট একটা সময়ে বর্তমান নকল বাবাকে প্রকাশ করা হয়। কারো সঙ্গে তেমন কথা বলা নিষেধ আছে বলে প্রচার করা হয়। অফিসের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাকে আগে থেকেই অনেক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আলাদা বাড়িতে থাকার জন্য লতার সামনে বেশি পড়তে হতো না।
সবকিছু মিলিয়ে চারিদিকে যাচ্ছিল।

এরপর তৃতীয় টার্গেট লতাকে মেরে ফেলা। কারণ সে ফিরোজকে বিয়ে করে ফেলেছে। ফিরোজ ছিল এমনিতেই খুব খারাপ মানুষ। রবিউলের সঙ্গে অনেক আগে থেকে দাদাজানের রাগ ছিল ঠিকই কিন্তু এতটা নয়।

দাদাজানের পরামর্শে বৃদ্ধ এসিস্টেন্ট ও লতার বাবা রবিউলের সঙ্গে লতাকে হত্যা করার জন্য চুক্তি করতে চায়। কিন্তু রবিউল উপযুক্ত কারণ না পেয়ে কাজটা করতে অস্বীকার করে।

এসব ঘটনা ফিরোজ জেনে যায়। সে হঠাৎ করে সবকিছু লতাকে বলে দেবার হুমকি দেয়। ঠিক সেই মুহূর্তে আবার রবিউলকে মারার জন্য লোক সেট করে দাদাজান। কারণ সে জানে রবিউল আর তার হয়ে কাজ করবে না। নিজের পুরনো শত্রুতার জন্য সে রবিউলকে মারতে চায়। কিন্তু তাকে মারতে গিয়ে ফিরোজরা একটা ঝামেলা করে ফেলে।

এরপর ফিরোজকেও হত্যার পরিকল্পনা করে দাদাজান। কিন্তু তার আগেই ফিরোজ নিজেই লতাকে খুন করার আগ্রহ প্রকাশ করে। দাদাজান তখন এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চায়। লতাকে ফিরোজ মারবে আর ফিরোজকে মিজান ও তার সহচর।

সবকিছু ঠিক ছিল, মাঝখানে রবিউল এসে সব নিমিষেই এলোমেলো করে ফেলে। দাদাজান চেয়েছিল লতার বাবা যেহেতু নেই, এখন লতার বাবা বেশে যিনি আছেন তার কাছ থেকে সবকিছু লিখে নিবেন। মাত্র কয়েক মাসের পরিকল্পনায় তিনি পেয়ে যেতেন অঢেল সম্পত্তি।

★★★

রবিউলকে মারার উদ্দেশ্যে আসা তারেক ও রুবেলকে গুদামঘরের পাশের এক দোকানদার কল দিয়ে দাদাজানের মৃত্যুর খবর জানান। তারা দুজন আর হাসপাতালের দিকে গেল না।

১৩ দিন পরে রবিউলকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। রবিউল কোনো আপত্তি করে নাই। এই তেরো দিন বেশিরভাগ সময় লতা চৌধুরী হাসপাতালে ছিলেন। নিজের স্বামীর লাশ কোথায় দাফন করা হয়েছে সেটাও দেখতে যাননি লতা চৌধুরী।

পুলিশ যখন রবিউলকে নিয়ে যাচ্ছিল লতা তখন সাবরিনার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বললো,

– ওর কি বড় ধরনের কোনো শাস্তি হবে?

সাবরিনা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। একটা অন্ধ আরেকটা অন্ধের কাছে পথের কথা জিজ্ঞেস করে। সাজু ভাই উপস্থিত ছিল না, হাসান সাহেব এসেছেন।

নির্দিষ্ট দিন দেখে রবিউলকে কোর্টে হাজির করা হয়। বিচারকের কাছে ৫৬ টা খুনের কথা স্বীকার করে রবিউল। আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে সবগুলো খুন তার মনে আছে। রবিউল সেখানে মাঝে মাঝে এমন কিছু নাম বলেন যেগুলোর হত্যা রহস্য এখনো কেউ জানে না।

বিচারক তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার জন্য একটা তারিখ নির্ধারণ করে দেন। লতা চৌধুরী রবিউলের জন্য নিয়োগ করা উকিলের সঙ্গে কথা বলে।
উকিল সাহেব আফসোস নিয়ে বলেন,

– এতগুলো খুনের কথা কেন বলতে হবে? এখন তো মানবতার বিচার ছাড়া কিছু করার নেই। আসামি নিজে যদি এতগুলো মানুষ হত্যার কথা স্বীকার করে তাহলে তাকে কীভাবে বাঁচাবো?

লতার কাছে সেই প্রশ্নের জবাব থাকে না। সে অপেক্ষা করতে থাকে রবিউলের কি বিচার ঘোষণা করা হবে সেটা শোনার জন্য।

|
রবিউলের কী হবে?
|

চলবে….

মোঃ সাইফুল ইসলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here